অর্থনীতি
সবজি-আলু-পেঁয়াজে স্বস্তি, ঊর্ধ্বমুখী চাল-তেলের বাজার
দুই সপ্তাহ ধরে সবজির বাজারে স্বস্তি রয়েছে। বাজারে শাক-সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমে গেছে। তবে চাল, মাছ ও মুরগি ও তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় হতাশ সাধারণ ভোক্তারা।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, পণ্য পরিবহনে দলীয় কর্মীর চাঁদাবাজি কমে গেছে। বাজারেও তেমন কেউ ঝামেলা করছে না। এ ধারা অব্যাহত থাকলে দাম আরও কমবে।
কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা আবুল কাশেম বলেন, আগের তুলনায় সরবরাহ বেড়েছে। সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে কোনো কোনো শাক-সবজির দাম। সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে দাম আরও কমবে।
বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৫০-৬০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৫০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, মুলা ২০-৩০ টাকা, লতি ৬০ টাকা, কহি ৫০ টাকা ও পটোল ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, গাজর ৪০-৫০ টাকা, ক্ষিরাই ৫০ টাকা, টমেটো ১২০-১৩০ টাকা, শিম ৪০-৫০ টাকা, শালগম ২৫-৩০ টাকা ও শসা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়।
এছাড়া প্রতি কেজি ধনেপাতা ৩০ টাকা, পেঁয়াজকলি ৩০-৪০ টাকা, নতুন আলু ৫০ টাকা ও পুরাতন আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। আর মানভেদে প্রতি পিস ফুলকপি ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০-৫০ টাকা এবং লাউয়ের জন্য গুনতে হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা।
দাম কমেছে কাঁচা মরিচেরও। বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০-৮০ টাকায়, আর পাইকারিতে ৪০-৬০ টাকা। এ ছাড়া বাজারে লালশাকের আঁটি ১০ টাকা, পাটশাক ১০-১৫ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা, লাউশাক ৪০ টাকা, মুলাশাক ১০ টাকা, ডাঁটাশাক ১০-১৫ টাকা, কলমিশাক ১০ টাকা ও পালংশাক বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকায়।
কমেছে পেঁয়াজের দাম
বর্তমানে বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহও বেড়েছে। এর প্রভাবে কমছে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম ছিল ৭০-৮০ টাকা। তবে গতকাল ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়। এ ছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানি করা ও দেশি পুরোনো পেঁয়াজেও কেজিতে ৩০ টাকা দাম কমেছে। গতকাল এক কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ ৫০-৬০ টাকায় ও দেশি পুরোনো পেঁয়াজ ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হয়।
ফের উত্তাপ বাড়ছে মুরগির বাজারে
এদিকে বাজার নিয়ন্ত্রণে গত সেপ্টেম্বরে ডিম ও মুরগির দাম বেঁধে দিয়েছিল সরকার। কিন্তু সে সময় উল্টো দাম বেড়ে অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে এ দুটি পণ্যের বাজার। নানা অভিযান ও সভা শেষে ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে এলেও ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে ফের উত্তাপ বাড়ছে মুরগির বাজারে। যা এখনও চলছেই।
গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৩০-৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে সোনালি ও ব্রয়লার মুরগির দাম। অন্যান্য মুরগির দামও ঊর্ধ্বমুখী। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২২০ টাকা ও সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০-৩৫০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতি কেজি দেশি মুরগি ৫৫০-৬০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৩০-২৪০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬৫০ টাকায়।
কমেনি তেলের দাম
৯ ডিসেম্বর সয়াবিন তেলের দাম লিটারে আট টাকা বাড়ায় ভোজ্যতেল কোম্পানিগুলো। এরপর দুই সপ্তাহ পার হলেও বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। বিক্রেতারা জানান, কোম্পানিগুলো স্বল্পসংখ্যক বোতলজাত সয়াবিন দিচ্ছে, তবে তা ভোক্তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। বাজারে দুই সপ্তাহ আগে চালের দাম কেজিতে পাঁচ টাকার মতো বেড়েছিল। বর্তমানে সেই দামেই স্থিতিশীল রয়েছে।
চালের বাজারে অস্থিরতা
ভরা মৌসুমেও বাড়ছে চালের বাজারে অস্থিরতা। সব ধরনের চাল কেজিতে সর্বোচ্চ ৪ টাকার মতো বেড়েছে। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের এক ক্রেতা বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলায় আমন ধান উঠেছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে কঠোর হতে হবে।
খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে মিল পর্যায়ে চালের দাম বাড়তি। এর প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারেও। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের বরিশাল রাইছ এজেন্সির বিক্রেতা জানান, চালের দাম অনেক বেড়ে গেছে। গত দুই সপ্তাহে চিকন চালের দাম কেজিতে ৪ থেকে ৮ টাকা এবং মোটা ও মাঝারি চালের দাম ২ থেকে ৩ টাকা বেড়েছে।
বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি মিনিকেট ৭৪-৭৮ টাকা, আটাইশ ৬০-৬২ টাকা, মোটা স্বর্ণা ৫২-৫৬ টাকা, নাজিরশাইল ৭৬-৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, প্রতি কেজি পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ১২০-১২৫ টাকায়।
স্বস্তি নেই মাছ বাজারে
স্বস্তির খবর নেই মাছের বাজারেও। মাছ বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দামেই। বাজারে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা, কোরাল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২৩০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়া প্রতি কেজি বোয়াল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, পোয়া ৪৫০ টাকা, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, শোল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা এবং নদীর পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত মাছ না আসায় দাম বাড়ছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ফের বাড়লো সোনার দাম, ভরি ১ লাখ ৪৭ হাজার টাকা
দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম আবার বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম ২ হাজার ৯২৮ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৮১৮ টাকা। দেশের ইতিহাসে সোনার এত দাম আগে কখনো হয়নি। স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার প্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
এর আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি এবং ১৬, ২৩ ও ৩০ জানুয়ারি সোনার দাম বাড়ানো হয়। চারদিনের ব্যবধানে এখন আবার দাম বাড়ানো হলো। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৯২৮ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৮১৮ টাকা। এর আগে কখনো সোনার এত দাম হয়নি। এতদিন ভালো মানের এক ভরি সোনার সর্বোচ্চ দাম ছিল ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৯০ টাকা। ২ ফেব্রুয়ারি থেকে আজ ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই দামে সোনা বিক্রি হয়।
ভালো মনের সোনার রেকর্ড দাম হওয়ার পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে অন্যান্য সোনার দামও। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৭৯৯ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৪১ হাজার ৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৪০৩ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ২০ হাজার ৯৪৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৫৩ টাকা বাড়িয়ে ৯৯ হাজার ৫২৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে ২ ফেব্রুয়ারি সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৯৯ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৯০ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৭১৪ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৮ হাজার ৫৪১ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৪৫৮ টাকা বাড়িয়ে ৯৭ হাজার ৪৭৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আজ বুধবার পর্যন্ত এ দামেই সোনা বিক্রি হয়েছে।
সোনার দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৫৭৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আর্জেন্টিনা থেকে এলো ৫০ হাজার ২০০ মেট্রিক টন গম
আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে আর্জেন্টিনা থেকে আমদানি করা ৫০ হাজার ২০০ মেট্রিক টন গম নিয়ে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) খাদ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইমদাদ ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, এমভি এলপিডা জিআর জাহাজে থাকা গমের মধ্যে ৩০ হাজার ১২০ মেট্রিক টন চট্টগ্রাম বন্দরে এবং ২০ হাজার ৮০ মেট্রিক টন মোংলা বন্দরে খালাস করা হবে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে গম খালাসের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
জানুয়ারিতে কমেছে মূল্যস্ফীতি
শীতের সবজিতে ভরপুর বাজার। দামও নাগালের মধ্যে। কমেছে আলুর দামও। এর ফলে জানুয়ারি মাসে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ১০ দশমিক ৭২ শতাংশ। যা আগের মাস ডিসেম্বরে ছিল ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ। ফলে এক মাসের ব্যবধানে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমেছে ২ দশমিক ২০ শতাংশ।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) দেওয়া ভোক্তা মূল্যসূচকের (সিপিআই) হালনাগাদ তথ্যে এমনটা বলা হয়েছে।
বিবিএসের হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, জানুয়ারি মাসে খাদ্যপণ্যের দাম কমেছে। বিশেষ করে কমেছে চাল, ডাল, তেল, লবণ, মাছ, মাংস, সবজি, মসলা ও তামাকজাতীয় পণ্যের দাম।
শীত মৌসুমে পণ্যের সরবরাহ বাড়ায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমেছে বলে দাবি বিবিএসের। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি জানুয়ারিতে সামান্য বেড়ে ৯ দশমিক ৩২ শতাংশে পৌঁছেছে, যা গত ডিসেম্বরে ছিল ৯ দশমিক ২৬ শতাংশ। গত বছরের ডিসেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং নভেম্বরে ছিল ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ।
