রাজনীতি
তিন-চার মাসের মধ্যে নির্বাচন চায় বিএনপি

ভোটার তালিকা হালনাগাদে বাড়ি বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বিএনপির পক্ষ থেকে তিন থেকে চার মাসের মধ্যে সংস্কার শেষ করে নির্বাচনের দাবি জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বিকালে ঢাকার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন দলটির নেতারা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিহউল্লাহ।
বাড়ি বাড়ি যাওয়া অত্যন্ত ‘সময় সাপেক্ষ’ এবং ‘অপ্রয়োজনীয়’ মন্তব্য করে বিএনপির নির্বাচন সংস্কার বিষয়ক কমিটির আহ্বায়ক মঈন খান বলেন, যদি সত্যিকার অর্থে সৎভাবে সঠিক ভোটার তালিকা আমরা করতে চাই, তাহলে কিন্তু বাড়ি বাড়ি যাওয়া নয়, কম্পিউটার এআই… আজকে কিন্তু আমরা কম্পিউটারকে বলে দিলে সে নিজেই করে দিতে পারে, সেটা অবশ্যই সঠিক হবে। আমি কোন দিন ১৮ বছর হয়ে যাব, সেটাও কিন্তু কম্পিউটার করে দিতে পারে। সেটার জন্য বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের বাড়ি বাড়ি যাওয়ার প্রয়োজন নেই। এটায় ভুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। যিনি মারা গেছেন তার নামটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাদ চলে যাবে।
তিনি আরও বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি জন্য যাতে সত্যিকারভাবে মানুষ নিজের ভোট নিজে দিতে পারে এবং জনগণের সত্যিকার প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারে, ‘ডামি প্রতিনিধি’ না, ‘ভুয়া প্রতিনিধি’ না, সেজন্য আমাদের এই সংস্কার প্রস্তাব।
আওয়ামী লীগ সরকার প্রশাসনের মাধ্যমে নির্বাচনকে ‘কুক্ষিগত করতে’ অনেক কিছু করেছে অভিযোগ এনে মঈন খান বলেন, আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী যাতে রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করতে না পারে, তারা নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে, সেজন্য আমরা ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারের প্রণীত বিধিমালার সংশোধন চেয়েছি।
সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচন উপহার দিতে ৩/৪ মাসের বেশি সময় লাগবে না জানিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা যেসব প্রস্তাব করেছি, সেসব প্রস্তাব অনুযায়ী দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। এখানে এমন কোনো প্রস্তাব করা হয় নাই যেটা নতুন করে কোনো কিছু করতে হবে। আমরা নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী করার কথা বলেছি, নির্বাচন সচিবালয় করা এবং তাদের কিছু ক্ষমতা দেওয়া ইত্যাদি, আমরা প্রচলিত আইনগুলোর সংশোধন, সংস্কার, এগুলোর জন্য অধিক সময়ের প্রয়োজন হয় না।
অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচেনে নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা প্রস্তাব যেটা করেছি, সেটা হলো যাদের নেতৃত্বে যেসব অপকর্ম হয়েছে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তারা বিতাড়িত হয়েছে, পলায়ন করেছে। যাদের মাধ্যমে অপকর্ম করা হয়েছে তাদের ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি। আমরা বিশ্বাস করি, যে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় থাকছে তার নির্বাচনী কোনো স্টেক নাই, নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে। আর যারা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকবে তাদের মধ্যে যারা এই ধরনের অপকর্মের সাথে আগে যুক্ত ছিল বা থাকতে পারে, তাদের ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে এমন লোকদেরকে নিযুক্ত করা যারা এই ধরনের অপকর্মে যুক্ত হবেন না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা যেসব সংস্কারের কথা বলেছি সেগুলো অধিকাংশ আইনি সংস্কারের বিষয়, কাগজের বিষয়। বাস্তবে যে কাজগুলোর জন্য নির্বাচন কমিশন সময় নেয়, যেমন ভোটার তালিকা প্রণয়ন, নতুন ভোটার সংযোজন, কী কী ভুল-ভ্রান্তি আছে, ভুয়া ভোটার ‘গণনা’ করা তারপরে নির্বাচনের কাজ; অফিসার নিয়োগ, সীমাবদ্ধতা ইত্যাদি সব কাজ গুছাতে বাস্তবে ২/৩ মাসের বেশি সময় লাগার কথা না।
তত্বাবধায়ক সরকার হলে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে বাধ্য মনে করেন সালাহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, তত্বাবধায়ক সরকারের মূল্য আছে বা হবে। এটাই ছিল সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়ার সবচাইতে বড় বাধার একটা। সীমাবদ্ধতা, অপকর্মে জড়িতদের নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে বাদ রাখা, এসব হচ্ছে উপসর্গ। তত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল হলে এই সমস্ত উপসর্গ আর থাকবে না।

রাজনীতি
বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হবে: ড. হেলাল

দেশে ন্যায়-ইনসাফ ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে যেকোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এবং ঢাকা-৮ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ড . হেলাল উদ্দিন।
বুধবার (০২ জুলাই) জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারীদের স্মরণে বাংলা মটরে এতিম, দরিদ্র, অসহায় ও দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ পূর্বক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, জুলাই বিপ্লব আমাদের দেশ ও জাতিকে নতুন করে জীবনী শক্তি দিয়েছে। এ বিপ্লবের প্রেক্ষাপট একদিনে তৈরি হয়নি বরং দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছরের অপশাসন-দুঃশাসনে আওয়ামী ফ্যাসীবাদীদের প্রতি জনগণ বিতৃষ্ণ হয়ে উঠেছিল। ফলে স্বৈরাচারের পতন অনিবার্য হয়ে ওঠার কারণে ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নেমে এসেছিলো।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ৯০ শতাংশ মানুষ মুসলিম। অথচ এদেশে কুরআনের আলোচনা করতে হলে আওয়ামী লীগ সরকার থেকে অনুমতি নিতে হতো কিন্তু নাচ-গানের জন্য কোন অনুমতি দরকার ছিল না। আওয়ামী লীগ সরকার আল্লাহর সাথে বিদ্রোহ করেছে কারণ আল্লাহ যা হারাম করেছে আওয়ামী সরকার তার সবগুলোর বৈধতা দিয়েছে। যার কারণে আল্লাহর আজাব নেমে এসেছে আওয়ামী লীগের ওপর। এজন্যই তারা শুধু ক্ষমতাচ্যুত হয়নি, তারা গোষ্ঠী সহ পালিয়েছে। তিনি আরো বলেন, ভোট ডাকাতি করতে না পারার ভয়ে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনকে একটি দল ভয় পায়। সেজন্য তারা পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের বিপক্ষে।
এদিকে বিকেলে শান্তিনগরে পথসভা ও গণসংযোগ করেন তিনি। এ সময় স্থানীয় জামায়াত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
রাজনীতি
জাতীয় সংকট মোকাবেলায় একসঙ্গে কাজ করবে জামায়াত-গণঅধিকার পরিষদ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গুরত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।
সভা শেষে সাংবাদিকদের সামনে এক সংক্ষিপ্ত ব্রিফিং করেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের। তিনি বলেন, আমরা দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ও গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। উভয় দল আগামী দিনে জাতীয় সংকট মোকাবেলায় একসাথে কাজ করবে বলে সভায় আশা প্রকাশ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ঐকমত্য কমিশনের কয়েকটি বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। দেশের সব ছোট-বড় দলের মতামতের প্রতিফলন নিশ্চিত করতে আমরা উভয় দলই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতিতে আয়োজনের দাবি জানিয়েছি। এছাড়া স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা অকার্যকর থাকায় জনগণ নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে এবং নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সে প্রেক্ষিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানানো হয়েছে। যদি নির্বাচনের আগে এসব দাবি বাস্তবায়ন না হয়, তাহলে একমত পোষণকারী সব দলকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে এসব দাবি আদায়ের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী ও গণঅধিকার পরিষদ আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ইসলামী দলসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী অন্যান্য দলকে নিয়ে একটি নির্বাচনী জোট গঠনের বিষয়ে একমত হয়েছে।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নূর তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ‘জুলাই সনদ’ ও ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ বাস্তবায়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
মতবিনিময় সভায় জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, সাবেক এমপি ড. হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হালিম ও এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।
গণঅধিকার পরিষদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি নূরুল হক নূর, মুখপাত্র ফারুক হাসান এবং উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিলউজ্জামান, আব্দুজ জাহের, হাবিবুর রহমান রিজু ও রবিউল হাসান।
রাজনীতি
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান খালেদা জিয়ার

গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার (১ জুলাই) বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপি আয়োজিত জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের শোক ও বিজয়ের প্রথম বর্ষপূর্তির বিশেষ অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি।
গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’ থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি বলেন, আমাদের সামনে যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে নতুন করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার তা আমাদের দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করতে হবে।
বিএনপির চেয়ারপার্সন বলেন, যে কোনো মূল্যে বীরের এই রক্তস্রোত, মায়ের অশ্রুধারা যেন বৃথা না যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। ঐক্য বজায় রাখতে হবে। আসুন আমরা সবাই মিলে শহীদ জিয়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করি, বাস্তবায়িত করি কোটি মানুষের নতুন বাংলাদেশের নির্মাণের স্বপ্নকে।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের শুরুতে খালেদা জিয়া বলেন, রক্তস্নাত জুলাই-আগস্ট একবছর পর আমাদের মাঝে ফিরে এসেছে। দীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিস্টদের নির্মম অত্যাচার, নির্যাতন, গ্রেপ্তার হত্যা, খুন, খুনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে এবং একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চিরস্থায়ী করতে চেয়েছিল আওয়ামী শাসক গোষ্ঠী।
ছাত্র জনতার সম্মিলিত অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটেছে। সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে নতুন করে বাংলাদেশকে গড়বার।
এই আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও আহতদের প্রতি সমবেদনা জানান বিএনপি চেয়ারপারসন। তিনি বলেন, তাদের এই আত্মত্যাগ জাতি চিরকাল মনে রাখবে। গুম-খুন-বিচারবর্হিভূত হত্যা শিকার যারা হয়েছেন তাদের তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি পরিবারের সন্মান এবং তাদের পুনর্বাসন এবং তাদের নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হবে।
বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপির উদ্যোগে ‘গণঅভ্যুত্থান ২০২৪ : জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও শহীদদের সন্মানে এই বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে বিকেল ৩টায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের ওপর নির্মিত ‘জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
রাজনীতি
জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ আমরা আদায় করে ছাড়ব: নাহিদ ইসলাম

জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ আদায়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) অনড় থাকবে বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে টালবাহানা সহ্য করা হবে না।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) গণঅভ্যুত্থানপূর্তি উপলক্ষে রংপুরের পীরগঞ্জে বাবনপুর জাফরপাড়া গ্রামে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের পর এ কথা বলেন তিনি।
চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক দফার ঘোষক নাহিদ ইসলাম বলেন, একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের অবশ্যই বিচার, সংস্কার এবং গণপরিষদের মাধ্যমে নতুন সংবিধানের দিকে যেতে হবে এবং জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যে টালবাহানা শুরু হয়েছে, তা সহ্য করা হবে না। আমরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই, যারা মনে করছেন হাজার লক্ষ মানুষ যারা রাজপথে নেমে এসেছিল তারা ঘরে ফিরে গিয়েছে তাহলে আপনারা ভুল ভাবছেন। আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি পথে প্রান্তরে যাব। ছাত্র-জনতা, তরুণ, শ্রমিকদের আবারও রাজপথে নেমে আসতে আহ্বান জানাব। তারপর জুলাই ঘোষণাপত্র এবং জুলাই সনদ আদায় করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ আমরা আদায় করে ছাড়ব। আমরা বাংলার প্রতি প্রান্তরে যাব। সব মানুষকে আবার মাথা তুলে দাঁড়াতে উদ্বুদ্ধ করব। আবু সাঈদরা যে কারণে শহীদ হয়েছিল আমরা সেই আকাঙ্ক্ষা মানুষের কাছে তুলে ধরব। আবু সাঈদ যেভাবে পুলিশের গুলির সামনে বুক চেতিয়ে দাঁড়িয়েছিল, সেটাই ছিল আমাদের অনুপ্রেরণা।
নাহিদ ইসলাম বলেন, এনসিপির ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি মানে দেশ গঠনের জন্য যে উদ্যোগ দরকার তার জন্য এ কর্মসূচি। এ কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা মানুষের সঙ্গে কথা বলব। আবু সাঈদের স্বপ্ন, জুলাইয়ের স্বপ্ন- আমরা মানুষের কাছে তুলে ধরব। আবু সাঈদ লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা।
অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, আবু সাঈদের মতো অন্য সব শহীদেরা ফ্যাসিবাদী বিলোপের বিরুদ্ধে আমাদের যে লড়াই, তার অনুপ্রেরণা। যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশের মানুষ আবু সাঈদ, ওয়াসীম, মুগ্ধসহ সব শহীদদের এবং আহত যোদ্ধাদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।
এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, জুলাইয়ের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মধ্য দিয়ে আমরা রংপুর থেকে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি শুরু করছি। হাজারো মানুষের জীবন, রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে নতুন বাংলাদেশ আমরা পেয়েছি। এই নতুন বাংলাদেশকে গড়তে অবশ্যই পুরোনো কাঠামো ভেঙে নতুন বন্দোবস্তের জন্য মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যারা গণহত্যা সংগঠিত করেছে বাংলাদেশের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধ চাপিয়ে দিয়েছে তাদেরকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। একই সাথে বাংলাদেশের পুরোনো মুজিববাদী সংবিধান ফেলে দিয়ে নতুন এক সংবিধান প্রণয়ন করতে গণপরিষদ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। এই সবকিছুর মধ্যদিয়ে নতুন এক বাংলাদেশ পুনর্গঠিত হবে।
এসময় এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারাসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানপূর্তি উপলক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শাহাদত বরণ করা আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মধ্যদিয়ে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি শুরু হয়।
কবর জিয়ারত শেষে এনসিপি নেতৃবৃন্দ শহীদ আবু সাঈদের মা-বাবাসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে তাদের খোঁজখবর নেন। এসময় আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম মাথায় হাত বুলিয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক দফার ঘোষক নাহিদ ইসলামকে দোয়া করেন।
আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম ও বাবা মকবুল হোসেন অশ্রুসজল ছিলেন। এমন হৃদয়বিদারক পরিবেশে চোখের জল আটকে রাখতে পারেননি অন্যরাও। তারা আবু সাঈদের পরিবারকে সান্ত্বনা দেন। একই সঙ্গে এনসিপির সারা দেশব্যাপি জুলাই পদযাত্রার মাধ্যমে আবু সাঈদের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়তে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
জানা গেছে, রংপুরের পীরগঞ্জে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত ও শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে গাইবান্ধায় পথসভা ও পদযাত্রা করবে এনসিপি। বেলা তিনটায় রংপুরের পার্কের মোড়, লালবাগ, শাপলা চত্বর ও জাহাজ কোম্পানীর মোড় পদযাত্রা করে টাউন হলে পথসভা করার কথা রয়েছে।
রাজনীতি
জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ আদায় করে ছাড়ব: নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ আদায়ে নিজেদের অনড় অবস্থানের কথা জানিয়েছে। দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে অবশ্যই বিচার, সংস্কার এবং গণপরিষদের মাধ্যমে নতুন সংবিধানের দিকে যেতে হবে। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যে টালবাহানা শুরু হয়েছে, তা সহ্য করা হবে না। “জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ আমরা আদায় করে ছাড়ব।”
মঙ্গলবার (১ জুলাই) গণ-অভ্যুত্থানপূর্তি উপলক্ষে রংপুরের পীরগঞ্জের বাবনপুর জাফরপাড়া গ্রামে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের পর তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “যারা মনে করছেন হাজার লক্ষ মানুষ যারা রাজপথে নেমে এসেছিল, তারা ঘরে ফিরে গিয়েছে, তাহলে আপনারা ভুল ভাবছেন। আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি পথে প্রান্তরে যাব। ছাত্র-জনতা, তরুণ, শ্রমিকদের আবারও রাজপথে নেমে আসতে আহ্বান জানাব। তারপর জুলাই ঘোষণাপত্র এবং জুলাই সনদ আদায় করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ।”
তিনি আরও বলেন, “সব মানুষকে আবার মাথা তুলে দাঁড়াতে উদ্বুদ্ধ করব। আবু সাঈদরা যে কারণে শহীদ হয়েছিল আমরা সেই আকাঙ্ক্ষা মানুষের কাছে তুলে ধরব। আবু সাঈদ যেভাবে পুলিশের গুলির সামনে বুক চেতিয়ে দাঁড়িয়েছিল, সেটাই ছিল আমাদের অনুপ্রেরণা। আবু সাঈদের মতো অন্য সব শহীদেরা ফ্যাসিবাদী বিলোপের বিরুদ্ধে আমাদের যে লড়াই, তার অনুপ্রেরণা।”
নাহিদ ইসলাম দৃঢ়তার সঙ্গে উল্লেখ করেন, যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশের মানুষ আবু সাঈদ, ওয়াসীম, মুগ্ধসহ সব শহীদ এবং আহত যোদ্ধাদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।