আন্তর্জাতিক
ভারতীয় পণ্যে উচ্চ শুল্ক আরোপের হুমকি দিলেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও ভারতের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। বলেছেন, মার্কিন কিছু পণ্যের ওপর নয়াদিল্লি যে ‘উচ্চ শুল্ক’ আরোপ করেছে, তার জবাবে তিনিও দেশটির পণ্যের ওপর সমান শুল্ক আরোপ করবেন।
গত সোমবার ফ্লোরিডার পাম বিচে নিজ বাসভবন মার-এ লাগোতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই হুমকি দেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, বিষয়টি হলো—পারস্পরিকতা। তারা (ভারত) যদি আমাদের ওপর শুল্ক আরোপ করে, আমরা তাদের ওপর ঠিক একই পরিমাণ শুল্ক আরোপ করব। তারা আমাদের ওপর শুল্ক আরোপ করে। আমরা তাদের ওপর শুল্ক আরোপ করব। এবং তারা প্রায় সব ক্ষেত্রেই আমাদের ওপর শুল্ক আরোপ করে, কিন্তু আমরা তাদের ওপর শুল্ক আরোপ করিনি।
চীনের সঙ্গে সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে ডোনাল্ড ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, ভারত-ব্রাজিলসহ এমন কিছু দেশ আছে যারা মার্কিন কিছু পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করে। এর আগেও একবার ট্রাম্প এই একই ধরনের মন্তব্য করেছিলেন।
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, পারস্পরিকতা কথাটি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, কেউ যদি আমাদের ওপর শুল্ক আরোপ করে, ভারত যদি আমাদের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, তাহলে আমরা কি তাদের জন্য শূন্য শুল্ক আরোপ করব? তারা একটি সাইকেল পাঠায় আর আমরা একটি সাইকেল পাঠাই। তারা আমাদের ওপর ১০০ থেকে ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। ভারত অনেক শুল্ক আরোপ করে। ব্রাজিলও অনেক শুল্ক আরোপ করে। তারা যদি আমাদের ওপর শুল্ক আরোপ করতে চায়—সেটা ঠিক আছে, কিন্তু আমরাও তাদের ওপর একই শুল্ক আরোপ করব।
একই সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প মনোনীত বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক বলেন, পারস্পরিক সম্পর্ক ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে চলেছে। আপনারা আমাদের সঙ্গে যেমন আচরণ করবেন, আপনাদেরও তেমন আচরণের প্রত্যাশা রাখতে হবে।
এর আগে, গত অক্টোবরে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ভারত বিদেশি পণ্য আমদানিকে সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপ করে থাকে এবং তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা ভারতীয় পণ্যেও ‘রেসিপ্রোকাল ট্যাক্স’ (পারস্পরিক সমানুপাতিক কর) চালু করা হবে।
ট্রাম্প বলেন, আমার পরিকল্পনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো, আমেরিকাকে অত্যন্ত ধনী করে তোলা এবং এর মূল কথা হচ্ছে সমান-সমান আচরণ। আমরা সাধারণত শুল্ক আদায় করি না। আমি সেই প্রক্রিয়া শুরু করেছি। চীন আমাদের পণ্যে ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, ব্রাজিল বড় ধরনের শুল্ক আরোপকারী, আর সব থেকে বড় শুল্কারোপকারী হলো ভারত।
তিনি বলেন, ভারত খুব বড় ধরনের শুল্ক আরোপকারী দেশ। আমাদের ভারতের সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে দেশটির নেতা মোদির সঙ্গে, তিনি একজন মহান নেতা। সত্যিই তিনি একজন মহান ব্যক্তি। তিনি দেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন, চমৎকার কাজ করছেন। কিন্তু তারাও বেশ বড় শুল্ক আদায় করে।
ট্রাম্পের সম্ভাব্য এই শুল্কনীতি ভারতের আইটি, ওষুধ এবং টেক্সটাইল খাতে প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ এই খাতগুলো মার্কিন বাজারের ওপর নির্ভরশীল। অপরদিকে, চীন থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্য ট্রাম্পের যে নীতি, তা ভারতের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলতে পারে। মার্কিন কোম্পানিগুলো যেহেতু তাদের সরবরাহ চেইন চীন থেকে সরিয়ে আনতে চায়, এর ফলে ভারত নিজেকে একটি উৎপাদন হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ পেতে পারে।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের কড়া অভিবাসন নীতিমালা, বিশেষ করে এইচ-১বি ভিসা নীতি ভারতীয় পেশাজীবীদের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। তাঁর প্রথম শাসনামলে বিদেশি কর্মীদের বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন এবং বাড়তি নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা করেছিলেন। যা ভারতীয় আইটি পেশাজীবী এবং প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছিল। ট্রাম্পের নতুন প্রশাসন যদি আবার এই ধরনের পদক্ষেপ নেয়, তবে তা যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত ভারতীয় দক্ষ জনশক্তির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এবং সেসব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও প্রভাবিত করবে, যেগুলো ভারতীয় কর্মীদের ওপর নির্ভরশীল।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
এবার যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্ক আরোপ করল চীন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের জবাবে এবার যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য আমদানির ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে চীন। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) এই ঘোষণা দেয় চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
একই সঙ্গে টেক জায়ান্ট গুগলের বিরুদ্ধে তদন্তসহ অন্যান্য বাণিজ্য-সম্পর্কিত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছে দেশটি।
চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয়, তারা মার্কিন কয়লা ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) ওপর ১৫ শতাংশ এবং অপরিশোধিত তেল, কৃষি যন্ত্রপাতি ও কিছু গাড়ির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে। এই শুল্ক ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
কানাডা, চীন ও মেক্সিকো যুক্তরাষ্ট্রের বড় তিনটি বাণিজ্যিক অংশীদার। গত শনিবার কানাডা, মেক্সিকো ও চীনা পণ্যে শুল্ক আরোপের আদেশ দেন ট্রাম্প। শনিবার এ-সংক্রান্ত তিনটি পৃথক নির্বাহী আদেশে সই করেন ট্রাম্প। তবে চীনের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্তটি কার্যকর হলেও মেক্সিকো ও কানাডার পণ্যে শুল্ক আরোপ এক মাসের জন্য স্থগিত করেছেন ট্রাম্প। প্রতিবেশী এই দেশ দুটি অবৈধ অভিবাসী ও মাদক পাচার ঠেকাতে সীমান্ত এলাকায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতায় আসার পর ট্রাম্প এ সিদ্ধান্ত নেন।
এদিকে চীনের পাল্টা শুল্ক ঘোষণার পর হংকং শেয়ারবাজারে উত্থান কিছুটা কমে গেছে, ডলার শক্তিশালী হয়েছে এবং চীনা ইউয়ান দুর্বল হয়েছে, যা অস্ট্রেলিয়ান ডলারকেও প্রভাবিত করেছে।
বিশ্লেষক গ্যারি এনজি বলেন, মেক্সিকো ও কানাডার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি সম্ভব হলেও চীনের ক্ষেত্রে বিষয়টি জটিল। এমনকি যদি দুই দেশ কিছু বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছায়, তবুও শুল্ক নীতিকে পুনরায় ব্যবহার করা হতে পারে,যা এই বছর বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করবে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ভারতীয় অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো শুরু করলো যুক্তরাষ্ট্র
ভারতীয় অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় অভিবাসীদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক বিমান রওয়ানা দিয়েছে।
নথিবিহীন অভিবাসীদের বিতাড়িত করতে ট্রাম্পের যে অঙ্গীকার- তারই পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ভারতের উদ্দেশে সি-১৭ বিমান রওয়ানা দিয়েছে। তবে বিমানটিতে কতজন ভারতীয় অভিবাসী আছে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।
ভারত ছাড়াও এর আগে মার্কিন বিমানে করে গুয়েতেমালা, পেরু, হুন্ডুরাস, ব্রাজিলে অবৈধ অভিবাসী পাঠানো হয়েছে।
গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানান, নথিপত্রহীন অভিবাসীদের ফেরত নিতে ভারতের কোনো আপত্তি নেই। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে তা জানিয়ে দেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের অংশ হিসেবে অবৈধ অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী ভারত। তারই পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রও নথিবিহীন ভারতীয়দের ফেরত পাঠানো শুরু করলো।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি দেখা করতে পারেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘দুই বন্ধুর’ বৈঠক হতে পারে বলে কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, মোদি ফ্রান্স সফর শেষ করে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছাবেন। এরপর ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেখানে থাকবেন। আমেরিকান কর্পোরেট নেতা ও ভারতীয় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সঙ্গেও তিনি দেখা করবেন।
এর আগে গত সপ্তাহে ট্রাম্প বলেন, মোদির সঙ্গে আমার দীর্ঘ সময় আলোচনা হয়েছে। তিনি সম্ভবত ফেব্রুয়ারিতেই হোয়াইট হাউসে আসছেন। আমাদের ভারতের সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রে ৯ দিনে ৭ হাজারের বেশি অবৈধ অভিবাসী গ্রেপ্তার
গত ২৩ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত নয় দিনে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ৭ হাজার ২৬০ জন নথিবিহীন অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির অভিবাসন ও কাস্টমস বিষয়ক আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে ৫ হাজার ৭৬৩ জনকে বন্দিশালায় রাখা হয়েছে। শিগগিরই তাদের নিজ নিজ দেশ কিংবা কিউবার গুয়ান্তানামো কারাগারে পাঠানো হবে। শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে আইসিই।
নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের নিউইয়র্ক সিটি, ইলিনয়েস অঙ্গরাজ্যের শিকাগো এবং ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বোস্টন শহরে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এই নথিবিহীন অভিবাসীদের। গ্রেপ্তারদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধেই ধর্ষণ, অপ্রাপ্ত বয়স্কদের প্রতি যৌন সহিংসতা, বন্দুক ও মাদক সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগ রয়েছে বলে শনিবারের এক্সবার্তায় জানিয়েছে আইসিই।
২০২৪ সালের নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন— ক্ষমতায় গেলে যুক্তরাষ্ট্রকে অবৈধ অভিবাসীমুক্ত করবেন। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর সাংবিধানিক বিধি মেনে গত ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণ করেন ট্রাম্প এবং সে দিন বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন তিনি। সেসবের মধ্যে ‘আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মার্কিন জনগণকে সুরক্ষা প্রদান’ নামের একটি আদেশও ছিল।
ট্রাম্প সেই আদেশে স্বাক্ষর করার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হয়েছে অভিযান।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে বসবাস করছেন ১ লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি নথিবিহীন অভিবাসী। তাদের মধ্যে অন্তত ১ লাখকে ফেরত পাঠানোর লক্ষ্য নিয়েছে ওয়াশিংটন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
গোপনে ঢাকায় এসে টিউলিপের তথ্য নিয়ে গেল ব্রিটিশ দল
ব্রিটেনের ‘এফবিআই’ হিসেবে পরিচিত ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) লেবার পার্টির সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সঙ্গে ঢাকায় এক গোপন বৈঠকের পর ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল।
গত মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে এনসিএ কর্মকর্তাদের জানানো হয়, টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে নতুন প্রমাণ সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ। ব্রিটিশ এনসিএ কর্মকর্তারা টিউলিপ সিদ্দিকের ব্যাংক হিসাব, ই-মেইল রেকর্ড এবং অন্যান্য তথ্য খতিয়ে দেখতে পারেন, এমনকি তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করার সম্ভাবনাও রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তির মাধ্যমে টিউলিপ ও তার পরিবারের সদস্যরা ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাৎ করেছেন। এ প্রকল্পের ৯০ শতাংশ ঋণ এসেছে ক্রেমলিন থেকে, আর দায়িত্বে আছে রাশিয়ান কোম্পানি রোসাটম।
২০১৩ সালে মস্কোতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকের ছবিতে টিউলিপ সিদ্দিককে দেখা গিয়েছিল।
এনসিএ-র কর্মকর্তারা বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করার প্রস্তাব দিয়েছেন, যাতে আন্তর্জাতিক চুক্তির আওতায় টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়।
প্রসঙ্গত, দুর্নীতির অভিযোগে ব্রিটেনের লেবার পার্টির জুনিয়র মিনিস্টার এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নী টিউলিপ সিদ্দিক গত মাসে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এরপর তার এমপি পদে থাকা নিয়েও বিরোধী দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে জোর আপত্তি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ট্রাম্পের শুল্কারোপ, প্রতিশোধ নেবে কানাডা-মেক্সিকো-চীনও
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তিন প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার—চীন, মেক্সিকো ও কানাডার বিরুদ্ধে নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী মঙ্গলবার থেকে কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। অন্যদিকে চীন থেকে আসা পণ্যের ওপর শুল্ক হবে ১০ শতাংশ। তবে কানাডার জ্বালানি পণ্যের ওপর শুল্কের হার কিছুটা কম, তা ১০ শতাংশ।
ট্রাম্পের দাবি, এই শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সমস্যা যেমন অবৈধ অভিবাসন ও মাদক পাচার প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয়।। মার্কিন সরকার বলছে, মেক্সিকোর সরকার মাদক পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। আর চীন ফেন্টানাইলের মতো বিপজ্জনক মাদক আমদানিতে জড়িত। তবে এই শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে কানাডা ও মেক্সিকো তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, তারাও পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে।
শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানিয়েছেন, কানাডা এ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে একেবারেই প্রস্তুত। তিনি বলেন, কানাডা ১৫৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে, যার মধ্যে থাকবে মদ, ফল, শাকসবজি, পোশাক, বাসনপত্র, আসবাবপত্র ও অন্যান্য পণ্য। ট্রুডো আরও জানান, কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া ফেন্টানাইলের পরিমাণ খুবই কম। সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়েও ট্রাম্পের উদ্বেগের কোনো যৌক্তিকতা নেই।
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউমও এই শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তকে সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, শুল্ক আরোপ কোনো সমস্যার সমাধান নয়। বরং এটি আরও বেশি সমস্যা সৃষ্টি করবে। তিনি বলেন, মেক্সিকো মার্কিন সরকারের সঙ্গে মাদক পাচার রোধে কাজ করতে প্রস্তুত। তবে সমস্যার সমাধান হবে শুধু আলোচনার মাধ্যমে। শুল্ক আরোপের মাধ্যমে নয়। যদি তা হয়, মেক্সিকোও মার্কিন পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে।
এদিকে, চীনও ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মামলা করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। চীনের সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীন এই শুল্ক আরোপকে ‘অযৌক্তিক’ ও ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে মনে করে এবং স্বার্থ রক্ষায় পাল্টা পদক্ষেপ নেবে।
অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন, এই শুল্ক আরোপের ফলে মার্কিন বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়তে পারে, বিশেষ করে গাড়ি, যন্ত্রাংশ, স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম ও খাদ্যপণ্যের। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো—সব দেশেই মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমবে। এমনকী বিশ্ববাজারেও এর প্রভাব পড়বে।