ধর্ম ও জীবন
ইসলাম যে ১৪ নারীকে বিয়ে করতে নিষেধ করেছে
নারী ও পুরুষের পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ একটি স্বাভাবিক মানবিক প্রবৃত্তি। এই আকর্ষণকে বৈধভাবে রূপ দেওয়ার একমাত্র হালাল পথ হলো বিয়ে। মহান আল্লাহ মুসলমানদের জন্য বিয়েকে বৈধ করেছেন, যাতে তারা গুনাহ থেকে দূরে থেকে শান্তিপূর্ণ জীবন যাপন করতে পারে। সেই সঙ্গে জেনাকে করেছেন হারাম।
বিয়ে নিয়ে মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন, নিশ্চয় আপনার পূর্বে অনেক রসুলকে প্রেরণ করেছি। আমি তাদেরকে স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান করেছি। (সুরা রাদ ৩৮)
ইসলামে যে ১৪ নারীকে বিয়ে করা হারাম
পবিত্র কুরআনের সুরা নিসার ২৩ থেকে ২৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ ১৪ জন নারীকে একজন পুরুষের জন্য বিয়ে করা হারাম ঘোষণা করেছেন। এই ১৪ জন নারী হলেন,
১. নিজের মা, ২. দাদি, নানি ও তাদের ওপরের সবাই, ৩. নিজের মেয়ে, ছেলের মেয়ে, মেয়ের মেয়ে ও তাদের গর্ভজাত কন্যাসন্তান, ৪. সহোদর, বৈমাত্রেয় (সৎ মায়ের মেয়ে) ও বৈপিত্রেয় (সৎ বাবার মেয়ে) বোন, ৫. বাবার সহোদর বোন এবং বাবার বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় বোন (ফুপু), ৬. যে স্ত্রীর সঙ্গে দৈহিক মিলন হয়েছে, তার পূর্ববর্তী বা পরবর্তী স্বামীর ঔরসজাত কন্যাসন্তান, স্ত্রীর আপন মা, নানি শাশুড়ি ও দাদি শাশুড়ি, ৭. মায়ের সহোদর বোন এবং মায়ের বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় বোন (খালা), ৮. ভাতিজি অর্থাৎ সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাইয়ের মেয়ে ও তাদের পরের প্রজন্মের কন্যাসন্তানরা, ৯. ভাগ্নি অর্থাৎ সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় বোনের মেয়ে ও তাদের পরের প্রজন্মের কন্যাসন্তানেরা, ১০. দুধ মেয়ে (স্ত্রীর দুধ পান করেছে এমন), সেই মেয়ের মেয়ে, দুধ ছেলের মেয়ে ও তাদের পরের প্রজন্মের কোনো কন্যাসন্তান এবং দুধ ছেলের স্ত্রী, ১১. দুধ মা এবং তার দিকের খালা, ফুপু, নানি, দাদি ও তাদের ঊর্ধ্বতন নারীরা, ১২. দুধবোন, দুধবোনের মেয়ে, দুধভাইয়ের মেয়ে এবং তাদের গর্ভজাত যেকোনো কন্যাসন্তান। অর্থাৎ দুধ সম্পর্ককে রক্ত সম্পর্কের মতোই গণ্য করতে হবে, ১৩. ছেলের স্ত্রী, ১৪. অন্যের বৈধ স্ত্রীকে বিবাহ করা হারাম।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
আখেরি মোনাজাতে শেষ হলো প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমা
আখেরি মোনাজাতে শেষ হলো তাবলিগ জামাত আয়োজিত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় ধাপ। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা ৮ মিনিটে মোনাজাত শুরু হয়। শেষ হয় ১২টা ২৭ মিনিটে।
মোনাজাত পরিচালনা করেন বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়ের। তিনি প্রথম ধাপের আখেরি মোনাজাতও পরিচালনা করেছিলেন।
এই মোনাজাতের মাধ্যমেই শেষ হলো শুরায়ি নেজাম তাবলিগ জামাতের টানা ৬ দিনের বিশ্ব ইজতেমা। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) থেকে দ্বিতীয় ধাপের ইজতেমা শুরু হয়। এর আগে ৩১ জানুয়ারি শুরু হয় প্রথম ধাপের ইজতেমা। আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে ২ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়।
বুধবার বাদ ফজর মুসল্লিদের উদ্দেশে বয়ান করেন ভারতের বেঙ্গালোরের মাওলানা মো. ফারুক। তার বয়ান বাংলায় তর্জমা করেন মুফতি আমানুল হক। সকাল সাড়ে নয়টায় বয়ান করেন ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমান। বয়ানের পর গুরুত্বপূর্ণ নসিহতমূলক বয়ান করেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা।
এদিকে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে মাওলানা সা’দ অনুসারী মুসল্লিদের তিন দিনের বিশ্ব ইজতেমা শুরু হবে। চলবে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এদিন আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শর্ত মেনে এবার ইজতেমা করছেন সাদ অনুসারীরা। শর্ত অনুসারে টঙ্গীর ময়দানে মাওলানা সাদ অনুসারীদের এ বছরই শেষ ইজতেমা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় ধাপ শুরু
আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে তাবলিগ জামাতের ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রথম ধাপ শেষ হয়েছে গতকাল রোববার (২ ফেব্রুয়ারি)। আজ সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হয়েছে দ্বিতীয় ধাপের ইজতেমা। বাদ ফজর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় ধাপের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে।
ইজতেমার এ ধাপে যারা অংশগ্রহণ করবেন, তারা তুরাগ নদীর তীরে ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করেছেন ইতোমধ্যে। তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের শুরায়ী নেজাম মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি জানান, ইজতেমা মাঠ এখন দ্বিতীয় ধাপে অংশগ্রহণকারীদের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। এই ধাপে অংশগ্রহণ করছে যাত্রাবাড়ী, কেরানীগঞ্জ, মোহাম্মাদপুর, মুন্সিগঞ্জ, জামালপুর, মানিকগঞ্জ, জয়পুরহাট, সিলেট, সিরাজগঞ্জ, মেহেরপুর, টাংগাইল, পাবনা, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, কক্সবাজার, নোয়াখালী, গোপালগঞ্জ, ঝালকাঠি, বরগুনা, মাদারীপুর, শরীয়তপুর,খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, নওগাঁ ও বান্দরবন জেলা। মোট ৪০টি খিত্তায় ঢাকার একাংশসহ ২২টি জেলার মুসল্লিরা অংশ নেবেন এতে।
প্রথম ধাপের ইজতেমার আখেরি মোনাজাত শেষে তাবলিগের স্বেচ্ছাসেবক ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের তিন শতাধিক পরিচ্ছন্নতাকর্মী আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ শুরু করেন। রোববার মাগরিবের আগেই পরিচ্ছন্নতা কাজ শেষ হয়।
জানা গেছে, মাঠে এরই মধ্যে ৭৬টি দেশ থেকে প্রায় তিন হাজার ৫০ জন বিদেশি নাগরিক অবস্থান করছেন। ৩-৫ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় ধাপের ইজতেমা শেষে নিজ দেশে ফিরবেন তারা।
বিদেশি নাগরিকদের ভোগান্তি এড়াতে পুলিশের পক্ষ থেকে ফরেন টেন্টে সাধারণ ডায়েরির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপেও প্রথম ধাপের মতো নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে বলে জানিয়েছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
আজ বিশ্ব হিজাব দিবস
বিশ্ব হিজাব দিবস আজ। হিজাবের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ তৈরি করতে ও হিজাবভীতির বিরুদ্ধে সংহতি জানাতে আজ দিবসটি পালিত হয়। এ বছর দিবসটির ১৩তম বার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য #HijabisUnsilenced অর্থাৎ হিজাব নীরবতাহীন।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) প্রতি বছরের মতো এবারও বিশ্বের ১৫০টির বেশি দেশে দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে। বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণ ও সম্প্রদায়ের নারীরা দিবসটি উদযাপনে অংশ নেন।
বিশ্ব হিজাব দিবস উদযাপনকারী সংস্থা ওয়ার্ল্ড হিজাব ডে জানিয়েছে, ‘হিজাব দিবসের লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে, পারস্পরিক বোঝাপড়া, সহনশীলতা ও সংহতি বৃদ্ধির মাধ্যমে মুসলিম নারীদের ধর্মীয় অনুশীলন সম্পর্কে ধারণা তৈরি করা। পোশাক ও অভিব্যক্তি সম্পর্কিত ব্যক্তিগত পছন্দের বৈচিত্র্য সম্পর্কে ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা করা ও সচেতনতা প্রচার করতে দিবসটি একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নিউইয়র্কের বাসিন্দা নাজমা খান ২০১৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘বিশ্ব হিজাব দিবস’ পালনের উদ্যোগ নেন। তিনি ১১ বছর বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। বর্তমানে তিনি নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসে বসবাস করছেন। সেখানে গিয়ে হিজাব পরা শুরু করেন তিনি।
কিন্তু হিজাব পরার পর থেকে নানা ধরনের অসহিষ্ণু আচরণের মুখোমুখি হন তিনি। তখন থেকে হিজাবের প্রতি ইতিবাচক ধারণা তৈরি করতে দিবসটি উদযাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। দ্য ওয়ার্ল্ড হিজাব ডের (ডাব্লিওএইচডি) উদ্যোগে দিবসটির কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
বিশ্বের অনেক দেশে নারীদের হিজাব পরা নিয়ে বাধা-বিপত্তি থাকলেও তা অনেক নারীর জন্য আশা ও অগ্রগতির প্রতীক।
আরবি ভাষায় হিজাবের শাব্দিক অর্থ, বিভাজন বা পর্দা। ইসলামি শরিয়ত অনুসারে মুসলিম নারীদের জন্য নির্দিষ্ট অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঢেকে রাখার বাধ্য-বাধ্যকতা রয়েছে।
মহান আল্লাহ মুসলিম নারীদের পুরো শরীর আবৃত রেখে পর্দা করার নির্দেশ দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীদের, কন্যাদের ও মুমিনদের নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের জিলবাবের (সর্বাঙ্গ আচ্ছাদনকারী পোশাক) একটা অংশ নিজেদের ওপর ঝুলিয়ে দেয়। যেন তাদের (স্বাধীন নারী হিসেবে) চেনা সহজতর হয়। ফলে তাদের উত্ত্যক্ত করা হবে না। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৫৯)
স্বাভাবিকভাবে, শালীনতাবোধ, গোপনীয়তা এবং নৈতিকতার প্রতীক হিসেবে মুসলিম নারীদের কর্তৃক হিজাব পরিহিত হয়ে থাকে। ইসলাম এবং মুসলিম বিশ্বের বিশ্বকোষ অনুযায়ী, কোরআনে পুরুষ এবং নারী উভয়ের ‘চোখে পড়া, চালচলন, পোশাক এবং যৌনাঙ্গের’ শালীনতাবোধে গুরত্ব দেয়। কোরআন মুসলিম নারীদের শালীনতাবোধের সঙ্গে পোশাক পরিধান করতে এবং তাদের বক্ষ অঞ্চল ও যৌনাঙ্গ সুরক্ষিত রাখতে নির্দেশনা দেয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
রমজানের সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি প্রকাশ
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এবার পবিত্র রমজান মাস শুরু হবে আগামী ২ বা ৩ মার্চ। তবে রমজান শুরুর সময় ২ মার্চ ধরে ঢাকার সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি প্রকাশ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
গত ২৭ জানুয়ারি ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১৪৪৬ হিজরির রমজান মাসের সেহরি ও ইফতারের এই সময়সূচি চূড়ান্ত করা হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দ্বিনি দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগের পরিচালক সরকার সরোয়ার আলম জাগো নিউজকে সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি চূড়ান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সময়সূচি অনুযায়ী, ২ মার্চ প্রথম রমজানে ঢাকায় সেহরির শেষ সময় ভোররাত ৫টা ৪ মিনিট ও ইফতারির সময় ৬টা ২ মিনিট।
তবে দূরত্ব অনুযায়ী ঢাকার সময়ের সঙ্গে সর্বোচ্চ ৯ মিনিট পর্যন্ত যোগ করে ও ৯ মিনিট পর্যন্ত বিয়োগ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ সেহরি ও ইফতার করবেন বলে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে জানা গেছে।
দেশের অন্যান্য বিভাগ ও জেলার সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয় থেকে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন দ্বিনি দাওয়াত বিভাগের কর্মকর্তারা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
ইসলামের দৃষ্টিতে শুভ-অশুভ সময়
সময় বা যুগকে গালি দেওয়া ইসলামে নিষিদ্ধ। ইসলামের বিশ্বাস অনুযায়ী বিশেষ সময়, মাস বা দিনকে অশুভ বা অলক্ষুণে মনে করার কোনো সুযোগ নেই। এটা অনেক সময় শিরকও গণ্য হতে পারে যদি সময়কে ক্ষমতাবান বা ভালো-মন্দের মালিক মনে করে গালি দেওয়া হয়। সময় ভালো-মন্দ বা শুভ-অশুভের মালিক নয়। আল্লাহ তাআলার আদেশ ছাড়া কারও কোনো লাভ বা ক্ষতির ক্ষমতা সময়ের নেই।
আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন,
قَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ يُؤْذِيْنِيْ ابْنُ آدَمَ، يَسُبُّ الدَّهْرَ وَأَنَا الدَّهْرُ بِيَدِيْ الْأَمْرُ أُقَلِّبُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ
আল্লাহ তাআলা বলেন, মানুষ আমাকে কষ্ট দেয়। তারা যুগকে গালি দেয়। অথচ আমিই যুগ নিয়ন্ত্রক। সব বিষয়ের নিয়ন্ত্রণ আমার হাতেই। আমার আদেশেই রাত-দিন সংঘটিত হয়। (সহিহ বুখারি: ৪৮২৬)
আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
لاَ يَسُبُّ أَحَدُكُمُ الدَّهْرَ فَإِنَّ اللَّهَ هُوَ الدَّهْرُ
তোমাদের সময়কে গালি দিও না। কারণ, আল্লাহ তাআলাই সময়ের নিয়ন্ত্রক। (সহিহ মুসলিম: ৫৮২৭)
ইসলামপূর্ব জাহেলি যুগে কাফেররা সময়কে ক্ষমতাবান মনে করতো। কল্যাণ ও ধ্বংসের স্রষ্টা মনে করতো। তাদের এ ধারণা বা বিশ্বাস অজ্ঞতাপ্রসূত ও ভ্রান্ত হিসেবে বর্ণনা করে আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَقَالُوْا مَا هِيَ إِلاَّ حَيَاتُنَا الدُّنْيَا نَمُوْتُ وَنَحْيَى وَمَا يُهْلِكُنَا إِلاَّ الدَّهْرُ وَمَا لَهُمْ بِذَلِكَ مِنْ عِلْمٍ إِنْ هُمْ إِلاَّ يَظُنُّوْنَ
তারা (মুশরিকরা) বলে, একমাত্র পার্থিব জীবনই আমাদের জীবন। এখানে আমরা মরি ও বাঁচি এবং একমাত্র সময়ই আমাদের ধ্বংস সাধন করে। মূলত এ ব্যাপারে তাদের নিশ্চিত কোন জ্ঞানই নেই। তারা তো শুধু মনগড়া কথা বলে। (সুরা জাসিয়াহ: ২৪)
কোনো নির্দিষ্ট দিন বা সময়কে অলক্ষুণে বা অশুভ মনে করাকে হাদিসে শিরক বলা হয়েছে। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,
الطِّيَرَةُ شِرْكٌ الطِّيَرَةُ شِرْكٌ ثَلاَثًا وَمَا مِنَّا إِلاَّ وَلَكِنَّ اللهَ يُذْهِبُهُ بِالتَّوَكُّلِ
কোনো কিছুকে অলুক্ষুণে মনে করা শিরক। কোনো কিছুকে অশুভ মনে করা শিরক, কোনো কিছুকে কুলক্ষণ মনে করা শিরক। আমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যার মনে কুধারণা জন্মে না, তবে আল্লাহ ওপর ভরসার মাধ্যমে আল্লাহ তা দূর করে দেন। (সুনানে আবু দাউদ: ৩৯১২)
ইমরান ইবনে হোসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَطَيَّرَ وَلا تُطُيِّرَ لَهُ وَلا تَكَهَّنَ وَلا تُكُهِّنَ لَهُ أََوْ سَحَرَ أَوْ سُحِرَ لَهُ
সে ব্যক্তি আমাদের দলভুক্ত নয়, যে ব্যক্তি (কোন বস্তু, ব্যক্তি, কাজ বা কালকে) অশুভ বলে মানে অথবা যার জন্য অশুভ লক্ষণ পরীক্ষা করে দেখা হয়, যে ব্যক্তি ভাগ্য গণনা করে অথবা যার জন্য ভাগ্য গণনা করা হয়। যে ব্যক্তি জাদু করে অথবা যার নির্দেশে জাদু করা হয়। (তাবরানি: ১৪৭৭০)
তাই সময়কে শুভ-অশুভ মনে করা যাবে না। সময়কে ক্ষমতাবান মনে করা যাবে না এবং গালি দেওয়া বা মন্দ বলা যাবে না। সময় আল্লাহ তাআলার নেয়ামত হিসেবে আমাদের জীবনে আসে। আমরা এ নেয়ামতের সদ্ব্যবহার করে, কল্যাণকর কাজ করে সময়কে কল্যাণকর করে তুলতে পারি। তা না করে আমরা যদি সময়ের অপচয় করি, অকল্যাণকর কাজে লাগাই ওই সময়টুকু আমাদের কাজের কারণেই অশুভ ও অকল্যাণকর হয়।