খেলাধুলা
ভারতকে হারিয়ে যুব এশিয়া কাপের শিরোপা বাংলাদেশের
আজিজুল হাকিমের বলে আউট হলেন চেতন শর্মা। বাউন্ডারি লাইনে কালাম সিদ্দিকী ক্যাচ নিতেই আনন্দে ভাসল বাংলাদেশ। মাঠে ক্রিকেটারদের কৃতজ্ঞতার সিজদাহ। উড়ল বাংলাদেশের পতাকা। ভারতকে ৫৯ রানে হারিয়ে এশিয়ান ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্ব বাংলাদেশের। টানা দ্বিতীয়বারের মতো যুব ক্রিকেটে এশিয়ার সেরা হলো বাংলাদেশের ইয়াং টাইগার্সরা। ফাইনালের মহারণে বাংলাদেশের ১৯৮ রানের জবাবে ভারত শেষ হলো ১৩৯ রানে।
আরও একবার দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম। আরও একবার বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের এশিয়ান ক্রিকেটের সেরা হওয়ার মাহেন্দ্রক্ষণ। এর আগে যে অবিস্মরণীয় মুহূর্ত দেশকে এনে দিয়েছিলেন মাহফুজুর রহমান রাব্বিরা, সেটাই এবার করে দেখালেন আজিজুল হক তামিমের দল। তবে এবারে আনন্দের উপলক্ষ্যটাও কিছুটা বেশি। কারণ ফাইনালে যে বাংলাদেশ উড়িয়ে দিয়েছে রেকর্ড ৮ বারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকেই।
১৯৯ রানের ছোটো এক লক্ষ্য। কিন্তু সেটাকেই ভারতের জন্য পর্বতসমান করে রেখেছিলেন বাংলাদেশের বোলিং ইউনিট। একের পর এক উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশের বোলাররা। থিতু হতে দেননি কাউকেই। কেপি কার্তিকেয়া ছাড়া আর কেউই সেভাবে পরীক্ষা নিতে পারেননি বাংলাদেশের বোলারদের। তবে অনেকটা সময় ধরেই বাংলাদেশকে ভুগিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক মোহাম্মদ আমান। তাকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের পথটা সহজ করে দেন টাইগারদের অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম।
অবশ্য জয়ের পথে বাংলাদেশের পথটা সহজ করে ফেলেছিলেন মূলত ইকবাল হোসাইন ইমন। এক স্পেলে তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন তিনিই। একই ওভারে প্রায় একইরকমের ডেলিভারিতে ফেরান কার্তিকেয়া এবং নিখিলকে। দুজনেই ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। এক ওভার পরেই ফের তার আঘাত। এই দফায় আউট হলেন হারভানশ পানগালিয়া। এই দফায়ও উইকেটের পেছনে গিয়েছে ক্যাচ। বাংলাদেশও তাতে ম্যাচে ফিরেছে দারুণভাবে।
১৯৮ রানের লক্ষ্যে ভারতকে শুরুতেই চাপে ফেলে দেন আল ফাহাদ। দলীয় ৪ রানেই আয়ুশ মহাত্রেকে দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন এই পেসার। বিপদের আভাস দিচ্ছিলেন আলোচিত কিশোর বৈভব সুর্যবংশী। কিন্তু তাকে বাড়তে দেননি মারুফ মৃধা। খানিক পরেই রিজান ফেরান আন্দ্রে সিদ্ধার্থকে।
এরপরেই মূলত ম্যাচে ফেরার চেষ্টায় ভারত। কেপি কার্তিকেয়া আর মোহাম্মদ আমানের ২৯ রানের জুটি বেশ অনেকটাই এগিয়ে দেয় ভারতকে। আম্পায়ারের পক্ষ থেকে একাধিক সফট সিগন্যাল গিয়েছে বাংলাদেশের বিপক্ষে। যা নিয়ে মাঠে উত্তাপও ছড়িয়েছে বেশ। কিন্তু এরপরেই ইমনের দুর্দান্ত এক স্পেল। ৭৩ রানে ৩ উইকেট থেকে ৮১ রানে ৬ উইকেট।
এরপর কিরণ চারমোলেকে নিয়ে আমানের চেষ্টা ছিল জুটি গড়ার। তবে আল ফাহাদ ফেরান কিরণকে। উইকেটের পেছনে ব্যস্ত দিন ছিল ফরিদের। ৪টি ক্যাচ নিয়েছেন একাই। এরপরে আর বাড়েনি ভারতের ইনিংস। শেষ উইকেটে সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে আউট হলেন চেতন শর্মা। এবারেও উইকেট নিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। শিরোপা জয়ে যেন সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে কিছুটা বিপাকেই পড়েছিল বাংলাদেশ দল। পুরো টুর্নামেন্টে দারুণ ক্রিকেট উপহার দিলেও ফাইনালের বিগ স্টেজে এসে ক্রিজে থিতু হতেই ভুলে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ভারতের বিপক্ষে যখন বলার মতো স্কোর নেই কারো ব্যাটে, তখন লোয়ার মিডল অর্ডারের ফরিদ হাসান দায়িত্ব নিলেন দলকে বলার মতো সংগ্রহ এনে দিতে। সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন মারুফ মৃধাকে।
ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে দুইশ’র আগেই থামল বাংলাদেশইনিংসের শুরু থেকেই রানের জন্য সংগ্রাম করতে হয়েছে বাংলাদেশের যুবাদের। ৭ম ওভারে কালাম সিদ্দিকী আউটের আগে ১৬ বলে করেছিলেন মোটে ১ রান। সেটাই হয়ত ইঙ্গিত দেয়, ব্যাটিং পিচে ঠিক কতটা সংগ্রাম করেছে বাংলাদেশ। তবে তিনে নামা আজিজুল হাকিম তামিম কিছুটা হতাশই করেছেন। পুরো আসরে অধিনায়ক তামিম মুগ্ধতা ছড়ালেও ফাইনালে করতে পেরেছেন মোটে ১৬ রান। আরেক ওপেনার জাওয়াদ আবরারও ২০ রানের বেশি করতে পারেননি।
৬৬ রানে অধিনায়ক আজিজুল তামিম বিদায়ের পরেই বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডকে এগিয়ে নিয়েছেন দিনের সেরা দুই ব্যাটার রিজান এবং শিহাব জেমস। ৬৭ বলে ৩ চার আর ১ ছক্কায় শিহাব করেছেন ৪০ রান। দলীয় ১২৮ রানে বিদায় নেন আয়ুশ মহাত্রের বলে। দেবাশীষ এসেই ফিরেছেন ৩ বলে ১ রান করে। ১৫৫ রানে ফিরে যান রিজান নিজেও। মিস করেছেন ফিফটি।
সব ব্যাটিং বিপর্যয়েই নাকি একটা করে রানআউট থাকে। ক্রিকেটের সেই অলিখিত নিয়ম মেনে ১৬৫ রানের মাথায় রান আউটের শিকার হন সামিউন বশির। দায়িত্ব নিয়ে পারেননি ফাহাদও। ফরিদ হাসান যখন একাকী দাঁড়িয়ে, তখন ১৯ বলে ১১ রান করে তাকে সঙ্গ দিয়েছেন মারুফ মৃধা। নবম উইকেটে তারা যোগ করলেন ৩০ রান। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেমেছে ১৯৮ রানে।
কিন্তু জয়ের জন্য শেষের ওই রানটুকুই হয়ে উঠেছে যথেষ্ট। শুরু থেকেই ভারতকে চাপের মাঝে রাখা বাংলাদেশ দুবাইয়ে প্রবাসী সমর্থকদের মুখে হাসি এনে দিয়েছেন। বাংলাদেশ পেল এশিয়ানদের যুব ক্রিকেটে নিজেদের টানা দ্বিতীয় শিরোপা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
২০৩৪ ফুটবল বিশ্বকাপ হবে সৌদি আরবে
আগে থেকেই অনেকটা নিশ্চিত ছিল ২০৩৪ ফিফা বিশ্বকাপের আয়োজক হতে যাচ্ছে সৌদি আরব। এবার এসেছে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। আনুষ্ঠানিকভাবে ফিফা জানাল, আগামী ২০৩৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজন করবে সৌদি আরব।
বুধবার একটি ভার্চুয়াল সভায় ২০৩৪ বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে সৌদি আরবের নাম ঘোষণা করেছে ফিফা। একই দিনে ফিফা আরো জানিয়েছে, ২০৩০ সালের বিশ্বকাপ আয়োজন করবে মরক্কো, স্পেন ও পর্তুগাল মিলে। এছাড়া, বিশ্বকাপের শতবর্ষ উপলক্ষে একটি করে ম্যাচ হবে আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে ও প্যারাগুয়েতে।
২০২৬ বিশ্বকাপ থেকে বদলে যাচ্ছে ফুটবল বিশ্বকাপের চেহারা। শেষ কয়েকটি আসর বসেছিল ৩২ দল নিয়ে। যাতে বিশ্বকাপে খেলা হতো ৬৪ ম্যাচ। আগামী ২০২৬ বিশ্বকাপ থেকে দল বাড়ছে আরও ১৬টি, যার ফলে বাড়ছে ম্যাচসংখ্যাও। দশ বছরের পরের তথা ২০৩৪ ফুটবল বিশ্বকাপেও অংশ নেবে ৪৮টি দল।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ৪৮ দলের অংশগ্রহণে ২০৩৪ ফুটবল বিশ্বকাপ হবে ৫টি শহরের ১৫টি স্টেডিয়ামে, এর মধ্যে ৮টি রাজধানী রিয়াদে। আন্তর্জাতিক ফুটবল ফেডারেশনে (ফিফা) আনুষ্ঠানিকভাবে টুর্নামেন্টের বিড করার পর এ ঘোষণা আসল।
ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য অনেক আগে থেকেই পরিকল্পনা শুরু করেছিল সৌদি আরব। বিশেষত ফুটবলে বিশাল বাণিজ্যের বাজার ধরতে তারা পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড খুলেছিল। তার অধীনে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ও নেইমার জুনিয়রসহ ইউরোপ মাতানো অসংখ্য ফুটবলারকে নিজেদের ক্লাবে ভিড়িয়েছে সৌদি। অবশেষে তাদের উদ্দেশ্য সফল হতে যাচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
অনূর্ধ্ব-১৯ শিরোপা জয়ীদের প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় বাংলাদেশ দলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রবিবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলকে অভিনন্দন বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আবারও অনূর্ধ্ব–১৯ এশিয়া কাপ জয় করায় বাংলাদেশ যুব ক্রিকেট দলকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। বিজয়ের মাসে আন্তর্জাতিক বিজয়ের জন্য গর্বিত জাতির পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।
দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ফাইনালে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় ভারত। বাংলাদেশ ৪৯.১ ওভারে ১৯৮ রানে অলআউট হয়। জবাবে বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের মুখে কোণঠাসা হয়ে যায় ভারত। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে। শেষ পর্যন্ত ৩৫.২ ওভারে ১৩৯ রানে ভারত অলআউট হলে দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে বাংলাদেশের যুবারা।
২০২৩ সালে এই স্টেডিয়ামেই স্বাগতিক আরব আমিরাতকে হারিয়ে যুব এশিয়া কাপ ক্রিকেটে প্রথম চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলদেশ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
বাংলাদেশ ফুটবল দলের পেজ হ্যাক
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের ফেসবুক পেজ হ্যাক হয়েছে। বাফুফের মিডিয়া বিভাগ থেকে বিকেলে এ তথ্য জানানো হয়। জাতীয় ফুটবল দলের যাবতীয় খবরাখবর প্রচারের জন্য এ বছরের শুরুর দিকে এই পেজটি চালু করেছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।
পেজটি চালুর পর থেকে সেখানে নারী ও পুরুষ ফুটবল দলের সব খবর এখানে আপডেট করতো বাফুফে। এ কয় মাসেই পেজটির ফলোয়ার সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল লাখের কাছাকাছি।
বাফুফের মিডিয়া ম্যানেজার সাদমান সাবিক জানিয়েছেন, তারা এরই মধ্যে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে পেজটি উদ্ধারের চেষ্টা করছে। দ্রুতসময়ের মধ্যে পেজটি ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশা করছে বাফুফে। সাময়িক অসুবিধার জন্য বাফুফে দুঃখও প্রকাশ করেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
বিপিএলের থিম সংয়ের কয়েকটা লাইন লিখেছেন ড. ইউনূস
জমকালো আয়োজনে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) একাদশ আসরের থিম সং ও গ্রাফিতি প্রকাশ করেছে বিসিবি। এবারের থিম সংয়ের শিরোনাম ‘আবার এলো বিপিএল’।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট আয়োজনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজেই জড়িত বলে আগে থেকে শোনা যাচ্ছিল। এবার জানা গেল, বিপিএলের থিম সংয়েও তিনি কয়েকটি লাইন লিখেছেন। এমনটাই জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
থিম সং এবং গ্রাফিতি উন্মোচন অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে বিসিবির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, আপনারা জানেন যে এবার আমাদের বিপিএল আয়োজনের সঙ্গে রয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। আমি নিজেও যখন প্রথম স্যারকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম…(প্যারিস) অলিম্পিক-সহ বড়বড় অনেক ইভেন্টে আপনি ইনপুট দিয়ে থাকেন। তো আমাদেরকে যদি একটু দিতেন।
আসিফ মাহমুদ বলেন, সত্যি কথা বলতে আমি আশা করিনি যে স্যার পার্সোনালি এতটা যুক্ত হবেন আমাদের সঙ্গে। স্যার এবং স্যারের টিম আমার চেয়েও অনেক (বেশি) যুক্ত ছিলেন এটার সঙ্গে। এমনকি স্যার কয়েকটি লাইনও লিখে দিয়েছেন থিম সংয়ের। উনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ মূল্যবান ইনপুট দেওয়ার জন্য আমাদেরকে।
ক্রীড়া উপদেষ্টা এবং বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বিপিএলের প্রাথমিক কার্যক্রম শুরুর পর থেকেই স্মরণীয় টুর্নামেন্ট আয়োজনের কথা বলে আসছেন। বড় আয়োজনে প্লেয়ার্স ড্রাফট, মাস্কট উন্মোচনের পর এবার থিম সং প্রকাশের জন্য বিসিবিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, বিসিবি সেটাকে (পূর্ব ঘোষণা) সিরিয়াসলি নিয়ে অনেক সুন্দরভাবে বাস্তবায়ন করেছে। সেজন্য বিসিবিকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এবারের বিপিএলকে আমরা নতুনভাবে সাজাতে চাই।
বিসিবির এই অনুষ্ঠানে জুলাই বিপ্লবের নানা প্রতীকি ছবির সমন্বয়ে গ্রাফিতি প্রদর্শন করা হয়। পরে ‘আবার এলো বিপিএল’ শিরোনামে থিম সং প্রকাশ করে আগত অতিথিদের সামনে। এবারের থিম সংয়ে কণ্ঠ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী গায়ক মুজা, ব্যান্ড শিল্পী রায়েফ আল হাসান রাফা এবং র্যাপার হান্নান হোসাইন শিমুল। গানে নৃত্য ও মডেলিং করেছেন রিদি শেখ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তারুণ্যের উৎসব-২০২৫
জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার উত্তাল আন্দোলন আর দেড় হাজারেরও বেশি অকুতোভয় মুক্তিকামী মানুষের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে নতুন স্বাধীনতা। পরাজিত ও ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে ফ্যাসিবাদী আওয়ামীলীগ সরকার। ছাত্র-জনতার সেই সফল আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে দেশের তরুণ সমাজ।
সেই তরুণদের লড়াই-সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে উদ্যোগী হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।
নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য ও পরিকল্পনায় তারুণ্যের উৎসব করার পরিকল্পনা নিয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’ নামকরণের এক বড়সড় যজ্ঞ শুরু হতে যাচ্ছে চলতি ডিসেম্বর মাস থেকেই। আগামী ৩০ ডিসেম্বর বিপিএল দিয়ে শুরু হবে সেই ‘তারুন্যের উৎসব ২০২৫।’
যুব, ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আজ রোববার স্থানীয় এক পাঁচ তারকা হোটেলে এই আয়োজনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি শিক্ষা মন্ত্রণালয় (মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা), তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়সহ ১২টির বেশি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় প্রায় দুই মাস ধরে চলবে তরুণদের উৎসব।
ক্রিকেট ছাড়াও ফুটবল, কাবাডি, ব্যাডমিন্টন, সাঁতার, অ্যাথলেটিক্স ও বাস্কেটবলের বিভিন্ন ইভেন্ট থাকবে সে উৎসবে। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে সে তারুণ্যের উৎসব। পুরো আয়োজনে জুলাই-আগস্টের গণ অভ্যুত্থানের বিভিন্ন ছাপ রাখার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
পবিত্র কোরআন তেলোয়াত, গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল পাঠ দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ হিরুজ্জামান স্বাগত বক্তব্য রাখেন। তারপর পর্দায় প্রদর্শিত হয় জুলাই-আগস্টের ছাত্র জনতার আন্দোলনে শহীদদের নিয়ে মর্মস্পর্শী প্রামাণ্যচিত্র। পরে আন্দোলনে শহীদদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এক মিনিট নীরবতাও পালন করা হয়।
ওই তারুণ্যের উৎসব ‘২০২৫’-এর মিডিয়া লঞ্চিং উপলক্ষে আজ রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বসেছিল তারার মেলা। ক্রিকেটার, ফুটবলার, বিভিন্ন মহাদেশীয় পর্যায় ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আসরে দেশের জন্য সাফল্য বয়ে আনা একঝাঁক ক্রীড়াবীদ উপস্থিত ছিলেন এ অনুষ্ঠানে।
দেশের ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তি কায়সার হামিদ, জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান, টেবিল টেনিসের রানী জোবেরা রহমান লিনুর পাশে তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, জাতীয় ফুটবল অধিনায়ক তপু বর্মণ, নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জোতি, সাবেক অধিনায়ক সালমা খাতুন, দেশীয় টেবিল টেনিসের রানী জোবেরা রহমান লিনু, এসএ গেমসে ভারোত্তোলনে স্বর্ণপদক বিজয়ী মাবিয়া আক্তাররা আলো ছড়িয়েছেন আজকের এ অনুষ্ঠানে।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এই তারুণ্যের উৎসবের মাধ্যমে দেশ পুনর্গঠন ও রাষ্ট্র সংস্কারের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘খেলাধুলা আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে। বিশেষ করে ক্রিকেট আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে। ভিন্ন ক্ষেত্রে যত মতবিরোধই থাকুক, খেলার ক্ষেত্রে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যাই। জাতীয় ঐক্য বজায় রেখে দেশ পুনর্গঠন ও রাষ্ট্র সংস্কারে এগিয়ে যাওয়াই এই তারুণ্যের উৎসব ২০২৫এর অন্যতম উদ্দেশ্য।’
অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ হিসেবে একদম শেষে উন্মোচন করা হয় ছেলেদের বিপিএলের ১১তম আসরের মাসকট ও থিম সং। দেশের একমাত্র ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের আগের ১০টি আসরে ‘থিম সং থাকলেও কোন মাসকট ছিল না।
নতুন আসরে গত জুলাই-অগাস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের স্মৃতিকে ধারণ করে মাসকটের নাম রাখা হয়েছে ‘ডানা ৩৬।’ যা মূলত ডানা প্রসারিত করা একটি সাদা পায়রা।
মাসকটের নামের ডানা শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে মুক্তি ও স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে। গত জুলাই-অগাস্টের গণ আন্দোলনের স্মরণীয় ৩৬ দিনের জন্য মাসকটের দুই পাশে ১৮টি করে রাখা হয়েছে মোট ৩৬টি রঙিন পালক। যা প্রতিটি স্বপ্নবাজ, উদ্যমী, অপ্রতিরোধ্য তরুণের নতুন বাংলাদেশ গড়ার অনুপ্রেরণা জোগায়।
বিসিবি সভাপতি ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মোহাম্মদ ইউনূসের উচ্চারিত শব্দমালা ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ সামনে রেখেই এই থিম সং তৈরি করা হয়েছে। তারুণ্যের উৎসবের প্রতিপাদ্যও এই শব্দমালা।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব রেজাউল মাকসুদ পুরো আয়োজন সম্পর্কে একটা ধারণা দেন। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বিপিএল দিয়ে শুরু হলেও ফুটবল, কাবাডি, ব্যাডমিন্টন, সাঁতার, অ্যাথলেটিকস ও বাস্কেটবলের নানান খেলাও থাকবে ঐ তারুণ্যের উৎসবে।