অর্থনীতি
সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে সম্পদের সুরক্ষা দাবি এস আলমের
দেশের ব্যাংকখাতে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণখেলাপির দায়ে অভিযুক্ত এল আলম গ্রুপ; যার প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম দাবি করেছেন, সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব এবং দেশটির সাথে বাংলাদেশের একটি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ চুক্তি থাকায় তাঁর ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক যে ভীতিপ্রদর্শন বা “হুমকি-ধামকির প্রচারণা” চালাচ্ছে তা থেকে তিনি সুরক্ষিত। বিদেশি বিনিয়োগকারী হিসেবে সম্পদের সুরক্ষা প্রদানের দাবিও করেছেন তিনি।
এমন দাবি করা হয়েছে একটি চিঠিতে, যা সাইফুল আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরকে পাঠান তাঁদের আইনজীবীরা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে হুঁশিয়ারি দিয়ে চিঠিতে বলা হয়, এবিষয়ে তাঁরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একটি আন্তর্জাতিক সালিশি প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেন। সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ গণমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস বা এফটি।
কিছুদিন আগে এফটিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর অভিযোগ করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো থেকে অন্তত ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা (১০ বিলিয়ন ডলার) পাচার করেছে সাইফুল আলম ও তাঁর সহযোগীরা। তারপরেই এই চিঠি দিল এস আলমের পক্ষে আইনি প্রতিষ্ঠান কুইন ইমানুয়েল উরকুহার্ট অ্যান্ড সুলিভান।
এফটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, চিঠিতে আহসান এইচ মনসুরের বিরুদ্ধে এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে জনপরিসরে “উস্কানিমূলক ও অপ্রমাণিত মন্তব্য” করার অভিযোগ এনে বলা হয়েছে, গভর্নরের এ ধরনের আচরণ “একটি ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ভয়ভীতি ছড়ানোর প্রচারণার” শামিল। এই শিল্পগোষ্ঠী বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ২ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান করেছে।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলে– শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। এই সরকার দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঋণ অনিয়মের ঘটনায় জড়িত এস আলমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হয়। এরপরে সাইফুল আলমের পক্ষ থেকে এটিই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর সাবেক একজন শীর্ষ কর্মকর্তা হচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। নতুন সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগগুলোর মধ্যে তাঁর নিয়োগ ছিল অন্যতম। আগস্টে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর গত মাসে ব্রিটিশ গণমাধ্যম এফটিকে তিনি বলেন, প্রভাবশালী একটি সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার সাহায্যে সাইফুল আলম ও তাঁর সহযোগীরা দেশের শীর্ষ কয়েকটি ব্যাংকের দখল নিয়ে বিপুল অর্থ পাচার করেছে।
আহসান এইচ মনসুরের হিসেব অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো অধিগ্রহণের সময় নতুন অংশীদারদের ঋণ প্রদান ও আমদানি খরচ বেশি দেখানোর মতো কৌশল অবলম্বন করে এস আলম ও তাঁর সহযোগীরা “যেকোনো আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, ইতিহাসের সর্ববৃহৎ ব্যাংক ডাকাতি করেছে।”
তবে গত মাসেই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে কুইন ইমানুয়েল উরকুহার্ট অ্যান্ড সুলিভানের মাধ্যমে এক বিবৃতি দেয় এস আলম গ্রুপ। এসব অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে সেখানে দাবি করা হয়।
এস আলম গ্রুপের সিংহভাগ মালিকানা রয়েছে সাইফুল আলম, তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভিন ও তাঁর দুই ছেলে আশরাফুল আলম ও আসাদুল আলম মাহিরের নামে। তাঁদের পক্ষ থেকে দেওয়া গভর্নর মনসুরকে দেওয়া চিঠিতে আনীত অভিযোগগুলো “স্বপ্রণোদিত মিথ্যাচার ও মানহানিকর” বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, “আপনার বিবৃতি এস আলম গ্রুপ এবং বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগকে ধ্বংস করার জন্য পরিকল্পিত একটি সুস্পষ্ট প্রচারণার লক্ষ্যকে আরও এগিয়ে নিয়ে যায়; এখানে উল্লেখ্য যে, আপনি সেই প্রচারাভিযানটি পরিচালনা না করলেও নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে।”
এই চারজন বিনিয়োগকারীর সকলেই সিঙ্গাপুরের নাগরিক বলে উল্লেখ করা হয় চিঠিতে। সাইফুল আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা কবে সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব নিয়েছেন এবং এরপরেও তাঁদের বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিকত্ব ছিল কিনা– এবিষয়ে কুইন ইমানুয়েল উরকুহার্ট অ্যান্ড সুলিভানের কাছে জানতে চায় এফটি, তবে এতে সাড়া দেয়নি আইনজীবী সংস্থাটি। এবিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি সিঙ্গাপুর সরকারও।
বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ সুরক্ষা চুক্তি রয়েছে, যা ২০০৪ সালে করা হয়।
চিঠিতে বলা হয়, ওই চুক্তি অনুসারে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর মনসুরের ভাষ্যকে “বাংলাদেশ রাষ্ট্রের পক্ষের” বলে বিবেচনা করা যায়। অভিযুক্তরা সিঙ্গাপুরের নাগরিক এবং বাংলাদেশের ১৯৮০ সালের একটি বৈদেশিক বিনিয়োগ আইনের আওতায় বিদেশি বিনিয়োগকারীদের “অধিকার ও সুরক্ষা” দেওয়া হয়েছে।
এসব অধিকার সংরক্ষণে তাঁরা দরকারি সব পদক্ষেপ নেবেন উল্লেখ করা হয়। বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর সেটেলমেন্ট অব ইনভেস্টমেন্ট ডিসপিউটস- এর দ্বারস্থ হওয়াও সম্ভাব্য আইনি পদক্ষেপের মধ্যে থাকতে পারে।
চিঠির বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এফটিকে বলেছেন, আগের সাক্ষাৎকারে তিনি ‘সম্পূর্ণরূপে প্রমাণিত’ অভিযোগ করেছেন।
তিনি বলেন, “অনেক ব্যাংকে তাঁরা বহু বছর ধরে দুর্নীতি ও অনিয়ম করে এসেছে, যেসব ডকুমেন্টশনের কাজ এখনো চলছে। পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে কিছুটা সময় লাগবে।”
এদিকে এস আলমের আইনজীবী সংস্থার চিঠিতে বলা হয়, তাঁদের মক্কেলরা ব্যয়বহুল ও দীর্ঘ সময় ধরে আইনি প্রক্রিয়া এড়াতেই পছন্দ করবেন এবং এজন্য “আইন অনুসারে ও সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে” যেকোনো বিরোধের নিষ্পত্তি চান।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর যদি ‘মিথ্যা বিবৃতি’ প্রদানের মাধ্যমে তাঁদের মক্কেলদের ‘অধিকার ক্ষুণ্ণ করে’ – সেক্ষেত্রে এস আলম গ্রুপের কাছে আহসান এইচ মনসুরের বিরুদ্ধে ‘আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা ব্যতীত অন্য কোনো পন্থা থাকবে না’ বলেও সতর্ক করা হয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তি পাওয়া যাবে ফেব্রুয়ারি-মার্চে
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের চতুর্থ কিস্তির ১.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চে পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালাহউদ্দীন আহমেদ।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আইএমএফ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলটি সরকারের শীর্ষ পর্যায়, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আজকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধিদল এসেছিল। তাদের সঙ্গে ঋণ প্যাকেজ ৪.৭ বিলিয়ন ডলারে মধ্যে চতুর্থ কিস্তির ১.১ বিলিয়ন ডলার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা আশা করছি আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চের মধ্যে এটা পেয়ে যাব।
