অর্থনীতি
সুইজারল্যান্ড থেকে দুই কার্গো এলএনজি কিনবে সরকার
দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোটেশনের মাধ্যমে স্পট মার্কেট থেকে সুইজারল্যান্ড থেকে দুই কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় হবে এক হাজার ৩২৬ কোটি ৫৪ লাখ ৪১ হাজার ২৮০ টাকা।
সুইজারল্যান্ডের মেসার্স টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার প্রাইভেট লিমিটেড থেকে এই এলএনজি আনার অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় এই এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে সূত্রে জানা গেছে, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’ অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে (৫-৬ জানুয়ারি ২০২৫ সময়ে) এলএনজি আমদানির প্রত্যাশাগত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
এই প্রস্তাবটি সুইজারল্যান্ডের মেসার্স টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার প্রাইভেট লিমিটেড থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৫৪ কোটি ৩০ লাখ ৮৯ হাজার ২৮০ টাকা। প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম ধরা হয়েছে ১৩.৮৭ মার্কিন ডলার।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের আর এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে (আগামী বছরের ৯-১০ জানুয়ারি সময়ে) সুইজারল্যান্ডের মেসার্স টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার প্রাইভেট লিমিটেড থেকে ৬৭২ কোটি ২৩ লাখ ৫২ হাজার টাকা ব্যয়ে এক কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এক্ষেত্রে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম ধরা হয়েছে ১৪.২৫ মার্কিন ডলার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
টিসিবির জন্য ২৮৫ কোটি টাকার তেল-ডাল কিনছে সরকার
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য দেশীয় উৎস থেকে ১০ হাজার টন মসুর ডাল এবং এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় হবে প্রায় ২৮৫ কোটি টাকা (২৮৪ কোটি ৮৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা)। এর মধ্যে ১৮৯ কোটি ৪৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে সয়াবিন তেল কেনা হবে। এছাড়া ৯৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা দিয়ে কেনা হবে মসুর ডাল।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে শেখ অ্যাগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে মসুর ডাল এবং সিটি এডিবল অয়েল লিমিটেড থেকে সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী এক কোটি পরিবারের নিকট ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে ১০ হাজার টন মসুর ডাল ক্রয়ের জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৪টি দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। চারটি দরপ্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়।
দরপ্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশ করা রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান শেখ অ্যাগ্রো ফুড ইন্ডাষ্ট্রিজ থেকে ১০ হাজার টন মসুর ডাল (৫০ কেজির বস্তায়) কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতি কেজি ৯৫ টাকা ৪০ পয়সা হিসাবে মোট ব্যয় হবে ৯৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আর এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরষদ কমিটি।
টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী এক কোটি পরিবারের নিকট ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে ২ কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল সরবরাহের জন্য একটি দরপ্রস্তাব জমা পড়ে।
দরপ্রস্তাবটি আর্থিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপ্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশ করা রেসপনসিভ একমাত্র দরদাতা প্রতিষ্ঠান সিটি এডিবল অয়েল থেকে এই এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতি লিটার ১৭২ টাকা ২৫ পয়সা হিসাবে এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কিনতে ব্যয় হবে ১৮৯ কোটি ৪৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
৫৪.৮০ টাকা কেজি দরে ভারত থেকে আসবে ৫০ হাজার টন চাল
দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রতি কেজি চালের ক্রয়মূল্য ধরা হয়েছে ৫৪ টাকা ৮০ পয়সা। এতে ৫০ হাজার টন চাল আমদানিতে ব্যয় হবে ২৭৪ কোটি ২০ হাজার টাকা।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এ চাল কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে প্যাকেজ-৪ এর আওতায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে ও জনস্বার্থে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ৬ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির জন্য ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ কর্তৃক অনুমোদিত হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সরকারি খাদ্য মজুত বাড়িয়ে সরকারি বিতরণ-ব্যবস্থা সচল রাখার স্বার্থে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হলে ৫টি দরপত্র জমা পড়ে। ৫টি প্রস্তাবই আর্থিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়।
দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশ করা রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান ভারতের মেসার্স বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড থেকে এ চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতি মেট্রিক টন ৪৫৬ দশমিক ৬৭ মার্কিন ডলার হিসেবে এ চাল আমদানিতে মোট ব্যয় হবে ২ কোটি ২৮ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২৭৪ কোটি ২০ হাজার টাকা। প্রতি কেজি চালের ক্রয়মূল্য ৫৪ টাকা ৮০ পয়সা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
৩৬৪ কোটি টাকার ইউরিয়া সার কিনবে সরকার
কাতার, সৌদি আরব এবং দেশীয় এক প্রতিষ্ঠান থেকে ৯০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ৩৬৪ কোটি ৫০ লাখ ৬ হাজার টাকা। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় কাতার ও সৌদি আরব থেকে ৩০ হাজার টন করে ইউরিয়া আমদানি করা হবে। আর স্থানীয় প্রতিষ্ঠানটি থেকেও ৩০ হাজার টন সার নেওয়া হবে।
কাতারের কাতার এনার্জি মার্কেটিং, সৌদি আরবের সাবিক অ্যাগ্রো-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি এবং স্থানীয় প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে এই সার কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কাতার এনার্জি মার্কেটিং থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।
গত ১১ জুন অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভার অনুমোদনক্রমে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে কাতার এনার্জি মার্কেটিং থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ৫ লাখ ১০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি সই হয়।
চুক্তি অনুযায়ী সারের মূল্য নির্ধারণ করে প্রতি টন ৩৩৯.৩৩ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানিতে ব্যয় হবে ১ কোটি ১ লাখ ৭৯ হাজার ৯০০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১২২ কোটি ১৫ লাখ ৮৮ হাজার টাকা।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের আর এক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশ এর কাছ থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্য্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাফকো, বাংলাদেশ থেকে ৫.৪০ লাখ টন ইউরিয়া সার ক্রয়ের সংশোধিত চুক্তি সই হয়। তার প্রেক্ষিতে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের জন্য প্রাইস অফার পাঠানোর অনুরোধ করা হলে কাফকো, বাংলাদেশ প্রাইস অফার পাঠায়।
কাফকোর সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী সারের মূল্য নির্ধারণ করে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ে প্রতি মেট্রিক টন ৩৩৩.৮৭৫ ডলার হিসেবে মোট ব্যয় হবে ১ কোটি ১৬ হাজার ২৫০ ডলার। বাংলাদেশ মুদ্রায় এর পরিমাণ ১২০ কোটি ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
এছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের আর এক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে সৌদি আরবের সাবিক এগ্রো-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
গত ১১ জুন তারিখে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনক্রমে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে দেশটি থেকে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে ৫ লাখ ৪০ হাজার মে.টন ইউরিয়া সার আমদানির জন্য চুক্তি সই হয়। সৌদি আরব এর সঙ্গে চুক্তি অনুসারে সারের মূল্য নির্ধারণ করে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার প্রতি টন ৩৩৯.৩৩ মার্কিন ডলার হিসেবে মোট ব্যয় হবে ১ কোটি ১ লাখ ৭৯ হাজার ৯০০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১২২ কোটি ১৫ লাখ ৮৮ হাজার টাকা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাতিল হচ্ছে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কসহ ৪০ প্রকল্প
পতিত হাসিনা সরকারের নেওয়া প্রকল্পের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় ও মন্ত্রী-এমপিদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রকল্পই বেশি। এসব অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী সোমবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় বাতিল হতে যাচ্ছে মৌলভীবাজারে সাবেক পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের বন ধ্বংস করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক তৈরির প্রকল্প। পাশাপাশি আরও ৪০টি প্রকল্প পর্যায়ক্রমে বাতিল করা হবে।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা আগামী ২৩ ডিসেম্বর হবে। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের ৫ম একনেক সভা। এ সভায় সাফারি পার্ক প্রকল্পটি বাতিল হবে।
কার্যতালিকা সূত্রে জানা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের ৫ম একনেক সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মোট ১৫টি প্রকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে। এরমধ্যে ৮টি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য এবং পরিকল্পনা উপদেষ্টা কর্তৃক অনুমোদিত ৬টি প্রকল্প প্রস্তাব একনেক সভাকে অবহিত করার জন্য উপস্থাপন করা হবে। বাকি একটি অনুমোদিত প্রকল্প বাতিলের জন্য প্রস্তাব করা হবে।
পরিকল্পনা কমিশন জানায়, মৌলভীবাজারের লাঠিটিলা বনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক শীর্ষক প্রকল্পটি বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত প্রকল্পটি গত বছরের নভেম্বরে একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। এবার একনেক সভায় এটি বাতিলের অনুমোদন দেওয়া হবে।
শুধু এ প্রকল্প নয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া, অলাভজনক ও অগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাতিল করতে যাচ্ছে সরকার। যেগুলো বাতিলের পাশাপাশি অর্থায়ন স্থগিত অথবা ব্যয় কাটছাঁট করা হবে। এরই মধ্যে প্রায় ৪০টির অধিক প্রকল্প বাতিল অথবা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেগুলো ধারাবাহিকভাবে একনেক সভায় উত্থাপন করা হবে।
বাতিলের অপেক্ষায় থাকা প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- সুনামগঞ্জ জেলার সঙ্গে নেত্রকোনার সড়ক যোগাযোগ স্থাপনে হাওরে উড়ালসড়ক নির্মাণের প্রকল্প। সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আগ্রহে নেওয়া প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা।
ফরিদপুর টেপাখোলা পার্ক স্থাপন প্রকল্পটি বাতিল হচ্ছে। সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন মন্ত্রী থাকার সময় নিজ নির্বাচনী এলাকায় পার্কটি নির্মাণের উদ্যোগ নেন।
নেত্রকোনায় শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়, যশোরে শেখ জহুরুল হক পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, খুলনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার এবং বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের জন্য ছয়টি ছাদখোলা ট্যুরিস্ট বাস সংগ্রহ প্রকল্প স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ প্রকল্পগুলোর মধ্যে যেগুলোর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে সেগুলোর সময় না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, পাশাপাশি বাস্তবায়নে মেয়াদ থাকলেও কিছু প্রকল্পও স্থগিত করা হচ্ছে।
ঢাকার হেমায়েতপুর থেকে আফতাবনগর হয়ে দাশেরকান্দি পর্যন্ত মেট্রোরেলের সাউদার্ন রুট প্রকল্প (এমআরটি লাইন-৫) আপাতত বাদ রাখছে সরকার। এর বদলে সরকার গাবতলী থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত মেট্রোরেল (লাইন-২) নির্মাণে জোর দিচ্ছে। সংসদ সদস্যদের পছন্দ অনুযায়ী গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণের প্রকল্পটিও বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কাজে না লাগাই দুর্যোগকালে মানুষের আশ্রয়ের জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় ৫৫০টি মুজিব কিল্লা (আশ্রয়কেন্দ্র) নির্মাণকাজটি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া ৩০টি সাইলো নির্মাণ, মুজিব কিল্লা, বজ্রনিরোধক দণ্ড বসানো, ১২টি আধুনিক তথ্য কমপ্লেক্স, ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন, পল্লি সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু, ঢাকা বিভাগে উপজেলা ও ইউনিয়নে সড়ক, আমার গ্রাম-আমার শহর, রংপুর সিটি করপোরেশন উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পগুলো বাতিল হচ্ছে।
এছাড়া ফেনী, চাঁদপুর ও টাঙ্গাইল জেলায় কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট নির্মাণ, ১২ জেলায় হাইটেক পার্ক, ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন, মোবাইল গেম অ্যাপ্লিকেশন, শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার এবং প্রান্তিক পর্যায়ে উন্নয়ন প্রচার বাতিল হচ্ছে। এছাড়া ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক সাবেক সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসানের নির্বাচনী এলাকায় নেওয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়নের দুটি প্রকল্প বাতিল হচ্ছে বলে জানায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাংলাদেশকে ৬০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে এডিবি
দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করতে ৬০ কোটি ডলার ঋণ দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। প্রতি ডলার সমান ১২০ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) নগরীর অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) স্ট্রেনদেনিং ইকোনমিক ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড গভর্নেন্স প্রোগ্রামের আওতায় এই ঋণচুক্তি হয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী ও এডিবি’র পক্ষে অফিসার্স ইন চার্জ জিংবো নিং এই ঋণচুক্তি সই করেন। ঋণচুক্তি অনুযায়ী এ কর্মসূচির পূর্বশর্তসমূহ এরই মধ্যে অর্জিত হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন অর্থ বিভাগ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ কর্তৃপক্ষ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন এবং যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর, পরিকল্পনা কমিশনের আওতাধীন কার্যক্রম বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে কর্মসূচি বাস্তবায়িত হবে।
এ কর্মসূচিটির নীতি সংস্কারের উদ্দেশ্য হলো দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ এবং বেসরকারি খাতের উন্নয়নে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদারকরণ।