সারাদেশ
চাঁদপুরে বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ, চিকিৎসাধীন ৩৬ জন
চাঁদপুরে নতুন করে বেড়েছে ডেঙ্গু রোগের প্রভাব। গত অক্টোবরের চেয়ে নভেম্বর মাসে হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ১৭ জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ১৫ জনসহ মোট ৩৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জেলা শহরের পুরানবাজার এলাকার ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন বেশি। অনেকেই ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে নিজের এলাকায় এসে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুর সদর হাসপাতালে অক্টোবর মাসে ১৩০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নেন। নভেম্বরে ১৯ দিনেই চিকিৎসা নিয়েছেন ৮৭ জন। নারীর চেয়ে পুরুষেরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন এই রোগে।
সিভিল সার্জনের পরিসংখ্যান বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে, অক্টোবরে ৪০১ জন চিকিৎসা নিলেও নভেম্বরে এ পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছে ২৫৩ জন। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ইউনিট খোলা হয়েছে। পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। তবে মানুষকে সচেতন ও আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথা জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত শারমিন জানান, আমিসহ আমার শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদ সবাই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। আমরা সবাই কেরানীগঞ্জে আক্রান্ত হয়েছি। সেখান থেকে চিকিৎসা জন্য বাড়ি চলে আসি, তারপর চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হই।
চাঁদপুর শহরের পুরান বাজার এলাকার সোহেল বেপারী জানান, আমার স্ত্রী ও বোনকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছি। পুরানবাজার এলাকা অধিকাংশ লোকই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। চাঁদপুর পৌরসভা ঠিকভাবে ওষুধ ছিটায় না। তারা ঠিকভাবে কাজ করলে ডেঙ্গুর উপদ্রব কিছুটা কমে আসতো বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
একটি নদীর মৃত্যু মানে একটি সভ্যতার মৃত্যু: চাঁদপুর জেলা প্রশাসক
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেছেন, একটি নদীর মৃত্যু মানে একটি সভ্যতার মৃত্যু। নদীকে তার গতিতে বাঁচতে দিতে হবে। কোন দেশে প্লাস্টিকের ব্যবহার নেই কেউ কি বলতে পারবেন? পৃথিবীর সকল দেশেই প্লাস্টিকের ব্যবহার আছে। পৃথিবীর সকল দেশেই প্লাস্টিক, বালির যথাযথ ব্যবস্থাপনা রয়েছে। যা আমাদের দেশে নেই।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিকাল ৫টায় চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে দ্বিতীয় পর্বে ‘নদ-নদীকে জীবন্ত স্বত্ত্বা ঘোষণা-কিভাবে নদীর অধিকারের স্থায়ী ভিত্তি নির্মাণ করা যাবে?’ বিষয়ে গণশুনানি সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি রয়েছে। নদী দূষনের ক্ষেত্রে আমাদের ব্যবস্থাপনার সমস্যা রয়েছে। আর নদী দখলের ক্ষেত্রে আমাদের রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে। প্রতি মাসে আমরা পানির মান পরীক্ষা করি। আমাদের ডাকাতিয়া নদীর মান ভাল আছে। আপনার আমার ফেলে দেয়া পলিথিন সবশেষে যাচ্ছে ফসলি জমিতে। যার কারণে আমাদের ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। নদীতে পলিথিন ফেললে নদী দূষণ হচ্ছে। পলিথিনের কারণে আমাদের নদীগুলো মরে যাচ্ছে। যে কোন কিছুর বিনিময়ে আমাদের পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
ডিসি বলেন, চরের কারণে চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধ হুমকির সম্মুক্ষিণ হবে। আমাদের ডুবোচরগুলো কেটে দিতে হবে এবং কাটানো দরকার।
তিনি আরও বলেন, দেশ, প্রকৃতি ও সভ্যতাকে বাঁচাতে হলে আমাদের নদীগুলো বাঁচাতে হবে। নদী দখলের নামে আমাদের দেশে একটি সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করা হয়ে থাকে। নদী ভাঙা-গড়া একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। নদীকে শাসনের উদ্যোগ নিতে হবে। নদীকে যদি আমরা দখল না করি, পলিথিন না ফেলি তাহলে নদী ভাল থাকবে। আমাদের নদী, খাল ভরাট হয়ে গেছে। দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। নদীকে কেন আমরা বাঁচিয়ে রাখবো তা প্রথমেই জানতে হবে।
এই পর্বে আরো বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিব, সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ নুর আলম দীন, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট নদী কেন্দ্র চাঁদপুর এর উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক, কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশনের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট মো. ফজলুল হক, পরিবেশ অধিদপ্তর চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের উপপরিচারক মো. মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক লে. মো. শোয়েব, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি রহিম বাদশা, সাবেক সভাপতি গিয়াস উদ্দিন মিলন, মৎস্য ব্যবসায়ী মো. সোহেল গাজী প্রমূখ।
গণশুনানি পর্বে সভাপতিত্ব করেন পরিবশে ও নদী রক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এইচ এম সুমন এবং উপস্থাপনায় ছিলেন স্থানীয় আয়োজক মুসাদ্দেক আল-আকিব। একই সাথে সঞ্চালক বিষয়ের ওপর প্রবন্ধ পাঠ করেন।
এছাড়াও বেলা আড়াইটায় চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে প্রথম পর্বে ‘বালুমহাল ও বালুব্যবস্থাপনা কিভাবে টেকসই, স্বচ্ছ এবং অন্তর্ভূক্তিমূলক হতে পারে?’ বিষয়ে বহুপক্ষীয় পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সর্বশেষ তথ্যানুযায়ি দেশে নদী সংখ্যা ১১৫৬। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে নদীর সংখ্যা ছিলো দুই হাজার। পদ্মা-মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলন বৈধ-অবৈধ নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। নদীর বালু উত্তোলন করাও প্রয়োজন। এসব বিষয়গুলো একটি নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসতে উদ্যোগ নিয়েছে রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার (আরডিআরসি)। তারই অংশ হিসেবে অংশীজনদের নিয়ে চাঁদপুরে দুই পর্বের এ সভা ও গণশুনানি অনুষ্ঠত হয়।
প্রথম পর্বের সভায় সভাপতিত্ব করেন নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুরিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মুশফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, নদীর পরিবেশ রক্ষায় অনেকেই জড়িত। এর মধ্যে নৌ পুলিশও কাজ করে। মূলত আইন শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করে পুলিশ। তবে নদীর বালু ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সকল অংশীজনের মতামত লাগবে। এছাড়া যারা এটি নিয়ে গবেষণা করেন তাদের মতামত নিয়ে কাজ করলে সফলতা আসবে। যেহেতু চাঁদপুরে বর্তমানে কোন বৈধ বালু মহাল নেই, সেকারণে আমরা বালু কাটার সংবাদ পাওয়ামাত্র ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। বলতে পারি অবৈধভাবে বালুকাটা অনেকটা আমাদের নিয়ন্ত্রণে।
এসপি আরও বলেন, চলতি জানুয়ারি মাসে পদ্মা-মেঘনায় অভিযান চালিয়ে ৩৪টি ড্রেজার জব্দ করা হয়েছে। এসব ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে ৮৮জন। এজহার নামীয় আসামী হলেন ৮৪জন। তিনি বলেন, এই ধরণের ব্যবস্থাপনায় সচেতনতা প্রয়োজন। বিগত মা ইলিশ রক্ষা অভিযানে আমি জনগণের মধ্যে সচেতনতা পাইনি। বালুমহাল ও বালুউত্তোলনের ক্ষেত্রে একটি ব্যবস্থাপনায় নিয়ে আসতে হলে সবার আগে স্থানীয় জনগণকে সচেতন হতে হবে। এরপর বহুমুখী সমন্বয় প্রয়োজন। এটি বন্ধ করার জন্য নীতিমালা প্রনোয়নে আমরা কাজ করতে চাই।
এছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আল-ইমরান খাঁন, চাঁবিপ্রবির ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মো. বাইজিদ আহমেদ রনি, চাঁসকের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. সুলতানা তৌফিকা আক্তার, চাঁদপুর নদী বন্দরের অভ্যন্তরীণ জাহাজ পরিচালনা বিভাগের পরিদর্শক মো. আশিকুর রহমান, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক কাদের পলাশ, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশিদ গাজী, বাংলাদেশ নৌ-যান পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশিদ।
প্রথম পর্ব সঞ্চালনায় ছিলেন আয়োজকদের পক্ষে মো. মনির হোসেন। টেকসই বালু ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ধারণা নিয়ে বক্তব্য দেন পরিবশে ও নদী রক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এইচ এম সুমন। নদী থেকে বালু উত্তোলনের ক্ষতিকর ও প্রয়োজনীয়তা বিষয় সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য তুলে ধরেন চাঁদপুর পরিবেশ সংরক্ষন আন্দোলন এর প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক মো. আশিক খান। আর এই বিষয় লিখেছেন অনুষ্ঠানের স্থানীয় আয়োজক মুসাদ্দেক আল আকিব। শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তিলাওয়াত করেন আল-আমিন মডেল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আ.ন.ম ফখরুল ইসলাম মাছুম।
এই পর্বে জেলে, বালুবাহী বলগেট মালিক সমিতির নেতা ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা পরামর্শমূলক বক্তব্য দেন। বক্তারা বালু উত্তোলনের ভিন্ন মত দিলেও ব্যবস্থাপনা নিয়ে ঐক্যমত হওয়ার জন্য আহ্বান জানান।
পরামর্শমূলক এই সভায় বক্তাদের আলোচনায় জানা গেছে, চাঁদপুরে ৭টি বৈধ বালুমহাল ছিলো। কিন্তু এখন একটি বালুমহালের অনুমোদন নেই। উচ্চ আদালত থেকে দুটির জন্য অনুমোদন এনে জেলা প্রশাসনের নিকট দেয়া হলেও সেগুলোর জন্য নীতিগত কোন সিদ্ধান্ত না দিয়ে বালু উত্তোলনের সমস্যাগুলো তুলে ধরে জবাব দেয়া হয়। এছাড়াও জানাগেল সেলিম চেয়ারম্যান থেকে এখন পর্যন্ত পূর্বের বালু তোলার রাজস্ব বকেয় আছে ২৭৪ কোটি টাকা।
দুই পর্বের অনুষ্ঠানে আরডিআরসি ছাড়াও সহযোগী আয়োজক সংগঠন ছিলো সিএনআরএস, আরডিআরএস, অক্সপাম এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
খেজুরের রস পান করতে গিয়ে প্রাণ গেলো ৩ বন্ধুর
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে বাসচাপায় মোটরসাইকেলের তিন আরোহী নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা খেজুরের রস খেতে যাচ্ছিল বলে জানা গেছে।
নিহতরা হলেন, উপজেলার পোনা এলাকার বিষ্ণুদাসের ছেলে দিপু দাস (১৮), একই এলাকার বাবুল নাগের ছেলে বিশাল নাগ (১৯) ও মিনারুল মৃধার ছেলে হৃদয় মৃধা (১৮)। দিপু দাস নবম শ্রেণি ও বিশাল নাগ অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. রকিবুজ্জামান বলেন, মরদেহগুলো সাড়ে ৭টার পর স্থানীয়রা দেখতে পেলেও দুর্ঘটনা ঘটেছে সম্ভবত আরো সকালে। নিহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি তারা মোটরসাইকেলে করে সদরে কোথাও খেজুর গাছের রস খেতে যাচ্ছিল। ভোরে খুব কুয়াশা ছিল।
সাম্পান রেস্টুরেন্টের সামনে তাদের মোটরসাইকেল পৌঁছালে অজ্ঞাত কোনো একটি গাড়ি তাদের চাপা দেয়। আমরা ঘাতক বাহনটি শনাক্তের চেষ্টা করছি। আমাদের আইনানুগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
বগি লাইনচ্যুত: রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ
রাজশাহী-চিলাহাটি চলাচলকারী আন্তঃনগর তিতুমীর এক্সপ্রেস ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল ৬টা ৩৬ মিনিটে রাজশাহীর বেলপুকুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিন বলেন, রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসার কিছুক্ষণ পর বেলপুকুর নামক স্থানে লাইনচ্যুত হয় ট্রেনটি। এর দুইটি চাকা লাইনের বাইরে এসেছে। এখনো উদ্ধার কাজ চলছে।
তিনি আরও বলেন, এটিই রাজশাহী স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া প্রথম ট্রেন। ফলে আজ সকাল থেকেই রাজশাহী স্টেশন থেকে অন্য ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে। রাজশাহী অভিমুখে আসা ট্রেনগুলোও পথে আটকা পড়েছে। উদ্ধার কাজ শেষে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় কাঁপছে তেঁতুলিয়া
শীতে কাঁপছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া। আজ শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে, যা চলতি শীত মৌসুমে সবচেয়ে কম। দেশের সর্ব-উত্তরের এ জনপদে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। ফলে উত্তরের হিমেল বাতাসের সাথে কনকনে ঠান্ডা অব্যাহত রয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ।
আজ শুক্রবার ভোর ৬টায় জেলার তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ১০০ শতাংশ, যা গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
এদিকে উত্তরের হিমেল বাতাসে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়েছে পঞ্চগড় জেলা। সন্ধ্যার পর থেকেই বেড়েছে শীতের তীব্রতা। সকাল সকাল সূর্যের দেখা মিলছে না। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। ছিন্নমূল আর গ্রামীণ মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ।
অন্যদিকে, তীব্র শীত ও আবারও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের কারণে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। একটানা শীতের কারণে মানুষ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্করা আক্রান্ত হচ্ছেন। এ সময়ে সতর্কতার কোনো বিকল্প নেই। সব সময় গরম কাপড় পরতে হবে। গরম খাবার খেতে হবে। শাকসবজি বেশি করে খেতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলা হয়েছে।
তেঁতুলিয়ার আবহাওয়া পর্যেবক্ষণ অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় বলেন, হিমালয় পর্বতের নিকটবর্তী উত্তরের জেলা পঞ্চগড় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বইছে। এতে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। আজ শুক্রবার সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বইছে এ জেলায়। সামনের দিকে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার পূর্বভাসে বলা হয়েছে উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। যার প্রভাবে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
তবে, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা (১-২) ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
গণমাধ্যম
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সভায় চাঁদপুরের সাংবাদিকদের একগুচ্ছ সুপারিশ
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের আয়োজনে চট্টগ্রাম বিভাগের সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (৫ জানুয়ারি) বেলা ১১ টায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় চাঁদপুরের গণমাধ্যম কর্মীরা কিছু লিখিত প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
সভায় চাঁদপুরের ৪ গণমাধ্যম কর্মী উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন- চাঁদপুর টাইমসের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান বার্তা সম্পাদক মুসাদ্দেক আল আকিব, দৈনিক চাঁদপুর দিগন্তের নির্বাহী সম্পাদক মো. ইলিয়াস পাটোয়ারী, দৈনিক চাঁদপুর সময়ের বার্তা সম্পাদক আশিক বিন রহিম, দৈনিক ইলশেপাড়ের বার্তা সম্পাদক এস এম সোহেল প্রমুখ।
সভায় চট্টগ্রাম বিভাগের ৮টি জেলার জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমের সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন। এসময় সাংবাদিকগণ বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ তুলে ধরেন। চাঁদপুরের গণমাধ্যম কর্মীদের পক্ষে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন প্রধান কামাল আহমেদের হাতে লিখিত প্রস্তাবনা তুলে দেন মুসাদ্দেক আল আকিব।
প্রস্তাবনা সমূহ:
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ
• আইনগত সংস্কার: গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সুরক্ষিত করতে প্রাসঙ্গিক আইন যেমন “মিডিয়া আইন” সংশোধন বা নতুন আইন প্রণয়ন করা উচিত, যা সরকারের হস্তক্ষেপ থেকে গণমাধ্যমকে মুক্ত রাখবে।
• স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নজরদারি কমানো: গণমাধ্যমের ওপর রাজনৈতিক অথবা প্রশাসনিক চাপ কমানোর জন্য নজরদারি কমাতে হবে।
• গণমাধ্যম স্বাধীনতা রক্ষা কমিশন: একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করা উচিত, যা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় বিভিন্ন উদ্যোগ নেবে এবং অভিযোগ শোনার ব্যবস্থা করবে।
বস্তুনিষ্ঠতা এবং নৈতিকতার উন্নয়ন
• সাংবাদিকতার নৈতিক গাইডলাইন তৈরি: সঠিক তথ্য প্রদান এবং বস্তুনিষ্ঠতা রক্ষার জন্য একটি জাতীয় নৈতিক গাইডলাইন প্রণয়ন করা উচিত।
• সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ: গণমাধ্যম কর্মীদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা আয়োজন করতে হবে, যাতে তারা তথ্য সংগ্রহ ও পরিবেশনে সঠিকতা এবং নৈতিকতা অনুসরণ করে।
• স্বতন্ত্র সাংবাদিকতা উন্নয়ন: সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ ও পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে, যাতে তারা কোনো ধরনের বাহ্যিক চাপ থেকে মুক্ত থাকে।
গণমাধ্যমের মালিকানা এবং অঙ্গীকার
• মালিকানা বৈচিত্র্য: গণমাধ্যমের মালিকানা বা নিয়ন্ত্রণ একাধিক প্রতিষ্ঠানের হাতে থাকা উচিত, যাতে একক কোনো গোষ্ঠী বা ব্যক্তির প্রভাব না পড়ে।
• সংকটকালীন মালিকানার স্বচ্ছতা: গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকানা ও অর্থায়নের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে জনগণ জানতে পারে কে বা কীভাবে কোন সংবাদ মাধ্যম পরিচালিত হচ্ছে।
নিয়ন্ত্রণ এবং তদারকি সংস্থা গঠন
• স্বাধীন নিয়ন্ত্রণ সংস্থা: একটি স্বাধীন নিয়ন্ত্রণ সংস্থা গঠন করা উচিত যা মিডিয়ার কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করবে এবং প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেবে। এই সংস্থাটি সরকারের নিয়ন্ত্রণ থেকে স্বাধীন থাকবে এবং শুধু গণমাধ্যমের মানসম্পন্নতা বজায় রাখার জন্য কাজ করবে।
• ফেক নিউজের বিরুদ্ধে আইন: মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়ানোর বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে, তবে এটি যেন গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিঘ্ন না ঘটায়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার ও ডিজিটাল গণমাধ্যমের নিয়ন্ত্রণ
• ডিজিটাল নিরাপত্তা: ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে তথ্যের সঠিকতা নিশ্চিত করার জন্য আরও কার্যকর প্রযুক্তিগত নজরদারি ব্যবস্থা থাকতে হবে।
• অনলাইন গণমাধ্যমের সুরক্ষা: অনলাইন মিডিয়ার ক্ষেত্রে কনটেন্ট মডারেশন প্রক্রিয়া শক্তিশালী করতে হবে, যাতে মিথ্যা তথ্য বা ভুয়া খবর দ্রুত বন্ধ করা যায়।
গণমাধ্যমে জনগণের অংশগ্রহণ
• পাঠক বা দর্শকের মতামত: গণমাধ্যমে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পাঠক বা দর্শকদের মতামত প্রকাশের সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে, যাতে তারা সংবাদকর্মীদের কাজের প্রতি তাদের মূল্যায়ন জানাতে পারে।
• গণমাধ্যমের দায়বদ্ধতা: গণমাধ্যমের বস্তুনিষ্ঠতা, স্বাধীনতা ও নৈতিকতা বজায় রাখতে গণমাধ্যমকর্মীদের জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা পালন করতে হবে।
এ ধরনের সংস্কারের মাধ্যমে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং শক্তিশালী ভূমিকা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন প্রধান কামাল আহমেদ। তিনি বলেন, সংবাদপত্রকে স্বাধীন, শক্তিশালী ও বস্তুনিষ্ঠ করার জন্য এ সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। এ কমিশনের প্রধান লক্ষ্য থাকবে সংবাদ প্রতিষ্ঠান এবং সাংবাদিকদের কাজের ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমাদের সম্পাদকীয় নীতিমালা নেই। সারা দেশে সম্পাদকীয় মান অভিন্ন ন্যাশনাল স্টান্ডার্ড থাকা উচিত, সব প্রতিষ্ঠান মেনে চলবে ন্যূনতম সাংবাদিকতার নৈতিকতার দিকগুলো- সেরকম কোন কিছু নেই। সেটার জন্য আমরা সম্পাদক পরিষদকে বলেছি।
কমিশন প্রধান বলেন, আমাদের দেশে একই মিডিয়া হাউসকে টেলিভিশন চ্যানেল, অনলাইন পোর্টাল, প্রিন্ট ভার্সন বা অনলাইন রেডিওর অনুমতি দেয়া হয়েছে। ফলে একই খবর ভিন্ন ভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। এতে পাঠক ভিন্ন কোন মত বা বৈচিত্র পাচ্ছেন না। এগুলোর সমাধান আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। আপনারা আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত mrc.portal.gov.bd এ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মতামত বা সুপারিশ কমিশনের কাছে পৌঁছাতে পারবেন। আপনাদের প্রেরিত মতামত বিবেচনা করে কিভাবে গণমাধ্যমে সংস্কার আনা যায় এ বিষয়ে কমিশন সুপারিশ পেশ করবে।
এছাড়া, কমিশনের সদস্য অধ্যাপক গীতিআরা নাসরীন, আখতার হোসেন খান, বেগম কামরুন্নেসা হাসান, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মোস্তফা সবুজ সহ চট্টগ্রাম পিআইডির উপপ্রধান তথ্য অফিসার মো. সাঈদ হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুজ্জামানসহ বিভিন্ন দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
কাফি