জাতীয়
গুম অবস্থায় ভারতের কারাগারে যাওয়ার লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন সুখরঞ্জন

মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া সুখরঞ্জন বালি কীভাবে ভারতের কারাগারে পৌঁছেন তার এক লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন তিনি।
ঘটনাটি ঘটে ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর সকালে। অপহৃত হওয়ার পর তার সঙ্গে কী কী ঘটেছে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপের সময় তার বিশদ বর্ণনা তুলে ধরেন সুখরঞ্জন বালি।
সুখরঞ্জন বালি বলেন, ২০১২ সালের নভেম্বর মাসের ৫ তারিখে আমি ঢাকায় কোর্টে গিয়েছিলাম। আমার সঙ্গে দুইজন ব্যারিস্টার ও দুইজন উকিল ছিলেন। আমাদের গাড়ি দেখে কোর্টের গেটে আটকে ফেলা হয়, তখন আমার সঙ্গে থাকা আইনজীবীদের সঙ্গে গেটের লোকদের তর্ক-বিতর্ক চলছিল। আমি গাড়িতে দু’জন ব্যারিস্টারের মাঝে বসা ছিলাম, এ সময় কিছু সাদা পোশাকের লোক আমাকে নামিয়ে টানাটানি করতে লাগলো।
‘তারা বলছিল, যার জন্য গাড়ি থামানো হয়েছে সেই লোক উনি। একেই আমাদের দরকার। সেই লোকরা আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে টেনে হিঁচড়ে পাঁচ-ছয় হাত দূরে অপর একটি গাড়িতে তুলে আমার চোখ বেঁধে ফেলে। একটু পরে গাড়িটি ছেড়ে দেওয়া হয়।’
‘প্রায় আধা ঘণ্টা গাড়িটি চালানোর পরে সাদা পোশাকের লোকেরা আমাকে হাঁটাতে থাকে। এ সময় আমি নিচের দিকে নামার মতন অনুভব করি। কিছুদূর হাঁটিয়ে একটা দরজা খুলে অন্ধকার জায়গায় আমাকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। কোনো আলো সেখানে ছিল না, অথচ তখন সকাল দশটা-এগারোটা বাজে।’
সুখরঞ্জন বালি বলেন, আমাকে একটি খালি রুমে আটকে দেওয়া হয়। বাইরে কোনো শব্দ ছিল না ঘরে কোনো জানালা বা কোনো ফাঁকা ছিল না, যা দিয়ে কোনোরকম আলো ভেতরে আসতে পারে। তখন আমাকে মাঝে মাঝে অল্প করে খাবার দেওয়া হতো। সেখানে কিছু লোক ছিল যারা আমাকে খাবার দিত বা পাহারায় আসত তারা নীল রংয়ের পোশাক পরা থাকতো।’
তিনি বলেন, এর দুদিন পর আমাকে সেই রুম থেকে বের করে অন্য একটি রুমে নেয়া হয়। সেখানে আমাকে নিয়ে তারা জোর করে সাঈদী হুজুরের বিরুদ্ধে স্বীকারোক্তি নিতে চায়। সে রুমে অনেকগুলো ক্যামেরা লাগানো ছিল আমি দেখতে পাই। আমার ভাইয়ের হত্যায় সাঈদী হুজুর জড়িত কি-না জানতে চাইলে আমি যখন অস্বীকার করি এবং বলি যে, যারা আমার ভাইকে হত্যা করেছে তাদের আমি চিনি। তাদের বিরুদ্ধে আমি সাক্ষ্য দিতে পারবো, কিন্তু তারা বারবার আমাকে সাঈদী হুজুরের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে বলে এবং একপর্যায়ে তারা আমাকে মারধরসহ কারেন্টের শক দেয়, নির্যাতন করে।
সুখরঞ্জন বালি বলেন, তারা আমাকে একপর্যায়ে টাকা দিয়ে লোভ দেখানোর চেষ্টা করে এরপরও রাজি না হলে তারা অমানবিক নির্যাতন চালায়। সেখানে টানা কয়েকদিন ছিলাম। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ঘরে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতো। তখন তিন-চারজন লোক জিজ্ঞাসাবাদ করতো।’
সুখরঞ্জন বালি বলেন, তাদের অত্যাচারে আমি অসুস্থ হয়ে যাই। কয়েকদিন সেখানে থাকার পর তারা একদিন সকাল সাতটা কী আটটায় দিকে আমাকে চোখ বেঁধে গাড়িতে তোলে। আয়নাঘর থেকে যখন গাড়িতে ওঠানো হচ্ছিল তখন আমি ভয়ে ভয়ে জানতে চাই আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? জবাবে তারা বলেন, আমরা তোকে তোর দেশে নিয়ে যাবো। বল কোথায় নামিয়ে দিলে তুই তোর বাড়ি চিনে যেতে পারবি। তখন বলি, বাগেরহাটে নামিয়ে দিলে আমি আমার বাড়িতে যেতে পারবো। সারাদিন ধরে গাড়ি চালানোর পর মাঝে একবার ফেরিতে ওঠানো ও নামানো হয় সেটা আমি অনুভব করতে পারি।
তিনি বলেন, একপর্যায়ে আবার গাড়ি চলতে শুরু করে। দীর্ঘক্ষণ চালানোর পর দুইজন লোক গাড়িতে ওঠে। এর কিছুক্ষণ পর দশ-বারো মিনিটের মতো হবে গাড়িটি চলতে চলতে থেমে যায়। এ সময় গাড়ি থেকে আমাকে নামানো হয় ও চোখ খুলে আমাকে সামনে এগোতে বলা হয়।
সুখরঞ্জন বালি বলেন, জায়গাটা বাগেরহাট কী-না সেটা বুঝতে চেষ্টা করি। আমি বুঝতে পারি যে, ওটা বাগেরহাট নয় এবং স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি সামনে বিএসএফ, এটা বর্ডার এলাকা। সেখানে যারা আমায় নিয়েছে কান্না করতে করতে আমি বিএসএফ-এর হাতে তুলে না দিতে তাদের অনুরোধ করি। আমি বলি এদের হাতে তুলে দিয়েন না। প্রয়োজনে আমাকে মেরে ফেলেন। এ কথা বলতে বলতে আমি মাটিতে পড়ে যাই।
‘আমাকে নেয়া গাড়ির লোকেরা জোর করে বিএসএফ-এর কাছে দিয়ে আসে আমায়। এ সময় আমি দেখতে পাই গাড়িতে ৬-৭ জন সবুজ পোশাকের পুলিশের সাথে দু’জন বিজিবি সদস্য আছেন। তখন আমি বুঝতে পারি গাড়ি থামিয়ে যাদের নেয়া হয় তারাই বিজিবি।’
সুখরঞ্জন বলেন, বাংলাদেশের একজন নিরপরাধ নাগরিককে রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আরেকটি দেশের রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে তুলে দেয় কেমন করে?
কান্না জড়িত কন্ঠে সুখরঞ্জন বালি বলেন, আমি যেতে না চাইলে জোর করে তারা আমাকে ধরে বিএসএফ সদস্যদের হাতে তুলে দেয়। বিএসএফ কিছু জিজ্ঞেস না করেই আমাকে প্রচণ্ড মারপিট শুরু করে। বিএসএফ হিন্দিতে কথা বলছিল এবং আমি আমাকে না মারার জন্য বাংলায় বোঝাতে চেষ্টা করি। আমার কোনো কথা তারা বুঝতে পেরেছিল কি-না আমি আজও বুঝিনি। একপর্যায়ে বিএসএফ মোটা দড়ি দিয়ে পেছন দিক দিয়ে আমার হাত বেঁধে ফেলে। হাত বাধার সেই দাগ এখনো স্পষ্ট। সেটা তিনি প্রতিবেদককে দেখান।
সুখরঞ্জন বালি তার ওপর নির্যাতনের বর্ণনায় বলেন, মোটা লাঠি দিয়ে বিএসএফ তাকে মারতে থাকে। এতে তিনি ডান হাতের কনুইতে প্রচণ্ড আঘাত পান। এখনো ডান হাত দিয়ে ভালোভাবে তিনি কোনো কাজ করতে পারেন না। বিএসএফ-এর মারের পরে তিনি প্রায় তিন ঘণ্টা বেহুঁশ ছিলেন।
সুখরঞ্জন বালি বলেন, আমি বিএসএফ-কে বলতে থাকি যে আমি ইচ্ছা করে এখানে আসিনি কিন্তু আমার কথা বুঝতে না পারায় তারা আমাকে বেধড়ক মারধর করে।
আমাকে মারধরের আর কোনো কারণ বুঝিনি। বিএসএফ-এর ক্যাম্পটির বিষয়ে জানতে পারি এটি বৈকারী বাজার পশ্চিমবঙ্গের উত্তর-চব্বিশ পরগণা জেলার স্বরূপনগর থানা এলাকা। এরপর বশিরহাট জেলে আমাকে বাইশ দিন রাখা হয়। সেখানে একদিন আমাকে কোর্টেও নেয়া হয়। এরপর আসা হয় দমদম জেলে।
সুখরঞ্জন বলেন, দমদম জেলে থাকাকালীন সেখানে এক বন্দীকে (সম্পর্কে আমার ভাগনে হয়) আমি দেখি। সে আমাকে চিনতে পারেনি। আমি সুযোগ বুঝে তাকে আমার পরিচয় দিলে সে আমায় জড়িয়ে ধরে বলে ‘মামা তুমি বেঁচে আছ। আমরাতো জানি তুমি মারা গেছ।’ সে ভাগনে কারামুক্তির পর আমার বাড়িতে ও নিকটাত্মীয়দের আমরা বেঁচে থাকা ও ভারতের দমদম জেলে বন্দী থাকার কথা জানায়।
সুখরঞ্জন বলেন, আমার বাড়ির লোকেরা ভারতে প্রশাসন ও মানবাধিকার সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করলে মানবাধিকার সংস্থা সহায়তায় সুপ্রিম কোর্টের আদেশে ২০১৮ সালের প্রথম দিকে ৫ বছর জেল খেটে আমি মুক্ত হয়ে দেশে ফেরত আসতে পারি।
তিনি জানান, দমদমে থাকাকালীন বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা আমার ইন্টারভিউ নিয়েছিল।
সুখরঞ্জন বালি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় কারা আমার ভাইকে হত্যা করেছে সেই দৃশ্য আমি আমার বাড়ির পাশে টয়লেটের ভেতর লুকিয়ে থেকে নিজ চোখে দেখেছি। সেখানে সাঈদী হুজুরকে আমি দেখিনি। তখন এ নামে কাউকে আমি চিনতামও না। উনি আমাদের এলাকা থেকে নির্বাচিত দুই দু’বারের এমপি ছিলেন। তখন তার সম্পর্কে জানি ও চিনতে পারি। সাঈদী হুজুর যখন এমপি ছিলেন তখন আমাদের মনে হতো যেন আমরা মায়ের কোলে আছি। হুজুর নিরপরাধ নির্দোষ তার বিরুদ্ধে শত নির্যাতন সহ্য করেও আমি সাক্ষ্য দেইনি। আমাকে ক্ষুদিরামের মতো ফাঁসি দিলেও আমি প্রস্তুত ছিলাম।
তিনি বলেন, ভারত থেকে দেশে ফিরেও আমি নিজ এলাকায় পিরোজপুরের ইন্দুরকানিতে যেতে পারিনি। নিরাপত্তার কারণে বাগেরহাটে আত্মীয় ও পরিচিতিদের সহায়তায় তাদের আশ্রয়ে ছিলাম।
সুখরঞ্জন বালি বলেন, পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানি (সাবেক জিয়ানগর) উপজেলার পাড়েরহাট ইউনিয়নের উমেদপুর গ্রামে আমার বাড়ি।
আমি পেশায় কাঠমিস্ত্রি। আমার এক ছেলে ও এক মেয়ে। আমার ছেলেও কাঠমিস্ত্রির কাজ করতো। তাতে যে আয় রোজগার ছিল তাতে আমি পরিবার নিয়ে ভালোই চলতাম।
সাঈদী হুজুরের মামলায় সাক্ষ্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে আমাকে অপহরণ করে গুম করে নির্যাতন নিপীড়ন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং বিজিবি সহায়তায় বিএসএফের হাতে তুলে দিয়ে টানা ৫ বছর কারাবন্দী করে অবর্ণনীয় সাজা ভোগে বাধ্য করা হয়। অনেক ভয় আতঙ্কের পরও সাঈদী হুজুরের মৃত্যুর পর তার জানাজায় উপস্থিত হয়েছিলাম। তারপর আবারো আমি নিরাপত্তার কারণে আড়ালে চলে যাই।
তিনি বলেন, তার ওপর ঘটে যাওয়া এতো ঘটনার পর তিনি মানসিক ও শারীরিকভাবে স্বাভাবিক হতে পারেননি। নিজ পেশায়ও ফিরে যেতে পারেননি। ফলে অর্থ কষ্টে ও অভাবে দিন কাটছে তার ও পরিবারের।
সুখরঞ্জন বালি রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় অপহরণ, গুম এবং ৫ বছর কারাবন্দি থাকাসহ তার সাথে ঘটে যাওয়া সকল অন্যায়ের বিচার চান তিনি। ক্ষতিপূরণ চান রাষ্ট্রের কাছে।
২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী শাসনামলে গুমের ঘটনাগুলো তদন্ত করতে অন্তর্বর্তী সরকার গত ২৭ আগস্ট গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন গঠন করে। কমিশনের প্রধান করা হয় বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীকে। কমিশন গত শনিবার প্রধান উপদেষ্টার কাছে ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শিরোনামে অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, গুমের ঘটনায় কমিশনে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৬৭৬টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। দেশে গত ১৫ বছরে সংঘটিত বিভিন্ন গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে কমিশন।
