আন্তর্জাতিক
বিবিসির চোখে সিরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার ‘আয়নাঘর’

সিরিয়ার মানুষদের কাছে ভীতিকর এই জায়গাটিতে অনেককে আটক ও নির্যাতন করা হতো। মাটির নিচে সাবেক সরকারের এই গোপন আস্তানায় প্রবেশ করেন বিবিসি অ্যারাবিক সার্ভিসের সংবাদদাতা ফেরাস কিলানি। এটি এমনই এক জগত, যেখানে বাইরের মানুষ খুব কমই ঢুকতে পেরেছে।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সদর দপ্তরের বেইসমেন্টে এই ভয়ানক জায়গা দেখা যায়।
যেটি দেশটির গোপন গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের অংশ, যা কয়েক দশক ধরে নৃশংস নেতৃত্বকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছে। পুরু ইস্পাতের দরজা দেওয়া সারিবদ্ধ ছোট ছোট কক্ষ দেখা যায়, যেখানে বন্দিদের রাখা হতো। একটি কক্ষের ভেতর তাকিয়ে দেখা যায়, ঘরটি মাত্র দুই মিটার লম্বা ও এক মিটার চওড়া। ময়লা দেয়ালে গাঢ় দাগ লেগে রয়েছে।
দেয়ালের উঁচুতে থাকা ছোট ছোট ঝাঁঝরি দিয়ে যে সামান্য সূর্যের আলো পৌঁছয়, সেটাই এসব কক্ষের একমাত্র আলোর উৎস। এই বদ্ধ কক্ষে বন্দিদের মাসের পর মাস আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ ও নির্যাতন করা হতো। এগুলোর অবস্থান দামেস্কের কেন্দ্রের কাফর সউসা এলাকার একটি ব্যস্ত রাস্তার ঠিক নিচে, যেখানে নিরাপত্তা সদর দপ্তর অবস্থিত।
প্রতিদিন হাজার হাজার সিরীয় এই পথ দিয়ে যাওয়া আসা ক্যার, তাদের দৈনন্দিন জীবনের কাজকর্ম চালিয়ে যেত।
অথচ, তাদের কোনো ধারণাই ছিল না যে মাত্র কয়েক মিটার দূরে তাদের মতো কিছু নাগরিককে আটকে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে।
একটি করিডরে দেখা যায়, ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্টের ছিন্নভিন্ন ছবিগুলো মাটিতে পড়ে আছে। এর সঙ্গে রয়েছে গোয়েন্দা সংস্থার ফাইলের স্তূপ, যেসব নথি লাখো মানুষের কর্মকাণ্ড নজরদারির জন্য ব্যবহৃত হতো।
এই স্থানে বন্দিদের সাময়িকভাবে আটকে রাখার পর, তাদের দীর্ঘমেয়াদে আটক রাখতে বন্দিশিবিরে পাঠানো হতো।
রাজধানীর উপকণ্ঠে অবস্থিত সাইদনায়া কারাগার, এমনই এক কুখ্যাত বন্দীশিবির। এই স্থাপনাটি সিরিয়ার সাবেক সরকারের পরিচালিত বিশাল নেটওয়ার্কের একটি অংশ।
স্বাধীন পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটস (এসএনএইচআর) ২০১১ সালে আসাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরুর পর থেকে গত জুলাই পর্যন্ত ১৫ হাজার ১০২টি মৃত্যুর তথ্য রেকর্ড করেছে, যা দেশটির কারাগারে নির্যাতনের কারণে হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, চলতি বছরের অগাস্ট পর্যন্ত এক লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষকে আটক বা জোর করে বন্দি করে রাখা হয়।
মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, সাবেক সিরীয় সরকার ভিন্নমত দমন করার জন্য বহু বছর ধরে নির্যাতন ও গুম করত। সংস্থাটির মতে, দেশটির গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কাউকে জবাবদিহি করত না।
স্টেট সিকিউরিটি সদর দপ্তর থেকে কয়েক শ মিটার দূরে জেনারেল ইন্টেলিজেন্স ডিরেক্টরেট নামে আরেকটি গোয়েন্দা সংস্থার অফিস রয়েছে, যা দেশটির গোয়েন্দা সংস্থার নেটওয়ার্কের আরেকটি অংশ। আসাদ সরকারবিরোধীরা অভিযোগ করেছে, এটি এমন একটি সংস্থা, যা মানুষের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি বিষয় নজরদারি করত।
অফিসের ভেতরে একটি কম্পিউটার সার্ভার রুম পাওয়া যায়। মেঝে ও দেয়াল একদম ঝকঝকে সাদা এবং সারি ধরে কালো ডাটা স্টোরেজ ইউনিটগুলো শান্তভাবে গুঞ্জন করছে।
দামেস্কের বেশির ভাগ স্থানে বিদ্যুৎ নেই। তবে এই স্থাপনাটি হয়ত এত গুরুত্বপূর্ণ যে এর নিজস্ব বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা রয়েছে। ডিজিটাল সিস্টেম থাকা সত্ত্বেও সেখানে প্রচুর কাগজের নথিও রয়েছে, যা সবই অক্ষত আছে বলে মনে হচ্ছে। একটি কক্ষের দেয়ালজুড়ে লোহার পুরনো আলমারিতে নথিগুলি ঠেসে রাখা হয়েছে। আরেকটি দেয়ালে সারি ধরে নোটবইগুলো মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত থরে থরে সাজানো আছে।
ধারণা করা হচ্ছে, যখন শাসনব্যবস্থা ভেঙে পড়ে, তখন এখানে যারা কাজ করতেন, তারা পালানোর আগে কিছুই ধ্বংস করার সুযোগ পাননি। নথিগুলো অনেক পুরনো, বছরের পর বছর ধরে সংরক্ষণ করা, কিন্তু কিছুই ধ্বংস করা হয়নি। এমনকি সেখানে গুলির খালি খোসা ভরা বাক্সও পাওয়া যায়। আরেকটি ঘরে দেখা গিয়েছে নানা ধরণের অস্ত্রশস্ত্র, যার মধ্যে মর্টার আর স্থলমাইনও আছে।
বিবিসি সংবাদদাতার সঙ্গে এইচটিএস নামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর একজন যোদ্ধা ছিলেন, যারা এখন দামেস্ক নিয়ন্ত্রণ করছে। তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, এখানে এত অস্ত্র কেন? তিনি বলেন, ‘আসাদ সরকারের সময়, রাশিয়ার সহযোগিতায় সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সিরিয়ার মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও নিপীড়নের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল।’
জেনারেল ইন্টেলিজেন্স ডিরেক্টরেটে জমা থাকা পাহাড় সমান নথি ও কম্পিউটার রেকর্ড, ভবিষ্যতে সিরিয়ার নাগরিকদের আটক ও নির্যাতনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
এইচটিএস নেতা আহমেদ আল-শারা, যিনি আবু মুহাম্মদ আল-জোলানি নামেও পরিচিত, তিনি এক বিবৃতিতে ঘোষণা করেছেন, বিগত শাসনামলে যারা আটক ব্যক্তিদের নির্যাতন বা হত্যার সঙ্গে জড়িত, তাদের সবাইকে খুঁজে বের করে বিচার করা হবে; ক্ষমা করার প্রশ্নই আসে না। তিনি টেলিগ্রামে এক বার্তায় বলেছেন, ‘আমরা সিরিয়ার ভেতরে তাদের খুঁজে বের করব এবং যারা পালিয়ে গেছে তাদেরকে আমাদের হাতে তুলে দিতে অন্যান্য দেশের কাছে অনুরোধ জানাব, যাতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা যায়।’
কিন্তু সিরিয়ার গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক ভেঙে পড়ার প্রভাব দেশের সীমানার বাইরে অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। আবার এমন অনেক নথি পাওয়া গিয়েছে যেগুলো জর্দান, লেবানন ও ইরাকের সঙ্গে সম্পর্কিত। যদি এই নথিগুলো প্রকাশ্যে আসে এবং ওই দেশগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে আসাদ সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার সংযোগ সামনে আসে, তাহলে পুরো অঞ্চলেই বড় ধাক্কা লাগতে পারে। আসাদ সরকারের সাবেক গোয়েন্দা সংস্থার যত তথ্য সামনে আসবে, এর প্রভাব তত বড় হতে পারে।

আন্তর্জাতিক
২০৩০ সালের মধ্যে ১ কোটি ৪০ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যুঝুঁকি

যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা কার্যক্রম ইউএসএআইডি বাতিল করার কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ১ কোটি ৪০ লাখের বেশি মানুষ, যার এক-তৃতীয়াংশ শিশু, মারা যেতে পারে বলে নতুন এক গবেষণায় সতর্ক করা হয়েছে। মঙ্গলবার ‘দ্য ল্যানসেট’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণাটি এমন এক সময়ে এলো, যখন বিশ্ব ও ব্যবসায়িক নেতারা স্পেনের সেভিয়ায় এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় ত্রাণ সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন।
জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফেরার আগে ইউএসএআইডি বিশ্ব মানবিক সহায়তার ৪০ শতাংশের বেশি দিত। ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে তার ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা ও বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক ইউএসএআইডিকে ‘উডচিপারে’ ফেলার দম্ভোক্তি করেছিলেন।
গবেষণার সহলেখক এবং বার্সেলোনার গ্লোবাল হেলথ ইনস্টিটিউটের (আইএসগ্লোবাল) গবেষক দাভিদে রাসেলা বলেন, “এই তহবিল কর্তন ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে দুই দশকের অগ্রগতি হঠাৎ থামিয়ে দিতে বা উল্টো পথে নিয়ে যেতে পারে। অনেক নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের জন্য এটি বৈশ্বিক মহামারি বা বড় ধরনের সশস্ত্র সংঘর্ষের সমান ধাক্কা হতে পারে।”
১৩৩টি দেশের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০০১ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ইউএসএআইডি তহবিল উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ৯ কোটি ১০ লাখ মৃত্যুরোধ করেছে। চলতি বছরের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ইউএসএআইডি তহবিলে ৮৩ শতাংশ কর্তনের ঘোষণা দেওয়ার পর গবেষকরা মডেল ব্যবহার করে মৃত্যুহারের সম্ভাব্য প্রভাব অনুমান করেন।
প্রকল্প অনুযায়ী, তহবিল কর্তনের ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে ১ কোটি ৪০ লাখের বেশি মৃত্যু এড়ানো সম্ভব হবে না, যার মধ্যে ৪৫ লাখের বেশি শিশু মৃত্যুর ঝুঁকিতে থাকবে, অর্থাৎ বছরে প্রায় ৭ লাখ শিশু মারা যেতে পারে। তুলনামূলকভাবে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে প্রায় ১ কোটি সেনা নিহত হয়েছিল।
গবেষণায় দেখা গেছে, ইউএসএআইডি সহায়তাপ্রাপ্ত দেশগুলোতে মৃত্যুহার ১৫ শতাংশ কমেছে। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে এই হ্রাসের হার দ্বিগুণ, ৩২ শতাংশ। বিশেষ করে এই সহায়তা এইডস, ম্যালেরিয়া এবং উপেক্ষিত ট্রপিক্যাল রোগজনিত মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে এনেছে।
তবে ইউএসএআইডি তহবিল কমানোর পর জার্মানি, যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সসহ বেশ কয়েকটি দাতা দেশও তাদের বৈদেশিক সহায়তা বাজেট কাটার ঘোষণা দিয়েছে। আইএসগ্লোবালের ক্যাটেরিনা মন্টি বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর এই তহবিল কর্তনের ফলে আগামী বছরগুলোতে আরও বেশি মৃত্যু হতে পারে।
গবেষকরা বলছেন, যদি বৈশ্বিক সহায়তার প্রতিশ্রুত পরিমাণ বাড়ানো যায়, তাহলে এই মৃত্যুহার কমিয়ে আনা সম্ভব। ইউএসএআইডির তহবিল কর্তনের আগে এটি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যয়ের মাত্র ০.৩ শতাংশ ছিল। একজন সহলেখক বলেছেন, “মার্কিন নাগরিকরা প্রতিদিন প্রায় ১৭ সেন্ট ইউএসএআইডিতে অবদান রাখেন, যা বছরে প্রায় ৬৪ ডলার। এই সামান্য অবদানের মাধ্যমে কোটি কোটি প্রাণ বাঁচানো সম্ভব, যা জানলে বেশিরভাগ মানুষ এই তহবিল চালু রাখার পক্ষে মত দিতেন।”
গবেষক রাসেলা বলেন, “এখনই তহবিল কমানোর নয়, বরং বাড়ানোর সময়।”
আন্তর্জাতিক
ট্রাম্পের তীব্র সমালোচনা করলেন ইলন মাস্ক

আলোচিত সেই বিল নিয়ে আবারও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তীব্র সমালোচনা করেছেন বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনকুবের এবং বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও স্পেসএক্স প্রধান ইলন মাস্ক।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
ইলন মাস্ক বলেন, ট্রাম্পের কর এবং ব্যয়ের কাটছাঁট সংক্রান্ত বিল দেশকে অনিয়ন্ত্রিত ঋণের পথে ঠেলে দিচ্ছে। আমরা একদলীয় দেশের বাসিন্দা এবং এখন সময় নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের।
যে বিলটির কথা মাস্ক বলছেন, তা যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ঋণসীমা ৫ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। মাস্ক এই পরিকল্পনাকে ‘পাগলামী পর্যায়ের খরচ’ আখ্যা দিয়ে বলেন, যদি এই পাগলামিপূর্ণ ব্যয় বিল পাস হয়, তাহলে পরদিনই ‘আমেরিকা পার্টি’ গঠিত হবে।
তিনি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের এখন ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান ইউনিপার্টির বাইরে একটি বিকল্প দল দরকার, যাতে জনগণের আসল কণ্ঠস্বর উঠে আসতে পারে।
এর আগেও এই বিল নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে প্রকাশ্যে বাকযুদ্ধে জড়িয়েছিলেন মাস্ক।
এদিকে মাস্কের মন্তব্যের পরে টেসলার শেয়ারমূল্য বড় ধরনের পতনের মুখে পড়ে। যদিও পরে শেয়ার দর কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায়। এই ঘটনা বাজারে রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক নেতাদের প্রকাশ্য দ্বন্দ্বের প্রভাব কতটা মারাত্মক হতে পারে, তা দেখিয়ে দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক
আবারও পরমাণু কেন্দ্রে ব্যাপক নির্মাণকাজ চালাচ্ছে ইরান

ইরানে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর পরমাণু কর্মসূচিতে তেহরানের জোরদার পদক্ষেপের আশঙ্কা করেছিলেন বিশ্লেষকরা। সম্প্রতি ম্যাক্সার টেকনোলজিসের প্রকাশিত নতুন স্যাটেলাইট চিত্রে এর প্রমাণ মিলেছে। রোববার বিবিসি ভ্যারিফাই ওই চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখেছে, মার্কিন বোমা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ইরানের ফোরদো পারমাণবিক কেন্দ্রে ব্যাপক নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। সেখানে ভারী নির্মাণ সরঞ্জাম ব্যবহার করা হচ্ছে। এর মধ্যে ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির-সাঈদ ইরাভানি জাতিসংঘকে বলেছেন যে তেহরানের পরমাণু সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি কখনোই বন্ধ হবে না।
স্যাটেলাইট চিত্র অনুযায়ী, রোববার নতুন করে নির্মাণ করা একটি প্রবেশপথের কাছে একটি খননযন্ত্র (এক্সক্যাভেটর) ও ক্রেন দেখা গেছে। মার্কিন বাঙ্কার-বাস্টার বোমা যেখানে আঘাত করেছিল, এটি তার খুব কাছাকাছি। পাহাড়ের নিচে একটি বুলডোজার ও লরিও স্যাটেলাইট ছবিতে দৃশ্যমান। এ ছাড়া ফোরদো কেন্দ্রের প্রবেশপথে ও কমপ্লেক্সের পূর্ব দিকে অবস্থিত একটি ক্ষতিগ্রস্ত ভবনেও নির্মাণকাজ চলছে। এই দুটি স্থান ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। মার্কিন বাঙ্কার-বাস্টার বোমা হামলার পর দিন ইসরায়েল এই দুই স্থানে বিমান হামলা চালিয়েছিল।
পারমাণবিক অস্ত্র বিশেষজ্ঞ ডেভিড অলব্রাইট স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে জানিয়েছেন, সম্ভবত বোমা হামলায় সৃষ্ট গর্ত ভরাট, প্রকৌশলগত ক্ষতির মূল্যায়ন ও তেজস্ক্রিয়তা পরিমাপের কাজ চলছে।
মার্কিন হামলার পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ইরানের প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রগুলো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি গত শুক্রবার বলেছেন, ইরান কয়েক মাসের মধ্যেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ আবার শুরু করতে পারে। গ্রোসির এ মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের বিপরীত। ট্রাম্প বলেছিলেন, ওই হামলার ফলে ইরানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ‘দশকের পর দশক পিছিয়ে গেছে।’
দেখা যাচ্ছে, গ্রোসির এ মূল্যায়ন মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার (ডিআইএ) প্রাথমিক বিশ্লেষণকে সমর্থন করে। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত সপ্তাহে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে হামলা চালায়, তাতে কেন্দ্রীয় অবকাঠামোগুলো ধ্বংস হয়নি। এতে ইরানের কর্মসূচি সাময়িকভাবে (সম্ভবত কয়েক মাসের জন্য) বাধাগ্রস্ত হয়েছে মাত্র।
চূড়ান্ত সামরিক ও গোয়েন্দা মূল্যায়ন প্রকাশ না পেলেও ট্রাম্প বারবার দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলায় তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ‘সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন’ করা হয়েছে। রোববার সিবিএসে প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির-সাঈদ ইরাভানি বলেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম কখনোই বন্ধ হবে না। কারণ, ‘শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি’ ইরানের ‘অপরিহার্য অধিকার’।
১৩ জুন ইসরায়েলের নজিরবিহীন হামলার পর ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে ১২ দিনের সংঘাত শুরু হয়। তেল আবিবের ভাষ্য, এ হামলার লক্ষ্য ছিল তেহরানকে পারমাণবিক বোমা তৈরি থেকে বিরত রাখা। তবে ইরান শুরু থেকেই জোর দিয়ে বলছে, সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যেই তাদের পরমাণু কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। হামলায় তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচির কতটা ক্ষতি হয়েছে, তা নিয়ে এখনো জোর বিতর্ক চলছে।
এর মধ্যে রোববার ফক্স নিউজে প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প শর্ত সাপেক্ষে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘ইরান যদি শান্তিপূর্ণ আচরণ করে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা করে, তাহলেই তাদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হতে পারে।’
এর মধ্যে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন ইরানকে বেসামরিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য পারমাণবিক কর্মসূচি গড়ে তুলতে ৩০ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে। এ প্রসঙ্গে গতকাল ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সোশ্যাল ট্রুথে বলেন, তিনি ইরানের সঙ্গে কোনো ধরনের কথা বলছেন না এবং দেশটিকে তিনি কোনো প্রস্তাবও দিচ্ছেন না।
ট্রাম্প লিখেছেন, ‘ভুয়া ডেমোক্র্যাট সিনেটর ক্রিস কুনসকে বলো, আমি ইরানকে কিছুই দিচ্ছি না। ওবামার মতো না, যে পারমাণবিক অস্ত্রের পথ খুলে দেওয়া জেসিপিওএর আওতায় ইরানকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার দিয়েছিল (যেটার মেয়াদ এখন শেষ হয়ে যেত)। আমি ইরানের সঙ্গে কোনো আলাপ করছি না, কারণ, আমরা তাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছি।’
এদিকে, তেহরানের সঙ্গে তাদের পরমাণু কর্মসূচি যখন বিভিন্ন পক্ষের আলোচনা-সমাঝোতার প্রচেষ্টা চলছে, তখন ইরান-ইসরায়েলের ১২ দিনের যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের তথ্য প্রকাশ পাচ্ছে। গতকাল ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা জানায়, ওই যুদ্ধে ইরানে কমপক্ষে ৯৩৫ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১৩২ জন নারী ও ৩৮টি শিশু রয়েছে।
আর রুশ বার্তা সংস্থা তাসকে উদ্ধৃত করে ইরানের সংবাদমাধ্যম দেফা প্রেস বলছে, ওই যুদ্ধে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ইসরায়েলে কমপক্ষে ৩১ হাজার ও ৪ হাজার সম্পূর্ণ ধ্বংস বা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ক্ষয়ক্ষতি প্রমাণ করে, চলমান সংঘাতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইসরায়েলে ‘অভাবনীয় ও অপূরণীয় ধ্বংস’ এনেছে।
আন্তর্জাতিক
বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে আলোচনায় প্রস্তুত ভারত: জয়সওয়াল

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, ‘উপযুক্ত পরিবেশে’ বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়েই আলোচনা করতে প্রস্তুত ভারত।
শুক্রবার (২৭ জুন) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি নবায়ন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে প্রতিষ্ঠিত কূটনৈতিক পদ্ধতি আছে, যার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সব দিক মোকাবিলা করা যায়।
তার এ মন্তব্যটি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন ভারতের পার্লামেন্টে পররাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটি ‘ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ’ নিয়ে আলোচনার জন্য ৪ জন বিশেষজ্ঞকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
একটি সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য হিন্দু জানিয়েছে, এই বিশেষজ্ঞরা হলেন- সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিব শঙ্কর মেনন, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম হাশনাইন, ঢাকায় ভারতের সাবেক হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাস এবং জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অমিতাভ মাত্তু।
বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রণধীর বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ন্যায়বিচার, সমমর্যাদা এবং পারস্পরিক চাওয়ার ভিত্তিতেই ভারতে সংশোধিত বাণিজ্যিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা এসব বিষয়ের সমাধানের অপেক্ষায় রয়েছে ভারত। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আগেও বহুবার গঠনমূলক বৈঠকে আলোচনা করেছি, এমনকি সচিব পর্যায়েও।
নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে আলোচনার জন্য আমরা প্রস্তুত, যদি তা পারস্পরিক উপকারে উপযোগী পরিবেশে হয়। ১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি নবায়নের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
১৯ জুন বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়। চীনের কুনমিংয়ে ‘নবম চায়না-সাউথ এশিয়ান এক্সপজিশন অ্যান্ড দ্যা সিক্সথ চায়না-সাউথ এশিয়া কো-অপারেশন’ শীর্ষক বৈঠকের সাইডলাইনে তিন দেশের পররাষ্ট্র সচিবদের ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই ত্রিপক্ষীয় বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘আশপাশের অঞ্চলের ঘটনাপ্রবাহে আমরা সবসময় নজর রাখি। কারণ এগুলো আমাদের স্বার্থ ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত। প্রতিটি দেশের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক, তা আলাদা আলাদা ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে।
দ্য হিন্দু জানিয়েছে, ভারতীয় সংসদীয় কমিটির বাংলাদেশ বিষয়ক বিশেষ আলোচনার প্রাথমিক প্রস্তুতিপত্র অনুযায়ী, আলোচনায় অংশগ্রহণকারী বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে যে বিষয়গুলোতে মতামত চাওয়া হবে তা হলো- ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ধর্মীয় উগ্রপন্থার উত্থান, বাংলাদেশের অস্থিরতা থেকে ভারতের নিরাপত্তা হুমকি এবং ২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশ-চীনের ‘কৌশলগত সখ্যতা’ নিয়ে ভারতের উদ্বেগ।
আন্তর্জাতিক
ইরানকে ৩০ বিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের

পারমাণবিক কর্মসূচি ইস্যুতে মুখ থুবড়ে পড়া আলোচনার টেবিলে ইরানকে ফিরিয়ে আনতে মরিয়া হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। নিজেদের পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ ইরানকে কোটি কোটি ডলার ও অন্যান্য সুবিধা দিয়ে খুশি করতে চায় দেশটি। আলোচনায় ফিরতে রাজি হলে দেওয়া হতে পারে আরও নানান সুযোগ সুবিধা।
ইতোমধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের লোকজন বিষয়টি নিয়ে দৌঁড়ঝাঁপ শুরু করেছে। তারা গোপনে ইরানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে। খবর সিএনএনের।
খবর অনুসারে, পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদনে ব্যবহৃত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম বন্ধ রেখে বিদ্যুৎ উৎপাদনে পারমাণবিক শক্তি ব্যব্হার করা হলে ইরানকে ২০ থেকে ৩০ বিলিয়ন ডলার দেওয়া হবে। এছাড়া শিথিল করা হবে দেশটির উপর বিদ্যমান অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা। বিভিন্ন দেশে ফ্রিজ করে রাখা ইরানের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সম্পদের একাংশ ছাড় করা হবে।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বেশ কিছুদিন ধরেই দেশটির সঙ্গে আলোচনায় ছিল যুক্তরাষ্ট্র। এ ধারাবাহিকতায় অনুষ্ঠেয় পরবর্তী বৈঠকের ঠিক একদিন আগে ইসরায়েল একতরফাভাবে ইরানে হামলা চালায়। তারা ইরানের বেশ কয়েকজন পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করে। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। যুক্তরাষ্ট্র এ হামলার কোনো প্রতিবাদ করেনি। বরং তারা নিজেরাও ইসরায়েলের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বোমাবর্ষণ করে। এ ঘটনায় চরম ক্ষুব্ধ ইরান তখনই ঘোষণা করেছিল তারা আর আলোচনার টেবিলে ফিরবে না। তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রস্থানীয় কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের মাধ্যমে গোপনে এ বিষয়ে ইরানের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র বেশ কয়েকটি প্রস্তাব নিয়ে আগানোর চেষ্টা করছে। এসব প্রস্তাবের মধ্যে ইরানের পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও বিদেশে আটক সম্পদ থেকে ৬ বিলিয়ন ডলার অবমুক্ত করার মতো বিষয় রয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র নিজে সরাসরি ইরানকে কোনো আর্থিক বা বিনিয়োগ সুবিধা দেবে না; মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ এই অর্থের যোগান দেবে। তা দিয়ে ফরডো পারমাণবিক স্থাপনা পুর্নির্মাণ করা হবে। এ লক্ষ্যে গত শুক্রবার অর্থাৎ ইরানে মার্কিন হামলার ঠিক আগের দিন মধ্য প্রাচ্যের কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত উইটকফ।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের এমন প্রস্তাবে ইরান সম্মতি দেবে কি-না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। কারণ দু’দিন আগে ট্রাম্প ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র আবার আলোচনার টেবিলে ফিরছে বলে ঘোসণা দিলেও উরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তা নাকচ করে দিয়েছেন।