জাতীয়
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার এজেন্ডা সমর্থন করছে ইআইবি

অন্তর্বর্তী সরকারকে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বাস্তবায়নে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংক (ইআইবি)। একই সঙ্গে এ সরকারের সংস্কার এজেন্ডাকে সমর্থন করার কথাও জানিয়েছে ইআইবি।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে ইআইবির ভাইস প্রেসিডেন্ট নিকোলা বিয়ার এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, আমরা খুব চ্যালেঞ্জিং সময়ে এসেছি; আমরা অন্তর্বর্তী সরকার এবং এর সংস্কার এজেন্ডাকে সমর্থন করি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কাছে প্রযুক্তিগত দক্ষতা রয়েছে, যা এ সরকারকে সহায়তা করতে পারে।
সরকারের উদ্দেশে নিকোলা বিয়ার বলেন, আমরা যা কিছু করতে পারি, দয়া করে জানান। এটি দৃশ্যমান করা গুরুত্বপূর্ণ যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার শুধু কাজ করছে তা-ই নয়, বরং ফলাফলও দেখাচ্ছে।
বর্তমান সময়টি সুযোগের সময় বলে অভিহিত করে ড. ইউনূস দুর্নীতি দমন, শক্তিতে সবুজ রূপান্তর এবং সুন্দরবন ম্যানগ্রোভ বন এবং আশপাশের অঞ্চল ও নদীব্যবস্থার জন্য একটি ব্যাপক পরিকল্পনা প্রণয়নে ইআইবির সহায়তা চেয়েছেন। তিনি পূর্ব বাংলাদেশে জনগণের উন্নয়ন এবং উত্তর বাংলাদেশে জল ব্যবস্থাপনার জন্য চট্টগ্রাম বন্দরে সুবিধা নির্মাণে ইআইবির সমর্থনও চেয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এ অঞ্চলের বৃহত্তম বন্দরে পূর্ব বাংলাদেশের উন্নয়ন পূর্ব ভারত এবং মিয়ানমারকেও উপকৃত করবে।
গত বছর সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের পাশে ইইউ প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেয়েনের সঙ্গে তার সাক্ষাতের কথাও তিনি স্মরণ করেছেন, যেখানে তারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই এবং জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে বর্ধিত পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সহায়তার বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন।
তিনি ইইউ দূতদের সঙ্গে তার সাম্প্রতিক সাক্ষাতের কথাও উল্লেখ করেছেন, যেখানে সহযোগিতার অনেক ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল।
ড. ইউনূস আগামী সাধারণ নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনার বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ‘স্থানীয় সরকার সত্যিকার অর্থেই স্থানীয় এবং একটি সরকার’ তা নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতিও একই সঙ্গে নিচ্ছে।
এসময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, বিডা চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ চৌধুরী, এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মর্শেদ, ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী ও ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলারসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয়
বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু

দ্বিতীয় পর্বে নিজামুদ্দিন মারকাজ অনুসারীদের (সাদ কান্ধলভীপন্থি) বিশ্ব ইজতেমা শুরু হয়েছে। শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরআগে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) থেকে বিভিন্ন জেলার মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে আসতে থাকেন। বিশেষ করে বিপুলসংখ্যক বিদেশি মুসল্লি বৃহস্পতিবার রাত থেকে ময়দানে এসে অবস্থান নেন।
আজ ইজতেমা ময়দানে জুমার নামাজ আদায় করা হবে। এতে গাজীপুর ও আশপাশের এলাকার লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশ নেবেন।
এদিকে ইতিহাসে এবারই প্রথম শবে বরাতের রজনীতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা। দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লি শুক্রবার রাতে টঙ্গীর তুরাগ তীরে ইজতেমার ময়দানে একসঙ্গে পবিত্র শবে বরাত পালন করবেন বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সারাদেশ থেকে লাখ লাখ মুসল্লি ময়দানে জড়ো হন। পবিত্র ও মর্যাদাপূর্ণ এই রজনীতে ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হওয়ায় মুসল্লিদের মাঝে বাড়তি এক আবেগ কাজ করছে। ঢাকা ও গাজীপুরের আশপাশের লাখো মুসল্লি মাগরিবের নামাজের পর থেকে ইজতেমার ময়দানে অবস্থান করবেন। বিশ্ব ইজতেমার এই পর্বে অংশ নিচ্ছেন তাবলিগ জামাতের মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা।
বৃহস্পতিবার জোহরের নামাজের পর কাকরাইল মসজিদের বর্ষীয়ান মুরুব্বি মাওলানা মোশাররফ হোসেনের স্বাগতিক বয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। আসরে পাকিস্তানের মাওলানা শায়েখ হারুন কোরাইশির বয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমার মূল বয়ান শুরু হয়।
ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের মিডিয়া সমন্বয়ক মো. সায়েম বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমার ইতিহাসে এবারই প্রথম আমরা শবে বরাত পাচ্ছি। ইজতেমা মাঠে উপস্থিত লাখো মানুষ একসঙ্গে শবে বরাতের নামাজ পড়বেন। নামাজ শেষে একসঙ্গে রোজা রাখবেন। বড় জামাতে জুমার নামাজ আদায় করবেন। এটা অনেক বড় পাওয়া।’
শুক্রবার ফজরের পর বয়ান করেন মাওলানা আব্দুস সাত্তার (নিজামুদ্দিন)। তার বয়ান তরজমা করেন মুফতি আজিম উদ্দিন। জুমার নামাজের পর বয়ান করবেন ওয়াসিফুল ইসলাম (কাকরাইল)। আসর নামাজের পর বয়ান করবেন হাফেজ মনজুর (নিজামুদ্দিন)। তরজমা করবেন হাফেজ মনজুর। বাদ মাগরিব বয়ান করবেন মাওলানা জমশেদ (নিজামুদ্দিন)। তার বয়ান বাংলায় তরজমা করবেন বাংলাদেশের মাওলানা মুনির বিন ইউসুফ।
ররিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) আখেরি মোনাজাতের দিন ফজরের নামাজের পর বয়ান করবেন মুফতি রিয়াসাত (নিজামুদ্দিন)। আর হেদায়েতের কথা ও দোয়া পরিচালনা করবেন মাওলানা জামশেদ (নিজামুদ্দিন)।
এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি শুরু হয়ে টানা ছয় দিন চলে শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থি) তাবলিগ জামাতের প্রথম পর্বের ইজতেমা। ৫ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দুই ধাপের প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমার সমাপ্তি ঘটে। মাঝে আট দিন বিরতি দিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাযের অনুসারী (মাওলানা সাদপন্থি) মুসল্লিরা বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে অংশ নিচ্ছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
এনআইওএইচসি সভাপতির দায়িত্ব নিলো বাংলাদেশ নৌবাহিনী

নর্থ ইন্ডিয়ান ওশান হাইড্রোগ্রাফিক কমিশন (এনআইওএইচসি) এর ২৪তম সভা ১১-১৩ ফেব্রুয়ারি থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সহকারী নৌবাহিনী প্রধান (অপারেশন্স) ও ন্যাশনাল হাইড্রোগ্রাফিক কমিটির চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসার নেতৃত্বে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর দুই সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সভায় অংশগ্রহণ করে।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আইএসপিআর জানায়, থাইল্যান্ডের ব্যাংককে আয়োজিত এনআইওএইচসি-এর ২৪তম সভায় বাংলাদেশ ছাড়াও কমিশনের সদস্য রাষ্ট্র মিশর, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার, পাকিস্তান, সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা ও যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি ৬টি সহযোগী সদস্য রাষ্ট্র ও ৩টি পর্যবেক্ষক দেশ এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করে। ওই সভায় হাইড্রোগ্রাফি কর্মকাণ্ডের মানোন্নয়ন, আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, সুনীল অর্থনীতি প্রসারে হাইড্রোগ্রাফির ভূমিকা, ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা এবং নিরাপদ নৌ চলাচলে হাইড্রোগ্রাফির গুরুত্ব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়া সামুদ্রিক নিরাপত্তা, সামুদ্রিক সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-১৪ (জলজ জীবন) অর্জনে হাইড্রোগ্রাফির ভূমিকা বিষয়ে আলোচনা হয়।
আইএসপিআর জানায়, কমিশনের ২৪তম সভার সমাপনী দিনে সদস্য রাষ্ট্রসমূহের সর্বসম্মতিক্রমে ২০২৫-২৭ সালের জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনী থাইল্যান্ড নৌবাহিনীর কাছ থেকে এনআইওএইচসির সভাপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করে। এনআইওএইচসির সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী নির্বাচিত হওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এটি আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, নিরাপদ ও কার্যকর নৌ পরিবহন নিশ্চিত করতে হাইড্রোগ্রাফিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রতিশ্রুতির বহিঃপ্রকাশ।
সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আঞ্চলিক হাইড্রোগ্রাফিক নীতিমালা প্রণয়ন এবং টেকসই সামুদ্রিক উন্নয়কে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। নৌবাহিনীর এ অর্জন আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে আরও উজ্জ্বল করবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
এই দিবসকে ডাস্টবিনে ফেলুন, ভালোবাসা দিবস নিয়ে আহমাদুল্লাহ

১৪ ফেব্রুয়ারি তরুণ প্রজন্মের ভালোবাসা দিবস উদযাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জনপ্রিয় ইসলামী চিন্তাবিদ ও আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এর সঙ্গে তিনি একটি শিক্ষণীয় ভিডিও জুড়ে দেন।
জনপ্রিয় এ ইসলামী বক্তা লেখেন, ১৪ ফেব্রুয়ারি উদযাপনের আগে একবার ভাবুন। এই দিবসকে ডাস্টবিনে ফেলুন।
এর আগে ১০ ফেব্রুয়ারি দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, ফেব্রুয়ারি মাস অন্যায়ের বিরুদ্ধে উজ্জীবিত হওয়ার মাস। শোষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার মাস। এ মাসে আত্মত্যাগকারী আবদুস সালাম, আবদুল জব্বার, শফিউর রহমানরা আমাদেরকে সেই শিক্ষাই দেয়। অথচ খুব ধীরে ধীরে, সুকৌশলে, এক শ্রেণির মিডিয়া ও মুনাফালোভীরা নিজেদের স্বার্থে আমাদের প্রেরণার মাসটাকে নোংরামির মাসে পরিণত করেছে।
তিনি বলেন, আমাদের শৈশব-কৈশোরের ফেব্রুয়ারি ছিল সাহস ও ঘুরে দাঁড়াবার শক্তিতে প্রত্যুজ্জ্বল। বর্তমান প্রজন্মের কাছে ফেব্রুয়ারি মানেই অবৈধ সম্পর্কের ছড়াছড়ি। যেসব তরুণ-তরুণী এই নষ্ট স্রোতে গা ভাসাচ্ছে, তারা বুঝতেও পারছে না তারা এক নাচের পুতুল। তাদেরকে ব্যবহার করা হচ্ছে সুগভীর এক বাণিজ্যিক প্রকল্প ও শালীনতা ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে।
তিনি আরও বলেন, ফেব্রুয়ারির প্রকৃত চেতনা ফিরিয়ে আনার এবং তরুণ্য-বিধ্বংসী সকল নোংরা আয়োজনের বিরুদ্ধে এখনই যদি আমরা সজাগ না হই, তবে পশ্চিমাদের মতো আমাদের পরিবার-ব্যবস্থাও ভেঙে খানখান হয়ে যাবে। তখন শত আফসোস করেও কোনো লাভ হবে না।
আহমাদুল্লাহর এসব পোস্টে নেটিজেনদের অনেককেই কমেন্ট করতে দেখা যায়। অধিকাংশ মানুষই তার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন, আবার কেউ কেউ ভিন্নমতও প্রকাশ করেছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
প্রধানমন্ত্রীকে জবাবদিহিতায় আনতে ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কারের সুপারিশ

সংবিধান সংস্কার কমিশন প্রধান ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতেই সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। ফ্যাসিবাদী শাসনের আশঙ্কা মোকাবিলায় ক্ষমতাসীনদের জবাবদিহিতার জন্য নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে অন্য কোনো পথ না পেয়ে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। একবার প্রধানমন্ত্রী হলেই তাকে আর কখনো জবাবদিহি করতে হয় না। এটা থেকে বেরিয়ে আসতেই ওই অনুচ্ছেদ পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে। ফ্যাসিবাদী শাসনের আশঙ্কা মোকাবিলায় ক্ষমতাসীনদের জবাবদিহিতার প্রতিষ্ঠান তৈরির পাশাপাশি সেগুলোর স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে কমিশনের প্রতিবেদনে এমন সুপারিশ করা হয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য থাকলেও সংস্কারের বিষয়ে সবাই ঐকমত্য আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ড. আলী রীয়াজ বলেন, ভবিষ্যতে ফ্যাসিবাদী শাসনের আশঙ্কা মোকাবিলার উপায় হচ্ছে শক্তিশালী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং তা স্থায়ী করা। ক্ষমতাসীনদের জবাবদিহিতার জন্য প্রতিষ্ঠান তৈরি ও সেগুলোর স্বাধীনতা নিশ্চিত করাও জরুরি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় স্থানীয় পর্যায় থেকে শাসনব্যবস্থার সর্বস্তরে নাগরিকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তাদের প্রতিনিধিত্বকে কার্যকর করে তুলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠন করা হলে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও প্রক্রিয়া জোরদার হবে। সংবিধানের অপব্যবহার রোধ করা সম্ভব হবে। সংবিধান সংশোধনে জনগণের ম্যান্ডেট নেওয়া হয়নি আগে। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই সংকট তৈরি হয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কমিশন প্রধান বলেন, গণভোটের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার হবে কি-না তা ঠিক করবে এই সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলো। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচনের পূর্বে অনেক সংস্কার সম্ভব। সে সব বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সংস্কার নিয়ে সারা দেশের মানুষের মতামত নেওয়া হয়েছে। লিখিত বক্তব্য দিয়েছে ২৫টি রাজনৈতিক দল ও তিনটি জোট। এ ছাড়া সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধি ও সংবিধান বিশেষজ্ঞসহ সংশ্লিষ্টদের মতামত পর্যালোচনা করেই প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে। প্রতিবেদনে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের মহান আদর্শ এবং ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের জনআকাঙ্খার প্রতিফলনস্বরূপ সংবিধান ও রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ ও গণতন্ত্র’ প্রস্তাব, প্রধানমন্ত্রীর পদের ক্ষমতা হ্রাসসহ সাতটি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচনের প্রার্থী হওয়ার বয়স ২১ বছর নির্ধারণের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি শিক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত এমন নয়। কারণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাহিরেও যোগ্য মানুষ থাকেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তরুণদের ভূমিকা বেশি। তাই আইন প্রণয়নে তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি হবে। এটি রাজনৈতিক দলের কাছে কমিশনের প্রস্তাবনা। সংবিধানের বিষয়টি কীভাবে হবে, সেটা সরকারের বিষয়। তারা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। এ রকম পরিস্থিতি দেশে আগে কখনোই আসেনি।
ড. আলী রীয়াজ বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং নাগরিকদের সুবিচার প্রাপ্তির জন্যে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপের সুপারিশ আছে। নাগরিকদের অধিকারগুলো সম্প্রসারণের ওপর জোর দিয়েছি এবং সেগুলো বলবৎকরণে রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতার বিষয়টিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করেছি।
উল্লেখ্য, ছয় সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো নিয়ে অধিক পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনার জন্য প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্যের কমিশন গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন হতে পারে: প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তার সরকার যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন আয়োজন করবে। এটা এ বছরের ডিসেম্বরেও হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুবাইয়ে ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিটে যোগ দিয়ে সিএনএনের সাংবাদিক বেকি অ্যান্ডারসনের সঞ্চালনায় এক অধিবেশনে তিনি এ কথা জানান।
বেকি অ্যান্ডারসনের প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা ১৫টি বিভিন্ন খাতের জন্য সংস্কার গঠন করেছি। আইন-শৃঙ্খলা, পুলিশ, সংবিধান, নির্বাচনসহ অন্যান্য সংস্কার কমিশনগুলো প্রতিবেদন তৈরি করেছে। তারা বিভিন্ন ধরনের সুপারিশ করছে। এখনো আমরা যেটা করব সেটা হলো ঐকমত্য গঠন।
তিনি বলেন, আমরা এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসছি। যেসব সুপারিশের বিষয়ে সবাই একমত পোষণ করবে, সেগুলো নিয়ে আমরা একটা ‘সনদ’ তৈরি করব। আমরা সেগুলো বাস্তবায়ন করে নির্বাচন দেবো। যত দ্রুত সম্ভব আমরা নির্বাচন দেবো। এটা এ বছরের ডিসেম্বরেও হতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের সবকিছু ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। আমরা একটু একটু করে সব গুছিয়ে নিচ্ছি। এই হলো আমাদের অবস্থা। অর্থনীতি, সমাজ, প্রশাসন সবকিছু ভেঙে পড়েছিল। আমাদের কাজ এই সবকিছু পুনর্গঠন। যেমন, ব্যাংকিং ব্যবস্থা পুরোপুরি ধসে গিয়েছিল। ব্যাংকগুলো থেকে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়ে গেছে। আমাদের রিজার্ভ তলানিতে চলে গেছে। প্রথমত অর্থনীতি, দ্বিতীয়ত আইন-শৃঙ্খলা, এরপর প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিক করতে হবে।
নির্বাচন শেষে আরও কিছু সময় নেতৃত্বে থাকার ইচ্ছা সম্পর্কে জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, আমি এটা আগেও স্পষ্ট করে বলেছি। নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পর আমি যে কাজে ছিলাম, সেখানেই ফিরে যাব, কারণ আমি সে কাজেই আনন্দ পাই।