রাজনীতি
জেলা বিএনপির সভাপতির দখলদারিত্ব-প্রভাব বিস্তারে আতঙ্কিত চাঁদপুরবাসী

৫ই আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে হাসিনা ভারত পালানোর পরবর্তি সময়ে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতির শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের দখলদারিত্ব ও প্রভাব বিস্তারে বেপরোয়া হয়ে উঠার অভিযোগ রয়েছে।ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্ব নিয়ে বিএনপির কেন্দ্র থেকে সম্প্রতি শোকজও করা হয় চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি মানিককে। সম্প্রতি আলজাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সামি চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতির অনৈতিক দখলদারিত্ব নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে। পরবর্তীতে বিএনপির কেন্দ্র থেকে শেখ ফরিদ আহমেদকে শোকজ করা হলে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেন তিনি।সম্প্রতি চাঁদপুর জেলা বিএনপির দলীয় অফিসের জন্য একটি পরিবারের বাড়ি দখলেরও অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে জাতীয় প্রেসক্লাবে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মানববন্ধনও করেছে মীর আহমদ আলী নামের চাঁদপুরের একটি পরিবার। এছাড়াও সম্প্রতি চাঁদপুর সদর হাসপাতালে দালাল চক্র ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী জনতার মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরবর্তীতে দালাল চক্রের পক্ষ নিয়ে সিভিল সার্জনকে হেনস্থা করার অভিযোগে জেলা বিএনপির সভাপতি সমালোচনার মুখে পড়েন। এ নিয়ে চাঁদপুর শহরে উত্তেজনা বিরাজ করে। এসব বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের ফলে খোদ চাঁদপুর জেলা বিএনপির মধ্যেই ভিবক্তি দেখা দিয়েছে।
সূত্র জানায়, জেলা বিএনপির সভাপতির দখল, লুটপাট ও নৈরাজ্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লেখা-লেখির ফলে চাঁদপুর জেলা বিএনপির প্রকাশনা সম্পাদক কাজী ইব্রাহিম জুয়েল বহিষ্কার হয়। এর ফলে শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক ও জুয়েল প্রকাশ্যে দ্বন্ধে জড়ায়।
সূত্র মতে, চাঁদপুর জেলা বিএনপি সভাপতির দখল-লুটপাট চাঁদাবাজি ও ভয় ভীতি দেখানোর বিষয় নিয়ে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারকে লিখিত অভিযোগ দেয় জুয়েল। একই সঙ্গে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচী পালনের অনুমতি নেয় সাবেক ছাত্রদল সভাপতি জুয়েল।
এদিকে সোমবার (৯ ডিসেম্বর) প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন এবং সংবাদ সম্মেলনের উদ্যোগ নেয় কাজী ইব্রাহীম জুয়েল। তবে এই প্রতিবাদ কর্মসূচীতে হামলায় আহত হয় অর্ধশত।একই সঙ্গে জুয়েলের বাসা-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও তাঁর মালিকানাধীন পত্রিকা কার্যালয় ভাঙচুর-লুটপাট করে একদল দূর্বৃত্ত।ভুক্তভুগী জুয়েলের দাবি এই হামলার ইন্ধন দিয়েছে চাঁদপুর জেলা বিএনপি সভাপতি মানিক। কারণ হামলার সময় উপস্থিত ছিলেন মানিকের অনুগত চাঁদপুর জেলা ছাত্রদল সভাপতি- সাধারণ সম্পাদকসহ সসস্র সন্ত্রাসীরা।হামলায় কাজী ইব্রাহিমের ছেলেসহ গুরুতর আহত শতাধিক। এসময় বাসা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার, সিসিটিভি ডিভিআর, মূল্যবান জিনিসপত্র ও লগদ টাকা লুট করার অভিযোগ উঠেছে।
সূত্র জানায়, কাজী ইব্রাহীম জুয়েলের বাসা-বাড়ী, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান, হোটেল ও প্রত্রিকা কার্যালয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ব্যাপক হামলা ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। হামলায় উপস্থিত নেতৃত্ব দেয় চাঁদপুর জেলা ছাত্রদল সভাপতি ইমাম গাজী , সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন পাটোয়ারী,সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান সোহাগ। এছাড়াও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা, মেহেদী হাসান শাকিল, চাঁদপুর পৌর ছাত্রদল মামুন খান, চাঁদপুর সরকারি কলেজ সভাপতি সোহেল গাজী, জিসান আহমেদ মুরাদ (সভাপতি থানা ছাত্রদল), পারভেজ খান (সাধারণ সম্পাদক সদর থানা), জুনায়েদ খান (সাবেক সাধারণ সম্পাদক সদর থানা), মাসুদ মাঝি (যুগ্ম আহ্বায়ক স্বেচ্ছাসেবক দল, চাঁদপুর জেলা)। এসময় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের অসংখ্য নেতাকর্মীদেরকে হামলা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট অংশগ্রহণ করতে দেখা যায় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এবিষয়ে ভুক্তভুগী কাজী জুয়েল অর্থসংবাদকে বলেন, গত ১৭ বছর আমি স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসনে নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার হয়েছি। অসংখ্যবার কারাবরণ করেছি। আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং বাড়িতে অসংখ্যবার আওয়ামী সন্ত্রাসীর হামলা ও লুটপাট করেছে। তবুও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি এবং স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে রাজপথ থেকে এক পাও সরে যাইনি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে এবং নির্দেশে রাজপথে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছি। আমার কষ্টে উপার্জিত অর্থ দিয়ে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম। আজকে ছাত্র-জনতার রক্তে অর্জিত নতুন বাংলাদেশে আমার সন্তানকে রক্তাক্ত করা হলো। আমাকে খুন করার চেষ্টা করেছে। এ বিচার আমি মহান আল্লাহর কাছে দিলাম।
এছাড়া আমি দলের পরিক্ষীত কর্মী। আমাকে দলের নেতাকর্মীরা ভালোবাসেন এবং আমি সুনাম ক্ষুন্ন যেন না হয় সেই জন্য জেলা বিএনপি সভাপতি অনৈতিক কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করেছি এটাই আমার অপরাধ। তাই আমার প্রতি ইর্শান্বিত হয়ে তিনি বার বার আমাকে শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমি আমার দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের কাছে এর সঠিক বিচার চাই।’
এ বিষয়ে শান্তিপ্রিয় ও সচেতন চাঁদপুর বাসির দাবি, এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। না হয় চাঁদপুরে বিএনপি জনপ্রিয়তা হ্রাস পেতে থাকবে । পাশাপাশি চাঁদপুরবাসীর জান ও মালের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী এবং পুলিশ বিভাগের হস্তক্ষেপ চাই।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের মুঠো ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোনে সাড়া দেননি। ফলে কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার রবিক উদ্দিন অর্থসংবাদকে বলেন, আমরা সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছি। সঠিক তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তবে এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি।
এদিকে জেলা বিএনপির কয়েকজন নেতা নাম না প্রাকাশ করার শর্তে বলেন, আসলে জুয়েল শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের অন্যায়ের প্রতিবাদ করে দলের ইমেজ রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু মানিক সাহেব তা সহ্য করতে পারেননি। তাই জুয়েলকে দল থেকে বহিস্কারের পথ বেছে নেন। শুধু বহিস্কার করেই ক্ষান্ত হননি এবার তিনি জুয়েলকে প্রাণে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ ব্যাপারে বিএনপির উর্ধ্বতন মহল ব্যবস্থা না নিলে মানিক সাহেব জেলা বিএনপিকে শেষ করে দিবে এতে কোন সন্দেহ নেই। তাই আমরা জেলা বিএনপি সভাপতির অনৈতিক কর্মকান্ডের ব্যাপারে দ্রুত ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য দলের শীর্ষ নেতাদের প্রতি দাবী জানাই।
এদিকে প্রত্যক্ষ দর্শীরা জানান, গতকাল ৯ ডিসেম্বর ইব্রাহীম জুয়েল এর বাসার মূল গেইট ভেঙ্গে হামলাকারী জুয়েলকে ঘেরাও করে হত্যার উদ্দেশ্যে তুলে নেওয়ার চেষ্টা চালায় এবং তার পূর্ব নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলন যেন না করেন তার জন্য হুমকি দেন। এসময় তারা জুয়েলের কাছে সিসি টিভির ডিভিআর ও কম্পিউটার ল্যাপটপ তুলে দেওয়ার দাবী জানায়। এরপর তারা অস্ত্রের মুখে জোর পূর্বক অফিসের সকল কম্পিউটার ও সিসিটিভির ডিভিআর ও ক্যামেরাসহ সব খুলে নিয়ে যায়। তবে ইব্রাহীম কাজী জুয়েলকে পুলিশের সহযোগীতায় নিরাপদে সরিয়ে নেয় উপস্থিত বিএনপির, যুব দল ও ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মীরা।
অপর দিকে ইব্রাহীম জুয়েলকে না পেয়ে তাঁর একমাত্র ছেলে আফতাবকে কাছে পেয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। তার অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক। তাকে প্রথমে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় রেফার করলে তাকে দ্রুত ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তার অবস্থা আসঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন তার পরিবার। এতিকে হামলায় ব্যাবসায়ী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারী এবং সাংবাদিক সহ প্রায় শতাধিক আহত হয়েছে বলে জানা যায়।
এদিকে ছাত্রদলের একটি সূত্র জানায় রবিবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর থেকেই জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদা মানিকের নির্দেশে ছাত্রদল-যুবদলের অসংখ্যা দুর্বৃত্ত ইব্রাহিম জুয়েল এর বাড়িতে হামলার ছক আঁকেন। সেই মোতাবেক পরিকল্পিতভাবেই হামলা চালানো হয়েছে বলে জানান বিএনপি’র একাধিক সূত্র। হামলার সময় পুরো শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয় এবং চাঁদপুর কুমিল্লা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে ৮ ডিসেম্বর রোববার রাত থেকেই ছাত্রদল ও যুবদলের একটি অংশ চাঁদপুর শহর ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি করে। তারা শত শত মোটরসাইকেল চড়ে এবং দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন করে চাঁদপুর শহরের পুরানবাজার, নতুন বাজার এবং ষোলঘর এলাকায় মহড়া দেয়। জনমনে প্রীতি ও এত সৃষ্টি করতে মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। হঠাৎ করেই একেরপর এক ককটেল বিস্ফোরনের আওয়াজে কেঁপে ওঠে পুরো চাঁদপুর শহর। এতে চাঁদপুর কুমিল্লা মহাসড়কে যান চলাচলে ব্যাহত হয়। পরে পুলিশ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে আতঙ্ক সৃষ্টিকারীরা সটকে পড়ে। পরের দিন গতকাল সোমবার সকাল থেকেই তারা চাঁদপুর শহরের পুরান বাজার, নতুন বাজার এবং ষোলঘর এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নেয়। এরপর সন্ধ্যা পর্যন্ত মোটরসাইকেল এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করতে মহড়া দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নির্যাতিত সাবেক কয়েকজন নেতা জানানা, চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদা মানিকের নির্দেশে বিএনপি ছাত্রদল যুবদলের একটি অংশ চাঁদপুর শহর জুড়ে এই তাণ্ডব এবং হামলা চালিয়েছে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর যে সকল সাবেক ছাত্র নেতারা চাঁদপুরে শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের দখল, লুটপাট ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল তাদের টার্গেট করে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

রাজনীতি
সরকারের একটি অংশ স্থিতিশীলতা বিনষ্টের অপচেষ্টা চালাচ্ছে: যুবদল সভাপতি

দেশের রাজনীতিকে অস্থিতিশীল করার জন্য বর্তমান ‘অন্তর্বর্তী সরকারের একটি অংশ’ পরিকল্পিতভাবে অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না।
শনিবার (১২ জুলাই) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। এ সময় যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মোনায়েম মুন্না বলেন, রগ কাটার সংস্কৃতি কার? এটা জনগণ জানে। মিটফোর্ডের ঘটনায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে যেভাবে অপদস্থ করা হয়েছে, তা রাজনৈতিক অপসংস্কৃতি ছাড়া কিছুই নয়। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনার পর এক এনসিপি নেতা আমাদের নেতা ইশরাক হোসেনকে উদ্দেশ্য করে তার ‘লাশ কুকুর দিয়ে খাওয়ানোর’ হুমকি দিয়েছেন। এসব ঘটনা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা ছাড়া এর অন্য কোনো ব্যাখ্যা নেই।
সরকার ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে যুবদল সভাপতি বলেন, আমরা একটি রাজনৈতিক দল, আমাদের নিজস্ব সাংগঠনিক কাঠামো রয়েছে। আমরা কোনো অপরাধীকে আড়াল করি না। আমরা যা যা করণীয়, সংগঠনের নিয়ম অনুযায়ী তা গ্রহণ করছি। কিন্তু সরকার কী করছে?
তিনি বলেন, সরকারের দায়িত্ব ছিল-দেশের বিভিন্ন স্পর্শকাতর এলাকাগুলো চিহ্নিত করে সেখানে আগে থেকেই পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। কিন্তু তা না করে সরকার এক ধরনের ‘দর্শকের’ ভূমিকা পালন করছে।
মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে প্রকাশ্যে ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে পাথর দিয়ে যুবদল কর্মী সোহাগকে হত্যা করা হয়েছে, যা দেখে পুরো জাতি বিস্মিত। এমন নৃশংসতা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
তিনি দাবি করেন, এই ঘটনায় যুবদল পাঁচজনকে আজীবনের জন্য সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে। তবে পুলিশ যাদের বিরুদ্ধে ভিডিও ফুটেজে স্পষ্ট প্রমাণ পেয়েছে, তাদের মামলার প্রধান আসামি করা হয়নি এবং তারা এখনও গ্রেপ্তার হয়নি।
মোনায়েম মুন্না বলেন, এই হত্যাকাণ্ডে সোহাগের মেয়ে জানিয়েছেন-মামলার এজাহারে তিনজন মূল খুনির নাম বাদ দিয়ে, নিরপরাধ তিনজনকে জড়ানো হয়েছে। এতে বোঝা যায়, কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মূল আসামিদের আড়াল করছে।
ঘটনাটি বুধবার (৯ জুলাই) ঘটলেও তা শুক্রবার (১১ জুলাই) ব্যাপক প্রচার পেল কেন? আগে কেন প্রচার হয়নি? এখানে কোনো উদ্দেশ্য লুকিয়ে আছে কি না, সেটিও খতিয়ে দেখা জরুরি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি জানান, গত এক বছরে বিএনপির কেউ কোনো অন্যায় করলে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতার জন্যও বলা হয়েছে।
তবে, প্রশাসন বরাবরের মতো এবারও নির্বিকার ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বর্তমান পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই নিষ্ক্রিয়তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। প্রয়োজনে তারা প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বলেও জানান মোনায়েম মুন্না।
কাফি
রাজনীতি
গণসংস্কৃতি পরিষদের নতুন কমিটি ঘোষণা

গণসংস্কৃতি পরিষদের ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি আগামী ৬ মাসের জন্য ঘোষণা করা হয়েছে। এতে আহ্বায়ক আহসান হাবিব ও রোমানকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকেলে সঙ্গে সেগুনবাগিচায় কচিকাঁচার মেলায় গণসংস্কৃতি পরিষদের কমিটি ঘোষণা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এই কমিটি ঘোষণা করেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুলহক নুর।
যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে রয়েছেন, সঙ্গীতা হক, এন এইচ কানন, ফয়সাল আহমেদ, জুবায়ের আহমেদ মো. আবদুল আজিজ, মাহফুজ নুসরাত মোনা, মো. মুসা মিয়া। যুগ্ম সদস্য সচিব করা হয় নিলয় হোসেন রবিন, তারেক হাসান, মাহবুবুর রহমান জসিম, মো. মাসুদ রানা সুমন, রবিউল ইসলাম শুভ, বনি আমিন সিফাত, আরবি আহমেদ শাওন।
কার্যকরী সদস্য করা হয় সুরাইয়া আক্তার আন্তা, নাঈম হোসেন সংগ্রাম, সারমিন জাহান, সাহেব আলী, হাসিব মল্লিক, জহিরুল ইসলাম, মো. নুরুজ্জামান, খান শাহরিয়ার ফয়সাল, নাঈম হোসেন, মুনিয়া মুন, রেশমা আক্তার, সুমন শেখ, অহিদুল ইসলাম, মো. শাহ-আলম।
এছাড়া, ৫ জনকে গণসংস্কৃতি পরিষদের উপদেষ্টা করা হয়। তারা হলেন- হাবিবুর রহমান রিজু, আরিফুর রহমান, হাবিবুর রহমান, আবু হানিফ, এড্যা সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকী।
কাফি
রাজনীতি
বিএনপি জুলাই অভ্যুত্থানকে খাটো করে দেখতে চায় না: মির্জা ফখরুল

জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে খাটো করে দেখতে চায় না বিএনপি। এই ঐতিহাসিক ঘটনাকে মূল্যায়ন করেই দলটি জুলাই সনদের মতামত গতকাল বুধবার রাতে সরকারের কাছে জমা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিইউজে ও বিএফইউজে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে। আমরা সংস্কারকে স্বাগত জানাই। কিন্তু কেউ যদি বলে বিএনপি সংস্কারের বাধা দিচ্ছে, তাহলে সেটা ভুল ব্যাখ্যা। গত ১৭ বছরে প্রায় ৬০ লাখ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা হয়েছে, ২০ হাজারের মতো নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এই বাস্তবতাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া যায় না। যারা এই বাস্তবতা অস্বীকার করছেন, তারা গণতন্ত্রের দিকেই চোখ বন্ধ করে আছেন।
তিনি বলেন, দেশের জনগণ নির্বাচন ও ভোটাধিকারের জন্য প্রাণ দিয়েছে। কাজেই আমি মনে করি, নির্বাচন নিয়ে আর কোনো সমস্যা হবে না। সরকার ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য যে নির্দেশনা দিয়েছে সেটা প্রশংসার দাবিদার। আমরা আশাবাদী, সামনে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা হবে, যেখানে দেশের মানুষ সত্যিকার অর্থে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।
সীমান্তে হত্যা ও পুশইনের বিষয়ে ফখরুল বলেন, সীমান্তে প্রতিনিয়ত মানুষ হত্যা হচ্ছে। পুশইন চলছে। এটা কোনোভাবেই হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। সরকারকে এই বিষয়ে ভারতের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে দরকষাকষি করতে হবে।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলমের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ প্রমুখ।
কাফি
রাজনীতি
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না: নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, সংস্কার ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না। ছাত্র জনতার আত্মত্যাগের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হয়েছে। এই দেশে আর কোনো ফ্যাসিবাদী দোসরদের জায়গা দেওয়া হবে না।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে মাগুরা শহরের ভায়না মোড়ে পদযাত্রা শেষে এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে নাহিদ ইসলাম বলেন, আপনাদের সন্তানরা জীবন দিয়ে ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটিয়েছে। আমরা আর কোনো দখলদার, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজদের হাতে এই দেশের শাসনভার তুলে দেব না। ভিনদেশী প্রভুদের ইশারায় যারা কথা বলে, আমরা তাদের রাজনৈতিকভাবে পরাজিত করব।
নির্বাচন ও সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জুলাই সনদ ঘোষণর আগে কোনো নির্বাচন ছাত্র জনতা মেনে নেবে না। আগে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচার হতে হবে। খুনিদের বিচার, সংস্কার ও জুলাই সনদ ঘোষণার আগে নির্বাচনের পায়তারা করা হলে আবারও গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
এর আগে বেলা দেড়টার দিকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি ও নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে মাগুরায় পদযাত্রা শুরু করে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। মাগুরা শহরের উপজেলা চত্বর থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। পদযাত্রাটি শহরের চৌরঙ্গী মোড় হয়ে ঢাকা রোড ঘুরে ভায়না মোড়ে এসে পথসভায় মিলিত হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী, আকতার হোসেন, সারজিস আলম, ডা. তাসনীম জারা, সামান্তা শারমিন, যুগ্ম সদস্য সচিব তারেক রেজা প্রমুখ।
পরে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের বহর নড়াইলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এর আগে ঝিনাইদহ সফর শেষে বেলা ১টা ৩০ মিনিটের দিকে মাগুরা পৌঁছায় এনসিপি নেতাদের বহর।
কাফি
রাজনীতি
জামায়াতের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ডিএমপির মতবিনিময়

আগামী ১৯ জুলাই ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিতব্য ঐতিহাসিক ‘জাতীয় সমাবেশ’ সফল করার ব্যাপারে ডিএমপির সাথে মতবিনিময় করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকাল ১০টায় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান এড. এহসানুল মাহবুব জুবায়েরর নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল ডিএমপির সাথে মতবিনিময় করেন।
প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি এড. মতিউর রহমান আকন্দ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী প্রচার সেক্রেটারি আবদুস সাত্তার সুমন প্রমুখ।
সভায় এড. এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ৭-দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামী ১৯ জুলাই শনিবার বেলা ২টায় রাজধানী ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিতব্য ঐতিহাসিক ‘জাতীয় সমাবেশ’ সফল করে তোলার লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, সমাবেশে সারাদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ লোকের সমাবেশ ঘটবে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও সিভিল সোসাইটির গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করবেন।
তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় সমাবেশ’-এ অংশ গ্রহণ করার জন্য সারাদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ লোক এবং শতশত যানবাহন রাজধানী ঢাকায় প্রবেশ করবে। এমতাবস্থায় বাড়তি লোক ও যানবাহনের জন্য অতিরিক্ত ট্রাফিকের ব্যবস্থা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা এবং শান্তিপূর্ণভাবে ঐতিহাসিক জাতীয় সমাবেশ বাস্তবায়ন করার জন্য আমরা ডিএমপির সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছি এবং তারা সর্বতোভাবে সহযোগিতা করবেন বলে আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন।
এসএম