ব্যাংক
ব্যাংক কর্মকর্তাদের পদোন্নতি পরীক্ষা নিয়ে নতুন নির্দেশনা

ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা থেকে তার ওপরের পদে কাজের ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে তাদের ক্ষেত্রে ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষা পাসের শর্ত শিথিল করা হয়েছে। তাতে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা থেকে তার ওপরের পদে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যাংকাররা ডিপ্লোমা ছাড়াই পদোন্নতি পাবেন। ডিপ্লোমা পাসের জন্য বরাদ্দ করা নম্বর তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে পেয়ে যাবেন।
এ ছাড়া জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বা সমমানের পদ থেকে শুরু করে তার পরের ধাপের পদগুলোকে পদোন্নতির ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা পরীক্ষার জন্য ১০ শতাংশ নম্বর রাখার বিধান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ব্যাংকগুলো নিজেরা এসব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে কর্মীদের যে নম্বর দেয়, সেখানে ডিপ্লোমার জন্য ১০ শতাংশ নম্বর রাখতে হবে। এই ১০ শতাংশ নম্বরের মধ্যে প্রথম পর্বে উত্তীর্ণের জন্য ৫ শতাংশ ও দ্বিতীয় পর্বের জন্য ৫ শতাংশ নম্বর বরাদ্দ থাকবে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ব্যাংকারদের ব্যাংকিং ডিপ্লোমা–সংক্রান্ত নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এতে বলা হয়েছে, ব্যাংকে নতুন যোগ দেওয়া কর্মীর পদোন্নতির ক্ষেত্রে ব্যাংকিং ডিপ্লোমা বাধ্যতামূলক। আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে যাঁরা ব্যাংকে যোগ দেবেন বা পদোন্নতিপ্রাপ্ত হবেন, তাদের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে।
এ ছাড়া পদোন্নতিতে ব্যাংকিং ডিপ্লোমার বাধ্যবাধকতা থেকে আরেক দফায় সাময়িক ছাড় পেলেন সিনিয়র বা জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। তারা ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষায় পাস না করলেও পরবর্তী ধাপে পদোন্নতি পাবেন। তবে এক ব্যাংক থেকে একজন কর্মকর্তা অন্য ব্যাংকে যেকোনো পদে যোগদান করতে গেলে সে ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা পাসের বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারির আগে নিয়োগ পাওয়া বা পদোন্নতিপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তারা যে পদে কর্মরত ছিলেন, তার পরবর্তী ধাপে পদোন্নতির ক্ষেত্রে ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলেও স্বয়ংক্রিয়ভাবে দুই পর্বের জন্য বরাদ্দ করা পূর্ণ নম্বর পাবেন।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বা সমমানের পদে যোগদান বা ওই পদে পদোন্নতির ১৫ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে এমন কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলেও ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা বিবেচনায় ওই কর্মকর্তা দুই পর্বের পরীক্ষার জন্য বরাদ্দ করা পূর্ণ নম্বর পাবেন। তবে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি হতে ব্যাংকে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বা সমমানের পদে যোগদান করা কিংবা উক্ত পদে পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের পরবর্তী ধাপের পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রথম পর্ব এবং দ্বিতীয় পদোন্নতির ক্ষেত্রে দ্বিতীয় পর্ব পরীক্ষায় বাধ্যতামূলকভাবে উত্তীর্ণ হতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও জানিয়েছে, মূল ব্যাংকিং কার্যক্রমে সম্পৃক্ত নয় এমন বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে এসব নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে না। তবে এমন বিভাগে বর্তমানে কর্মরত কোনো কর্মকর্তাকে পরবর্তী সময়ে মূল ব্যাংকিং কার্যক্রমে স্থায়ীভাবে পদায়ন করা হলে এসব নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে।
এ ছাড়া ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষায় উত্তীর্ণের জন্য ব্যাংকের পক্ষ থেকে আবশ্যিকভাবে আর্থিক প্রণোদনাও ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য প্রথম পর্বের পরীক্ষায় উত্তীর্ণের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৩৫ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয় পর্বের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫০ হাজার টাকা প্রণোদনা পাবেন ব্যাংকাররা। এই সিদ্ধান্ত ৯৯তম ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষা থেকে কার্যকর হবে। সম্প্রতি ৯৯তম ব্যাংকিং প্রফেশনাল পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন মুখপাত্র আরিফ হোসেন

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খানকে নতুন মুখপাত্র হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের হিউম্যান রিসোর্সেস ডিপার্টমেন্ট-১ এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
আরিফ হোসেন হুসনে আরা শিখার স্থলাভিষিক্ত হলেন। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হন ব্যাংকটির নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা। প্রায় সাড়ে চার মাস ধরে মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করেছেন হুসনে আরা শিখা।
আরিফ হোসেন খান ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকে সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন। শিক্ষাজীবনে তিনি মোহাম্মদপুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং নটর ডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ থেকে স্নাতক এবং একই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পরে তিনি নিউপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকা ক্যাম্পাস থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন।
আরিফ হোসেন খানকে সহযোগিতায় এর আগে মনোনীত ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী এবং ডিপার্টমেন্ট অব কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড পাবলিকেশন্সের পরিচালক (এক্স-ক্যাডার-পাবলিকেশন্স) সাঈদা খানমকে বাংলাদেশের ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
বাংলাদেশ ব্যাংকের লকারগুলো খোলার অনুমতি পেল দুদক

বাংলাদেশ ব্যাংকে সংরক্ষিত সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের সব লকার ফ্রিজ করার পর এবার তা খুলে দেখার অনুমতি পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এক আবেদনের প্রেক্ষিতে মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন এ অনুমতি দেন। একই সঙ্গে দুদক কর্মকর্তাকে সহযোগিতা করার জন্য ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানকে নিয়োগ দেন।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এ আদেশ দেন তিনি।
আদেশে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নমনীয় লকার বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে খুলে প্রাপ্তসামগ্রী ইনভেন্টরি করার নিমিত্তে অনুসন্ধানকারীদের অনুমতি দেওয়া হয়।
এর আগে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা ভল্টে রাখা সব কর্মকর্তার সেফ ডিপোজিট সাময়িক সময়ের জন্য ফ্রিজ (স্থগিত) করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে গভর্নরকে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। যাতে কোনো কর্মকর্তা রক্ষিত মালামাল লকার খুলে নিতে না পারেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ও সহকারী মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দিকী এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোনোভাবেই যাতে লকার থেকে অর্থ-সম্পদ সরিয়ে নিতে না পারেন, সে জন্য সব লকার ফ্রিজ করার অনুরোধ জানিয়ে রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন দুদক পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, গত ২৬ জানুয়ারি আদালতের অনুমতিতে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে অনুসন্ধানের উদ্দেশ্যে গঠিত দুর্নীতি দমন কমিশনের টিম বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েন ভল্টে রক্ষিত অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর সেইফ ডিপোজিট তল্লাশি করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে তার জমা করা তিনটি সিলগালা কৌটা খুলে ৫৫ হাজার ইউরো, ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার, ১০০৫ দশমিক ৪ গ্রাম স্বর্ণ ও ৭০ লাখ টাকার এফডিআর পাওয়া গেছে।
তল্লাশিকালে রেজিস্ট্রার পরীক্ষা করে দেখা যায়, সেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্য কিছু কর্মকর্তাও সিলগালা করে সেইফ ডিপোজিট রেখেছেন। এসব সিলগালা কৌটাতেও অপ্রদর্শিত সম্পদ থাকার অবকাশ রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে দুদকের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে বলে মনে করছে দুদক।
চিঠিতে আরও বলা হয়, গত ৩০ জানুয়ারি বিকাল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের ‘দুদক ও সম্পদ পুনরুদ্ধার বিষয়ক’ আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত সম্পদ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা ওই ভল্টে রক্ষিত সম্পদ সাময়িক ফ্রিজের সম্মতি দিয়েছেন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কর্মকর্তাদের সব লকার স্থগিত

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা ভল্টে রাখা সব কর্মকর্তার সেইফ ডিপোজিট সাময়িক সময়ের জন্য ফ্রিজ (স্থগিত) করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সন্দেহ করছে, এসব লকারে গোপনে বিপুল পরিমাণ অপ্রদর্শিত অর্থসম্পদ মজুত রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ও সহকারী মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দিকী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ছাড়া অন্য কেউ ব্যাংকের লকার বা অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করতে পারে না। দুদক কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি দিয়েছে আপাতত নতুন করে কোন লকার বরাদ্দ না দেওয়ার জন্য। একই সঙ্গে আগের লকারগুলো যাতে আপাতত খোলা না হয় সে বিষয়ে অনুরোধ জানিয়েছে। মূলত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা সেফ ডিপোজিট (লকার) হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে তাদের সম্পদ রাখতে পারেন। যেসব সম্পদ বাসায় রাখা ঝুঁকিপূর্ণ ডাকাতির ভয় আছে মূলত সেইসব সম্পদই সেফ ডিপোজিট হিসেবে সিলগালা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রাখা হয়। এই সংখ্যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের এক শতাংশেরও কম। কিন্তু একজন এসকে সুরের কারণে আমাদের এ ধরনের সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এটা খুবই দুঃখজনক।
দুদকের পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে লকার ফ্রিজের অনুরোধ জানানো হয়। এতে বলা হয়, ৩০ জানুয়ারি দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের লকারগুলোর বিষয়ে আলোচনা হয়। অর্থ উপদেষ্টা এসব লকারের সম্পদ ফ্রিজের সম্মতি দেন।
দুদক গতকাল (সোমবার) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে লকার খোলা ও তালিকা তৈরির অনুমতির জন্য আবেদন জমা দিয়েছে। আজ (মঙ্গলবার) আদালতের আদেশ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর, একজন ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে দুদক লকার খোলার ব্যবস্থা নেবে।
এর আগে, দুদকের অনুসন্ধান দল সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর (এস কে সুর) বাসায় অভিযান চালিয়ে নগদ ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা উদ্ধার করে। পরে তার লকার খুলে দেশি-বিদেশি মুদ্রা ও স্বর্ণালংকারসহ ৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ পাওয়া যায়।
তল্লাশির সময় দেখা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বেশকিছু লকার সিলগালা অবস্থায় রয়েছে। দুদক মনে করছে, এসব লকারে অপ্রদর্শিত সম্পদ থাকতে পারে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত চলছে।
দুদক বলেছে, লকার খুলে রক্ষিত সম্পদ যাতে কেউ সরিয়ে নিতে না পারে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
পদত্যাগ করলেন ন্যাশনাল ব্যাংকের এমডি ও ডিএমডি

খেলাপি ঋণে জর্জরিত বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. তৌহিদুল আলম খান ও ডিএমডি (উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক) আব্দুল মতিন পদত্যাগ করেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে তৌহিদুল আলম খান বলেন, আমি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত কারনে পদত্যাগ করেছি।
ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দেয়া অনুমোদন অনুযায়ী, এমডি তৌহিদুল আলম খানের মেয়াদ ছিল চলতি মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত। যদিও এমডি গত মাসের ৭ তারিখেই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। ডিএমডি আব্দুল মতিন গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে পদত্যাগপত্র জামা দিয়েছেন। উভয়েই কন্টাকচুয়ালি (চুক্তির ভিত্তিতে) ছিলেন। তাদের মেয়াদ শেষ হওয়ায়, এবং নতুন করে নিয়োগ না পাওয়ায়— তাদের চলে যেতে হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পরপরই ন্যাশনাল ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয় শিকদার পরিবার (শিকদার গ্রুপ)। জয়নুল হক শিকদার, তার স্ত্রী, ছেলে, মেয়েরা ছিলেন ব্যাংকটির পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত।
ন্যাশনাল ব্যাংকে বেনামি ঋণ, কমিশন নিয়ে ঋণ, নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে অভিযোগের মধ্যে পারিবারিক দ্বন্দ্ব শুরু হলে— বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ তুলে দেওয়া হয় এস আলম গ্রুপের হাতে।
তবে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার যে ১১টি ব্যাংকের পর্ষদে পরিবর্তন এনেছে, তার একটি ন্যাশনাল ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ প্রতিবেদন মতে (সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) ব্যাংকটির মোট ঋণের প্রায় ৫৬ শতাংশ বা ২৩ হাজার ৭২২ কোটি টাকা-ই খেলাপি ঋণ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে আতঙ্কে নথিপত্রহীন বাংলাদেশিরা, নিউইয়র্কে গ্রেপ্তার ৪

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ গ্রহণের পর থেকে আতঙ্কে আছেন নথিপত্রহীন অবৈধ অভিবাসীরা। নথিপত্রহীন বাংলাদেশিরাও একইভাবে দুশ্চিন্তায়। কারণ, ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প শপথ গ্রহণের পর থেকে নথিপত্রহীন অভিবাসীদের ধারপাকড়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে অভিযান শুরু হয়েছে। নিউইয়র্কের ব্রুকলিন বরোর ফুলটন এলাকা থেকে চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস ইনফোর্সমেন্ট (আইস)।
শপথ গ্রহণের পর থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত অভিবাসন–সংক্রান্ত শতাধিক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। জো বাইডেন আমলের ৭৮টি নির্বাহী আদেশ বাতিলসহ নতুন ৪৭টিতে স্বাক্ষর করেছেন তিনি। অবৈধ অভিবাসীদের শক্ত হাতে দমন করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। ধরপাকড় শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নানা অঙ্গরাজ্যে। নথিপত্রহীন সন্দেহভাজন অভিবাসীদের ব্যাপক মাত্রায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
নিউইয়র্কে অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা আইন কর্মকর্তা খাদিজা মুনতাহা রুবা বলেন, নিউইয়র্কের ব্রুকলিন বরোর ফুলটন এলাকা থেকে আড্ডা দেওয়া অবস্থায় নথিপত্রহীন চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে আইস। এ সময় তাঁরা সাদাপোশাকে ছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রত্যক্ষদর্শী এক বাংলাদেশি বলেন, ফুলটন এলাকায় আমরা আড্ডা দিচ্ছিলাম। অতর্কিতে সাদাপোশাকে কয়েকজন কর্মকর্তা এসে আমাদের পরিচয়পত্র দেখাতে বলেন।
একজন প্রতিবাদী হয়ে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম সংশোধনী অনুযায়ী তিনি তাঁর পরিচয়পত্র দেখাতে বাধ্য নন। তিনি এ কথা বলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে অন্যদের ছেড়ে দেওয়া হয়। কিছুটা দূরে একই এলাকায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
৭৮ বছর বয়সী ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি ওয়াশিংটনে শপথ অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত অতিক্রম করে লাখ লাখ অনুপ্রবেশকারী নির্দ্বিধায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। সীমান্তে প্রবেশ প্রথমেই বন্ধ করা হবে। তারপর বের করে দেওয়া হবে অপরাধীদের।
ইতিমধ্যে মেক্সিকো সীমান্তে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। রাখা হয়েছে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা। এই আদেশের আওতায় অভিবাসীদের বৈধতা দেওয়ার একটি প্রকল্পও বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত কর্তৃপক্ষ।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অ্যাটর্নি রাজু মহাজন বলেন, ট্রাম্পের বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশে বাংলাদেশিরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। যাঁরা ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ দক্ষিণ আমেরিকার পথ ধরে মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে ঢুকতেন, সেই পথ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। আগে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে বৈচিত্র্যকে গুরুত্ব দেওয়া হতো। সে হিসাবে অভিবাসীরা বিভিন্ন জায়গায় চাকরির ব্যাপক সুযোগ পেয়েছেন। এখন থেকে মেধার ভিত্তিতে সেসব নিয়োগ নির্ধারিত হবে। ফলে ছাটাই হতে পারেন অসংখ্য বাংলাদেশি।
সংবিধানের তোয়াক্কা না করে নির্বাহী আদেশ জারি করে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের একটি বিধানও বাতিল করেছেন ট্রাম্প। এতে এখন থেকে ৩০ দিন পর যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানেরা দেশটির নাগরিকত্ব পাবে না। তবে ইতিমধ্যে এই নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে ২৪টি রাজ্য ও শহরে মামলা হয়েছে। যেহেতু এটা মার্কিন সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনের বিরুদ্ধে যায়, সে কারণে হাইকোর্ট এটি বাতিল করে দিতে পারে।
খাদিজা মুনতাহা বাংলাদেশিদের সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আইন প্রয়োগকারী কোনো সংস্থার সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাঁদের সহযোগিতা করতে হবে। অন্যের ওয়ার্ক পারমিট দিয়ে কাজ করা বন্ধ করতে হবে। এই কঠিন সময়ে অহেতুক পুলিশি অথবা অন্য কোনো বিবাদ অথবা ঝামেলায় জড়ানো যাবে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাঙালি–অধ্যুষিত এলাকার সড়ক ও রেস্তোরাঁয় যেখানে অসংখ্য মানুষের ভিড় দেখা যেত, এখন সেখানে লোকজনের ভিড় নেই বললেই চলে। ইতিমধ্যে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।