খাদ্য মূল্যস্ফীতি হ্রাসের ফলে দেশের সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি জানুয়ারিতে শূন্য দশমিক ৯৫ শতাংশ কমে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশে নেমে এসেছে। এর আগের মাস ডিসেম্বরে যা ছিল ১০ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
জানুয়ারি মাসে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি সামান্য বেড়ে ৯ দশমিক ৩২ শতাংশে পৌঁছেছে। যা গত ডিসেম্বরে ছিল ৯ দশমিক ২৬ শতাংশ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
মূল্যস্ফীতি কমাতে আরও দু-তিন মাস লাগবে: অর্থ উপদেষ্টা
দেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও দুই-তিন মাস অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। আগামী এপ্রিল মাসে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বাড়তি মূল্যস্ফীতিতে মানুষ সমস্যায় রয়েছে এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে তা কমাতে ইতোমধ্যে বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর প্রভাবে মূল্যস্ফীতি কমতে আরও ২ থেকে ৩ মাস অপেক্ষা করতে হবে। এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে আসবে। জুনে এর ভালো প্রভাব দেখা যাবে।’
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, সরকার আসন্ন রোজায় নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আরও কিছু পদক্ষেপ নেবে। এসব উদ্যোগের ফলে আগামী জুন নাগাদ গড় মূল্যস্ফীতি ৬ থেকে ৭ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা করছে সরকার।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে মাসভিত্তিক সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে রয়েছে। গত ডিসেম্বর মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ১০ দশমিক ৮৯ শতাংশ। তবে একই সময়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ। গত জুলাই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ দশমিক ১০ শতাংশে উঠেছিল।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কর্মকর্তাদের সব লকার স্থগিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা ভল্টে রাখা সব কর্মকর্তার সেইফ ডিপোজিট সাময়িক সময়ের জন্য ফ্রিজ (স্থগিত) করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সন্দেহ করছে, এসব লকারে গোপনে বিপুল পরিমাণ অপ্রদর্শিত অর্থসম্পদ মজুত রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ও সহকারী মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দিকী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ছাড়া অন্য কেউ ব্যাংকের লকার বা অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করতে পারে না। দুদক কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি দিয়েছে আপাতত নতুন করে কোন লকার বরাদ্দ না দেওয়ার জন্য। একই সঙ্গে আগের লকারগুলো যাতে আপাতত খোলা না হয় সে বিষয়ে অনুরোধ জানিয়েছে। মূলত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা সেফ ডিপোজিট (লকার) হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে তাদের সম্পদ রাখতে পারেন। যেসব সম্পদ বাসায় রাখা ঝুঁকিপূর্ণ ডাকাতির ভয় আছে মূলত সেইসব সম্পদই সেফ ডিপোজিট হিসেবে সিলগালা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রাখা হয়। এই সংখ্যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের এক শতাংশেরও কম। কিন্তু একজন এসকে সুরের কারণে আমাদের এ ধরনের সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এটা খুবই দুঃখজনক।
দুদকের পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে লকার ফ্রিজের অনুরোধ জানানো হয়। এতে বলা হয়, ৩০ জানুয়ারি দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের লকারগুলোর বিষয়ে আলোচনা হয়। অর্থ উপদেষ্টা এসব লকারের সম্পদ ফ্রিজের সম্মতি দেন।
দুদক গতকাল (সোমবার) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে লকার খোলা ও তালিকা তৈরির অনুমতির জন্য আবেদন জমা দিয়েছে। আজ (মঙ্গলবার) আদালতের আদেশ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর, একজন ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে দুদক লকার খোলার ব্যবস্থা নেবে।
এর আগে, দুদকের অনুসন্ধান দল সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর (এস কে সুর) বাসায় অভিযান চালিয়ে নগদ ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা উদ্ধার করে। পরে তার লকার খুলে দেশি-বিদেশি মুদ্রা ও স্বর্ণালংকারসহ ৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ পাওয়া যায়।
তল্লাশির সময় দেখা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বেশকিছু লকার সিলগালা অবস্থায় রয়েছে। দুদক মনে করছে, এসব লকারে অপ্রদর্শিত সম্পদ থাকতে পারে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত চলছে।
দুদক বলেছে, লকার খুলে রক্ষিত সম্পদ যাতে কেউ সরিয়ে নিতে না পারে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে।