পুঁজিবাজার
সুকুক ছাড়ার আগে-পরে ভিন্ন চিত্র বেক্সিমকোর, ভোগান্তিতে বিনিয়োগকারীরা

বেক্সিমকো সুকুকের বিনিয়োগকারীদের জন্য দুঃসংবাদ—আগামী ডিসেম্বরে এই শরিয়াহভিত্তিক বন্ড থেকে মুনাফা নয় শতাংশে নেমে আসবে।
এটি পাঁচ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের ১২ দশমিক তিন শতাংশ ও অক্টোবরের মূল্যস্ফীতি ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশের কম।
মূলত সুকুকের মুনাফার হার নির্ধারক বেক্সিমকো লিমিটেডের আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় এমনটি হতে যাচ্ছে।
২০২০-২১ অর্থবছরের প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটি শরিয়াহভিত্তিক বন্ড ‘বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক আল ইস্ততিসনা’র মাধ্যমে তিন হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের ঘোষণা দেয়।
ওই বছর বেক্সিমকোর মুনাফা এক হাজার ৪০০ শতাংশ বেড়ে ৬৬০ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক প্রতিবেদন বলছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে মুনাফা আরও বেড়ে এক হাজার ২৫৪ কোটি টাকা হয়।
এরপর শুরু হয় সংকট। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি ৩৬ কোটি টাকা লোকসানের কথা জানায়।
বেক্সিমকোর এই আকস্মিক সংকটের কারণে সুকুকের মুনাফার হার কমে যাওয়ায় সুকুকের বিনিয়োগকারী ব্যাংক, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছু বিষয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
দেশের প্রথম বেসরকারি সুকুক বন্ডের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে বেক্সিমকো বেশি করে মুনাফা দেখিয়েছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার বলে তারা মনে করছেন।
২০২০-২১ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি উচ্চ মুনাফার ওপর ভিত্তি করে ৩৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। পরের বছর বেক্সিমকোর শেয়ারহোল্ডারদের ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়া হয়।
এ দিকে, বেক্সিমকোর লভ্যাংশের ওপর সুকুকের কুপন হার নির্ভর করে। প্রথম দিকে প্রতিষ্ঠানটি ভালো লভ্যাংশ দেওয়ায় শুরুর দিকে সুকুকের কুপন হারও ছিল সেই সময়ের ট্রেজারি বন্ডের তুলনায় অনেক বেশি।
প্রথম বছর সুকুক কুপনের মুনাফা ছিল প্রায় ১২ শতাংশ। সেসময় ট্রেজারি বন্ডের সুদহার ছিল তিন দশমিক ৯২ শতাংশ। তাই তখন সুকুক খুবই লাভজনক দেখাচ্ছিল।
তা সত্ত্বেও বেক্সিমকো সুকুকের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ছিল না। তা কেনার জন্য একাধিকবার মেয়াদ বাড়ানো হলেও প্রতিষ্ঠানটি তাদের লক্ষ্য অনুযায়ী টাকা তুলতে পারছিল না।
এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রজ্ঞাপন দিয়ে ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য গঠিত এক বিশেষ তহবিলের টাকা থেকে বেসরকারি খাতের এই সুকুক কেনার অনুমতি দেয়।
যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক এই তহবিল গঠন করেছিল পুঁজিবাজারে টাকার প্রবাহ বাড়াতে। এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য ব্যাংকগুলোকে ২০০ কোটি টাকার তহবিল গঠনের অনুমতি দেওয়া হয়।
ছয় ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান তাদের সুকুক বন্ড কিনতে চাপ দিয়েছিলেন।
দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সুকুক কিনতে তাদের অন্য শেয়ার বিক্রি করতে হয়েছিল।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সালমান এফ রহমানের স্কিম প্রত্যাখ্যান করেছেন। ফলে ৭৫০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি মাত্র ৫০ কোটি টাকা পেয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলো সুকুক বন্ড কিনতে বাধ্য হয়েছিল। এই সুকুক কিনতে অনেককে অন্য শেয়ার বিক্রি করতে হয়। ফলে, বাজারে এর প্রভাব পড়ে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ডিএসইর প্রধান সূচক প্রথমবারের মতো সাত হাজার ৩৫৬ পয়েন্ট ছাড়িয়ে যায়। তখন ডিএসইর লেনদেন ছিল গড়ে দুই হাজার কোটি টাকা। এর চার মাসের মধ্যে লেনদেনের পাশাপাশি সূচক কমতে শুরু করে। ছয় মাসের ব্যবধানে ডিএসইর গড় লেনদেন ৭০০ কোটি টাকায় নেমে আসে। সূচক কমে এক হাজার পয়েন্টের বেশি।
তবে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি ও ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজের পরিচালক সাইফুল ইসলাম এ বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করে বলেন, সুকুকের বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী প্রাতিষ্ঠানিক হওয়ায় তাদের সুকুকে বিনিয়োগ বাজারে প্রভাব ফেলেনি। তার দাবি, প্রতিষ্ঠানগুলো পুঁজিবাজার থেকে সুকুকে টাকা স্থানান্তর করেনি।
গত সেপ্টেম্বরের শুরুতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক আল ইস্ততিসনা ও আইএফআইসির গ্যারান্টিযুক্ত শ্রীপুর টাউনশিপ গ্রিন জিরো কুপন বন্ড ইস্যুতে অনিয়ম তদন্তে কমিটি করে।
যেভাবে কমবে বেক্সিমকোর সুকুকের কুপন রেট
প্রতি বছর সুকুকের অভিহিত দামের বিপরীতে নয় শতাংশ বেস রেট নিশ্চিতভাবে পাওয়ার কথা আছে বিনিয়োগকারীদের। সুকুক প্রসপেক্টাস অনুসারে, ওই বছরের জন্য বেক্সিমকোর নগদ লভ্যাংশ নয় শতাংশের বেশি অতিরিক্ত লভ্যাংশের ১০ শতাংশ সুকুকের বেসর রেটের সঙ্গে যুক্ত হবে।
এ বছর বেক্সিমকো নগদ লভ্যাংশ দিচ্ছে না। তাই আগামী ডিসেম্বরে পরবর্তী পেমেন্টে সুকুক বিনিয়োগকারীরা সর্বনিম্ন নয় শতাংশ হারে লভ্যাংশ পাবেন।
সুকুকে বেশ কয়েকটি ব্যাংক বিনিয়োগ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় অনেকে সময়মতো প্রথম কুপন পেমেন্ট পায়নি।
যেমন, রূপালী ব্যাংক সুকুকে বিনিয়োগ করেছে ২০০ কোটি টাকা। বেক্সিমকো তা পরিশোধে দেরি করেছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির এক শীর্ষ কর্মকর্তা।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আগামীতে বাকি টাকা পাওয়া যাবে কিনা, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ব্যাংকটি।
সুকুক বিনিয়োগকারীদের ওপর ফ্লোর প্রাইসের বাধা
সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, বেক্সিমকোর শেয়ারের ওপর ফ্লোর প্রাইস দেওয়ায় সুকুক বিনিয়োগকারীরা তাদের টাকা শেয়ারেও রূপান্তর করতে পারছেন না। এর দাম কৃত্রিমভাবে বাড়িয়ে রাখা হয়েছে।
সুকুক বিনিয়োগকারীরা প্রতি বছর তাদের টাকার ২০ শতাংশ বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারে রূপান্তর করতে পারেন। প্রতিষ্ঠানটির ২০ দিনের গড় লেনদেনের টাকা বিবেচনায় নিয়ে সুকুক ক্রেতারা ২৫ শতাংশ ছাড়ে শেয়ার নিতে পারবেন।
তবে কয়েক মাস ধরে এই প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম ১১৫ টাকার নিচে আটকে আছে।
সাইফুল ইসলামের ভাষ্য, ফ্লোর প্রাইস তুলে নিলে এর দাম কমতে পারে। ফ্লোর প্রাইস বহাল রাখার বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার সিদ্ধান্তের কারণে সুকুক বিনিয়োগকারীরা শেয়ার রূপান্তর করেও মুক্তি পাবেন না। যত দ্রুত সম্ভব ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার সুপারিশ করেন তিনি।
একইভাবে ডিএসইর সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার পক্ষে মত দেন। তার মতে, এতে সুকুক বিনিয়োগকারীরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
তিনি বলেন, যারা বন্ডকে শেয়ারে রূপান্তর করে এখান থেকে বের হতে চেয়েছিলেন ফ্লোর প্রাইসের কারণে তাদের শেয়ার বিক্রির বিকল্প নেই।
বেক্সিমকো লিমিটেডের ফ্লোর প্রাইস সচল রাখার সিদ্ধান্তকে ‘বাজে’ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ‘শরীরের কোনো অংশে পচন ঘটলে তা কেটে ফেলতে হবে। আর কোনো উপায় নেই। তা না হলে পুরো শরীর পচে যাবে।’
‘ফ্লোর প্রাইস বাড়ালে সূচকে প্রভাব পড়তে পারে। এটি তুলে নেওয়া ছাড়া বিকল্প নেই’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শেয়ার ধরে রাখা বিনিয়োগকারীদের পোর্টফোলিওকে কৃত্রিমভাবে বাড়িয়ে দেখানো হয়, তাদেরকে অনেক টাকা ঋণ দেওয়ার অনুমতি আছে। অন্যদিকে সুকুক বিনিয়োগকারীরা এখন শেয়ার রূপান্তর করলে লোকসানে পড়বেন।
তার প্রশ্ন, ‘এই ক্ষতির দায় কে নেবে?’
বিএসইসির মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘বেক্সিমকোর কাছ থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার বিষয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত নেয়নি। কোনো সুকুকধারী বিএসইসির কাছে আবেদন করলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা তা বিবেচনা করবে।’
এবিষয়ে বেক্সিমকো লিমিটেডের কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ আসাদ উল্লাহ মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বেক্সিমকো লিমিটেডের সর্বশেষ আর্থিক বিবরণীতে বলা হয়েছে, দেশে-বিদেশে পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়া, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলার সংকট ও গ্যাস-বিদ্যুতের খরচ বেড়ে যাওয়ার মতো সংকটের কারণে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি লোকসানে পড়েছে।

পুঁজিবাজার
পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআই’র যৌথ আলোচনা

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়ন, এসএমই কোম্পানি তালিকাভুক্তকরণ বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি, নতুন আর্থিক পণ্য উদ্ভাবন এবং স্টার্টআপ ও ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পে অর্থায়ন বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) যৌথ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) গুলশানে ডিসিসিআই কার্যালয়ে ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে ডিএসই’র পরিচালনা পর্ষদ এবং ডিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট তাসকিন আহমেদ ও পরিচালনা পর্ষদের উপস্থিতিতে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভার শুরুতেই ডিসিসিআইর প্রেসিডেন্ট তাসকিন আহমেদ ডিএসই’র প্রতিনিধিবৃন্দকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ব্যবসায় লাভ ক্ষতি রয়েছে। যে সকল কোম্পানি পুঁজিবাজার থেকে মূলধন উত্তোলন করেছে তাদের সাথে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করতে হবে। আমাদের মতো দেশগুলোর অথবা আমাদের থেকে কিছুটা এগিয়ে থাকা দেশগুলোর সাথে তুলনা করে আগামীর কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে হবে। আমাদের মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন টু জিডিপি রেশিও এখনও ২০% নিচে। আমাদের মত অর্থনীতির অনেক দেশে এটি ৪০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশের অধিক। পুঁজিবাজারে এসএমই-এর অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে।
তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য কিছু দীর্ঘমেয়াদী ও স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা করতে হবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো দ্বৈত কর ব্যবস্থার প্রত্যাহার ও এর প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং পণ্যের বৈচিত্রকরণ করা। আমাদের দেশের অর্থনীতিতে এসএমই কোম্পানিগুলোর ব্যাপক অবদান রয়েছে। এসএমই কোম্পানিগুলোর ফাইন্যান্সের উপর বেশি করে গুরুত্ব দিতে হবে। বর্তমানে আরজেএসসি-তে ২ লক্ষের উপর কোম্পানি রয়েছে এর মধ্যে মাত্র ৩৬০টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। এছাড়াও সরকারী কোম্পানি ও মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তির উপর গুরুত্বারোপ করেন।
এসময় ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, আমাদের পুঁজিবাজার দেশের অর্থনীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে উন্নত হতে পারেনি। কিন্তু আশার বিষয় হলো এই সরকার প্রথমবারের মতো পুঁজিবাজারের প্রতি গভীরভাবে মনোযোগ দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামানকে এই বিষয়ে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এই বাজেটে পুঁজিবাজারবান্ধব কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যেগুলো হলো টার্ণওভারের উপর এআইটি কমানো, মাচেন্ট ব্যাংকের ট্যাক্স কমানো ও তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে কর্পোরেট ট্যাক্স এর ব্যবধান বৃদ্ধি করা। বিএসইসি কিছু উদ্যোগ নিয়েছে যেগুলো হলো সিসি একাউন্টের ইন্টারেস্ট বিষয়ে সমাধান ও বিও একাউন্টের নবায়ন ফি কমানো। বিএসইসি মার্কেটে শৃঙ্খলা আনার জন্য আগের চেয়ে অনেক বেশি সক্রিয় হয়েছে। একটি দক্ষ, স্বচ্ছ এবং ন্যায় ভিওিক পুঁজিবাজারের বিকাশ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এখন একটি সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং ডিএসই পুঁজিবাজারের কেন্দ্রীয় শক্তি হিসেবে, এই উন্নয়নের রূপান্তরকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। বিগত দিনে মার্কেটে রেগুলেটর অনেক সময় অযৌক্তিক হস্তক্ষেপ করেছে। এখন পুঁজিবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের প্রতি আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে। বিনিয়োগকারীগণ বাজারে ফিরে আসছে এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীগন সক্রিয় হচ্ছে। বর্তমানে ইক্যুইটি মার্কেটের সাথে বন্ড মার্কেটেকে কিভাবে উন্নয়ন করা যায় এই বিষয়ে ডিসিসিআই-এর সহযোগিতা প্রয়োজন। ডিসিসিআই ক্যাপিটাল মার্কেটের একটি বড় স্টেকহোল্ডার।
তিনি বলেন, আইপিও প্রসেস এর ডিজিটালাইজেশন এর প্রক্রিয়া চলমান। এছাড়াও ভালো কোম্পানিগুলোকে দ্রুত বাজারে নিয়ে আসার জন্য গ্রীণ চ্যানেল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিএসইসি এই বিষয়ে আমাদের সহযোগিতা করছে। ডিএসই ও ডিসিসিআই উভয় প্রতিষ্ঠান ভবিষ্যতে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়িয়ে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং পুঁজিবাজারকে আরও শক্তিশালী ও টেকসই করার লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম চলমান রাখতে পারে। এরই লক্ষ্যে স্বল্প সময়ের মধ্যে এসএমই উদ্যোক্তাদের এসএমই বোর্ডে তালিকাভুক্তর প্রসেস এবং অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড (এটিবি)’র সুবিধা ও তালিকাভুক্তির প্রসেস নিয়ে চেম্বার সদস্যদের সাথে পৃথক দুটি অনুষ্ঠানের আয়োজনের বিষয়ে একমত পোষণ করেন।
এছাড়াও আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য স্টক এক্সচেঞ্জ গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে ব্যাংকের সুদের হার বৃদ্ধির ফলে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে এটি সহজ করা সম্ভব। এছাড়াও এসএমই একটি বিশাল খাত। বেসরকারি খাতের প্রায় ৭৫% এসএমই। তাদের এক্সপোজার আছে, সংযোগ আছে, উন্নয়নের জায়গা আছে। তাই সরকার এ ব্যাপারে তালিকাভুক্ত এবং অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর জন্য কী ব্যবস্থা নিতে পারে তা বিবেচনায় আনতে পারে। ২০০৯ সালে, একটি সমীক্ষায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল যে, সরকারের ৭.৫ মিলিয়ন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প রয়েছে। আমরা মনে করি যে, এই অর্থনৈতিক ইউনিট থেকে অধিক পরিমানে বিনিয়োগের জন্য পুঁজিবাজারের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআইর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, রাজিব এইচ চৌধুরী, ভাই প্রেসিডেন্ট মো. সেলিম সোলাইমান, সেক্রেটারি জেনারেল (ভারপ্রাপ্ত) এ. কে. এম আসুদুজ্জামান পাটুয়ারি, ডিএসইর পরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ কামরুজ্জামান (অব.), সৈয়দ হাম্মাদুল করীম, মো. শাকিল রিজভী, প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আসাদুর রহমান, এফসিএস সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
পুঁজিবাজার
মার্কেন্টাইল ইসলামী ইন্স্যুরেন্সে চেয়ারম্যান নির্বাচিত

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মার্কেন্টাইল ইসলামী ইন্স্যুরেন্স পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, কোম্পানিটির চেয়ারম্যান হিসাবে আব্দুল হক নির্বাচিত হয়েছেন।
এসএম
পুঁজিবাজার
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের পরিচালকের শেয়ার হস্তান্তর

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের এক পরিচালক পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শেয়ার হস্তান্তর সম্পন্ন করেছেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, কোম্পানিটিরি পরিচালক তাসনিম বিনতে মোস্তফা তার কাছে থাকা ৮ লাখ ৮৫ হাজার শেয়ার তার স্বামী রাশিক আলম চৌধুরীর (কোম্পানির সাধারণ শেয়ারহোল্ডার) কাছে হস্তান্তর করেছেন।
এক্সচেঞ্জের ট্রেডিং সিস্টেমসের বাইরে শেয়ারগুলো উপহার হিসেবে হস্তান্তর করেন এই পরিচালক। গত ৪ সেপ্টেম্বর তিনি শেয়ার হস্তান্তরের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
এসএম
পুঁজিবাজার
ডিএসইর অযাচিত হস্তক্ষেপে আবারও গতি হারাচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার

দেশের শেয়ারবাজার দীর্ঘদিন ধরেই মন্দাভাব কাটাচ্ছে। মাঝে মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে বাজারে কিছুটা ইতিবাচক আচরণ দেখা দিলেও তা টিকছে না ডিএসইর অতিরিক্ত হস্তক্ষেপের কারণে। বাজার চলবে বাজারের নিজস্ব গতিতে- এমন প্রতিশ্রুতি দিলেও নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ঘোষণাকে কার্যত ভেস্তে দিচ্ছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পদক্ষেপ।
বাজার সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কোন হাউজ থেকে কে কোন শেয়ার কিনছেন বা বিক্রি করছে, কেন করছে—এসব খুঁটিনাটি বিষয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপ করছে ডিএসই। এ নিয়ে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজে নিয়মিত চিঠি পাঠানো হচ্ছে। ফলে বাজারের স্বাভাবিক গতি বারবার ব্যাহত হচ্ছে। এর প্রভাবে সাম্প্রতিক সময়ে প্রতিদিনের লেনদেন নেমে এসেছে প্রায় অর্ধেকে।
এদিকে বাজার পতনের অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে এসেছে মার্জিন ঋণ। বিনিয়োগকারীরা ঋণ নিয়ে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে গিয়ে একসময় হারিয়ে ফেলছেন নিজের মূল পুঁজি। শুধু তাই নয়, মার্জিন ঋণের কারণে বাড়তি সেল প্রেসার বিক্রির চাপ তৈরি হয়ে ক্ষতির মুখে পড়ছেন অন্যান্য বিনিয়োগকারীও।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, একটি বাজারে হরেক রকম পণ্য থাকলে বিনিয়োগকারীও আসবে ভিন্ন ভিন্ন চাহিদা নিয়ে। কিন্তু সেখানে যদি কর্তৃপক্ষ অযাচিত বাধা সৃষ্টি করে, তাহলে সেই বাজারে গতি হারানো অনিবার্য। তাঁদের মতে, ডিএসইর এমন নাক গলানো মনোভাব চলতে থাকলে শেয়ারবাজারের দীর্ঘমেয়াদি সংকট আরও গভীর হতে পারে।
এবিষয়ে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম বলেন, সার্ভিলেন্স সংক্রান্ত বিষয় হলে সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ ২০২০ এর ১৭ অনুযায়ী ইন্সপেকশন করতে চাইলে করতে পারে। তবে কেউকে শেয়ার ক্রয় বা বিক্রয় করেন- এটা বিএসইসি বা ডিএসই বলতে পারে না। শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের বিষয়টি বিনিয়োগকারীদের ইচ্ছাধীন। কিন্তু সার্ভিলেন্স সংক্রান্ত কোনো পার্টিকুলার সিকিউরিটিজ সংক্রান্ত তাদের কোয়েরি থাকতে পারে। তবে সেটা লিখিত মাধ্যমে হতে হবে। আইন অনুযায়ী ইন্সপেকশন বা সার্ভিলেন্স সংক্রান্ত বিষয়ে লিখিত তথ্য চাইলে ব্রোকারেজ হাউজগুলো দিতে বাধ্য।
এবিষয়ে জানতে ডিএসইর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আসাদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মিটিংয়ে আছি। পরে কথা বলবো।
গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন কমেছে ৩ হাজার ১৮০ কোটি টাকা। এসময় বাজার মূলধন কমেছে ০.৪৪ শতাংশ বা ৩ হাজার ১৮০ কোটি টাকা। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৫ হাজার ৭৪৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয়েছিল ৬ হাজার ৪৯১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এক সপ্তাহে লেনদেন কমেছে ৭৪৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা। প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১৪৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা বা ১১.৪৫ শতাংশ।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সোমবার ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৪৭৫ পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে। রোববার লেনদেন শেষে যা ৫ হাজার ৪৬৮ পয়েন্টে ছিল। ডিএসইর বাছাই করা ৩০ কোম্পানির শেয়ার নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচকও ৬ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৩৫ পয়েন্টে উঠেছে। রোববার এই সূচকটির অবস্থান ছিল ২ হাজার ১২৯ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৮৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। রোববার যা ১ হাজার ১৮৫ পয়েন্টে ছিল।
পুঁজিবাজার
বে লিজিংয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠান বে লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, কোম্পানিটির চেয়ারম্যান হিসাবে ফাতেমা জহির মজুমদার নির্বাচিত হয়েছেন।
এসএম