জাতীয়
বিতর্কিত তিন নির্বাচনের তদন্ত করবে ইসি

২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ সব নির্বাচনের অনিয়ম ও ত্রুটি চিহ্নিত করে প্রতিবেদন তৈরি করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়া কি কারণে নির্বাচন ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের ১০ আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেছে সংস্থাটি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনসহ অন্য নির্বাচন কমিশনাররা সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন৷
এরপর লিখিত নির্দেশনায় বৈঠকের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন৷ এতে উল্লেখ করা হয়-বিগত নির্বাচনের অনিয়ম ও ত্রুটিগুলো সনাক্ত করে প্রতিবেদন ইসি সচিবালয়ে পাঠাতে হবে।
কর্মকর্তারা জানান, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ ও ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে দেশের ইতিহাসে ব্যাপক বিতর্কিত নির্বাচন হিসেবে মনে করা হয়। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো অংশ না নেওয়ায় এক তরফা ভোট হয়, যে নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ১৫৩ জন। নির্বাচনি ইতিহাসে যা বিরল। ২০১৮ সালের নির্বাচনে সবগুলো দল অংশ নিলেও রাতের ভোট বলে অভিহিত করা হয়। ওই নির্বাচনে বিএনপি ও শরিকরা সাতটি আসন পায়, যা নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগের সন্দেহকে দৃঢ় করে তোলে।
এছাড়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোকে বাইরে রেখে আওয়ামী লীগের ডামি প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখানো হয়। এতে টানা চারবারের মতো ক্ষমতায় আসে দলটি।
অন্তর্বর্তী সরকারের মাধ্যমে ইসি সংস্কারের পর এএমএম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিশন গঠন হলে বিভিন্ন মহল থেকে ওই তিন নির্বাচনে অনিয়মের কারণ খুঁজে বের করার দাবি ওঠে বিভিন্ন মহল থেকে৷ এমনকি নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে সংলাপে বসেও সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম, বিশিষ্ট ব্যক্তিরা তা খুঁজে বের করার দাবি তোলেন।
সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য বলেন, একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন জাতিকে উপহার দেওয়াই নির্বাচন কমিশনের প্রধান লক্ষ্য। এজন্য নির্বাচন কমিশনের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অমূল্য অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হবে। আপনারা ভালো নির্বাচনও দেখেছেন, খারাপ নির্বাচনও দেখেছেন। ভালোর অভিজ্ঞতাকে গ্রহণ করবেন। খারাপ অভিজ্ঞতাকে পরিহার করবেন। অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা ভুলে জাতির প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করে নির্বাচন কমিশনের আস্থার সংকট দূর করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে শ্রদ্ধার আসনে বসাতে কমিশন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কমিশনের কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তা সম্ভব হবে। যে কোনো সময় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে কমিশনের কর্মকর্তাদের আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এ বিষয়ে বলেন, নির্বাচনি ব্যবস্থা কি কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলো এটি কমিশনকে অবগত করতে হবে। দায়িত্বপ্রাপ্তদের গাফিলতি, দায়িত্বে অবহেলা, দুর্বলতা ও দুরভিসন্ধি থাকতে পারে। ভবিষ্যতে যেন এমন না হয় সেজন্য আগাম সর্তক থাকতে হবে।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার কর্মকর্তাদের বলেন, বিগত নির্বাচনের ত্রুটি সনাক্ত করে তা কটিয়ে ওঠার চেষ্টা করতে হবে। জনগণ অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আশা করে। অনিয়মের সঙ্গে জড়িতরা বিবেকের কাছে প্রশ্ন করে শোধরানোর চেষ্টা করতে হবে। বর্তমান সময়ে নির্বাচনি অনিয়মের সঙ্গে জড়িত কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না।
গত ২১ নভেম্বর দায়িত্ব নেন সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন। ইতিমধ্যে তারা বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রমের উদ্যোগ নিয়েছেন৷ পাশাপাশি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেরও প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে সাবেক সচিব কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের অধীনে৷ একাদশ সংসদ নির্বাচন করেছেন কেএম নুরুল হুদার কমিশন। আর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করেছেন কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন। অভ্যুত্থানের এক মাস পর গত ৫ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো কমিশন নিজে থেকে পদত্যাগ করেছেন।

জাতীয়
পরিচ্ছন্ন ও সাশ্রয়ী জ্বালানিই বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথ দেখাবে: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশকে এখনই পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী জ্বালানি সমাধানের দিকে অগ্রসর হতে হবে, যাতে দেশ টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন পথে এগিয়ে যেতে পারে।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের এক বার্তায় তা জানানো হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে তিনি অ্যানথ্রোপোসিন ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান কার্ল পেজ ও সহকর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল আলোচনায় বলেন, বাংলাদেশ দীর্ঘদিন জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল থাকার সামর্থ্য রাখে না। তাই পরিচ্ছন্ন জ্বালানির বিকল্প, যেমন সৌরবিদ্যুৎ ও বার্জ-ভিত্তিক পারমাণবিক চুল্লি, গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি।
কার্ল পেজ বলেন, পারমাণবিক শক্তি এখন বিশ্বব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার কাছে নিষিদ্ধ নয়। ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশ ইতোমধ্যেই এ প্রযুক্তি গ্রহণ করে তাদের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা পূরণ করছে। তিনি বাংলাদেশকে উদীয়মান প্রযুক্তিতে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ সম্প্রতি একটি নতুন জাতীয় বিদ্যুৎ নীতি প্রণয়ন করেছে, যেখানে সৌর জ্বালানির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, পারমাণবিক বিকল্প গ্রহণের আগে কঠোর গবেষণা ও সম্ভাব্যতা যাচাই অপরিহার্য।
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, বিশ্বের ঘনবসতিপূর্ণ ও জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি হিসেবে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল থাকার সামর্থ্য রাখে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের এখনই বড় আকারে সৌরবিদ্যুৎসহ পরিচ্ছন্ন জ্বালানির বিকল্পগুলোকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করার সময় এসেছে।
এসময় গুগলের সহ–প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজের ভাই কার্ল পেজ পরবর্তী প্রজন্মের পারমাণবিক প্রযুক্তি ও হাইব্রিড সিস্টেমের সাম্প্রতিক অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এসব প্রযুক্তি নির্ভরযোগ্য ও শূন্য–কার্বন বিদ্যুৎ সরবরাহে সক্ষম।
সভায় উপস্থিত ছিলেন— বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং সরকারের সিনিয়র সচিব ও এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।
জাতীয়
বাংলাদেশ ভ্রমণে কানাডার সতর্কতা জারি

নিজ দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণে উচ্চমাত্রায় সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে কানাডা। একই সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় ভ্রমণ না করার আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) কানাডার সরকারি ওয়েবসাইটের ভ্রমণ বিভাগে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ভ্রমণে সতর্কতামূলক ‘হলুদ চিহ্ন’ এবং পার্বত্য এলাকায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞাস্বরূপ ‘লাল চিহ্ন’ জারি করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজনৈতিক সহিংসতা, অপহরণ এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে বিক্ষিপ্ত সংঘাতের কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে ভ্রমণ ঝুঁকিপূর্ণ। পাশাপাশি সারাদেশেই সম্ভাব্য বিক্ষোভ, সংঘর্ষ এবং হরতাল-অবরোধ পরিস্থিতি মাথায় রেখে সতর্ক থাকতে হবে। যে কোনো সময় নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে, যার আগাম সতর্কবার্তা নাও পাওয়া যেতে পারে।
জাতীয়
বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন চান ইউরোপীয় মানবাধিকার প্রধান

২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চান ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকারবিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান মৌনির সাতৌরি। তিনি বলেন, নির্বাচনের ফলাফল সবাইকে মেনে নিতে হবে এবং পরবর্তী সময়ে দেশের স্থিতিশীলতার জন্য এটি অপরিহার্য।
সম্প্রতি ঢাকায় সফরকালে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন সাতৌরি।
মৌনির সাতৌরি বলেন, ক্ষমতার পৃথকীকরণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, জনপরিসর ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা গণতন্ত্র ও দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য।
ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অপরিহার্য।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, নির্বাচনের ফল যাই হোক না কেন, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট পরবর্তী নির্বাচিত সংসদের সঙ্গে কাজ করবে।
মৌনির সাতৌরির নেতৃত্বে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকারবিষয়ক উপ-কমিটির একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফরে এসেছেন। বড় ধরনের রাজনৈতিক পরিবর্তনের আগে ইইউ অংশীদার দেশগুলোতে এ ধরনের তথ্য-অনুসন্ধান মিশন পাঠানো হয়ে থাকে।
বাংলাদেশকে এই মুহূর্তে বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে সাতৌরি বলেন, দেশটি গণতান্ত্রিক উত্তরণের এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে রয়েছে এবং একই সঙ্গে ইইউ বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা গভীর করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
এর মধ্যে পার্টনারশিপ অ্যান্ড কো-অপারেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (পিসিএ) আলোচনাও অন্তর্ভুক্ত।
সাতৌরি ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ইইউ যখনই কোনো তৃতীয় দেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেয়, তখন আমরা মানবাধিকার পরিস্থিতি, আইনের শাসন এবং মৌলিক স্বাধীনতার বিষয়গুলোও পর্যালোচনা করি। কারণ এগুলো যেকোনো ইইউ চুক্তির অবিচ্ছেদ্য অংশ।
২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক উত্তরণের প্রসঙ্গে সাতৌরি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, যা দৃশ্যমান প্রভাব ফেলছে। তবে তিনি বলেন, প্রক্রিয়াটি এখনও সম্পূর্ণ হয়নি।
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত গৃহীত সংস্কারগুলো যদি ব্যাপক সমর্থন পায় এবং নির্বাচিত সংসদ সেগুলো বাস্তবায়ন করে, তাহলে সর্বোত্তম পরিবেশে এ উত্তরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।
প্রতিনিধিদল ইতোমধ্যে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, ট্রেড ইউনিয়ন, নিয়োগকর্তা, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। শিগগিরই অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাংবিধানিক সংস্কার নিয়ে তাদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
সাতৌরি বলেন, সমৃদ্ধি ও মানবাধিকার প্রতিশ্রুতির মধ্যে ভারসাম্য আনার উদ্দেশ্যে পার্টনারশিপ অ্যান্ড কো-অপারেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (পিসিএ) নিয়ে আলোচনা চলছে।
তিনি বলেন, এই চুক্তি অন্তর্বর্তী সরকারের পরও বহাল থাকবে এবং উভয় পক্ষকে ভবিষ্যতেও আবদ্ধ রাখবে। জনগণের উদ্বেগ ও স্বার্থ এতে যথাযথভাবে প্রতিফলিত হওয়া জরুরি।
সফরকালে সাতৌরি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরও পরিদর্শন করেন। তিনি গত আট বছর ধরে এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের ‘অসাধারণ প্রচেষ্টার’ প্রশংসা করেন এবং বৈশ্বিকভাবে দায়িত্ব ভাগাভাগির আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার আর্থিক সহায়তার মাত্রা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে বাংলাদেশকে একা এ বোঝা বহন করতে দেওয়া যায় না।
তিনি আন্তর্জাতিক সহায়তা ও মিয়ানমারে রাজনৈতিক সমাধানের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সাতৌরি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন সংকট সমাধানে বৈশ্বিক ঐকমত্য গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।
ঢাকায় সফরকালে প্রতিনিধিদল বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেন।
জাতীয়
যাত্রাবাড়ীতে এসি বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৪ জন দগ্ধ

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে একটি বাসায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৪ জন সদস্য দগ্ধ হয়েছেন। তাদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ধলপুর বউবাজার লিচুবাগান মসজিদের পার্শ্ববর্তী একটি ভবনের ৭ম তলায় এই ঘটনা ঘটে।
দগ্ধরা হলেন- মো. তুহিন হোসেন (৩৮), তার স্ত্রী ইবা আক্তার (৩০), দুই ছেলে তাওহীদ (৭) ও তানভীর (৯)। তুহিন মোতালেব প্লাজায় একটি মোবাইল সার্ভিসিং দোকানে কাজ করেন। তাদের বাড়ি মাদারীপুরের সদর উপজেলায়।
দগ্ধ ইবার বোন ফারজানা আক্তার জানান, বাসায় পরিবারটির ওই চার সদস্য থাকেন। শুক্রবার রাতে যখন ঘুমিয়ে ছিলেন তখন এসি থেকে একটি বিস্ফোরণ হয়। মুহূর্তে ঘরে আগুন ধরে গেলে তারা চারজনই পুড়ে যান।
তিনি আরও জানান, আশপাশের ভাড়াটিয়ারা আগুন নিভিয়ে রাতেই তাদের বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে যান। তাদের চারজনের অবস্থায়ই গুরুতর বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
জাতীয়
নিক্সনের উসকানিতে ভাঙ্গায় সহিংসতা: পুলিশ

ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের উসকানিমূলক বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডের কারণে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির দিকে গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই অভিযোগ আনা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রকাশিত গেজেটে ভাঙ্গার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন ফরিদপুর-৪ থেকে পৃথক করে ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে স্থানীয়রা ৫ সেপ্টেম্বর থেকে সড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে।
পুলিশের দাবি, এই আন্দোলনকে কাজে লাগিয়ে সাবেক সাংসদ নিক্সন চৌধুরী সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক উসকানিমূলক ভিডিওবার্তা ছড়িয়ে দেন। ৯ সেপ্টেম্বর দেওয়া এক ভিডিওতে তিনি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে অবৈধ আখ্যা দেন এবং আন্দোলনকে সহিংস রূপ দেওয়ার আহ্বান জানান।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ সেপ্টেম্বর তার সমর্থকরা ভাঙ্গা থানা, হাইওয়ে থানা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, নির্বাচন অফিস ও কৃষি অফিস ভাঙচুর করে এবং সরকারি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ চালায়। এতে ব্যাপক সরকারি সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়। ওই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ১৯ সেপ্টেম্বর নিক্সন চৌধুরী আবারও ভিডিওবার্তায় সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে অবৈধ বলে আখ্যা দেন এবং পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন যে মামলার মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। পুলিশ বলছে, এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি জনগণকে আরও সহিংস আন্দোলনে উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ বলছে, কারো কোনো উসকানিমূলক বক্তব্যে বিভ্রান্ত না হয়ে জনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আইন মেনে চলুন এবং পুলিশকে সহযোগিতা করুন। মামলা দিয়ে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানি করা হবে না বলে পুলিশের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হলো। কেউ যদি উসকানিমূলক বক্তব্য বা গুজব প্রচারে অংশ নিলে তা দ্রুত নিকটস্থ থানায় জানানোর অনুরোধ করা হলো।