আন্তর্জাতিক
আদানির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। দেশটির সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ঘুষের প্রস্তাব ও তথ্য আড়াল করে অর্থ উত্তোলনের অভিযোগে এই পরোয়ানা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। খবর রয়টার্স, নিউইয়র্ক টাইমস ও আনন্দবাজার পত্রিকা।
একই অভিযোগে গৌতম আদানির ভাইপো সাগর আদানির বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রসিকিউটরদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আদানি ও অন্য সাতজন অভিযুক্ত ব্যক্তি ওই প্রকল্পের বিনিময়ে ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে রাজি হয়েছিলেন। এই প্রকল্প থেকে ২০ বছরে তাদের ২০০ কোটি ডলার ফায়দা হওয়ার কথা ছিল। প্রকল্পটি পেলে প্রতিষ্ঠানটি ভারতের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ করতে পারে।
ঘুষ-কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে গৌতমের ভাইপো সাগরেরও। এ ছাড়াও রয়েছেন- ‘আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেডে’র সিইও বিনীত জৈন, রঞ্জিত গুপ্ত, রুপেশ আগরওয়াল, অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্সের নাগরিক সিরিল ক্যাবানেস, সৌরভ আগরওয়াল এবং দীপক মলহোত্র।
আদালতের নথির বরাতে রয়টার্স আরও বলছে, গৌতম আদানি ও সাগর আদানির বিরুদ্ধে একজন বিচারক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। প্রসিকিউটররা এই পরোয়ানা বিদেশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাছে হস্তান্তর করার পরিকল্পনা করেছেন।
প্রসিকিউটররা জানান, আদানি ও আদানি গ্রিন এনার্জির আরেকজন নির্বাহী, সাবেক সিইও ভিনিত জৈন দুর্নীতির বিষয়টি গোপন করে ঋণদাতা ও বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৩০০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ ও বন্ড সংগ্রহ করেন।
অভিযোগপত্র অনুযায়ী, কিছু ষড়যন্ত্রকারী ব্যক্তিগতভাবে গৌতম আদানিকে ‘নুমেরো উনো’ এবং ‘দ্য বিগ ম্যান’ সাংকেতিক নামে ডাকতেন। আর সাগর আদানি তার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ঘুষের সুনির্দিষ্ট তথ্য ট্র্যাক করতেন।
এদিকে নিউ ইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্টের ইউএস অ্যাটর্নি অফিস থেকে জারি করা একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের প্রায় ২২৩৭ কোটির বেশি ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া এবং বিনিয়োগকারী ও ব্যাংকের কাছে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে আদানি এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে।
তবে আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ দায়ের এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি আদানি গ্রুপ।
কাফি

আন্তর্জাতিক
বিশ্ববাজারে আরও কমেছে জ্বালানি তেলের দাম

বিশ্ববাজারে আরও একবার কমেছে অপরিশোধিত তেলের দাম। চীনের সঙ্গে সাম্প্রতিক বাণিজ্য আলোচনার ফলাফল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকায় বাজারে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে এখনও। তার ওপর চীনের দুর্বল তেলচাহিদা ও ওপেক প্লাস জোটের উৎপাদন বৃদ্ধির ঘোষণা নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে তেলের বাজারে।
গতকাল বুধবার (১১ জুন) বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দামে আরও একবার পতন লক্ষ্য করা গেছে।
এদিন সকালে ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচার্সের দাম ১৫ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমে দাঁড়ায় প্রতি ব্যারেল ৬৬ দশমিক ৭২ ডলারে। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুড ১০ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমে প্রতি ব্যারেল ৬৪ দশমিক ৮৮ ডলারে লেনদেন হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুই দিনব্যাপী এক চূড়ান্ত আলোচনা শেষে লন্ডনে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের কর্মকর্তারা একটি সমঝোতার কাঠামোতে একমত হয়েছেন। এর মাধ্যমে বাণিজ্য বিরতি আবার সচল করার পাশাপাশি চীনের বিরল খনিজ ও চুম্বক জাতীয় পণ্যের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পথ সুগম হবে বলে জানান মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক। এই দুই দেশ বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি ও শীর্ষ তেলভোক্তা হওয়ায় তাদের সম্পর্কের গতিপ্রকৃতি বিশ্ববাজারে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলে।
অন্যদিকে, তেল সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে ওপেক প্লাস জোট। জুলাই মাসে দৈনিক ৪ লাখ ১১ হাজার ব্যারেল উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে জোটটির, যা উৎপাদন হ্রাস তুলে নেয়ার ধারাবাহিক চতুর্থ পদক্ষেপ। তবে কিছু বিশ্লেষক মনে করছেন, আঞ্চলিক বাজারে এই অতিরিক্ত তেলের চাহিদা সেভাবে তৈরি হবে না।
এদিকে, মার্কিন জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের (ইআইএ) সাপ্তাহিক তেল মজুত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে আগামী বুধবার (১২ জুন)। মার্কেট সূত্র বলছে, গত সপ্তাহে দেশটির অপরিশোধিত তেল মজুত ৩ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেল কমেছে।
রয়টার্স পরিচালিত এক জরিপে বিশ্লেষকরা পূর্বাভাস দিয়েছেন, ৬ জুন শেষ হওয়া সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের তেল মজুত ২০ লাখ ব্যারেল কমলেও ডিজেল ও গ্যাসোলিনের মজুত কিছুটা বেড়েছে।
কাফি
আন্তর্জাতিক
দিল্লিতে হঠাৎ রেড অ্যালার্ট জারি

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে হঠাৎ রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। তীব্র গরমের মধ্যে হিট ইনডেক্সে তাপমাত্রা ৫১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছানোয় এই রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) বলেছে, রাজধানী দিল্লিতে তীব্র তাপপ্রবাহের চলছে। আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই ভয়াবহ তাপপ্রবাহের ধারা অব্যাহত থাকবে আগামী ১৩ জুন পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, দিল্লিতে প্রচণ্ড গরমের দাপটে বুধবার রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। মূলত, শহরের বিভিন্ন জায়গায় তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৯ থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। এর সঙ্গে আর্দ্রতা যোগ হয়ে তৈরি হওয়া হিট ইনডেক্স (গরমের অনুভূতি) এক লাফে পৌঁছেছে ৫১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক।
বুধবার বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে ভারতের রাজধানীতে সবচেয়ে বেশি গরম ছিল আয়ানগরে, সেখানে তাপমাত্রা ছিল ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একই সময়ে পালামে ৪৪ দশমিক ৫, রিজে ৪৩ দশমিক ৬, পিতমপুরায় ৪৩ দশমিক ৫, লোদি রোডে ৪৩ দশমিক ৪, ময়ূর বিহারে ৪০ দশমিক ৯ এবং সফদরজংয়ে ৪৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছিল।
আবহাওয়া বিভাগের বলছে, ১৩ জুন পর্যন্ত এই ভয়াবহ গরমের ধারা অব্যাহত থাকবে। এরপর একটি পশ্চিমী ঝড় উত্তর-পশ্চিম ভারতে প্রবেশ করতে পারে, যা দিল্লিতে হালকা বৃষ্টি ও বজ্রপাত নিয়ে আসতে পারে।
আইএমডি-এর বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, দিল্লিতে বর্তমান তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ডিগ্রি বেশি, যার ফলে তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবারেও তাপমাত্রা ৪৩-৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকার আশঙ্কা রয়েছে, সঙ্গে ৪০-৬০ কিমি গতির দমকা হাওয়া এবং সন্ধ্যা বা রাতে হালকা বৃষ্টি বা বজ্রঝড় হতে পারে।
এনডিটিভি বলছে, রেড অ্যালার্ট মানে হলো, জনসাধারণকে অবিলম্বে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে—যেমন বেশি পানি খাওয়া, রোদ এড়িয়ে চলা এবং দুপুরের সময় বাইরে যাওয়া এড়ানো।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন: ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বহুল আলোচিত বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। লন্ডনে দুই দিনব্যাপী প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকের পর বুধবার (১১ জুন) ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে তিনি এ ঘোষণা দেন।
ট্রাম্প জানান, “চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রেসিডেন্ট শি ও আমি একমত। চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র ৫৫% ও চীন ১০% শুল্ক পাবে।” তিনি আরও বলেন, চীন প্রয়োজনীয় বিরল খনিজ ও চুম্বক সরবরাহে অগ্রাধিকার দেবে, আর চীনা শিক্ষার্থীদের মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধ্যয়ন অব্যাহত থাকবে।
মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক জানান, দুই দেশ ‘জেনেভা ঐক্যমত্য’ বাস্তবায়নে কাঠামোতে পৌঁছেছে এবং এখন রাষ্ট্রপ্রধানদের অনুমোদনের অপেক্ষায়।
চুক্তির মাধ্যমে বিরল খনিজ, আধুনিক প্রযুক্তি ও সেমিকন্ডাক্টর ইস্যুতে চলমান উত্তেজনা প্রশমিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
কাফি
আন্তর্জাতিক
ব্রিটিশ প্রসাধনী কোম্পানি মেডিক৮ কিনে নিচ্ছে ফরাসি ব্র্যান্ড লরিয়েল

ফ্রান্সের বিশ্বখ্যাত প্রসাধনী ব্র্যান্ড লরিয়েল ব্রিটিশ স্কিনকেয়ার ব্র্যান্ড মেডিক৮-এর বেশির ভাগ শেয়ার অধিগ্রহণ করতে চলেছে। এই অধিগ্রহণের ফলে ত্বক পরিচর্যার পণ্যের দ্রুত বর্ধনশীল বৈশ্বিক বাজারে লরিয়েলের অবস্থান আরও সুসংহত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
লরিয়েলের কাছে মেডিক৮-এর শেয়ার বিক্রির দায়িত্বে আছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক বেসরকারি ইকুইটি ফার্ম ইনফ্লেক্সিয়ন। আজ সোমবার লরিয়েল ও ইনফ্লেক্সিয়ন পৃথক বিবৃতিতে মেডিক৮-এর শেয়ার বিক্রির তথ্য প্রকাশ করেছে। তবে এ-সংক্রান্ত চুক্তির শর্তাবলি কোনো পক্ষই প্রকাশ করেনি, রয়টার্স সূত্রে এই খবর জানা গেছে।
এই বিষয়ে অবগত একটি সূত্র জানিয়েছে, এ-সংক্রান্ত চুক্তিতে মেডিক৮-এর কোম্পানি-মূল্য প্রায় ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ইউরো নির্ধারণ করা হয়েছে।
লরিয়েলের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই অধিগ্রহণ লরিয়েলের বিলাসবহুল পোর্টফোলিওকে আরও শক্তিশালী করবে। লরিয়েল এমন একটি স্কিনকেয়ার পণ্য প্রস্তুতকারক ব্র্যান্ডকে নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করছে, যাদের সাফল্যের প্রমাণিত রেকর্ড আছে এবং বিশ্বব্যাপী প্রবৃদ্ধি অর্জনের জোর সম্ভাবনা রয়েছে।”
লরিয়েল ব্র্যান্ডের বিলাসবহুল পণ্য যেমন মিউমিউ পারফিউম, ল্যানকোম স্কিনকেয়ার ও অ্যাইসোপ ক্লিনজার বিক্রিতে গত বছর প্রবৃদ্ধি কমে ২.৭ শতাংশে নেমে এসেছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতিকে এর অন্যতম কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে, কারণ ক্রেতারা মূল্যস্ফীতির কারণে বিলাসবহুল প্রসাধনীর পরিবর্তে কম দামি ব্র্যান্ড বেছে নিতে শুরু করেছেন।
গত বছর লরিয়েলের সব বিভাগের মধ্যে বিলাসবহুল পণ্যেই সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে এটি বিলাসবহুল প্রসাধনী বিক্রিতে লরিয়েলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এলভিএমএইচের একই বিভাগের পণ্যসামগ্রীর চেয়ে এগিয়ে রয়েছে।
লরিয়েলের বর্তমান মালিক ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট মেয়ার্স বিশ্বের একজন শীর্ষস্থানীয় বিলিয়নিয়ার। ফোর্বসের চলতি ২০২৫ সালের শীর্ষ শতকোটিপতির তালিকায় তিনি ২০তম স্থানে আছেন। গত ২৫ এপ্রিল এই তালিকা প্রকাশের দিনে তাঁর নিট সম্পদের পরিমাণ ছিল ৮১.৬ বিলিয়ন বা ৮ হাজার ১৬০ কোটি মার্কিন ডলার। পরের দেড় মাসে তাঁর সম্পদের পরিমাণ আরও প্রায় ৮৫০ কোটি ডলার বেড়েছে। ফোর্বসের রিয়েল টাইম হিসাব অনুযায়ী, আজ বাংলাদেশ সময় বিকেল পাঁচটা নাগাদ তাঁর সম্পদের মূল্য দাঁড়িয়েছে ৯০ বিলিয়ন বা ৯ হাজার কোটি ডলার।
ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট মেয়ার্স হলেন লরিয়েলের প্রতিষ্ঠাতা ইউজেন শুয়েলারের নাতনি।
আন্তর্জাতিক
অভিবাসন ইস্যুতে বিক্ষোভ: লস অ্যাঞ্জেলেসে কারফিউ জারি

যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলীয় ক্যালিফোর্নিয়ার গুরুত্বপূর্ণ শহর লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিবাসন বিরোধী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর অভিযানের প্রতিবাদে চলমান বিক্ষোভের মধ্যেই কারফিউ জারি করা হয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন ব্যাস মঙ্গলবার রাতে এই ঘোষণা দেন।
মেয়র কারেন ব্যাস জানিয়েছেন, কারফিউটি স্থানীয় সময় রাত ৮টা থেকে পরের দিন সকাল ৬টা পর্যন্ত কার্যকর থাকবে এবং শহরের মাত্র এক বর্গমাইল (প্রায় ২.৬ বর্গকিলোমিটার) এলাকা জুড়ে এটি প্রয়োগ করা হবে। তিনি বলেন, এই বিক্ষোভে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত বা ভাঙচুরের শিকার হয়েছে। গত রাতেই ২৩টি দোকান লুট করা হয়েছে এবং ডাউনটাউন এলাকা জুড়ে ব্যাপক গ্রাফিতি হয়েছে, যা ব্যবসা ও সম্পত্তির বড় ক্ষতি করেছে।
মেয়র আরো বলেন, “ডাউনটাউন এলাকায় বসবাস বা কাজ না করলে দয়া করে ওই এলাকা এড়িয়ে চলুন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কারফিউ ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।” তিনি জানান, কারফিউ কয়েকদিন পর্যন্ত বহাল থাকতে পারে তবে তা শহরের মাত্র এক ছোট অংশে প্রযোজ্য।
তিনি আরও স্পষ্ট করেন, যদিও ঘটনার কেন্দ্রস্থল ডাউনটাউনের একটি ছোট অংশ, মিডিয়ায় তা এমনভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে যেন পুরো শহরে সঙ্কট চলছে, যা বাস্তবতা নয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, এই আংশিক কারফিউ ঘোষণা করা হলো এমন সময় যখন ট্রাম্প প্রশাসনের অবৈধ অভিবাসন বিরোধী অভিযানের বিরুদ্ধে লস অ্যাঞ্জেলেসে টানা পাঁচ দিন ধরে বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভ দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে নিউ ইয়র্ক, শিকাগো, আটলান্টাসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে।
এদিকে, ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম ট্রাম্প প্রশাসনের ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মঙ্গলবার রাতে অঙ্গরাজ্যবাসীর উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি ট্রাম্পের পদক্ষেপকে ‘ক্ষমতার নির্লজ্জ অপব্যবহার’ বলে অভিহিত করেন। নিউজম বলেন, প্রেসিডেন্ট ইচ্ছাকৃতভাবে উত্তেজনা বৃদ্ধি করে পরিস্থিতি খারাপ করছেন। তিনি জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীকে এমনভাবে ব্যবহার করছেন যেন তারা কোনও শত্রু দেশের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে।
নিউজম আরও বলেন, প্রেসিডেন্টের টার্গেট করা মানুষরা সন্ত্রাসী নয়, তারা আমাদের সমাজের সাধারণ সদস্য — রান্নাঘরের কর্মী, মালী, দিনমজুর, দর্জি। এটা শক্তির প্রকাশ নয়, বরং দুর্বলতার পরিচয়। ট্রাম্পের সরকার আমাদের কমিউনিটিকে নিরাপদ করার চেষ্টা করছে না, বরং ভয়ভীতি ছড়িয়ে আঘাত করছে।
তিনি সতর্ক করেন, যদি কাউকে সন্দেহ বা গায়ের রঙের ভিত্তিতে পরোয়ানা ছাড়াই রাস্তা থেকে তুলে নেওয়া যায়, তাহলে কেউই নিরাপদ নয়। স্বৈরশাসকরা প্রথমে এমন মানুষদের ওপর আক্রমণ চালায় যারা আত্মরক্ষায় অক্ষম, কিন্তু এখানেই থামে না।
অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মঙ্গলবার ফোর্ট ব্র্যাগ সেনাঘাঁটিতে মার্কিন সেনাদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নিজের অবস্থানে অটল থাকার বার্তা দেন। তিনি বলেন, আমাদের বীর সেনারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে দেশের জন্য বিদেশের মাটিতে রক্ত দিয়েছে, শুধু এটা দেখার জন্য নয় যে, এখন নিজ দেশে তৃতীয় বিশ্বের মতো বিশৃঙ্খলা ও অনুপ্রবেশের কারণে দেশ ধ্বংস হচ্ছে — যেমনটা ক্যালিফোর্নিয়ায় ঘটছে। আমি একজন কমান্ডার-ইন-চিফ হিসেবে তা হতে দেব না, এটা কখনোই ঘটতে দেব না।
এমএস