জাতীয়
আনিসুল-কাদেরের ক্ষমতাবলে টোল আদায়ে ব্যবসা সিএনএসের

বঙ্গবন্ধু যমুনা বহুমুখী সেতুতে টোল আদায়ে মাত্র ছয় মাসের জন্য কারিগরি সহযোগিতার দায়িত্ব পেয়েছিল কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম লিমিটেড (সিএনএস)। কিন্তু তাদের আর সরানো যায়নি। ছয় মাসের জন্য ঢুকে তারা আট বছর সেতুটির টোল আদায়ে কাজ করেছে।
কাজটি নিজেদের দখলে রাখতে সিএনএস যে কৌশল নিয়েছিল, সেটি হলো মামলা। আদালতে গিয়ে তারা নতুন ঠিকাদার নিয়োগপ্রক্রিয়া আটকে রাখে অভিযোগ আছে, আদালতের আদেশ যাতে সিএনএসের পক্ষে যায়, সে জন্য প্রভাব বিস্তার করতেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
আনিসুল হকের ছোট ভাই আরিফুল হক ২০১০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সিএনএসের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ২০১৭ সালের মার্চে মারা যান। সূত্র বলছে, আরিফুলের মৃত্যুর পর আনিসুল হকই নেপথ্যে থেকে সিএনএসের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। যদিও প্রতিষ্ঠানটিতে তাঁর কোনো পদ ছিল না।
‘মামলা কৌশলে’ শুধু যমুনা সেতু নয়, মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ের কাজও সাত বছর করেছে সিএনএস। ২০১৮ সাল থেকে সৈয়দ নজরুল ইসলাম (ভৈরব) ও শহীদ ময়েজ উদ্দিন (ঘোড়াশাল) সেতুর টোলও আদায় করছে তারা। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত এক যুগে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) অন্তত পাঁচ ধরনের কাজ বাগিয়ে নেয় সিএনএস।
সড়ক মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মন্ত্রণালয়টির অধীন বিভিন্ন দপ্তরে সিএনএসের পাওয়া কাজের অর্থমূল্য দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি। বেশির ভাগ কাজ সিএনএস পেয়েছে উচ্চ মূল্যে। এতে তারা লাভবান হয়েছে। বিপরীতে লোকসান হয়েছে সরকারের।
সড়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, সাধারণ একটি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হয়েও সিএনএসের এত কাজ পাওয়ার পেছনে যেমন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের প্রভাব ছিল, তেমনি সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের আশীর্বাদও ছিল। ওবায়দুল কাদের, আনিসুল হক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান একজোট হয়ে সরকারি কাজ নিয়ন্ত্রণ করতেন। সরকারে তাঁরা ছিলেন প্রভাবশালী। কোনো কারণে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র প্রক্রিয়ায় কাজ না পাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে মামলা করে তা আটকে দিতে আদালতকে ব্যবহার করতেন আনিসুল হক।
আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমান হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে। ওবায়দুল কাদের আত্মগোপনে। তাই তাঁদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সিএনএসের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনির উজ জামান চৌধুরী সপরিবার কানাডা বাস করেন। সেখানে সিএনএসের বৈশ্বিক শাখাও খুলেছেন। তাঁর স্ত্রী সেলিনা চৌধুরী এখন সিএনএসের চেয়ারম্যান।
মনির উজ জামান চৌধুরী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, সাবেক আইনমন্ত্রীর ভাই আরিফুল হক সিএনএসে কাজ করতেন। সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের প্রভাবে কাজ পাওয়ার বিষয়টি অপপ্রচার। তাঁরা অভিজ্ঞতার কারণে কাজ পেয়েছেন।
অবশ্য সড়ক মন্ত্রণালয়ের বর্তমান একাধিক কর্মকর্তার প্রশ্ন, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকলে মামলা করে দরপত্র প্রক্রিয়া আটকে রাখার উদ্দেশ্য কী?
ছয় মাসের জন্য ঢুকে আট বছর
যমুনা সেতুতে টোল আদায়কারীর মেয়াদ শেষ হয় ২০১৬ সালে। পরবর্তী ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া সময়সাপেক্ষ। তাই টোল আদায়ে কারিগরি সহায়তার জন্য সিএনএসকে ছয় মাসের জন্য নিয়োগ দেয় সেতু বিভাগ। অন্যদিকে শুরু হয় স্থায়ী ঠিকাদার নিয়োগের দরপত্র প্রক্রিয়া।
সেতু বিভাগ সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে উন্মুক্ত দরপত্রে এমন শর্ত যুক্ত করা হয়, যাতে সিএনএস ছাড়া অন্য কারও কাজটি পাওয়ার সুযোগ ছিল না। বিষয়টি নিয়ে অংশগ্রহণকারী অন্য ঠিকাদারেরা আপত্তি জানান। এ কারণে দুই দফা দরপত্র বাতিল হয়। তৃতীয় দফায় সিএনএসসহ দেশি-বিদেশি পাঁচটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়।
দরপত্রে দক্ষিণ কোরিয়ার এইচপিসি ও বাংলাদেশের এসইএলের যৌথ উদ্যোগের (জেভি) প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ নম্বর পায়। তারা আদায় করা টোলের মাত্র সাড়ে ৪ শতাংশ নেওয়ার প্রস্তাব করে। অন্যদিকে সিএনএসের প্রস্তাব ছিল সাড়ে ১২ শতাংশ। কাজটি পাবে না বুঝতে পেরে কারিগরি যোগ্যতা মূল্যায়নে অস্বচ্ছতার অভিযোগ এনে হাইকোর্টে রিট মামলা করে সিএনএস। এতে ঠিকাদার নিয়োগ আটকে যায়। এই জটিলতার মধ্যে সিএনএসকে আবার বিনা দরপত্রে ১০ মাসের জন্য যমুনা সেতুর টোল আদায়ের কারিগরি সহায়তার দায়িত্ব দেয় সেতু বিভাগ। এভাবে মামলা চলতে থাকে আর সিএনএসের মেয়াদ বাড়ে। ২০২২ সালের ৩০ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বাতিল করে দেন।
সেতু বিভাগ সূত্র জানায়, আইনি বাধা দূর হওয়ার পর ২০১৭ সালে ডাকা দরপত্রে সর্বনিম্ন দরদাতার সঙ্গে আলোচনা শুরু করে সেতু বিভাগ। কিন্তু আগের দরে তারা কাজটি করতে রাজি হয়নি। ফলে নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রায় ৬০ কোটি টাকার কাজটি পায় চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশন। মেয়াদ পাঁচ বছর। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে সিএনএসের কাছ থেকে দায়িত্ব নিয়েছে চীনা কোম্পানিটি।
দেখা যাচ্ছে, চীনা কোম্পানির পেছনে বছরে ব্যয় হবে ১২ কোটি টাকা। সফটওয়্যার, যন্ত্রপাতি ও জনবলের খরচ তাদের। ভ্যাট ও আয়কর এর ভেতরে। অন্যদিকে শুধু সফটওয়্যার সেবা দিয়ে বছরে ৫ কোটি টাকা নিয়ে যেত সিএনএস। জনবল ও অন্যান্য খরচ ছিল সেতু বিভাগের।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মোহাম্মদ ফেরদৌস প্রথম আলোকে বলেন, মামলার কারণে দীর্ঘ সময় তারা নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দিতে পারেননি।
মামলা ও দরপত্রে অনুকূল শর্ত
২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ের দায়িত্ব ছিল এশিয়ান ট্রাফিক টেকনোলজিস (এটিটি) নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন দরপত্র আহ্বান করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। তখন ইনফ্রাটেক নামের একটি প্রতিষ্ঠান তিন বছরের জন্য নির্বাচিত হয়। কিন্তু তাদের কাজ না দিয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় দরপত্র প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয়। ইনফ্রাটেক আদালতে যায়, মামলায় আটকে যায় ঠিকাদার নিয়োগ।
২০১৫ সালের অক্টোবর থেকে সওজ নিজস্ব উদ্যোগে মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায় শুরু করে। কারিগরি সহায়তা দেয় সিএনএস। সিএনএস আগের দরপত্রে অংশ নিয়েছিল। তবে সর্বনিম্ন দরদাতা হতে পারেনি।
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে দরপত্র ছাড়াই একক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিএনএসকে পাঁচ বছরের জন্য মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ের দায়িত্ব দেয় সওজ। চুক্তি অনুযায়ী, আদায় করা টোলের ১৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ পেত সিএনএস। চুক্তিতে এমন শর্ত রাখা হয়, যেখানে টোলের মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) ও সিএনএসের টোলের ভাগ বাবদ আয়কর দেবে সওজ। ভ্যাট ও আয়কর যুক্ত করলে ঠিকাদারের পেছনে ব্যয় দাঁড়ায় আদায় করা টোলের ২৪ শতাংশের বেশি।
মেঘনা-গোমতী সেতুতে সিএনএসের টোল আদায়ের পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দিতে ২০১৯ সালের ১৭ নভেম্বর সওজ দরপত্র আহ্বান করে। কিন্তু সিএনএস দরপত্র কার্যক্রমের বিরুদ্ধে আদালতে যায়। তারা হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ পায়। মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার পর ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দেয় সওজ। এর মধ্যে সাত বছর কাটিয়ে দেয় সিএনএস।
মেঘনা-গোমতী সেতুতে টোল আদায়কারীকে এখন মোট আয়ের অংশ ধরে বিল দেওয়া হয় না। নতুন ঠিকাদারকে তিন বছরের জন্য ৬৬ কোটি টাকায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবছর গড়ে ব্যয় ২২ কোটি টাকা। সিএনএস পেত বছরে গড়ে ৭৭ কোটি টাকা।
সওজ সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে মেঘনা-গোমতী সেতুতে অতিরিক্ত মালবাহী যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ওজন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। অতিরিক্ত ওজনধারী যানবাহনের কাছ থেকে জরিমানা আদায়ের দায়িত্বও পায় সিএনএস। আদায় করা জরিমানার ১৪ শতাংশ দেওয়া হয় তাদের। টোল ও জরিমানার ভাগ বাবদ সিএনএস মেঘনা-গোমতী সেতু থেকে প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা পেয়েছে।
সৈয়দ নজরুল ইসলাম (ভৈরব) ও শহীদ ময়েজ উদ্দিন (ঘোড়াশাল) সেতুর টোল আদায়ের দায়িত্ব সিএনএস পায় ২০১৮ সালে। আদায় করা টোলের ১৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ পেয়েছে তারা। যদিও দরপত্রে নজরুল ইসলাম সেতুতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএইসি-এটিটি ৭ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং ময়েজ উদ্দিন সেতুতে এম এম বিল্ডার্স ৮ শতাংশ প্রস্তাব করে সর্বনিম্ন দরদাতা হয়েছিল। কিন্তু কারিগরি মূল্যায়নে সিএনএস বেশি নম্বর পাওয়ায় কাজ তাদের দেওয়া হয়।
মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ২৯ সেপ্টেম্বর সিএনএসকেই সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুতে তিন বছর ও ময়েজ উদ্দিন সেতু দুই বছরের জন্য পুনরায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সিএনএসের সঙ্গে এ বিষয়ে ৪২ কোটি টাকার চুক্তি হয়েছে। এ দফায় তারা আদায় করা টোলের ১৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ পাচ্ছে বলে সওজ সূত্র জানিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে সওজের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান বলেন, তিনি জেনে পরে জানাবেন।
সওজ সূত্র জানায়, সেতুতে টোল আদায়ে কোয়ালিটি ও কস্ট বেজড সার্ভিস (কিউসিবিএস) পদ্ধতিতে দরপত্র ডাকা হয়। এতে প্রথমে দরপত্রে এমন শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়, যাতে পছন্দের ঠিকাদারের বাইরে থাকা অন্যরা কম নম্বর পায়। এরপর আর্থিক প্রস্তাব এবং কারিগরি প্রস্তাব একসঙ্গে মূল্যায়ন করে ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে বেশি দর প্রস্তাব করেও কাজ পেয়ে যায় সিএনএস।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, নজরুল ইসলাম ও ময়েজ উদ্দিন সেতুতে টোল আদায় করে ৩০০ কোটি টাকার বেশি আয় করেছে সিএনএস। নিরপেক্ষভাবে উন্মুক্ত দরপত্র ডাকা হলে বর্তমান খরচের চেয়ে অনেক কম ব্যয়ে টোল আদায় সম্ভব।
বিআরটিএতেও সিএনএস
বিআরটিএতে পাঁচটি কাজ পেয়েছে সিএনএস—১. মোটরযানের কর ও ফি আদায়। ২. যানবাহনের ফিটনেস পরীক্ষা করা। ৩. বিআরটিএ কার্যালয়গুলোর সঙ্গে অনলাইন যোগাযোগের ইন্টিগ্রেটেড সিস্টেমের (আইএস) ব্যবস্থাপনা। ৪. বিআরটিএর সার্ভিস পোর্টাল ব্যবস্থাপনা এবং ৫. নথি ডিজিটাল ব্যবস্থায় সংরক্ষণ।
বিআরটিএ সূত্র বলছে, চলমান ও শেষ হওয়া কাজের অর্থমূল্য ৮০০ কোটি টাকার বেশি। এসব কাজের দরপত্রে এমন যোগ্যতার শর্ত যুক্ত করা হয়, যা সিএনএস ছাড়া অন্য কারও নেই। এ ছাড়া একবার কাজ পাওয়ার পর বারবার চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর ঘটনা ঘটছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দরপত্র ছাড়াই কাজ দেওয়া হয় সিএনএসকে।
বিআরটিএর এসব দরপত্র প্রক্রিয়া এক যুগ ধরে দেখভালের দায়িত্বে আছেন সংস্থাটির পরিচালক (প্রকৌশল) সীতাংশু শেখর বিশ্বাস। তাঁকে দিয়েই দরপত্রের শর্ত তৈরি থেকে শুরু করে মূল্যায়ন সম্পন্ন করা হয়েছে। সীতাংশু শেখর প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, তথ্যপ্রযুক্তির কাজে যোগ্যতার কিছু মানদণ্ড লাগে। সিএনএসের পক্ষে শর্ত দেওয়ার বিষয়টি ঠিক নয়। সিএনএস যোগ্যতা দিয়েই কাজ পেয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সহায়তায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে যানবাহনের ফিটনেস পরীক্ষার ব্যবস্থা ভেহিকেল ইন্সপেকশন সেন্টার (ভিআইসি) চালু হয়েছে মিরপুরে। এর সক্ষমতা বৃদ্ধি, যন্ত্রপাতি স্থাপন ও ব্যবস্থাপনার জন্য ২০২৩ সালের ১০ নভেম্বর সিএনএসকে ১০৫ কোটি টাকার চুক্তিতে নিয়োগ দিয়েছে বিআরটিএ। বিআরটিএ সূত্র বলছে, দক্ষিণ কোরিয়া এই কাজ করে দেওয়ার আগ্রহ দেখালেও বিআরটিএ তাতে সাড়া দেয়নি।
স্বাধীন তদন্ত ‘জরুরি’
সিএনএসের কাজ পাওয়ার প্রক্রিয়া ও মামলা কৌশল সম্পর্কে জানানো হলে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, এতে বহুমুখী দুর্নীতি, রাজনৈতিক প্রভাব ও স্বার্থের দ্বন্দ্ব কাজ করেছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাবেক মন্ত্রী বা রাজনীতিকদের প্রভাবে এ রকম দুর্নীতি-অনিয়ম স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত হয়েছিল। এর পেছনে আমলাদের জোরালো যোগসাজশ না থাকলে হয়তো এতটা সম্ভব হতো না। তাই রাজনীতিকের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট আমলাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের সময়টাকে একটা সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এখন এই অনিয়ম-দুর্নীতিগুলোর স্বাধীন তদন্ত করে দায়ীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ভবিষ্যতের জন্য একটা মানদণ্ড তৈরি করতে হবে। এবার ব্যর্থ হলে আর কখনোই সম্ভব হবে না।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয়
প্রধান উপদেষ্টা কাতার যাচ্ছেন সোমবার

‘আর্থনা সামিট-২০২৫’ -এ অংশগ্রহণ করতে চারদিনের সরকারি সফরে আগামীকাল সোমবার কাতারের রাজধানী দোহার উদ্দেশে রওনা দেবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানির আমন্ত্রণে এ সফরে যাচ্ছেন বলে বাসসকে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
তিনি বলেন, সামিটে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি কাতারের আমিরের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন বলে জানা গেছে।
দেশের ইতিহাসে এ প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের চারজন জাতীয় নারী ক্রীড়াবিদ প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে কাতারে যাচ্ছেন। এই চার ক্রীড়াবিদ হলেন- ফুটবলার আফিদা খন্দকার ও শাহেদা আখতার রিপা এবং ক্রিকেটার সুমাইয়া আখতার ও শারমিন সুলতানা।
‘আমাদের উত্তরাধিকার গড়ে তোলা: স্থায়িত্ব, উদ্ভাবন ও ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান’ প্রতিপাদ্যে দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠেয় ‘আর্থনা সামিট’-এ কাতারের উষ্ণ ও শুষ্ক আবহাওয়ায় টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে দেশটির ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি ও অনন্য প্রতিবেশগত বৈচিত্র্যকে কাজে লাগানোর প্রতিশ্রুতি তুলে ধরা হবে।
এই সামিট একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে যেখানে প্রথাগত জ্ঞান ও আধুনিক উদ্ভাবনের সমন্বয়ের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নের নতুন দিক উন্মোচন এবং এক সমৃদ্ধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গঠনের উপায় নিয়ে আলোচনা হবে।
আগামী ২২ ও ২৩ এপ্রিল এই দুই দিনে সামিটে উপস্থাপনা, ইন্টারঅ্যাকটিভ প্যানেল আলোচনা, কর্মশালা ও গোলটেবিল বৈঠকের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
শান্তিরক্ষা মিশনে আরও বেশি ফোর্স নেওয়ার অনুরোধ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ থেকে পুলিশ ও সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যসহ আরও বেশি হারে ফোর্স নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। জাতিসংঘের ডিপার্টমেন্ট অব পিস অপারেশনের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলকে এ অনুরোধ জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রবিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন জাতিসংঘের ডিপার্টমেন্ট অব পিস অপারেশনের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জাঁ পিয়ের লাক্রোয়ার। এসময় উপদেষ্টা এ অনুরোধ জানান।
বৈঠকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অবদান, বর্তমান অবস্থান, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, মিশনের যোগ্য করে গড়ে তোলার জন্য অফিসার ও ফোর্সদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং সামর্থ্য বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া নারী পুলিশ অফিসারদের সমন্বয়ে ফিমেল প্লাটুন প্রেরণ, মিশনে বিজিবি ও আনসার সদস্য প্রেরণের সম্ভাব্যতা, দক্ষিণ সুদান ও সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে ফরমড পুলিশ ইউনিট (এফপিইউ) প্রেরণ, রোহিঙ্গা সমস্যা ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বৈঠকের শুরুতে আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলকে স্বাগত জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একসময় শীর্ষ দেশ ছিল। কালের পরিক্রমায় বর্তমানে আমাদের অবস্থান তৃতীয়। নেপাল ও রুয়ান্ডা বর্তমানে প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা আবারও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণের ক্ষেত্রে প্রথম স্থান পুনরুদ্ধার করতে চাই। আমরা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের আওতায় বিভিন্ন দেশে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও আন্তঃসীমান্ত অপরাধ প্রতিরোধে বিজিবি সদস্যদের পাঠাতে চাই। তাছাড়া মিশনে প্রশিক্ষিত আনসার সদস্যদের পাঠানোর বিষয়েও ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে জাতিসংঘের সহযোগিতা আমাদের একান্ত প্রয়োজন।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অবদানকে স্বীকৃতি জানিয়ে আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, পুলিশসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে তাদের মেধা, দক্ষতা ও যোগ্যতা প্রদর্শনের মাধ্যমে কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর ক্ষেত্রে বর্তমানে বাংলাদেশ শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। সেখানে শীর্ষ পদগুলোতে যাতে বাংলাদেশি অফিসাররা আরও অধিক হারে দায়িত্ব পালন করতে পারে, সে লক্ষ্যে আমরা চেষ্টা করছি।
এসময় তিনি সারাবিশ্বে শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অবদানের কথা উল্লেখ করেন।
এসময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে প্রেরণের জন্য আমাদের একটি ফিমেল প্লাটুন প্রস্তুত রয়েছে। এ ব্যাপারে জাতিসংঘের ডিপার্টমেন্ট অব পিস অপারেশনের সহযোগিতা প্রয়োজন। যাতে তারা প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে দ্রুত শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত হতে পারেন।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘের অনুরোধে সাড়া দিয়ে তাৎক্ষণিক সাফল্যের সঙ্গে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো থেকে দক্ষিণ সুদানে দুটি ফরমড পুলিশ ইউনিট মোতায়েন করে। বাংলাদেশের প্রশংসনীয় পারফরম্যান্স থাকার পরও সেখানে কোনো ফরমড পুলিশ ইউনিট নেই।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, যদিও জাতিসংঘ ২০১৪ সাল থেকে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে একটি মিশন বজায় রেখেছে, সেখানেও বাংলাদেশের কোনো ফরমড পুলিশ ইউনিট প্রতিনিধিত্ব নেই। উপদেষ্টা এ দুই দেশে বাংলাদেশ থেকে ফরমড পুলিশ ইউনিট নেওয়ার জন্য আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলকে অনুরোধ করেন।
উপদেষ্টা আরও বলেন, শান্তিরক্ষা মিশনের পাশাপাশি বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে জাতিসংঘ শুরু থেকে সহযোগিতা দিয়ে আসছে। জাতিসংঘ মহাসচিবের সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের পর রোহিঙ্গা সমস্যা দূরীকরণে আমাদের জনগণের মধ্যে আশা জেগেছে। উপদেষ্টা এসময় রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের আরও সময়োপযোগী ও কার্যকরী উদ্যোগ কামনা করেন।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি) খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান, রাজনৈতিক-১ অধিশাখার যুগ্ম সচিব মু. জসীম উদ্দিন খানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তনের সুপারিশ

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন।
রবিবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্থানীয় সরকার কমিশনের প্রতিবেদন দাখিল পরবর্তী এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন কমিশনের প্রধান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, মন্ত্রণালয়ের নাম হতে পারে স্থানীয় সরকার জনপ্রতিষ্ঠান ও জনপ্রকৌশল সেবা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের অধীনে দুটি বিভাগ থাকবে। একটির নাম হবে জনপ্রতিষ্ঠান বিভাগ ও জনপ্রকৌশল সেবা বিভাগ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতি বিষয়ক হাইকোর্টের রায় স্থগিত

ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে পদোন্নতি দেওয়া সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। একই সঙ্গে আবেদনটি আগামী ১৮ মে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য দিন রাখা হয়েছে।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের করা আবেদনের শুনানি শেষে রোববার (২০ এপ্রিল) আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. রেজাউল হকের চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ। অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ রাফিউল ইসলাম। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
পরে আইনজীবী মোহাম্মদ রাফিউল ইসলাম বলেন, হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। ফলে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টররা জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে পদোন্নতি পাচ্ছেন না। পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা এটা নিয়ে আন্দোল করছেন। এখন যেহেতু রায় স্থগিত হয়ে গেছে তাই আন্দোলনের যৌক্তিকতা থাকে না।
কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ও অধিদপ্তরের অধীন প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্যাডারবহির্ভূত গেজেটেড ও নন-গেজেটেড কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা ২০২০ এর দুটি সিরিয়াল (২৭ ও ২৮) চ্যালেঞ্জ করে গত বছর ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর মো. আশিক মিয়াসহ কয়েকজন হাইকোর্টে রিট করেন।
ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। সেই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ১৮ মার্চ হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদে রিট আবেদনকারীদের (ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর) জন্য কিছু পদ রাখতে বা সন্নিবেশিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। যদি পদ না থাকে তাহলে যোগ্যতাসাপেক্ষে যে কোনোভাবে জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে পদোন্নতি দিতে বলা হয়।
এই রায়ের বিরুদ্ধে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গত ১৫ এপ্রিল লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন।
জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের পদোন্নতির রায় বাতিল করতে হবে। ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন, মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণ বাতিল ও নিয়োগবিধি সংশোধন করতে হবে।
ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যে কোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করতে হবে। চার বছর মেয়াদি কারিকুলাম চালু ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে করতে হবে।
উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রীয়, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্নপদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে। এসব পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ ও সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।
কারিগরি শিক্ষায় বৈষম্য ও দুরবস্থা দূর করার পাশাপাশি দক্ষ জনসম্পদ তৈরিতে ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়’ নামে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও ডুয়েটের আওতাভুক্ত অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ সিটে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
গ্রাম আদালত বিলুপ্তির সুপারিশ

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন এবং গ্রাম আদালত বিলুপ্তির সুপারিশ করেছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন।
রবিবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় স্থানীয় সরকার কমিশনের প্রতিবেদন দাখিল পরবর্তী প্রেস ব্রিফিংয়ে কমিশনের প্রধান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ এ কথা বলেন
তিনি বলেন, উপজেলাতে পূর্ণাঙ্গ দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত এবং এডিআর চালু করার সুপারিশ করা হয়েছে। এটি চালু করা গেলে সাধারণ মানুষ দ্রুত বিচার পাব
তোফায়েল আহমেদ বলেন, সংস্কার ছাড়া জাতীয় সংসদ কিংবা স্থানীয় সরকার; কোনো নির্বাচনেই ভালো ফল আসবে না।
তিনি বলেন, মাত্র ৪০ দিনের একটি শিডিউলে ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের নির্বাচন করা সম্ভব। বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনে ২২৫ দিন লাগে। খরচ হয় ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। একটি শিডিউলে খরচ নেমে আসবে ৭০০ কোটি টাকায়।
এর আগে, বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশন প্রধান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে এ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।