আইন-আদালত
পুলিশের ঊর্ধ্বতন ১৫ কর্মকর্তাকে বদলি-পদায়ন

বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন ১৫ কর্মকর্তাকে একযোগে বদলি ও পদায়ন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পৃথক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে জানানো হয়, ডিএমপির সাবেক কমিশনার মো. মাইনুল হাসানকে ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি (চলতি দায়িত্বে), শিল্পাঞ্চল পুলিশের ডিআইজি কাজী মো. ফজলুল করিমকে পুলিশ সদরদপ্তরে, ট্যুরিস্ট পুলিশের ডিআইজি মো. আবুল কালাম সিদ্দিককে শিল্পাঞ্চল পুলিশে, ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ তাহেরুল হক চৌহানকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. দেলোয়ার হোসেনকে সিআইডির অতিরিক্ত কমিশনার, সিআইডির ডিআইজি এস এন মো. নজরুল ইসলামকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার, অতিরিক্ত ডিআইজি সুলতানা নাজমা হোসেনকে ডিএমপির যুগ্মকমিশনার করা হয়েছে।
এছাড়া, ডিএমপির অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনকে ডিএমপির ডিসি, টিডিএসের মোহাম্মদ কামরুজ্জামানকে পুলিশ স্টাফ কলেজের পুলিশ সুপার, বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের শফিকুল ইসলামকে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি, সিআইডির মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানকে সিআইডির পুলিশ সুপার, সিআইডির মো. সালাউদ্দিনকে একই সংস্থার পুলিশ সুপার করা হয়েছে।
এছাড়া ট্যুরিস্ট পুলিশের মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদকে ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার এবং পিবিআইয়ের শাহ মো. আব্দুর রউফকে ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার পদে পদায়ন করা হয়েছে।
এছাড়া অন্য আরেক প্রজ্ঞাপনে র্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেগম শামীমা আরাকে পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।

আইন-আদালত
জীবনরক্ষাকারী ৭৩৯ ওষুধের দাম ঠিক করবে সরকার: হাইকোর্ট

জীবনরক্ষাকারী ৭৩৯টি ওষুধের দাম সরকার নির্ধারণ করবে। এছাড়া ১৯৯৪ সালে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে ওষুধের দাম নির্ধারণের আংশিক ক্ষমতা দিয়ে জারি করা সার্কুলারকে অবৈধ ঘোষণা করে ১৯৯৩ সালের সরকারি গেজেট পুনর্বহাল করেছেন আদালত।
সার্কুলার চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে সোমবার (২৫ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট সঞ্জয় মন্ডল।
ওষুধ মালিক সমিতির পক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট এস. কে. মোরশেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) সৈয়দ এজাজ করিব।
এ রায়ের ফলে দেশের বেশিরভাগ ওষুধের দাম নির্ধারণের এখতিয়ার উৎপাদনকারীদের পরিবর্তে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হাতে থাকবে।
রায়ে স্বাস্থ্য সচিব, ডিজি হেলথ, ডিজি ড্রাগ, ওষুধ মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে।
রিটকারীর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, ওষুধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ১৯৮২ এর ১১ ধারায় সরকারকে ওষুধের মূল্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। এর ভিত্তিতে ১৯৯৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ৭৩৯টি ওষুধের দাম নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করে। কিন্তু ১৯৯৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি একটি সার্কুলারের মাধ্যমে সেই ক্ষমতা সীমিত করে মাত্র ১৭৭টি ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারের হাতে রাখা হয়। বাকি সব ওষুধের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা দেওয়া হয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে।
এই সার্কুলারকে চ্যালেঞ্জ করে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) ২০১৮ সালে জনস্বার্থে একটি রিট দায়ের করে। হাইকোর্ট তখন রুল জারি করে জানতে চান, কেন ওই সার্কুলারকে অবৈধ ঘোষণা করা হবে না।
২০১৮ সালের ৩১ জুলাই শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি সৈয়দ মো. দস্তগীর হোসেন এবং বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের আদালত রুল জারি করে সার্কুলারকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না সে মর্মে জানতে চান। এরপর আজ চূড়ান্ত শুনানি শেষে এ রায় ঘোষণা করেন আদালত।
আইনজীবী মোরসেদ আদালতে যুক্তি দেন, জীবনরক্ষাকারী ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি সরাসরি মানুষের বেঁচে থাকার অধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই দাম নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা সরকারের হাতে সীমিত করে দেওয়া নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন করে।
রায়ে আদালত সংবিধানের ১১২ অনুচ্ছেদের আলোকে নির্দেশ দেন যে জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম সরকারকেই নির্ধারণ করতে হবে। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করারও নির্দেশ দিয়েছেন।
রিটকারীর আইনজীবী সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ জানান, বেসরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির হাতে জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা থাকার ফলে সাধারণ মানুষকে বেশি দামে কিনতে হয়। গত ১৭ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার নতুন করে জীবনরক্ষকারী ওষুধের তালিকা করার জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করে। ওই তালিকায় যেসব ওষুধের নাম থাকবে সবগুলোর দাম সরকারকেই নির্ধারণ করার নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আইন-আদালত
পাঁচ দিনের রিমান্ডে তৌহিদ আফ্রিদি

জুলাই আন্দোলনের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার একটি হত্যা মামলায় বেসরকারি টিভি চ্যানেল মাইটিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীর ছেলে কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ্ ফারজানা হকের আদালত এই আদেশ দেন।
এর আগে, তৌহিদ আফ্রিদিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক খান মো. এরফান।
রবিবার (২৪ আগস্ট) রাতে বরিশাল থেকে তৌহিদ আফ্রিদিকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট যাত্রাবাড়ীতে জুলাই আন্দোলনে অংশ নেন মো. আসাদুল হক বাবু। দুপুর আড়াইটার দিকে আসামিদের ছোঁড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন আসাদুল। চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় গত বছরের ৩০ অগাস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা জয়নাল আবেদীন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় আসামির তালিকায় নাসির উদ্দিন ও তৌহিদ আফ্রিদির নামও রয়েছে। মামলায় নাসির উদ্দিন ২২ নম্বর এবং তার ছেলে তৌহিদ আফ্রিদি ১১ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।
একই মামলায় গত ১৭ আগস্ট রাজধানীর গুলশান থানাধীন এলাকা থেকে নাসির উদ্দিন সাথীকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন ১৮ আগস্ট তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে গত ২৩ আগস্ট আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আইন-আদালত
ফ্যাসিবাদ তাড়াতে আইনজীবীদের ভূমিকা ছিল অনবদ্য: অ্যাটর্নি জেনারেল

অ্যাটর্নি জেনারেল ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, ফ্যাসিবাদকে বাংলাদেশ থেকে চিরতরে দূর করার সংগ্রামে আইনজীবীদের অগ্রগণ্য ভূমিকা ছিল। এ যুদ্ধে তাদের ভূমিকা ছিল অসামান্য।
শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের মাল্টিপারপাস হল রুমে ‘বাংলাদেশ বার কাউন্সিল বর্ধিত সভা-২০২৫’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের দ্বার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে এবং সেই ফ্যাসিবাদ বিতাড়নের যুদ্ধে আমাদের আইনজীবীদের ভূমিকা ছিল অনবদ্য।’
তিনি বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে আমাদের আইনজীবীরা দিনরাত পরিশ্রম করে রাজনৈতিক নেতাদের, মানবাধিকারের পক্ষে যারা কথা বলেছেন তাদের জন্য সংগ্রাম করে গেছেন।
এজন্য অনেকে কোনো অর্থও গ্রহণ করেননি। বিগত আমলে দিনের পর দিন সরকারি দলের কর্মীরা আইনজীবীদের ওপর কর্তৃত্ব ফলানোর কাজ করেছেন। তবে, আজ আমরা সে অবস্থায় পরিবর্তন চাই, আর সেজন্যই আইনজীবী সমাজকে সামনের কাতারে এনে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে অর্জিত এ নতুন বাংলাদেশের বার কাউন্সিলের দায়িত্ব নেওয়ার পরে আমাদের সকলের সামনে প্রধান লক্ষ্য ছিল, আমরা আইনি প্রক্রিয়াকে সমৃদ্ধ করে আরো সামনে এগিয়ে যাবো।
দেশের মানুষের কাছে এই প্রতিষ্ঠানের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস পুনরায় প্রতিষ্ঠা করার জন্য যে সকল পদক্ষেপ নিয়েছি তার প্রথম সোপান ছিল নিয়মিত বার কাউন্সিলের পরীক্ষা গ্রহণ। অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি স্বচ্ছ পরীক্ষার মধ্য দিয়ে বার কাউন্সিল এগিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বার কাউন্সিল পরীক্ষার আগের দিন আমরা স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে গ্রেপ্তার অভিযান চালিয়েছি, যারা প্রশ্নপত্র বিক্রি করে তাদের বিরুদ্ধে। আমরা এমন একটি পরীক্ষা পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যেতে চাচ্ছি যে পদ্ধতির মধ্য দিয়ে গেলে পুনরায় সমাজে দৃঢ়ভাবে বাংলাদেশের আইনজীবীদের সম্মান প্রতিষ্ঠিত হবে।
দল-মত নির্বিশেষে আইনজীবীরা যেন উন্নতির সর্বোচ্চ শিখরে অধিষ্ঠিত হতে পারেন সে প্রচেষ্টা বার কাউন্সিল অব্যাহত রাখবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, দুর্নীতি, অপরাধের বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে, সেটি নিজেদের কমিউনিটির কেউ হলেও আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে।
এ সময় আইনজীবীদের সুরক্ষার জন্য বেনোভেলেন্ট ফান্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতি বছর সরকারি রাজস্ব খাত থেকে বিচার বিভাগের জন্য বরাদ্দ হয় মাত্র পাঁচশো কোটি টাকা। এত কম বরাদ্দের কারণে বিচারক ও আইনজীবী উভয়েই নানাভাবে বঞ্চিত হচ্ছেন।
তিনি জানান, জনপ্রশাসন ও আইনসচিবকে এ বিষয়ে অবগত করা হয়েছে। এ বিষয়ে তারা সম্পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়েছেন। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমরা সরকারের কাছে প্রস্তাব করব বাজেটের ১৫ হাজার কোটি টাকার মধ্য থেকে অন্তত তিন হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ বিচার বিভাগের জন্য দেওয়া হয়।
আইন-আদালত
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, আপিলের রায় ৪ সেপ্টেম্বর

একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের দায়ের করা আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে রায় প্রদানের জন্য আগামী ৪ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে গত মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) খালাসপ্রাপ্তদের রায় কীভাবে বাতিল করা যায় সেই যুক্তিতে শুনানি শেষ করে রাষ্ট্রপক্ষ। এরপর বুধবার (২০ আগস্ট) এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি হওয়ার পর বৃহস্পতিবার শুনানির জন্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এ দিন শুনানি শেষে রায়ের জন্য আগামী ৪ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।
আদালতে তারেক রহমান-বাবরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এসএম শাহজাহান ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ।
এ বছরের ১২ জানুয়ারি একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দেন হাইকোর্ট।
বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করে হাইকোর্টের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন। রায়ে আদালত বলেন, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার ছিল অবৈধ। আইনে এ বিচার টেকে না।
রায়ে বলা হয়, যে অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে নিম্ন আদালত বিচার করেছিলেন তা আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য ছিল না।
এরপর এ মামলায় সব আসামির খালাসের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। গত ১ জুন রাষ্ট্রপক্ষকে আপিলের অনুমতি দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও হত্যা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে ফাঁসি এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত।
সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ, মাওলানা তাজউদ্দীন, মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, মাওলানা শেখ ফরিদ, মাওলানা আবু সাইদ, মুফতি মঈনউদ্দিন শেখ ওরফে আবু জান্দাল, হাফেজ আবু তাহের, মো. ইউসুফ ভাট ওরফে মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক, মফিজুর রহমান ওরফে মহিবুল্লাহ, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হোসাইন আহমেদ তামিম, রফিকুল ইসলাম ওরফে সবুজ ও মো. উজ্জ্বল ওরফে রতনের বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়।
এছাড়া শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর, আবু হোমাইরা ওরফে পীরসাহেব, মাওলানা সাব্বির আহমদ ওরফে আবদুল হান্নান সাব্বির, আরিফ হাসান ওরফে সুজন ওরফে আবদুর রাজ্জাক, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, আবু বকর ওরফে সেলিম হাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ, মহিবুল মোত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন (পলাতক), আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন (পলাতক), মো. খলিল (পলাতক), জাহাঙ্গীর আলম বদর ওরফে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর (পলাতক), মো. ইকবাল (পলাতক), লিটন ওরফে মাওলানা লিটন (পলাতক), তারেক রহমান ওরফে তারেক জিয়া (পলাতক), হারিছ চৌধুরী (পলাতক), কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ (পলাতক), মুফতি শফিকুর রহমান (পলাতক), মুফতি আবদুল হাই (পলাতক) এবং রাতুল আহম্মেদ বাবু ওরফে বাবু ওরফে রাতুল বাবুকে (পলাতক) যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের কয়েকশ নেতাকর্মী। তাদের মধ্যে অনেকে হাত-পা হারিয়ে পঙ্গু হয়ে যান।
আইন-আদালত
তারেক রহমান-বাবরের খালাসের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি বুধবার

বহুল আলোচিত একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের দায়ের করা আপিলের শুনানি ফের বুধবার (২০ আগস্ট) অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ পরবর্তী শুনানির জন্য এদিন ধার্য করেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ। তারেক রহমান ও বাবরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
আদালতে বিএনপির আইনজীবীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন ও অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান রায়হান বিশ্বাস।
এর আগে গত ৩১ জুলাই একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের দায়ের করা আপিলের দ্বিতীয় দিনের শুনানি শেষ হয়।
কাফি