রাজনীতি
আগরতলা অভিমুখে লংমার্চ, পথে পথে নেতাকর্মীদের ঢল

ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার প্রতিবাদে এ লংমার্চ করছে বিএনপি ৩ সংগঠন। জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের লংমার্চের গাড়ি বহরকে শুভেচ্ছা জানাতে সড়কের দুই পাশে বিএনপির নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে। নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের উপস্থিত দেখা গেছে।
আজ বুধবার সকাল ৯টায় রাজধানীর নায়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সামনে থেকে লংমার্চ শুরু হয়। লংমার্চ শুরুর আগে নয়াপল্টনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন-মহাসচিব রুহুল কবির।
গাড়ি বহর ঢাকা থেকে বের হওয়ার পর থেকে সড়কের দুই পাশে নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি দেখা যায়। তারা হাত নেড়ে, ফুল ছিটিয়ে গাড়ি বহরকে স্বাগত জানাচ্ছেন। এ সময়; দিল্লি না ঢাকা- ঢাকা ঢাকা, ভারতের দালালেরা- হুঁশিয়ার সাবধান’ এমন নানা স্লোগান দেন তারা। নেতাকর্মীদের হাতে শোভা পাচ্ছে নানা স্লোগান সংবলিত ফেস্টুন। জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উড়াচ্ছেন।
ভৈরব মোড় পথসভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে থাকবেন স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এস এম জিলানী, সভাপতিত্ব করবেন যুবদল সভাপতি মোনায়েম মুন্না। আখাউড়ায় সমাবেশের মধ্যে দিয়ে লংমর্চ শেষ হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে থাকবেন যুবদল সভাপতি মোনায়েম মুন্না, সভাপতিত্ব করবেন স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এস এম জিলানী।
একই ঘটনায় গত ৮ ডিসেম্বর ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনার অভিমুখে পদযাত্রা করে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। নয়াপল্টন থেকে পদযাত্রাটি রামপুরা গেলে আটকে দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে একটি প্রতিনিধি দল ভারতীয় হাইকমিশনারে গিয়ে স্মারকলিপির দেন।
গত ২ ডিসেম্বর ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় অবস্থিত সহকারী হাইকমিশনে হামলা হয়। হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামের একটি সংগঠনের সমর্থকরা এ হামলা চালায়। হামলাকারীরা সহকারী হাইকমিশনের ভেতরে ঢুকে বাংলাদেশের পতাকা নামিয়ে আগুন দেয় ও ভাঙচুর চালায়।
এ ঘটনায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে বলেন, সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে যে হামলা হয়েছে, তা পূর্বপরিকল্পিত বলে আমাদের ধারণা। সহকারী হাইকমিশনের ভেতরে ঢুকে বাংলাদেশের পতাকা নামিয়ে তাতে আগুন দেয়া এবং ভাঙচুর করা ভিয়েনা কনভেনশনের সুস্পষ্ট বরখেলাপ।
কাফি

রাজনীতি
নির্বাচনের আগে অবশ্যই গণহত্যাকারীদের বিচার করতে হবে: ড. হেলাল উদ্দিন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, নির্বাচনের আগে অবশ্যই গণহত্যাকারীদের বিচার করতে হবে; তাদের বিচার ব্যতীত দেশের নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
বুধবার (১৬ জুলাই) শাহজাহানপুর পশ্চিম থানা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে জাতীয় সমাবেশের প্রচারাভিযানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে শাহজাহানপুর পশ্চিম থানা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে প্রচারাভিযান পরিচালনা করা হয়।
মিছিল শেষে এক সংক্ষিপ্ত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, গোপালগঞ্জে জুলাই যোদ্ধাদের উপর যে নেককারজনক হামলা হয়েছে এটার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, জুলাই যোদ্ধারা সারা দেশব্যাপী যে সমস্ত কর্মসূচি পালন করছে তা প্রশাসনকে জানিয়ে পালন করা হচ্ছে এরপরও প্রশাসন তাদের জন্য নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার সন্ত্রাসী বাহিনী এখনো আগের মতই সংসার সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ এর নেতাকর্মীরা তাদের কৃতকর্মের জন্য কোন অনুশোচনা করেনি। বরং তারা আগের মতই ফুল এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের লোকেরা এখনো তাদের অভ্যাস অনুযায়ী নিরীহ মানুষের উপর সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করে যাচ্ছে। এই সন্ত্রাসী বাহিনীদেরকে যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তবে তারা গর্তের মধ্যে লুকিয়ে থেকে মাঝেমধ্যেই তারা মাথা চারা দিয়ে উঠবে। এবং নিরীহ মানুষের উপর হামলা করে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে যাবে। জুলাই যোদ্ধাদের উপর তারা যেভাবে নির্যাতন করেছে তাতে প্রমাণিত হয় আওয়ামী লীগ একটি রাজনৈতিক দলের নাম ছিল না বরং একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনীর নাম ছিল।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান অন্তবর্তী সরকার ইতিমধ্যেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে তবে তবে এই সন্ত্রাসী দলকে শুধু নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেই হবে না বরং তাদের বিরুদ্ধে বিচার পরিচালনা করে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে বলে তিনি জানান। একই সাথে আওয়ামী লীগকে চিরদিনের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে বলে সরকারের প্রতি আহবান জানান।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ জামাত ইসলামী বারবার দাবি জানিয়ে আসছে কোন হত্যাকারীদের বিচার করতে হবে তাদের বিচার করা ব্যতীত দেশে নির্বাচনের সুস্থ পরিবেশ ফিরে আসবেনা। আজ গোপালগঞ্জে জুলাই যোদ্ধাদের উপর হামলার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে যে সারাদেশে আওমী সন্ত্রাসীরা এখনো সরিয়া ছিটিয়ে রয়েছে। আজ শুধু গোপালগঞ্জের সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার হিমশিম খাচ্ছে নির্বাচনের সময় সারা দেশের সন্ত্রাসীদের সরকার কিভাবে নির্বাচিত নিয়ন্ত্রণ করবে তা নিয়ে জনগণের মনে প্রশ্ন রয়েছে এজন্য আমি মনে করি নির্বাচনের আগে অবশ্যই সন্ত্রাসীদের গণহত্যার দায়ে বিচার করতে হবে।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরা ও শাহজাহানপুর পশ্চিম থানা আমীর সরোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পথসভায় অন্যান্যের মধ্যে শাহজাহানপুর পশ্চিম থানার সেক্রেটারি মো.আব্দুল্লাহিল কাফি মামুন, শাহজাহানপুর পশ্চিম থানার সাবেক আমীর মো. গিয়াস উদ্দিন, ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ সহ থানা কর্মপরিষদের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদ/কাফি
রাজনীতি
হামলার প্রতিবাদে দেশব্যাপী এনসিপির বিক্ষোভ কর্মসূচি আজ

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির পালন করবে দলটি।
বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে খুলনা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পূর্বঘোষিত পদযাত্রা কর্মসূচি যথারীতি পালন করা হবে। তবে মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে বৃহস্পতিবারের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। এসব জেলায় পরে নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে গোপালগঞ্জে হামলার অভিযোগ তুলে নাহিদ ইসলাম বলেন, মাসব্যাপী পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবেই এনসিপি গোপালগঞ্জে পদযাত্রা আয়োজন করে। যথাযথভাবে প্রশাসনকে জানিয়ে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করে কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া হলেও আওয়ামী লীগ ও ‘মুজিববাদী’ সমর্থকেরা পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘গোপালগঞ্জে অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে এনসিপি দেখিয়ে দিয়েছে, আওয়ামী লীগের বাইরেও অন্য রাজনৈতিক দল সেখানে কর্মসূচি পালন করতে পারে।’
হামলার বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সমাবেশের আগে ও পরে একাধিকবার আমাদের ওপর হামলা হয়েছে। এতে প্রমাণিত, হামলাটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট বাহিনী যেভাবে সহযোগিতা করেছে, সে জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’
গোপালগঞ্জে হামলার ঘটনায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দায়ীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।’
প্রসঙ্গত, গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রা চলাকালে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেছে দলটি। ওই ঘটনার পর এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা বুধবার সন্ধ্যায় খুলনায় পৌঁছান।
রাজনীতি
এনসিপির কর্মসূচিতে হামলাকারীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার দাবি ছাত্রশিবিরের

গোপালগঞ্জে বুধবার (১৬ জুলাই) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রায় হামলা চালিয়েছে পতিত স্বৈরাচারের দোসররা। এরই প্রতিবাদে এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিক্ষোভ মিছিল করে বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির। বিক্ষোভে ছাত্রশিবির নেতারা এই ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হামলাকারীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানান।
বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে থেকে শুরু হয়। পরবর্তীতে এটি রাজু ভাষ্কর্য ঘুরে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে ভিসি চত্বর পার হয়ে আবার রাজু ভাষ্কর্যে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
বিক্ষোভে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ বলেন, ক্যান্সার যেভাবে মানুষের শরীরে নিরব ঘাতক হিসেবে থাকে, আওয়ামী লীগও এভাবে লুকিয়ে আছে। গত বছরের ষোল জুলাই তারা আবু সাইদ, ওয়াসিম, শান্তদের শহিদ করেছে। এর এক বছরের মাথায় তারা জুলাই যোদ্ধাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা গোপালগঞ্জের সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার করুন। আপনারা আওয়ামী লীগকে উচিত শিক্ষা দিতে না পারলে জনগণ আপনাদের উচিত শিক্ষা দেবে।
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম বলেন, আমরা আশা করেছিলাম জুলাইয়ের পরে যে গোষ্ঠী গত ১৬ বছর সন্ত্রাস চালিয়েছে, তাদের বিতাড়িত করা হবে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, তারা গোপালগঞ্জে ঘাঁটি গেড়ে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা স্পষ্ট করে বলছি, জুলাইয়ের এই বাংলাদেশে খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের কোন জায়গা হবে না।
তিনি আরো বলেন, জুলাই রক্তের উপর আপনারা (অন্তবর্তীকালীন সরকার) ক্ষমতায় বসেছেন। আপনারা এখানে ভোগ বিলাসের জন্য বসেননি। আপনারা যদি জুলাইয়ের সাথে গাদ্দারি করেন, খুনি হাসিনার যেই পরিণতি হয়েছিল তার চাইতে খারাপ পরিণতি আপনাদের হবে।
ঢাকা মহানগর উত্তরের শিবির সভাপতি রেজাউল করিম শাকিল বলেন, বাংলাদেশের সমগ্র আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের সকল সন্ত্রাসীরা গোপালগঞ্জে আশ্রয় নিয়েছে। আওয়ামী লীগ জেলাটিকে (গোপালগঞ্জ) নিজেদের সন্ত্রাসীদের ক্যান্টনমেন্টে পরিণত করেছে।গোপালগঞ্জকে মনে হচ্ছে বাংলাদেশের কোন জেলা নয়। গোপালগঞ্জকে মনে হচ্ছে একখন্ড ছোট্ট দিল্লি।
এসময় তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, অবিলম্বে গোপালগঞ্জের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। নয়তো গোপালগঞ্জের যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিরোধী এই অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে সমগ্র বাংলাদেশের ছাত্রজনতা নিয়ে মার্চ করতে বাধ্য হব।
ঢাকা মহানগর পূর্বের সভাপতি আসিফ আব্দুল্লাহ বলেন, জুলাইয়ের এক বছর পার হলেও বাংলাদেশ এখনো ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি। এখনো জুলাই যোদ্ধাদের ওপর হামলা হচ্ছে। আমরা গোপালগঞ্জে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার নিন্দা জানাচ্ছি। একইসাথে, তাদের দ্রুত গ্রেফতারে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ বলেন, আমরা কি হাসবো না কাঁদব মাঝে মাঝে তা খুঁজে পাই না। সারাদেশে যখন আওয়ামী লীগের ৩০০ এমপি পালিয়ে যায়, গোপালগঞ্জের গুটি কয়েকের লাফালাফি দেখে আমাদের মাঝে মাঝে হাসি পায়। আবার দুঃখ হয়, ইন্টারিম গভর্নমেন্টের এই ব্যর্থতা দেখে। তিনি অভিযোগ করেন, ইন্টেরিম সরকারের প্রত্যেকটা প্রশাসন প্রত্যেকটা ক্যাটাগরিতে চরমতম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের ক্যান্টনমেন্ট খ্যাত সকল সন্ত্রাসীদের আশ্রয়দাতা যারা, গোপালগঞ্জে তারা আশ্রিত ছিল। তারা সবাই মিলে সন্ত্রাসী হামলা করেছে। ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট এখানেও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা সুস্পষ্ট কন্ঠে ইন্টেরিম গভর্নমেন্টকে বলতে চাই, আপনারা যদি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হন আল্লাহর ওয়াস্তে দায়িত্বটা ছেড়ে দেন। বাংলাদেশে অসংখ্য তরুণ-যুবক আছে এই দায়িত্ব পালনের জন্য।
রাজনীতি
শহীদ আবু সাঈদেরা ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের সূচনা ঘটায়: আহমদ আবদুল কাদের

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, পতিত ফ্যাসিস্ট অপশক্তি ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই আবু সাঈদসহ ৬ জন ছাত্রকে গুলি করে হত্যা করলেও শহীদেরা মরেনি। শহীদ আবু সাঈদসহ ৬ শহীদের রক্তের বিনিময়ে সেদিন গণঅভ্যুত্থানের বার্তা অগ্নিস্ফুলিঙ্গের মত সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ছাত্র-জনতা রাজপথে নেমে আসে। মূলত শহীদ আবু সাঈদেরা ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের সূচনা ঘটায়। ৫ আগস্ট জাতি ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্তিলাভ করে। আমরা মহান আল্লাহর দরবারে সকল শহীদের মাগফিরাত কামনা করছি। আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারী যোদ্ধাদের সুস্থতা ও স্বাভাবিক জীবন কামনা করছি।
বুধবার (১৬ জুলাই) জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত সকল শহীদের মাগফিরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনায় আয়োজিত দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যে অন্যায় ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে জুলাই শহীদেরা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন তা এখনো বিলোপ হয়নি। যেভাবে দেশপ্রেমিক শক্তির সুদৃঢ় ঐক্য সেদিন গড়ে উঠেছিল তা দলীয় আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে আজ ধ্বংস হতে চলেছে। অভ্যুত্থানের ১ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত একজন শহীদের খুনের বিচার কার্য সম্পন্ন হয়নি। জুলাই মাস শেষ হতে চললেও জুলাই সনদ ঘোষণা ও মৌলিক সংস্কারে ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারেনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। পরাজিত শক্তি এখনো ওৎপেতে আছে। জাতিসংঘ সহ পশ্চিমা শক্তি নতুন করে বাংলাদেশের প্রতি কৌতুহলী হয়ে উঠছে। দেশের ধর্মীয় মূল্যবোধ ও স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের স্বার্থে এগুলো ভালো লক্ষণ নয়। আমরা এসবের অবসান চাই। গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চাই। খেলাফত মজলিস এই লক্ষ্যে কাজ করছে।
এদিন বাদ জুমআ বায়তুল মোকাররম উত্তর চত্বরে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আজিজুল হকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে বক্তব্য রাখেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন, যুগ্ম-মহাসচিব ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক আবদুল জলিল, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম, কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট শায়খুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য হাজী নুর হোসেন, আমীর আলী হাওলাদার, শ্রমিক মজলিস সাধারণ সম্পাদক এইচ. এম এরশাদ, মহানগরী দক্ষিণ সহ-সাধারণ সম্পাদক এইচ. এম হুমায়ুন কবির আযাদ, কাজী আরিফুর রহমান, মাওলানা সরদার নেয়ামত উল্লাহ, সেলিম হোসাইন, মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, শাহাবুদ্দিন, ইসলামী যুব মজলিস ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মনসুরুল আলম, ছাত্র মজলিস মহানগরী দক্ষিণ সভাপতি মুহাম্মদ সাইফুদ্দিন প্রমুখ।
রাজনীতি
এনসিপির কর্মসূচিতে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি গণঅধিকার পরিষদের

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পূর্বঘোষিত ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে গণঅধিকার পরিষদ। সেই সঙ্গে হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ।
আজ বুধবার (১৬ জুলাই) গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর এবং সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, গণঅভ্যুত্থানের পর এনসিপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীদের ককটেল বিস্ফোরণ, গুলি বর্ষণ অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক।
নেতৃদ্বয় বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পরও নিষিদ্ধ ঘোষিত এই দলটি দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্টের চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। গোপালগঞ্জে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলা এবং বিস্ফোরণের ঘটনা এর জ্বলন্ত প্রমাণ।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, দেশে যখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটেছে, তখন নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন স্থানে বিশৃঙ্খলা ও আতঙ্ক সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এসব সন্ত্রাসী কার্যকলাপ রাজনৈতিক পরিবেশকে বিষাক্ত করে তুলছে, যা অনতিবিলম্বে বন্ধ না করলে এর পরিণতি হবে ভয়াবহ।
নেতৃদ্বয় অবিলম্বে গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিতে হামলাকারী নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার এবং তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।