অর্থনীতি
দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন জানিয়েছেন দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। তিনি বলেন, কেবল সরকারের আশায় না থেকে আমাদের সবার একত্রে কাজ করতে হবে। আমরাও প্রতিটি পরিস্থিতি থেকে শিখছি। কারণ সরকার চলমান নৈরাজ্য চায় না। আমাদের শ্রমিকের সংখ্যা অনেক বেশি। গুটিকয়েক যারা এই নৈরাজ্য সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে, তারা এটিকে একটি সফট টার্গেট হিসেবে নিয়েছে। কিন্তু আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি, দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। আপনাদের সহযোগিতায় যা আরও দ্রুত এবং সুন্দর হবে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘প্রাইভেট সেক্টর আউটলুক: প্রত্যাশা ও অগ্রাধিকার’ শীর্ষক বাণিজ্য সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন বলেন, প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা। সরকার এই বিষয়ে অনেক বেশি সেনসিটিভ। এজন্য আমাদের সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।
শিল্পমালিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, অনেক জায়গায় শিল্পমালিকরা সমস্যাগুলো থেকে পৃথক হয়ে যাচ্ছেন। আমি আপনাদের অনুরোধ করবো, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আপনারাও যুক্ত হন। আপনারা যখন সরে আসেন তখন আগুনে ঘি ঢালার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, বর্তমানে অনেক ব্যবসায়ী সংগঠন। এগুলোকে রেশনালাইজ করতে হবে। আমাদের এতগুলো মন্ত্রণালয়েরও দরকার নেই। এগুলোকে কমিয়ে আনা অথবা একত্রিত করা যেতে পারে। একই সঙ্গে বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোকেও কমিয়ে আনতে হবে অথবা মার্জ করতে হবে।
এলডিসি গ্রাজুয়েশন সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের অবশ্যই এলডিসি গ্রাজুয়েশন করতে হবে। সেটা ২০২৬ না হয়ে ২০৩০ হতে পারে, সেটা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু আমাদের গ্রাজুয়েট হতেই হবে। আমরা কি তৈরি? হয়তো না। কিন্তু আমরা কি হতে পারি? আমি মনে করি হ্যাঁ। যদি আমরা যথাযথ নীতি তৈরি করতে পারি তাহলে সম্ভব।‘আজ হোক কাল হোক আমাদের বাণিজ্য উদার করতে হবে। আমরা যদি সাব-সেক্টরগুলো ভালোভাবে লক্ষ্য করি এবং পরিণামদর্শীভাবে নীতি নেওয়া শুরু করি তাহলে এটা সম্ভব। বিশ্ব বাংলাদেশকে রোল মডেল হিসেবে দেখতে চায়। আমাদের নিজেদের যোগ্যতা তৈরি করতে হবে। কারও পরিচয়ে নয়, নিজেদের জোরে কাজ করতে হবে।’
কর কাঠামো নিয়ে তিনি বলেন, যথাযথ কর কাঠামো নিতে হবে। কারণ সরকারের খরচ করার জন্য টাকা দরকার।
অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচনায় বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি এবং আম্বার গ্রুপের চেয়ারম্যান শওকত আজিজ রাসেল বলেন, ব্যাংকিং খাতকে চ্যানেলাইজড করতে হবে। যারা ব্যাংক লুট করেছে তাদের ভর্তুকি আমরা দেবো কেন? গত ১৫ বছরে যারা অডিট করেছে তাদের কারও সাজা হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজনকেও এখনো জবাবদিহির আওতায় আনা হয়নি।
ব্যবসার উন্নয়নে পলিসি ঠিক করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এখন এমন পলিসি হচ্ছে যার ফলে শিল্প উন্নতি করতে পারছে না। দেশের গ্যাসের দাম ৮-১০ টাকা, যা আমদানি করলে হয় ১৬ টাকা, কিন্তু সরকার রাখছে ৩০ টাকা। এভাবে চলতে থাকলে ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা মাঠে মারা যাবে।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আইনশৃঙ্খলা ঠিক করতে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে। নতুন এক সমস্যার নাম মামলা বাণিজ্য। এটির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এখন আমাদের পলিসি সাপোর্ট প্রয়োজন। তাহলেই ব্যবসা এগিয়ে যাবে।
এলডিসি গ্রাজুয়েশন লক্ষ্যমাত্রা স্থগিতের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এলডিসি গ্রাজুয়েশন অবিলম্বে স্থগিত করা হোক। আমরা বেঁচে থাকার সংগ্রামে আছি। তাই এটি স্থগিত করা প্রয়োজন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ছয় মাসে ৮০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বিপিসির: চেয়ারম্যান
আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড নিয়মের চেয়ে আমাদের জিটুজি পদ্ধতিতে প্রিমিয়াম প্রাইজ বেশি ছিল। জ্বালানি তেল সরবরাহকারীদের সঙ্গে আমরা নেগোশিয়েশন করে প্রিমিয়াম কমিয়ে এনেছি। প্রত্যেক আইটেমেই প্রিমিয়াম কমেছে। এতে আগামী ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) জ্বালানি আমদানির প্রিমিয়ামে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ব্যয় সাশ্রয় হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়ম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান (সচিব) মো. আমিন উল আহসান।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) কারওয়ান বাজার বিপিসির লিয়াজোঁ অফিসে ‘দেশের জ্বালানি নিরাপত্তায় বিপিসির ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান। এসময় বিপিসির সচিব শাহিনা সুলতানা, বিপিসির পরিচালক (বিপণন) কবীর মাহমুদ, পরিচালক (অপারেশন ও পরিচালন) অনুপম বড়ুয়া, সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার (হিসাব) এটিএম সেলিমসহ বিপিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিপিসির চেয়ারম্যান বলেন, আমরা প্রতিযোগিতামূলক ক্রয়াদেশ প্রদান এবং আলোচনার মাধ্যমে প্রিমিয়াম খরচ অনেকটা কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। গত জুলাই-ডিসেম্বরে প্রিমিয়াম খরচ ৮.৮৩ ডলারের নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। আগে জিটুজি ভিত্তিতে আনা জ্বালানি তেলে ১২.০৩ ডলার এবং দরপত্রের মাধ্যমে আনা তেলে ৯.৩২ ডলার পরিশোধ করা হতো। প্রিমিয়াম খরচ কমে যাওয়ায় বিদায়ী জুলাই-ডিসেম্বর মাসেও বিপুল পরিমাণ টাকা সাশ্রয় হয়েছে। এভাবে আমরা তেলের দাম কমিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। পাশাপাশি আমরা তেল সরবরাহকারী কম্পানির বকেয়া শূন্যে নামিয়ে এনেছি।
তিনি বলেন, ভ্যাট-ট্যাক্স দেওয়ার পর ডিজেলে লিটার প্রতি ১.৬৬ টাকা মুনাফা করছে। দাম কিছুটা কমানোর সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে ভারতের সঙ্গে এখনো আমাদের জ্বালানি তেলের দাম প্রতি লিটারে ২২ থেকে ২৫ টাকার মতো কম আছে। সাধারণত দুই দেশের মধ্যে জ্বালানি তেলের দরের পার্থক্য বেশি হলে পাচারের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। এ ছাড়া দেশের বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্যও একটি কৌশল প্রয়োগ করা হয়। হঠাৎ বেড়ে গেলে যাতে ভোক্তার উপর বড় চাপ না পড়ে।
চেয়ারম্যান আরও বলেন, চট্টগ্রাম-ঢাকা পাইপলাইন চালু হলে প্রিমিয়াম খরচ আরও কমে আসবে। পাইপলাইনটি চালু হলে সাগরে আসা বড় জাহাজ থেকে ডিজেল সরাসরি নারায়ণগঞ্জ ডিপোতে চলে আসবে। প্রকল্পটি জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ডিজেলের পাশাপাশি অল্প পরিমাণে অকটেনের ব্যবহার কমেছে। আগের অর্থবছরে অকটেনের ব্যবহার ছিল ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৫৫৭ টন, যা গত অর্থবছরে হয়েছে ৩ লাখ ৮৭ হাজার ২৫৬ টন। তবে ব্যবহার বেড়েছে উড়োজাহাজের জ্বালানি জেট-এ-১ এর। আগের বছরের তুলনায় ৬৯ হাজার ৪৯৪ টন ব্যবহার বেড়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৬৭ লাখ ৬১ হাজার ৩২০ টন জ্বালানি তেল ব্যবহৃত হয়েছে। মাত্র ৮ শতাংশ এসেছে দেশীয় উত্স থেকে, আর ৯২ শতাংশ জ্বালানি জোগান এসেছে আমদানি থেকে। ব্যবহৃত জ্বালানি তেলের মধ্যে ৬৩ শতাংশ হচ্ছে ডিজেল। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহৃত ফার্নেস অয়েল ১৪ শতাংশ।
জানা যায়, বর্তমানে বিপিসিকে সরকার টু সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে জ্বালানি তেল সরবরাহ করছে নয়টি প্রতিষ্ঠান। এমিরেটস ন্যাশনাল অয়েল কম্পানি, ইন্দোনেশিয়ার বিএসপি, ইউনিপেক, পেট্রো চায়না ইন্টারন্যাশনাল, ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন, পিটিটি ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং, কুয়েত পেট্রোলিয়ম কর্পোরেশন, মালয়েশিয়ার পেটকো ট্রেডিং লাবুয়ান কম্পানি ও ভারতের নুমালিগড় রিফাইনারি। এছাড়াও আন্তর্জাতিক দরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তেল সরবরাহ করছে আরও চারটি কম্পানি। ভিটল এশিয়া, ইউনিপেক, ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন ও পেট্রো চায়না ইন্টারন্যাশনাল।
বিপিসি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বছরে জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রায় ৭৪ লাখ মেট্রিক টন। মোট চাহিদার প্রায় ৫০ লাখ মেট্রিক টন ডিজেলই ব্যবহার হয়। বাকিটুকু চাহিদা পূরণ হয় পেট্রোল, অকটেন, কেরোসিন, জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েলসহ বিভিন্ন জ্বালানি তেলে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এলএনজি সরবরাহে সাত প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ বাড়লো
পেট্রোবাংলার সঙ্গে মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) সই করা সাতটি প্রতিষ্ঠানের এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) সরবরাহে মেয়াদ বৃদ্ধিসহ ১৬টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা এবং এলএসপি সফটওয়্যার ব্যবহারের মেয়াদ ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত বাড়ানোর একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা কমিটির সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় প্রস্তাবটিতে অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভা সূত্রে জানা গেছে, এমএসপিএ সই করা ২৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এলএসপি সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে ‘পিপিআর-২০০৮’-এর বিধি-৮৫ অনুযায়ী স্পট মার্কেট থেকে আন্তর্জাতিক দরপত্র অনুসরণে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে।
চুক্তি সই করা এসব প্রতিষ্ঠানে মধ্যে ৮টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর শেষ হয় এবং ৬টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ২০২৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে। নতুন ২৭টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এমএসপিএ সই প্রক্রিয়াধীন, যা তালিকাভুক্ত হতে আনুমানিক আরও ৪৫ দিন সময় প্রয়োজন।
এ অবস্থায় দেশের বিদ্যুৎ, শিল্প ও সার কারখানায় গ্যাসের জরুরি প্রয়োজন মেটানোর জন্য আন্তর্জাতিক ক্রয়ে এমএসপিএ সই করা বিদ্যমান ২৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ও এলএসপি সফটওয়্যার ব্যবহারের মেয়াদ ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত বাড়ানোর নীতিগত অনুমোদনের জন্য একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দেয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
কোরিয়া থেকে ৬৯৩ কোটি টাকার এলএনজি কিনবে সরকার
জ্বালানি চাহিদা মেটাতে আগামী ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের জন্য আরও এক কার্গো লিকুইডিফাইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করবে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। আন্তর্জাতিক কোটেশনে অংশ নিয়ে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কোরিয়ার পসকো ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন এই এক কার্গো এলএনজি সরবরাহ করবে। প্রতি এককের দাম ১৪.৬৯০০ মা.ডলার হিসেবে এক কার্গো এলএনজি ক্রয়ে ব্যয় হবে ৬৯২ কোটি ৯৯ লাখ ১৯ হাজার ৩৬০ টাকা।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় প্রস্তাবটিতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, আগামী ২০২৫ সালের জানুয়ারি-ডিসেম্বর সময়ে স্পট মার্কেট থেকে ৫৯ কার্গো এলএনজি আমদানির লক্ষ্যে গত ৪ নভেম্বর তারিখে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ অনুমোদন দিয়েছে।
আগামী ২০২৫ সালের ১৬-১৭ জানুয়ারি ২০২৫ সময়ে ১ কার্গো এলএনজি ক্রয়ের প্রস্তাব প্রেরণ করেছে। গত ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর তারিখে কোটেশন আহ্বান করে এমএসপিএ স্বাক্ষরকারী ২৩ প্রতিষ্ঠানকে এলএসপি সফটওয়্যারের মাধ্যমে কোটেশন দাখিলের জন্য ই-মেইলে চিঠি পাঠানো হয়।
দর প্রস্তাবকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক নির্ধারিত সময়ে দাখিলকৃত ৩টি কোটেশন দরপত্র ও প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি কারিগরি ও আর্থিকভাবে মূল্যায়ন করে সুপারিশ সম্বলিত একটি প্রতিবেদন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নিকট দাখিল করে। ৩টি কোটেশনের মধ্যে ৩টি কোটেশনই রেসপন্সিভ হয়।
এর মধ্যে কোরিয়ার পসকো ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম ১৪.৬৯০০ মা.ডলার উল্লেখ করে সর্বনিম্ন দরদাতা হয়। অন্য ২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এক্সেলেরায়েট এনার্জি ১৪.৮৪০০ মা.ডলার উল্লেখ করে ২য় এবং সিঙ্গাপুরের পেট্রোচায়না ইন্টারন্যাশনাল ১৪.৮৬০০ ডলার উল্লেখ করে ৩য় দরদাতা হয়।
রেসপন্সিভ ৩টি প্রতিষ্ঠানের দাখিল করা সব বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১ম সর্বনিম্ন প্রস্তাবিত একক দর ১৪.৬৯০০ মা. ডলার/এমএমবিটিইউ যা কোরিয়ার পসকো ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন দাখিল করেছে। উক্ত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরবরাহতব্য এলএনজির পরিমাণ ৩২,০০,০০০ এমএমবিটিইউ। স্বাক্ষরিত এমএসপিএ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৫% কম-বেশি বিবেচনায় সরবরাহতব্য এলএনজির পরিমাণ সর্বোচ্চ ৩৩,৬০,০০০ এমএমবিটিইউ হতে পারে। প্রতি এমএমবিটিইউ ১৪,৬৯০০ মা.ডলার হিসেবে ৩৩,৬০,০০০ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ ৪৯,৩৫৮,৪০০,০০ মা.ডলার (ভ্যাট এবং এআইটি ব্যতীত)।
২২ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখের সোনালী ব্যাংক লিমিটেড এর মুদ্রা বিনিময় হার ১ মার্কিন ডলার ১২০.০০ টাকা হিসাবে এ অর্থের পরিমাণ ৫৯২ কোটি ৩০ লাখ ৮ হাজার টাকা (ভ্যাট এবং এআইটি ব্যতীত)। এলএনজি আমদানিতে ১৫% ভ্যাট এবং ২% এআইটি প্রযোজ্য বিবেচনায় সর্বমোট ১৭% ভ্যাট এবং এআইটি এর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ ১০০ কোটি ৬৯ লাখ ১১ হাজার ৩৬০টাকা। অর্থাৎ ৩৩,৯০,০০০ এমএমবিটিইট এলএনজি আমদানিতে প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ হবে সর্বমোট (৫৯২,৩০,০৮,০০০,০০+১০০,৬২,১১,১৯,৩৬০.০০)= ৬৯২ কোটি ৯৯ লাখ ১৯ হাজার ৩৬০ টাকা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
৩০ হাজার টন সার কিনবে সরকার, ব্যয় ৬৩৪ কোটি টাকা
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জন্য রাশিয়া, সৌদি আরব, মরক্কো এবং দেশীয় প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে এক লাখ ৩০ হাজার টন সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরমধ্যে ৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার, ৩০ হাজার টন এমওপি সার এবং ডিএপি সার রয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৬৩৪ কোটি ৩২ লাখ ১২ হাজার টাকা।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়। সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য সৌদি আরবের কৃষি পুষ্টি কোম্পানি (সাবিক) থেকে ১৪তম লটের ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৫ কোটি ৮৮ লাখ ১২ হাজার টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ৩৪৯ দশমিক ৬৭ মার্কিন ডলার।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জন্য কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) বাংলাদেশের কাছ থেকে ১০ম লটে ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ৩৪৩ দশমিক ২৫ মার্কিন ডলার।
রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে রাশিয়ার প্রোডিন্টরগ ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন- বিএডিসির মধ্যে সই হওয়া চুক্তির আওতায় ৬ষ্ঠ লটের ৩০ হাজার টন এমওপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন এ সার আনবে। এতে ব্যয় হবে ১০৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ৪৮৯ দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলার।
রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মরক্কো ওসিপি নিউট্রিক্রপস এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের মধ্যে হওয়া চুক্তির আওতায় ১০ম (ঐচ্ছিক-১ম) লটের ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন এ সার আনবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮০ কোটি ৫৬ হাজার টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ৫৮৪ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ব্যাপক দুর্নীতি দেশের অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করেছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতা এবং ব্যাপক দুর্নীতি দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য চাপ সৃষ্টি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামে এক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির বলেন, অবৈধ আর্থিক প্রবাহ, কিছু লোকের হাতে সম্পদের কেন্দ্রীকরণ, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতা এবং ব্যাপক দুর্নীতি দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য চাপ সৃষ্টি করেছে।
তিনি বলেন, ছাত্র-নাগরিক বিদ্রোহের মাধ্যমে গঠিত নতুন সরকার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই নতুন যাত্রায় আইসিএমএবি’র সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করছি।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম উদ্দিন, এনবিআরের চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) সচিব মো. আবদুর রহমান খান, বিএসআরএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আলী হোসেন আকবর আলী এবং আইসিএমএবির প্রেসিডেন্ট ও বিল্ডকন কনসালটেন্সি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহতাব উদ্দিন আহমেদ।
এছাড়া আইসিএমএবির সদস্য, শিক্ষাবিদ, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, আর্থিক ও কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।