বীমা
নাটোরে জেনিথ ইসলামী লাইফের মৃত্যু দাবি চেক বিতরণ

জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের বাগাতিপাড়া সার্ভিস সেন্টারের আয়োজনে মৃত্যু দাবি চেক বিতরণ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৬ জানুয়ারি) সকালে বাগাতিপাড়া উপজেলার তমালতলা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের হলরুমে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কোম্পানির সিনিয়র ডিএমডি মুহাম্মদ কামরুল ইসলাম। সঞ্চালনা করেন কোম্পানির ডিএমডি সাংবাদিক আব্দুল মজিদ। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির বাগাতিপাড়া উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক মো. মোশাররফ হোসেন। আর
আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এসএম নূরুজ্জামান বলেন, মানবতার কল্যাণে বীমায় চাকরি করা প্রয়োজন। বীমায় কাজ করলে এতিম ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো সম্ভব। দারিদ্র্য বিমোচন, বেকারত্ব দূরীকরণ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে জেনিথ লাইফ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জেনিথ লাইফে কোনো দাবি মুলতবি থাকে না।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জামায়াতে ইসলামীর বাগাতিপাড়া ইউনিয়ন আমির মাওলানা মো. শফিউল ইসলাম, বিএনপির বাগাতিপাড়া উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হায়দার রশীদ, আব্দুর রশীদ চৌধুরী এবং বাগাতিপাড়া ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন। এছাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রধান শিক্ষক সাজেদুর রহমানও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে প্রয়াত জুলফিকার আলীর নমিনি মাহফুজা বেগমের হাতে এক লক্ষ পয়তাল্লিশ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, গ্রাহক জুলফিকার আলী বার হাজার টাকার বার্ষিক একটি কিস্তি দিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন। অনুষ্ঠানে বীমা দাবির চেক হস্তান্তর ছাড়াও একটি বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। বীমা খাতের উন্নয়ন ও মানবসেবায় বীমা কর্মীদের ভূমিকা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।

বীমা
বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরামের সঙ্গে আইডিআরএ’র সভা

বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরামের নির্বাহী কমিটির সঙ্গে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৪ জুলাই) বিকাল ৪টায় আইডিআরএ’র সাথে কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষ-০১ এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরামের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা গেছে।
সভার সভাপতিত্ব করেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) এর চেয়ারম্যান ড. এম আসলাম আলম। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সদস্য প্রশাসন মো. ফজলুল হক, সদস্য আইন তানজিনা ইসলাম, সদস্য (নন-লাইফ) মো. আবুবকর সিদ্দিক, সদস্য (লাইফ) মো. আপেল মাহমুদ এসিআইআই (ইউকে)।
এছাড়া, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরামের (বিআইএফ) নির্বাহী কমিটির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডেন্ট ও পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও বিএম ইউসুফ আলী, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও তাকাফুল ইসলামী ইন্স্যুরেন্স পিএলসির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, সেক্রেটারী জেনারেল ও সেনা ইন্স্যুরেন্স পিএলসির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব:) শফিক শামীম, জয়েন্ট সেক্রেটারী জেনারেল ও জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এস এম নুরুজ্জামান, বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নূরে আলম সিদ্দিকী, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এ কে এম সারোয়ার জাহান জামীল, অফিস সেক্রেটারী ও ষ্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী মো. আবদুল মতিন সরকার, নির্বাহী সদস্য ও এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমাম শাহীন, ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স পিএলসির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোকাররম দস্তগীর, ইষ্টার্ণ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হসান তারেক, ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বায়োজিদ মুজতবা সিদ্দিকী, সাউথ এশিয়া ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ নুরুল আলম চৌধুরী, নর্দার্ণ ইসলামী ইন্স্যুরেন্স পিএলসির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী গোলাম ফারুক এবং প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামছুল আলম প্রমুখ।
কাফি
বীমা
বিমা কোম্পানির নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও সিইওদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ তথ্য গোয়েন্দা প্রতিবেদনে

বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) দুর্বলতার কারণে এ খাতে নানা ধরনের অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ এবং পাচারের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আইন লঙ্ঘন করে দায়িত্ব পালনকারী সিইও এবং বীমা কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে আইডিআরএ কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তরের (এনএসআই) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ৪ জুন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। একই সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়কে অবহিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ বিষয়টি জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইডিআরএর এ ধরনের কার্যক্রম বীমা কোম্পানিগুলোর স্বেচ্ছাচারিতাকে উৎসাহিত করছে। বীমা কোম্পানির চেয়ারম্যানরা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে নিজের স্বার্থরক্ষায় ব্যস্ত, সে জন্য তাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনকে সিইও পদে নিয়োগ/পুনঃনিয়োগ করছেন এবং নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের অনুমোদন না পেলেও তাদের দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হচ্ছে। এতে কোম্পানির স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বিঘ্নিত হচ্ছে এবং প্রিমিয়ামের টাকা যথাযথভাবে ব্যয় না হওয়ার কারণে বীমা গ্রাহকদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হচ্ছে। ওই সব বীমা কোম্পানিতে দীর্ঘদিন ধরে সিইও নিয়োগ না হওয়ায় কোম্পানিগুলোর সঠিকভাবে পরিচালনা ব্যাহত হচ্ছে এবং অন্যান্য বীমা কোম্পানির জন্য এই অনিয়ম দৃষ্টান্ত হিসেবে কাজ করছে।
প্রতিবেদনে দেশের পাঁচটি শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বীমা কোম্পানির চলতি দায়িত্বে থাকা মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আইন লঙ্ঘন করে দায়িত্ব পালন করায় তাদের বিরুদ্ধে এই সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গার্ডিয়ান লাইফ, সোনালী লাইফ, মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফ, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স ও রূপালী ইন্স্যুরেন্সের সিইওরা দীর্ঘদিন ধরে বীমা আইন লঙ্ঘন করে দায়িত্ব পালন করছেন।
জানা গেছে, ওই কোম্পানিগুলোতে পূর্ণাঙ্গ সিইও নিয়োগে কার্যকর ভূমিকা নিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে (আইডিআরএ) নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বীমা আইন অনুসারে কোনো কোম্পানির সিইও পদ সর্বোচ্চ তিন মাস খালি রাখা যাবে এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে আরও তিন মাস বাড়ানো সম্ভব। এর পরও পূর্ণকালীন সিইও নিয়োগ না হলে আইডিআরএ প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব নিতে পারে। কিন্তু এই বিধান দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত হয়েছে। ফলে প্রতিষ্ঠানগুলোতে শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা ব্যাহত হচ্ছে।
গার্ডিয়ান লাইফের সিইও শেখ রাকিবুল করিম ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি, সোনালী লাইফের মো. রফিকুল ইসলাম ২০২৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর, মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফের এসকে আব্দুর রশিদ ২০২৩ সালের ১ জুলাই, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্সের মোশাররফ হোসেন ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর এবং রূপালী ইন্স্যুরেন্সের ফৌজিয়া কামরুন তানিয়া ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি থেকে দায়িত্ব পালন করছেন।
গত জানুয়ারিতে আইডিআরএ গার্ডিয়ান লাইফ ও রূপালী ইন্স্যুরেন্সকে ৫ লাখ টাকা করে জরিমানা এবং ৬০ দিনের মধ্যে পূর্ণকালীন সিইও নিয়োগের নির্দেশ দেয়। তবে এখনও তা বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে প্রতিষ্ঠানগুলো আইন অমান্য করার সুযোগ পাচ্ছে।
এসএম
বীমা
উচ্চ ঝুঁকিতে দেশের ৩২ বিমা কোম্পানি: আইডিআরএ চেয়ারম্যান

দেশে ব্যবসা করা ৩২টি বিমা কোম্পানি উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. এম আসলাম আলম। এসব কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৫টি জীবন বিমা এবং ১৭টি সাধারণ বিমা কোম্পানি বলে জানান তিনি।
বুধবার (২ জুলাই) আইডিআরএ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান তিনি। কোম্পানিগুলোর ব্যবসা, সম্পদসহ সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে এই উচ্চ ঝুঁকিতে থাকার তথ্য বের করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিমা কোম্পানিগুলো সময়মতো গ্রাহকদের বিমা দাবির টাকা পরিশোধ না কারায় এ খাত চরম আস্থাহীনতার মধ্যে রয়েছে বলেও জানান তিনি। যে কারণে বিমা খাত পিছিয়ে পড়ছে বলে অভিমত আইডিআরএ চেয়ারম্যানের।
তিনি বলেন, দেশের ৩৬টি জীবন বিমা কোম্পানির মধ্যে মাত্র ৬টি ভালো অবস্থানে রয়েছে। বিপরীতে উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে ১৫ বিমা কোম্পানি এবং ১৫টি রয়েছে মধ্যম ঝুঁকিতে।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, সাধারণ বিমা খাতের ১৭টি বিমা কোম্পানি উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে উচ্চা ঝুঁকিতে থাকা জীবন ও সাধারণ বিমা কোম্পানিগুলোর নাম উল্লেখ করেননি তিনি।
তবে আইডিআরএ’র এক সূত্রে জানিয়েছে, উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা ১৫ জীবন বিমা কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- ফারেইস্ট ইসলামী লাইফ, পদ্মা ইসলামী লাইফ, প্রাইম ইসলামী লাইফ, সানফ্লাওয়ার লাইফ, সানলাইফ, গোল্ডেন লাইফ, বায়রা লাইফ, প্রগ্রেসিভ লাইফ, এনআরবি ইসলামিক লাইফ, ডায়মন্ড লাইফ, বেস্ট লাইফ, প্রটেক্টিভ ইসলামী লাইফ, যমুনা লাইফ এবং স্বদেশ লাইফ।
সংবাদ সম্মেলনে আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, সময় মতো বিমা দাবি পরিশোধ না করায় এ খাতের প্রতি মানুষের আস্থাহীনতা বেড়েছে। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ছাড়া আস্থা বাড়বে না। বর্তমানে জীবন বিমা খাতে অপরিশোধিত দাবি আছে ৪৫ শতাংশ। এছাড়া সাধারণ বিমা খাতে প্রায় ৪৭ শতাংশ দাবি অপরিশোধিত রয়েছে।
এসব দাবি সময়মতো পরিশোধ, মানুষের আস্থা বাড়াতে বিভিন্ন আইন ও বিধি করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ব্যাংক রেজ্যুলেশনের আদলে বিমাকারীর রেজ্যুলেশন প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়েছে। এর আলোকে কেবল বিমা প্রতিষ্ঠান একীভূত হবে তেমন না- অবসায়ন, অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ড. এম আসলাম আলম বলেন, জিডিপি অনুপাতে ২০১০ সালে বিমার হার ছিল শূন্য দশমিক ৯৪ শতাংশ। ২০২৩ সালে তা কমে শুন্য দশমিক ৪১ শতাংশে নেমেছে। ২০২৪ সালে তা আরও কমেছে। শুধু ২০২৪ সালে আইডিআরএ ২৪ হাজার ৮৫২টি অভিযোগ পেয়েছে। তবে জনবল সংকটের কারণে এসব তদারকি করা সম্ভব হচ্ছে না। আইডিআরএতে ১৬০ জন অনুমোদিত জনবলের বিপরীতে মাত্র ১০৭ জন কর্মরত রয়েছেন।
সম্প্রতি বিমা কোম্পানিগুলোর নিবন্ধন নবায়ন ফি হাজারে এক টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে আইডিআরএ। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হয়- বর্তমানে বিমা কোম্পানিগুলো বিভিন্ন ধরনের সমস্যার মধ্যে রয়েছে। গ্রাহকদের দাবির টাকা পরিশোধ করতে পারছে না। এ পরিস্থিতিতে নিবন্ধন নবায়ন ফি বাড়ানো হলে কোম্পানিগুলোর আর্থিক অবস্থার আরও অবনতি হবে কি না? তাছাড়া বর্তমানে আইডিআরএ’র তহবিলে বড় ধরনের উদ্বৃত্ত অর্থ রয়েছে। এর উত্তরে আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে আমাদের লোকবল সংকট রয়েছে। লোকবল বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। লোকবল বাড়লে তখন আইডিআরএ’র খরচ বাড়বে। সবকিছু বিবেচনা করেই নিবন্ধন নবায়ন ফি বাড়ানো হচ্ছে।
বীমা
১৫ বীমা কোম্পানির তথ্য চেয়ে আইডিআরএ’র চিঠি

লাইফ বীমা খাতের কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ১৫ কোম্পানির ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের ব্যাংক হিসাব এবং দাবি পরিশোধের তথ্য চেয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে এসব তথ্য কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) আইডআরএ’র পরিচালক আহম্মদ এহসান উল হান্নান ও সহকারী পরিচালক মো. শামসুল আলম খান স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এসব কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর এই চিঠি প্রেরণ করা হয়।
চিঠিতে বলা হয়, এসব কোম্পানির ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের ব্যাংক হিসাবের বিবরণ ও বীমা দাবি পরিশোধ বিবরণের অনুলিপি আইডিআরএ কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রেরণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কোম্পানিগুলো হলো- সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, প্রটেক্টিভ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, বেস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, স্বদেশ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি।
জানা গেছে, কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যাংক হিসাব এবং দাবি পরিশোধের তথ্য প্রেরণ করতে হবে। এই তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে কোম্পানির আর্থিক স্বচ্ছতা ও বীমা দাবির বাস্তবতা মূল্যায়ন করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কাফি
অর্থনীতি
বাজেটে বিমা খাতে কর কমানোসহ ১৫ প্রস্তাব ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের

আসছে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেটে বীমা খাতের কর্পোরেট কর কমানোর পাশাপাশি কিছু বিমা পণ্যের উপর কর পত্যাহার করার দাবি জানিয়েছে বিমা মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন (বিআইএ)। সোমবার (১৭ মার্চ) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত চিঠিতে ১৫টি প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। চিঠিতে কর্পোরেট কর হার হ্রাস করা, কৃষি বীমা, গবাদিপশু বীমা, বিভিন্ন ধরনের শস্য বীমা, উদ্ভাবনী বীমা, নতুন সামাজিক বীমা পণ্যেসহ অনলাইন ভিত্তিক বীমা প্রিমিয়ামের উপর মূল্য সংযোজন কর ও কর্পোরেট কর রহিত করার বিষয় তুলে ধরা হয়।
চিঠিতে কর্পোরেট কর হার হ্রাস করার বিষয়ে বলা হয়, আয়কর আইন অনুযায়ী তালিকাভুক্ত ব্যাংক, ইন্স্যরেন্স এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করহার ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ। ব্যাংকের আয় ও ব্যবসায়ের পরিধি ইন্স্যুরেন্সের চাইতে অনেক বেশি তারপরও ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কর হার ব্যাংকের সমান। এছাড়া, উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলো ২৫ শতাংশ অথবা তার চেয়ে কম হারে কর প্রদান করে থাকে যদিও তাদের ব্যবসায়ের ক্ষেত্র ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চাইতে বেশি। কিন্তু ইন্স্যুরেন্স ব্যবসায় ব্যাংক এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মত ব্যাপকভাবে প্রসার লাভ করতে পারেনি। তাই ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোকে অন্যান্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের মত বিবেচনা করে কর্পোরেট কর হার ব্যাংকিং কোম্পানির মত সমান না রেখে অন্যান্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের মত কর হার নির্ধারণ করার জন্য প্রস্তাব করা হলো।
কৃষি বীমা, গবাদিপশু বীমা, বিভিন্ন ধরনের শস্য বীমা প্রিমিয়ামের উপর মূল্য সংযোজন কর ও কর্পোরেট কর রহিত করার বিষয়ে চিঠিতে বলা হয়, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কৃষি খাতের ভূমিকা অপরিসীমা কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে এই খাত ক্রমাগত বিপন্ন হচ্ছে যার ফলে কৃষিকাজে কৃষকদের অনীহা দিন দিন বাড়ছে। তাই কৃষকদের জন্য কৃষি বীমা অপরিহার্য। এই জন্য কৃষি বীমার উন্নয়ন ও প্রসারের জন্য কৃষি বীমা, গবাদিপশু বীমা, বিভিন্ন ধরনের শস্য বীমা প্রিমিয়ামের উপর মূল্য সংযোজন কর এবং এই বীমা পরিকল্প হতে অর্জিত মুনাফার উপর কর্পোরেট কর রহিত করার জন্য প্রস্তাব করা হলো।
এছাড়া, অনলাইন ভিত্তিক বীমা প্রিমিয়ামের উপর মূল্য সংযোজন কর ও কর্পোরেট কর রহিত করার বিষয়ে বলা হয়, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বীমা শিল্প ও সরকারের সাথে একাত্ম হয়ে কাজ করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে বিভিন্ন অনলাইন পলিসি ইস্যু করার উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে যা গ্রাহকদেরকে সর্বোচ্চ বীমা সেবা প্রদানের পথকে সুগম করবে। ডিজিটাল সেবা এবং ইন্স্যুরটেকের মাধ্যমে ইস্যু করা বীমা পলিসি হতে অর্জিত প্রিমিয়ামের উপর মূল্য সংযোজন কর এবং পলিসি প্রিমিয়াম হতে অর্জিত মুনাফার কর্পোরেট কর রহিত করার প্রস্তাব করা হলো।
চিঠিতে উদ্ভাবনী বীমা ও নতুন সামাজিক বীমা পণ্যের উপর মূল্য সংযোজন কর এবং কর্পোরেট কর রহিত করার বিষয়ে বলা হয়, উদ্ভাবনী বীমা ও নতুন সামাজিক বীমা পরিকল্প অর্থনৈতিক উন্নয়নে এবং উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের জীবন যাত্রার মানের উপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। যে দেশ অথনৈতিকভাবে যত উন্নত তাদের জীবনযাত্রার মানও তত উন্নত আর এই উন্নয়নে বীমার অবদান অনেক বেশি। আর একটি দেশের সামাজিক মূল্যবোধ এবং সচেতনতার অভাবই এই শিল্পের বিকাশে মূল বাধা। তাই বীমা শিল্পের বিকাশে উদ্ভাবনী বীমা ও নতুন সামাজিক বীমা পণ্যের উপর উপর মূল্য সংযোজন কর এবং কর্পোরেট কর রহিত করার প্রস্তাব করা হলো।
এছাড়াও, নন-লাইফ বীমার অন্তর্ভুক্ত সকল শ্রেনীর নৌ-কার্গো, নৌ-হাল, বিবিধ বীমা সহ বীমা সেবার বিপরীতে পুনঃবীমাকারীকে সকল প্রিমিয়ামের উপর মুসক চার্জ অব্যাহতি, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপন ব্যয়কে আয় হিসাবে গন্য না করে ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাক্ট অনুসারে লভ্যাংশের উপর কর নির্ধারন করা, পুনঃবীমা করার সময় পুনঃবীমা প্রিমিয়ামের উপর প্রাপ্য কমিশনের উপর নতুন করে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপ রহিত, বৈদেশিক পুনঃবীমা প্রিমিয়ামের উপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট ও ১০ শতাংশ হারে উৎসে কর রহিত, স্বাস্থ্য বিমার প্রসারে এর ওপর ট্যাক্স রহিত ও বিমা এজেন্টদের কমিশন আয়ের উপর উৎসে কর কর্তন থেকে অব্যাহতি প্রদানে প্রস্তাব করে বিআইএ।
এর আগে, আসন্ন ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেট অধিকতর অংশগ্রহণমূলক, গণমুখী, শিল্প, ব্যবসা ও করদাতাবান্ধব করতে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর কাছে বাজেট প্রস্তাবনা চেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এসএম