অর্থনীতি
প্রবাসীদের ওয়েজ আর্নার্স বন্ডে বিনিয়োগসীমা প্রত্যাহার
প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ওয়েজ আর্নার্স ডেভেলপমেন্ট বন্ডে বিনিয়োগসীমা প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে এখন থেকে এ বন্ডে যত খুশি তত বিনিয়োগ করতে পারবেন প্রবাসীরা। এর আগে প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড এবং ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উর্ধ্বসীমা প্রত্যাহার করা হয়।
রবিবার (৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ সরকারের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ এ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এটি আগামী ০১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে।
এতে বলা হয়েছে, ওয়েজ আর্নার্স ডেভেলপমেন্ট বন্ডে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উর্ধ্বসীমা প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং স্বয়ংক্রিয় পুনঃবিনিয়োগ সুবিধা অধিকতর যৌক্তিক করা হয়েছে। এছাড়া, বিদেশী মালিকানাধীন শিপিং বা এয়ার ওয়েজ কোম্পানির বিদেশস্থ অফিসে চাকুরিরত অনিবাসী বাংলাদেশী মেরিনার, পাইলট ও কেবিন ক্রুদের ওয়েজ আর্নার বন্ডে বিনিয়োগের সুযোগ রেখেছে সরকার। এছাড়া, পেনশনারগণের সুবিধার্থে পেনশনার সঞ্চয়পত্রে ত্রৈমাসিক মুনাফার পরিবর্তে প্রতি মাসে মুনাফা প্রদানের বিধান করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ডের ক্ষেত্রে এখন থেকে বিনিয়োগের উর্ধ্বসীমা থাকবে না বিধায় অনিবাসী বাংলাদেশীরা যেকোন অংকের অর্থ এই বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারবেন। ‘জাতীয় সঞ্চয় স্কীম’ এর আওতাধীন পরিবার সঞ্চয়পত্র, পেনশনার সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড এবং ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডের ক্ষেত্রে মূল বিনিয়োগকৃত অর্থ স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুনঃবিনিয়োগ করা যাবে। অন্যদিকে, পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র এবং ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক- মেয়াদী হিসাবের ক্ষেত্রে মুনাফাসহ মূল বিনিয়োগকৃত অর্থ পুনঃবিনিয়োগের সুবিধা থাকবে।
ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ডে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যথাযথভাবে একবার আনীত রেমিট্যান্সের অর্থ এক মেয়াদে বিনিয়োগ এবং আরও দুই মেয়াদে পুনঃবিনিয়োগ অর্থাৎ তিন মেয়াদে মোট ১৫ বছরের জন্য বিনিয়োগ করা যাবে। ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড ও ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড এর ক্ষেত্রে যথাযথভাবে আনীত রেমিট্যান্সের অর্থ একবার বিনিয়োগ এবং আরোও চার বার পুন:বিনিয়োগ অর্থাৎ পরপর সর্বোচ্চ পাঁচ মেয়াদে মোট ১৫ বছরের জন্য বিনিয়োগ করা যাবে।
জাতীয় সঞ্চয় স্কীমের অধীনে ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড এবং ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা প্রত্যাহার ও সঞ্চয়পত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুনঃবিনিয়োগের সুবিধা প্রদান রা হয়েছে। এছাড়া, বাংলাদেশী মেরিনার, পাইলট ও কেবিন ক্রুগণের জন্য ওয়েজ আর্নার বন্ডে বিনিয়োগের সুবিধা প্রদান করায় সকল প্রবাসী বাংলাদেশীগণ অধিক পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা যথাযথভাবে বাংলাদেশে আনয়ন ও বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করবেন মর্মে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ মনে করে।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এস আলম-বেক্সিমকোসহ ১০ শিল্পগ্রুপে বসছে রিসিভার
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরাদের নজিরবিহীন লুটপাট ও অর্থ পাচারের কারণে দেশ এখন মহাআর্থিক সংকটে। এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে পাচারকারী ও ব্যাংক লুটেরাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১০ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটসহ (বিএফআইইউ) আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এসব প্রতিষ্ঠানে বসানো হতে পারে রিসিভার। যাদের মূল কাজ হবে ব্যাংক ঋণের বিপরীতে জামানত এবং তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি খুঁজে বের করা। আর সেই সম্পত্তি বিক্রি করে ব্যাংকের দেনা পরিশোধ করা।
রিসিভার নিয়োগ হওয়া প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে এস আলম, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান, সামিট গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, নজরুল ইসলাম মজুমদারের নাসা, জেমকন, নাবিল, ওরিয়নসহ অন্য আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর দায় মেটাতে পরে সম্পদ ক্রোক করে বিক্রি করে দেওয়া হতে পারে। এ ছাড়া যেসব প্রতিষ্ঠান অর্থ পাচার করেছে, ওই অর্থ ফেরাতে বিদেশি পরামর্শক ও প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা হবে। যারা সংশ্লিষ্ট দেশে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সম্পদ নির্ণয় ও দেশের ফেরানোর বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেবেন। একই সঙ্গে যেসব প্রতিষ্ঠান ব্যাংক লুট ও অর্থ পাচারে জড়িত ওই প্রতিষ্ঠানগুলোতে রিসিভার নিয়োগ ও ক্রোক করে নিলামে উঠানো হবে। বিএফআইইউ ও দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানায়, দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে এরই মধ্যে সমন্বিতভাবে কাজ করছে বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউ; এ লক্ষ্যে গঠিত টাস্কফোর্স, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি, দুদক এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। প্রাথমিকভাবে কয়েকটি দেশে অর্থ পাচারের প্রমাণও মিলেছে। সেসব তথ্য বিশ্লেষণ করার পর সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে পরামর্শক ও প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা হবে। এরপর যারা দেশগুলোতে বাংলাদেশিদের পাচার করা সম্পদ নির্ণয় করে দেশের ফেরানোর বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যে এ ধরনের পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পাচারকৃত অর্থ ফেরাতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল আন্টিকরাপশন কো-অর্ডিনেশন সেন্টার (আইএসিসিসি)। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধিদল চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশে সফর করবেন। ওই সময় বাংলাদেশ ব্যাংক, দুদক, বিএফআইইউ, অর্থ মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেখানে নির্ধারণ হতে পারে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের কী বিষয়ে কাজ করবেন।
এদিকে, পাচার হওয়া অর্থ ফেরানো, ব্যাংক থেকে লুটের প্রকৃত চিত্র তুলে আনতে এস আলম, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান, সামিট গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, নজরুল ইসলাম মজুমদারের নাসা গ্রুপসহ অগ্রাধিকারভিত্তিতে ১০টি গ্রুপের বিরুদ্ধে কাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে সাইফুজ্জামানের দেশে-বিদেশে থাকা সব সম্পদ বাজেয়াপ্তের জন্য উচ্চ আদালত থেকে অর্ডার দেওয়া হয়েছে। এস আলমের দেশে-বিদেশে থাকা সব সম্পদ বাজেয়াপ্তের আদেশ চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হচ্ছে। এভাবে ওই ১০টি গ্রুপের সম্পদ বাজেয়াপ্তের আদেশ চাওয়া হবে। উচ্চ আদালত থেকে আদেশ পাওয়ার পর সুনির্দিষ্ট দেশগুলো থেকে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে ফার্ম নিয়োগ দেওয়া হবে। ওই ফার্মের কাছে স্থানীয় আদালতের আদেশ পাঠানো হবে। এরপর তারা প্রতিষ্ঠানগুলোর পাচারকৃত সম্পদ নির্ণয় করে সংশ্লিষ্ট দেশের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
অর্থ পাচার ও ফেরানোর সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর একাধিক কর্মকর্তা জানান, অর্থ পাচার রোধ ও পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আপসহীন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রথমত পাচারের সঠিক তথ্য উদ্ধার, পরিমাণ নির্ণয় ও পরে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দিকে এগোনো হবে। এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। যদি কোনো প্রভাবশালী ব্যবসায়ী গ্রুপের বিরুদ্ধে পাচারের তথ্য প্রমাণিত হয় তাহলে জড়িতদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। কিন্তু তাদের ব্যবসায় ক্ষত সৃষ্টি হতে দেওয়া হবে না। অতীতে বাংলাদেশে অনেক ব্যবসার মালিকানা পরিবর্তন হয়েছে, ভবিষ্যতেও হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তারা।
তারা আরও বলেন, প্রতিদিন কিছু পরিচিত সাবেক এমপি-মন্ত্রী বা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রশাবশালী কর্মকর্তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার খবর মিডিয়ায় আসে। কিন্তু এটা একটি আংশিক চিত্র। প্রতিদিন শতাধিক ব্যাংক হিসাব জব্দ করছে বিএফআইইউ। এখন তাদের প্রধান কাজ লেনদেন পদচিহ্ন দেখে পাচার শনাক্ত করা। পাশাপাশি পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়ার ব্যবস্থা নেওয়া।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, বিএফআইইউ এরই মধ্যে বেশ কিছু অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে। তারা সেসব অ্যাকাউন্ট ও তাদের মালিকদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে যদি কোনো সমস্যা পান তাহলে অন্য সংস্থাগুলোর কাছে হস্তান্তর করবেন। এরপর আইনের মাধ্যমে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর কেউ যদি অর্থ পাচার করে থাকে সেগুলো নির্ণয়ের পর সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর আইন মেনে পাচারের অর্থ ফেরাতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একই সঙ্গে আদালত যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে রিসিভার নিয়োগের নির্দেশ দেয় তাহলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এরই মধ্যে বেক্সিমকোতে রিসিভার নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।
গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, যারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার করেছে, তাদের সম্পদ দেশে ফেরত আনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা উচিত। যেহেতু আমাদের দেশ থেকে পাচারের টাকা ফেরত নিয়ে যাওয়ার উদাহরণ আছে সুতরাং আমরা পারব না কেন? এগমন্টের দেশগুলো, যাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি আছে, নতুন চুক্তি সম্পাদন করে ও ইন্টারপোলের সাহায্যে এসব সম্পদ দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। তাদের হাত ধরে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরে আসুক, সে বিষয়ে দৃঢ় প্রত্যাশা রাখি।
তিনি আরও বলেন, এরই মধ্যে ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এখানেও সন্দেহ আছে। বলা হয়, প্রকৃত খেলাপি ঋণ আরও অনেক বেশি। তাই প্রকৃত তথ্য বের করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটির (জিএফআই) তথ্য অনুসারে, গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দেশ থেকে অন্তত ১৪ হাজার ৯২০ কোটি বা ১৪৯.২০ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ১৭ লাখ ৮২ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, টাকা পাচারের অন্যতম কারণ হলো রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব। পাচার করা অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রেও এটিই বাধা ছিল। এর সঙ্গে দুদকসহ অন্য সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতাও দায়ী। তবে পাচারের টাকা ফেরানোর এখনই উপযুক্ত সময়।
পাচারের টাকা ফেরাতে প্রধান উপদেষ্টা ও অর্থ উপদেষ্টা কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এ লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকের সময় পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে সহায়তা চেয়েছেন তিনি। এ ছাড়া বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ) বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে অর্থসম্পদ সম্পর্কে জানতে বিভিন্ন দেশে চিঠি দেওয়া শুরু করেছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিবৃতি দিয়ে হাসিনা সরকারের অন্তত ১ লাখ কোটি টাকা ফিরিয়ে আনবেন বলে জানিয়েছেন।
সিআইডি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), কাস্টমস, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিএসইসি ও দুদক অর্থ পাচার প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। বিদ্যমান মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ২৭টি সম্পৃক্ত অপরাধের মধ্যে দুদক শুধু ‘ঘুষ ও দুর্নীতি’র মাধ্যমে অপরাধলব্ধ অর্থের মানি লন্ডারিংয়ের অনুসন্ধান ও তদন্ত করছে। বাকি ২৬টি সম্পৃক্ত অপরাধের তদন্তভার সিআইডি, এনবিআরসহ অন্য সংস্থাগুলোর কাছে ন্যস্ত। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এরা একযোগে কাজ করলেই পাচার কমে যাবে।
টাকা পাচারের জনপ্রিয় গন্তব্য: তথ্য-উপাত্ত বলছে, একসময় বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারের জনপ্রিয় গন্তব্য ছিল সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, কানাডাসহ করস্বর্গ খ্যাত কিছু দ্বীপরাষ্ট্র। তবে গত কয়েক বছরে অর্থ পাচারের গন্তব্য বদলে গেছে। বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বা পূর্ব ইউরোপের দেশগুলো অর্থ পাচারের নিরাপদ গন্তব্য হয়ে উঠছে।
এদিকে দেশ থেকে অর্থ পাচারকারীদের পাকড়াও করার সক্ষমতা বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেট সার্ভিসের একদল প্রতিনিধি বাংলাদেশে আসবেন। বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার ৬০ জন প্রতিনিধি প্রাথমিকভাবে ইউএস সিক্রেট সার্ভিসের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেবেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আদানির পাওনা দ্রুত পরিশোধে ব্যবস্থা নিচ্ছে বাংলাদেশ
ভারতীয় শিল্পগোষ্ঠী আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে আনার পর বাংলাদেশ তাদের পাওনা পরিশোধ বাড়াচ্ছে। আদানি পাওয়ারের কাছে বাংলাদেশের মোট ৮০০ মিলিয়ন ডলার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদানির বকেয়া তা দ্রুত পরিশোধ করতে ব্যবস্থা নিচ্ছে বাংলাদেশ। বিষয়টির সুরাহা করতে আদানি ৭ নভেম্বরের যে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে, তার আগেই বাংলাদেশ এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন দুজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা।
দুইজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, ইতিমধ্যেই আদানি পাওয়ারকে আংশিক পেমেন্ট করা শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের মোট বিদ্যুতের ১০ শতাংশ সরবরাহ করে আদানি।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) একজন কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, আমরা পেমেন্ট সমস্যার সমাধান করেছি। ইতিমধ্যে আদানি গ্রুপের অনুকূলে ১৭০ মিলিয়ন ডলারের লেটার অভ ক্রেডিট (এলসি বা ঋণপত্র) ইস্যু করেছি।
ভারতের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত আদানির ১,৬০০ মেগাওয়াট গোড্ডা কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ সংকটে ভুগতে থাকা বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমানোর বিষয়ে বিবিসির প্রশ্নের কোনো জবাব দেয়নি আদানি পাওয়ার।
বিষয়টি সম্পর্কে অবগত, এমন তিনটি সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা আমদানি করতে সমস্যায় পড়েছে আদানি পাওয়ার। তাই বকেয়া পাওনা পরিশোধের জন্য ৭ নভেম্বরের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বিবিসিকেও জানান, ৭ নভেম্বরের মধ্যে বকেয়া পাওনা পরিশোধ না করলে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে আদানি। তবে বিপিডিবির একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি আসবে বলে আমরা মনে করি না।’
কর্মকর্তারা বিবিসিকে বলেন, তারা ধীরে ধীরে এবং নিয়মিত পাওনা পরিশোধ করবেন। বকেয়া পাওনা পরিশোধের এই সমস্যার সমাধানে তারা আত্মবিশ্বাসী।
বিপিডিবির একজন সিনিয়র কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, আদানি আগে বাংলাদেশে ১ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করলেও চলতি মাসে তা ৭০০-৮০০ মেগাওয়াটে নামিয়ে এনেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, পেমেন্ট বাড়ানোর পরও সরবরাহ কমানো হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা হতবাক ও বিস্মিত হয়েছি। আমরা পাওনা পরিশোধ করতে প্রস্তুত এবং বিকল্প ব্যবস্থা নেব, কিন্তু কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীকে আমাদের জিম্মি করে ব্ল্যাকমেইল করার সুযোগ দেব না।
তিনি জানান, আদানিকে বাংলাদেশ জুলাই মাসে ৩৫ মিলিয়ন ডলার, সেপ্টেম্বরে ৬৮ মিলিয়ন ডলার ও অক্টোবরে ৯৭ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে।
বিদ্যুৎ সংকট তীব্র হওয়ায় গ্রামাঞ্চলের মানুষ ইতিমধ্যে ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
বিদ্যুৎ, কয়লা ও তেল আমদানির জন্য ডলারের সংস্থান করতে সমস্যায় পড়ছে বাংলাদেশ। রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং আগস্টে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে আগের ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্যাকেজের বাইরে আরও ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়েছে।
আদানি পাওয়ারের সঙ্গে ২০১৫ সালে করা বিদ্যুৎ চুক্তিটি শেখ হাসিনার আমলে স্বাক্ষরিত হয়। অন্তর্বর্তী সরকার চুক্তিটিকে অস্বচ্ছ বলে উল্লেখ করেছে। একটি জাতীয় কমিটি আদানিসহ মোট ১১টি চুক্তির পুনর্মূল্যায়ন করছে। উল্লেখ্য, আদানি বাংলাদেশের কাছ থেকে বিদ্যুতের দাম ভারতের অন্য বেসরকারি উৎপাদনকারীদের তুলনায় প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি রাখছে।
আদানি পাওয়ারের পাশাপাশি এনটিপিসি লিমিটেড ও পিটিসি ইন্ডিয়া লিমিটেডসহ ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোও বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। বিপিডিবির কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন, অন্যান্য ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের পাওনাও আংশিকভাবে পরিশোধ করা হচ্ছে।
বিদ্যুতের সরবরাহ সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ কয়েকটি গ্যাস ও তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ফের চালু করছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে বিদ্যুতের খরচ আরও বাড়বে। শীতের মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, অন্যান্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ৫০ শতাংশ সক্ষমতায় চলছে। ডলার সংকটে পর্যাপ্ত কয়লা কেনা যাচ্ছে না। তাই আদানির রেডিমেড বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় উৎপাদনকারীদের চেয়ে তাদের বিদ্যুৎ বেশি ব্যয়বহুল হলেও এই সরবরাহটা জরুরি।
ডিসেম্বরে বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। রাশিয়ার সহায়তায় নির্মিত এই প্রকল্পে খরচ হয়েছে ১২.৬৫ বিলিয়ন ডলার। দীর্ঘমেয়াদি রুশ ঋণে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে প্রকল্পটি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সঞ্চয়পত্র থেকে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিলো সরকার
ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকা সঞ্চয়পত্রের বিক্রি বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার নিট ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে।
বাংলা দৈনিক পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত অর্থবছরের একই সময়ে যেখানে বিক্রির তুলনায় ভাঙানো বেশি ছিল ১ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা। আর গত অর্থবছর সব মিলিয়ে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি ২১ হাজার ১২৪ কোটি টাকা কমেছিল।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর পরিচালন ব্যয় অনেক কমেছে। এর অন্যতম কারণ মন্ত্রী, এমপিসহ অনেকের পেছনে আগের মতো আর নিয়মিত ব্যয় হচ্ছে না। আবার এখন যে কোনো খরচ করার ক্ষেত্রে জবাবদিহি বাড়ানো হয়েছে। এসব কারণে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে আগের সরকারের যে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল তা কমছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে আর ১ টাকাও নিচ্ছে না সরকার। উল্টো গত আগস্ট পর্যন্ত দুই মাসে আগের ঋণের ১৮ হাজার ২৫০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। একই সময়ে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে নিয়েছে ২৮ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা। যে কারণে সামগ্রিকভাবে ব্যাংক খাতে সরকারের নিট ঋণ বেড়েছে ১০ হাজার ৭০২ কোটি টাকা।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সব মিলিয়ে গত সেপ্টেম্বর শেষে সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৬০২ কোটি টাকা। গত জুন শেষে যা ৩ লাখ ৪৬ হাজার ২৬৯ কোটি টাকায় নেমেছিল। এর মধ্যে জুলাইতে ২ হাজার ১৮৮ কোটি, আগস্টে ২ হাজার ৩৬ কোটি এবং সেপ্টেম্বরে বেড়েছে ৪ হাজার ১০৯ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি নিয়েছে। কয়েক দফায় নীতি সুদহার বাড়িয়ে রেপো রেট করা হয়েছে ১০ শতাংশ। এখন আর নতুন করে টাকা ছাপানো হচ্ছে না। আগের সরকার একই রকম ঘোষণা দিলেও তথ্য গোপন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে শেষ তিন মাসে অতিরিক্ত প্রায় ৪১ হাজার কােটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়। এক ধরনের জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ‘ওভারড্রাফট’ খাতের নামে এ অর্থ দেওয়া হয়। ওডি হিসেবে সরকার যেখানে সর্বোচ্চ ৮ হাজার কোটি টাকা নিতে পারত, সেখানে এই খাতের নামে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে দেওয়া হয় ৪৮ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা। এই উপায়ে দেওয়া টাকা সরকারি ঋণের মূল প্রতিবেদনে দেখানো হয়নি। যে কারণে গত অর্থবছর আসলে ঋণ বাড়লেও প্রতিবেদনে দেখানো হয় ৬ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা কমেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
প্রযুক্তির মাধ্যমে চিংড়ির উৎপাদন বাড়াতে হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বিদেশে আমাদের চিংড়ির চাহিদা রয়েছে। সনাতন পদ্ধতির কারণে দেশে উৎপাদন কম হচ্ছে। প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে চিংড়ির উৎপাদন বাড়াতে হবে। উৎপাদন না বাড়ালে রপ্তানি বাড়বে না।
সোমবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ আহবান জানান।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, সরকার বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) ও বাংলাদেশ ইকোনমিক জোনস অথরিটিকে (বেজা) ঢেলে সাজিয়েছে। দেশে বিনিয়োগ পরিবেশ এখন চমৎকার। এ সময় তিনি বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুর রহিম খান, বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী বেলায়েত হোসেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আশরাফ হোসেন মাসুদ ও সদস্য শ্যামল দাস উপস্থিত ছিলেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
তরল দুধের দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়াল আড়ং
দামবৃদ্ধির তালিকায় এবার যুক্ত হলো তরল দুধ। প্যাকেটজাত তরল দুধের দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়িয়েছে প্রক্রিয়াজাতকারী বেসরকারি খাতের কোম্পানি ব্র্যাক ডেইরি।
এক লিটার তরল দুধের দাম বাড়িয়ে ৯৮ টাকা নির্ধারণ করেছে কোম্পানিটি। আধা লিটারের দুধের দাম ৫০ টাকা করা হয়েছে।
এছাড়া আড়ংয়ের স্ট্যান্ডার্ডাইজড দুধ আধা লিটার ৫৫ টাকা, এক লিটার ১০০ টাকা, পাস্তুরিত দুধ আধা লিটার প্যাকেট ৬০ টাকা এবং এক লিটার প্যাকেট ১০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, নানা ক্ষেত্রে ব্যয়বৃদ্ধির কারণে ব্র্যাক ডেইরি চলতি সপ্তাহ থেকে আড়ং দুধের মূল্য লিটারপ্রতি ১০ টাকা বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে।
এদিকে গবাদি পশুর খাদ্যের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় কৃষক পর্যায়ে দুধের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। সেজন্য কৃষক পর্যায়ে কাঁচা দুধের মূল্য লিটারপ্রতি পাঁচ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
ব্র্যাক ডেইরি জানিয়েছে, পণ্যের সর্বশেষ মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল ২০২২ সালের জুলাই মাসে। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে বাজারে সংশ্লিষ্ট কাঁচামাল যেমন: প্যাকেজিং, কার্টন ও খুচরা জিনিসের মূল্য ২০ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণেও দুধ সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিতরণ খাতে বাড়তি ব্যয় হচ্ছে। বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় দুধ শীতলকরণসহ প্রক্রিয়াজাত কারখানায় অনেক বেশি সময় জেনারেটর ব্যবহার করতে হচ্ছে। এছাড়া ডলারের মূল্যবৃদ্ধি হওয়ায় আনুষঙ্গিক ব্যয়ও উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এমআই