স্বাস্থ্য
ডেঙ্গুতে আরও ৯ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১২১৪
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেছেন ৯ জন। এই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ২১৪ জন রোগী। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৪৩৬ জনের এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৪ হাজার ৩৬৮ জন।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দেওয়া তথ্য থেকে এসব জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত একদিনে ডেঙ্গুতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি এই সময়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) ৩ জন ছাড়াও রাজশাহী বিভাগে ডেঙ্গুতে একজন মারা গেছেন।
অন্যদিকে গত একদিনে ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী (৪৩০ জন) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পাশাপাশি এই সময়ে ডিএনসিসিতে ১৯৫ জন এবং ডিএসসিসিতে ১৪১ জন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনা বিভাগে ১১৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৯৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ৯১ জন, বরিশাল বিভাগে ৮২ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৯ জন, রংপুর বিভাগে ১৪ জন এবং সিলেট বিভাগে ১১ জন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম দিন থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট ৪৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর এই সময়ে মশাবাহিত রোগটি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৪ হাজার ৩৬৮ জন। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায়। ডিএসসিসিতে মশাবাহিত রোগটিতে চলতি বছর মোট ১৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অন্যদিকে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি এই সময়ে বরিশাল বিভাগে ৪৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৫ জন, ঢাকা বিভাগে ৩৩ জন, খুলনা বিভাগে ২৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ৬ জন ছাড়াও রংপুর বিভাগে ২ জন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় ডেঙ্গুতে একজন মারা গেছেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
স্বাস্থ্য
ডেঙ্গুর উচ্চঝুঁকিতে রাজধানীর ৫৬টি ওয়ার্ড
মৌসুম পরিবর্তনের পরও দেশে কমছে না ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক জরিপে দেখা গেছে, রাজধানীর দুই সিটির ৫৬টি ওয়ার্ডে ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার লার্ভার ঘনত্বের পরিমাণ নির্দিষ্ট মানদণ্ডের চেয়ে বেশি।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত ‘মনসুন এডিস সার্ভে-২০২৪’ এর ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে জরিপের তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব পরিমাপের সূচক ‘ব্রুটো ইনডেক্স’ নামে পরিচিত। স্বীকৃত এই মানদণ্ডে লার্ভার ঘনত্ব ২০ শতাংশের বেশি হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলে মনে করা হয়।
জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, রাজধানীর দুই সিটির ৯৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫৬টি ওয়ার্ডেই ব্রুটো ইনডেক্স ২০-এর বেশি। এর অর্থ হচ্ছে, এসব এলাকার ১০০টির মধ্যে ২০টির বেশি পাত্রে মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। এই এলাকাগুলো ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটির ঝুঁকিতে থাকা ওয়ার্ডগুলো হলো-৩৮, ৯, ৩০, ৭, ৮, ১৮, ২৫, ২৮, ৩৬, ৩৭, ১ এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ড। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটির ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডগুলো হলো-৪৭, ৫৩, ৬১, ৫০, ২, ১৬, ২৬, ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড। এর বাইরে বাকি ওয়ার্ডগুলোর বিষয়ে স্পষ্ট করেনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
আইইডিসিআর-এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন ডেঙ্গু রোগের বাহকের কীটতাত্ত্বিক জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করে জানান যে, জলবায়ু পরিবর্তেনর কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের মেয়াদ অনেক বেশি। অন্যান্য বছরে জুন-অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গি বলবৎ থাকলেও এ বছর ডিসেম্বর মাস শুরু হলেও এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বিদ্যমান। এ প্রাদুর্ভাব মোকাবিলার লক্ষ্যে ঢাকার দুই সিটির মধ্যে একটি জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এই জরিপে ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৭৫টি ভেতরে ৫৯টি তে এবং ঢাকা উত্তর সিটির ৫৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৪০টি ওয়ার্ডে অর্থাৎ দুটি সিটির মোট ৯৯টি ওয়ার্ডের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্যাদি সংগ্রহ করা হয়।
এই জরিপে ঢাকা উত্তর সিটির চেয়ে আনুপাতিক হারে দক্ষিণ সিটিতে ডেঙ্গি সংক্রমণের হার বেশি। ঢাকাস্থ সব হাসপাতালেই ডেঙ্গু রোগীর চাপ রয়েছে। বেসরকারি পর্যায়েও বারডেম হাসপাতাল, ইবনে সিনা হাসপাতাল, সেন্ট্রাল মুগদা হাসপাতাল, ইউনাইটেড হাসপাতাল উল্লেখযোগ্য। ঢাকা ছাড়াও অন্যান্য জেলারও অনেক ডেঙ্গু রোগী ঢাকাতে চিকিৎসা গ্রহণ করে। সে কারণে ঢাকাতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেশি পরিলক্ষিত হয়।
সভায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব সাইদুর রহমান বলেন, সচেতনতাই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের মূল মন্ত্র। আমরা সবাই জানি, কোথায় মশা উৎপত্তি হয়, কীভাবে ছড়ায়, কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু আমরা কেউ নিয়ম মানতে, সচেতন হতে রাজি নই। এটাই ডেঙ্গু বিস্তারে মূল সমস্যা। আমাদের অসচেতনতাই ডেঙ্গু মশা বিস্তারের মূল কারণ। আমরা একে অন্যকে দোষারোপ করি-কিন্তু মশার কামড় সবাই ভোগ করি। কাউকে দোষারোপ না করে ডেঙ্গু মশা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, যার যার অবস্থান ও কর্মস্থল থেকে আমরা সবাই যথাসাধ্য চেষ্টা করি- তবেই এ মহামারি থেকে আমরা রক্ষা পেতে পারি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
স্বাস্থ্য
ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৫০০ ছুঁইছুঁই
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯৭ জন। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭০৫ জন, ফলে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৩ হাজার ৫৬ জনে।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত ৩ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের একজন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একজন এবং খুলনা বিভাগের একজন বাসিন্দা রয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, হাসপাতালে নতুন ভর্তি রোগীদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৬০, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৩, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৫৯, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১৫৪, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৯০, খুলনা বিভাগে ৯৬, রাজশাহী বিভাগে ৪৩, ময়মনসিংহে ১৮, রংপুরে ১০ এবং সিলেটে ২ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৯৩ হাজার ৫৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, যার মধ্যে ৬৩ দশমিক২০ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৬ দশমিক ৮০ শতাংশ নারী। একই সময়ে ৪৯৭ জন মৃত্যুবরণ করেছেন, যাদের মধ্যে ৫১ দশমিক ৫০ শতাংশ নারী এবং ৪৮ দশমিক ৫০ শতাংশ পুরুষ।
প্রতি বছর বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। গেল বছর দেশে তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে ঢাকায় এক লাখ ১০ হাজার ৮ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন দুই লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন।
আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন তিন লাখ ১৮ হাজার ৭৪৯ জন। গত বছর এক হাজার ৭০৫ জন মশাবাহিত এই রোগে মারা গেছেন, যা দেশের ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যু।
প্রতি বছর বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। গেল বছর দেশে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে ঢাকায় এক লাখ ১০ হাজার ৮ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন দুই লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন।
এর আগে ২০১৯ সালে দেশব্যাপী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন। ওই সময় চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। ওই বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
এছাড়া ২০২২ সালে ডেঙ্গু নিয়ে মোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ওই বছর মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে ২৮১ জন মারা যান
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
স্বাস্থ্য
ডেঙ্গুতে আরো ৬ জনের মৃত্যু
শনিবার সকাল ৮টা থেকে রবিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত (একদিনে) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরো ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। একইসঙ্গে এই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৮৮২ জন।
রবিবার (১ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ৮৮২ জন। এর মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৬৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৪১ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি কর্পোরেশনের বাইরে) ২৩৩ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১৪০ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১০৪ জন, খুলনা বিভাগে ৯১ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫৪ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৩ জন, রংপুর বিভাগে ১১ জন এবং সিলেট বিভাগে ৮ জন ভর্তি হয়েছেন।
এদিকে, গত একদিনে সারাদেশে ১১১০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৮৮ হাজার ৯৮৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৯২ হাজার ৩৫১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৪৯৪ জনের। গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
স্বাস্থ্য
নভেম্বরে ডেঙ্গু কেড়ে নিলো ১৭৩ প্রাণ
দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ কোনোভাবেই কমছে না। মৃত্যুর পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীর চাপ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, চলতি মাসে (নভেম্বর) ডেঙ্গুতে ১৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা চলতি বছরে এক মাসে সর্বোচ্চ। এ ছাড়া নভেম্বরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৯ হাজার ৬৫২ জন।
চলতি বছরের মাসিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারিতে ১৪ জনের মৃত্যু এবং হাসপাতালে এক হাজার ৫৫ জন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজনের মৃত্যু এবং হাসপাতালে ৩৩৯ জন, মার্চে পাঁচজনের মৃত্যু এবং ৩১১ জন হাসপাতালে, এপ্রিলে দুই জনের মৃত্যু এবং ৫০৪ জন হাসপাতালে, মে মাসে ১২ জনের মৃত্যু এবং ৬৪৪ জন হাসপাতালে, জুনে আটজনের মৃত্যু এবং ৭৯৮ জন হাসপাতালে, জুলাইতে ১২ জনের মৃত্যু এবং দুই হাজার ৬৬৯ জন হাসপাতালে, আগস্টে ২৭ জনের মৃত্যু এবং ছয় হাজার ৫২১ জন হাসপাতালে, সেপ্টেম্বরে ৮০ জনের মৃত্যু এবং ১৮ হাজার ৯৭ জন হাসপাতালে, অক্টোবরে ১৩৪ জনের মৃত্যু এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৩০ হাজার ৮৭৯ জন।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ৯১ হাজার ৪৬৯ জন। এরমধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৮৭ হাজার ৮৭৯ জন। মারা গেছেন ৪৮৮ জন। নিহতদের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০৮ জন এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৮৯ জন মারা গেছেন। বাকিরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় মারা গেছেন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একইসঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশানিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেনতনা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী আক্রান্ত এবং ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
স্বাস্থ্য
কোমর ব্যাথা: কারণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ
কোমর ব্যাথা এক অত্যন্ত সাধারণ সমস্যা, যা একবার না একবার অনেকের জীবনেই দেখা দেয়। কাজের চাপ, ভুল ভঙ্গি, আঘাত, অথবা কোনো রোগের কারণে কোমর ব্যাথা হতে পারে। এই ব্যাথা কখনো কখনো কয়েকদিনের মধ্যেই সেরে যায়, আবার কখনো কখনো দীর্ঘস্থায়ী হয়ে পড়তে পারে।
কোমর ব্যাথার কারণ:
•ভুল ভঙ্গি: দীর্ঘক্ষণ একই ভঙ্গিতে বসে থাকা, ভারী জিনিস তোলা, অথবা অনুপযুক্ত ভঙ্গিতে ঘুমানোর কারণে কোমরের পেশী ও স্নায়ুতে টান পড়ে এবং ব্যাথা হয়।
•পেশির টান: কোমরের পেশীতে টান পড়লে তীব্র ব্যাথা হয়।
•ডিস্ক সমস্যা: মেরুদণ্ডের ডিস্ক ফেটে গেলে বা স্লিপ হয়ে গেলে কোমর ব্যাথা হতে পারে।
•আর্থ্রাইটিস: প্রদাহজনিত রোগ, যেমন অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের কারণে কোমর ব্যাথা হতে পারে।
•স্পনডাইলোলিস্থিসিস: মেরুদণ্ডের একটি কশেরুকা আরেকটি কশেরুকার উপর সরে গেলে এই সমস্যা হয়।
•স্পনডাইলাইটিস: মেরুদণ্ডের জয়েন্টে প্রদাহ হওয়াকে স্পনডাইলাইটিস বলে।
•কিডনি বা মূত্রথলির সমস্যা: কিডনি বা মূত্রথলির সংক্রমণের কারণেও কোমর ব্যাথা হতে পারে।
•ক্যান্সার: কম ক্ষেত্রে, কোমরের ক্যান্সারের কারণেও ব্যাথা হতে পারে।
কোমর ব্যাথার লক্ষণ:
•তীব্র বা হালকা কোমর ব্যাথা
•কোমর থেকে পা পর্যন্ত ব্যথা ছড়িয়ে পড়া
•কোমর নড়াচড়া করতে কষ্ট হওয়া
•পা বা পায়ের আঙুল অসাড় হয়ে যাওয়া
কোমর ব্যাথার চিকিৎসা:
•দেখাশুনা: বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, কোমর ব্যাথা নিজে থেকেই কয়েকদিনের মধ্যে সেরে যায়। পর্যাপ্ত বিশ্রাম, গরম পানি সেকে স্বস্তি পাওয়া যায়।
•ফিজিওথেরাপি: ফিজিওথেরাপি ব্যায়ামের মাধ্যমে কোমরের পেশী শক্তিশালী করা হয় এবং ব্যাথা কমাতে সাহায্য করা হয়।
•ওষুধ: ব্যথানাশক ওষুধ, পেশী শিথিলকারী ওষুধ, এবং স্টেরয়েড ইনজেকশন দেওয়া হতে পারে।
•সার্জারি: খুবই জটিল ক্ষেত্রে, সার্জারির মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়।
কোমর ব্যাথা প্রতিরোধ:
•সঠিক ভঙ্গি: দাঁড়ানো, বসা, এবং ঘুমানোর সময় সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখুন।
•নিয়মিত ব্যায়াম: নিয়মিত ব্যায়াম করলে কোমরের পেশী শক্তিশালী হয় এবং ব্যাথার সম্ভাবনা কমে যায়।
•ভারী জিনিস তোলার সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন: ভারী জিনিস তোলার সময় গোড়ালি থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে শরীর সোজা করে তুলুন।
•স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন: অতিরিক্ত ওজন কোমরের উপর চাপ বাড়িয়ে দেয়।
•মুক্ত থাকুন: মানসিক চাপ কোমর ব্যাথার কারণ হতে পারে।
কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন:
•যদি কোমর ব্যাথা কয়েক দিনের মধ্যে না কমে।
•যদি ব্যাথা খুব তীব্র হয়।
•যদি ব্যাথার সাথে জ্বর, অসাড়তা, বা দুর্বলতা অনুভূত হয়।
উপসংহার:
কোমর ব্যাথা একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, একে উপেক্ষা করা উচিত নয়। সঠিক চিকিৎসা এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে কোমর ব্যাথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
লেখা- ডা. মো. নাসির উদ্দিন। এমবিবিএস, এমএস (নিউরোসার্জরী), এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম।