স্বাস্থ্য
কোমর ব্যাথা: কারণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ

কোমর ব্যাথা এক অত্যন্ত সাধারণ সমস্যা, যা একবার না একবার অনেকের জীবনেই দেখা দেয়। কাজের চাপ, ভুল ভঙ্গি, আঘাত, অথবা কোনো রোগের কারণে কোমর ব্যাথা হতে পারে। এই ব্যাথা কখনো কখনো কয়েকদিনের মধ্যেই সেরে যায়, আবার কখনো কখনো দীর্ঘস্থায়ী হয়ে পড়তে পারে।
কোমর ব্যাথার কারণ:
•ভুল ভঙ্গি: দীর্ঘক্ষণ একই ভঙ্গিতে বসে থাকা, ভারী জিনিস তোলা, অথবা অনুপযুক্ত ভঙ্গিতে ঘুমানোর কারণে কোমরের পেশী ও স্নায়ুতে টান পড়ে এবং ব্যাথা হয়।
•পেশির টান: কোমরের পেশীতে টান পড়লে তীব্র ব্যাথা হয়।
•ডিস্ক সমস্যা: মেরুদণ্ডের ডিস্ক ফেটে গেলে বা স্লিপ হয়ে গেলে কোমর ব্যাথা হতে পারে।
•আর্থ্রাইটিস: প্রদাহজনিত রোগ, যেমন অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের কারণে কোমর ব্যাথা হতে পারে।
•স্পনডাইলোলিস্থিসিস: মেরুদণ্ডের একটি কশেরুকা আরেকটি কশেরুকার উপর সরে গেলে এই সমস্যা হয়।
•স্পনডাইলাইটিস: মেরুদণ্ডের জয়েন্টে প্রদাহ হওয়াকে স্পনডাইলাইটিস বলে।
•কিডনি বা মূত্রথলির সমস্যা: কিডনি বা মূত্রথলির সংক্রমণের কারণেও কোমর ব্যাথা হতে পারে।
•ক্যান্সার: কম ক্ষেত্রে, কোমরের ক্যান্সারের কারণেও ব্যাথা হতে পারে।
কোমর ব্যাথার লক্ষণ:
•তীব্র বা হালকা কোমর ব্যাথা
•কোমর থেকে পা পর্যন্ত ব্যথা ছড়িয়ে পড়া
•কোমর নড়াচড়া করতে কষ্ট হওয়া
•পা বা পায়ের আঙুল অসাড় হয়ে যাওয়া
কোমর ব্যাথার চিকিৎসা:
•দেখাশুনা: বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, কোমর ব্যাথা নিজে থেকেই কয়েকদিনের মধ্যে সেরে যায়। পর্যাপ্ত বিশ্রাম, গরম পানি সেকে স্বস্তি পাওয়া যায়।
•ফিজিওথেরাপি: ফিজিওথেরাপি ব্যায়ামের মাধ্যমে কোমরের পেশী শক্তিশালী করা হয় এবং ব্যাথা কমাতে সাহায্য করা হয়।
•ওষুধ: ব্যথানাশক ওষুধ, পেশী শিথিলকারী ওষুধ, এবং স্টেরয়েড ইনজেকশন দেওয়া হতে পারে।
•সার্জারি: খুবই জটিল ক্ষেত্রে, সার্জারির মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়।
কোমর ব্যাথা প্রতিরোধ:
•সঠিক ভঙ্গি: দাঁড়ানো, বসা, এবং ঘুমানোর সময় সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখুন।
•নিয়মিত ব্যায়াম: নিয়মিত ব্যায়াম করলে কোমরের পেশী শক্তিশালী হয় এবং ব্যাথার সম্ভাবনা কমে যায়।
•ভারী জিনিস তোলার সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন: ভারী জিনিস তোলার সময় গোড়ালি থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে শরীর সোজা করে তুলুন।
•স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন: অতিরিক্ত ওজন কোমরের উপর চাপ বাড়িয়ে দেয়।
•মুক্ত থাকুন: মানসিক চাপ কোমর ব্যাথার কারণ হতে পারে।
কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন:
•যদি কোমর ব্যাথা কয়েক দিনের মধ্যে না কমে।
•যদি ব্যাথা খুব তীব্র হয়।
•যদি ব্যাথার সাথে জ্বর, অসাড়তা, বা দুর্বলতা অনুভূত হয়।
উপসংহার:
কোমর ব্যাথা একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, একে উপেক্ষা করা উচিত নয়। সঠিক চিকিৎসা এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে কোমর ব্যাথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
লেখা- ডা. মো. নাসির উদ্দিন। এমবিবিএস, এমএস (নিউরোসার্জরী), এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম।

স্বাস্থ্য
ডেঙ্গুতে একদিনে প্রাণ গেলো আরও ৬ জনের

বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত (একদিনে) ডেঙ্গু আক্রান্ত ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সঙ্গে এই ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নতুন করে ৬৪৭ জন ভর্তি হয়েছেন।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে ঢাকা সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৪১ জন। বাকিরা ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন এবং ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ৫৭৫ জন। এর আগে ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়। ওই বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন মোট তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।
স্বাস্থ্য
সপ্তাহে ২ দিন হাসপাতালে যেতে পারবেন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা

সরকারি হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের অবাধ বিচরণের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এখন থেকে সপ্তাহে দুই দিনে মোট পাঁচ ঘণ্টা চিকিৎসকদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন তারা।
গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম ফজলুল হক খান স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে এই নতুন নির্দেশনা জারি করা হয়। দেশের সব সরকারি হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের পরিচালকদের কাছে পাঠানো এই নির্দেশনায় মোট আটটি বিষয় উল্লেখ করা হলেও সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণের ওপর।
পরিপত্রের ৬ নম্বর নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এখন থেকে সপ্তাহে শুধু দুই দিন সোমবার ও বৃহস্পতিবার ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা চিকিৎসকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন। সাক্ষাতের জন্য দুপুর ১২টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
এই নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে কোনো ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি সরকারি হাসপাতালের সীমানার মধ্যে অবস্থান করতে পারবেন না বলেও নির্দেশনায় উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে। আর, সাক্ষাতের সময় সব প্রতিনিধিকে অবশ্যই নিজ নিজ কোম্পানির দেওয়া পরিচয়পত্র দৃশ্যমানভাবে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। সেই সঙ্গে, কোনোভাবেই রোগীর কোন তথ্য সংগ্রহ বা প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলতে পারবেন না।
দীর্ঘদিন ধরেই হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের চেম্বারগুলোতে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের ভিড়ে রোগীদের ভোগান্তি এবং কর্মপরিবেশ নষ্ট হওয়ার অভিযোগ ছিল। তাদের বিরুদ্ধে অপ্রয়োজনীয় ওষুধ বা নির্দিষ্ট কোম্পানির ওষুধ লিখতে চিকিৎসকদের প্রভাবিত করারও অভিযোগ রয়েছে।
অন্যান্য নির্দেশনার মধ্যে আছে-বেসরকারি ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্যাডে ব্যবস্থাপত্র না লেখা এবং হাসপাতালে সরবরাহ থাকা ওষুধ বা পরীক্ষা বাইরে থেকে করাতে না বলা।
এসব ছাড়াও, সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে কোনো বেসরকারি সিল ব্যবহার করা যাবে না। তবে বিজ্ঞাপন বিহীন জেনেরিক নামের সিল ব্যবহার করা যাবে। বেসরকারি ওষুধ কোম্পানির সরবরাহ করা ওষুধের তালিকা টেবিলে রাখা যাবে না।
স্বাস্থ্য
একদিনে ডেঙ্গুতে আরও ৬ জনের মৃত্যু

২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৮৬ জন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে তিনজন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে একজন এবং ময়মনসিংহ ও রাজশাহী বিভাগে একজন করে মারা গেছেন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১০৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫৮ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১০৪ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আজকের সর্বোচ্চ ১৪৪ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ১০৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১২ জন, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৪ জন, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) দশজন ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) দুইজন রয়েছেন।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬০৯ জনসহ চলতি বছর এ পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৭৪৫ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন।
চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ হাজার ৬৮২ জন। এর মধ্যে ৬৩ দশমিক ৮ শতাংশ পুরুষ ও ৩৬ দশমিক ২ শতাংশ নারী।
স্বাস্থ্য
ডেঙ্গুতে আরও ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৬২৫

ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে ডেঙ্গু নিয়ে সারাদেশে ৬২৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৯৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১২ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১৪ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৮৭ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৩০ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৫ জন, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩৭ জন, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৪ চন ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) তিন জন রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৬০৪ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজার ১৩৬ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৩৯ জন এবং শনাক্ত রোগী বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬ হাজার ৯৬ জনে।
বাংলাদেশে এক বছরে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ২০২৩ সালে। ২০২৪ সালে ১ লাখ ১ হাজার ২১১ জন, ২০২২ সালে ৬২ হাজার ৩৮২ জন, ২০২১ সালে ২৮ হাজার ৪২৯ জন, ২০২০ সালে ১৪০৫ জন এবং ২০১৯ সালে ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।
স্বাস্থ্য
ফের বার্ড ফ্লু আতঙ্ক, আক্রান্ত ৪ শিশু

ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু। দেশে চার শিশুর শরীরে এ রোগের ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তাদের বয়স এক থেকে আট বছর। অবশ্য, বর্তমানে চিকিৎসা নিয়ে তারা সবাই সুস্থ আছে।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আইইডিসিআর-এর পরিচালক বলেন, বাংলাদেশে প্রতিরোধ জোরদারে গবেষণা কৌশল প্রণয়ন করেছে সরকার। এ বিষয়ে গত বুধবার আইসিডিডিআর,বি, সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়, এনজিও এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার অংশীদারদের নিয়ে একটি গোলটেবিল বৈঠক করেছে, যেখানে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং বাংলাদেশের জন্য জাতীয় গবেষণা কৌশল চূড়ান্ত করার বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
সভায় এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার সংক্রমণ পর্যবেক্ষণ, ঝুঁকির কারণ চিহ্নিতকরণ, ভাইরাস হোস্ট সম্পর্ক, প্রাণী-মানব সংযোগ এবং টিকার কার্যকারিতা নিরীক্ষার জন্য আরও শক্তিশালী পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার প্রয়োজনীয়তা জোরালোভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
সভায় বলা হয়, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা কেবল নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের সমস্যা নয়। ২০২৫ সালে এটি আবারও মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হচ্ছে এবং ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার মতো মহাদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী আটটি দেশের মোট ৩০ জনের এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু মানুষের মধ্যে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৪ জন শনাক্ত হয়েছে কম্বোডিয়ায় এবং বাংলাদেশে শনাক্ত হয়েছে চারজন।
উদ্বেগজনক বিষয় হলো, বাংলাদেশে ২০০৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মোট ১২ জন মানুষের মধ্যে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা শনাক্ত হলেও ২০২৫ সালের প্রথম আট মাসেই শনাক্ত হয়েছে চার জন। দেশে শনাক্ত হওয়া মোট ১২ জনের মধ্যে ৭ জনই ছিল পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু। ২০২৫ সালে শনাক্ত হওয়া চারজনই ছিল এক থেকে আট বছর বয়সী শিশু, যা শিশুদের এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির প্রতি নির্দেশ করে।
আইসিডিডিআর,বির গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ঢাকা ও গাজীপুরের লাইভ বার্ড মার্কেট বা জীবিত হাঁস-মুরগির বাজার থেকে সংগৃহীত বাতাসের নমুনার ৯১ শতাংশ এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা পজিটিভ। এসব বাজারকে মানুষের মাঝে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার জন্য উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ২০২৪-২০২৫ সালে এসব বাজারে পাওয়া মৃত মুরগির প্রায় অর্ধেকই এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার সাবটাইপ এইচফাইভে আক্রান্ত ছিল।
গবেষণার অংশ হিসেবে করা একটি সিস্টেমেটিক রিভিউতে দেখা যায়, পোলট্রি খাতে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ছড়িয়ে পড়ার প্রধান ঝুঁকির কারণ হচ্ছে সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থার বড় ধরনের ঘাটতি। এর মধ্যে রয়েছে অসুস্থ পাখিকে আলাদা না রাখা, বর্জ্য সঠিকভাবে নিষ্পত্তি না করা এবং পোলট্রি রাখার জায়গায় অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্যবিধি।