শিল্প-বাণিজ্য
আমদানি-রপ্তানি পণ্য খালাসে এনবিআরের নতুন শর্ত

আমদানি-রপ্তানি পণ্য খালাসের ক্ষেত্রে নতুন শর্ত দেওয়া হয়েছে। পণ্য চালান শুল্কায়নের ক্ষেত্রে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট ইত্যাদি বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডোর (ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো) সিস্টেমের মাধ্যমে দাখিল করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
১ ফেব্রুয়ারি থেকে কোনো ধরনের সনাতনী সার্টিফিকেট (ওইসব সংস্থার অনলাইনে আপলোড করা নয়) গ্রহণ করবে না শুল্ক কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
ওই ৭টি সরকারি প্রতিষ্ঠান হলো বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল (বেজা), বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি), বিস্ফোরক অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ন্যাশনাল অথরিটি ফর কেমিক্যাল উইপনস কনভেনশন।
এতে বলা হয়, আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে যেসব কাগজপত্র লাগে তা ওইসব সংশ্লিষ্ট দপ্তর আমদানিকারক-রপ্তানিকারকদের সার্টিফিকেট, সনদ ইত্যাদি কাগজপত্র অনলাইন সিস্টেমে সংরক্ষণ করবে, যেন শুল্ক কর্মকর্তারা যাচাই-বাছাই করতে পারেন।
জানা গেছে, আগামী ১ মার্চ থেকে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের সংশ্লিষ্ট ১৯টি সংস্থার সব কটিই এই প্রক্রিয়ার মধ্যে আসবে।
চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো সিস্টেমের উদ্বোধনের সময় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আগামী মার্চ থেকে সরকারি ১৯টি দপ্তরের লাইসেন্স-সংক্রান্ত সেবা কাগজপত্র দিয়ে করা যাবে না। সব অনলাইনে করতে হবে। অন্যথায় আমাদের হাতেও অস্ত্র আছে। অনলাইনে আবেদন না হলে আমাদের অর্থসচিব সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বরাদ্দ আটকে দেবেন।

শিল্প-বাণিজ্য
ভোমরা স্থলবন্দরে বেড়েছে রপ্তানি, রাজস্ব আয় ৯৭৮ কোটি টাকা

ভোমরা স্থলবন্দরে আমদানি কিছুটা কমলেও বেড়েছে রপ্তানি ও রাজস্ব আয়। সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বন্দরের রাজস্ব আয় হয়েছে ৯৪৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ৯২ কোটি ২৪ লাখ টাকা বেশি।
ভোমরা কাস্টমস স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বন্দর দিয়ে ৫৯ হাজার ৬৯৩টি গাড়িতে ২০ লাখ ৮২ হাজার ৭২২ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়েছে। এসব পণ্যের বাজারমূল্য প্রায় ৮ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। এতে রাজস্ব আয় হয়েছে ৯৭৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।
অন্যদিকে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ৬৩ হাজার ৯০২টি গাড়িতে ২৩ লাখ ৫৫ হাজার ৬২ টন পণ্য। সেই সময়ে রাজস্ব আয় হয়েছিল ৯০৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। ফলে আমদানির পরিমাণ কমলেও রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছে ২২ হাজার ৯৩৭টি গাড়িতে। এতে পণ্যের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৮৬ হাজার ১৩০ মেট্রিক টন এবং বাজারমূল্য ছিল ৩ হাজার ৪০৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
এর আগের বছর, অর্থাৎ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল ২৪ হাজার ৫৮০টি গাড়িতে। পণ্য ছিল ২ লাখ ৭৪ হাজার ১১০ টন, বাজারমূল্য ৩ হাজার ৯০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। সেই হিসেবে রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ২৩ শতাংশ।
ভোমরা কাস্টমস স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা রাসেল আহমেদ বলেন, ভোমরা একটি সম্ভাবনাময় স্থলবন্দর। রাজস্ব, আমদানি ও রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি এই বন্দরের সক্ষমতারই প্রমাণ। আশা করছি, আগামীতে এই ধারা আরও এগিয়ে যাবে।
বন্দরের আমদানি কমলেও রপ্তানি ও রাজস্ব আয়ের ইতিবাচক প্রবণতা সরকারকে দিয়েছে স্বস্তি। ব্যবসায়ীদের মতে, অবকাঠামো ও নীতিগত সহায়তা বাড়ালে ভোমরা হতে পারে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক হাব।
শিল্প-বাণিজ্য
আগামী অর্থবছরে ৭.০৫ লাখ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা

আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরে পাট চাষের জন্য জমির লক্ষ্যমাত্রা ৭.০৫ লক্ষ হেক্টর। উক্ত জমিতে চাষাবাদের জন্য পাট বীজ প্রয়োজন ৫০০০-৬০০০ টন। বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিজেআরআই) কৃষি উইং কর্তৃক আয়োজিত ‘বার্ষিক অভ্যন্তরীণ গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালা-২০২৫’ অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশে পাটের মোট উৎপাদন ১৫ লক্ষ মেট্রিক টন, পাটকাঠির মোট উৎপাদন ৩০ লক্ষ মেট্রিক টন, চারকোলের উৎপাদন ৬ লক্ষ মেট্রিক টন।
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, পাট নিয়ে অনেক কিছু করার আছে, পাটের সম্ভাবনা কোনদিন শেষ হবে না। “কাঁচা পাট নিয়ে অন্যান্য দেশ কিভাবে কাজ করছে তার উপরেও মার্কেট রিসার্চ এ গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ। বদ্ধ চিন্তাধারা থেকে বের হয়ে বিজ্ঞানীদের বিশদভাবে কাজ করতে হবে, কারণ পাট নিয়ে অনেক কিছু করার আছে, পাটের সম্ভাবনা কোনদিন শেষ হবে না। মার্কেট এবং বাস্তবতার নিরিক্ষে গবেষণা করতে হবে। আমাদের সীমাবদ্ধ জমিতে পাটের উৎপাদনকে আরও বাড়ানো যায়, তা নিয়েও কাজ করতে হবে,” বলেন তিনি।
কৃষি সচিব আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এর রিসার্চ সেক্টর এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান একত্রিত হয়ে কাজ করলে পাটের গবেষণা আরও এগিয়ে যাবে। “পাট শুধু অর্থকরী ফসল নয়, পাট বাংলাদেশের গর্ব, বাংলার পরিচিতির মাধ্যম। পৃথিবীর অন্য প্রান্তের দেশ কিউবাও বাংলাদেশ থেকে পাট আমদানি করে দুইটি কারখানা তৈরি করেছে। চাহিদা থাকা সত্ত্বেও পৃথিবীর অনেক দেশ পাট উৎপাদন করতে পারে না সেদেশের পরিবেশের কারণে, সে হিসেবে পাটের জন্য বাংলাদেশ আশীর্বাদপুষ্ট। প্রযুক্তি দিন দিন যেমন পরিবর্তন হচ্ছে, ঠিক তেমনই পাটের প্রযুক্তি দিয়ে পাটকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করতে হবে,” বলেন কৃষি সচিব।
সভাপতির বক্তব্যে বিজেআরআইর মহাপরিচালক ড. নার্গীস আক্তার বলেন, পাট কেবল আমাদের সোনালি আঁশ নয়, আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্যের এক সোনালি অধ্যায়। সূচনালগ্ন হতে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট মোট ৫৭টি জাত ২২৩টি কৃষি প্রযুক্তি এবং ৬৯টি শিল্প ও কারিগরি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। “পাট কৃষিজাত পণ্য হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় চাষিরা কৃষিঋণের মতো পাটঋণ এবং পণ্য রপ্তানিতে সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে। সরকার থেকে ২০% নগদ প্রণোদনা পায় চারকোল রপ্তানিকারকরা। বাংলাদেশে প্রায় ৫০ টি চারকোলের কারখানা রয়েছে। বর্তমানে কিছু কারখানা বন্ধ আছে।”
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মানীত অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা অনুবিভাগ) মো. আবু জুবাইর হোসেন বাবলু, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল এর নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. নাজমুন নাহার করিম এবং শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আব্দুল লতিফ।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিজেআরআই এর প্রজনন বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. গোলাম মোস্তফা এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিজেআরআই এর জেনোম গবেষণা কেন্দ্র এর সমন্বয়ক ও মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এস. এম. মাহবুব আলী।
অন্যান্যদের মাঝে আরো উপস্থিত ছিলেন, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. বেগম সামিয়া সুলতানা, তুলা উন্নয়ন বোর্ড এর নির্বাহী পরিচালক মো. রেজাউল আমিন, কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক মো. মসীহুর রহমান, জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমির মহাপরিচালক মো. সাইফুল আজম খান, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সী এর পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (গবেষণা অধিশাখা) ড. মো. লুৎফর রহমান, যুগ্মসচিব (আইন অধিশাখা) ড. মো. মোকতার হোসেন, বিজেআরআই এর পরিচালক (জুট-টেক্সটাইল) ড. ফেরদৌস আরা দিলরুবা, পরিচালক (পিটিসি) ড. মাহমুদ আল হোসেন, উক্ত ইনস্টিটিউটের সকল মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) ড. মো. ইয়ারউদ্দিন সরকার, কৃষি সচিবের একান্ত সচিব (উপসচিব) মো. মাকছুদুল ইসলাম, বিজেআরআইর সকল স্তরের বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তাবৃন্দ সহ কৃষি সেক্টরের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং কৃষক প্রতিনিধিগণ।
অর্থনীতি
ব্যাংকিং খাত বর্তমানে সংকটময় মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে: ডিসিসিআই সভাপতি

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত বর্তমানে এক সংকটময় মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি বলেন, ব্যাংক খাতের খেলাপির কারণে আর্থিক স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগের ওপর বড় ঝুঁকি তৈরি করছে। এর ফলে ঋণপ্রাপ্তি কঠিন হয়ে গেছে এবং এসএমই খাতসহ উৎপাদনমুখী ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়ছেন বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকিন আহমেদ।
শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীর ডিসিসিআই অডিটরিয়ামে ‘বর্তমান ব্যাংকিং খাতের চ্যালেঞ্জ: ঋণগ্রহীতাদের দৃষ্টিকোণ’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (মুদ্রানীতি বিভাগ) ড. মো. এজাজুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রিভারস্টোন ক্যাপিটাল লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী ও ডিসিসিআই-এর সাবেক সভাপতি মো. আশরাফ আহমেদ।
তাসকিন আহমেদ বলেন, দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ এবছরের জুন পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। এটি মোট ঋণের ২৪ শতাংশের বেশি। যা আর্থিক স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগের ওপর বড় ঝুঁকি তৈরি করছে। এর ফলে ঋণপ্রাপ্তি কঠিন হয়ে গেছে, এসএমই খাতসহ উৎপাদনমুখী ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়ছেন এবং বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ৭.৫৭ শতাংশে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে থাকায় নীতি সুদহার ও তারল্য সংকুচিত হয়েছে, ফলে মূলধনের খরচ বেড়েছে। এতে করে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
এ অবস্থায় তিনি কয়েকটি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: ঋণগ্রহীতাদের পুনর্বাসনমূলক উদ্যোগ গ্রহণ, উৎপাদনমুখী খাতে (যেমন এসএমই, কৃষি, সবুজ শিল্প) সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা, সেক্টরভিত্তিক প্রণোদনা এবং গ্যারান্টি স্কিম, ঋণের শর্ত শিথিল করে দীর্ঘ মেয়াদে পরিশোধের সুযোগ দেওয়া, ঋণ শ্রেণিকরণ সময়সীমা ৬ মাস বাড়ানো এবং ইচ্ছাকৃত ও অনিচ্ছাকৃত খেলাপি আলাদা করে চিহ্নিত করা।
ঢাকা চেম্বার সভাপতি বলেন, ব্যাংকিং খাতের সংস্কার শুধু ঝুঁকির দিক থেকে নয়, ঋণগ্রহীতাদের কথাও মাথায় রেখে করতে হবে। নইলে বিনিয়োগ, উদ্ভাবন ও প্রতিযোগিতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সেমিনারে বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ী নেতা ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
কাফি
শিল্প-বাণিজ্য
এমএসএমই দিবস আজ

আন্তর্জাতিক অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ (এমএসএমই) দিবস আজ। ২০২৫ সালে এ দিবসের প্রতিপাদ্য– টেকসই প্রবৃদ্ধি ও উদ্ভাবনের চালিকাশক্তি হিসেবে এমএসএমইর ভূমিকা সম্প্রসারণ।
অর্থনীতিতে ছোট ও মাঝারি উদ্যোগের অবদানকে স্বীকৃতি দিতে এবং সচেতনতা তৈরিতে বিশ্বজুড়ে ২৭ জুন পালন করা হয় এ দিবস। ২০১৭ সালে জাতিসংঘ ২৭ জুনকে এমএসএমই দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
বাংলাদেশে প্রতিবছর আন্তর্জাতিক এমএসএমই দিবস পালন করা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে মূল আয়োজন করে এসএমই ফাউন্ডেশন। এছাড়া বেসরকারি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ দিবস পালন করে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, এবার এমএসএমই দিবস দুটি বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলন সামনে রেখে উদযাপিত হচ্ছে, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্পেনের সেভিলায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘উন্নয়নের জন্য অর্থায়ন’ শীর্ষক চতুর্থ আন্তর্জাতিক সম্মেলন। এছাড়া কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে সামাজিক উন্নয়ন-বিষয়ক দ্বিতীয় বিশ্ব সম্মেলন।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ব্যবসার ৯০ শতাংশ, কর্মসংস্থানের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ এবং জিডিপিতে ৫০ শতাংশ অবদান এমএসএমই খাতের। বিশ্বজুড়ে কর্মক্ষম দরিদ্র, নারী, যুবক ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার উন্নয়নের মেরুদণ্ড হিসেবে ভূমিকা রাখছে এমএসএমই খাত।
শিল্প-বাণিজ্য
গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড পেলো পিএইচপি শীপ ব্রেকিং এন্ড রিসাইকেলিং ইন্ডাস্ট্রিজ

গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড বা পরিবেশবান্ধব কারখানা পুরস্কার পেয়েছে পিএইচপি শীপ ব্রেকিংএন্ড রিসাইকেলিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা অধিদপ্তর আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথিদের হাত থেকে এ পুরস্কার নেন পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবায় একুশে পদক পাওয়া সূফী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ও পিএইচপি শীপ ব্রেকিং অ্যান্ড রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জহিরুল ইসলাম রিংকু।
উল্লেখ্য, এ বছর গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ৩০টি প্রতিষ্ঠান। পরিবেশবান্ধব কার্যপদ্ধতি, জ্বালানি দক্ষতা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং কর্মপরিবেশে উৎকর্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।
নিট তৈরি পোশাক খাত থেকে পুরস্কার পেয়েছে নরসিংদীর পলাশের চরকা টেক্সটাইল, গাজীপুরের কালিয়াকৈরের ইকোটেক্স ও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ফকির ফ্যাশন। ওভেন তৈরি পোশাক খাত থেকে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার তারাসিমা অ্যাপারেলস, গাজীপুরের জিরানী বাজারের আউকু টেক্স ও ময়মনসিংহের স্কয়ার ফ্যাশন পুরস্কার পেয়েছে।
বস্ত্র খাতের চারটি প্রতিষ্ঠান এবার পরিবেশবান্ধব কারখানার পুরস্কার পেয়েছে। সেগুলো হচ্ছে মানিকগঞ্জের চরকান্দার আকিজ টেক্সটাইল মিলস, হবিগঞ্জের মাধবপুরের পাইওনিয়ার ডেনিম, চট্টগ্রাম চান্দগাঁওয়ের কেডিএস টেক্সটাইল মিলস ও পটিয়ার ফোর এইচ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং। অটোমোবাইল খাতের একটিমাত্র প্রতিষ্ঠান পুরস্কার পেয়েছে। সেটি হলো চট্টগ্রামের নাসিরাবাদের সরকারি প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ।
ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক পণ্য প্রস্তুতকারক খাতের তিনটি প্রতিষ্ঠান পুরস্কার পাচ্ছে। সেগুলো হলো নরসিংদীর শাষপুরে অবস্থিত ট্রান্সকম ইলেকট্রনিকস, নরসিংদীর শিবপুরের ফেয়ার ইলেকট্রনিকস ও গাজীপুরের কালিয়াকৈরের ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ।
সরঞ্জাম ও সংযোগশিল্প খাত থেকে একমাত্র পুরস্কার পেয়েছে ঢাকার ধামরাইয়ের আদজি ট্রিমস। খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতে পুরস্কার পাচ্ছে ধামরাইয়ের আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ও হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জের হবিগঞ্জ অ্যাগ্রো। চা–শিল্প থেকে পুরস্কার পেয়েছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের জেরিন চা-বাগান ও মির্জাপুর চা-বাগান।
চামড়াশিল্প (তৈরি পণ্য) খাতের একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে ময়মনসিংহের ভালুকার সুনিভার্স ফুটওয়্যার। এ ছাড়া পাট খাতে রংপুরের রবার্টগঞ্জের কারুপণ্য রংপুর, টাইলস অ্যান্ড সিরামিক খাতে গাজীপুরের শ্রীপুরের এক্স সিরামিক পুরস্কার পেয়েছে।
এ ছাড়া প্রসাধন খাতে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় রিমার্ক এইচবি ও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের স্কয়ার টয়লেট্রিজ পুরস্কার পেয়েছে। ওষুধ খাতে একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস।
জাহাজভাঙা ও জাহাজ নির্মাণ খাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের পিএইচপি শিপ ব্রেকিং অ্যান্ড রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজ, খুলনার লবণচরার খুলনা শিপইয়ার্ড ও সীতাকুণ্ডের কেআর শিপ রিসাইক্লিং ইয়ার্ড পরিবেশবান্ধব শিল্প হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে। এ ছাড়া সিমেন্ট খাতে গাজীপুরের কালীগঞ্জের সেভেন সার্কেল ও ইস্পাত খাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএসআরএম স্টিলস এবার পুরস্কার পেয়েছে।
পুরস্কার হিসেবে ট্রফি, সনদ ও এক লাখ টাকা পেয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো।