অর্থনীতি
আবাসন মেলার পর্দা নামছে আজ
রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (রিহ্যাব) আয়েজিত আবাসন মেলার পর্দা নামছে আজ শুক্রবার। শেষ দিনে মেলা চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।
গত ২৩ ডিসেম্বর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র বিআইসিসিতে পাঁচদিনব্যাপী এ মেলা শুরু হয়। মেলায় গত চারদিন ব্যাপক ক্রেতা দর্শনার্থীর সমাগম হয়। শুক্রবার মেলার শেষ দিন। এ মেলার মাধ্যমে আবাসন খাতের অচলাবস্থা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে আবাসন খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো।
এবারের মেলায় অংশ নিয়েছে রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট-২ ও মেলা কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আক্তার বিশ্বাসের প্রতিষ্ঠান আক্তার প্রপাটির্জ। তিনি বলেন, মেলায় পজিটিভ সাড়া পাচ্ছি। মেট্রোরেল থাকায় উত্তরার দিকে ফ্ল্যাটের চাহিদা অনেক বেশি। আবার দামের কারণে মিরপুরের দিকে ফ্ল্যাট খুঁজছেন কেউ কেউ। ড্যাপ সংশোধন হলে মেলার মাধ্যমে আবাসন খাত ঘুরে দাঁড়াবে এমন প্রত্যাশা তার।
রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট-৩ ইঞ্জি. আব্দুল লতিফ এর প্রতিষ্ঠান বেসিক বিল্ডার্স ছোট থেকে মাঝারি সব ধরনের প্রকল্প নিয়ে মেলায় হাজির হয়েছে। রিহ্যাব নেতা আব্দুল লতিফ জানান, স্বল্প, মধ্য এবং উচ্চ সব ধরনের ফ্ল্যাট রয়েছে তাদের বিভিন্ন প্রকল্পে।
মেলায় অংশ নিয়েছে রিয়েল এস্টেট খাতের প্রতিষ্ঠান হক হোম অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও রিহ্যাব পরিচালক ইমদাদুল হক জানান, বিগত সময়ের তুলনায় ভালো সাড়া পেয়েছি। আশা করছি শেষ দিনে আরও ভাল সাড়া পাবো। কারণ, শুক্রবার ছুটির দিন। বিশেষ করে আমাদের হক রেডিমিক্স এই মেলায় ব্যাপক সাড়া পেয়েছে। সব কিছু মিলে আমি বলবো এই মেলা সফল এবং আমাদের সংকট কাটাতে সহায়তা করবে।
এম এইচ এম প্রপার্টিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশাররফ হোসেন মিন্টু বলেন, শুক্রবার মেলার শেষ দিনে অনেক ক্রেতা দর্শনার্থী আসবেন এবং তারা তাদের কাঙ্ক্ষিত ফ্ল্যাটটি খুঁজে নিতে পারবেন। আমরাও মেলা উপলক্ষে আমাদের প্রকল্পের বিভিন্ন ফ্ল্যাট বিশাল মূল্যছাড়ে তাদের কাছে বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি।
মেলায় শুধু রিয়েল এসেট প্রতিষ্ঠানই অংশ নেয়নি, ফ্ল্যাট বেচাকেনার জন্য অংশ নিয়েছে রিয়েলটস নামে একটি প্রতিষ্ঠানও। নতুন-পুরোনো সব ধরনের ফ্ল্যাট, ল্যান্ড এবং বাণিজ্যিক স্পেস বিক্রি করছে তারা।
১২০টি স্টলে অংশ নিয়েছে এ্যামবিট বিল্ডার্স লিমিটেড। কোম্পানির ডিএমডি ও রিহ্যাব পরিচালক ড. মো. হারুন অর রশিদ বলেন, এবারের মেলায় তারা ভালো লিড পেয়েছেন।
মেলা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও রিহ্যাব পরিচালক মিরাজ মোক্তাদির বলেন, মেলায় বেশকিছু প্রকল্প নিয়ে অংশগ্রহণ হয়েছে। হেরিটেজ লিমিটেডের মাধ্যমে চেষ্টা করছি নাগরিকদের মৌলিক অধিকার পূরণ করতে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সবজি-আলু-পেঁয়াজে স্বস্তি, ঊর্ধ্বমুখী চাল-তেলের বাজার
দুই সপ্তাহ ধরে সবজির বাজারে স্বস্তি রয়েছে। বাজারে শাক-সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমে গেছে। তবে চাল, মাছ ও মুরগি ও তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় হতাশ সাধারণ ভোক্তারা।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, পণ্য পরিবহনে দলীয় কর্মীর চাঁদাবাজি কমে গেছে। বাজারেও তেমন কেউ ঝামেলা করছে না। এ ধারা অব্যাহত থাকলে দাম আরও কমবে।
কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা আবুল কাশেম বলেন, আগের তুলনায় সরবরাহ বেড়েছে। সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে কোনো কোনো শাক-সবজির দাম। সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে দাম আরও কমবে।
বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৫০-৬০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৫০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, মুলা ২০-৩০ টাকা, লতি ৬০ টাকা, কহি ৫০ টাকা ও পটোল ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, গাজর ৪০-৫০ টাকা, ক্ষিরাই ৫০ টাকা, টমেটো ১২০-১৩০ টাকা, শিম ৪০-৫০ টাকা, শালগম ২৫-৩০ টাকা ও শসা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়।
এছাড়া প্রতি কেজি ধনেপাতা ৩০ টাকা, পেঁয়াজকলি ৩০-৪০ টাকা, নতুন আলু ৫০ টাকা ও পুরাতন আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। আর মানভেদে প্রতি পিস ফুলকপি ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০-৫০ টাকা এবং লাউয়ের জন্য গুনতে হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা।
দাম কমেছে কাঁচা মরিচেরও। বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০-৮০ টাকায়, আর পাইকারিতে ৪০-৬০ টাকা। এ ছাড়া বাজারে লালশাকের আঁটি ১০ টাকা, পাটশাক ১০-১৫ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা, লাউশাক ৪০ টাকা, মুলাশাক ১০ টাকা, ডাঁটাশাক ১০-১৫ টাকা, কলমিশাক ১০ টাকা ও পালংশাক বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকায়।
কমেছে পেঁয়াজের দাম
বর্তমানে বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহও বেড়েছে। এর প্রভাবে কমছে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম ছিল ৭০-৮০ টাকা। তবে গতকাল ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়। এ ছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানি করা ও দেশি পুরোনো পেঁয়াজেও কেজিতে ৩০ টাকা দাম কমেছে। গতকাল এক কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ ৫০-৬০ টাকায় ও দেশি পুরোনো পেঁয়াজ ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হয়।
ফের উত্তাপ বাড়ছে মুরগির বাজারে
এদিকে বাজার নিয়ন্ত্রণে গত সেপ্টেম্বরে ডিম ও মুরগির দাম বেঁধে দিয়েছিল সরকার। কিন্তু সে সময় উল্টো দাম বেড়ে অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে এ দুটি পণ্যের বাজার। নানা অভিযান ও সভা শেষে ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে এলেও ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে ফের উত্তাপ বাড়ছে মুরগির বাজারে। যা এখনও চলছেই।
গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৩০-৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে সোনালি ও ব্রয়লার মুরগির দাম। অন্যান্য মুরগির দামও ঊর্ধ্বমুখী। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২২০ টাকা ও সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০-৩৫০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতি কেজি দেশি মুরগি ৫৫০-৬০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৩০-২৪০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬৫০ টাকায়।
কমেনি তেলের দাম
৯ ডিসেম্বর সয়াবিন তেলের দাম লিটারে আট টাকা বাড়ায় ভোজ্যতেল কোম্পানিগুলো। এরপর দুই সপ্তাহ পার হলেও বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। বিক্রেতারা জানান, কোম্পানিগুলো স্বল্পসংখ্যক বোতলজাত সয়াবিন দিচ্ছে, তবে তা ভোক্তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। বাজারে দুই সপ্তাহ আগে চালের দাম কেজিতে পাঁচ টাকার মতো বেড়েছিল। বর্তমানে সেই দামেই স্থিতিশীল রয়েছে।
চালের বাজারে অস্থিরতা
ভরা মৌসুমেও বাড়ছে চালের বাজারে অস্থিরতা। সব ধরনের চাল কেজিতে সর্বোচ্চ ৪ টাকার মতো বেড়েছে। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের এক ক্রেতা বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলায় আমন ধান উঠেছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে কঠোর হতে হবে।
খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে মিল পর্যায়ে চালের দাম বাড়তি। এর প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারেও। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের বরিশাল রাইছ এজেন্সির বিক্রেতা জানান, চালের দাম অনেক বেড়ে গেছে। গত দুই সপ্তাহে চিকন চালের দাম কেজিতে ৪ থেকে ৮ টাকা এবং মোটা ও মাঝারি চালের দাম ২ থেকে ৩ টাকা বেড়েছে।
বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি মিনিকেট ৭৪-৭৮ টাকা, আটাইশ ৬০-৬২ টাকা, মোটা স্বর্ণা ৫২-৫৬ টাকা, নাজিরশাইল ৭৬-৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, প্রতি কেজি পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ১২০-১২৫ টাকায়।
স্বস্তি নেই মাছ বাজারে
স্বস্তির খবর নেই মাছের বাজারেও। মাছ বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দামেই। বাজারে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা, কোরাল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২৩০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়া প্রতি কেজি বোয়াল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, পোয়া ৪৫০ টাকা, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, শোল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা এবং নদীর পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত মাছ না আসায় দাম বাড়ছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ছয় মাসে ৮০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বিপিসির: চেয়ারম্যান
আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড নিয়মের চেয়ে আমাদের জিটুজি পদ্ধতিতে প্রিমিয়াম প্রাইজ বেশি ছিল। জ্বালানি তেল সরবরাহকারীদের সঙ্গে আমরা নেগোশিয়েশন করে প্রিমিয়াম কমিয়ে এনেছি। প্রত্যেক আইটেমেই প্রিমিয়াম কমেছে। এতে আগামী ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) জ্বালানি আমদানির প্রিমিয়ামে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ব্যয় সাশ্রয় হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়ম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান (সচিব) মো. আমিন উল আহসান।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) কারওয়ান বাজার বিপিসির লিয়াজোঁ অফিসে ‘দেশের জ্বালানি নিরাপত্তায় বিপিসির ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান। এসময় বিপিসির সচিব শাহিনা সুলতানা, বিপিসির পরিচালক (বিপণন) কবীর মাহমুদ, পরিচালক (অপারেশন ও পরিচালন) অনুপম বড়ুয়া, সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার (হিসাব) এটিএম সেলিমসহ বিপিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিপিসির চেয়ারম্যান বলেন, আমরা প্রতিযোগিতামূলক ক্রয়াদেশ প্রদান এবং আলোচনার মাধ্যমে প্রিমিয়াম খরচ অনেকটা কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। গত জুলাই-ডিসেম্বরে প্রিমিয়াম খরচ ৮.৮৩ ডলারের নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। আগে জিটুজি ভিত্তিতে আনা জ্বালানি তেলে ১২.০৩ ডলার এবং দরপত্রের মাধ্যমে আনা তেলে ৯.৩২ ডলার পরিশোধ করা হতো। প্রিমিয়াম খরচ কমে যাওয়ায় বিদায়ী জুলাই-ডিসেম্বর মাসেও বিপুল পরিমাণ টাকা সাশ্রয় হয়েছে। এভাবে আমরা তেলের দাম কমিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। পাশাপাশি আমরা তেল সরবরাহকারী কম্পানির বকেয়া শূন্যে নামিয়ে এনেছি।
তিনি বলেন, ভ্যাট-ট্যাক্স দেওয়ার পর ডিজেলে লিটার প্রতি ১.৬৬ টাকা মুনাফা করছে। দাম কিছুটা কমানোর সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে ভারতের সঙ্গে এখনো আমাদের জ্বালানি তেলের দাম প্রতি লিটারে ২২ থেকে ২৫ টাকার মতো কম আছে। সাধারণত দুই দেশের মধ্যে জ্বালানি তেলের দরের পার্থক্য বেশি হলে পাচারের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। এ ছাড়া দেশের বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্যও একটি কৌশল প্রয়োগ করা হয়। হঠাৎ বেড়ে গেলে যাতে ভোক্তার উপর বড় চাপ না পড়ে।
চেয়ারম্যান আরও বলেন, চট্টগ্রাম-ঢাকা পাইপলাইন চালু হলে প্রিমিয়াম খরচ আরও কমে আসবে। পাইপলাইনটি চালু হলে সাগরে আসা বড় জাহাজ থেকে ডিজেল সরাসরি নারায়ণগঞ্জ ডিপোতে চলে আসবে। প্রকল্পটি জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ডিজেলের পাশাপাশি অল্প পরিমাণে অকটেনের ব্যবহার কমেছে। আগের অর্থবছরে অকটেনের ব্যবহার ছিল ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৫৫৭ টন, যা গত অর্থবছরে হয়েছে ৩ লাখ ৮৭ হাজার ২৫৬ টন। তবে ব্যবহার বেড়েছে উড়োজাহাজের জ্বালানি জেট-এ-১ এর। আগের বছরের তুলনায় ৬৯ হাজার ৪৯৪ টন ব্যবহার বেড়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৬৭ লাখ ৬১ হাজার ৩২০ টন জ্বালানি তেল ব্যবহৃত হয়েছে। মাত্র ৮ শতাংশ এসেছে দেশীয় উত্স থেকে, আর ৯২ শতাংশ জ্বালানি জোগান এসেছে আমদানি থেকে। ব্যবহৃত জ্বালানি তেলের মধ্যে ৬৩ শতাংশ হচ্ছে ডিজেল। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহৃত ফার্নেস অয়েল ১৪ শতাংশ।
জানা যায়, বর্তমানে বিপিসিকে সরকার টু সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে জ্বালানি তেল সরবরাহ করছে নয়টি প্রতিষ্ঠান। এমিরেটস ন্যাশনাল অয়েল কম্পানি, ইন্দোনেশিয়ার বিএসপি, ইউনিপেক, পেট্রো চায়না ইন্টারন্যাশনাল, ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন, পিটিটি ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং, কুয়েত পেট্রোলিয়ম কর্পোরেশন, মালয়েশিয়ার পেটকো ট্রেডিং লাবুয়ান কম্পানি ও ভারতের নুমালিগড় রিফাইনারি। এছাড়াও আন্তর্জাতিক দরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তেল সরবরাহ করছে আরও চারটি কম্পানি। ভিটল এশিয়া, ইউনিপেক, ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন ও পেট্রো চায়না ইন্টারন্যাশনাল।
বিপিসি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বছরে জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রায় ৭৪ লাখ মেট্রিক টন। মোট চাহিদার প্রায় ৫০ লাখ মেট্রিক টন ডিজেলই ব্যবহার হয়। বাকিটুকু চাহিদা পূরণ হয় পেট্রোল, অকটেন, কেরোসিন, জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েলসহ বিভিন্ন জ্বালানি তেলে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এলএনজি সরবরাহে সাত প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ বাড়লো
পেট্রোবাংলার সঙ্গে মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) সই করা সাতটি প্রতিষ্ঠানের এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) সরবরাহে মেয়াদ বৃদ্ধিসহ ১৬টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা এবং এলএসপি সফটওয়্যার ব্যবহারের মেয়াদ ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত বাড়ানোর একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা কমিটির সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় প্রস্তাবটিতে অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভা সূত্রে জানা গেছে, এমএসপিএ সই করা ২৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এলএসপি সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে ‘পিপিআর-২০০৮’-এর বিধি-৮৫ অনুযায়ী স্পট মার্কেট থেকে আন্তর্জাতিক দরপত্র অনুসরণে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে।
চুক্তি সই করা এসব প্রতিষ্ঠানে মধ্যে ৮টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর শেষ হয় এবং ৬টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ২০২৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে। নতুন ২৭টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এমএসপিএ সই প্রক্রিয়াধীন, যা তালিকাভুক্ত হতে আনুমানিক আরও ৪৫ দিন সময় প্রয়োজন।
এ অবস্থায় দেশের বিদ্যুৎ, শিল্প ও সার কারখানায় গ্যাসের জরুরি প্রয়োজন মেটানোর জন্য আন্তর্জাতিক ক্রয়ে এমএসপিএ সই করা বিদ্যমান ২৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ও এলএসপি সফটওয়্যার ব্যবহারের মেয়াদ ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত বাড়ানোর নীতিগত অনুমোদনের জন্য একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দেয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
কোরিয়া থেকে ৬৯৩ কোটি টাকার এলএনজি কিনবে সরকার
জ্বালানি চাহিদা মেটাতে আগামী ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের জন্য আরও এক কার্গো লিকুইডিফাইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করবে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। আন্তর্জাতিক কোটেশনে অংশ নিয়ে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কোরিয়ার পসকো ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন এই এক কার্গো এলএনজি সরবরাহ করবে। প্রতি এককের দাম ১৪.৬৯০০ মা.ডলার হিসেবে এক কার্গো এলএনজি ক্রয়ে ব্যয় হবে ৬৯২ কোটি ৯৯ লাখ ১৯ হাজার ৩৬০ টাকা।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় প্রস্তাবটিতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, আগামী ২০২৫ সালের জানুয়ারি-ডিসেম্বর সময়ে স্পট মার্কেট থেকে ৫৯ কার্গো এলএনজি আমদানির লক্ষ্যে গত ৪ নভেম্বর তারিখে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ অনুমোদন দিয়েছে।
আগামী ২০২৫ সালের ১৬-১৭ জানুয়ারি ২০২৫ সময়ে ১ কার্গো এলএনজি ক্রয়ের প্রস্তাব প্রেরণ করেছে। গত ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর তারিখে কোটেশন আহ্বান করে এমএসপিএ স্বাক্ষরকারী ২৩ প্রতিষ্ঠানকে এলএসপি সফটওয়্যারের মাধ্যমে কোটেশন দাখিলের জন্য ই-মেইলে চিঠি পাঠানো হয়।
দর প্রস্তাবকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক নির্ধারিত সময়ে দাখিলকৃত ৩টি কোটেশন দরপত্র ও প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি কারিগরি ও আর্থিকভাবে মূল্যায়ন করে সুপারিশ সম্বলিত একটি প্রতিবেদন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নিকট দাখিল করে। ৩টি কোটেশনের মধ্যে ৩টি কোটেশনই রেসপন্সিভ হয়।
এর মধ্যে কোরিয়ার পসকো ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম ১৪.৬৯০০ মা.ডলার উল্লেখ করে সর্বনিম্ন দরদাতা হয়। অন্য ২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এক্সেলেরায়েট এনার্জি ১৪.৮৪০০ মা.ডলার উল্লেখ করে ২য় এবং সিঙ্গাপুরের পেট্রোচায়না ইন্টারন্যাশনাল ১৪.৮৬০০ ডলার উল্লেখ করে ৩য় দরদাতা হয়।
রেসপন্সিভ ৩টি প্রতিষ্ঠানের দাখিল করা সব বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১ম সর্বনিম্ন প্রস্তাবিত একক দর ১৪.৬৯০০ মা. ডলার/এমএমবিটিইউ যা কোরিয়ার পসকো ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন দাখিল করেছে। উক্ত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরবরাহতব্য এলএনজির পরিমাণ ৩২,০০,০০০ এমএমবিটিইউ। স্বাক্ষরিত এমএসপিএ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৫% কম-বেশি বিবেচনায় সরবরাহতব্য এলএনজির পরিমাণ সর্বোচ্চ ৩৩,৬০,০০০ এমএমবিটিইউ হতে পারে। প্রতি এমএমবিটিইউ ১৪,৬৯০০ মা.ডলার হিসেবে ৩৩,৬০,০০০ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ ৪৯,৩৫৮,৪০০,০০ মা.ডলার (ভ্যাট এবং এআইটি ব্যতীত)।
২২ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখের সোনালী ব্যাংক লিমিটেড এর মুদ্রা বিনিময় হার ১ মার্কিন ডলার ১২০.০০ টাকা হিসাবে এ অর্থের পরিমাণ ৫৯২ কোটি ৩০ লাখ ৮ হাজার টাকা (ভ্যাট এবং এআইটি ব্যতীত)। এলএনজি আমদানিতে ১৫% ভ্যাট এবং ২% এআইটি প্রযোজ্য বিবেচনায় সর্বমোট ১৭% ভ্যাট এবং এআইটি এর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ ১০০ কোটি ৬৯ লাখ ১১ হাজার ৩৬০টাকা। অর্থাৎ ৩৩,৯০,০০০ এমএমবিটিইট এলএনজি আমদানিতে প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ হবে সর্বমোট (৫৯২,৩০,০৮,০০০,০০+১০০,৬২,১১,১৯,৩৬০.০০)= ৬৯২ কোটি ৯৯ লাখ ১৯ হাজার ৩৬০ টাকা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
৩০ হাজার টন সার কিনবে সরকার, ব্যয় ৬৩৪ কোটি টাকা
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জন্য রাশিয়া, সৌদি আরব, মরক্কো এবং দেশীয় প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে এক লাখ ৩০ হাজার টন সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরমধ্যে ৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার, ৩০ হাজার টন এমওপি সার এবং ডিএপি সার রয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৬৩৪ কোটি ৩২ লাখ ১২ হাজার টাকা।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়। সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য সৌদি আরবের কৃষি পুষ্টি কোম্পানি (সাবিক) থেকে ১৪তম লটের ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৫ কোটি ৮৮ লাখ ১২ হাজার টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ৩৪৯ দশমিক ৬৭ মার্কিন ডলার।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জন্য কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) বাংলাদেশের কাছ থেকে ১০ম লটে ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ৩৪৩ দশমিক ২৫ মার্কিন ডলার।
রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে রাশিয়ার প্রোডিন্টরগ ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন- বিএডিসির মধ্যে সই হওয়া চুক্তির আওতায় ৬ষ্ঠ লটের ৩০ হাজার টন এমওপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন এ সার আনবে। এতে ব্যয় হবে ১০৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ৪৮৯ দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলার।
রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মরক্কো ওসিপি নিউট্রিক্রপস এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের মধ্যে হওয়া চুক্তির আওতায় ১০ম (ঐচ্ছিক-১ম) লটের ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন এ সার আনবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮০ কোটি ৫৬ হাজার টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ৫৮৪ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার।