অর্থনীতি
১৬ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৫ হাজার কোটি টাকা

চলতি নভেম্বর মাসের প্রথম ১৬ দিনে দেশে বৈধপথে ১২৫ কোটি ৫১ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে; দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ১৫ হাজার ৬২ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২০ টাকা ধরে)। সে হিসেবে দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৭ কোটি ৮৪ লাখ ডলার বা ৯৪১ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত সবশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি অক্টোবর মাসের প্রথম ১৬ দিনে দেশে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৪২ কোটি ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৭৫ কোটি ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩২ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ৪১ লাখ ৫০ হাজার ডলার এবং সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
গত অক্টোবর মাসে দেশে বৈধপথে প্রায় ২৪০ কোটি (২ দশমিক ৪০ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ছিল ২৮ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। অক্টোবরে প্রতিদিন গড়ে দেশে রেমিট্যান্স আসে ৭ কোটি ৭৩ লাখ ডলার।
একক মাস হিসেবে গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের অক্টোবরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ২১ শতাংশ। গত বছরের অক্টোবরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৭ কোটি ডলার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ৪১ লাখ ৫০ হাজার ডলার এবং সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
আর চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) ৮৯৩ কোটি ৭৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।
আলোচিত সময় ৯ ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স পাঠায়নি প্রবাসীরা। ব্যাংকগুলো হলো রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল, বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বা রাবাক। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে কমিউনিটি ব্যাংক, সিটিজেন্স ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক। আর বিদেশি খাতের মধ্যে রয়েছে হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।
গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দুই হাজার ৩৯২ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। দেশীয় মুদ্রার যার পরিমাণ দুই লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা। দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেকর্ড রেমিট্যান্স এসেছিল ২০২০-২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলার।

অর্থনীতি
জুলাইয়ে বাণিজ্য ঘাটতি কমে ৫৪ কোটি ডলার

রেমিট্যান্স প্রবাহ ও রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধির প্রভাবে দেশের বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যে (ব্যালান্স অব পেমেন্ট–বিওপি) উন্নতি দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে সামগ্রিক বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৬৯ কোটি ৩০ লাখ ডলার। ফলে এক বছরে ঘাটতি কমেছে ১৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার বা ২১.৩৬ শতাংশ।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৭৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের জুলাইয়ে ছিল ৩৮২ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
অর্থাৎ রপ্তানি আয় বেড়েছে ২৫ শতাংশ। একই সময়ে আমদানি বেড়ে দাঁড়ায় ৬২৭ কোটি ডলারে, যা আগের বছর ছিল ৫২৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার। অর্থাৎ আমদানি বেড়েছে প্রায় ১৯.৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে আরো জানা যায়, বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ সামান্য বেড়ে ১৫০ কোটি ৫০ লাখ ডলার হয়েছে, যা গত অর্থবছরের জুলাইয়ে ছিল ১৪৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
অন্যদিকে আর্থিক হিসাবের ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১ কোটি ৮০ লাখ ডলারে, যা আগের অর্থবছরে ছিল ২৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে নেট এফডিআই বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৪ কোটি ডলারে, যা এক বছর আগে ছিল মাত্র ৩৮ কোটি ডলার। একই মাসে দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়ায় ২৯.৮০ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের জুলাইয়ে ছিল ২৫.৮২ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড (বিপিএম-৬) অনুযায়ী হিসাব করলে রিজার্ভ দাঁড়ায় ২৪.৭৮ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের জুলাইয়ে ছিল ২০.৩৯ বিলিয়ন ডলার।
এ সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪৭ কোটি ৮০ লাখ ডলারে, যা আগের বছরের জুলাইয়ে ছিল ১৯১ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এক বছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৯.৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ সামনের দিনগুলোতেও ধরে রাখা চ্যালেঞ্জ হবে। তা না হলে চাপ তৈরি হতে পারে।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম মনে করেন, নিয়মিত লেনদেনে উদ্বৃত্ত থাকলে ঋণ ছাড়াই চলা সম্ভব হয়।
তবে ঘাটতি থাকলে ঋণের ওপর নির্ভর করতে হয়। তাই দীর্ঘমেয়াদে চলতি হিসাবের স্থিতি ইতিবাচক রাখা জরুরি।
অর্থনীতি
তিন মাসে বিদেশি ঋণ বাড়লো ৭ বিলিয়ন ডলার

বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ দ্রুত বাড়ছে। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন- এই তিন মাসে বিদেশি ঋণ বেড়েছে প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার। পুরো ঋণ বৃদ্ধিই সরকারি খাতে হয়েছে, বিপরীতে বেসরকারি খাতে পরিশোধের পরিমাণ নতুন ঋণের চেয়ে বেশি থাকায় তাদের ঋণ সামান্য কমেছে।
সবমিলিয়ে জুন শেষে বৈদেশিক ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১১২ বিলিয়ন ডলারের বেশি, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে প্রায় ৮১ বিলিয়ন ডলার ঋণ বেড়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনকালে।
আলোচ্য সময়ে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা, এআইআইবি সহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা থেকে নতুন ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশ। যদিও বেসরকারি খাতে ঋণ কমেছে, উদ্যোক্তারা তুলনামূলক কম সুদের বিদেশি ঋণের দিকেই ঝুঁকছেন।
ডলারের সংকট মোকাবিলায় পূর্ববর্তী সরকার আমদানি নিয়ন্ত্রণ ও বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ বাড়ানোর মতো পদক্ষেপ নেয়, তবে রিজার্ভ পতন ঠেকানো যায়নি। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর রিজার্ভ স্থিতিশীল হয়েছে এবং বিনিময় হারও স্বাভাবিক হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তাদের মতে, প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি ও প্রত্যাশিত বৈদেশিক ঋণ প্রবাহ এর মূল কারণ।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বৈদেশিক মুদ্রার স্থিতিশীলতায় ঋণ গ্রহণের ঝুঁকি কমলেও সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত না হলে ভবিষ্যতে পরিশোধের চাপ তৈরি হতে পারে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, সরকারি খাতের ঋণ সবচেয়ে বেশি। প্রকল্প বাস্তবায়নে এসব ঋণের প্রয়োজন আছে। তবে আগের মতো অপচয় হলে তা দেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। যথাযথভাবে ব্যবহার করা গেলে ঋণ পরিশোধের সক্ষমতাও তৈরি হবে।
তিনি আরও বলেন, জিডিপির অনুপাতে ঋণ এখনো সহনীয়, কিন্তু বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের তুলনায় সুদ-আসল পরিশোধের চাপ অনেক বেড়ে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুন শেষে বৈদেশিক ঋণের স্থিতি দাঁড়ায় ১১২ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার, যা মার্চের তুলনায় ৭ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলার বেশি। ছয় মাস আগের ডিসেম্বরে এ পরিমাণ ছিল ১০৩ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার। তবে ২০২৪ সালের শেষ প্রান্তিকে ঋণ কিছুটা কমেছিল।
সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঋণ জুন শেষে দাঁড়ায় ৯২ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার, যা তিন মাসে প্রায় ৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে। বিপরীতে বেসরকারি খাতের ঋণ দাঁড়ায় ১৯ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার, তিন মাসে কমেছে ১১ কোটি ডলার। এ সময়ে স্বল্পমেয়াদি ঋণ সামান্য বাড়লেও অন্যান্য ঋণ পরিশোধ বেশি হওয়ায় সামগ্রিকভাবে স্থিতি কমেছে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০০৬ সালের শেষে চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বৈদেশিক ঋণ ছিল ১৯ বিলিয়ন ডলারের কম। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছরে তা বেড়ে হয় ২১ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
অর্থনীতি
১৭ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৭৭ কোটি ডলার

চলতি মাসের (সেপ্টেম্বর) প্রথম ১৭ দিনে প্রবাসীরা ১৭৭ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সেপ্টেম্বরের প্রথম ১৭ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৭৭ কোটি ডলার। অথচ, গত বছরের একই সময়ে এসেছিল ১৪৩ কোটি ডলার। বছর ব্যবধানে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ২৩ দশমিক ৭০ শতাংশ।
এছাড়া গত ১৭ সেপ্টেম্বর একদিনে প্রবাসীরা দেশে ৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।
চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ৬৬৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। বছর ব্যবধানে যা বেড়েছে ১৯ দশমিক ৭০ শতাংশ।
এর আগে, গত আগস্টে প্রবাসীরা ২৪২ কোটি ১৮ লাখ ৯০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। আর গত জুলাইয়ে দেশে এসেছিল ২৪৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।
উল্লেখ্য, ২০২৪-২৫ অর্থবছরজুড়ে প্রবাসীরা ৩০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৩২ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন, যা দেশের ইতিহাসে কোনো নির্দিষ্ট অর্থবছরে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়ের রেকর্ড।
অর্থনীতি
রোহিঙ্গাদের জন্য ৫ লাখ ইউরো দেবে নেদারল্যান্ডস

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য পাঁচ লাখ ইউরো সহায়তা দেবে নেদারল্যান্ডস।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকার নেদারল্যান্ডস দূতাবাস এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার প্রচেষ্টায় নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশকে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ প্রেক্ষাপটে আমরা আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে আমাদের বিশ্বস্ত অংশীদার ইউএনএইচসিআরকে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা এবং মানবিক সহায়তার জন্য পাঁচ লাখ ইউরো সহায়তা দেবে।
অর্থনীতি
রিজার্ভ বেড়ে ফের ৩১ বিলিয়ন ডলার

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী এ অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ০৮ বিলিয়ন ডলারে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গ্রস রিজার্ভ এখন ৩১ বিলিয়ন ডলার, যা এর আগে ছিল ৩০ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার। বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ বেড়ে হয়েছে ২৬ দশমিক ০৮ বিলিয়ন ডলার, যা আগে ছিল ২৫ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকৃত বা নিট রিজার্ভের একটি আলাদা হিসাব রয়েছে, যা প্রকাশ করা হয় না। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এটি এখন ২১ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
সাধারণ নিয়মে একটি দেশের কমপক্ষে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো রিজার্ভ থাকা জরুরি। সে হিসাবে বাংলাদেশ এখন সীমান্তরেখায় রয়েছে। প্রবাসী আয়, রপ্তানি, বৈদেশিক বিনিয়োগ ও ঋণের ডলার রিজার্ভ তৈরি করে; আর আমদানি ব্যয়, ঋণের সুদ ও কিস্তি পরিশোধ, বিদেশি কর্মীদের বেতন, শিক্ষার্থী ও পর্যটক খরচ ইত্যাদির কারণে রিজার্ভ থেকে ডলার বেরিয়ে যায়।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা বেড়েছে, যা বৈদেশিক মুদ্রাবাজারকে স্থিতিশীল করেছে। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করতে হয়নি, বরং ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ডলার কিনেছে।
সর্বশেষ গত ৪ সেপ্টেম্বর পাঁচটি ব্যাংক থেকে ১৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার এবং গত ২ সেপ্টেম্বর আটটি ব্যাংক থেকে ৪ কোটি ৭৫ লাখ ডলার কেনা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছে ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩০ হাজার ২৩৯ কোটি)। আগস্টে এসেছে ২৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার (প্রায় ২৯ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা)।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের মার্চে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। ওই অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স ছিল ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।
গত ১০ বছরে রিজার্ভের ওঠানামা উল্লেখযোগ্য। ২০১৩ সালের জুনে রিজার্ভ ছিল মাত্র ১৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তা প্রথমবারের মতো ৩৯ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে এবং ওই বছরের অক্টোবরে ছুঁয়েছিল ৪০ বিলিয়ন। ২০২১ সালের ২৪ আগস্ট সর্বোচ্চ ৪৮ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। তবে পরবর্তীসময়ে ডলার সংকটের কারণে ধারাবাহিকভাবে রিজার্ভ কমতে থাকে।