কর্পোরেট সংবাদ
খাদ্যপণ্যে বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহারে ব্যবসায়ীদের আলটিমেটাম

প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যে বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্ক এবং গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবকে ভোক্তার স্বার্থবিরোধী উল্লেখ করে অবলিম্বে তা প্রত্যাহারের আহবান জানিয়েছেন দেশের কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাতের ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের মতে, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের উপর ভ্যাট ও করের বোঝা চাপানো হলে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্থ হবে দেশের শ্রমজীবী, প্রান্তিক কৃষক ও নিম্ন আয়ের মানুষ। যে হারে ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে তাতে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন খাদ্য বিস্কুট, কেক, জুসসহ বিভিন্ন খাদপণ্য ভোক্তার ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। আর ভোক্তারা ক্রয় ক্ষমতা হারালে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের অধিকাংশ কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে এরই মধ্যে এ খাতে সরাসরি কাজ করা প্রায় আড়াই লাখ শ্রমিকের কাজ হারানোর শঙ্কা তৈরি হয়েছে। নতুন করে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে পুরো খাত মুখ থুবড়ে পড়বে। পরিচালন ব্যয় বেড়ে গেলে রপ্তানিতে বাজার হারানোর শঙ্কা তৈরি রয়েছে। ফলে অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা আসবে। সরকারের রাজস্ব বাড়ানোর যে উদ্দেশ্যে সেটি হিতে বিপরীত হতে পারে বলে মনে করছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে এগ্রো প্রসেসরস’ এসোসিয়েশনের (বাপা) সদস্যরা এসব উদ্বেগের কথা জানান।
পাশাপাশি সরকারকে আগামী সাত দিনের মধ্যে এ ধরনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন তারা। যদি এ সময়ের মধ্যে আরোপিত ভ্যাট ও শুল্কের সাথে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব থেকে সরকার সরে না আসে তবে স্বেচ্ছায় কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ এবং সচিবালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠনটির।
এছাড়া এ ইস্যুতে সরাসরি অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ চেয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে চিঠি দেয়া হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। বাপা’র নেতৃবৃন্দ মনে করছেন, প্রধান উপদেষ্টাকে সরাসরি এর প্রভাবগুলো তুলে ধরতে পারলে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে বলে তারা মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন।
গত ৯ জানুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট বিভাগ শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে দেয়। সেখানে মেশিনে প্রস্তুতকৃত বিস্কুট, কেক, আচার, চাটনী, টমেটো পেস্ট, টমেটো কেচাপ, টমেটো সস, আম, আনারস, পেয়ারা ও কলার পাল্প ইত্যাদি পণ্যসমূহের উপর মূসক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া ফলের রস ও ফ্রুট ড্রিংকস এর উপর সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে এবং আর্টিফিসিয়াল/ ফ্লেভার ড্রিংকস ও ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস (নন-কার্বোনেটেড) পণ্যের উপর সম্পূরক শুল্ক ০% (শূণ্য হারে) ছিল এবং বর্তমানে তা ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। পাশাপাশি ব্যবসায়ী পর্যায়ে পূর্বে ৫ শতাংশ হারে মূসক আরোপ ছিল যা বাড়িয়ে ৭.৫ শতাংশ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বাপার সভাপতি এম এ হাশেম বলেন, “আমরা এমন একটি খাত নিয়ে ব্যবসা করি যার সাথে সরাসরি শ্রমজীবী নিম্ন আয়ের মানুষ থেকে প্রান্তিক কৃষক জড়িত। সরকার থেকে বলা হচ্ছে, এতে খুব একটা প্রভাব পড়বে না। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। দেশের মানুষের সংস্কৃতি যদি দেখি, চায়ের দোকান থেকে অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ সকালে এক কাপ চা, একটি বিস্কুট কিংবা কেক খেয়ে কাটিয়ে দিচ্ছেন। এখন যদি বিস্কুট ও কেকের উপর ভ্যাট বাড়ানোর সাথে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পায় তবে ৫ টাকার একটি বিস্কুট আর তৈরি করা সম্ভব হবে না। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষটি সহজে ক্ষুধা নিবারণের পথটি হারাবেন”।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী আহসান খান চৌধুরী বলেন, আমরা প্রান্তিক কৃষকের আম, টমেটো, আনারস, কলাসহ বিভিন্ন কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাত করে জুস, ড্রিংকস, আচার, সস তৈরি করি। টমেটো, আম, আনারস, পেয়ারা ও কলার পাল্প ইত্যাদি পণ্যসমূহের উপর মূসক ৫% থেকে বাড়িয়ে ১৫% করা হয়েছে। এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হবেন প্রান্তিক চাষীরা। এখন যদি ভ্যাট ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কারণে এসব পণ্যের দাম বেড়ে যায় তবে অনেকেই এসব পণ্য ক্রয় থেকে বিরত থাকবেন। এছাড়া এর প্রভাবে কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে প্রচুর শ্রমিকের জীবনে অনিশ্চিয়তা নেমে আসবে। তাই সরকারকে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যে বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্ক প্রত্যাহার এবং গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহবান জানাচ্ছি।
এ খাতের ব্যবসায়ীরা জানান, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ঋণের উচ্চ সুদ হার, ঋণপত্রে জটিলতা, ডলার বাজারে অস্থিরতা, ২০২৪ এর সাধারণ নির্বাচন, জুলাই-আগষ্টের গণ-অভ্যুত্থান এবং সাম্প্রতিক শ্রমিক অসন্তোষের কারণে বেতন-ভাতা বৃদ্ধি নিয়ে যখন ব্যবসায়ীদের কঠিন অবস্থা সামাল দিতে হচ্ছে, ঠিক সেই মুহুর্তে ভ্যাট বৃদ্ধির উদ্যোগে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও আতঙ্কিত।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেশের শ্রমশক্তির উল্লেখযোগ্য অংশ এ খাতে নিযুক্ত। কৃষিখাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পের অবদান জিডিপিতে এখন ৭.৭ শতাংশ। বর্তমানে বাপা’র প্রায় ৪০০ সক্রিয় সদস্য রয়েছেন। এর বাইরেও প্রায় পাঁচ শতাধিক প্রতিষ্ঠান কৃষি প্রক্রিয়াকরণ খাদপণ্য উৎপাদন করছেন যেখানে ৫ লাখের অধিক শ্রমিক কর্মরত রয়েছেন। পাশাপাশি কাঁচামাল সরবরাহকারী, খুচর বিক্রেতাসহ পরোক্ষভাবে প্রচুর লোক এ খাতে যুক্ত রয়েছেন। বর্তমান কঠিন প্রেক্ষাপটে হঠাৎ এ ধরনের উদ্যোগে সবাই ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।
বক্তারা বলেন, কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য দেশের শীর্ষ পাঁচ রপ্তানি খাতের একটি। আমেরিকা, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা অঞ্চলের সুপারশপেও এখন ‘বাংলাদেশে তৈরি’ প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের সরবরাহ প্রচুর বেড়েছে। এসব বাজারে জুস, ড্রিংকস, বিস্কুট, সস, জেলিসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের বিশাল বাজার তৈরি হচ্ছে। এ খাতে রপ্তানি এক বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে হঠাৎ যদি বর্ধিত ভ্যাট আরোপ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি করা হয় তবে রপ্তানি খাত মুখ থুবড়ে পড়বে। উৎপাদন ব্যয় বাড়লে প্রতিবেশি দেশ ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের কাছে বাজার হারাতে হবে। এছাড়া দেশীয় পণ্যের দামের সাথে আমদানিকৃত খাদ্যপণ্যের দামের ব্যবধান কমে আসলে স্থানীয় শিল্প ক্ষতির সম্মুখীন হবে। তাই দ্রুত বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহার ও প্রস্তাবিত গ্যাসের দাম না বাড়ানোর জন্য সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে এগ্রো প্রসেসরস’ এসোসিয়েশনের (বাপা)’র সাধারণ সম্পাদক ইকতাদুল হক, এসিআই এগ্রো বিজনেসের প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনসারি, এসএমসি এন্টারপ্রাইজ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফ নাসির, বাংলাদেশ বিস্কুট এন্ড ব্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভুইয়া, আকিজ ফুডস এন্ড বেভারেজ এর পরিচালক সৈয়দ জহুরুল আলম, স্কয়ার ফুড এন্ড বেভারেজ এর চিফ অপারেটিং অফিসার পারভেজ সাইফুল ইসলাম, কিশোয়ান ও বনফুল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল ইসলামসহ কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাতের বিভিন্ন কোম্পানির পরিচালক ও শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কাফি

কর্পোরেট সংবাদ
ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ সভা

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা পরিষদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৮ জুলাই) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম জুবায়দুর রহমান।
সভায় এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম, এফসিএ, এফসিএস, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম মাসুদ রহমান ও স্বতন্ত্র পরিচালক মো. আবদুল জলিল, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর (চলতি দায়িত্ব) মো. ওমর ফারুক খান, শরী’আহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আব্দুস সামাদ এবং কোম্পানি সেক্রেটারি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।
কর্পোরেট সংবাদ
লক্ষ্মীপুরে নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের দক্ষতা উন্নয়ন কর্মশালা

লক্ষ্মীপুরের তৃণমূল পর্যায়ের নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে যৌথভাবে একটি দিনব্যাপী উদ্যোক্তা সচেতনতা ও দক্ষতা উন্নয়ন কর্মশালার আয়োজন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
গত ২৪ জুলাই লক্ষ্মীপুরের একটি স্থানীয় কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত এই কর্মশালায় অংশ নিয়েছিলেন কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি (সিএমএসএমই) শিল্পের বহু নারী উদ্যোক্তা। এই আয়োজনের লক্ষ্য ছিল কাঠামোবদ্ধ প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধি কর্মশালার মাধ্যমে আর্থিক সাক্ষরতার প্রসার, এসএমই অর্থায়ন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং নারী উদ্যোক্তাদের ক্ষমতায়ন করা।
সেশন পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও জেলার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রাম অফিসের নির্বাহী পরিচালক মো. মকবুল হোসেন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রাম অফিসের পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান।
আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন ব্র্যাক ব্যাংক ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্কের রিজিওনাল হেড মাসুদ আলম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক ব্যাংকের হেড অব এসএমই বিজনেস সাপোর্ট মোহসিনুর রহমানসহ অংশগ্রহণকারী অন্যান্য ব্যাংকের কর্মকর্তারা কর্মশালায় স্থানীয় ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের মধ্যে বিসিক, লক্ষ্মীপুর বণিক সমিতি ও লক্ষ্মীপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নেতৃবৃন্দরাও উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা স্থানীয় উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ মতামত ও পরামর্শ তুলে ধরেন।
নারীদের আর্থিক ক্ষমতায়নের প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংক নির্বাচিত নারী উদ্যোক্তাদের মাঝে এসএমই স্পট লোন বিতরণ করে। এ ঋণের লক্ষ্য হলো নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ ও টেকসইতা নিশ্চিতকরণে তাঁদের সহায়তা করা।
কর্মশালায় সিএমএসএমই অর্থায়ন নিয়ে অংশগ্রহণমূলক আলোচনা এবং নারী উদ্যোক্তাদের জন্য হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসা পরিকল্পনা, আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক সেবার বাইরে থাকা জনগোষ্ঠীকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় নিয়ে আসার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় ব্র্যাক ব্যাংক লিড ব্যাংক হিসেবে এই কর্মশালার আয়োজন করেছে। এই উদ্যোগটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিং এবং দেশের সিএমএসএমই ও নারী উদ্যোক্তাদের ক্ষমতায়নে ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যক্ত করা প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
কর্পোরেট সংবাদ
ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট ও ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজের মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতির উদযাপন

ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসির দুটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান- ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেড- আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত ‘ইউরোমানি অ্যাওয়ার্ডস ফর এক্সেলেন্স ২০২৫’ অর্জন করায় একসঙ্গে উদযাপন করেছে।
এই উপলক্ষে ইউসিবির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউসিবির চেয়ারম্যান শরীফ জহীর, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ মামদুদুর রশীদ, ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের এমডি ও সিইও তানজিম আলমগীর, ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেডের এমডি ও সিইও মোহাম্মদ রহমাত পাশাসহ ইউসিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
বিনিয়োগ ও ব্রোকারেজ সেবায় শীর্ষস্থান অর্জন করেছে ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি পরপর তৃতীয়বারের মতো পেয়েছে ‘বাংলাদেশের সেরা ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক ২০২৫’ পুরস্কার। এই স্বীকৃতি প্রতিষ্ঠানটির দক্ষতা, কৌশলগত উদ্ভাবন এবং গ্রাহককেন্দ্রিক সেবার উৎকর্ষকে তুলে ধরেছে। বড় বড় প্রকল্পে পরামর্শ দেওয়া থেকে শুরু করে টেকসই বিনিয়োগ উদ্যোগে নেতৃত্ব দেওয়া—সবক্ষেত্রেই ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
অন্যদিকে, ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেড পেয়েছে দুটি সম্মানজনক পুরস্কার: ‘সেরা সিকিউরিটিজ হাউস– বাংলাদেশ ২০২৫’ এবং ‘সেরা গবেষণাধর্মী ব্যাংক– বাংলাদেশ ২০২৫’।
২০২১ সাল থেকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষে থাকা এই প্রতিষ্ঠান গবেষণা, প্রযুক্তি ও গ্রাহকসেবায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের গবেষণা বিভাগে রয়েছে অভিজ্ঞ বিশ্লেষক দল, যার মধ্যে তিনজন সিএফএ চার্টার হোল্ডার আছেন, যারা নিয়মিত বিনিয়োগকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বাজার বিশ্লেষণ প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠান দুটির প্রধান নির্বাহীরা গ্রাহক, অংশীদার ও কর্মীদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতেও উদ্ভাবন, বাজার উন্নয়ন এবং টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন।
ইউসিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেন, এই অর্জন শুধু পুরস্কার নয়, বরং আন্তর্জাতিকভাবে ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট ও ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজের নেতৃত্ব, পেশাদারিত্ব ও সাফল্যের স্বীকৃতি। এই দুই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে আর্থিক খাতের মান উন্নয়নে ধারাবাহিকভাবে নতুন মাইলফলক তৈরি করে চলেছে।
কর্পোরেট সংবাদ
এনআরবিসি ব্যাংকের পর্ষদ সভা

এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের ২০৭তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৮ জুলাই) প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. আলী হোসেন প্রধানিয়া।
এসময় স্বতন্ত্র পরিচালক ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ, এফসিএ, স্বতন্ত্র পরিচালক ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান মো. নুরুল হক, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. আবুল বশর, মো. আনোয়ার হোসেন ও ব্যারিস্টার মো. শফিকুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ড. মো. তৌহিদুল আলম খান এবং কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ আহসান হাবিব উপস্থিত ছিলেন।
পরিচালনা পর্ষদের সভায় ২০২৫ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (এপ্রিল-জুন) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন এবং ১২তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে আয়োজনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি বছরের ৩০ জুন শেষে ব্যাংকের এককভাবে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ০ দশমিক ০৭ পয়সা এবং সমন্বিতভাবে ইপিএস দাঁড়িয়েছে ০ দশমিক ০৮ পয়সায়। এককভাবে মোট সম্পদ মূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকা এবং সমন্বিতভাবে এনএভি হয়েছে ১ হাজার ৩৮১ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে এককভাবে শেয়ারপ্রতি এনএভি হয়েছে ১৬ টাকা ১৬ পয়সা এবং সমন্বিত হিসাবে শেয়ার প্রতি এনএভি দাঁড়িয়েছে ১৬ টাকা ৬৭ পয়সায়। এছাড়া এককভাবে শেয়ার প্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লোশ হয়েছে ১৮ টাকা ৪৭ পয়সা এবং সমন্বিতভাবে ক্যাশ ফ্লো হয়েছে ১৮ টাকা ৩৮ পয়সা।
কর্পোরেট সংবাদ
ছয় মাসে মেটলাইফের ১ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকার বীমা দাবি নিষ্পত্তি

২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) ১ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকার বীমা দাবি নিষ্পত্তি করেছে মেটলাইফ বাংলাদেশ। গ্রাহকদের বীমা সুবিধা হিসেবে পরিশোধ করা অর্থের পাশাপাশি চিকিৎসা ও মৃত্যু দাবি হিসেবে পরিশোধ করা অর্থ এর অন্তর্ভুক্ত।
এবিষয়ে মেটলাইফ বাংলাদেশের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আলা আহমদ বলেন, একজন গ্রাহকের বীমা অভিজ্ঞতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল বীমা দাবির টাকা পাওয়া। এজন্যই আমরা দাবি নিষ্পত্তি প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত, সহজ ও স্বচ্ছ করে তোলার প্রতি মনোযোগী। গ্রাহক যখন জানেন যে বীমা কোম্পানি কিভাবে বীমা দাবি নিষ্পত্তি করছে তখন বীমার প্রতি তার যেমন বিশ্বাস তৈরী হয় তেমনি মেটলাইফ এর এবং বীমা খাতের উপর আস্থা আরো দৃঢ় হয়। মেটলাইফের পরিশোধ করা মোট দাবির মধ্যে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা খরচ নির্বাহে ১৪৬ কোটি টাকা, মৃত্যু দাবি বাবদ ৫৫ কোটি টাকা এবং পলিসির পূর্ণ বা আংশিক মেয়াদপূর্তিসহ আরও অন্যান্য কারণে ১ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
বীমা দাবি নিষ্পত্তিতে সময়মত অর্থ পরিশোধের ধারাবাহিক রেকর্ড ধরে রেখেছে মেটলাইফ। ২০২৪ সালে মেটলাইফ বাংলাদেশে ২,৮৯৫ কোটি টাকার বীমা দাবি নিষ্পত্তি করে, যা জীবন বীমা খাতে সর্বোচ্চ।
গ্রাহকদের জন্য সেরা অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে অনলাইন আবেদনের মাধ্যমে মাত্র ৩ থেকে ৫ কর্মদিবসের মধ্যে বীমা দাবি নিষ্পত্তি সুবিধা দিচ্ছে মেটলাইফ বাংলাদেশ। নিজ উদ্যোগে সময়মত ও দক্ষতার সাথে বীমাদাবি পরিশোধ এর মাধ্যমে মেটলাইফ গ্রাহক সন্তুষ্টি অর্জন এবং সেই সাথে বীমার প্রতি জনসাধারণের আগ্রহ ও আস্থা ফিরিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
বর্তমানে, বাংলাদেশে ৯০০-টির বেশি প্রতিষ্ঠান এবং প্রায় ১০ লাখ গ্রাহকের সেবায় নিয়োজিত মেটলাইফ দেশের বৃহত্তম জীবন বীমা প্রতিষ্ঠান।