অর্থনীতি
বাতিল হচ্ছে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কসহ ৪০ প্রকল্প

পতিত হাসিনা সরকারের নেওয়া প্রকল্পের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় ও মন্ত্রী-এমপিদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রকল্পই বেশি। এসব অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী সোমবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় বাতিল হতে যাচ্ছে মৌলভীবাজারে সাবেক পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের বন ধ্বংস করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক তৈরির প্রকল্প। পাশাপাশি আরও ৪০টি প্রকল্প পর্যায়ক্রমে বাতিল করা হবে।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা আগামী ২৩ ডিসেম্বর হবে। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের ৫ম একনেক সভা। এ সভায় সাফারি পার্ক প্রকল্পটি বাতিল হবে।
কার্যতালিকা সূত্রে জানা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের ৫ম একনেক সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মোট ১৫টি প্রকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে। এরমধ্যে ৮টি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য এবং পরিকল্পনা উপদেষ্টা কর্তৃক অনুমোদিত ৬টি প্রকল্প প্রস্তাব একনেক সভাকে অবহিত করার জন্য উপস্থাপন করা হবে। বাকি একটি অনুমোদিত প্রকল্প বাতিলের জন্য প্রস্তাব করা হবে।
পরিকল্পনা কমিশন জানায়, মৌলভীবাজারের লাঠিটিলা বনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক শীর্ষক প্রকল্পটি বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত প্রকল্পটি গত বছরের নভেম্বরে একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। এবার একনেক সভায় এটি বাতিলের অনুমোদন দেওয়া হবে।
শুধু এ প্রকল্প নয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া, অলাভজনক ও অগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাতিল করতে যাচ্ছে সরকার। যেগুলো বাতিলের পাশাপাশি অর্থায়ন স্থগিত অথবা ব্যয় কাটছাঁট করা হবে। এরই মধ্যে প্রায় ৪০টির অধিক প্রকল্প বাতিল অথবা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেগুলো ধারাবাহিকভাবে একনেক সভায় উত্থাপন করা হবে।
বাতিলের অপেক্ষায় থাকা প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- সুনামগঞ্জ জেলার সঙ্গে নেত্রকোনার সড়ক যোগাযোগ স্থাপনে হাওরে উড়ালসড়ক নির্মাণের প্রকল্প। সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আগ্রহে নেওয়া প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা।
ফরিদপুর টেপাখোলা পার্ক স্থাপন প্রকল্পটি বাতিল হচ্ছে। সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন মন্ত্রী থাকার সময় নিজ নির্বাচনী এলাকায় পার্কটি নির্মাণের উদ্যোগ নেন।
নেত্রকোনায় শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়, যশোরে শেখ জহুরুল হক পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, খুলনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার এবং বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের জন্য ছয়টি ছাদখোলা ট্যুরিস্ট বাস সংগ্রহ প্রকল্প স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ প্রকল্পগুলোর মধ্যে যেগুলোর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে সেগুলোর সময় না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, পাশাপাশি বাস্তবায়নে মেয়াদ থাকলেও কিছু প্রকল্পও স্থগিত করা হচ্ছে।
ঢাকার হেমায়েতপুর থেকে আফতাবনগর হয়ে দাশেরকান্দি পর্যন্ত মেট্রোরেলের সাউদার্ন রুট প্রকল্প (এমআরটি লাইন-৫) আপাতত বাদ রাখছে সরকার। এর বদলে সরকার গাবতলী থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত মেট্রোরেল (লাইন-২) নির্মাণে জোর দিচ্ছে। সংসদ সদস্যদের পছন্দ অনুযায়ী গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণের প্রকল্পটিও বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কাজে না লাগাই দুর্যোগকালে মানুষের আশ্রয়ের জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় ৫৫০টি মুজিব কিল্লা (আশ্রয়কেন্দ্র) নির্মাণকাজটি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া ৩০টি সাইলো নির্মাণ, মুজিব কিল্লা, বজ্রনিরোধক দণ্ড বসানো, ১২টি আধুনিক তথ্য কমপ্লেক্স, ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন, পল্লি সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু, ঢাকা বিভাগে উপজেলা ও ইউনিয়নে সড়ক, আমার গ্রাম-আমার শহর, রংপুর সিটি করপোরেশন উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পগুলো বাতিল হচ্ছে।
এছাড়া ফেনী, চাঁদপুর ও টাঙ্গাইল জেলায় কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট নির্মাণ, ১২ জেলায় হাইটেক পার্ক, ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন, মোবাইল গেম অ্যাপ্লিকেশন, শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার এবং প্রান্তিক পর্যায়ে উন্নয়ন প্রচার বাতিল হচ্ছে। এছাড়া ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক সাবেক সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসানের নির্বাচনী এলাকায় নেওয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়নের দুটি প্রকল্প বাতিল হচ্ছে বলে জানায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।

অর্থনীতি
যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক চূড়ান্ত না: অর্থ উপদেষ্টা

বাংলাদেশের পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক চূড়ান্ত না। ওয়ান টু ওয়ান নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে এটা ঠিক হবে। এ লক্ষ্যে আগামীকাল ভোরে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরের (ইউএসটিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য প্রতিনিধিদের বৈঠক হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ নিয়ে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ওখানে আমাদের বাণিজ্য উপদেষ্টা আছেন। উনি ৩ দিন আগে গেছেন। আজকেই কমার্স টিম যাচ্ছে। ৮ তারিখে মিটিং। ওদের ৮ তারিখ মানে কালকে খুব ভোরবেলা। মিটিংয়ের পর আমরা বুঝতে পারবো। কারণ, যেটা দিয়েছে, সেটা ঠিক অফিসিয়াল…। ইউএসটিআর’র সঙ্গে যখন আলাপ করবেন উনি (বাণিজ্য উপদেষ্টা) ম্যান্ডেটরি। এর আগের দিন কথা বলেছেন। কালকের পর আপনারা বুঝতে পারবেন।
মিটিংয়ে কি কোনো উন্নতি হওয়ার আশা করা যায়? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সালেহউদ্দিন বলেন, আমরা আশা করি। যাই হোক, সেটার পরিপ্রেক্ষিতে অন্যান্য পদক্ষেপগুলো নেবো। এখন বৈঠকটা মোটামুটি পজিটিভ। ৬ তারিখ বোধহয় একটা মিটিং হয়েছে, মোটামুটি পজিটিভ।
চিঠি তো ইতোমধ্যে ইস্যু হয়ে গেছে, সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন কথা বলা হলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, প্রেসিডেন্ট দিয়েছে। এটা ওয়ান টু ওয়ান যখন নেগোসিয়েশনে ঠিক হবে। চিঠি তো বহু আগে দিয়ে দিতো, ৩৫ শতাংশ। এইটা আবার ১৪টা দেশের জন্য বলছে একই। কিন্তু ওয়ান টু ওয়ান নেগোসিয়েশন হবে, সেজন্যই তো ইউএসটিআর’র সঙ্গে কথা বলা। এটা ফাইনাল না।
ভিয়েতনাম চেষ্টা করে ২৬ শতাংশ কমিয়েছে, বাংলাদেশের কেন মাত্র ২ শতাংশ কমানো হলো। তার মানে কি নেগোসিয়েশন ভালো হয়নি? সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্ন করা হলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, না, না নেগোসিয়েশন….। এটা ঠিক যে আমাদের ডেফিসিট মাত্র পাঁচ বিলিয়ন ডলার। ভিয়েতনামের ১২৫ বিলিয়ন ডলার। ওখানে কিন্তু ওরা কনসেশন দিতে পারে, মানে রাজি হয়েছে। কিন্তু আমাদের এত কম ডেফিসিট। আমরা চেষ্টা করছি যে, আমাদের এত কম ডেফিসিট, এতো শুল্ক দেওয়ার তো জাস্টিফিকেশন থাকে না।
তিনি বলেন, ওরা যেটা করছে ব্ল্যাঙ্কেট কতগুলো করেছে। চায়নার জন্য আলাদা। একেবারে চায়নার একটা সিঙ্গেল হ্যান্ডেলে ডিল করে ওরা। আর বাকিরা… এটা যেটা করেছে ১৪টা দেশের একই বলেছে। এখন আমরা নেগোশিয়েট করবো।
চিঠিতে যে সমস্ত কন্ডিশন দেওয়া হয়েছে এগুলো কি ফুলফিল করা সম্ভব? সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এখন তো আমি কিছু বলতে পারবো না।
রাজস্ব আয় নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এইবার কালেকশন যা হয়েছে মোটামুটি, একেবারে বিরাট গ্যাপ না। আর আগামী বছর চেষ্টা করছি শুধু ট্যাক্স, ভ্যাট না দিয়ে সিস্টেমটা চেঞ্জ করলে দেখবেন কালেকশনটা অনেক বেশি হবে। লিকেজ হবে না, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আতাঁত করে কিছু করতে পারবে না। আমাদের ট্যাক্স ক্যাপাসিটি ভালো, কিন্তু আমরা সেটা ইউটিলাইজ করতে পারিনি। সে কারণে রেভিনিউ কিছুটা শর্ট।
অর্থনীতি
খালেদা জিয়ার কণ্ঠ নকল করে প্রতারণা, হাতিয়ে নিলো ২৬ কোটি টাকা

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কণ্ঠ নকল করে প্রতারণার মাধ্যমে ২৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সাম্প্রতিক এক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন মোতাল্লেছ হোসেন নামে এক ব্যক্তি, যিনি নিজেকে অকো-টেক্স লিমিটেডের পরিচালক হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।
বিএফআইইউ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে তিন মাসের ব্যবধানে সিটি ব্যাংকের গুলশান শাখায় মোতাল্লেছ হোসেনের একাধিক ব্যাংক হিসাবে জমা হয় প্রায় ১১ কোটি ১১ লাখ টাকা। এরপর তার মোট ৯টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করে কর্তৃপক্ষ। অনুসন্ধানে উঠে আসে, এসব হিসাবে মোট ২৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। অথচ তার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আয়কর রিটার্ন অনুযায়ী, তার ঘোষিত সম্পদের পরিমাণ মাত্র ৩৪ লাখ টাকা।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে বিএফআইইউ সন্দেহ করছে, খালেদা জিয়ার কণ্ঠ নকল করে মোতাল্লেছ ও তার সহযোগীরা কিছু ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ আদায় করেছেন। তবে এই অভিযোগ এখনও যাচাই-বাছাই ও প্রমাণের পর্যায়ে রয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে মোতাল্লেছ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার ব্যবসার সুবিধার্থে নিজস্ব টাকা নিজেরই বিভিন্ন হিসাবে স্থানান্তর করেছি, সেটিকে পাচার হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে সরকারের একজন উচ্চপর্যায়ের আইন কর্মকর্তা ও বিএফআইইউয়ের কিছু কর্মকর্তা ষড়যন্ত্র করছে। এরই মধ্যে কর রিটার্নে সাড়ে ৫ কোটি টাকার সম্পদ দেখিয়েছি। তবুও আমাকে ‘লাপাত্তা’ বলা হচ্ছে, যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সম্মানহানিকর।’
মোতাল্লেছ বিএফআইইউ’র প্রধান ও পরিচালকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে গত ২০ মে হিসাব মুক্ত করার আবেদনও করেছেন। এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কেউ মামলা করেননি বলেও জানান তিনি।
ঘটনার বিষয়ে বিএফআইইউয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মোতাল্লেছ হোসেনের হিসাবে এখন পর্যন্ত কোনো পাচার বা অপরাধজনিত অর্থের সরাসরি প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বরং একই অর্থ একাধিক বার স্থানান্তর হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এজন্য তার ফ্রিজ করা হিসাব খুলে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
অর্থনীতি
এস আলম সুগার কারখানাসহ প্রুপের ১১ একর সম্পত্তি নিলামে

এস আলম গ্রুপের সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা পাওনা আদায়ে এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজসহ প্রায় ১১ একর সম্পত্তির নিলাম ডেকেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো এ নিলাম ডাকে ব্যাংকটির খাতুনগঞ্জ করপোরেট শাখা।
এর আগেও ২০ এপ্রিল এসব সম্পত্তি নিলামে ডাকা হয়। তখন এই ঋণে এস আলম গ্রুপের কাছে ব্যাংকটির পাওনা ছিল ৯ হাজার ৯৪৮ কোটি ৪২ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
চট্টগ্রামের স্থানীয় এক পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি খাতুনগঞ্জ করপোরেট শাখার বিনিয়োগ গ্রাহক এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল্লাহ হাছান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল আলমের কাছ থেকে ২০২৫ সালের ১ জুলাই পর্যন্ত মুনাফা, ক্ষতিপূরণ ও অন্যান্য চার্জসহ ব্যাংকের খেলাপি বিনিয়োগ বাবদ পাওনা ১০ হাজার ৫৩৮ কোটি ৬৮ লাখ ৮ হাজার ৮৮৯ টাকা ৮০ পয়সা আদায়কাল পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ ও অন্যান্য খরচ আদায়ের নিমিত্তে অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩এর ১২ (৩) ধারা মোতাবেক বন্ধকি সম্পত্তি নিলামে বিক্রয়ের জন্য আগ্রহী ক্রেতাদের কাছ থেকে দরপত্র আহ্বান করা হয়।
প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা গেছে, তিনটি রেজিস্টার্ড মর্টগেজ চুক্তি অনুসারে ১০ দশমিক ৯৩ একর জায়গা এবং এসব জায়গার ওপর কারখানা, মেশিনারিজ, অফিস বিল্ডিংসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনা নিলামে তোলা হয়।
এরমধ্যে ২০১৪ সালের ১৩ ও ১৬ মার্চের ৩৭৪৬ নম্বর, ২০১৩ সালের ২৮ ও ২৯ মের ৮০৫৭ নং এবং ২০১৩ সালের ১৪ ও ১৫ জুলাইয়ের ৩৩২৭ নম্বর রেজিস্টার্ড মর্টগেজ চুক্তিবদ্ধ সম্পদ রয়েছে।
অর্থনীতি
বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশের ক্ষেত্রে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।
চিঠিতে ট্রাম্প লেখেন, ‘প্রিয় ড. ইউনূস, আপনাদের কাছে এই চিঠি পাঠানো আমার জন্য একটি বড় সম্মানের বিষয়। আমাদের বাণিজ্য সম্পর্কের শক্তি ও প্রতিশ্রুতি এবং আপনার মহান দেশের সাথে উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সাথে কাজ চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে। তবে পরবর্তী বাণিজ্য কেবল আরও ভারসাম্যপূর্ণ এবং ন্যায্য, বাণিজ্যের সাথে হবে। অতএব, আমরা আপনাকে বিশ্বের এক নম্বর বাজার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অসাধারণ অর্থনীতিতে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে বহু বছর ধরে আলোচনা হয়েছে এবং আমরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে, বাংলাদেশের শুল্ক এবং অ-শুল্ক, নীতি ও বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতার কারণে সৃষ্ট এই দীর্ঘমেয়াদি এবং অত্যন্ত স্থায়ী বাণিজ্য ঘাটতি থেকে আমাদের অবশ্যই সরে আসতে হবে।’
তিনি আরও লিখেছেন, ২০২৫ সালের ১ আগস্ট থেকে শুরু করে আমরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রেরিত যেকোনো এবং সব বাংলাদেশি পণ্যের ওপর বাংলাদেশ থেকে আগত পণ্যে ৩৫ শতাংশ শুল্ক নেব। উচ্চতর শুল্ক এড়ানোর জন্য প্রেরিত পণ্যগুলো সেই উচ্চতর শুল্কের সাপেক্ষে হবে। দয়া করে বুঝবেন, ৩৫ শতাংশ শুল্কটি আপনার দেশের সাথে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতির বৈষম্য দূর করার জন্য যা প্রয়োজন, তার চেয়ে অনেক কম। আপনারা জানেন, বাংলাদেশ বা আপনার দেশের কোম্পানিগুলো যদি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেই পণ্য তৈরি বা উৎপাদন করার সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে কোনো শুল্ক থাকবে না।
চিঠিতে বাংলাদেশ যদি এই শুল্কের বিরুদ্ধে পাল্টা কোনো ব্যবস্থা নেয় তাহলে শুল্ক আরও বাড়ানোর হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প।
তিনি চিঠিতে লেখেন, যদি কোনো কারণে আপনি মার্কিন পণ্যে শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন, তবে আপনি যে সংখ্যাটি বাড়াতে চান তা আমরা যে ৩৫ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করেছি সেটির সঙ্গে যুক্ত করা হবে। দয়া করে বুঝুন যে এই শুল্কগুলো বাংলাদেশের বহু বছরের শুল্ক, এবং অ-শুল্ক, নীতি এবং বাণিজ্য বাধাগুলো সংশোধন করার জন্য প্রয়োজনীয়। যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এই অস্থিতিশীল বাণিজ্য ঘাটতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ঘাটতি আমাদের অর্থনীতি এবং প্রকৃতপক্ষে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটি বড় হুমকি।
ট্রাম্প আরও লেখেন, সামনে দীর্ঘ সময় আমরা বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে আপনার সাথে কাজ করার জন্য উন্মুখ। আপনি যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আপনার পূর্বে বন্ধ থাকা ট্রেডিং মার্কেটগুলো খুলতে চান এবং আপনার দেশের শুল্ক এবং অ-শুল্ক, নীতি এবং বাণিজ্য বাধা দূর করতে চান তাহলে আমরা সম্ভবত এই চিঠির একটি সমন্বয় বিবেচনা করব। আপনার দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ওপর নির্ভর করে এই শুল্কগুলি ঊর্ধ্বমুখী বা নিম্নমুখী করা যেতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে আপনি কখনোই হতাশ হবেন না। এই বিষয়ে আপনার মনোযোগের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
এর আগে গত এপ্রিলে বাংলাদেশি পণ্যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। যা ৯ এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়েছিল। তবে বিশ্ব অর্থনীতিতে টালমাটাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে এসব শুল্ক ৩ মাসের জন্য স্থগিত করেন তিনি। যা আগামী ৯ জুলাই শেষ হচ্ছে। এর আগেই নতুন করে বাংলাদেশি পণ্যে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেন তিনি।
অর্থনীতি
স্বর্ণের দাম ভরিতে কমলো ১ হাজার ৫৭৫ টাকা

দেশের বাজারে সোনার দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। ভরিতে সর্বোচ্চ এক হাজার ৫৭৫ টাকা কমানো হয়েছে। নতুন দাম অনুযায়ী সবচেয়ে ভালো মানের ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৭০ হাজার ৫৫১ টাকা।
সোমবার (৭ জুলাই) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে। সোমবার প্রতি ভরি সোনা এক লাখ ৭২ হাজার ১২৬ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) মূল্য কমেছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক লাখ ৭০ হাজার ৫৫১ টাকা, ২১ ক্যারেট প্রতি ভরি এক লাখ ৬২ হাজার ৭৯৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ৩৯ হাজার ৫৪৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ১৫ হাজার ৩৯২ টাকা।
সোনার দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৮১১ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৬৮৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ২৯৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপার দাম ১ হাজার ৭২৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কাফি