রাজনীতি
৩১ দফা নিয়ে সেমিনার করবে বিএনপি
রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা ৩১ দফাকে নতুন করে ব্র্যান্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। এরই অংশ হিসেবে দলটি এবার সেমিনার করবে। সব ঠিক থাকলে আগামী ২৩ নভেম্বর রাজধানীর একটি হোটেলে এই সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, যুগপৎ আন্দোলনের বাইরে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন করা রাজনৈতিক দলগুলোকে এই সেমিনারে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরাসহ বিশিষ্টজনরা অংশ নেবেন।
এ বিষয়ে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, আমি সেমিনারের বিষয়ে শুনেছি। তবে এখনও সবকিছু চূড়ান্ত হয়নি।
এর আগে, যুগপৎ আন্দোলনের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই ‘সংবিধান ও রাষ্ট্রব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কার’ এবং অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে ‘রাষ্ট্র মেরামতে ৩১ দফা’ ঘোষণা করে বিএনপি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দফাগুলো জাতির সামনে উপস্থাপন করেন।
‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে ৩১ দফা’র রূপরেখার মধ্যে রয়েছে- (১) সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন, (২) সম্প্রীতিমূলক সমন্বিত রাষ্ট্রসত্ত্বা প্রতিষ্ঠা ও জাতীয় সমন্বয় কমিশন গঠন, (৩) নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন, (৪) রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা, (৫) প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের সময়সীমা নির্ধারণ, (৬) আইনসভায় উচ্চকক্ষের প্রবর্তন, (৭) সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন, (৮) নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার এবং সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি সংশোধন, (৯) স্বচ্ছতা নিশ্চিত করণে সকল রাষ্ট্রীয়, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের পূর্ণগঠন, (১০) জুডিশিয়াল কমিশন গঠন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনঃপ্রবর্তন ও সংবিধানের আলোকে বিচারপতি নিয়োগ আইন প্রণয়ন, (১১) প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন গঠন, (১২) মিডিয়া কমিশন গঠন, (১৩) দুর্নীতি প্রতিরোধে দৃশ্যমান কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ও ন্যায়পাল নিয়োগ, (১৪) সর্বস্তরে আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, (১৫) অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন গঠন, (১৬) ধর্মীয় স্বাধীনতার সর্বোচ্চ নিশ্চয়তা প্রদান, (১৭) মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনা শ্রমের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা, (১৮) শিল্প, বিদ্যুৎ, খনিজ ও জ্বালানি খাত আধুনিকায়ন এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা, (১৯) জাতীয় স্বার্থের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করে বৈদেশিক সম্পর্ক উন্নয়ন, (২০) প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সকল বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখা, (২১) বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বশাসিত ও ক্ষমতাবান করা, (২২) শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও স্বীকৃতি প্রদান, (২৩) আধুনিক ও যুগোপযোগী যুব উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন, (২৪) নারীর ক্ষমতায়নে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ, (২৫) চাহিদা ও জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম শিক্ষিত জনগোষ্ঠী গড়ে তোলা, (২৬) ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ এই নীতির বাস্তবায়ন করা হবে, (২৭) কৃষকের উৎপাদন ও বিপণন সুরক্ষা দিয়ে কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা, (২৮) সড়ক, রেল, নৌ পথের আধুনিকায়ন ও বহুমাত্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, (২৯) জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ এবং নদী শাসন ও খাল খননের উদ্যোগ গ্রহণ করা, (৩০) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, মহাকাশ গবেষণা এবং আণবিক শক্তির উন্নয়ন ও সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং (৩১) যুগোপযোগী, পরিকল্পিত, পরিবেশবান্ধব আবাসন এবং নগরায়ন নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।
বিগত কিছুদিন ধরে এই ৩১ দফাকে লিফলেট আকারে বিলি ও দেয়াল লিখনের পাশাপাশি ভার্চুয়ালি ভিডিও কনটেন্ট আকারে প্রচার চালিয়ে আসছে বিএনপি। এবার বিষয়টিকে আরও গুরুত্ব দিয়ে বিশিষ্টজনদের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সেমিনার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে: জামায়াত আমির
ৃস্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও শান্তি দিতে চাচ্ছে না। এই সমাজকে, দেশকে অস্থির করার জন্য ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার আঠারোমাইল মোড়ে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে এক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমিরে জামায়াত বলেন, আবহমানকাল থেকে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। সব ধর্মের মানুষ মিলে-মিশে বসবাস করি। এমন দেশ দুনিয়ায় কমই আছে। অতীতে যারা শাসন করেছেন তারা দেশকে সাজাতে পারেননি, শুধু নিজেদের সাজিয়েছেন। দেশের মানুষকে কাজ দেয়ার পরিবর্তে রিজিক তুলে নিয়েছেন। লাখো বেকারের মিছিলে দেশ জর্জরিত।
তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কলমের পরিবর্তে গুণ্ডাদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। মানুষের টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। আমরা দেশকে ভালোবাসি, এ দেশটি আমরা গড়তে চাই। এমন সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন করতে চাই, যেখানে দুর্নীতিবাজ দখলদার থাকবে না। আমাদের মা বোনেরা ইজ্জতের সঙ্গে চলাফেরা করতে পারবেন। যোগ্যতা অনুযায়ী যুবকরা যেন কাজ পায়, সেই সমাজ গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ।
ডা. শফিকুর রহমান আরো বলেন, এমন সমাজ আমরা কায়েম করতে চাই, যেখানে ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য আদালতের দরজায় মানুষকে কাঁদতে হবে না। আদালত নিজেই দায়িত্ব নিয়ে মানুষকে ন্যায়বিচার পাইয়ে দেবে। এ জন্য তৈরি থাকতে হবে কোরবানির জন্য, জিহাদের জন্য। মুক্তি অর্জন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে।
বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও খুলনা জেলা আমির মাওলানা এমরান হুসাইন, সাতক্ষীরা জেলা আমির মাওলানা শহিদুল ইসলাম মুকুল।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
বন্ধুর বেশে ৫৩ বছর ডাকাতি করেছে ভারত: জামায়াত আমির
ভারত বন্ধুর বেশে এসে ৫৩ বছর ডাকাতি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে যশোর শহরের একটি হোটেলে আয়োজিত সুধী সমাবেশ প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সমাবেশে জামায়াত আমির বলেন, ভারত আসলো বন্ধুর বেশে, শুরু করে দিলো ডাকাতি। এ কেমন বন্ধুত্ব! ১৬ ডিসেম্বর রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পণে সব অস্ত্রই তারা নিয়ে গেছে। ৫৩ বছর ধরে আমাদের প্রাণের বন্ধু সেই গুলির একটি খোসাও ফেরত দেয়নি। এ কী ধরনের বন্ধুত্ব!
যশোরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে এই সুধী সমাবেশের আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামীর যশোর জেলা শাখা। এতে বিগত সরকারের সময় নির্যাতিত ও নিহতদের পরিবারের স্ত্রী-সন্তানরাও অংশ নেন।
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস নিয়ে মোদীর টুইট’ বাংলাদেশকে ছোট করেছে দাবি করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের বিজয় দিবস নিয়ে ছয় লাইনের একটি টুইট করেছেন, সেখানে একটি লাইনেও বাংলাদেশের নাম নেই। এটা নাকি ভারতের বিজয় দিবস! এ দেশের বুদ্ধিজীবীরা স্বাধীনতার চেতনা নিয়ে এতদিন চিৎকার করেছেন, তারা মোদীর এ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি, প্রতিবাদ জানাননি। জামায়াতে ইসলামী তার জায়গা থেকে প্রতিবাদ করেছে। আপনারা কেন চুপ ছিলেন?
জামায়াত আমির বলেন, আমরা পিণ্ডির হাত থেকে মুক্তি পেলেও দিল্লির কাছে জিম্মি হয়েছিলাম। যদি এই দেশ স্বাধীন দেশ হয়, তাহলে আগামীতে তার মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকবে। সন্তানদের রক্তের বিনিময়ে নতুন করে স্বাধীন দেশ পেয়েছি। তাদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করবো। তারা বলছেন, সামাজিক বৈষম্য দূর করতে চান, স্বাধীনভাবে সম্মান নিয়ে বাঁচতে চান। তাদের সবার স্লোগানের সঙ্গে আমরা একমত। আগামীর বাংলাদেশ এই তরুণদের হাতে তুলে দেবো। তাদের রক্ত নষ্ট হয় নাই, তাদের হাতেই দেশটা নিরাপদ। সেই দেশ বিশ্বের দরবারে নজির স্থাপন করবে।
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ শাসনের নামে শোষণ করতে গিয়ে দেশে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে। তারা শুধু শারীরিকভাবে আঘাত দেয়নি, মানুষের মান-ইজ্জত নিয়ে টানাটানি করেছে। তারা মানুষের রিজিক নিয়ে টানাটানি করেছে। আওয়ামী লীগ ভারতের কাছে এই দেশটা ইজারা দিয়েছিল। দেশ স্বাধীনের পর আমরা আমাদের স্বাধীনতাকে সুরক্ষা দিতে পারিনি। সেই কারণেই তার মূল্য আমাদের পরিশোধ করতে হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে মন্তব্য করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার শিক্ষাব্যবস্থাকে শেষ করে দিয়েছে। সব গুন্ডাপান্ডা দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একেবারে শেষ করে দিয়েছে। আমাদের সন্তানেরা লেখাপড়া করবে, নৈতিক শিক্ষায় উৎকর্ষ সাধন করবে। ফলে শিক্ষার পাঠ চুকিয়ে যাওয়ার শেষেই তাদের কাজ হাতে চলে আসবে। তাদের কারও করুণার পাত্র হয়ে থাকতে হবে না। এখন সার্টিফিকেটের নামে যে কাগজগুলো ধরিয়ে দেওয়া হয়, অনেকেই সেই কাগজগুলো আগুনে ধরিয়ে দেয়। আমরা আগামীর বাংলাদেশে কাগজের সার্টিফিকেট দেবো না; কোয়ালিটির সার্টিফিকেট তুলে দিতে চাই। আমরাই সেই শিক্ষাব্যবস্থা তুলে দেবো আগামী প্রজন্মের হাতে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রসূলের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জামায়াতের যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসেন, সহকারী পরিচালক আজিজুর রহমান, জেলা নায়েবে আমির হাবিবুর রহমান, যশোর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আহসান হাবিব, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবু মোর্ত্তজা ছোট, সাংবাদিক ও গবেষক বেনজিন খান, জেলা শুরা সদস্য অ্যাডভোকেট গাজী এনামুল হক প্রমুখ।
সমাবেশ পরিচালনা করেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ আবু জাফর সিদ্দিকী, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক গোলাম কুদ্দুস, কর্মপরিষদ ও শুরা সদস্য নূর-ই-আলী নূর মামুন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার তারিখ চূড়ান্ত
উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন ও যাত্রার তারিখ চূড়ান্ত হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এনামুল হক চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, আগামী ৭ জানুয়ারি লন্ডন যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আপাতত সেখানেই চলবে চিকিৎসা।
জানা গেছে, কাতার এয়ারলাইন্সের একটি অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়া লন্ডন যাবেন। সফরসঙ্গী হিসেবে থাকছেন ১৫জন। তাদের মধ্যে রয়েছেন পুত্রবধু শর্মিলা রহমান, সাত জন চিকিৎসক, দুই জন ব্যক্তিগত সচিব, দুইজন গৃহকর্মী, একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও দুইজন বিএনপি নেতা।
সফরের জন্য সবার ভিসাসংক্রান্ত কাজ এরইমধ্যে শেষ হয়েছে। লন্ডন থেকে আমেরিকা যাবার কথা থাকলেও আপাতত সেই পরিকল্পনাও বাদ দেয়া হয়েছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।
দলের অভ্যন্তরে আলোচনা রয়েছে, খালেদা জিয়া তার ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সঙ্গে নিয়েই দেশে ফিরবেন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ ১৫ নেতা বহিষ্কার
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সভাপতি, সম্পাদকসহ ১৫ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে প্রশাসন। এদের মধ্যে ছয়জনকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। অন্যদের বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা উপকমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১২ ডিসেম্বর সিন্ডিকেটের ৫৩৫তম সভায় এ সিদ্ধান্তের অনুমোদন দেওয়া হয়।
গতকাল শনিবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে শুধু বহিষ্কৃতদের সংখ্যা প্রকাশ করে প্রশাসন। আজ রবিবার তাদের নাম-পরিচয়সহ শাস্তির মেয়াদ প্রকাশ করা হয়েছে।
সিট বাণিজ্য, র্যাগিং ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরাসরি হামলাসহ নানা সময়ে করা বিভিন্ন অপরাধের দায়ে মোট ১৮ জনকে শাস্তি প্রদান করা হয়। এদের মধ্যে ১৫ জনই নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের বিভিন্ন পদে আছেন বা কর্মী হিসেবে পরিচিত।
জনসংযোগ আফিস থেকে পাওয়া তালিকা অনুযায়ী, ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শাখার বর্তমান সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান বাবু ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-আল-গালিব। এ ছাড়া সাবেক সভাপতি ও সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া ও ফয়সাল আহমেদ রুনুকেও স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। স্থায়ী বহিষ্কারের তালিকায় আরো নাম আছে মাদারবখশ হলের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত কুমার রায় ও একই হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মো. মিশকাত হাসানের।
এ ক্ষেত্রে কারো ছাত্রত্ব না থাকলে তাদের সনদ বাতিল করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ আছে।
দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে ছাত্রলীগের পাঁচ নেতাকর্মীকে। তারা হলেন নবাব আব্দুল লতিফ হল শাখার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শামীম রেজা, বঙ্গবন্ধু হল শাখার সাবেক দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম, ছাত্রলীগ কর্মী মুজাহিদ আল হাসান ও মো. আব্দুল্লাহ আত তাসরীফ। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী। এই তালিকায় আরো আছেন আরবী বিভাগের ২০১৯-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে দল বিবেচনায় তাদের বহিষ্কার করা হয়নি। অপরাধের ধরণ দেখে শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে রোকেয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলফি শাহরিন আরিয়ানা, ছাত্রলীগকর্মী জারিফা আহনাফ ইলমা, মাদারবখশ হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কিশোর পাল ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আহসানুল হককে (মিলন)।
এ ছাড়া ছাত্রলীগকর্মী আনিকা আলম উষা, মরিয়ম আক্তার শান্তা পেয়েছেন ছয় মাস বহিষ্কারের সাজা। মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী অন্তর বিশ্বাসকে র্যাগিংয়ের অভিযোগে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই অভিযোগে মো. নাজমুল হোসেন নাবিলকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এদিকে বিভিন্ন হল থেকে আবাসিকতা বাতিল করা হয়েছে ১৪ জনের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের। তবে তাদের রাজনৈতিক বিবেচনায় কোনো শাস্তি প্রদান করা হয়নি বরং সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে। এ জায়গাটাতে একটি সুস্পষ্ট বার্তা থাকবে যে ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধের সাথে কেউ যুক্ত থাকলে তাকে দল-মত-নির্বিশেষে শাস্তি পেতে হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাচ্ছেন। শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলে এবং নতুন কোনো সমস্যার সৃষ্টি না আগামী ২৯ ডিসেম্বর লন্ডন যেতে পারেন তিনি। ওইদিন দিনের বেলায় কোনো এক ফ্লাইটে লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করতে পারেন তিনি। বেগম জিয়ার সঙ্গে তার ব্যক্তিগত ও মেডিক্যাল বোর্ডের কয়েকজন শীর্ষ চিকিৎসক যাবেন।
রবিবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বেগম খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য আগামী ২৯ ডিসেম্বর লন্ডন যেতে পারেন। চূড়ান্ত না হলেও এ ধরনের একটি চিন্তাভাবনা আমাদের রয়েছে।
খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার লিভার প্রতিস্থাপন প্রয়োজন। এছাড়া ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ফুসফুস, কিডনি, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন গত ২৯ অক্টোবর সাংবাদিকদের জানান, উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে প্রথমে ‘লং ডিসটেন্স স্পেশালাইজড এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে’ লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর সেখান থেকে তাকে অন্য একটি দেশে মাল্টিডিসিপ্ল্যানারি মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হবে। সে দেশটি যুক্তরাষ্ট্র বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত আগস্টের শুরুতে নবায়নকৃত মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) খালেদা জিয়ার কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর নভেম্বরে তিনি যুক্তরাজ্যের ভিসার কাজ শুরু করেন। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ছাড়াও সৌদি আরবের ভিসা পেয়েছেন বেগম জিয়া। চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার সময় সৌদি থেকে ওমরাহ করতে পারেন তিনি।
খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী হিসেবে ইতোমধ্যে অন্তত ১৫ জনের একটি তালিকা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেওয়া হয়েছে। গত ৩০ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যুক্তরাজ্যে যাবেন এবং ওই দেশের ভিসা পাওয়ার জন্য সহায়তা দেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সফরকারীদের মধ্যে বেগম জিয়ার পরিবার ও তার সহকারী রয়েছেন।
এর আগে ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই লন্ডন যাত্রা করে একাধিক মামলার পরোয়ানা মাথায় নিয়ে ওই বছরের ১৮ অক্টোবর দেশে ফেরেন খালেদা জিয়া। ওই সময় তিনি যুক্তরাজ্যের ডা. হ্যাডলি ব্যারির চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট সংক্রান্ত দুদকের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে যান বিএনপি চেয়ারপারসন। পরে ২০২০ সালের মার্চে তৎকালীন আওয়ামী সরকার নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে বেগম জিয়াকে সাময়িক মুক্তি দেয়। প্রতি ছয় মাস পরপর তার সাময়িক মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়। চলতি বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তন হলে পরদিন (৬ আগস্ট) বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তির আদেশ দেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন।