জাতীয়
জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের খসড়ায় যা আছে

আলোচিত জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ঘোষণাপত্রের খসড়ায় বর্তমান সংবিধান সংশোধন বা প্রয়োজনে বাতিল করার কথা বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারাও বৈঠকে অংশ নেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ঘোষণাপত্রের খসড়ায় তুলে ধরা হয় এই ভূখণ্ডের মানুষের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যুগের পর যুগ সংগ্রামের প্রসঙ্গ। এ ছাড়া পাকিস্তান আন্দোলনের মাধ্যমে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা অর্জন, ১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার কথাও খসড়ায় তুলে ধরা হয়। এরপর বিভিন্ন প্রেক্ষাপট তুলে কীভাবে ছাত্র-জনতার উত্তাল গণবিক্ষোভ গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয় ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান, সে প্রসঙ্গও রয়েছে।
খসড়ায় বলা হয়, আমরা, ছাত্র-জনতা সেই অভিপ্রায়বলে আত্মমর্যাদা, সাম্য ও সামাজিক ন্যায়বিচারের যে আদর্শে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়েছে, সেই আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য সার্বভৌম জনগোষ্ঠী হিসেবে নিজেদের সংগঠিত করলাম। আমরা, প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদ ভেঙে দেওয়ার আহবান জানাচ্ছি এবং ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও অখণ্ডতা রক্ষার্থে ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আহ্বান জানালাম। আমরা সুশাসন ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার পুনরাবৃত্তি রোধ নিশ্চিত করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করবে, এই অভিপ্রায় ব্যক্ত করলাম।
আমরা ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারকে লালন করার দলিল ১৯৭২ সালের সংবিধান সংশোধন বা প্রয়োজনে বাতিল করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করলাম। আমরা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকালে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক সংগঠিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি লুটপাটের অপরাধগুলোর উপযুক্ত বিচার করা হবে, এই অভিপ্রায় ব্যক্ত করলাম।
আমরা এই ঘোষণা করলাম যে, ১৯৭২ এবং ১/১১ কালের রাজনৈতিক বন্দোবস্তের পরিবর্তন ঘটানোর জন্য আমাদের একটি নতুন জনতন্ত্র (রিপাবলিক) প্রয়োজন, যা রাষ্ট্রে সকল ধরনের নিপীড়ন, শোষণ ও বৈষম্যর অবসান ঘটাবে এবং এ দেশের তরুণসমাজের প্রত্যাশাকে ধারণ করতে পারবে। আমরা এই অভিপ্রায় ব্যক্ত করলাম যে এই ঘোষণাপত্রকে উপযুক্ত রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে চেয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। তখন এই ঘোষণাপত্র নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা তৈরি হয়। পরে ৩০ ডিসেম্বর রাতে জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
এ ঘটনার পরে ওই রাতেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি বৈঠক করে ৩১ ডিসেম্বর শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ নামে কর্মসূচি ঘোষণা করে। ওই কর্মসূচি থেকে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়।
কাফি

জাতীয়
স্বৈরাচার পতনে যাতে ১৬ বছর অপেক্ষা করতে না হয় সেই কাজ করছি: ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস মন্তব্য করেছেন যে, স্বৈরাচার পতনের জন্য যেন আর ১৬ বছর অপেক্ষা করতে না হয়, সেই লক্ষ্যে তার সরকার কাজ করছে।
আজ মঙ্গলবার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস বলেন, “স্বৈরাচার পতনে যাতে ১৬ বছর অপেক্ষা করতে না হয়; সেই কাজ আমারা করছি। আশা করি, আগামী দিনে কেউ স্বৈরাচার হতে চাইলে জনগণ সঙ্গে সঙ্গে তাদের পতন ঘটাবে। জনগণ রাস্তায় নামলে কোনো শক্তি থামাতে পারে না।”
তিনি আরও জানান, কোনো স্বৈরাচার যেন ভবিষ্যতে কোথাও মাথাচাড়া দিতে না পারে, সেজন্য প্রতি বছর জুলাই দিবসগুলো পালন করা হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এ অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে জুলাই-আগস্ট মাসজুড়ে আমরা গত বছরের একটি প্রতীকী দিনকে আবার পুনরুজ্জীবিত করব। এছাড়া, যে লক্ষ্যে আমাদের তরুণ ছাত্ররা, জনতা, রিকশাচালক, শ্রমিক ও কিশোররা শহীদ হয়েছিল, আহত হয়েছিল, সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরা নতুন করে শপথ নেবো।”
ড. ইউনূস আশাবাদ ব্যক্ত করেন, “জুলাই-আগস্টের পুনরুত্থান কর্মসূচি সফল হোক। এ অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে আমাদের স্বপ্ন আবার নতুন করে জেগে উঠুক, আমাদের ঐক্য আবার সর্বমুখী হোক, অটুট হোক।”
জাতীয়
১৮ জুলাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিরোধ দিবস পালিত হবে: প্রেস সচিব

১৮ জুলাই দিনটিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
সোমবার (৩০ জুন) রাতে প্রেস সচিবের ভেরিফায়েড ফেসবুক একাউন্টে এক পোস্টে এ কথা উল্লেখ করেন।
প্রেস সচিব বলেন, সরকার ১ জুলাই ‘জুলাই’ উদযাপনের জন্য তার ক্যালেন্ডার ঘোষণা করতে চলেছে। আপাতত আমরা আপনাদের এটুকু বলতে পারি যে, অনেক গুরুত্বপূর্ণ তারিখের মধ্যে ১৮ জুলাই সম্পূর্ণরূপে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এবং তাদের সাহসী প্রচেষ্টার জন্য উৎসর্গ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার অফিসিয়াল ক্যালেন্ডার প্রকাশনার দিকে চোখ রাখার জন্যও আহ্বান জানান তিনি।
কাফি
জাতীয়
জুলাই শহীদদের জন্য আজ মসজিদে মসজিদে বিশেষ দোয়া

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের রুহের মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতা কামনা করে দেশের সব মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
এতে বলা হয়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শাহাদাত বরণকারী ছাত্র-জনতার রুহের মাগফিরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনা করে মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করার জন্য দেশের সব মসজিদের খতিব, ইমাম ও মসজিদ কমিটিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আজ বাদ যোহর দুপুর দেড়টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
কাফি
জাতীয়
মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে শুনানি আজ

মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে আজ মঙ্গলবার (১ জুলাই) শুরু হচ্ছে অভিযোগ গঠনের শুনানি। শুনানি অনুষ্ঠিত হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ।
প্রসিকিউশন জানায়, আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে মামলার কার্যক্রম বিটিভি ও সামাজিক মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
এই মামলার অপর দুই আসামি হলেন- শেখ হাসিনার সাবেক সহযোগী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। তাঁদের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্টের আন্দোলন দমন করতে ছাত্র ও জনতাকে হত্যায় উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশসহ পাঁচটি অভিযোগ আমলে নিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
পলাতক অবস্থায় থাকা শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের নামে এক সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা সাড়া না দেওয়ায় ট্রাইব্যুনাল তাঁদের পক্ষে ঢাকার একটি বিশেষ আদালতের সাবেক পিপি আমির হোসেনকে আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হন এবং সেদিনই ভারত চলে যান। তাঁর সরকারের বহু নেতা-কর্মী পলাতক। অনেকে গ্রেপ্তারও হয়েছেন এবং তাঁদের বিরুদ্ধেও মামলা চলমান।
জাতীয়
ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করলো সরকার

ডেঙ্গু শনাক্তে চার ধরনের পরীক্ষার সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আজ সোমবার (৩০ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গুর মূল পরীক্ষা এনএসওয়ান (NS1)-এর জন্য সর্বোচ্চ ৫০ টাকা নেওয়া যাবে। এ ছাড়া আইজিজি ও আইজিএম পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ টাকা।
বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের জন্য এনএসওয়ান, আইজিজি ও আইজিএম পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ৩০০ টাকার। এ ছাড়া সিবিসি পরীক্ষার মূল্য হবে ৪০০ টাকা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক সমূহ) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ নির্দেশনা কার্যকর থাকবে। এতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফরের অনুমোদন রয়েছে।
এছাড়া আরও তিনটি পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে বরগুনা জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় অস্থায়ী ভিত্তিতে দুটি অ্যাম্বুল্যান্স প্রদান, জনসচেতনা সৃষ্টিতে প্রচারণা চালানো ও বরগুনা জেলায় ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসার্থে এবং প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।