পুঁজিবাজার
জরিমানার হিড়িক, ইতিবাচক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় নেতিবাচক গুঞ্জনে অস্থির পুঁজিবাজার

বাংলাদেশের পুঁজিবাজার দেশের অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত, বর্তমানে বিভিন্ন অনিয়ম ও শৃঙ্খলা লঙ্ঘনের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার আরোপিত জরিমানার কারণে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। শেয়ারবাজারে স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে জরিমানার ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না। তবে, এ ধরনের জরিমানার অর্থনৈতিক প্রভাব এবং এর ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতার অভাব অনেক প্রশ্ন তৈরি করেছে। বিনিয়োগকারীরা একদিকে নিয়ম ভঙ্গকারীদের শাস্তি দেওয়ার পক্ষে থাকলেও, অন্যদিকে বাজারের সামগ্রিক উন্নতি নিশ্চিত করার আগে এ ধরনের পদক্ষেপকে তারা অযৌক্তিক বলে মনে করছেন।
পুঁজিবাজারে জরিমানা আরোপের প্রধান উদ্দেশ্য হলো শেয়ার লেনদেন ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। আর্থিক প্রতিবেদনে গরমিল, শেয়ার কারসাজি এবং বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণার মত অনিয়মের ক্ষেত্রে জরিমানা আরোপ একটি প্রচলিত পদ্ধতি। সাম্প্রতিককালে বেশ কিছু লিস্টেড কোম্পানি সময়মতো আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ না করায় কিংবা ভুল তথ্য প্রদান করাসহ নানাবিধ অনিয়মের কারণে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তাদের জরিমানা করেছে। এছাড়াও অনিয়ম, শেয়ার কারসাজি ও বাজার নিয়ন্ত্রণে বাধা সৃষ্টি করার অভিযোগে বেশ কিছু বিনিয়োগকারী এবং ব্রোকার হাউজকে জরিমানা করেছে, যা চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে অব্যাহত রয়েছে।
পুঁজিবাজারে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার সৎ প্রচেষ্টায় প্রতিনিয়ত জরিমানা করার ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিশেষভাবে লক্ষণীয়। অনেকে মনে করছে, এটি বাজারে শৃঙ্খলা আনতে একটি কার্যকর উপায়, কারণ এটি অনিয়মকারী কোম্পানি ও বিনিয়োগকারীদের সতর্কবার্তা প্রদান করছে এবং দীর্ঘমেয়াদে এর ভালো ফল পাওয়া যাবে। অন্যদিকে, অনেক বিনিয়োগকারী এই ধরনের জরিমানার অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারা মনে করেন, জরিমানা করার আগে বাজারের বুনিয়াদী অবস্থা উন্নত করা জরুরি এবং বর্তমানের নিয়মিত জরিমানা বিধান প্রয়োগের ফলে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে, যার ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা তাৎক্ষনিক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তবে, অনিয়মে নিমজ্জিত কোম্পানিগুলো সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মত তাৎক্ষনিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে না, তারা জরিমানার বিপক্ষে আপীল করার সুযোগ পাচ্ছে।
কঠোর হস্তে জরিমানা আরোপের ফলে যেমন দীর্ঘমেয়াদী শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব, তেমনি পুঁজিবাজারে একধরনের আস্থার সংকট তৈরি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। অনেক বিনিয়োগকারী তাদের অর্থ বাজারে বিনিয়োগ করতে ভয় পাচ্ছেন, কারণ তারা মনে করছে অনিয়মকারী কোম্পানির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তাদের আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা বেশি। একই সঙ্গে, বাজারে তারল্য সংকটও দিন দিন প্রকট হচ্ছে।
জরিমানার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো এর অর্থ কোথায় এবং কীভাবে ব্যবহৃত হয়। এটি নিয়ে এখনও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে সাধারণতঃ এই টাকা সরকারের কোষাগারে জমা হয় বলেই আমরা জানি। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দাবি উঠেছে যে, এই জরিমানার অর্থ যদি একটি ‘বিনিয়োগকারী সুরক্ষা ফান্ড’ গঠনে ব্যবহৃত হয় তাহলে এটি পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এই ফান্ড থেকে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি পূরণ বা প্রণোদনা দেওয়া যেতে পারে। বিশেষ করে, শেয়ার মূল্যের পতনে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের সহায়তায় এই ফান্ড ব্যবহার করার প্রস্তাব অনেক ইতিবাচক বিশ্লেষকের কাছ থেকে এসেছে।
পুঁজিবাজারের বর্তমান অবস্থা বিবেচনায়, জরিমানা আরোপের পাশাপাশি বাজার উন্নয়নে আরও কিছু উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। যেমন: (ক) স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করণ- বিএসইসি এবং সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর কাজের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে এবং উন্মুক্ত তথ্য বাতায়ন থাকতে হবে। (খ) বাজারের বুনিয়াদি অবস্থা উন্নয়ন- বাজারের বুনিয়াদি সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করতে হবে, যেমন কোম্পানির আর্থিক স্থিতিশীলতা, শেয়ার বাজারের তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য সঠিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। (গ) প্রণোদনা ব্যবস্থা চালু- বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে বাজারে একটি প্রণোদনা তহবিল গঠন করা যেতে পারে, এতে নতুন বিনিয়োগকারী বাজারে আসতে উৎসাহিত হবে। (ঘ) শাস্তি আরোপের বিকল্প ব্যবস্থা- শুধুমাত্র জরিমানা নয় বরং অনিয়মকারী কোম্পানি বা ব্যক্তিকে বাজার থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে তাদের কার্যক্রম সীমিত করার মতো বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে এবং অভিযুক্তকে জেল প্রদানও করা যেতে পারে।
পুঁজিবাজারে জরিমানা একটি শৃঙ্খলা রক্ষার হাতিয়ার হলেও এর প্রয়োগ ও ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করা জরুরি। বাজারের বুনিয়াদি সমস্যাগুলোর সমাধান এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরানো ছাড়া এ ধরনের শাস্তিমূলক পদক্ষেপ দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর হলে স্বল্প মেয়াদে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছে। বিনিয়োগকারী সুরক্ষা ফান্ড গঠন এবং প্রণোদনা তহবিল চালুর মতো উদ্যোগ বাজারকে নতুন উদ্যম প্রদান ও আরও শক্তিশালী করতে পারে। পুঁজিবাজারের সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে উৎকৃষ্ট অবদান রাখার লক্ষ্যেই নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোকে একযোগে কাজ করতে হবে।
মো. সাইফুল ইসলাম (পিপন)
পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী।

পুঁজিবাজার
এনসিসি ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালকের শেয়ার বিক্রয়

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান এনসিসি ব্যাংক পিএলসির এক উদ্যোক্তা পরিচালক পূর্বঘোষণা অনুযায়ী শেয়ার বিক্রয় সম্পন্ন করেছেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালক মো. নুরুন নেওয়াজের নিকট কোম্পানিটির ২ কোটি ৬২ লাখ ০৭ হাজার ৩৩৬টি শেয়ার ছিলো। এরমধ্যে থেকে তিনি ৩০ লাখ শেয়ার বিক্রয় সম্পন্ন করেছেন।
বর্তমান বাজার মূল্যে ব্লক মার্কেটে উল্লেখিত পরিমান শেয়ার বিক্রয় করেছেন এই উদ্যোক্তা। এরআগে গত ২০ মে শেয়ার বিক্রয়ের ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।
এসএম
পুঁজিবাজার
ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্সের ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন করা হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, কোম্পানিটির ক্রেডিট রেটিং নির্ণয় করেছে আর্গুস ক্রেডিট রেটিং সার্ভিসেস লিমিটেড। কোম্পানিটির দীর্ঘমেয়াদে ‘এএএ’ এবং স্বল্প মেয়াদে ‘এসটি-১’রেটিং হয়েছে।
কোম্পানির ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত ও চলতি হিসাববছরের সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদেন এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্যের ভিত্তিতে এ রেটিং নির্ণয় করা হয়েছে।
এসএম
পুঁজিবাজার
নর্দার্ণ জুটের সর্বোচ্চ দরপতন

ঈদুল আজহার ছুটি পূর্ববর্তী শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির মধ্যে ৫৫টি কোম্পানির শেয়ার কমেছে। এদিন দরপতনের শীর্ষে উঠে এসেছে নর্দার্ণ জুট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড।
ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, বুধবার (৪ জুন) কোম্পানির শেয়ার দর আগের দিনের চেয়ে ৭ টাকা ৫০ পয়সা বা ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ কমেছে।
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা পিপলস লিজিংয়ের শেয়ার দর আগের দিনের চেয়ে ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ কমেছে আর তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা সাফকো স্পিনিংয়ের দর কমেছে ৩ দশমিক ১৫ শতাংশ।
তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে- গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ফনিক্স ইন্স্যুরেন্স, সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্স, পপুলার লাইফ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, গ্রীণডেল্টা মিউচুয়াল ফান্ড, বে লিজিং এবং ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড।
এসএম
পুঁজিবাজার
দর বৃদ্ধির শীর্ষে সোনারগাঁও টেক্সটাইল

ঈদুল আজহার ছুটি পূর্ববর্তী শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৭৭টির শেয়ারদর বেড়েছে। এর মধ্যে দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে সোনারগাঁও টেক্সটাইল লিমিটেড।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, বুধবার (০৪ জুন) ডিএসইতে কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে ৩ টাকা ১০ পয়সা বা ৯ দশমিক ৬২ শতাংশ।
দর বৃদ্ধির দ্বিতীয় স্থানে থাকা এস.আলম কোল্ড রোল্ডের শেয়ার দর ৯ দশমিক ২৭ শতাংশ বেড়েছে। আর তৃতীয় স্থানে থাকা তিতাস গ্যাসের দর বেড়েছে ৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
এদিন দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসা অপর কোম্পানিগুলো হলো- সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স, এম.এল ডায়িং, এইচ.আর টেক্সটাইল, শাইনপুকুর সিরামিক, এপেক্স ট্যানারি, এমবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং লাভেলো আইসক্রিম।
এসএম
পুঁজিবাজার
লেনদেনের শীর্ষে ব্র্যাক ব্যাংক

ঈদুল আজহার ছুটি পূর্ববর্তী শেষ কার্যদিবসে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি। ডিএসই সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, আজ বুধবার (০৪ জুন) কোম্পানিটির ২২ কোটি ২৮ লাখ ৯২ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে লাভেলো আইসক্রিম। কোম্পানিটির আজ শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ৭৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার।
আর ১০ কোটি ৫৮ লাখ ১৫ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন নিয়ে শীর্ষ তালিকার তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে ফাইন ফুড।
লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে- স্কয়ার ফার্মা, মিডল্যান্ড ব্যাংক, সি পার্ল বিচ, উত্তরা ব্যাংক, বিচ হ্যাচারি, মালেক স্পিনিং এবং বিএটিবিসি।
এসএম