আন্তর্জাতিক
১০০ বিলিয়ন ডলারের ক্লাব থেকে বাদ পড়লেন আদানি-আম্বানি
ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্স অনুযায়ী, ভারতের দুই ধনকুবের গৌতম আদানি ও মুকেশ আম্বানি বিশ্বের অভিজাত এলিট সেন্টিবিলিয়নিয়ার্স ক্লাব বা ১০০ বিলিয়ন ডলারের ক্লাব থেকে ছিটকে পড়েছেন।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) ওয়েবসাইটটিতে প্রকাশিত তালিকা থেকে এ তথ্য জানা যায়।
চলতি বছরের শুরুতে ভারতীয় ধনকুবের মুকেশ আম্বানির ছেলে অনন্তের বিয়ের উদযাপনের জমক দেখে মানুষের চোখ কপালে উঠেছিল। সাত মাস ধরে চলা এই বিয়ের অনুষ্ঠানে অতিথিদের বিনোদন দিতে রিহানা থেকে জাস্টিন বিবার কাকে না আনা হয়েছিল।
এই অনুষ্ঠানের আনুমানিক ব্যয় ৬০০ মিলিয়ন ডলার, এই অনুষ্ঠান পৃথিবীবাসীর সামনে ভারতের সুপার ধনীদের আত্মবিশ্বাসের ছবি তুলে ধরেছিল। তবে ছয় মাস পর পরিস্থিতি হঠাৎ বদলে গেছে।
রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি এবং আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানি দুই ভারতীয় ধনকুবেরই কঠিন সময় পাড় করছেন। বর্তমানে তাদের ব্যবসা এবং ব্যক্তিগত সুনাম উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রিলায়েন্সের এনার্জি ও রিটেল ব্যবসা কিছুটা থমকে যাওয়ায় আম্বানির ব্যবসা তেমন ভাল যাচ্ছে না এবং সম্পত্তির পরিমাণ কমেছে।
অন্যদিকে, মার্কিন বিচার বিভাগের তদন্তের মুখে পড়ে আদানির সম্পত্তির পরিমাণ কমেছে।
গত বছর তার বিরুদ্ধে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদন প্রকাশের পর গৌতম আদানির সম্পদের মূল্য কমে যায়। সেই প্রথমবার আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো নড়েচড়ে বসে। সেই থেকে বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য লড়াই করছেন আদানি।
এরপর তিনি যখন ক্ষতি অনেকটা কাটিয়ে উঠছিলেন, তখন যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের রায়ের জেরে বড় ধরনের সংকটে পড়েছেন।
গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের এক আদালতের রায়ের জেরে গৌতম আদানির সম্পদের মূল্য অনেকটাই কমে গেছে। তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের তদন্তের আওতায় রয়েছেন।
তবে দুইবারই অভিযোগ অস্বীকার করে আদানি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগকে ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে এগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
মার্কিন অভিযোগের পরে তিনি বলেন, তার প্রতিষ্ঠান ‘বিশ্বমানের নিয়ন্ত্রক কমপ্লায়েন্স’ মেনে চলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং কোম্পানির বিরুদ্ধে হওয়া প্রতিটি আক্রমণ ‘আমাদের আরও শক্তিশালী করে তোলে’।
সম্ভবত এগুলোর ফলে নতুন বছরে আদানির প্রতিষ্ঠান এবং তার শেয়ারের দামের ওপর চাপ পড়বে।
হিন্ডেনবার্গের আক্রমণের পর আদানি তার আর্থিক অবস্থান শক্তিশালী করতে জোর পদক্ষেপ নেওয়ার পর গত জুন মাসে তার সম্পদ রেকর্ড ১২২.৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল।
তবে ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার্স ইনডেক্স অনুসারে, বর্তমানে তিনি ৮২.১ বিলিয়ন ডলারের মালিক। তবে সম্প্রতি বিলিয়ন ডলারের ক্লাব থেকে ছিটকে পড়া একমাত্র ভারতীয় ধনী নন তিনি।
এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ আম্বানির সম্পদও কমেছে, তবে তার সম্পদ কমার হার আদানির চেয়ে কিছুটা কম।
জুলাই মাসে আম্বানির সম্পদ রেকর্ড প্রায় ১২০.৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল।
তার প্রধান ব্যবসা রিলায়েন্স গ্রুপ ভালো আয় করতে না পারা থেকে শুরু করে, জ্বালানি ব্যবসায় সংকট এবং রিটেইল ব্যবসায় ভোক্তা চাহিদা কমে গেছে। গত ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত তার সম্পদ দাঁড়িয়েছে ৯৬.৭ বিলিয়ন ডলারে।
আম্বানি তার ব্যবসার উন্নতির জন্য একটি কৌশলগত পরিবর্তনের চেষ্টা করছেন। তিনি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে তার কনগ্লোমারেট প্রতিষ্ঠানের প্রচারণা, খুচরা ব্র্যান্ড এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন। তবে খুচরা ব্যবসায় বিক্রি ও মুনাফার হার কমে গেছে।
এছাড়া, ভারতের প্রধান শহরগুলোর মুদির দোকান এবং গৃহস্থালির পণ্য বাজারে ডিজিটাল ব্যবসায়ীরা তাদের অবস্থান শক্তিশালী করছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাজ্যে এবার আলোচনায় টিউলিপের পারিবারিক বন্ধু শায়ান
যুক্তরাজ্যে দুর্নীতির অভিযোগে ব্যাপক চাপে রয়েছেন ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী ও শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক। এই পরিস্থিতিতে আলোচনায় এসেছেন তার ‘পারিবারিক বন্ধু’ শায়ান ফজলুর রহমান, যিনি বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমানের ছেলে এবং ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের উপদেষ্টা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সালমান এফ রহমান ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) শায়ান এবং তার স্ত্রী শাজরেহ রহমানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শায়ান ব্রিটিশ মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের পারিবারিক বন্ধু। লন্ডনে শেখ হাসিনার সফরের সময় শায়ানের ১৩ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের বাড়িতে তিনি বিনাভাড়ায় অবস্থান করতেন। শায়ান একসময় তার বাবার মালিকানাধীন বেক্সিমকো গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন।
ডেইলি মেইল আরও জানায়, দুর্নীতির অভিযোগের পরও শায়ান এখনো ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের চেয়ারম্যান পদে বহাল রয়েছেন। এ প্রসঙ্গে সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আমরা শায়ানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে অবগত এবং বাংলাদেশের ঘটনার দিকে নজর রাখছি।
শায়ানের এক মুখপাত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি যুক্তরাজ্যে জন্ম নেয়া একজন ব্রিটিশ নাগরিক এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী। তিনি বা তার স্ত্রী কখনো কোনো অপরাধে অভিযুক্ত হননি।
শায়ান একসময় আইএফআইসি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করলেও, ক্ষমতার পরিবর্তনের পর ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠন করা হলে তিনি পরিচালকের পদ হারান।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, শায়ানের ভূমিকা ও তার বাবার সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম নিয়ে এখনো তদন্ত চলছে। তবে ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের চেয়ারম্যান হিসেবে তার অবস্থান বহাল রয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
‘জমজমের’ বলে ট্যাপের পানি বিক্রি, আয় ৩০ কোটি
বোতলের গায়ে জমজমের পানির লেবেল লাগিয়ে জমজমের পানি বলে ট্যাপের পানি বিক্রি করা হচ্ছে। এভাবে প্রতারণা করে তুরস্কে এক ব্যক্তি একাই আয় করেছেন ৯ কোটি লিরা (প্রায় ৩০ কোটি টাকা)। ওই ব্যক্তি প্রতিদিন ২০ টন ভুয়া জমজমের পানি বিক্রি করতেন বলে জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ।
এই প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে জানা যায়, প্রতিদিন তিনি অন্তত ২০ টন পানি বিক্রি করে আসছেন। গত ৫ মাস ধরে এই প্রতারণা করছেন বিলাল নামের ওই ব্যক্তি।
জিজ্ঞাসাবাদে বিলাল পুলিশকে জানান, তুরস্কে জমজমের পানি বলে যেসব পানি বিক্রি হয়, বেশিরভাগই তুরস্কের পানি। এগুলো সৌদি আরবের জমজমের পানি নয়। এসব পানি আদানার ওয়্যারহাউজের।
বিলালের কাছে তথ্য পেয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। এরপর এমন ভুয়া ১৫ হাজার লিটার জমজমের পানি পায় তারা। এসব পানির বোতলের বেশকিছু ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাতে দেখা যায়, সব ধরনের আকারের বোতলই রয়েছে। এগুলো তুরস্কের বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
টিউলিপকে বরখাস্তের দাবি বিরোধীদলীয় নেতার
ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রিসভার সদস্য ও যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করতে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান কেমি ব্যাডেনোচ।
রবিবার (১২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রিসভার সদস্য এবং তিনি ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার কাজ যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেওয়া। কিন্তু তার জন্মভূমি বাংলাদেশেই এখন তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, যেখানে তিনি এবং পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রায় ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া, নিজ খালা শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজনদের উপহারের ফ্ল্যাটে থাকা নিয়ে বিতর্ক চলছে তাকে নিয়ে।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কাছে ট্রেজারি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা কেমি ব্যাডেনোচ। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া পোস্টে কনজারভেটিভ পার্টির এ নেতা বলেছেন: কেয়ার স্টারমারের টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার সময় এসেছে।
পোস্টে তিনি আরও বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার তার ব্যক্তিগত বন্ধুকে দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেছেন এবং তিনি নিজেকেই দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন।
ব্যাডেনোচ বলেন, সরকার যে আর্থিক সমস্যাগুলো তৈরি করেছে, তা মোকাবিলায় মনোনিবেশ করা উচিত হলেও টিউলিপ সিদ্দিক সেই কাজে মনোনিবেশের জন্য সমস্যা হয়ে উঠেছেন। আর এখন বাংলাদেশ সরকারও শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে তার যোগসূত্র নিয়েও গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
এছাড়া সম্প্রতি টোরি এমপিরাও টিউলিপের পদত্যাগ দাবি করেছেন। ব্রিটেনের প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির এমপিরা টিউলিপের উদ্দেশে বলেছেন, ফ্ল্যাট উপহার পাওয়ার বিষয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে না পারলে তিনি যেন ট্রেজারি মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
টোরি এমপি বব ব্ল্যাকম্যান বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিককে তার সম্পত্তির লেনদেনের বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে এবং ব্যাখ্যা করতে হবে আসলে কী ঘটেছে এবং কেন? যদি তিনি তা না করেন, তবে মন্ত্রী হিসেবে তিনি তার কাজ চালিয়ে যেতে পারেন না।
টিউলিপ সিদ্দিক অবশ্য কোনও ধরনের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডসের ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার লাউরি ম্যাগনাসের কাছে নিজের বিরুদ্ধে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। স্যার লরি ম্যাগনাসের কাছে লেখা একটি চিঠিতে তিনি দাবি করেছেন, ‘আমি কোনও ভুল করিনি।’
এদিকে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্টারমারও বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিকের উপর পূর্ণ আস্থা রেখেছেন তিনি। সেইসঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র বলেছেন, টিউলিপকে তার পদ থেকে সরিয়ে ওই পদে দায়িত্ব পালনের জন্য সম্ভাব্য ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত তালিকা নিয়ে যে খবর চাউর হয়েছে তা ‘সম্পূর্ণ অসত্য’।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রে কারাবন্দিদের নামানো হলো দাবানল নেভানোর কাজে
ভয়াবহ দাবাননে পুড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলস। আর এই আগুন নেভানোর কাজে নামানো হয়েছে কয়েকশ কারাবন্দিকে। তবে ঝুঁকিপূর্ণ এ কাজের জন্য দৈনিক ভাতা হিসেবে মাত্র ৫ দশমিক ৮০ ডলার থেকে ১০ দশমিক ২৪ ডলার করে পান তারা। জরুরি অবস্থা চলাকালে প্রতি এক ঘণ্টার জন্য আলাদা করে এক ডলার দেওয়া হয় তাদের।
লস অ্যাঞ্জেলসে বর্তমানে পাঁচটি দাবানল সক্রিয় রয়েছে। দাবানলে পুড়ছে সেখানকার ১১৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকা। ইতিমধ্যে প্রায় ১০ হাজার অবকাঠামো পুড়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার ডিপার্টমেন্ট অব কারেকশন জানিয়েছে, পেশাদার ফায়ার ফাইটারদের সঙ্গে অন্তত ৩৯৫ জন কারাবন্দি আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন।
যদিও এটি স্বেচ্ছাশ্রম। তবে অনেকে মনে করেন বিষয়টি পুরোনো দাস প্রথারই একটি অংশ। যেখানে কারাবন্দিদের দিয়ে খুবই অল্প অর্থের বিনিময়ে ঝুকিপূর্ণ কাজ করানো হচ্ছে।
ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানল নেভানোর কাজে যে বাহিনী আছে, তার প্রায় ৩০ শতাংশই কারাবন্দিদের নিয়ে গঠিত। কিন্তু বন্দিদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তাদের ফায়ার ফাইটার হিসেবে আর চাকরি দেওয়া হয় না।
সাধারণ ফায়ার ফাইটাররা আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে আগুন নেভানোর কাজ করলেও; কারাবন্দি ফায়ার ফাইটাররা মূলত হাত দিয়ে কাজ করে। আগুন যেন না ছড়ায় সেজন্য গাজ ও লতাপাতাগুলো সরায় তারা। এতে করে সাধারণ ফায়ার ফাইটারদের তুলনায় তারা চার গুণ বেশি আহত হয়।
কারাবন্দি এসব ফায়ার ফাইটাররা থাকেন মূলত ফায়ার ক্যাম্পে। তাদের অনেকে বলছেন, কম বেতন এবং ঝুকি থাকা সত্ত্বেও ক্যালিফোর্নিয়ার মূল কারাগারে থাকার চেয়ে ফায়ার ক্যাম্পে বন্দি থাকতে চান। কারণ কারাগারে বিভিন্ন অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়। তবে এক বন্দি বলেছেন, “আমাদের আগুন নেভানোর কাজ করতে পাঠানো অন্যায়। আমরা কারাগারেই থাকতে চাই।”
সূত্র: আলজাজিরা
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
অভিযোগ ওঠার পর প্রথমবার প্রকাশ্যে টিউলিপ সিদ্দিক
যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রী (ইকোনমিক সেক্রেটারি) টিউলিপ সিদ্দিক সম্প্রতি নিজের বিরুদ্ধে ওঠা একাধিক অভিযোগের বিষয়ে স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। অভিযোগে বলা হচ্ছে, তিনি বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের নেতাদের সঙ্গে সম্পর্কিত একাধিক ব্যক্তির মালিকানাধীন ফ্ল্যাটে বসবাস করেছেন। এসব অভিযোগের কারণে তার পদত্যাগের বিষয়ে আলোচনা উঠছে।
এসব অভিযোগের পর প্রথম প্রকাশ্যে দেখা গেছে টিউলিপকে। সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার (৮ জানুয়ারি) তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অফিসে যেতে দেখা গেছে। সেসময় ক্যামেরাবন্দি করা হয় তাকে।
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে লন্ডনের বিভিন্ন এলাকায় একাধিক ফ্ল্যাটে বসবাস করার অভিযোগ উঠে। যেগুলোর তাকে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এসব ফ্ল্যাট তাকে বিনা মূল্যে দেয়া হয়েছিল। ফিন্যান্সিয়াল টাইমস ও সানডে টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা গেছে, ২০০৪ সালে আবদুল মোতালিফ নামক এক আবাসন ব্যবসায়ী টিউলিপকে বিনা মূল্যে একটি ফ্ল্যাট দেন। মোতালিফের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাদের সম্পর্ক ছিল। এছাড়া, টিউলিপের বোনও মঈন গনি নামের এক আইনজীবী থেকে আরেকটি ফ্ল্যাট পেয়েছিলেন। তিনিও আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
টিউলিপ সিদ্দিক এই অভিযোগগুলোর বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিবাদ করেছেন। তিনি এক চিঠিতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা লাউরি ম্যাগনাসকে তদন্তের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমি ভুল কিছুই করিনি, তবে এই বিষয়গুলো নিয়ে স্বাধীনভাবে সত্যটি সামনে আনুন। টিউলিপের দাবি, গণমাধ্যমে প্রকাশিত অনেক তথ্য সঠিক নয়। এসব অভিযোগের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে চান তিনি।
বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ৬১টি ব্যাংককে টিউলিপ সিদ্দিকের অ্যাকাউন্ট ও লেনদেনের রেকর্ড জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে এই আদেশে তার নাম, জন্ম তারিখ, বাবা-মায়ের নাম ও স্বামীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
টিউলিপ সিদ্দিকের একজন মুখপাত্র বলেছেন, এই অভিযোগের জন্য কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। টিউলিপের সঙ্গে কেউ এই বিষয়ে যোগাযোগ করেনি। তিনি পুরোপুরি এই দাবি অস্বীকার করেন।
এদিকে, টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের চাপও বাড়ছে। যুক্তরাজ্যের কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ক্রিস ফিলিপ তার পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, টিউলিপ সিদ্দিককে তার ব্যক্তিগত সম্পদের উৎস ব্যাখ্যা করতে হবে। তিনি যে সব ফ্ল্যাটে বসবাস করেছেন সেগুলো আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতির সম্পদ কিনা- তা ব্যাখা তাকে ব্যাখ্যা করতে হবে। এসব প্রশ্নের উত্তর না মেলা পর্যন্ত টিউলিপকে তার পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হবে।
এছাড়া, টিউলিপ সিদ্দিক, তার খালা শেখ হাসিনা, মা শেখ রেহানা এবং শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) । ৯টি প্রকল্পে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এই অনুসন্ধান চলছে।
এদিকে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার টিউলিপ সিদ্দিকের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছেন, তিনি তার প্রতি আস্থা রাখেন। তবে লেবার পার্টির কিছু জ্যেষ্ঠ নেতা মনে করছেন, টিউলিপের ব্যক্তিগত আর্থিক বিষয়গুলোর কারণে দলের জন্য তা সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।