অর্থনীতি
১০ শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ সমন্বিত তদন্তের পরামর্শ গভর্নরের

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবার এবং ১০ শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অর্থপাচারে সমন্বিত তদন্ত প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত ‘মানিলন্ডারিং অপরাধ অনুসন্ধানে গঠিত যৌথ অনুসন্ধান ও তদন্ত দলের কার্যক্রম বিষয়ে আলোচনা’ বিষয়ক বৈঠকে এ পরামর্শ দেন তিনি।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবার এবং ১০ শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ঘুস, দুর্নীতি, মুদ্রা পাচার, কর ও শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ অনুসন্ধানে ১১টি তদন্ত দল গঠন করেছে সরকার।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সমন্বয়ে গঠিত দলগুলোর সঙ্গে এদিন বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সভাপতিত্বে বৈঠকে বিএফআইইউ’র নতুন প্রধান শাহিনুল ইসলাম, উপ-প্রধান এ কে এম এহসান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর জাকির হোসেন চৌধুরী এবং ড. কবির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, মানিলন্ডারিং অপরাধ অনুসন্ধানের জন্য ১১টি যৌথ অনুসন্ধান ও তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। দলগুলো আলাদা আলাদা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তদন্ত করবে। আগামী সপ্তাহ থেকে তদন্ত কমিটি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অফিস শুরু করবে। যাদের জন্য আলাদা স্থান বরাদ্দ করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবার ও তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ও ট্রাস্টের বাইরে যে ১০ শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে, সেগুলো হলো- সাইফুজ্জামান চৌধুরী (আরামিট গ্রুপ), এস আলম গ্রুপ, বেক্সিমকো, নাসা, সিকদার, বসুন্ধরা, সামিট, ওরিয়ন, জেমকন ও নাবিল গ্ৰুপ। এসব গ্রুপের মালিক, স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানও তদন্তের আওতায় থাকবে।
এদিন আনুষ্ঠানিক ১১টি তদন্ত কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেছেন গভর্নর। সেখানে নিজ নিজ তদন্তের অগ্রগতি অবহিত করেছে দলগুলো। পরে তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে জটিলতা দূর এবং তদন্ত প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জন্য সমন্বিতভাবে কাজ করতে পরামর্শ দিয়েছেন গভর্নর।
তদন্ত কমিটি সম্প্রতি মন্ত্রিত্ব হারানো ব্রিটিশ নাগরিক টিউলিপ সিদ্দিকের বিষয়েও গুরুত্ব দিচ্ছে। শেখ হাসিনা পরিবারের দুর্নীতির সঙ্গেই তার দুর্নীতি, অর্থপাচার, ঘুস বাণিজ্য এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করবে তদন্ত দলটি।
দলগুলোকে বেশকিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ আইন ও বিধিমালা মেনে অনুসন্ধান ও তদন্ত করতে হবে। তদন্ত দলকে অনুসন্ধান ও কার্যক্রমের তথ্যাদির গোপনীয়তা ও সংবেদনশীলতা কঠোরভাবে রক্ষা করতে হবে। প্রতিটি দলের প্রধানকে নিজ নিজ সংস্থার অনুমোদন নিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করতে হবে। যৌথ অনুসন্ধান দলের তদন্ত কার্যক্রম সমন্বয় করে তার অগ্রগতি ও পরবর্তী কার্যক্রম অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে জানাবে।
সম্প্রতি এসব বিষয় নিয়ে দুদক, সিআইডি ও কাস্টমস গোয়েন্দাকে দেওয়া বিএফআইইউ’র চিঠিতে বলা হয়, এসব গ্রুপ ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি, প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে অর্থ আত্মসাৎ, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ঘুস, দুর্নীতিসহ অবৈধ পন্থায় অর্থ উপার্জনের তথ্য পাওয়া গেছে। তাছাড়া এসব ব্যবসায়ী গ্রুপের বিরুদ্ধে কর ও শুল্ক ফাঁকি, বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে অর্থপাচারসহ বিভিন্ন অবৈধ পন্থায় বিদেশে অর্থপাচারের তথ্য রয়েছে। অনুসন্ধান ও তদন্ত কার্যক্রমের হালনাগাদ প্রতিবেদন সময়-সময় সংস্থাগুলোকে বিদেশে পাচার করা সম্পদ বাংলাদেশে ফেরত আনা ও ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে আন্তঃসংস্থা টাস্কফোর্স ও বিএফআইইউতে সরবরাহ করতে হবে বলে চিঠিতে বলা হয়।
তদন্তের আওতায় আসা গ্রুপগুলোর বেশির ভাগের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বিএফআইইউ। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ, ঋণের ব্যবহার, অর্থের গতিপথ, তাদের ব্যবসায়িক ও অন্যান্য লেনদেন, ঋণের সুবিধাভোগীসহ বিভিন্ন বিষয়ে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, কানাডা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ (ইউএই) বিভিন্ন দেশে তাদের সম্পদের বিষয়ে জানতে চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

অর্থনীতি
জুনের ২৮ দিনেও কোনো রেমিট্যান্স আসেনি ৮ ব্যাংকে

চলতি মাস জুনের প্রথম ২৮ দিনে ২৫৩ কোটি ৯২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। ব্যাংকিং চ্যানেলে এসব রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। তবে এ সময়ে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি ৮ ব্যাংকের মাধ্যমে।
এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল ও বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে কমিউনিটি ব্যাংক, সিটিজেনস ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক এবং পদ্মা ব্যাংক। এছাড়া বিদেশি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, জুনের ২৮ দিনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৫৫ কোটি ৬৫ লাখ ডলার, বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩৬ কোটি ১২ লাখ ডলার। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৬১ কোটি ৬১ লাখ ৪০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৫৩ লাখ ৭০ হাজার ডলার।
চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের জুলাই থেকে চলতি (মাস) জুনের ২৮ তারিখ পর্যন্ত মোট ৩০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। পরের মাস নভেম্বরে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এছাড়া মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার, এপ্রিলে আসে ২৭৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স। সবশেষ মে মাসে ২৯৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
অর্থনীতি
৪৮ ঘণ্টা শাটডাউনের পর এনবিআরের আন্দোলন প্রত্যাহার

গত ৪৮ ঘণ্টা শাটডাউনের পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চলমান আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ রাত সাড়ে নয়টার দিকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। এর ফলে গত কয়েক দিন ধরে চলমান আন্দোলন কর্মসূচি আপাতত শেষ হলো।
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ এবং দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিদলের নেতারা এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়। রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
এতে ব্যবসায়ীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন বিসিআই সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও অতিরিক্ত কমিশনার হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, দেশের শীর্ষস্থানীয় চামড়াজাত পণ্য প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এপেক্স ফুটওয়্যারের এমডি ও মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সহসভাপতি মির্জা আশিক রানা প্রমুখ।
গত শনিবার থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির কারণে পণ্য আমদানি-রপ্তানিসহ এনবিআরের সার্বিক কার্যক্রমে অচলাবস্থা শুরু হয়। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা এই কর্মসূচির কারণে ঢাকার এনবিআর ভবন থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম বন্দর, ঢাকা কাস্টমস হাউস, বেনাপোল, সোনামসজিদ, আখাউড়া, বুড়িমারীসহ দেশের সব স্থলবন্দর শুল্কস্টেশনে শুল্ক-কর আদায় কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। স্থবির হয়ে যায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম।
অবশ্য গত দেড় মাস ধরে সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে এনবিআরের যৌক্তিক সংস্কারে দাবিতে আন্দোলন করছেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
অর্থনীতি
সহযোগী সংস্থাগুলোকে ১১ হাজার কোটি টাকা দেবে পিকেএসএফ

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সহযোগী সংস্থাগুলোকে ১১ হাজার কোটি টাকার সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)। এছাড়া অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতে পিকেএসএফ পাঁচ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনাও প্রণয়ন করেছে।
রবিবার (২৯ জুন) রাজধানীর পিকেএসএফ ভবনে অনুষ্ঠিত পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর পরিচালনা পর্ষদের ২৬০তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দেশের সুবিধাবঞ্চিত, নিম্ন-আয়ের মানুষের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির ধারাকে আরও বেগবান করার লক্ষ্যে ‘পিকেএসএফ কৌশলগত পরিকল্পনা (২০২৫-২০৩০)’ অনুমোদন করেছে পিকেএসএফ-এর পরিচালনা পর্ষদ।
পিকেএসএফ জানায়, প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই পিকেএসএফ এর কার্যক্রমের মান ও কার্যকারিতা দেশে-বিদেশে সমাদৃত হলেও বর্তমানে আর্থ-সামাজিক, প্রাযুক্তিক, দারিদ্র্য পরিস্থিতি ও মানুষের চাহিদার বিবর্তন ঘটেছে। এ প্রেক্ষাপটে দেশে টেকসইভাবে দারিদ্র্য নিরসন ও নিম্ন-আয়ের মানুষের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পিকেএসএফ নতুন এই কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন করে এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১১ হাজার কোটি টাকার ঋণ বিতরণের প্রস্তাব উত্থাপন করে। পরিচালনা পর্ষদ প্রস্তাবটি গ্রহণ করে তা সাধারণ পর্ষদে অনুমোদনের লক্ষ্যে উপস্থাপনের পরামর্শ দেয়। বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পিকেএসএফ থেকে সহযোগী সংস্থা পর্যায়ে ঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা। বর্ধিত এ অর্থায়নের ফলে সহযোগী সংস্থাগুলো তৃণমূলে আরো বেশি সংখ্যক মানুষকে অধিকতর কার্যকরভাবে পিকেএসএফ এর সেবাগুলো পৌঁছে দিতে পারবে।
সংস্থাটি জানায়, পিকেএসএফ এর সাধারণ পর্ষদের ১৪তম সভায় ‘পিকেএসএফ কৌশলগত পরিকল্পনা (২০২৫-২০৩০)’ এর প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১০ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকার সংশোধিত বাজেট এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য মোট ১২ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করা হয়।
পিকেএসএফ চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দু’টি সভাতেই ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের, পর্ষদ সদস্য ড. সহিদ আকতার হোসাইন, নূরুন নাহার, ফারজানা চৌধুরী, প্রফেসর ড. মো. তৌফিকুল ইসলাম এবং লীলা রশিদ অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া সাধারণ পর্ষদের সভায় সব পর্ষদ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
অর্থনীতি
২০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে বেজা ও এডিবির চুক্তি

জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে পিপিপি পদ্ধতিতে সর্বপ্রথম সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে বেজা ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির আওতায় জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের ফেনী অংশে সোনাগাজী উপজেলায় ১০০ থেকে ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
রবিবার (২৯ জুন) বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এ তথ্য জানায়। বেজা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এডিবি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং। এছাড়া সভায় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি), পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বেজা জানায়, জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে পিপিপি পদ্ধতিতে গ্রাউন্ড মাউন্টেড সোলার (১০০-২০০ এমডব্লিউ) পিভি প্রকল্প স্থাপনের লক্ষ্যে টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্সের জন্য বাংলাদেশ বেজা এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মধ্যে আজ একটি ট্রান্সসেকশন অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেস অ্যাগ্রিমেন্ট (টিএএসএ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। এছাড়াও এ বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সাথে উভয়পক্ষের একটি সারসংক্ষেপ স্বাক্ষরিত হয়। জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলকে একটি পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই ‘গ্রিন ইকোনমিক জোন’ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই চুক্তির আওতায় জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের ফেনী অংশে সোনাগাজী উপজেলায় ১০০ থেকে ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌর ফটোভোল্টেইক (পিভি) এবং ব্যাটারি এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম (ইএসএস) সমন্বিত একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
বেজা আরও জানায়, এই প্রকল্পটি হবে বাংলাদেশে বাস্তবায়িত প্রথম সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প, যা পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কাঠামোতে পরিচালিত হবে। সম্প্রতি প্রকাশিত নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি-২০২৫ অনুসরণে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। যা দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
বেজা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, এই প্রকল্পটি বেজা তথা বাংলাদেশ সরকারের জন্য একটি মাইলফলক হতে যাচ্ছে। এটি পিপিপি কাঠামো অনুসরণে দেশের প্রথম সোলার প্রকল্প। যা অর্থনৈতিক অঞ্চলে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগকে সফলভাবে বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে এডিবিকে সম্পৃক্ত করার পাশাপাশি আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের জন্য বিশেষ কমিটি গঠিত হয়েছে। তিনি এডিবিকে প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সমীক্ষা সমাপ্ত করে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সামনে তুলে ধরার জন্য অনুরোধ করেন।
তিনি বলেন, এই উদ্যোগ সরকার ঘোষিত ‘জিরো নেট কার্বন এমিশন’ বাস্তবায়নে এক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। পরিবেশ সুরক্ষা নিশ্চিত করেই শিল্পায়ন ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের পথ তৈরির জন্য বেজা সচেষ্ট হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এডিবি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, এই প্রকল্পটি বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন মানদণ্ড তৈরি করবে। যেখানে এদেশে প্রথমবারের মত ব্যাটারি স্টোরেজ সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এটি বিদ্যুৎ গ্রিডে ক্লিন এনার্জি সরবরাহ করবে এবং সেই সাথে একটি স্বচ্ছ, প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা তৈরি করবে।
এর ফলে টেকসই অবকাঠামো উন্নয়ন উৎসাহিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অর্থনীতি
এনবিআর সংস্কারে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের সভাপতিত্বে পাঁচ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি গঠন করেছে সরকার।
আজ রবিবার (২৯ জুন) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিদ্যমান সংকট দ্রুত নিরসনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সভাপতিত্বে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সমন্বয়ে উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তবে এ কমিটির বিস্তারিত টার্মস অব রেফারেন্স সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়নি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, জনস্বার্থ রক্ষায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন সব কাস্টমস হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট ও শুল্ক স্টেশনগুলোর সব শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস ঘোষণার প্রস্তাব (মন্ত্রিসভায়) অনুমোদন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস ইউং থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘আশা করি, অনতিবিলম্বে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থলে ফিরে যাবেন এবং আইনবিরোধী ও জাতীয় স্বার্থ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসবেন। অন্যথায় দেশের জনগণ ও অর্থনীতির সুরক্ষায় সরকার কঠোর হতে বাধ্য হবে।’