অর্থনীতি
বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্যের দাম ১৮ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ
মূল্যবৃদ্ধির প্রধান কারণ হিসেবে বৈরী আবহাওয়া এবং জ্বালানির ক্রমবর্ধমান মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে। এর ফলে কৃষি উৎপাদন ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা খাদ্য বাজারকে অনিশ্চিত করে তুলেছে।
অক্টোবরে বৈশ্বিক খাদ্যের মূল্য ১৮ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। সেপ্টেম্বর তুলনায় অক্টোবরেমূল্য বৃদ্ধির হার ২ শতাংম বেড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)।
এফএও ফুড প্রাইস ইনডেক্স অক্টোবর মাসে ১২৭ দশমিক ৪ পয়েন্টে পৌঁছায়। এটি এপ্রিল ২০২৩-এর পর থেকে সর্বোচ্চ রেকর্ড। সংস্থাটি বলছে, ২০২৩ সালের অক্টেবরে বিশ্বে খাদ্যপণ্যের যে দাম ছিল, তার তুলনায় চলতি ২০২৪ সালের অক্টোবরে তা বৃদ্ধি পেয়েছে অন্তত ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
মূল্যবৃদ্ধির প্রধান কারণ হিসেবে বৈরী আবহাওয়া এবং জ্বালানির ক্রমবর্ধমান মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে। এর ফলে কৃষি উৎপাদন ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা খাদ্য বাজারকে অনিশ্চিত করে তুলেছে।
এই মূল্যবৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছে ভোজ্য তেল। অক্টোবর মাসে ভোজ্য তেলের মূল্য ৭ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দুবছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রত্যাশার চেয়ে কম উৎপাদনের কারণে পাম, সয়াবিন, সূর্যমুখী ও সরিষার তেলের মূল্য বেড়েছে।
শস্যের মূল্য দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রে বৈরী আবহাওয়ার কারণে এই মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। তবে, অক্টোবর ২০২৩-এর তুলনায় শস্যের মূল্য এখনও ৮ দশমিক ৩ শতাংশ কম।
ডেইরি এবং দুগ্ধজাত পণ্যের মূল্য ১ দশমিক ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২১ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। বৈশ্বিক চাহিদা বৃদ্ধির ফলে এই মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে। চিনির দাম অক্টোবর মাসে ২ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। ব্রাজিলে খরার কারণে চিনির উৎপাদনে প্রভাব পড়েছে এবং জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিও এর একটি বড় কারণ। তবে, গত বছরের তুলনায় চিনির মূল্য এখনও ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ কম।
মাংসের ক্ষেত্রে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। অক্টোবরে মাংসের মূল্য দশমিক ৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। তবে, গত বছরের তুলনায় মাংসের মূল্য ৭ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি রয়েছে। পশ্চিম ইউরোপে সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছু বাজারে চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়েছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
৭ দিনের মধ্যে সব আমদানি দায় পরিশোধের নির্দেশ
ব্যাংকের মেয়াদোত্তীর্ণ আমদানি ঋণপত্র বা এলসি দায় আগামী ৭ দিনের মধ্যে পরিশোধ করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নির্ধারিত সময়ে দায় পরিশোধে ব্যর্থ হলে তার কারণ জানাতে হবে। পাশাপাশি এখন থেকে এলসির দায় বিলম্ব হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাও শাস্তির আওতায় আসবে।
এ বিষয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহীদের চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, বৈশ্বিক মহামারি কোভিডের সময় আমদানি ঋণপত্র বা এলসি দায় পরিশোধে সুবিধা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন বৈশ্বিক মহামারি নেই তারপরও কিছু ব্যাংক দায় পরিশোধে বিলম্ব করছে। এই তালিকায় এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো অন্যতম। এখন প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলারের মতো মেয়াদোত্তীর্ণ এলসির দায় রয়েছে। যার কারণে বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। বেড়ে যাচ্ছে আমদানি এলসির খরচ। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামী ৭ দিনের মধ্যে সব আমদানি দায় পরিশোধ করতে বলেছে।
এমন চিঠি ব্যাংকের এমডিদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পর্যাপ্ত ডলার না থাকলে প্রয়োজনে ডলার কিনে দায় পরিশোধ করতে হবে। নির্ধারিত সময় যদি কোনো ব্যাংক দায় পরিশোধে ব্যর্থ হয় তাহলে এর যথাযথ কারণ জানাতে হবে। এ ছাড়া, এখন থেকে কোনো ঋণপত্র খোলার আগে গ্রাহকের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা যাচাই করে খুলতে হবে। যদি দায় পরিশোধে ব্যর্থ হয় তাহলে এলসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকেও শাস্তির আওতায় আনা হবে।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) একটি সার্কুলার জারি করে এলসি দায় পরিশোধে বিলম্বকারীদের জন্য বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগ।
নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি জানায়, এলসির দায় পরিশোধে বিলম্বের কারণে বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। যার ফলে আমদানি ব্যয় চার্জ ও বিভিন্ন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। তাই এখন থেকে এলসি খোলার আগে গ্রাহকের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা নিশ্চিত করতে হবে। যদি কোনো দায় পরিশোধের অর্থ না থাকে তাহলে কোন উৎস থেকে অর্থায়ন হবে তা নিশ্চিত করতে হবে। কোনোভাবেই মেয়াদোত্তীর্ণ এলসি গ্রহণযোগ্য হবে না। সময়মতো পেমেন্ট নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হলে লেনদেনের জন্য দায়ী কর্মকর্তাকে জবাবদিহিতার পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দেশের বাজারে আরেক দফা কমল স্বর্ণের দাম
দেশের বাজারে আরেক দফা স্বর্ণের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ২ হাজার ৫১৯ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৬ হাজার ১৮৯ টাকা নির্ধারণ করেছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। বুধবার (১৩ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য কমেছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৬ হাজার ১৮৯ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ২৯ হাজার ৯৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১১ হাজার ৪২৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯১ হাজার ৪১১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।
এর আগে, সবশেষ গত ৭ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় ভরিতে ৩ হাজার ৪৫৩ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৯১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ১৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে ৮ নভেম্বর থেকে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৪৮ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ২৮ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২০ বার। আর ২০২৩ সালে দাম সমন্বয় করা হয়েছিল ২৯ বার।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আকুর দায় পরিশোধের পর ফের কমলো রিজার্ভ
এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল পরিশোধের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফের ২০ বিলিয়নের নিচে নেমে এসেছে। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, গত রোববার (১০ নভেম্বর) সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের আকুর বিল পরিশোধ করা হয়েছে ১ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার। তাতে বিপিএম৬ পদ্ধতি (আইএমএফ) অনুসরণ করে রিজার্ভের পরিমাণ ১৮ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার দাঁড়িয়েছে। আর গ্রস রিজার্ভ রয়েছে ২৪ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার।
বড় অঙ্কের আকু পেমেন্ট হওয়ার কারণে রিজার্ভ সাময়িক কমেছে জানিয়ে মুখপাত্র বলেন, তবে রেমিট্যান্সের ধারা ঊর্ধ্বমুখী ও রফতানি আয় বাড়ছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রা আসায় রিজার্ভ আবার আগের অবস্থানে ফিরে আসবে।
এর আগে গত সপ্তাহে দীর্ঘদিন পর বিপিএম-৬ হিসাব অনুযায়ী রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছিল। আর গ্রস রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৫৭৩ কোটি মার্কিন ডলার বা ২৫ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার।
উল্লেখ্য, দেশের রফতানি আয় গত অক্টোবর মাসে ২০ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেড়ে ৪ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। আর অক্টোবর মাসে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
পেট্রোবাংলার বকেয়া আদায়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে এনবিআরের চিঠি
বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) কাছে বকেয়া ৩৫ হাজার ৮৬২ কোটি পাওনা রাজস্ব আদায়ে অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
রবিবার (১০ নভেম্বর) অর্থবিভাগের সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদারকে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান এই চিঠি দিয়েছে। যেখানে এনবিআরের বকেয়া রাজস্ব পরিশোধ করতে পেট্রোবাংলাকে ঋণ দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। এনবিআরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা এসব তথ্য জানিয়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়, এনবিআরের বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিউ) ভ্যাটের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা। ২০২১ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত সংস্থাটির বকেয়ার পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা। বকেয়া পরিশোধে এনবিআর ও পেট্রোবাংলার মধ্যে বেশ কয়েকবার সভা হয়েছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানির উত্তোলন করা গ্যাস বিতরণের বকেয়া ১৩ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা ভ্যাটও দীর্ঘদিন পরিশোধ না হওয়ায় জটিলতা তৈরি হয়েছে। এই জটিলতা কাটাতে চলতি বছরের জুনে অর্থ বিভাগে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় এনবিআরকে টাকা পরিশোধের শর্তে বিনা সুদে পেট্রোবাংলাকে তিন অর্থবছরে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। যেমন- ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৫ হাজার কোটি টাকা, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৫ হাজার কোটি টাকা এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৩ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা ঋণ হিসাবে অর্থ বিভাগ পেট্রোবাংলাকে দেবে। এরই মধ্যে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বকেয়া রাজস্ব পরিশোধের জন্য পেট্রোবাংলাকে ৫ হাজার কোটি টাকা সুদমুক্ত ঋণ অনুমোদন করে।পেট্রোবাংলার ভ্যাট ফাঁকি ২৩ হাজার …চিঠিতে চলতি অর্থবছরে পূর্বনির্ধারিত পাঁচ হাজার কোটি টাকা ঋণ বরাদ্দ দেওয়ার জন্য অর্থ বিভাগকে অনুরোধ করে এনবিআর।
চিঠিতে আরও বলা হয়, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করে সরকারের রাজস্ব আদায় কার্যক্রমে সচেষ্ট রয়েছে এনবিআর। এ কার্যক্রমকে গতিশীল করতে বিভিন্ন অংশীজনের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এনবিআরের জন্য ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং তন্মধ্যে স্থানীয় পর্যায়ে মূল্য সংযোজন করের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৭৭ হাজার ছয় শত কোটি টাকা। দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে এবং জনসেবার মাত্রা ও পরিমাণ বৃদ্ধিকল্পে অধিক রাজস্ব জোগান দেওয়ার অন্যতম কৌশল হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বকেয়া রাজস্ব আদায়ে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করছে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, বিদেশি কোম্পানি কর্তৃক উত্তোলিত গ্যাস বিতরণের বিপরীতে বকেয়া ভ্যাট বাবদ ১৩ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা দীর্ঘদিনেও পরিশোধ না করার জটিলতা নিরসনে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের উপস্থিতিতে গত ৪ জুলাই অর্থ মন্ত্রণালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিস্তারিত আলোচনার পর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, পেট্রোবাংলার আওতায় গ্যাস বিতরণ কোম্পানিসমূহ আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি (আইওসি) কর্তৃক উত্তোলিত গ্যাস বিতরণের বিপরীতে আহরিত মূসক ও সম্পূরক শুল্ক জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে পরিশোধ না করার কারণে জুলাই ২০০৯ হতে জানুয়ারি ২০১৫ পর্যন্ত রাজস্ব বকেয়া বাবদ ১৩ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা (সুদ ছাড়া) ৩ অর্থবছরে পরিশোধের সুবিধার্থে অর্থ বিভাগ বিনা সুদে পেট্রোবাংলাকে ঋণ প্রদান করবে।
ওই চিঠিতে ২০২১ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত বকেয়া ২২ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা পরিশোধের বিষয়ে স্পষ্ট কোনো অনুরোধ করা হয়নি বলে জানা গেছে। তবে বকেয়া ভ্যাট আদায়ের অগ্রগতির ভিত্তিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
পুঁজিবাজারের ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি থাকলে লভ্যাংশ নয়
পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর মুলধন ঘাটতি থাকলে কোনো ভাবেই লভ্যাংশ দেওয়া যাবে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কোনো ব্যাংক এই ধরনের কাজ করে থাকলে তা সংশ্লিষ্ট বিভাগে জানাতে বলেছে সংস্থাটি।
সোমবার (১১ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকে গভর্নরের সাথে ১৭ ব্যাংকের ব্যাবস্থাপনা পরিচালকের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
মুখপাত্র বলেন, বৈঠকে যেসব ব্যাকের আমানত ভালো অবস্থানে রয়েছে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে আরও বেশি পরিমাণে তারল্য সহায়তা দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন গভর্নর। ইতোমধ্যে যাদের তারল্য পর্যাপ্ততা কম রয়েছে তাদেরকে তারল্য সহায়তা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একটি মেকানিজম করে দিয়েছে। সেই মেকানিজমের ওপরই অন্য ব্যাংকগুলোকে অশগ্রহণ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, এরআগে এক্সচেঞ্জ রেট এবং ফরেন এক্সচেঞ্জ মার্কেট নিয়ে কোনো চ্যালেঞ্জ আছে কি না এটা নিয়ে গভর্নর জানতে চেয়েছিলেন। ব্যাংক এমডিরা জানান, এটা নিয়ে চ্যালেঞ্জ না থাকলেও ‘ওভার ডিউ পেমেন্ট অব এলসির’ ক্ষেত্রে কিছু ঝুঁকি রয়েছে। যেমন আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের এমডিদের সাথে বৈঠককালে জানিয়েছে যে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ইন্টান্যাশনাল পেমেন্টের ক্ষেত্রে কিছু ব্যাংক হয়তো আগেই পেমেন্ট করে দিচ্ছে কিন্তু সেই কনফার্মিং ব্যাংক যখন পেমেন্ট সম্পন্ন হওয়ার পর তার পেমেন্টটা পূনর্ভরণ বা রিইনভেস্টমেন্ট চাচ্ছে তাখন সেটা তারা দেড়ি করে পাচ্ছে। এটাকে গভর্নর অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিয়েছেন। এবং তিনি বলেছেন যে সকল ব্যাংক ডিলে পেমেন্ট করবে তাদের বিরুদ্ধে এক ধরনের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যদি শোনা যায় তারা এই ধরনের কাজ করছে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইন্টারন্যাশনাল এলসি যেগুলো খোলা আছে সেগুলোর যেন ঠিকঠাক মতো পেমেন্ট করা হয়।
মুখপাত্র জানান, ব্যাংকগুলো জানিয়েছে, জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ফরেন এক্সচেঞ্জ মার্কেট আরও বেশি স্থিতিশীল হবে। যদিও এটা এখনও স্থিতিশীল আছে। এখানে যাতে কেউ ম্যানুপুলেশন না করে, তারা যাতে ডলার জমা করে রেখে পরবর্তিতে আবার বেশি দাম পাওয়ার আশায় বিক্রি না করে। কেউ কেউ আবার ডলার কিনে ইউরোতে ট্রান্সফার করছে, এই ধরনের কাজ করে কেউ যেন লাভবান হওয়ার চেষ্টা না করে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, ব্যাংকগুলো বলেছে ক্রেডিট কার্ডের রেট অনেক কম, এবং রেট বিভিন্ন কারণে বাড়ানো যাচ্ছে না। অথচ এই ক্রেডিট কার্ডের পেছনে বিভিন্ন খরচ হচ্ছে ব্যাংকের। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো ক্রেডিটকার্ডের ক্ষেত্রে ইন্টারন্যাশনাল রেটের সাথে যৌক্তিক করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আবেদন জানিয়েছে। সেক্ষেত্রে কোনো চূরান্ত সিদ্ধান্ত হয়নাই।
এছাড়ও বৈঠকে আগের গভর্নরের সময় ডিপ্লোমা পরীক্ষা যেটা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল সেটাকে বধ্যতামূলক না রেখে ভিন্ন কোনো অপশন রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এক্ষেত্রে একটা কমিটি করার কথা বলা হয়েছে যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মাকর্তা থাকতে পারে।