অর্থনীতি
দাবি না মানলে ডিম-মুরগি উৎপাদন বন্ধ: বিপিএ
প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারিদের স্বার্থ রক্ষায় কর্পোরেট কোম্পানির সিন্ডিকেট বন্ধ করাসহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। এসব দাবি পূরণ না হলে ১ জানুয়ারি থেকে সারাদেশের প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারে ডিম ও মুরগি উৎপাদন বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে বিপিএ।
রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় বিপিএ।
এদিকে বাজারে কয়েক সপ্তাহ ধরে ডিম মুরগির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। এসময় এসব দাবি তুলে বাজার অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে।
বিপিএ’র সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, প্রান্তিক খামারিদের স্বার্থ রক্ষায় সংকট সমাধানের জন্য সরকারকে বারবার বলার পরও নজর দিচ্ছে না। উল্টো কর্পোরেট সিন্ডিকেটকে সরকার সহযোগিতা করছে। সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছি যেন দেশের পোল্ট্রি শিল্পে প্রান্তিক খামারিরা টিকে থাকতে পারেন। বর্তমানে করপোরেট কোম্পানির আধিপত্য ও সিন্ডিকেটের কারণে দেশের মুরগি ও ডিমের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। যার ফলে প্রান্তিক খামারিরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন। এই সংকট দেশের খাদ্য নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান এবং অর্থনীতির জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে প্রায় ৫০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান সমৃদ্ধ এই খাত মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যদি সরকার এখনই পদক্ষেপ না নেয় তবে পোল্ট্রি খাতে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে। সরকারের কাছে বারবার দাবি জানানোর পরও সরকার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে তাদের সহযোগিতা করছে। তাই আমরা স্বল্প সময়ের আল্টিমেটাম দিচ্ছি। সরকার যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তবে দেশের সব জেলা ও উপজেলায় প্রান্তিক খামার বন্ধের কর্মসূচি ঘোষণা করছি।
বিপিএর ১০ দফা দাবিগুলো হলো-
১. কর্পোরেট কোম্পানিগুলোকে শুধু ফিড ও মুরগির বাচ্চা উৎপাদনে সীমাবদ্ধ থাকার নিয়ম করতে হবে। কারণ, বর্তমানে করপোরেট কোম্পানিগুলো ডিম ও মুরগি উৎপাদনেও অংশগ্রহণ করছে, যার ফলে ছোট খামারিরা বাজারে প্রতিযোগিতা করতে পারছে না।
২. বাণিজ্যিকভাবে ডিম ও মুরগি উৎপাদন বন্ধ করতে হবে।
৩. ফিড ও মুরগির বাচ্চার সিন্ডিকেট বন্ধ করতে হবে।
৪. প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করতে হবে।
৫. ক্ষুদ্র খামারিদের সহজ শর্তে ঋণ ও ভর্তুকি দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
৬. ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করতে হবে।
৭. আলাদা বাজার সুবিধা তৈরি করতে হবে প্রান্তিক খামারিদের জন্য।
৮. সরকারি নীতিমালা তৈরি করে করপোরেট সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
৯. চুক্তিভিত্তিক ফার্মিংয়ের ফাঁদ বন্ধ করতে হবে।
১০. প্রান্তিক খামারিদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিতে হবে।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
জানুয়ারিতে কমেছে মূল্যস্ফীতি
শীতের সবজিতে ভরপুর বাজার। দামও নাগালের মধ্যে। কমেছে আলুর দামও। এর ফলে জানুয়ারি মাসে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ১০ দশমিক ৭২ শতাংশ। যা আগের মাস ডিসেম্বরে ছিল ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ। ফলে এক মাসের ব্যবধানে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমেছে ২ দশমিক ২০ শতাংশ।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) দেওয়া ভোক্তা মূল্যসূচকের (সিপিআই) হালনাগাদ তথ্যে এমনটা বলা হয়েছে।
বিবিএসের হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, জানুয়ারি মাসে খাদ্যপণ্যের দাম কমেছে। বিশেষ করে কমেছে চাল, ডাল, তেল, লবণ, মাছ, মাংস, সবজি, মসলা ও তামাকজাতীয় পণ্যের দাম।
শীত মৌসুমে পণ্যের সরবরাহ বাড়ায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমেছে বলে দাবি বিবিএসের। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি জানুয়ারিতে সামান্য বেড়ে ৯ দশমিক ৩২ শতাংশে পৌঁছেছে, যা গত ডিসেম্বরে ছিল ৯ দশমিক ২৬ শতাংশ। গত বছরের ডিসেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং নভেম্বরে ছিল ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ।
খাদ্য মূল্যস্ফীতি হ্রাসের ফলে দেশের সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি জানুয়ারিতে শূন্য দশমিক ৯৫ শতাংশ কমে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশে নেমে এসেছে। এর আগের মাস ডিসেম্বরে যা ছিল ১০ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
জানুয়ারি মাসে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি সামান্য বেড়ে ৯ দশমিক ৩২ শতাংশে পৌঁছেছে। যা গত ডিসেম্বরে ছিল ৯ দশমিক ২৬ শতাংশ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
মূল্যস্ফীতি কমাতে আরও দু-তিন মাস লাগবে: অর্থ উপদেষ্টা
দেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও দুই-তিন মাস অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। আগামী এপ্রিল মাসে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বাড়তি মূল্যস্ফীতিতে মানুষ সমস্যায় রয়েছে এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে তা কমাতে ইতোমধ্যে বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর প্রভাবে মূল্যস্ফীতি কমতে আরও ২ থেকে ৩ মাস অপেক্ষা করতে হবে। এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে আসবে। জুনে এর ভালো প্রভাব দেখা যাবে।’
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, সরকার আসন্ন রোজায় নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আরও কিছু পদক্ষেপ নেবে। এসব উদ্যোগের ফলে আগামী জুন নাগাদ গড় মূল্যস্ফীতি ৬ থেকে ৭ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা করছে সরকার।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে মাসভিত্তিক সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে রয়েছে। গত ডিসেম্বর মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ১০ দশমিক ৮৯ শতাংশ। তবে একই সময়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ। গত জুলাই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ দশমিক ১০ শতাংশে উঠেছিল।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কর্মকর্তাদের সব লকার স্থগিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা ভল্টে রাখা সব কর্মকর্তার সেইফ ডিপোজিট সাময়িক সময়ের জন্য ফ্রিজ (স্থগিত) করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সন্দেহ করছে, এসব লকারে গোপনে বিপুল পরিমাণ অপ্রদর্শিত অর্থসম্পদ মজুত রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ও সহকারী মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দিকী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ছাড়া অন্য কেউ ব্যাংকের লকার বা অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করতে পারে না। দুদক কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি দিয়েছে আপাতত নতুন করে কোন লকার বরাদ্দ না দেওয়ার জন্য। একই সঙ্গে আগের লকারগুলো যাতে আপাতত খোলা না হয় সে বিষয়ে অনুরোধ জানিয়েছে। মূলত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা সেফ ডিপোজিট (লকার) হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে তাদের সম্পদ রাখতে পারেন। যেসব সম্পদ বাসায় রাখা ঝুঁকিপূর্ণ ডাকাতির ভয় আছে মূলত সেইসব সম্পদই সেফ ডিপোজিট হিসেবে সিলগালা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রাখা হয়। এই সংখ্যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের এক শতাংশেরও কম। কিন্তু একজন এসকে সুরের কারণে আমাদের এ ধরনের সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এটা খুবই দুঃখজনক।
দুদকের পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে লকার ফ্রিজের অনুরোধ জানানো হয়। এতে বলা হয়, ৩০ জানুয়ারি দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের লকারগুলোর বিষয়ে আলোচনা হয়। অর্থ উপদেষ্টা এসব লকারের সম্পদ ফ্রিজের সম্মতি দেন।
দুদক গতকাল (সোমবার) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে লকার খোলা ও তালিকা তৈরির অনুমতির জন্য আবেদন জমা দিয়েছে। আজ (মঙ্গলবার) আদালতের আদেশ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর, একজন ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে দুদক লকার খোলার ব্যবস্থা নেবে।
এর আগে, দুদকের অনুসন্ধান দল সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর (এস কে সুর) বাসায় অভিযান চালিয়ে নগদ ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা উদ্ধার করে। পরে তার লকার খুলে দেশি-বিদেশি মুদ্রা ও স্বর্ণালংকারসহ ৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ পাওয়া যায়।
তল্লাশির সময় দেখা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বেশকিছু লকার সিলগালা অবস্থায় রয়েছে। দুদক মনে করছে, এসব লকারে অপ্রদর্শিত সম্পদ থাকতে পারে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত চলছে।
দুদক বলেছে, লকার খুলে রক্ষিত সম্পদ যাতে কেউ সরিয়ে নিতে না পারে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সাত মাসে রপ্তানি আয় ২৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়ালো
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দেশের পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৪৪৪ কোটি মার্কিন ডলার, যা টাকার অঙ্কে ৫৪ হাজার ১১৯ কোটি ৪৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা)। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই আয় ছিল ৪২০ কোটি ডলার। আর চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের প্রথম (জুলাই-জানুয়ারি) ৭ মাসে রপ্তানি হয়েছে ২৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ দশমিক ৬৮ শতাংশ বেশি।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) রপ্তানি আয় হয়েছে ২ হাজার ৮৯৬ কোটি ৯৫ লাখ ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ দশমিক ৬৮ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই আয় ছিল ২ হাজার ৫৯৩ কোটি ৮৯ লাখ ডলার।
রপ্তানি প্রবৃদ্ধির এই ধারা অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। প্রবাসী আয় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে শক্তিশালী করছে, তবে শিল্প খাতের কিছু চ্যালেঞ্জ এখনো বিদ্যমান, যা এই পরিসংখ্যানে পুরোপুরি প্রতিফলিত হচ্ছে না।
এ বিষয়ে বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, যদিও রপ্তানি প্রবৃদ্ধির হার আশাব্যঞ্জক, তবে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, বাজারভিত্তিক প্রতিযোগিতা ও কাঁচামালের ওপর নির্ভরতা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য সংকুচিত হওয়ার ফলে তীব্র মূল্য প্রতিযোগিতা দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশের জন্য কিছু সুযোগ সৃষ্টি হলেও জ্বালানি নিরাপত্তা ও আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিগত সাত মাসে রপ্তানি আয় প্রধানত তৈরি পোশাক খাতের ওপর নির্ভরশীল ছিল। এই খাতে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১২ শতাংশ। এ ছাড়া কৃষিজাত পণ্যের রপ্তানি আয় ১১ দশমিক ৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রপ্তানি খাতে পরিণত হয়েছে। অন্যান্য খাতের মধ্যে রাবার পণ্য ৩৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ, সাইকেল রপ্তানি ৬৪ ও জাহাজ রপ্তানি ৩১ দশমিক ৬৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সদ্য সমাপ্ত জানুয়ারি মাসে তৈরি পোশাক, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, চামড়াবিহীন জুতা, হিমায়িত খাদ্য ও প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। তবে চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, প্লাস্টিক পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের রপ্তানি কমেছে। কিন্তু রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশের বেশি যেহেতু তৈরি পোশাক খাত থেকে আসে, তাই এ খাতের রপ্তানির ওপর নির্ভর করে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি। এ খাতে জানুয়ারি মাসে রপ্তানিতে ৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ফলে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি এর কাছাকাছি রয়েছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ২ হাজার ৩৫৫ কোটি ডলারের, যা গত বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি। শুধু জানুয়ারিতে এ খাতে ৩৬৬ কোটি ডলারের রপ্তানি হয়েছে; এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, রপ্তানির অর্ডার বাড়লেও উৎপাদন ব্যয়ের চাপ রপ্তানিকারকদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মূল্যের প্রতিযোগিতা বজায় রাখা এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বেপজায় শতকোটি টাকা বিনিয়োগ করবে লিজ টোব্যাকো
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রথমবারের মতো একটি মেশিন বা যন্ত্র তৈরির কারখানা স্থাপন হতে চলেছে। কারখানাটিতে বিদেশে রপ্তানির উদ্দেশে তামাক ও সিগারেট তৈরির যন্ত্র তৈরি করা হবে।
এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) সঙ্গে চুক্তি করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ও সিঙ্গাপুরের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান লিজ টোব্যাকো মেশিনারি কোম্পানি। আজ সোমবার রাজধানীর গ্রিন রোডে অবস্থিত বেপজার নির্বাহী দপ্তরে এ চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে বেপজা।
বেপজা জানায়, এই চুক্তি বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রথম কোনো যন্ত্র তৈরির কারখানা স্থাপনের পথকে সুপ্রশস্ত করেছে। কারখানা স্থাপনে প্রতিষ্ঠানটি ৮৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ১০১ কোটি ৫০ লাখ ৪০ হাজার টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। এতে কর্মসংস্থান হবে ৯২ জন বাংলাদেশি নাগরিকের।
বেপজার সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন) মো. আশরাফুল কবীর ও লিজ টোব্যাকো মেশিনারি কোম্পানির চেয়ারম্যান লি মেং নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
অনুষ্ঠানে বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান বলেন, বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রথম যন্ত্র উৎপাদনকারী এই প্রতিষ্ঠানটি বেপজার রপ্তানিমুখী শিল্পের বৈচিত্রায়ণের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। অন্যান্য রপ্তানিমুখী শিল্প খাতের প্রসারে সহায়তা করতে আমরা আরও যন্ত্রপাতি উৎপাদনকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগকে স্বাগত জানাচ্ছি।
লিজ টোব্যাকো মেশিনারি কোম্পানির চেয়ারম্যান লি মেং জানান, তাঁদের প্রতিষ্ঠানটি যন্ত্রপাতি উৎপাদনে দক্ষ একটি কর্মী বাহিনী তৈরিতে সাহায্য করবে, যা এ দেশের শিল্প খাতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বেপজার সদস্য মো. ইমতিয়াজ হোসেন ও আ ন ম ফয়জুল হক; নির্বাহী পরিচালক মো. তানভীর হোসেন, মো. তাজিম-উর-রহমান, এ এস এম আনোয়ার পারভেজ প্রমুখ।