জাতীয়
বিতর্কিত তিন নির্বাচনের তদন্ত করবে ইসি
২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ সব নির্বাচনের অনিয়ম ও ত্রুটি চিহ্নিত করে প্রতিবেদন তৈরি করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়া কি কারণে নির্বাচন ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের ১০ আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেছে সংস্থাটি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনসহ অন্য নির্বাচন কমিশনাররা সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন৷
এরপর লিখিত নির্দেশনায় বৈঠকের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন৷ এতে উল্লেখ করা হয়-বিগত নির্বাচনের অনিয়ম ও ত্রুটিগুলো সনাক্ত করে প্রতিবেদন ইসি সচিবালয়ে পাঠাতে হবে।
কর্মকর্তারা জানান, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ ও ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে দেশের ইতিহাসে ব্যাপক বিতর্কিত নির্বাচন হিসেবে মনে করা হয়। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো অংশ না নেওয়ায় এক তরফা ভোট হয়, যে নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ১৫৩ জন। নির্বাচনি ইতিহাসে যা বিরল। ২০১৮ সালের নির্বাচনে সবগুলো দল অংশ নিলেও রাতের ভোট বলে অভিহিত করা হয়। ওই নির্বাচনে বিএনপি ও শরিকরা সাতটি আসন পায়, যা নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগের সন্দেহকে দৃঢ় করে তোলে।
এছাড়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোকে বাইরে রেখে আওয়ামী লীগের ডামি প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখানো হয়। এতে টানা চারবারের মতো ক্ষমতায় আসে দলটি।
অন্তর্বর্তী সরকারের মাধ্যমে ইসি সংস্কারের পর এএমএম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিশন গঠন হলে বিভিন্ন মহল থেকে ওই তিন নির্বাচনে অনিয়মের কারণ খুঁজে বের করার দাবি ওঠে বিভিন্ন মহল থেকে৷ এমনকি নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে সংলাপে বসেও সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম, বিশিষ্ট ব্যক্তিরা তা খুঁজে বের করার দাবি তোলেন।
সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য বলেন, একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন জাতিকে উপহার দেওয়াই নির্বাচন কমিশনের প্রধান লক্ষ্য। এজন্য নির্বাচন কমিশনের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অমূল্য অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হবে। আপনারা ভালো নির্বাচনও দেখেছেন, খারাপ নির্বাচনও দেখেছেন। ভালোর অভিজ্ঞতাকে গ্রহণ করবেন। খারাপ অভিজ্ঞতাকে পরিহার করবেন। অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা ভুলে জাতির প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করে নির্বাচন কমিশনের আস্থার সংকট দূর করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে শ্রদ্ধার আসনে বসাতে কমিশন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কমিশনের কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তা সম্ভব হবে। যে কোনো সময় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে কমিশনের কর্মকর্তাদের আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এ বিষয়ে বলেন, নির্বাচনি ব্যবস্থা কি কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলো এটি কমিশনকে অবগত করতে হবে। দায়িত্বপ্রাপ্তদের গাফিলতি, দায়িত্বে অবহেলা, দুর্বলতা ও দুরভিসন্ধি থাকতে পারে। ভবিষ্যতে যেন এমন না হয় সেজন্য আগাম সর্তক থাকতে হবে।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার কর্মকর্তাদের বলেন, বিগত নির্বাচনের ত্রুটি সনাক্ত করে তা কটিয়ে ওঠার চেষ্টা করতে হবে। জনগণ অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আশা করে। অনিয়মের সঙ্গে জড়িতরা বিবেকের কাছে প্রশ্ন করে শোধরানোর চেষ্টা করতে হবে। বর্তমান সময়ে নির্বাচনি অনিয়মের সঙ্গে জড়িত কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না।
গত ২১ নভেম্বর দায়িত্ব নেন সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন। ইতিমধ্যে তারা বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রমের উদ্যোগ নিয়েছেন৷ পাশাপাশি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেরও প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে সাবেক সচিব কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের অধীনে৷ একাদশ সংসদ নির্বাচন করেছেন কেএম নুরুল হুদার কমিশন। আর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করেছেন কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন। অভ্যুত্থানের এক মাস পর গত ৫ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো কমিশন নিজে থেকে পদত্যাগ করেছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
আন্দোলনে শহিদ পরিবার ও আহতদের জন্য বরাদ্দ ৬৩৮ কোটি টাকা
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার ও আহতদের জন্য ৬৩৭ কোটি ৮০ লাখ টাকার বাজেট বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
সোমবার (০৬ জানুয়ারি) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
বরাদ্দকৃত অর্থের মধ্য থেকে শহীদ পরিবারের জন্য ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র এবং আহতদের বিভিন্ন ক্যাটাগরি অনুযায়ী এক লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
নাহিদ ইসলাম জানান, বরাদ্দকৃত অর্থের মধ্যে ২৩২ কোটি ৬০ লাখ টাকা চলতি অর্থবছরের বাজেট থেকে ব্যয় হবে। বাকি টাকা ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট থেকে বরাদ্দ করা হবে।
নাহিদ ইসলাম আরও জানান, প্রক্রিয়া অনুযায়ী শহীদদের পরিবারকে জানুয়ারিতে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র এবং জুলাইতে ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র হস্তান্তর করা হবে। একই সাথে আহতদের নগদ অর্থের পাশাপাশি চিকিৎসার প্রাসঙ্গিক ব্যয়ও পর্যায়ক্রমে মেটানো হবে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তরকে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবি থেকে শুরু হওয়া সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের আগে-পরের বিক্ষোভ-সংঘাত-সহিংসতায় অন্তত ৬৫০ জন নিহত হওয়ার তথ্য দিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাই কমিশনারের কার্যালয়-ওএইচসিএইচআর।
ওএইচসিএইচআর—এর ১০ পৃষ্ঠার ওই প্রাথমিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন এবং আন্দোলনকারীদের তথ্য অনুযায়ী ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্টের মধ্যে নিহত হয়েছেন ছয় শতাধিক মানুষ। এর মধ্যে ১৬ জুলাই থেকে ৪ আগস্টের মধ্যে প্রায় ৪০০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। আর ৫ আগস্ট ও এর পরে মৃত্যু হয় প্রায় ২৫০ জনের।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের নতুন সচিব নজরুল ইসলাম
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের নতুন সচিব নিয়োগ পেয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম।
সচিব পদে পদোন্নতির পর তাকে এই নিয়োগ দিয়ে সোমবার (৬ জানুয়ারি) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
গত ১০ নভেম্বর পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মোসাম্মৎ শাহানারা খাতুনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় সরকার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
দুই দিনের সফরে ঢাকায় কাতারের নৌবাহিনী প্রধান
কাতার নৌবাহিনী প্রধান স্টাফ মেজর জেনারেল (সি) আব্দুল্লাহ হাসান এম এ আল-সুলাইতি দুই দিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশে এসেছেন।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আইএসপিআর জানায়, এই সফরের অংশ হিসেবে আজ (সোমবার) বনানীর নৌবাহিনী সদর দপ্তরে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এর আগে কাতার নৌবাহিনী প্রধান নৌবাহিনী সদর দপ্তরে এসে পৌঁছালে সহকারী নৌবাহিনী প্রধান (অপারেশনস) তাকে স্বাগত জানান। এ সময় নৌবাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। তিনি গার্ড পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন।
সাক্ষাৎকালে তিনি নৌবাহিনী প্রধানের সঙ্গে পারস্পরিক কুশলাদি বিনিময় করেন। এ সময় দুই দেশের মধ্যকার নৌবাহিনীর পেশাগত ও প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করেন। এছাড়া বাংলাদেশ ও কাতার নৌবাহিনীর মধ্যকার বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার করার লক্ষ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তখন নৌবাহিনী সদর দপ্তরের পিএসওগণ, কাতার নৌবাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তাগণ এবং কাতার অ্যাম্বাসির চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্সসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে কাতার নৌবাহিনী প্রধান শিখা অনির্বাণে পুস্পস্তবক অর্পণ করে একাত্তরের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শাহাদত বরণকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
আইএসপিআর আরও জানায়, বাংলাদেশ সফরকালে তিনি সেনাবাহিনী প্রধান, বিমান বাহিনী প্রধান এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সফর শেষে কাতার নৌবাহিনী প্রধান সোমবার (৬ জানুয়ারি) রাতে ঢাকা ত্যাগ করবেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
বিদেশে বাংলাদেশ নিয়ে প্রচার করতে হবে বেপজাকে: প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষকে (বেপজা) বিদেশে বাংলাদেশের প্রচার ও দেশের শিল্প খাতে আরও বেশি বিনিয়োগ আনতে নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ সোমবার (৬ জানুয়ারি) তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বেপজার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা (২০২৩-২৪ অর্থবছর) বার্ষিক প্রতিবেদন জমা দিতে এলে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
প্রধান উপদেষ্টা বেপজা কর্মকর্তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে অর্থনৈতিক কূটনীতি পরিচালনার জন্য একটি দল তৈরি করে বিদেশে বাংলাদেশের পক্ষে প্রচার করতে কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
বিনিয়োগকারীদের ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা দূর করতে তিনি বিদেশে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী, বিশেষ করে চীন ও জাপানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করতে পরামর্শ দেন।
বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান জানান, বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টের আন্দোলন এবং বারবার পরিবর্তিত বৈশ্বিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের পর বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন।
‘গত তিন সপ্তাহে আমরা চীনা বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছি। আরও বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা চলছে,’ বলে তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে জানান।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে আটটি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল চালু রয়েছে, যেখানে ৪৫২টি কারখানা রয়েছে। এছাড়া অঞ্চলগুলোতে ১৩৬টি কারখানা নির্মাণাধীন। চলমান কারখানাগুলোর মধ্যে ১০০টির বেশি স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের মালিকানাধীন, বাকি কারখানাগুলো বেশিরভাগ যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত। এ কারখানাগুলোর মধ্যে ৫২ শতাংশ তৈরি পোশাক, টেক্সটাইল এবং গার্মেন্টস আনুষঙ্গিক সামগ্রী উৎপাদন করে। বাকি কারখানাগুলো বিভিন্ন ধরনের পণ্য উৎপাদন করে, যেমন কফিন ও খেলনা।
মেজর জেনারেল জিয়া প্রধান উপদেষ্টাকে বিনিয়োগকারীদের কয়েকটি চাহিদার কথা জানান, যার মধ্যে রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ, বেপজা এলাকায় বন্ডেড ওয়্যারহাউজ সুবিধা, চট্টগ্রাম-সাংহাই সরাসরি বিমান যোগাযোগ এবং সাংহাই শহরে ভিসা কাউন্সিলর সেবা।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস কর্তৃপক্ষকে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সম্ভাবনা অনুসন্ধান করতে এবং গ্যাস অনুসন্ধান ও বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়নে কাজ করতে নির্দেশ দেন।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে শক্তি আমদানি করে বাংলাদেশ লাভবান হতে পারে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখতে। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুতফে সিদ্দিকী যিনি এই সভায় উপস্থিত ছিলেন, লক্ষ্যভিত্তিক অর্থনৈতিক কূটনীতির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, বিদ্যমান বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে শিল্পগুলোকে আরও বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য একটি সমন্বিত বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়নের কাজ করবে সরকার।
বিডার চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করা উচিত। তিনি বলেন, আমাদের উচিত বেপজা ও বেজাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা এবং সেখানে বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধাগুলো বিশ্বজুড়ে প্রচার করা, যাতে আরও বিনিয়োগ আসে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
দেশে বেকার বেড়ে ২৬ লাখ ৬০ হাজার: বিবিএস
২০২৪ সালের শুরুতে দেশে বেকার মানুষ কম থাকলেও বছর শেষে ধারাবাহিকভাবে এ সংখ্যা বেড়েছে। মূলত জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের প্রভাবে বছরের শেষ সময়ে বেড়েছে বেকার। বর্তমানে দেশে মোট বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ ৬০ হাজার। ২০২৩ সালের একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল ২৪ লাখ ৯০ হাজার। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে দেশে বেকার মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
যেখানে বলা হয়েছে, দেশের কর্মে নিয়োজিত বা শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণকারী মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় বেকার লোকের সংখ্যা বেড়েছে। সম্প্রতি ২০২৪ সালের তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) শ্রমশক্তি জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিবিএস।
জরিপ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, কৃষি, সেবা এবং শিল্প—সব খাতেই কমেছে কর্মে নিয়োজিত জনগোষ্ঠী। নারীর চেয়ে উল্লেখযোগ্য হারে পুরুষ বেকারের সংখ্যা বেশি বেড়েছে।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) নিয়ম অনুসারে, বেকার জনগোষ্ঠী মূলত তারাই—যারা গত সাত দিনের মধ্যে মজুরির বিনিময়ে একঘণ্টা কাজ করার সুযোগও পাননি এবং গত এক মাস ধরে কাজ খুঁজেছেন, কিন্তু মজুরির বিনিময়ে কোনো কাজ পাননি। বিবিএস এ নিয়ম অনুসারেই বেকারের হিসাব দিয়ে থাকে।
বিবিএসের হিসাব অনুসারে, গত সেপ্টেম্বর মাস শেষে দেশে পুরুষ বেকারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৯০ হাজার, আর নারী বেকার ৮ লাখ ৭০ হাজার।
২০২৩ সালের একই সময়ে পুরুষ বেকার ১৬ লাখ ৪০ হাজার, আর নারী বেকার ছিল ৮ লাখ ৫০ হাজার। সে হিসাবে পুরুষ বেকার বেড়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার এবং নারী বেকার বেড়েছে ২০ হাজার।
বিবিএস বলছে, শ্রমশক্তিতে এখন (তৃতীয় প্রান্তিকে) ৫ কোটি ৯১ লাখ ৮০ হাজার নারী-পুরুষ আছেন। অথচ ২০২৩ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে এ সংখ্যা ছিল ৬ কোটি ১১ লাখ ৫০ হাজার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণকারী মানুষের সংখ্যা কমেছে ১৯ লাখ ৫০ হাজার। যেখানে মোট শ্রমশক্তিতে থাকা জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৫ কোটি ৬৫ লাখ ২০ হাজার লোক কর্মে নিয়োজিত। বাকিরা বেকার।
এছাড়া, শ্রমশক্তির বাইরে বিশাল জনগোষ্ঠী আছে—যারা কর্মে নিয়োজিত নয়, আবার বেকার হিসেবেও বিবেচিত নয়। এমন জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৬ কোটি ২৩ লাখ ৩০ হাজার। তারা মূলত সাধারণ ছাত্র, অসুস্থ ব্যক্তি, বয়স্ক নারী-পুরুষ, কাজ করতে অক্ষম ব্যক্তি, অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি এবং কর্মে নিয়োজিত নন বা নিয়োজিত হতে অনিচ্ছুক গৃহিণী।
শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে যুব শ্রমশক্তি ২ কোটি ৪০ লাখ ২০ হাজার। এরমধ্যে পুরুষ ১ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার, আর নারী ১ কোটি ২২ লাখ ৭০ হাজার।
বছরের ব্যবধানে যুব শ্রমশক্তি জনগোষ্ঠীর সংখ্যাও কমেছে। জরিপ অনুযায়ী, ২০২৩ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে যুব শ্রমশক্তি ছিল ২ কোটি ৬১ লাখ ৯০ হাজার, যা ২০২৪ সালের একই সময়ে কমে হয়েছে ২ কোটি ৪০ লাখ ২০ হাজার। সে হিসাবে যুব শ্রমশক্তি কমেছে ২১ লাখ ১৭ হাজার।