আইন-আদালত
অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে মত প্রকাশের স্বাধীনতা বেড়েছে

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের চেয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা বেড়েছে বলে মনে করেন ৬০ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ। এছাড়া এই আমলে সংবাদ মাধ্যমগুলো আওয়ামী লীগ আমলের চেয়ে বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে বলে মনে করে ৬১ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ।
বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা। গণমাধ্যমটির করা এক জরিপে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এই জরিপ ১৩ থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের আট বিভাগে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী ১ হাজার মানুষের মধ্যে পরিচালিত হয়।
জরিপের ফল অনুযায়ী, ২৫ দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের মতোই রয়েছে, ১৪ দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কিছুটা কম। এ বিষয়ে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা মন্তব্য করতে চাননি।
পুরুষদের মধ্যে ৬৪ দশমিক ৩ শতাংশ এবং নারীদের মধ্যে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, বর্তমান সরকারের অধীনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আগের চেয়ে বেশি।
তরুণদের (১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী) মধ্যে ৫৭ দশমিক ১ শতাংশ এবং ৩৫ বছরের বেশি বয়সী ৬৩ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের তুলনায় বেড়েছে। গ্রামাঞ্চলে ৫৮ দশমিক ৪ শতাংশ এবং শহরাঞ্চলে ৬৬ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ একমত হয়েছেন যে, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বেশি।
জরিপে অংশগ্রহণকারী ৬১ দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে সংবাদমাধ্যমগুলো আওয়ামী লীগ আমলের চেয়ে বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে। তবে এই দুই আমলের মধ্যে সংবাদ মাধ্যমগুলোর স্বাধীনতা ভোগের ক্ষেত্রে কোনো পার্থক্য দেখেন না বলে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ নাজিয়েছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের সময় আওয়ামী লীগ আমলের চেয়ে সংবাদ মাধ্যমগুলো কম স্বাধীন বলে মনে করেন ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ এবং ৬ দশমিক ৮ শতাংশ উত্তরদাতা এ ব্যাপারে জানেন না বলেছেন। এছাড়া, শূন্য দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি। অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে আওয়ামী আমলের তুলনায় সংবাদমাধ্যমগুলো অপেক্ষাকৃত বেশি স্বাধীনতা পাচ্ছে শহরের উত্তরদাতাদের ৭৩ দশমিক ৮ শতাংশ এমনটি মনে করেন। গ্রামের উত্তরদাতাদের মধ্যে এমন মত পোষণ করেন ৫৭ দশমিক ১ শতাংশ।
তরুণদের (১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী) মধ্যে ৬৫ দশমিক ৭ শতাংশ উত্তরদাতা এবং ৩৫ ও তারচেয়ে বেশি বয়সী উত্তরদাতাদের ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ মনে করেন বর্তমান সরকারের আমলে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের তুলনায় সংবাদমাধ্যমগুলো অপেক্ষাকৃত বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে।
পুরুষদের মধ্যে ৬৮ দশমিক ২ শতাংশ ও নারীদের মধ্যে ৫৪ দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে আগের আমলের চেয়ে সংবাদমাধ্যমগুলো বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে বলে মত দিয়েছে।
২০২৪ সালে মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৬৫তম, যা ২০০২ সাল থেকে মুক্ত গণমাধ্যম সূচক প্রকাশ শুরু হওয়ার পর থেকে সর্বনিম্ন। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত ১৫ বছরে মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে ৪৪ ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। গণমাধ্যম সূচকের এই অবনতির পেছনে যেসব কারণগুলো বিশেষজ্ঞরা চিহ্নিত করেছেন, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সরকারের বিভিন্ন নিপীড়নমূলক আইন, দলীয় বিবেচনায় গণমাধ্যমের লাইসেন্স প্রদান এবং গণমাধ্যমকে একটি ভীতির মধ্যে রাখা।
আন্তর্জাতিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) তাদের প্রতিবেদনে বলে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বা ডিএসএ সাংবাদিকদের জন্য বিশ্বে সবচেয়ে কঠোর আইনের মধ্যে অন্যতম। এই আইন কোনো পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেপ্তার বা তল্লাশি এবং যে কোনো কারণে সাংবাদিকের সূত্রের গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা অনুমোদন করে। গত বছর বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে তার বদলে সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু এ আইনটিও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন মহলের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে ভয়েস অফ আমেরিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই আইন প্রসঙ্গে দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, সাইবার সিকিউরিটি এ্যাক্ট যেটা পাস হয়েছে— আমাদের মতে শুধু খোলস পরিবর্তন ছাড়া সাইবার সিকিউরিটি আইন-এর সাথে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের, গুণগত বা উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন নেই। বাকস্বাধীনতা, মত প্রকাশের অধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা— এই বিষয়গুলো খর্ব করার মতো অনেক উপাদান এই আইনে রয়ে গেছে।
এ আইনটি বাতিলের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেইসাথে ইতোমধ্যে সাইবার নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া মামলাগুলো প্রত্যাহারেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের শাসনভার গ্রহণ করার পর প্রথম কয়েকদিন আওয়ামী লীগ আমলে সরকারের সুবিধাভোগী ও পতিত সরকারের প্রোপাগান্ডা প্রচার করতো বলে জনমনে পার্সেপশন থাকা কিছু টিভি চ্যানেল ও প্রিন্ট সংবাদমাধ্যম, যেমন এটিএন, একাত্তর টিভি, সময় টিভি হামলার শিকার হয়। তবে কিছুদিন পর থেকেই গণমাধ্যমগুলির কার্যালয়ে হামলার ঘটনা বন্ধ হয়ে যায়।
পরে সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া তার ভাষণে বলেন, আপনারা আমাদের সমালোচনা করুন। সংবাদমাধ্যম ও মত প্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা ইতোমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা সবাইকে বলে দিয়েছি, আপনারা মন খুলে আমাদের সমালোচনা করেন। আমরা সবার মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। মিডিয়া যাতে কোনো রকম বাধা বিপত্তি ছাড়া নির্বিঘ্নে তাদের কাজ করতে পারে সেজন্য একটি মিডিয়া কমিশন গঠন করা সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আইন-আদালত
বেনজীরকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলে রেড অ্যালার্ট জারির আদেশ

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্ট জারি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই নির্দেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বেনজীর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের পরিচালক হাফিজুল ইসলামের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত থেকে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়।
আবেদনে বলা হয়, বেনজির আহমেদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন। বর্তমানে তিনি দেশের বাইরে থেকে রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতায় জড়িত রয়েছেন বলে জানা গেছে। তাঁকে গ্রেপ্তার করে দেশে আনা প্রয়োজন। এজন্য ইন্টারপোলের সহযোগিতায় তাঁকে দেশে আনা যাবে।
আবেদনে বলা হয়, ইন্টারপোলে রেড অ্যালার্ট জারি করার জন্য আদালতের নির্দেশনা প্রয়োজন। শুনানি শেষে আদালত নির্দেশ দেন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বেনজীর পরিবার অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছে। ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, তাঁর স্ত্রী ও দুই মেয়ের বিরুদ্ধে চার মামলা করে দুদক। মামলায় বেনজীর পরিবারের বিরুদ্ধে ৭৪ কোটি ১৩ লাখ ৩৯ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
২০২৪ সালের ৩১ মার্চ ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ ও ৩ এপ্রিল ‘বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট’ শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি জাতীয় দৈনিক। সেখানে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠে আসে।
এরপর ১৮ এপ্রিল দুর্নীতি দমন কমিশনের এক সভায় অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়। পরে অনুসন্ধানে বেনজীর ও তাঁর পরিবারের নামে ৬৯৭ বিঘা জমি, ১৯টি কোম্পানির শেয়ার, ঢাকায় ১২টি ফ্ল্যাট, ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, ৩৩টি ব্যাংক হিসাব ও তিনটি বিও হিসাব খুঁজে পেয়ে আদালতের আদেশে এসব সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধ করে দুদক।
বেনজীরের বিরুদ্ধে এপ্রিলে অনুসন্ধান শুরু হওয়ার পর মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তিনি দেশত্যাগ করেন। এরই মধ্যে ২৮ মে তাঁদের অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দফায় তলব করলেও তাঁরা দুদকে আসেননি।
আর গত ২ জুলাই বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদ বিবরণী চেয়ে পৃথক নোটিশ পাঠিয়েছিল দুদক। এ নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে আগস্টের মাঝামাঝি আইনজীবীর মাধ্যমে পুলিশের সাবেক প্রধান তাঁর পরিবারের চার সদস্যের সম্পদ বিবরণী জমা দেন।
এর আগে গত বছরের ২৩ মে সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদের ৮৩টি দলিলের সম্পত্তি ৩৪৫ বিঘা (১১৪ একর) ও ৩৩টি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেন আদালত।
অন্যদিকে গত ২৬ মে আদালত বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামের ১১৯টি জমির দলিল, ২৩টি কোম্পানির শেয়ার ও গুলশানে ৪টি ফ্লাট জব্দের আদেশ দেন। সবমিলিয়ে ৬২৭ বিঘা জমি ক্রোক করা হয়েছে। এরই মধ্যে এসব সম্পত্তি দেখভালে রিসিভার নিয়োগ করা হয়েছে।
বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশের আইজি ছিলেন। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
সালমান-পলক-শমসের-মামুন ফের রিমান্ডে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার পারভেজ মিয়া হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী ও পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে ফের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি পেয়েছে পুলিশ।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিএম ফারহান ইশতিয়াক এ আদেশ দেন।
এর আগে সকালে চার আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক নাজমুল হাসান। রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। আর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিএম ফারহান ইশতিয়াক আসামিদের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট সকাল ১০টা থেকেই যাত্রাবাড়ী এলাকায় শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিলেন ছাত্র জনতা। বিকেল পাঁচটার সময় যাত্রাবাড়ী থানার সামনে চৌরাস্তায় গুলিতে গুরুতর আহত হন পারভেজ। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মুগদা হাসপাতাল মেডিকেল হাসপাতাল নেওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
জয়কে অপহরণের মামলায় খালাস পেলেন মাহমুদুর রহমান

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় ৭ বছরের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলে খালাস পেয়েছেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তারিক এজাজের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
এদিন সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান আদালতে উপস্থিত হন। তার উপস্থিতিতে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী তানভীর আহমেদ আল-আমিন।
খালাস পাওয়ার পর মাহমুদুর রহমান বলেন, আপিলের রায়ে আমি খুশি। ফ্যাসিস্ট সরকার পতন না হলে আমি হয়তো খালাস পেতাম না।
এর আগে, বিদেশ থেকে ফিরে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর এ মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ওই দিন মামলাটিতে আপিলের শর্তে জামিন আবেদন করলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেন। পরে ৩ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন। ওইদিন জামিন পান মাহমুদুর রহমান।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের আগে শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে আমেরিকায় অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়। ওই ঘটনায় ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট বাদী হয়ে পল্টন মডেল থানায় মামলাটি করেন। ২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি এই পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এ মামলায় সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
পরে এ মামলায় গত বছরের ১৭ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূরের আদালত আমার দেশ পত্রিকার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ ৫ জনের পৃথক দুই ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন- জাসাস নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ, রিজভী আহমেদ সিজার ও মিজানুর রহমান ভূঁইয়া।
আসামিদের দণ্ডবিধির ৩৬৫ ধারায় (অপহরণ) পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন আদালত। জরিমানার টাকা অনাদায়ে তাদের আরও এক মাসের কারাভোগের আদেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া একই আইনে ১২০-খ ধারায় (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) দুই বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দুই ধারার সাজা একসাথে চলবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন।
এ মামলায় গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর এ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি সাংবাদিক শফিক রেহমান ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ভূঁইয়ার সাজা এক বছরের জন্য স্থগিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মাহমুদুর রহমান কারাগারে যাওয়ার পরদিন ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকার আদালতে এ মামলায় সাজার বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের শর্তে আত্মসমর্পণ করেন শফিক রেহমান।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমালের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমালের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে সংস্থাটির উপ-পরিচালক মুস্তাফিজুর রহমান এ আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, এস এম পারভেজ তমাল এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান থেকে পারভেজ তমাল অন্যান্যদের সঙ্গে যোগসাজশে শেয়ারবাজার কারসাজি ও অন্যান্য অপরাধের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন ও মানি লন্ডারিং করেছেন। তার দেশত্যাগের প্রচেষ্টার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তার বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা প্রয়োজন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তা জোরদার

বিগত কয়েকদিনে দেশের বিভিন্নস্থানে ভাঙচুর, হামলা, পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট এলাকাতেও। আজ শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সেনা সদস্যদের মোতায়েন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
মূলত হাইকোর্ট এলাকায় ম্যুরাল ভেঙে ফেলা হবে এমন তথ্যের ভিত্তিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের ভেতর শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য আছে। এ কারণে সতর্কতামূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
এর আগে, গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুতির পর ভারতে পালিয়ে থাকা শেখ হাসিনার অনলাইন ভাষণের ঘোষণায় উত্তেজিত ছাত্র-জনতা রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে অবস্থিত শেখ মুজিবের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। বুধবার রাত ৮টার দিকে এ ভাঙচুর শুরু হয়। সেখানে ছাত্র-জনতাকে হাসিনাবিরোধী স্লোগান দিতেও দেখা যায়। সেই সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ‘বুলডোজার মিছিলের’ ডাক দেয়।
তারই ধারাবাহিকতায় বিগত সরকারসহ মন্ত্রীদের বসত বাড়িতে ভাঙচুর চালায় ছাত্র-জনতা। একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জায়গায় শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলে।