অর্থনীতি
ব্র্যাক ব্যাংকের এমডির পদত্যাগ দাবি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের

ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেনের পদত্যাগ দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। ‘ব্যাংক খাতের দুর্দশার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারাই দায়ী’ এমন মন্তব্য করায় তাঁর বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভেতরে প্রতিবাদ সভায় তাঁর পদত্যাগ দাবি করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুক্তিযুদ্ধ সংসদে অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদ সভায় এমন আহ্বান জানান তারা।
সভায় ব্র্যাক ব্যাংকের এমডির বিরুদ্ধে খুব দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে অনুরোধ জানানো হয়। সভায় কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের বিদেশ যাত্রায় আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি লাগলেও যা রহিতকরণের উদ্যোগ নেয় এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এর পরপরই কয়েকজন দুর্নীতিগ্রস্ত এমডি বিদেশে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। দেশের সব দায়িত্বশীল ব্যক্তি তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই বিদেশে যাওয়ার রীতি প্রচলিত আছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্ধারিত সিনেমা বাংলাদেশ ব্যাংকের সব কর্মকর্তাকে দেখতে বাধ্য করা, এর জন্য অর্থায়ন করা এবং যারা সিনেমা দেখতে যায়নি তাদের একটি বিশেষ সংস্থার মাধ্যমে তালিকা বানানোর মতো অনৈতিক কাজে সেলিম আর এফ হোসেন যুক্ত ছিলেন। প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও নীতিমালা লঙ্ঘন করে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় বিপুল বেতন- ভাতায় পতিত সরকারের আমলে ব্যাংকের এমডির চাকরি পান তিনি। আইডিএলসিতে থাকাকালে পিকে হালদার সংশ্লিষ্ট বেনামী প্রতিষ্ঠান ক্লিস্টোন গ্রুপের আবদুল আলীমকে কোটি টাকা ঋণ দেন তিনি। আর্থিক অনিয়মের কারণে তার আপন ভাই সোহেল আরকে হুসেইন সিটি ব্যাংকের এমডির পদ ছাড়তে বাধ্য হয়। পরে তারই প্রভাব ও প্রতিপত্তিতে সে আবার ব্যাংকিং খাতে ফিরে আসে। নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ সব ব্যাংক ডাকাতদের সঙ্গে বিশেষ সখ্য গড়ে তোলা এই প্রভাবশালী এখন সরকার পরিবর্তনের সুযোগে ভোল পাল্টাতে আরম্ভ করেছেন।
উল্লেখ্য, বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিআইবিএমের এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের উপস্থিতিতে সেলিম আর এফ হোসেন অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ব্ল্যাকমেইল করছে। নিয়োগ বদলি ও প্রমোশনের বিষয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের চাপের কথা উল্লেখ করেন ওই অনুষ্ঠানে।

অর্থনীতি
স্বস্তি ফেরেনি সবজি-পেঁয়াজে, মাছ-মুরগির দামও চড়া

বাজারে আগের তুলনায় কিছুটা কমলেও এখনও প্রায় বেশিরভাগ সবজি কিনতে গুনতে হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা। যা আগে আরও বেশি ছিল। অন্যদিকে, ব্রয়লার মুরগি, ডিম ও নানা ধরনের মুদি পণ্যের দাম আগের মতোই আছে। মাছ ও পেঁয়াজের দামও কিছুটা কমলেও স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে আসেনি।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে বেগুন ৭০–৮০ টাকা, পটল ৬০–৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, শসা ৫০–৬০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, কচুর চরা ৯০ থেকে ১০০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাউ ও জালি আকার ভেদে প্রতিপিচ ৫০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।
তবে বাজারে সবচেয়ে কম দামে পাওয়া যাচ্ছে আলু ও পেঁপে। এই দুটি সবজি প্রতি কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। তবে বাজারের পেঁয়াজের দাম সামান্য কমেছে। আগে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হলে এখন ৬৫ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে পাড়া-মহল্লায় এ দাম আরও অন্তত ৫ টাকা বেশি।
সবজির দাম বেশি হওয়ার কারণ জানিয়ে একজন সবজি বিক্রেতা বলেন, আরও কিছুদিন সবজির দাম এমন বাড়তি থাকবে। কারণ এখন বেশিরভাগ সবজির মৌসুম শেষ হয়েছে। বাজারে নতুন করে সবজি ওঠার আগ পর্যন্ত এমন বেশি দাম থাকবে। বাজারে নতুন সবজি ওঠা শুরু করলে ধীরে ধীরে সবকিছুর দাম কমে আসবে। বর্তমানে বাজারে সবজি চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। যে কারণে পাইকারি বাজারেই বেশি দামে সবজি কিনতে হচ্ছে। এর প্রভাব খুচরা বাজারগুলোতেও পড়েছে।
এদিকে, মাছের বাজারেও বেশ চড়াভাব দেখা গেছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বর্তমানে চাষের মাছের সরবরাহ কিছুটা কম। এতে নদীর কিছু মাছের দাম বেড়েছে।
বাজারে ইলিশসহ চিংড়ি মাছের দাম চড়া। প্রতি ৭০০ গ্রামের একহালি ইলিশ ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ ছাড়া এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ প্রতি পিস দুই থেকে তিন হাজার টাকা দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। ৪০০-৫০০ গ্রামের মাছ প্রতি কেজি ৮০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে, দাম বেড়ে প্রতি কেজি চাষের চিংড়ি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং নদীর চিংড়ি ১০০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। স্বাভাবিক সময়ে এর দাম কেজিতে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কম থাকে।
এ ছাড়া, কই, শিং, শোল, ট্যাংরা ও পুঁটির দাম বাড়তি। চাষের রুই, তেলাপিয়া ও পাঙ্গাশও আগের চেয়ে ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি চাষের রুই, কাতলা ৩৫০-৪২০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০-২৬০ টাকা ও পাঙ্গাশ ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে, বাজারে এখন মুরগি ও ডিমের দাম অপরিবর্তিত আছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি ১৭০ থেকে ১৮০ এবং সোনালি জাতের মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা দামে।
এদিকে চাল বিক্রেতারা জানিয়েছেন, ভারত থেকে এখন সরু নাজিরশাইল ও মোটা কয়েক পদের চাল আমদানি হচ্ছে। ওসব চালের দাম কমেছে। তবে আগের মতোই রয়েছে জনপ্রিয় মিনিকেট চালের দাম।
এখন বাজারে প্রতি কেজি নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৮৪ থেকে ৮৬ টাকায়, যা আগে ৯০-৯২ টাকা ছিল। অন্যদিকে, মোটা পায়জাম ও স্বর্ণা জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৬০ টাকা, যা কেজিপ্রতি ৪-৫ টাকা কমেছে। তবে মিনিকেট চাল আগের দামেই ৭৮ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সেগুনবাগিচা বাজারে সজিব রাইস এজেন্সির কর্ণধার সালমান হোসেন বলেন, ভারত থেকে প্রচুর চাল আসছে, তাই দাম কমছে। তবে দেশি যেগুলো মিনিকেট আছে, সেগুলো আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। আমদানি বাড়লে দাম আরও কমতে পারে।
তালতলা বাজারে চাল বিক্রেতা হোসেন আলী বলেন, মোকামে চালের দাম প্রতি বস্তায় (২৫ কেজি) ১০০ থেকে ১২০ টাকা কমেছে। এখন প্রতি বস্তা নাজিরের দাম ২০০০ টাকার মধ্যে এসেছে, যা আগে ২২০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল।
তবে বাজারে প্রচলিত প্রায় সব ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের দামই একই আছে। আবার পুরোনো কোনো চালের দামও এখনো কমেনি।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন পর বাজারে চালের দাম কমছে। বছরের শুরুতে চালের দাম বেড়েছিল, এরপর প্রায় চড়া ছিল বাজার।
অর্থনীতি
জুলাইয়ে বাণিজ্য ঘাটতি কমে ৫৪ কোটি ডলার

রেমিট্যান্স প্রবাহ ও রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধির প্রভাবে দেশের বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যে (ব্যালান্স অব পেমেন্ট–বিওপি) উন্নতি দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে সামগ্রিক বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৬৯ কোটি ৩০ লাখ ডলার। ফলে এক বছরে ঘাটতি কমেছে ১৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার বা ২১.৩৬ শতাংশ।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৭৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের জুলাইয়ে ছিল ৩৮২ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
অর্থাৎ রপ্তানি আয় বেড়েছে ২৫ শতাংশ। একই সময়ে আমদানি বেড়ে দাঁড়ায় ৬২৭ কোটি ডলারে, যা আগের বছর ছিল ৫২৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার। অর্থাৎ আমদানি বেড়েছে প্রায় ১৯.৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে আরো জানা যায়, বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ সামান্য বেড়ে ১৫০ কোটি ৫০ লাখ ডলার হয়েছে, যা গত অর্থবছরের জুলাইয়ে ছিল ১৪৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
অন্যদিকে আর্থিক হিসাবের ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১ কোটি ৮০ লাখ ডলারে, যা আগের অর্থবছরে ছিল ২৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে নেট এফডিআই বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৪ কোটি ডলারে, যা এক বছর আগে ছিল মাত্র ৩৮ কোটি ডলার। একই মাসে দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়ায় ২৯.৮০ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের জুলাইয়ে ছিল ২৫.৮২ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড (বিপিএম-৬) অনুযায়ী হিসাব করলে রিজার্ভ দাঁড়ায় ২৪.৭৮ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের জুলাইয়ে ছিল ২০.৩৯ বিলিয়ন ডলার।
এ সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪৭ কোটি ৮০ লাখ ডলারে, যা আগের বছরের জুলাইয়ে ছিল ১৯১ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এক বছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৯.৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ সামনের দিনগুলোতেও ধরে রাখা চ্যালেঞ্জ হবে। তা না হলে চাপ তৈরি হতে পারে।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম মনে করেন, নিয়মিত লেনদেনে উদ্বৃত্ত থাকলে ঋণ ছাড়াই চলা সম্ভব হয়।
তবে ঘাটতি থাকলে ঋণের ওপর নির্ভর করতে হয়। তাই দীর্ঘমেয়াদে চলতি হিসাবের স্থিতি ইতিবাচক রাখা জরুরি।
অর্থনীতি
তিন মাসে বিদেশি ঋণ বাড়লো ৭ বিলিয়ন ডলার

বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ দ্রুত বাড়ছে। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন- এই তিন মাসে বিদেশি ঋণ বেড়েছে প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার। পুরো ঋণ বৃদ্ধিই সরকারি খাতে হয়েছে, বিপরীতে বেসরকারি খাতে পরিশোধের পরিমাণ নতুন ঋণের চেয়ে বেশি থাকায় তাদের ঋণ সামান্য কমেছে।
সবমিলিয়ে জুন শেষে বৈদেশিক ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১১২ বিলিয়ন ডলারের বেশি, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে প্রায় ৮১ বিলিয়ন ডলার ঋণ বেড়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনকালে।
আলোচ্য সময়ে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা, এআইআইবি সহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা থেকে নতুন ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশ। যদিও বেসরকারি খাতে ঋণ কমেছে, উদ্যোক্তারা তুলনামূলক কম সুদের বিদেশি ঋণের দিকেই ঝুঁকছেন।
ডলারের সংকট মোকাবিলায় পূর্ববর্তী সরকার আমদানি নিয়ন্ত্রণ ও বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ বাড়ানোর মতো পদক্ষেপ নেয়, তবে রিজার্ভ পতন ঠেকানো যায়নি। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর রিজার্ভ স্থিতিশীল হয়েছে এবং বিনিময় হারও স্বাভাবিক হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তাদের মতে, প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি ও প্রত্যাশিত বৈদেশিক ঋণ প্রবাহ এর মূল কারণ।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বৈদেশিক মুদ্রার স্থিতিশীলতায় ঋণ গ্রহণের ঝুঁকি কমলেও সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত না হলে ভবিষ্যতে পরিশোধের চাপ তৈরি হতে পারে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, সরকারি খাতের ঋণ সবচেয়ে বেশি। প্রকল্প বাস্তবায়নে এসব ঋণের প্রয়োজন আছে। তবে আগের মতো অপচয় হলে তা দেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। যথাযথভাবে ব্যবহার করা গেলে ঋণ পরিশোধের সক্ষমতাও তৈরি হবে।
তিনি আরও বলেন, জিডিপির অনুপাতে ঋণ এখনো সহনীয়, কিন্তু বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের তুলনায় সুদ-আসল পরিশোধের চাপ অনেক বেড়ে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুন শেষে বৈদেশিক ঋণের স্থিতি দাঁড়ায় ১১২ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার, যা মার্চের তুলনায় ৭ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলার বেশি। ছয় মাস আগের ডিসেম্বরে এ পরিমাণ ছিল ১০৩ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার। তবে ২০২৪ সালের শেষ প্রান্তিকে ঋণ কিছুটা কমেছিল।
সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঋণ জুন শেষে দাঁড়ায় ৯২ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার, যা তিন মাসে প্রায় ৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে। বিপরীতে বেসরকারি খাতের ঋণ দাঁড়ায় ১৯ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার, তিন মাসে কমেছে ১১ কোটি ডলার। এ সময়ে স্বল্পমেয়াদি ঋণ সামান্য বাড়লেও অন্যান্য ঋণ পরিশোধ বেশি হওয়ায় সামগ্রিকভাবে স্থিতি কমেছে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০০৬ সালের শেষে চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বৈদেশিক ঋণ ছিল ১৯ বিলিয়ন ডলারের কম। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছরে তা বেড়ে হয় ২১ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
অর্থনীতি
১৭ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৭৭ কোটি ডলার

চলতি মাসের (সেপ্টেম্বর) প্রথম ১৭ দিনে প্রবাসীরা ১৭৭ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সেপ্টেম্বরের প্রথম ১৭ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৭৭ কোটি ডলার। অথচ, গত বছরের একই সময়ে এসেছিল ১৪৩ কোটি ডলার। বছর ব্যবধানে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ২৩ দশমিক ৭০ শতাংশ।
এছাড়া গত ১৭ সেপ্টেম্বর একদিনে প্রবাসীরা দেশে ৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।
চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ৬৬৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। বছর ব্যবধানে যা বেড়েছে ১৯ দশমিক ৭০ শতাংশ।
এর আগে, গত আগস্টে প্রবাসীরা ২৪২ কোটি ১৮ লাখ ৯০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। আর গত জুলাইয়ে দেশে এসেছিল ২৪৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।
উল্লেখ্য, ২০২৪-২৫ অর্থবছরজুড়ে প্রবাসীরা ৩০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৩২ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন, যা দেশের ইতিহাসে কোনো নির্দিষ্ট অর্থবছরে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়ের রেকর্ড।
অর্থনীতি
রোহিঙ্গাদের জন্য ৫ লাখ ইউরো দেবে নেদারল্যান্ডস

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য পাঁচ লাখ ইউরো সহায়তা দেবে নেদারল্যান্ডস।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকার নেদারল্যান্ডস দূতাবাস এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার প্রচেষ্টায় নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশকে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ প্রেক্ষাপটে আমরা আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে আমাদের বিশ্বস্ত অংশীদার ইউএনএইচসিআরকে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা এবং মানবিক সহায়তার জন্য পাঁচ লাখ ইউরো সহায়তা দেবে।