তিনি বলেন, আমাদের স্থিতিশীলতা কিন্তু ফিরে আসছে। সম্পূর্ণ আসে নাই, তবে এখন সময় বিনিয়োগের। আপনারা দেখবেন ফরেন এক্সচেঞ্জ রেট আগের মতো ওঠানামা করছে না। ব্যাংকিং খাতের মধ্যে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের লিকুইডিটি সার্পোট লাগছে। তবে ইসলামী ব্যাংকের মতো বড় ব্যাংক কিছুটা ফিরে আসছে। ইসলাসী ব্যাংক সব বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ব্যাংক। অন্যান্য ব্যাংকগুলোও ধীরে ধীরে ফিরে আসবে।
তিনি বলেন, রেমিট্যান্স খুবই ভালো। রপ্তানিও হচ্ছে ভালো, আমদানি একটু কম আছে। তবে আগের থেকে একটু বেড়েছে। মূলধনি যন্ত্রপাতি কিছু কম আসছে, সেটা কিছু রেস্ট্রিকশনের কারণে। সেটা আমরা চিন্তা করছি, কী করা যায়। তারা আমাদের এখানে থাকবে কিছুদিন। আমরা তাদের বলেছি আমরা এমন কিছু নেব যেটা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জন্য মঙ্গলজনক হয়। আমরা এমন কিছু নেব না যেটা নিজের।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, তারা কতগুলো লক্ষ্যমাত্রা দেবে সেটা করতে পারব কিনা, সেটা অন্য ব্যাপার। কিন্তু আমি আশা করি তারা বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য সহায়তা দেবে।
অতিরিক্ত ফান্ডের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে উপদেষ্টা বলেন, অতিরিক্ত ফান্ডের বিষয়ে আমরা আবার আলোচনা করে বলব। চলমান ৪.৭ বিলিয়ন ডলার তো প্রথম প্যাকেজের। কিন্তু সংস্কার করতে হলে আমাদের ফান্ড লাগবে। আমাদের অনেক কিছু সংস্কার করতে হচ্ছে, যেমন- ব্যাংকিং খাত, রাজস্ব খাত। এগুলো করতে আমাদের ফান্ড লাগবে।
তিনি বলেন, কিছুদিন পর এডিবি আসবে, ওপেক ফান্ডের টাকা আসবে। সব মিলিয়ে আগামী জুনের মধ্যে ৬ বিলিয়ন ডলার পাব।
শ্বেতপত্র নিয়ে তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আইএমএফের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি।
উল্লেখ্য, বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ কমতে থাকার মধ্যে গত বছরের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি করে বাংলাদেশ। এর তিনদিন পর প্রথম কিস্তিতে ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার ছাড় করে সংস্থাটি। এরপর গত ১৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার ছাড় করা হয়।
২০২৬ সাল পর্যন্ত মোট সাতটি কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তির পরবর্তীগুলোতে সমান অর্থ থাকার কথা ছিল। কিন্তু রিজার্ভ আরও কমে যাওয়ায় তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তিতে বেশি অর্থ চায় বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে বেশকিছু কঠিন শর্তের বাস্তবায়ন এবং আগামীতে আরও বড় সংস্কার কার্যক্রমের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় সংস্থাটি তৃতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি ডলারের পরিবর্তে ১১৫ কোটি ডলার দিয়েছে। এখন চতুর্থ কিস্তিতে ১.১ বিলিয়ন ডলার দিতে সম্মত হয়েছে। তবে মোট ঋণের পরিমাণ এবং মেয়াদ একই থাকবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ইউসিবি ও ন্যাশনাল ফাইন্যান্স চেয়ারম্যানের ব্যাংক হিসাব জব্দ
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসির (ইউসিবি) চেয়ারম্যান শরীফ জহির ও তার ভাই ন্যাশনাল ফাইন্যান্স লিমিটেডের (এনএফএল) চেয়ারম্যান আসিফ জহিরের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। একই সঙ্গে তার মা কামরুন নাহারের ব্যাংক হিসাব স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়ে অ্যাকাউন্ট জব্দ করতে বলেছে। হিসাব জব্দ করা ব্যক্তি ও তাদের ব্যক্তি মালিকানা ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্টের সব লেনদেন বন্ধ থাকবে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, আয়কর আইন ২০২৩-এর ২২৩ ধারার ক্ষমতাবলে শরীফ জহির, তার ভাই আসিফ জহির ও তাদের মা কামরুন নাহার এবং সৈয়দ ইশতিয়াক ইসলাম (পিতা- সৈয়দ দিদারুল আলম) ও তাদের পরিবারের (পিতা, মাতা, ভাই, বোন, স্ত্রী, পুত্র ও কন্যা) নামে পরিচালিত সব হিসাব (ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, ভল্ট লকার) অর্থসম্পদ লেনদেন স্থগিত করতে বলা হয়েছে।
শরীফ জহির ইউসিবি ব্যাংকের নবগঠিত বোর্ডের চেয়ারম্যান। তিনি পোশাক ও বস্ত্র খাতের প্রতিষ্ঠান অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তার ভাই আসিফ জহির সম্প্রতি এনএফএলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি অনন্ত গ্রুপে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া, তিনি আসিফ জহির সিন্দাবাদডটকম লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও এমডি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এলপিজির দাম বদলাচ্ছে না ডিসেম্বরে
ডিসেম্বর মাসের জন্য ভোক্তাপর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম অপরিবর্তিত রয়েছে অর্থাৎ নভেম্বর মাসের মতো একই দাম থাকছে। এবারও ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ৪৫৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা গত মাসেও একই ছিল।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কার্যালয়ে সংস্থাটির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন এই দাম ঘোষণা করেন।
এছাড়া ৫.৫ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৬৬৭ টাকা, ১২.৫ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ৫১৬ টাকা, ১৫ কেজির দাম ১ হাজার ৮১৯ টাকা, ১৬ কেজির দাম ১ হাজার ৯৪০ টাকা, ১৮ কেজির দাম ২ হাজার ১৮৩ টাকা, ২০ কেজির দাম ২ হাজার ৪২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
২২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ২ হাজার ৬৬৮ টাকা, ২৫ কেজির দাম ৩ হাজার ৩২ টাকা, ৩০ কেজির দাম ৩ হাজার ৬৩৮ টাকা, ৩৩ কেজির দাম ৪ হাজার ২ টাকা, ৩৫ কেজির দাম ৪ হাজার ২৪৪ টাকা, ৪৫ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৫ হাজার ৪৫৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত মাসেও এই একই দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রেটিকুলেটেড পদ্ধতিতে তরল অবস্থায় সরবরাহকৃত বেসরকারি এলপিজির ভোক্তাপর্যায়ে মূসকসহ মূল্য প্রতি কেজি ১১৭ টাকা ৪৩ পয়সা এবং গ্যাসীয় অবস্থায় সরবরাহকৃত বেসরকারি এলপিজির ভোক্তাপর্যায়ে মূসকসহ মূল্য প্রতি লিটার ০.২৬০৯ টাকায় বা প্রতি ঘনমিটার ২৬০.৯০ টাকায় সমন্বয় করা হয়েছে।
চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, সৌদি সিপি এই মাসে অপরিবর্তিত রয়েছে। আর ডলারের দামের তেমন তারতম্য হয়নি। এজন্য দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
এর আগে, সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় অক্টোবর মাসের জন্য ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৩৫ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৪৫৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর নভেম্বর মাসে ১ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৪৫৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
তারও আগে, গত ২ সেপ্টেম্বর ভোক্তা পর্যায়ে সেপ্টেম্বর মাসের জন্য ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম আগস্ট মাসের তুলনায় ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৪২১ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর গত আগস্ট ও জুলাইয়ে বাড়ানো হয়েছিল যথাক্রমে ১১ টাকা ও ৩ টাকা। সে সময় ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করা হয় যথাক্রমে ১ হাজার ৩৭৭ টাকা ও ১ হাজার ৩৬৬ টাকা।
তবে গত জুন ও মে মাসে ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম যথাক্রমে ৩০ টাকা ও ৪৯ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৩৬৩ টাকা ও ১ হাজার ৩৯৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আর টানা ৮ মাস বাড়ার পর গত ৩ এপ্রিল ভোক্তা পর্যায়ে কমানো হয়েছিল এলপিজির দাম।
মার্চ মাসের তুলনায় এপ্রিল মাসে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৪০ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৪৪২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া, গত মার্চ মাসে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৮ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৪৮২ টাকা, ফেব্রুয়ারিতে ৪১ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৪৭৪ টাকা ও জানুয়ারিতে ২৯ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৪৩৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এলপি গ্যাসের নতুন দাম নির্ধারণ আজ
ডিসেম্বর মাসে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হবে আজ (মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর)। এদিন এক মাসের জন্য এলপিজির নতুন দাম ঘোষণা করা হবে।
গতকাল সোমবার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) একটি বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সৌদি আরামকোর ডিসেম্বর মাসের সিপি (কন্ট্র্যাক্ট প্রাইস) অনুযায়ী, এ মাসের জন্য ভোক্তা পর্যায়ে বেসরকারি এলপিজির দাম সমন্বয়ের বিষয়ে বিইআরসি মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় ঘোষণা করবে।
এর আগে, গত নভেম্বর মাসে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১ টাকা কমিয়ে ১,৪৫৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল, যা অক্টোবর মাসের তুলনায় কম ছিল। তবে গত অক্টোবর, সেপ্টেম্বর, আগস্ট ও জুলাই মাসে এলপিজির দাম বাড়ানো হয়েছিল।
অন্যদিকে, জুন, মে এবং এপ্রিল মাসে দাম কমানো হয়েছিল। একইভাবে, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসে এলপিজির দাম বাড়ানো হয়েছিল।
এলপিজির পাশাপাশি, নভেম্বরে অটোগ্যাসের দামও কমানো হয়েছিল। নভেম্বরে অটোগ্যাসের মূসকসহ প্রতি লিটারের দাম ৩ পয়সা কমিয়ে ৬৬ টাকা ৮১ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। গত অক্টোবর, সেপ্টেম্বর, আগস্ট এবং জুলাই মাসে অটোগ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছিল, তবে জুন, মে এবং এপ্রিল মাসে দাম কমানো হয়েছিল। জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে অটোগ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছিল।
২০২৩ সালে মোট ৫ দফা কমানো হয়েছিল এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম, এবং বেড়েছিল ৭ দফা।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আসছে নতুন টাকা, থাকছে ‘জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি’
আগামী ছয় মাসের মধ্যে বাজারে আসছে শেখ মুজিবের ছবিমুক্ত নোট। শেখ মুজিবের জায়গায় ধর্মীয় স্থাপনা, বাঙালি ঐতিহ্য এবং জুলাই বিপ্লবের দেয়াললচিত্র বা গ্রাফিতি যুক্ত হবে। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদন এসেছে। শিগগিরই ২০ টাকা, ১০০ টাকা, ৫০০ টাকা ও এক হাজার টাকা মূল্যমানের নতুন নোট ছাপাবে অন্তর্বর্তী সরকার।
এসব নোটে নতুন করে নকশা করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আপাতত এই চার ধরনের নোটে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকবে না। পর্যায়ক্রমে সব টাকার নোট থেকেই তার ছবি তুলে দেওয়া হতে পারে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বলেন, নতুন টাকা ছাপার বিষয়টি অনেক দূর এগিয়েছে। আশা করি, আগামী ছয় মাসের মধ্যে বাজারে আসতে পারে নতুন টাকা।
এবিষয়ে টাঁকশালের এক কর্মকর্তা বলেন, এখন শুধু টেন্ডার বাকি। টেন্ডারের কাজটা শেষ হয়ে গেলেই নতুন টাকা বাজারে চলে আসতে সময় লাগবে না। এই মুহূর্তে আমরা টাকা ছাপা বন্ধ রেখেছি। প্রয়োজন অনুযায়ী আবার ছাপা শুরু করা হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বর্তমান নকশা থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে নেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে চারটি নোট আবার নকশা করা হবে। পরে অন্য নোটগুলোতেও পরিবর্তন আনা হবে বলে জানান কর্মকর্তারা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ২৯ সেপ্টেম্বর এক চিঠিতে নতুন নোটের বিস্তারিত নকশার প্রস্তাব জমা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করেছে।
নতুন নোট ছাপানোর বিষয়ে মূল সুপারিশ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রা ও নকশা উপদেষ্টা কমিটি। কমিটির সভাপতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর-১। কমিটিতে চিত্রশিল্পীরাও রয়েছেন।