আন্তর্জাতিক
ব্যারিস্টার আরমানের স্ত্রীকে হেনস্তা করিয়েছিলেন টিউলিপ
২০১৬ সালে গুম হয়েছিলেন ব্যারিস্টার আরমান। ২০১৭ সালে আরমানের গুম সংক্রান্ত বিষয়ে এক ব্রিটিশ সাংবাদিক টিউলিপকে প্রশ্ন করায় ঢাকায় আরমানের স্ত্রীকে হেনস্তা করেছিল বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।
বুধবার এক প্রতিবেদনে ব্যারিস্টার আরমানের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সালে গুম হওয়ার পর আরমানের ব্যাপারে ২০১৭ সালে শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে টিউলিপকে প্রশ্ন করেছিলেন এক ব্রিটিশ সাংবাদিক। টিউলিপ যেহেতু ব্রিটেনের নাগরিক ও তখন এমপি ছিলেন। তাই ওই সাংবাদিকের ধারণা ছিল যে, এ বিষয়ে শেখ হাসিনার কাছে একটি ফোন করলে আরমান হয়ত মুক্তি পেতে পারেন।
তবে আরমানের বিষয়ে চ্যানেল-৪ এর ব্রিটিশ ওই সাংবাদিকের প্রশ্নে ক্ষিপ্ত হন টিউলিপ। তিনি পরবর্তীতে তার ক্ষমতা ও প্রশাসনকে দিয়ে আরমানের স্ত্রীকে হেনস্তা করান বলে অভিযোগ রয়েছে।
মীর আহমাদ বিন কাসেম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে জানিয়েছেন যে, ‘চ্যানেল-৪ প্রতিবেদনটি প্রচার করার কয়েক ঘণ্টা আগে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী আমার বাড়িতে যায়। আমার স্ত্রীকে চুপ থাকতে বলে। বাইরের দেশের কার কার সঙ্গে আমার স্ত্রীর যোগাযোগ আছে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করে। তাকে এমনভাবে হেনস্তা করা হচ্ছিল যেন কোনো সন্ত্রাসীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”
মীর আহমাদ বিন কাসেম বলেন, ‘এই ইস্যুতে টিউলিপকে মুখোমুখি প্রশ্ন করাতে শেখ পরিবারে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। যার কারণে বাংলাদেশের প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন আচরণ করা হয়েছিল।‘
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে যে, ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর শনিবার সকালে টিউলিপ সিদ্দিকের কাছে গিয়েছিলেন চ্যানেল-৪ এর সাংবাদিক। ব্যারিস্টার আরমান সম্পর্কে জানিয়ে টিউলিপকে ওই সাংবাদিক বলেছিলেন, ‘আপনার একটি ফোন কল অনেক পার্থক্য গড়ে দিতে পারে’।
তবে ওই সাংবাদিকের প্রশ্নে বেজায় ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন টিউলিপ। ওই সাংবাদিকের ওপর চড়াও হয়ে উল্টো জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, ‘আরমান কী তার সংসদীয় আসনের কেউ? তিনি কী ব্রিটিশ’? জবাবে সাংবাদিক বলেন, ’আরমান বাংলাদেশি। তার পরিবার আপনার কাছে একাধিকবার অনুরোধ করেছে কিছু করার জন্য।’
তখন টিউলিপ বলেন, ’আপনি কী জানেন আমি ব্রিটিশ এমপি এবং আমার জন্ম হয়েছে লন্ডনে।’ চ্যানেল-৪ এর সাংবাদিক বলেন, ’কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আপনার গভীর সম্পর্ক আছে। আপনি নিজেই বলেছেন আপনি আওয়ামী সরকারের মুখপাত্র। আপনার খালা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।’ ওই মুহূর্তে টিউলিপ আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ’আপনি কী বলতে চান আমি বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ? আমি ব্রিটিশ এমপি। আমাকে বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ বলার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। এটি বলে তিনি চলে যেতে থাকেন। তখন ওই সাংবাদিক বলতে থাকেন, ’আপনি আরমানের ব্যাপারে একটি ফোন দিতে পারবেন না? কেন পারবেন না।’
টিউলিপের সাথে চ্যানেল-৪ এর ওই সাংবাদিকের এই কথোপকথনের তিন দিন পরে ২৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় প্রতিবেদনটি সম্প্রচার করা হয়েছিল।
কাসেমের তথ্যমতে, ওই দিনই সেই প্রতিবেদন প্রচার হওয়ার কয়েক ঘন্টা আগে র্যাবের সদস্যরা তার পরিবারের বাড়িটি ঘিরে ফেলে। প্রায় এক ডজনখানেক সশস্ত্র লোক বাড়িতে প্রবেশ করে এবং কাসেমের স্ত্রীকে বিদেশে কার কার সাথে যোগাযোগ রয়েছে তার তথ্য জানতে চায়।
তাকে এমনভাবে হেনস্তা করা হচ্ছিল যেন কোনো সন্ত্রাসীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।” বলে জানান মীর আহমাদ বিন কাসেম।
ব্যারিস্টার আরমান লন্ডনে পড়ালেখা করেছেন। ২০১৬ সালে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে তার বাবার বিচার চলাকালে তিনি তার আইনজীবীর ভূমিকা পালন করছিলেন। ঠিক তখনই তাকে গুম করা হয়। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতন হলে দীর্ঘ আট বছর পর বাড়ি ফেরেন তিনি। ওই সময় দেখা যায়, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী আরমান রুগ্ন হয়ে গেছেন। তাকে চেনাও যাচ্ছিল না।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার দল লেবার পার্টির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। কিন্তু কেউই কোনো কথা বলেননি। তবে টিউলিপের এক সহযোগী বলেছেন, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ব্যারিস্টার আরমানের বিষয়টি নিয়ে ফরেন অফিসে পত্র পাঠিয়েছিলেন তিনি।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
এবার যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্ক আরোপ করল চীন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের জবাবে এবার যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য আমদানির ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে চীন। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) এই ঘোষণা দেয় চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
একই সঙ্গে টেক জায়ান্ট গুগলের বিরুদ্ধে তদন্তসহ অন্যান্য বাণিজ্য-সম্পর্কিত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছে দেশটি।
চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয়, তারা মার্কিন কয়লা ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) ওপর ১৫ শতাংশ এবং অপরিশোধিত তেল, কৃষি যন্ত্রপাতি ও কিছু গাড়ির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে। এই শুল্ক ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
কানাডা, চীন ও মেক্সিকো যুক্তরাষ্ট্রের বড় তিনটি বাণিজ্যিক অংশীদার। গত শনিবার কানাডা, মেক্সিকো ও চীনা পণ্যে শুল্ক আরোপের আদেশ দেন ট্রাম্প। শনিবার এ-সংক্রান্ত তিনটি পৃথক নির্বাহী আদেশে সই করেন ট্রাম্প। তবে চীনের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্তটি কার্যকর হলেও মেক্সিকো ও কানাডার পণ্যে শুল্ক আরোপ এক মাসের জন্য স্থগিত করেছেন ট্রাম্প। প্রতিবেশী এই দেশ দুটি অবৈধ অভিবাসী ও মাদক পাচার ঠেকাতে সীমান্ত এলাকায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতায় আসার পর ট্রাম্প এ সিদ্ধান্ত নেন।
এদিকে চীনের পাল্টা শুল্ক ঘোষণার পর হংকং শেয়ারবাজারে উত্থান কিছুটা কমে গেছে, ডলার শক্তিশালী হয়েছে এবং চীনা ইউয়ান দুর্বল হয়েছে, যা অস্ট্রেলিয়ান ডলারকেও প্রভাবিত করেছে।
বিশ্লেষক গ্যারি এনজি বলেন, মেক্সিকো ও কানাডার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি সম্ভব হলেও চীনের ক্ষেত্রে বিষয়টি জটিল। এমনকি যদি দুই দেশ কিছু বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছায়, তবুও শুল্ক নীতিকে পুনরায় ব্যবহার করা হতে পারে,যা এই বছর বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করবে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ভারতীয় অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো শুরু করলো যুক্তরাষ্ট্র
ভারতীয় অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় অভিবাসীদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক বিমান রওয়ানা দিয়েছে।
নথিবিহীন অভিবাসীদের বিতাড়িত করতে ট্রাম্পের যে অঙ্গীকার- তারই পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ভারতের উদ্দেশে সি-১৭ বিমান রওয়ানা দিয়েছে। তবে বিমানটিতে কতজন ভারতীয় অভিবাসী আছে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।
ভারত ছাড়াও এর আগে মার্কিন বিমানে করে গুয়েতেমালা, পেরু, হুন্ডুরাস, ব্রাজিলে অবৈধ অভিবাসী পাঠানো হয়েছে।
গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানান, নথিপত্রহীন অভিবাসীদের ফেরত নিতে ভারতের কোনো আপত্তি নেই। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে তা জানিয়ে দেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের অংশ হিসেবে অবৈধ অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী ভারত। তারই পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রও নথিবিহীন ভারতীয়দের ফেরত পাঠানো শুরু করলো।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি দেখা করতে পারেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘দুই বন্ধুর’ বৈঠক হতে পারে বলে কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, মোদি ফ্রান্স সফর শেষ করে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছাবেন। এরপর ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেখানে থাকবেন। আমেরিকান কর্পোরেট নেতা ও ভারতীয় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সঙ্গেও তিনি দেখা করবেন।
এর আগে গত সপ্তাহে ট্রাম্প বলেন, মোদির সঙ্গে আমার দীর্ঘ সময় আলোচনা হয়েছে। তিনি সম্ভবত ফেব্রুয়ারিতেই হোয়াইট হাউসে আসছেন। আমাদের ভারতের সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রে ৯ দিনে ৭ হাজারের বেশি অবৈধ অভিবাসী গ্রেপ্তার
গত ২৩ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত নয় দিনে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ৭ হাজার ২৬০ জন নথিবিহীন অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির অভিবাসন ও কাস্টমস বিষয়ক আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে ৫ হাজার ৭৬৩ জনকে বন্দিশালায় রাখা হয়েছে। শিগগিরই তাদের নিজ নিজ দেশ কিংবা কিউবার গুয়ান্তানামো কারাগারে পাঠানো হবে। শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে আইসিই।
নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের নিউইয়র্ক সিটি, ইলিনয়েস অঙ্গরাজ্যের শিকাগো এবং ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বোস্টন শহরে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এই নথিবিহীন অভিবাসীদের। গ্রেপ্তারদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধেই ধর্ষণ, অপ্রাপ্ত বয়স্কদের প্রতি যৌন সহিংসতা, বন্দুক ও মাদক সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগ রয়েছে বলে শনিবারের এক্সবার্তায় জানিয়েছে আইসিই।
২০২৪ সালের নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন— ক্ষমতায় গেলে যুক্তরাষ্ট্রকে অবৈধ অভিবাসীমুক্ত করবেন। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর সাংবিধানিক বিধি মেনে গত ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণ করেন ট্রাম্প এবং সে দিন বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন তিনি। সেসবের মধ্যে ‘আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মার্কিন জনগণকে সুরক্ষা প্রদান’ নামের একটি আদেশও ছিল।
ট্রাম্প সেই আদেশে স্বাক্ষর করার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হয়েছে অভিযান।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে বসবাস করছেন ১ লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি নথিবিহীন অভিবাসী। তাদের মধ্যে অন্তত ১ লাখকে ফেরত পাঠানোর লক্ষ্য নিয়েছে ওয়াশিংটন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
গোপনে ঢাকায় এসে টিউলিপের তথ্য নিয়ে গেল ব্রিটিশ দল
ব্রিটেনের ‘এফবিআই’ হিসেবে পরিচিত ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) লেবার পার্টির সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সঙ্গে ঢাকায় এক গোপন বৈঠকের পর ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল।
গত মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে এনসিএ কর্মকর্তাদের জানানো হয়, টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে নতুন প্রমাণ সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ। ব্রিটিশ এনসিএ কর্মকর্তারা টিউলিপ সিদ্দিকের ব্যাংক হিসাব, ই-মেইল রেকর্ড এবং অন্যান্য তথ্য খতিয়ে দেখতে পারেন, এমনকি তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করার সম্ভাবনাও রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তির মাধ্যমে টিউলিপ ও তার পরিবারের সদস্যরা ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাৎ করেছেন। এ প্রকল্পের ৯০ শতাংশ ঋণ এসেছে ক্রেমলিন থেকে, আর দায়িত্বে আছে রাশিয়ান কোম্পানি রোসাটম।
২০১৩ সালে মস্কোতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকের ছবিতে টিউলিপ সিদ্দিককে দেখা গিয়েছিল।
এনসিএ-র কর্মকর্তারা বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করার প্রস্তাব দিয়েছেন, যাতে আন্তর্জাতিক চুক্তির আওতায় টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়।
প্রসঙ্গত, দুর্নীতির অভিযোগে ব্রিটেনের লেবার পার্টির জুনিয়র মিনিস্টার এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নী টিউলিপ সিদ্দিক গত মাসে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এরপর তার এমপি পদে থাকা নিয়েও বিরোধী দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে জোর আপত্তি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ট্রাম্পের শুল্কারোপ, প্রতিশোধ নেবে কানাডা-মেক্সিকো-চীনও
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তিন প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার—চীন, মেক্সিকো ও কানাডার বিরুদ্ধে নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী মঙ্গলবার থেকে কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। অন্যদিকে চীন থেকে আসা পণ্যের ওপর শুল্ক হবে ১০ শতাংশ। তবে কানাডার জ্বালানি পণ্যের ওপর শুল্কের হার কিছুটা কম, তা ১০ শতাংশ।
ট্রাম্পের দাবি, এই শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সমস্যা যেমন অবৈধ অভিবাসন ও মাদক পাচার প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয়।। মার্কিন সরকার বলছে, মেক্সিকোর সরকার মাদক পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। আর চীন ফেন্টানাইলের মতো বিপজ্জনক মাদক আমদানিতে জড়িত। তবে এই শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে কানাডা ও মেক্সিকো তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, তারাও পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে।
শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানিয়েছেন, কানাডা এ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে একেবারেই প্রস্তুত। তিনি বলেন, কানাডা ১৫৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে, যার মধ্যে থাকবে মদ, ফল, শাকসবজি, পোশাক, বাসনপত্র, আসবাবপত্র ও অন্যান্য পণ্য। ট্রুডো আরও জানান, কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া ফেন্টানাইলের পরিমাণ খুবই কম। সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়েও ট্রাম্পের উদ্বেগের কোনো যৌক্তিকতা নেই।
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউমও এই শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তকে সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, শুল্ক আরোপ কোনো সমস্যার সমাধান নয়। বরং এটি আরও বেশি সমস্যা সৃষ্টি করবে। তিনি বলেন, মেক্সিকো মার্কিন সরকারের সঙ্গে মাদক পাচার রোধে কাজ করতে প্রস্তুত। তবে সমস্যার সমাধান হবে শুধু আলোচনার মাধ্যমে। শুল্ক আরোপের মাধ্যমে নয়। যদি তা হয়, মেক্সিকোও মার্কিন পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে।
এদিকে, চীনও ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মামলা করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। চীনের সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীন এই শুল্ক আরোপকে ‘অযৌক্তিক’ ও ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে মনে করে এবং স্বার্থ রক্ষায় পাল্টা পদক্ষেপ নেবে।
অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন, এই শুল্ক আরোপের ফলে মার্কিন বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়তে পারে, বিশেষ করে গাড়ি, যন্ত্রাংশ, স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম ও খাদ্যপণ্যের। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো—সব দেশেই মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমবে। এমনকী বিশ্ববাজারেও এর প্রভাব পড়বে।