আইন-আদালত
অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে মত প্রকাশের স্বাধীনতা বেড়েছে

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের চেয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা বেড়েছে বলে মনে করেন ৬০ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ। এছাড়া এই আমলে সংবাদ মাধ্যমগুলো আওয়ামী লীগ আমলের চেয়ে বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে বলে মনে করে ৬১ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ।
বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা। গণমাধ্যমটির করা এক জরিপে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এই জরিপ ১৩ থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের আট বিভাগে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী ১ হাজার মানুষের মধ্যে পরিচালিত হয়।
জরিপের ফল অনুযায়ী, ২৫ দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের মতোই রয়েছে, ১৪ দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কিছুটা কম। এ বিষয়ে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা মন্তব্য করতে চাননি।
পুরুষদের মধ্যে ৬৪ দশমিক ৩ শতাংশ এবং নারীদের মধ্যে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, বর্তমান সরকারের অধীনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আগের চেয়ে বেশি।
তরুণদের (১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী) মধ্যে ৫৭ দশমিক ১ শতাংশ এবং ৩৫ বছরের বেশি বয়সী ৬৩ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের তুলনায় বেড়েছে। গ্রামাঞ্চলে ৫৮ দশমিক ৪ শতাংশ এবং শহরাঞ্চলে ৬৬ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ একমত হয়েছেন যে, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বেশি।
জরিপে অংশগ্রহণকারী ৬১ দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে সংবাদমাধ্যমগুলো আওয়ামী লীগ আমলের চেয়ে বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে। তবে এই দুই আমলের মধ্যে সংবাদ মাধ্যমগুলোর স্বাধীনতা ভোগের ক্ষেত্রে কোনো পার্থক্য দেখেন না বলে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ নাজিয়েছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের সময় আওয়ামী লীগ আমলের চেয়ে সংবাদ মাধ্যমগুলো কম স্বাধীন বলে মনে করেন ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ এবং ৬ দশমিক ৮ শতাংশ উত্তরদাতা এ ব্যাপারে জানেন না বলেছেন। এছাড়া, শূন্য দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি। অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে আওয়ামী আমলের তুলনায় সংবাদমাধ্যমগুলো অপেক্ষাকৃত বেশি স্বাধীনতা পাচ্ছে শহরের উত্তরদাতাদের ৭৩ দশমিক ৮ শতাংশ এমনটি মনে করেন। গ্রামের উত্তরদাতাদের মধ্যে এমন মত পোষণ করেন ৫৭ দশমিক ১ শতাংশ।
তরুণদের (১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী) মধ্যে ৬৫ দশমিক ৭ শতাংশ উত্তরদাতা এবং ৩৫ ও তারচেয়ে বেশি বয়সী উত্তরদাতাদের ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ মনে করেন বর্তমান সরকারের আমলে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের তুলনায় সংবাদমাধ্যমগুলো অপেক্ষাকৃত বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে।
পুরুষদের মধ্যে ৬৮ দশমিক ২ শতাংশ ও নারীদের মধ্যে ৫৪ দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে আগের আমলের চেয়ে সংবাদমাধ্যমগুলো বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে বলে মত দিয়েছে।
২০২৪ সালে মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৬৫তম, যা ২০০২ সাল থেকে মুক্ত গণমাধ্যম সূচক প্রকাশ শুরু হওয়ার পর থেকে সর্বনিম্ন। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত ১৫ বছরে মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে ৪৪ ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। গণমাধ্যম সূচকের এই অবনতির পেছনে যেসব কারণগুলো বিশেষজ্ঞরা চিহ্নিত করেছেন, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সরকারের বিভিন্ন নিপীড়নমূলক আইন, দলীয় বিবেচনায় গণমাধ্যমের লাইসেন্স প্রদান এবং গণমাধ্যমকে একটি ভীতির মধ্যে রাখা।
আন্তর্জাতিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) তাদের প্রতিবেদনে বলে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বা ডিএসএ সাংবাদিকদের জন্য বিশ্বে সবচেয়ে কঠোর আইনের মধ্যে অন্যতম। এই আইন কোনো পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেপ্তার বা তল্লাশি এবং যে কোনো কারণে সাংবাদিকের সূত্রের গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা অনুমোদন করে। গত বছর বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে তার বদলে সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু এ আইনটিও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন মহলের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে ভয়েস অফ আমেরিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই আইন প্রসঙ্গে দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, সাইবার সিকিউরিটি এ্যাক্ট যেটা পাস হয়েছে— আমাদের মতে শুধু খোলস পরিবর্তন ছাড়া সাইবার সিকিউরিটি আইন-এর সাথে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের, গুণগত বা উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন নেই। বাকস্বাধীনতা, মত প্রকাশের অধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা— এই বিষয়গুলো খর্ব করার মতো অনেক উপাদান এই আইনে রয়ে গেছে।
এ আইনটি বাতিলের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেইসাথে ইতোমধ্যে সাইবার নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া মামলাগুলো প্রত্যাহারেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের শাসনভার গ্রহণ করার পর প্রথম কয়েকদিন আওয়ামী লীগ আমলে সরকারের সুবিধাভোগী ও পতিত সরকারের প্রোপাগান্ডা প্রচার করতো বলে জনমনে পার্সেপশন থাকা কিছু টিভি চ্যানেল ও প্রিন্ট সংবাদমাধ্যম, যেমন এটিএন, একাত্তর টিভি, সময় টিভি হামলার শিকার হয়। তবে কিছুদিন পর থেকেই গণমাধ্যমগুলির কার্যালয়ে হামলার ঘটনা বন্ধ হয়ে যায়।
পরে সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া তার ভাষণে বলেন, আপনারা আমাদের সমালোচনা করুন। সংবাদমাধ্যম ও মত প্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা ইতোমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা সবাইকে বলে দিয়েছি, আপনারা মন খুলে আমাদের সমালোচনা করেন। আমরা সবার মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। মিডিয়া যাতে কোনো রকম বাধা বিপত্তি ছাড়া নির্বিঘ্নে তাদের কাজ করতে পারে সেজন্য একটি মিডিয়া কমিশন গঠন করা সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন।
এমআই

আইন-আদালত
ফের পাঁচ দিনের রিমান্ডে রাশেদ খান মেনন

জুলাই আন্দোলনের সময় শাহবাগে জুট ব্যবসায়ী মো. মনির হত্যা মামলায় সাবেক বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেননের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (২ জুন) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলাম শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এদিন রাশেদ খানকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাইনুল ইসলাম খান পুলক ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আজিজুল হক দিদার। রাশেদ খান মেননের আইনজীবী তানভীর আহমেদ রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তার পাঁচদিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। গত ২২ আগস্ট রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে রাশেদ খান মেননকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, জুলাই আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৫ আগস্ট শাহবাগ থানার চানখারপুল এলাকায় ছাত্র-জনতার সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেন ক্ষুদ্র জুট ব্যবসায়ী মো. মনির। দুপুরে আসামিদের ছোঁড়া গুলিতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী গত ১৪ মার্চ শাহবাগ হত্যা মামলা করেন।
আইন-আদালত
মেজর সিনহা হত্যায় প্রদীপ-লিয়াকতের ফাঁসির রায় বহাল

বহুল আলোচিত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলীকে দেয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ৬ আসামির যাবজ্জীবন দণ্ড বহাল রেখেছেন আদালত।
সোমবার (২ জুন) বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকার জরিমানার আদেশ বহাল রাখা হয়েছে রায়ে।
এর আগে গত ২৯ মে বহুল আলোচিত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শেষ হয়। একইসঙ্গে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়। বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের জন্য এদিন ধার্য করেছিলেন।
ওইদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হুমায়ুন কবির মঞ্জু ও শামীমা দিপ্তি। আর আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এসএম শাহাজাহান।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ৯টায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন কর্মকর্তা পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন সিনহা মো. রাশেদ খান। ঘটনার ৫ দিন পর ২০২০ সালের ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় র্যাব। অভিযোগপত্রে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল ওই মামলায় রায় ঘোষণা করেন। রায়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয় জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
আর যাবজ্জীবন পাওয়া আসামিদের মধ্যে রয়েছেন এক উপ-পরিদর্শকসহ তিন পুলিশ সদস্য ও পুলিশের তিন সোর্স (তথ্যদাতা)। সাত আসামি খালাস পান।
পরে ২০২২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতে ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি কারাগারে থাকা দণ্ডিত আসামিরা আপিল করেন।
আইন-আদালত
শেখ হাসিনা-কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গণহত্যা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
রোববার (১ জুন) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
এর আগে জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আমলে নিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। মামলার অপর দুই আসামি হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
একই সঙ্গে এই মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালের বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। অপর আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে এই মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে।
এদিন সকালে জুলাই-আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। এই বিচারকাজ বিটিভির মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
গত ১২ মে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা। তদন্ত প্রতিবেদনে জুলাই গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার নাম উঠে আসে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। প্রসিকিউশনের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত চিফ প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর দুই মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত দুই মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর গুলি, হত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে নির্বিচারে হত্যা চালায় আওয়ামী লীগ সরকার। এতে প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারান।
কাফি
আইন-আদালত
হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল

২০২৪ সালের ‘জুলাই গণহত্যা’ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান অভিযুক্ত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। মামলার অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী মামুন।
রবিবার (১ জুন) জুলাই-আগস্ট জুড়ে সারাদেশে যে গণহত্যা হয় তাতে শেখ হাসিনাকে প্রধান নির্দেশদাতার দায় করে ট্রাইবুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
এর আগে গত ১২ মে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা। তদন্ত প্রতিবেদনে জুলাই গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার নাম উঠে এসেছে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। প্রসিকিউশনের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত চিফ প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর দুই মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত দুই মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর গুলি, হত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বিচারে হত্যা চালায়। প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারায় এই আন্দোলনে।
আইন-আদালত
নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আপিলের রায় আজ

রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে দলটির আপিলে আজ রবিবার রায় ঘোষণার দিন ধার্য রয়েছে। রায় ঘোষণার জন্য আপিল বিভাগের রবিবারের কার্যতালিকার এক নম্বরে রাখা হয়েছে মামলাটি।
গত ১৪ মে রায়ের এই দিন ধার্য করেছিল প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। আদালতে এদিন জামায়াতের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক, ইমরান এ সিদ্দিক ও মোহাম্মদ শিশির মনির।
ইসির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম। আইনজীবী শিশির মনির পরে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘সকল গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এবং সংসদীয় রাজনীতিতে জামায়াতে ইসলামী এ দেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত যে কয়টা সংসদ হয়েছে, সঠিকভাবে নির্বাচন হয়েছে, সব নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদ সদস্য হয়েছে, এমনকি সরকারেও অংশগ্রহণ করেছে। কিন্তু আশ্চর্যজনক বিষয় হলো- ২০০৮ সালে জামায়াতকে নির্বাচন কমিশন একটি নিবন্ধন ইস্যু করে। কিন্তু হাইকোর্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে নিবন্ধনটি বাতিল করে। এর বিরুদ্ধে আমরা আপিল করেছিলাম, আপিল মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। পয়লা জুন এই মামলার রায়ের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।’
শুনানিতে দেওয়া বক্তব্য তুলে ধরে এই আইনজীবী আরও বলেছিলেন, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করার মধ্য দিয়ে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করার মধ্য দিয়ে পলিটিসাইজেশন অব জুডিশিয়ারি (বিচার বিভাগের রাজনৈতিকীকরণ) করা হয়েছে। যারা জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করেছিলেন, তারা মূলত বাংলাদেশের উচ্চ আদালতকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করেছেন। আমাদের এই যুক্তি আদালত (আপিল বিভাগ) অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে শুনেছে। আমরা প্রত্যাশা করব, আমাদের এই যুক্তির ভিত্তিতে ইনশাআল্লাহ, জামায়াতে ইসলামী তার নিবন্ধন ফেরত পাবে। জামায়াতের প্রতীক বাতিলের বিষয়টিও আপিল শুনানিতে তুলে ধরেছিলেন আইনজীবীরা।