অর্থনীতি
পাচার অর্থ উদ্ধারে নিয়োগ হচ্ছে আন্তর্জাতিক ল ফার্ম

দেশ থেকে বিভিন্ন সময়ে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে আন্তর্জাতিক আইনি প্রতিষ্ঠান তথা ল ফার্ম নিয়োগ হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ গতকাল এ বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। শিগগিরই ওই প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হবে। যোগ্য প্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংক এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সহায়তা নেবে বাংলাদেশ।
এদিকে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধার এবং অভিবাসন ব্যয় কমানোর জন্য সহায়তা চেয়ে সিঙ্গাপুরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল বাংলাদেশে নিযুক্ত সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনার ডেরেক লো প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রায় এক ঘণ্টার আলোচনায় অধ্যাপক ইউনূস রাষ্ট্রদূতকে বলেন, বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরসহ অনেক দেশে প্রচুর অর্থ পাচার হয়েছে।
গতকাল গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে পর্ষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরানো ছাড়াও এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদে ফরেনসিক অডিটর নিয়োগের সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়েছে। এ ছাড়া উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মেনে বেক্সিমকো গ্রুপে রিসিভার নিয়োগ, ব্যাংকিং খাত সংস্কারে গঠিত টাস্কফোর্সের অনুমোদন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অডিট কমিটি পুনর্গঠনসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকে অর্থনীতির সমসাময়িক বিষয়ের ওপর একটি উপস্থাপনা দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশ থেকে বেশি অর্থ পাচার হয়েছে যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কয়েকটি দেশে। পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে এরই মধ্যে এসব দেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। বিতর্কিত ব্যবসায়ী এস আলমসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করে তাদের বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে। এখন সার্বিক সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক আইনি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ হবে। একই সঙ্গে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে আলাদা একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হবে।
এমআই

অর্থনীতি
খেলাপি ঋণ বেড়ে ৪ লাখ কোটি টাকা ছাড়ালো

মার্চ শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকার ওপরে। বিতরণ করা ঋণের ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশই খেলাপি, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে খেলাপি ঋণের নতুন রেকর্ড। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ বেড়েছে সাড়ে ৭৪ হাজার কোটি টাকার বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতের বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৭ লাখ ৪১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা।
রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকই খেলাপি। মার্চ পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ঋণ দিয়েছে ৩ লাখ ১৯ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। এর মধ্যে খেলাপি ১ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৪৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
এ সময়ে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ঋণ দিয়েছে ১৩ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ২ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ২০ দশমিক ১৬ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং বিশেষ ব্যাংকের ক্ষেত্রে এ হার ১৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ। খেলাপি ঋণের সাথে বেড়েছে প্রভিশন সংরক্ষণের ঘাটতিও।
অর্থনীতি
এনবিআরের রাজস্ব সভায় ট্রাম্প-ইলন মাস্ক

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়কর অনুবিভাগের রাজস্ব পর্যালোচনা সভায় সরাসরি ও ভার্চুয়ালি যোগ দেওয়ার রীতি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। তবে রবিবার (১৫ জুন) আয়োজিত সভায় ভার্চুয়ালি যোগ দেওয়া আইডিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, শীর্ষ ব্যবসায়ী ও প্রযুক্তিবিদ ইলন মাস্ক ও তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতিসহ বিভিন্ন নাম দেখা গেছে।
এবিষয়ে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সভায় এমন আরও অনেক আইডি থেকে যোগ দেওয়া হয়েছে, যাদের বাস্তবে কোনো অস্তিত্ব নেই। আইডিতে স্যামসাং ফোনের বিভিন্ন মডেলের নাম, বিভিন্ন সালের নাম ও নানা ধরনের সংখ্যা দিয়ে সভায় অংশ নিতে দেখা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, গত মাসে অধ্যাদেশ বাতিলসহ চারটি দাবিতে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন। সরকারি আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করা হলেও চেয়ারম্যানকে অপসারণ বিষয়ে কোনো কথা বলা হয়নি। এরপর চেয়ারম্যানকে অসহযোগিতার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সশরীরে ঢাকার বিভিন্ন কমিশনার সভায় অংশ নিলেও মাঠপর্যায়ে অসন্তোষ আছে। তাই জুমে বেশি উপস্থিতি দেখাতেই এমনটা করা হয়েছে।
এবিষয়ে জানতে এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খানের মুঠোফোনে যোগোযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সভায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মে মাস পর্যন্ত আয়কর খাতে আদায়ের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। জানা গেছে, অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে, এসময়ে আদায় হয়েছে এক লাখ ৫ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ। অন্যদিকে অর্থবছরের মে মাসে আদায় হয়েছে মাত্র ১০ হাজার ১৩০ কোটি টাকা।
অর্থনীতি
পাঁচ ব্যাংক শিগগিরই একীভূত, চাকরি হারাবেন না কর্মীরা: গভর্নর

বেসরকারি খাতের পাঁচটি ইসলামী ব্যাংককে খুব শিগগিরই একীভূত করা হবে। একত্রিত হলেও এসব ব্যাংকের কর্মীরা চাকরি হারাবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। রবিবার (১৪ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান গভর্নর।
ব্যাংকগুলোর একীভূত করার বিষয়ে গভর্নর বলেন, নির্বাচনের সঙ্গে ব্যাংক মার্জারের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা আশা করব পরবর্তী সরকার এসে এই প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তবে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা না করে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক মার্জার করা হবে। এক্ষেত্রে ব্যাংক কর্মকর্তাদের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। তবে প্রয়োজনে শাখাগুলো স্থানান্তর করা হবে। যেসব ব্যাংকের শাখা শহরে বেশি, সেসব ব্যাংককে গ্রামে পাঠানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, পাচারকৃত সম্পদ উদ্ধারের প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে হবে। আদালতের চূড়ান্ত রায় ছাড়া কোনো সম্পদ উদ্ধার সম্ভব নয়। এজন্য আগে সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে আইনি নথিপত্র তৈরি করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই আদালতের মাধ্যমে যাচাই হোক—আমাদের দাবি যথাযথ কি না। আদালতের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই অর্থ উদ্ধার সম্ভব হবে।
ড. আহসান এইচ মনসুর বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির (এডিআর) প্রসঙ্গ তুলে বলেন, আদালতের বাইরে সমঝোতার মাধ্যমে অর্থ ফেরত আনার ব্যবস্থাও রয়েছে। এই পদ্ধতিতেও একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়, যেখানে উভয় পক্ষের আইনজীবীরা আলোচনা করে সমাধান খুঁজবেন।
তিনি জানান, কোন পথে এগোনো হবে, আদালত নাকি এডিআর, সেটি নির্ধারণ করবে সরকার। সরকারের নির্দেশনা পেলেই বাংলাদেশ ব্যাংক সম্পদ উদ্ধারে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবে।
গভর্নর বলেন, দেশীয় সম্পদের জন্য দেশের আদালতে এবং বিদেশি সম্পদের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের আদালতে মামলা পরিচালনা করতে হবে। এই লক্ষ্যেই প্রস্তুতি চলছে।
অর্থনীতি
টানা ১০ দিন পর হিলিতে আমদানি-রপ্তানি শুরু

টানা ১০ দিন ঈদের ছুটি কাটিয়ে রোববার (১৫ জুন) থেকে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
পবিত্র ঈদুল আযহা ও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে গত ৫ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত বন্দরের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। তবে এই সময়েও হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে দুই দেশের বৈধ পাসপোর্ট-ভিসাধারী যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক ছিল।
রোববার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হিলি বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মো. নাজমুল হোসেন।
তিনি জানান, ঈদের ছুটি শেষে আজ সকাল থেকে বন্দর দিয়ে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু হয়েছে। ফলে হিলি বন্দর এলাকায় আবারও কর্মচাঞ্চল্য ফিরে আসবে বলে আশা করছি।
হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার এসআই মো. আবু তালেব বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও দুই দেশের বৈধ পাসপোর্ট যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক ছিল।
কাফি
অর্থনীতি
আরেক দফা বাড়লো সোনার দাম

দেশের বাজারে সোনার দাম আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। এবার ভরিতে ২ হাজার ১৯২ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫২৮ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। যা রেববার (১৫ জুন) থেকে কার্যকর হবে।
শনিবার (১৪ জুন) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে, সবশেষ গত ৫ জুন দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানো হয়েছিল। সে সময় ভরিতে ২ হাজার ৪১৫ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৭২ হাজার ৩৩৬ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।
অপরদিকে সোনার দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম।