অর্থনীতি
দুই সপ্তাহে রিজার্ভ বাড়ল ৩৫ কোটি ৫৯ লাখ ডলার
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দুই সপ্তাহে ব্যবধানে বেড়েছে ৩৫ কোটি ৫৯ লাখ ডলার। আইএমএফের হিসাবপদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী, হালনাগাদ রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৮৭৩ কোটি ৫৯ লাখ ৭০ হাজার ডলারে।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দুই মাসের বিল পরিশোধের পর নভেম্বরের মাঝামাঝিতে ১৯ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। আকুর বিল পরিশোধ শেষে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় এক হাজার ৮৪৩ কোটি ৭০ হাজার ডলার বা ১৮ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু, প্রবাসী আয় ধারাবাহিকভাবে বজায় থাকায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবার বাড়তে শুরু করেছে।
সবশেষ হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, ২৮ নভেম্বর রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৮৭৩ কোটি ৫৯ লাখ ৭০ হাজার ডলার।
একই সময় বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত বিভিন্ন তহবিলসহ মোট রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৪৪৫ কোটি ৬২ লাখ ১০ হাজার ডলার। তবে, নিট রিজার্ভের পরিমাণ এখনও ১৪ বিলিয়ন ডলারের নিচে।
প্রসঙ্গত, প্রতি দুই মাস পরপর আকুর বিল পরিশোধ করতে হয়। যার পরিমাণ প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার। কম প্রয়োজনীয় বা বিলাসী পণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণ করার ফলে আমদানি ব্যয় কমে আসে। এর প্রভাব পড়ে আকু অঞ্চলের রিজার্ভেও। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর দুই মাসে বাংলাদেশকে এক দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হয়েছে।
নভেম্বর-ডিসেম্বরের আকু অঞ্চলের আমদানি বিল পরিশোধ করতে হবে জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে। সে সময় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবার দেড় বিলিয়ন ডলার কমবে। অবশ্য তার আগে বর্তমান রিজার্ভ বেড়ে আবার ২০ বিলিয়ন ডলার স্পর্শ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আকু হলো আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তির ব্যবস্থা। যার মাধ্যমে বাংলাদেশ ছাড়াও ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তানের মধ্যকার লেনদেনের দায় পরিশোধ করা হয়। ইরানের রাজধানী তেহরানে এর সদর দপ্তর। এ ব্যবস্থায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি দুই মাস অন্তর আমদানির অর্থ পরিশোধ করে থাকে।
আকু অঞ্চলের আমদানি-রপ্তানির ব্যয় নির্বাহ ছাড়া দৈনন্দিন ভিত্তিতে বিদেশি ঋণ ও ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হয় বাংলাদেশকে। সরকারের জরুরি আমদানি ব্যয় পরিশোধে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করতে হবে। এর ফলে ডলার হ্রাস পেতে থাকে। অন্যদিকে বৈদেশিক ঋণ, অনুদান, প্রবাসী আয়ের নির্দিষ্ট অংশ বাংলাদেশ ব্যাংকে রিজার্ভ হিসাবে জমা হয়। মূলত, প্রবাসী আয় বৃদ্ধির ধারা বজায় থাকায় গত ১৫ দিনে ৩০ কোটি ৫৯ লাখ ডলার বেড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
অর্থপাচার করে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ফতুর করা হয়েছে: নিউইয়র্ক টাইমস
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের হিসাবে শেখ হাসিনার গত ১৫ বছরের শাসনামলে কেবল বাংলাদেশের আর্থিক খাত থেকেই ১৭ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে। তবে অন্যান্য অর্থনীতিবিদের হিসাবে শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে, তা ৩০ বিলিয়ন বা ৩ হাজার কোটি ডলারের বেশি হতে পারে।
নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাচার হওয়া টাকার প্রকৃত পরিমাণ কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। বিভিন্ন ধরনের আর্থিক হিসাব-নিকাশ করে আহসান মনসুর বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে তার সহযোগীরা বাংলাদেশের ব্যাংক খাত থেকে যে পরিমাণ অর্থ লুট করেছে, তা কার্যত পৃথিবীর আর্থিক ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এতে বাংলাদেশের অর্থনীতির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।
মার্কিন এই সংবাদমাধ্যমের অনলাইন সংস্করণে আজ বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়েছে গত অক্টোবরে। আর চলতি সপ্তাহে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিষয়ক শ্বেতপত্র কমিটি বলেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে সার্বিকভাবে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অবৈধভাবে পাচার হয়েছে।
আহসান মনসুর নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, সর্বোচ্চ রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষ বুঝতে পেরেছিল, লুটপাট করার জন্য সবচেয়ে ভালো জায়গা হচ্ছে ব্যাংক। এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো শত শত কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ বিভিন্ন কোম্পানির নামে ঋণ দিয়েছে, যে কোম্পানিগুলোর অনেকগুলোর আদতে কোনো অস্তিত্বই নেই। এই টাকাও কখনো সম্ভবত ব্যাংকে ফিরে আসবে না; এই অর্থের একটি বড় অংশ দেশ থেকে অবৈধভাবে বাইরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হওয়ার আগে ২৭ বছর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে (আইএমএফ) কাজ করছেন আহসান মনসুর। তিনি বলেন, ব্যাংকের পুরো পরিচালনা পর্ষদ হাইজ্যাক করা হয়েছিল। তার ভাষ্য, বিশ্বের অন্য কোনো দেশে সরকারের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ এভাবে গুণ্ডা-মাস্তানদের সহযোগিতায় পুরো ব্যাংক খাতে এমন পদ্ধতিগতভাবে ডাকাতি করেছে, এমন ঘটনা তিনি আর কোথাও দেখেননি।
সংবাদে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে এখনো রাজনৈতিক প্রতিহিংসার পালা চলছে, গণসহিংসতাও দেখা যাচ্ছে। অর্থনীতি প্রসঙ্গে আহসান মনসুর বলেন, আগামী বছর অর্থনীতির আকাশে আরো কালো মেঘের ঘনঘটা থাকবে। এরপর অর্থনীতির আকাশ পরিষ্কার হতে শুরু করবে।
শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে গেছেন। তার ভাগ্যে কী আছে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, তাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে। এর মধ্যে শেখ হাসিনার অন্যতম সহযোগী সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের তদন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের নির্বাহী পরিচালক এ কে এম এহসান। সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে এখনো অভিযোগ গঠন করা হয়নি। আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ‘উইচ হান্ট’ করা হচ্ছে, তিনি এরর বাইরে নন।
নিউইয়র্ক টাইমস শেখ হাসিনা ও সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। ঢাকায় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় খালি পড়ে আছে। এরপর তারা শেখ হাসিনার মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সফল হয়নি।
ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল মান্নানের পদত্যাগের ঘটনা সবিস্তারে তুলে ধরেছে নিউইয়র্ক টাইমস। সংবাদে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি আর দশটা সাধারণ দিনের মতো আব্দুল মান্নান কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন। পথিমধ্যে তিনি একটি ফোন কল পান। কলটি করেছিলেন সামরিক গোয়েন্দা দপ্তরের প্রধান। তাকে বলা হয়, গাড়ি ঘুরিয়ে তিনি যেন সংস্থাটির সদর দপ্তরে চলে আসেন।
গত অক্টোবর মাসে আব্দুল মান্নান নিউইয়র্ক টাইমসকে সেই ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন। কার্যালয়ে যাওয়ার পর সামরিক গোয়েন্দারা আব্দুল মান্নানের ফোন, ঘড়ি ও ওয়ালেট রেখে দেন। এরপর গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান আব্দুল মান্নানের দীর্ঘ ক্যারিয়ারের বিবরণ দেন; বাংলাদেশের ব্যাংক খাতকে তিনি যে গ্রামীণ দরিদ্র মানুষের কাছে নিয়ে গেছেন, সে জন্য তার প্রশংসা করেন।
আব্দুল মান্নান ভাবছিলেন, তার সময়টা বোধ হয় বৃথা যাচ্ছে। কিন্তু এরপরই তাকে ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগের চিঠিতে সই করতে বলা হয়। গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান তাকে বলেন, এই আদেশ দেশের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের কাছে থেকে এসেছে, অর্থাৎ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু তিনি প্রথমে পদত্যাগ পত্রে সই করতে রাজি হননি।
তিনি বলেন, গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তাকে মৌখিকভাবে রাজি করানোর চেষ্টা করেন। এরপর তাকে গোয়েন্দা প্রধানের কার্যালয় থেকে আরেকটি স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।
আব্দুল মান্নান বলেন, আমি যে ধরনের মানুষ, তাতে ওই সময়ে আমাকে যে অপমানজনক পরিস্থিতির মধ্যে ফেলা হয়েছিল, তার বিবরণ দেওয়া সম্ভব নয়। এরপর তিনি সময়ের হিসাব ভুলে যান এবং একপর্যায়ে জানতে পারেন, দুপুরের আগে আগে তিনি পদত্যাগ পত্রে সই করেছেন। এরপর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরবর্তী আট বছর তিনি কার্যত নির্বাসনে ছিলেন; এখন তিনি আবার একটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান হয়েছেন।
আব্দুল মান্নান ও আহসান মনসুর একই সুরে বলেন, ওই ঘটনার পর এস আলম গোষ্ঠী ইসলামী ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ কব্জা করে। এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা সাইফুল আলম ট্রেডার হিসেবে ব্যবসা শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি বিশেষ করে শেখ হাসিনার আমলে জ্বালানি, আবাসন খাতসহ বিভিন্ন খাতে ব্যবসা সম্প্রসারণ করেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দাবি, এস আলম গোষ্ঠী অন্যান্য গোষ্ঠীর সঙ্গে আঁতাত করে শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশের ব্যাংক খাত খালি করে দেওয়ার চক্রান্ত করেছিল।
হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএফআইইউর নির্বাহী পরিচালক এ কে এম এহসান। ইসলামী ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংক এস আলম গোষ্ঠীর হাতে যাওয়ার পর নামে-বেনামে বিভিন্ন কোম্পানিকে ঋণ দেওয়া হয়েছে, যে ঋণের বড় অংশ আর ফেরত আসেনি। ফলে সেগুলো খেলাপি হয়ে গেছে।
নিউইয়র্ক টাইমসের সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে অনেক ব্যাংক এখন লাইফ সাপোর্টে আছে। এমনকি যেসব ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা ভালো, তারাও সেভাবে ঋণ দিতে পারছে না, এমনকি আমানতকারীদের টাকা সব সময় ফেরত দিতে পারছে না। আমানতকারীদের তারা মাঝেমধ্যে টাকা তোলার সুযোগ দিচ্ছে।
বাংলাদেশ থেকে যে টাকা নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সেই টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। শেখ হাসিনার দলের অনেক সদস্যের বিরুদ্ধে অর্থ-পাচারের মামলা হয়েছে, যে অর্থ মূলত আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে পাচার করা হয়েছে।
এর মাধ্যমে যে কেবল কিছু মানুষের পকেট ভারী হয়েছে তা নয়, এতে বাংলাদেশের মুদ্রার দরপতনও হয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর থেকে বাংলাদেশ থেকে এই অর্থ-পাচারের গতি বাড়তে থাকে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে বাংলাদেশের মুদ্রার বড় ধরনের দরপতন হয়। আমদানি মূল্য অনেকটা বেড়ে যায়। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় বড় ধরনের লোডশেডিংয়ের মুখে পড়ে বাংলাদেশ।
অনেক ব্যাংকে নগদ অর্থের সংকট আছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা পুরো বেতন তুলতে হিমশিম খাচ্ছেন। এমনকি যেদিন বেতন দেওয়া হয়, সেদিন তারা পুরো টাকা তুলতে পারেননি, এমন পরিস্থিতি দেখা গেছে।
ওষুধ কোম্পানি টেকনো ড্রাগ কর্মী ছাঁটাই করতে বাধ্য হয়েছে। এই কোম্পানির সহমহাব্যবস্থাপক মাজেদুল করিম নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, নিম্ন আয়ের কর্মীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কর্মীরা তাঁর কাছে অভিযোগ করেছেন, ব্যাংক টাকা দিতে পারছে না, সে কারণে কোম্পানি বাধ্য হয়ে নগখ টাকায় মজুরি পরিশোধ করছে। তিনি আরো বলেন, তার নিজের ডেবিট কার্ড দিয়েও টাকা তোলা যাচ্ছে না।
আহসান মনসুর বলেন, এ বছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির বছর নয়। তবে মূল্যস্ফীতির হার কমে আসছে এবং প্রবাসী আয়প্রবাহ বাড়ছে। আমাদের এ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে।
তিনি আশাবাদী, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বাংলাদেশের মুদ্রা স্থিতিশীল করতে অরো তিনশ’ কোটি ডলার সহায়তা দেবে। ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
নভেম্বরে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১৫.৬৩ শতাংশ
টানা দুই মাস ধরে বাড়তে শুরু করেছে দেশের পণ্য রপ্তানি। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে উৎপাদন খাতে যে ধাক্কা লেগেছে তা কাটিয়ে উঠছে এই খাত। নভেম্বরে রপ্তানি আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেড়েছে।
আজ বুধবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানায় ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো- ইপিবির হিসেবে, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাস অর্থ্যাৎ জুলাই থেকে নভেম্বরে মোট রফতানি হয়েছে এক হাজার ৯৯০ কোটি ৬০ লাখ ডলারের পণ্য।
গত বছরের একই সময়ের তুলনায় যা বেড়েছে পৌঁনে ১২ শতাংশ। নভেম্বরে শুধু তৈরি পোশাক খাতে রফতানি আয় এসেছে ৩৩০ কোটি ৬২ লাখ ডলার। বছর ব্যবধানে পোশাক খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ দশমিক ২৫ শতাংশ।
এই সময়ে কৃষি খাতের রফতানি বেড়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ এবং উৎপাদনমুখী শিল্পের রফতানি বেড়েছে ১৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। হোমটেক্সাটাইলে বেড়েছে প্রায় ২১ শতাংশ।কিছুটা কমেছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের পরিমাণ।
চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে তৈরি পোশাক খাতে রফতানি হয়েছে এক হাজার ৪৩৪ কোটি ৬৫ লাখ ডলারের পণ্য। বেড়েছে প্রায় সাড়ে ১২ শতাংশ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
১৫৫ কোটি টাকার চিনি ও মসুর ডাল কিনবে সরকার
১৫৫ কোটি ৯০ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে দেশের দুই প্রতিষ্ঠান থেকে ১৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি ও মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ৫ হাজার টন চিনি ও ১০ হাজার টন মসুর ডাল রয়েছে। স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র (জাতীয়) পদ্ধতিতে এসব পণ্য ক্রয় করা হবে।
আজ বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’র ১৫ তম বৈঠকে পৃথক দুইটি প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র (জাতীয়) পদ্ধতিতে সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কাছ থেকে ৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) জন্য এ চিনি কেনা হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৯ কোটি ২১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রতি কেজি চিনির দাম পড়বে ১১৮.৪৩ টাকা।
স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র (জাতীয়) পদ্ধতিতে চট্টগ্রামের মেসার্স পায়েল ট্রেডার্স থেকে ১০ হাজনর মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) জন্য এ ডাল কেনা হবে৷
এতে ব্যয় হবে ৯৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। প্রতি কেজির দাম পড়বে ৯৬.৬৯ টাকা।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
৩৩৯ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার
৩৩৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা টাকা ব্যয়ে সৌদি আরব, কাতার ও আরব আমিরাত থেকে ৯০ হাজার মেট্রিক টন সার কিনবে সরকার। এর মধ্যে ৬০ হাজার টন ইউরিয়া ও ৩০ হাজার টন ফসফেট সার রয়েছে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তি ও উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে এসব সার ক্রয় করা হবে।
আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত পৃথক ৩ প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য সৌদি আরবের কৃষি পুষ্টি কোম্পানি (সাবিক) থেকে ১১তম লটের ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৩ কোটি ২৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৩৪২.৩৩ মার্কিন ডলার।
চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে কাতার এনার্জি মার্কেটিং থেকে ৬ষ্ঠ লটের ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড প্রিল্ড ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ১৩৩ কোটি ৮ লাখ ১২ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৩৬৯.৬৭ মার্কিন ডলার।
অন্যদিকে চলতি অর্থবছরে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে টিএসপিসিএলের জন্য ৩০ হাজার মেট্রিক টন রক ফসফেট আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। কাতারে উৎপাদনকৃত আরব আমিরাতের মেসার্স জেনট্রেড এফজেডই নামের প্রতিষ্ঠান ওই সার সরবরাহ করবে। সারের ব্যয় হবে ৮২ কোটি ৬২ লাখ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ২২৯.৫০ মার্কিন ডলার।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ভারত-মিয়ানমার থেকে দেড় লাখ টন চাল কিনবে সরকার
৮৯৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে ভারত ও মিয়ানমার থেকে দেড় লাখ টন সিদ্ধ ও আতপ চাল কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে এক লাখ টন আতপ চাল ও ৫০ হাজার টন সেদ্ধ চাল রয়েছে।
আজ বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ১৫তম বৈঠকে পৃথক দুটি প্রস্তাবে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
জানা গেছে, সরকার টু সরকার (জিটুজি) পর্যায়ে মিয়ানমারের রাইস ফেডারেশন থেকে এক লাখ টন আতপ চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় খাদ্য অধিদপ্তরের জন্য এ আতপ চাল কেনা হবে। এতে ব্যয় হবে ৬১৮ কোটি টাকা (সিডি ভ্যাট ব্যতীত)। প্রতি টন চালের দাম পড়বে ৫১৫ ডলার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে প্যাকেজ-০৩ এর আওতায় ৫০ টন নন বাসমতি সিদ্ধ চাল কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় খাদ্য অধিদপ্তর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মন্ডল স্টোন প্রোডাক্ট প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে এ চাল কেনা হবে। এতে ব্যয় হবে ২৮০ কোটি ৬২ লাখ টাকা (সিডি ভ্যাট ব্যতীত)। প্রতি টন চালের দাম পড়বে ৪৬৭ দশমিক ৭০ ডলার।
কাফি