উল্লেখ্য, সুখরঞ্জন বালি পশ্চিমবঙ্গের এক কারাগারে আছেন, এ খবর প্রথম প্রকাশ করে ঢাকার একটি ইংরেজি পত্রিকা। সুখরঞ্জন বালি বাংলাদেশে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর যুদ্ধাপরাধের মামলায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী ছিলেন। তিনি ২০১২ সালপর ৫ নভেম্বর ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল চত্বর থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর আইনজীবীরা তখন অভিযোগ করেছিলেন যে তাকে সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন অপহরণ করে নিয়ে গেছে।
সুখরঞ্জন বালি ভারতের কারাগারে বন্দী থাকার বিষয়ে তৎকালীন সময়ে বাংলাদেশের একটি ইংরেজি দৈনিকের প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্য, কারামুক্ত হওয়ার পর সুখরঞ্জন বালির বক্তব্য এবং গুম কমিশনের ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শিরোনামে অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনের তথ্য একই চিত্র ফুটে উঠেছে। সূত্র: বাসস

জাতীয়
রমজানের মতো স্বস্তির না হলেও খুব খারাপ ঈদযাত্রা হয়নি: ফাওজুল কবির

রমজানের মতো স্বস্তির না হলেও ঈদুল আজহার ঈদযাত্রা খুব খারাপ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
রোববার (১৫ জুন) টানা ১০ দিনের ঈদের ছুটি শেষে প্রথম কর্মদিবসে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা এ কথা জানান। ফাওজুল কবির একই সঙ্গে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়েরও উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা বলেন, ঈদের আগে দুদিন ছুটি ছিল। সময় কম ছিল। তাই ঈদের আগে সড়কে চাপ ছিল। যাওয়ার সময় যানজটটা বেশি হয়েছে। রমজানের মতো স্বস্তির না হলেও খুব খারাপ যাত্রা হয়নি। তবে ফিটনেসবিহীন গাড়ি বিকল হওয়াতে রাস্তায় কিছু সমস্যা হয়েছে। তবে খুব বেশি নয়।
ফাওজুল কবির খান বলেন, যারা বেশি ভাড়া আদায় করেছে, তাদের কাছ থেকে ভাড়া আদায় করে যাত্রীদের দেওয়া হয়েছে। কমলাপুর রেল স্টেশনেও সবাই খুব খুশি ছিল। এত দূর পথের যাত্রা ম্যানেজ করা একটা চ্যালেঞ্জ।
আমরা ফিটনেসবিহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি চলতে দেবো না, বলেন সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা।
গ্রামে অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, এখন গ্রামে ঘরে ঘরে এসএসসি ফ্রিজ। গ্রামে বিদুতের চাহিদা বাড়ছে। ফলে প্যাটার্ন বদলেছে। এটার ফলে কিছু কিছু জায়গায় সমস্যা হয়েছে।
ছুটিতে ১২-১৩ হাজার মেগাওয়াট চহিদা ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রামে বিদুৎ পায়নি, এটা ভুল কথা।
উপদেষ্টা আরও বলেন, গরমে বিদ্যুতের প্রস্তুতি আমাদের আছে। চাহিদা মেটাতে প্রয়োজনে তেলের বিদ্যুৎকেন্দ্র চালাবো।
কাফি
জাতীয়
পুলিশের অতিরিক্ত ৪ ডিআইজিকে বদলি

পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) ও অতিরিক্ত ডিআইজি পদমর্যাদার ৪ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। আজ রোববার (১৫ জুন) এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
ঢাকার রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সের (আরআরএফ) কমান্ড্যান্ট (অতিরিক্ত ডিআইজি) আলি আকবর খানকে সিআইডিতে বদলি করা হয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা আরআরএফের কমান্ড্যান্ট নিয়োগ পেয়েছেন সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি রুমানা আক্তার।
চট্টগ্রাম ৯ এপিবিএনের অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মোহাম্মদ শামসুল হক এবং ঢাকার এপিবিএনের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. নজরুল ইসলামকে সিআইডিতে বদলি করা হয়েছে।
জাতীয়
রেফারির মতো কাজ করব, যারা খেলবে খেলুক: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেছেন, আমরা রেফারির মতো কাজ করব। যারা খেলবে খেলুক, যারা জিতবে জিতুক।
আজ রবিবার (১৫ জুন) নির্বাচন ভবনে ঈদ পরবর্তী মতমিনিময় সভায় কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচন সংক্রান্ত কাজ এগিয়ে নিতে ইসির ভূমিকা নিয়ে সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘অনেকগুলো আমরা এগিয়ে নিয়ে গেছি, যত কাজ বাকি আছে তা সবাইকে মিলে করতে হবে। আজকে মতবিনিময় সভায় আপনাদের হাজির করলাম- আমাদের শপথ হবে সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জাতিকে উপহার দেওয়া। ’
এ সময়ে একটা ঐতিহাসিক নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে চান বলেও জানান সিইসি।
তিনি বলেন, লন্ডন, জাপানসহ বিশ্বনেতাদের বলে যাচ্ছেন, আমরা একটা ঐতিহাসিক নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে চাই। বিশ্বব্যাপী ওয়াদা দিচ্ছেন আমাদের ওপর আস্থা আছে বলে এমন ঘোষণা দিচ্ছেন।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, ‘রমজানের সময়ও ওয়াদা করেছেন সুন্দরভাবে কাজ করবেন। আজকেও পুনর্ব্যক্ত করব দয়া করে, আজকের শপথ হবে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার, কোনো দলের জন্য লেজুড়বৃত্তি না করার, আইন অনুযায়ী কাজ করার ও ন্যয় সঙ্গভাবে কাজ করার। ’
সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন আরও বলেন, আমরা রেফারির ভূমিকায়, আমরা রেফারির মতো কাজ করব। যারা খেলবে খেলুক; যারা জিতবে জিতুক। কিন্তু আমাদের দায়িত্ব হবে একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে দেওয়া। সেটা করার জন্য আমরা বদ্ধপরিকর।
মতমিনিময় সভায় চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয়
দেশে ফিরেছেন ২০ হাজার ৫০০ হাজি

সৌদি আরব থেকে পবিত্র হজ পালন শেষে ফিরতি ফ্লাইটে শুক্রবার রাত পর্যন্ত ২০ হাজার ৫০০ জন হাজি দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ২ হাজার ৯২৪ এবং ১৭ হাজার ৫৭৬ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দেশে ফিরেছেন।
রোববার (১৫ জুন) হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এ পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে ৬ হাজার ২২৭, সৌদি পতাকাবাহী সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে ৭ হাজার ৮৭৩ এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে ৬ হাজার ৪২০ জন দেশে ফিরেছেন। মোট ৫২টি ফিরতি ফ্লাইট পরিচালিত হয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি ছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের, ২০টি সাউদিয়ার এবং ১৬টি ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্সের।
এদিকে, সৌদি আরব বাংলাদেশি হাজিদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা ও তথ্যপ্রযুক্তি সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। দেশটির মেডিকেল সেন্টারগুলো এখন পর্যন্ত ৫৪ হাজার ২২৭টি অটোমেটেড প্রেসক্রিপশন ইস্যু করেছে এবং আইটি হেল্পডেস্কগুলো ২১ হাজার ৯১০টি সেবা প্রদান করেছে।
এখন পর্যন্ত ২৯ জন বাংলাদেশি সৌদি আরবে মারা গেছেন । তাদের মধ্যে ২৫ জন পুরুষ এবং ৪ জন নারী। এদের মধ্যে ১৯ জন মক্কায়, ৯ জন মদিনায় এবং ১ জন আরাফায় মারা গেছেন।
সৌদি আরবের সরকারি হাসপাতালগুলো এ পর্যন্ত ২৪০ জন বাংলাদেশিকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছে। এদের মধ্যে এখনো ১৯ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গত ২৯ এপ্রিল প্রথম ফ্লাইটের মাধ্যমে এ বছরের হজ কার্যক্রম শুরু হয় এবং ৩১ মে শেষ হয়। সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরার কার্যক্রম ১০ জুন শুরু হয়েছে এবং তা ১০ জুলাই পর্যন্ত চলবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় ২০২৫ সালের হজের জন্য ৭০টি হজ এজেন্সিকে অনুমোদন দিয়েছে। এ বছর হজ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৫ হাজার ৩০২ জন ধর্মপ্রাণ মুসল্লি সৌদি আরবে গেছেন।
হজ ব্যবস্থাপনা অফিস জানায়, কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশিদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে চলমান এ কার্যক্রম ও স্বাস্থ্যসেবার ওপর নিবিড়ভাবে নজর রাখছে।
কাফি
জাতীয়
বিশ্ব বাবা দিবস আজ

প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রোববার বিশ্বব্যাপী উদযাপন করা হয় এই বিশেষ দিনটি, যা এ বছর পড়েছে ১৫ জুন। সন্তানের জীবনে পিতার অবদান ও ত্যাগকে সম্মান জানাতেই পালিত হয় বাবা দিবস-ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধার এক অনন্য উপলক্ষ।
পশ্চিমা বিশ্বে শুরু হলেও এখন এটি ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে, বাংলাদেশেও। আমাদের দেশেও দিনটিকে ঘিরে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন আয়োজন করেছে বিশেষ অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা ও স্মৃতিচারণামূলক নানা আয়োজন।
বাবা দিবসের ইতিহাসের পেছনে রয়েছে সনোরা স্মার্ট ডড নামের এক মার্কিন নারীর অনন্য ভূমিকা। ১৯০৯ সালে ওয়াশিংটনের একটি গির্জায় মা দিবস পালনের কথা শুনে তার মনে প্রশ্ন জাগে—মা দিবস থাকলে বাবা দিবস কেন থাকবে না? সনোরা ছিলেন এক সিঙ্গেল বাবার মেয়ে। মায়ের মৃত্যুর পর তার বাবা অসাধারণ দায়িত্বশীলতা ও ত্যাগে সাত সন্তানকে মানুষ করেন। সেই স্মৃতিই ডডকে বাবার প্রতি সম্মান জানানোর একদিনের দাবি তুলতে উদ্বুদ্ধ করে।
এক বছর ধরে অক্লান্ত প্রচেষ্টার পর ১৯১০ সালের ১৯ জুন স্থানীয় কমিউনিটিতে প্রথমবারের মতো পালন করা হয় বাবা দিবস। পরে ধীরে ধীরে দিনটি ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে এবং পায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
আজকের এই দিনে সারা পৃথিবীর সন্তানরা তাদের বাবাকে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার বিশেষভাবে স্মরণ করছে। পিতৃত্বের মহান রূপটি নতুন করে উপলব্ধি করার এ এক অনন্য দিন।
কাফি