অর্থনীতি
বছরে গড়ে ১২-১৫ বিলিয়ন ডলার অর্থপাচার হয়েছে: ইফতেখারুজ্জামান
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে মোট কী পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা সম্ভব নয়। ব্যাংকের মতো আনুষ্ঠানিক মাধ্যম ব্যবহার করে ১৭ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ পাচারের কথা জানা যায়। বিভিন্ন ঘটনার ভিত্তিতে ধারণা করা যায়, বাংলাদেশ থেকে বছরে গড়ে ১২-১৫ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে।
শনিবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম(ইআরএফ কার্যালয়ে) ‘পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উপায়’ বিষয়ে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দুর্নীতি ও অর্থ পাচারে সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। দেশের ব্যাংক খাতকে যে খাদের কিনারায় ঠেলে দেওয়া হয়েছে, তার পেছনে মূল দায়ী হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বর্তমান পরিস্থিতিতে এসব প্রতিষ্ঠানের মৌলিক সংস্কার ও ঢেলে সাজানো ছাড়া বিকল্প নেই।
অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও সম্ভাবনার বাংলাদেশ যৌথভাবে এ সেমিনার আয়োজন করে। গ্রিনওয়াচ ঢাকার সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার বলয় প্রতিষ্ঠা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দখলের মাধ্যমে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ পাচার করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রাজনীতি, আমলাতন্ত্র ও ব্যবসা—এই ত্রিমুখী আঁতাত মৌলিক ভূমিকা পালন করেছে। সব প্রতিষ্ঠানেই দীর্ঘ সময় ধরে দলীয়করণের চর্চা হয়েছে; গত ১৫-১৬ বছরে যার চূড়ান্ত রূপ আমরা দেখেছি। এতে আমলাতন্ত্রকে কর্তৃত্ব দিয়েছে রাজনৈতিক শক্তি আর তা বাস্তবায়নে ব্যবহার করা হয়েছে বিভিন্ন এজেন্সিকে। ফলে এসব জায়গায় কতটুকু পরিবর্তন আনা যাবে, তা গুরুত্বপূর্ণ। যে পরিবর্তন আসবে বলে আমরা আশা করছি, তা যেন টেকসই হয়।
পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত একটি দৃষ্টান্ত আছে। সেটি হলো, সিঙ্গাপুর থেকে। দেশটি থেকে ২০০৭ সালে পাচার হওয়া অর্থ ফেরতের উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং পারস্পরিক আইনি সহায়তার মাধ্যমে ২০১৩ সালে ৯ দশমিক ৩ বিলিয়ন বা ৯৩০ কোটি ডলার ফেরত আনা সম্ভব হয়েছিল।
পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা সম্ভব, যদিও তা অনেক কঠিন ও দীর্ঘ প্রক্রিয়া। যেসব দেশে অর্থ পাচার করা হয়েছে, ওই সব দেশের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে পাচার করা অর্থ ফেরত আনা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে দেশগুলোর সহযোগিতার মনোভাব গুরুত্বপূর্ণ।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, অর্থ পাচার বন্ধে সাপ্লাই (যে দেশ থেকে পাচার হয়) ও ডিমান্ড (যে দেশে পাচার হয়)—উভয়ের মধ্যে সহযোগিতার পরিবেশ থাকতে হবে। পাচার হওয়া অর্থ ফেরতে সহযোগিতা করার জন্য বিভিন্ন দেশে বিশেষজ্ঞদের সিন্ডিকেট আছে। সে কারণে আমরা একজন সাবেক মন্ত্রীর কয়েকটি দেশে কয়েক শ অ্যাপার্টমেন্টের বিষয়ে জানতে পারছি। কিন্তু এই ঘটনা বরফখণ্ডের চূড়ামাত্র, এমন পাচারকারী আরও অনেকে আছেন।
ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, অর্থ পাচার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), সিআইডি, এনবিআর, অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস, বিএফআইইউ—এসব প্রতিষ্ঠানের পরিষ্কার পথনকশা আছে। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে হবে, শুধু মুখের কথায় কাজ হবে না। অর্থ পাচার রোধে বেশ কিছু আইনেরও প্রয়োজন আছে। এ ছাড়া দুর্নীতি বন্ধে সাধারণ মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এলপি গ্যাসের নতুন দাম নির্ধারণ আজ
ডিসেম্বর মাসে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হবে আজ (মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর)। এদিন এক মাসের জন্য এলপিজির নতুন দাম ঘোষণা করা হবে।
গতকাল সোমবার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) একটি বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সৌদি আরামকোর ডিসেম্বর মাসের সিপি (কন্ট্র্যাক্ট প্রাইস) অনুযায়ী, এ মাসের জন্য ভোক্তা পর্যায়ে বেসরকারি এলপিজির দাম সমন্বয়ের বিষয়ে বিইআরসি মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় ঘোষণা করবে।
এর আগে, গত নভেম্বর মাসে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১ টাকা কমিয়ে ১,৪৫৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল, যা অক্টোবর মাসের তুলনায় কম ছিল। তবে গত অক্টোবর, সেপ্টেম্বর, আগস্ট ও জুলাই মাসে এলপিজির দাম বাড়ানো হয়েছিল।
অন্যদিকে, জুন, মে এবং এপ্রিল মাসে দাম কমানো হয়েছিল। একইভাবে, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসে এলপিজির দাম বাড়ানো হয়েছিল।
এলপিজির পাশাপাশি, নভেম্বরে অটোগ্যাসের দামও কমানো হয়েছিল। নভেম্বরে অটোগ্যাসের মূসকসহ প্রতি লিটারের দাম ৩ পয়সা কমিয়ে ৬৬ টাকা ৮১ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। গত অক্টোবর, সেপ্টেম্বর, আগস্ট এবং জুলাই মাসে অটোগ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছিল, তবে জুন, মে এবং এপ্রিল মাসে দাম কমানো হয়েছিল। জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে অটোগ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছিল।
২০২৩ সালে মোট ৫ দফা কমানো হয়েছিল এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম, এবং বেড়েছিল ৭ দফা।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আসছে নতুন টাকা, থাকছে ‘জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি’
আগামী ছয় মাসের মধ্যে বাজারে আসছে শেখ মুজিবের ছবিমুক্ত নোট। শেখ মুজিবের জায়গায় ধর্মীয় স্থাপনা, বাঙালি ঐতিহ্য এবং জুলাই বিপ্লবের দেয়াললচিত্র বা গ্রাফিতি যুক্ত হবে। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদন এসেছে। শিগগিরই ২০ টাকা, ১০০ টাকা, ৫০০ টাকা ও এক হাজার টাকা মূল্যমানের নতুন নোট ছাপাবে অন্তর্বর্তী সরকার।
এসব নোটে নতুন করে নকশা করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আপাতত এই চার ধরনের নোটে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকবে না। পর্যায়ক্রমে সব টাকার নোট থেকেই তার ছবি তুলে দেওয়া হতে পারে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বলেন, নতুন টাকা ছাপার বিষয়টি অনেক দূর এগিয়েছে। আশা করি, আগামী ছয় মাসের মধ্যে বাজারে আসতে পারে নতুন টাকা।
এবিষয়ে টাঁকশালের এক কর্মকর্তা বলেন, এখন শুধু টেন্ডার বাকি। টেন্ডারের কাজটা শেষ হয়ে গেলেই নতুন টাকা বাজারে চলে আসতে সময় লাগবে না। এই মুহূর্তে আমরা টাকা ছাপা বন্ধ রেখেছি। প্রয়োজন অনুযায়ী আবার ছাপা শুরু করা হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বর্তমান নকশা থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে নেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে চারটি নোট আবার নকশা করা হবে। পরে অন্য নোটগুলোতেও পরিবর্তন আনা হবে বলে জানান কর্মকর্তারা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ২৯ সেপ্টেম্বর এক চিঠিতে নতুন নোটের বিস্তারিত নকশার প্রস্তাব জমা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করেছে।
নতুন নোট ছাপানোর বিষয়ে মূল সুপারিশ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রা ও নকশা উপদেষ্টা কমিটি। কমিটির সভাপতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর-১। কমিটিতে চিত্রশিল্পীরাও রয়েছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রাজস্ব আদায়ে ধাক্কা, চার মাসে ঘাটতি ৩১ হাজার কোটি টাকা
বৈশ্বিক মন্দা কিংবা দেশে চলমান নানা সংকটের প্রভাব থেকে বের হতে পারছে না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) আয়কর, মূসক বা ভ্যাট ও শুল্ক আদায়ে ঘাটতি বেড়েই চলছে। সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৩০ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা পিছিয়ে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রবৃদ্ধি যথারীতি ঋণাত্মক (-১.০৩ শতাংশ)। যেখানে প্রথম তিন মাসে তিন বিভাগে রাজস্ব ঘাটতি ছিল ২৫ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা।
এনবিআরের পরিসংখ্যান বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, গত জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত মোট রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৩২ হাজার ১১৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। যার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ২৮১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। এ সময়ে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হয়েছে ৩০ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেশ সবচেয়ে সংকট সময় অতিক্রম করছে। সরকার পরিবর্তনের পরও আবার ব্যবসা–বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। যে কারণে কাঙ্ক্ষিত হারে রাজস্ব আদায় করা যায়নি। সংকট ধীরে ধীরে কেটে যাবে আশা করছি।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, তিন মাসের মধ্যে অর্থবছরের জুলাই মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৫ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ২০ হাজার ২৬৯ কোটি টাকা। অর্থবছরের প্রথম মাসেই রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হয় পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি। পরের মাস আগস্ট ও সেপ্টেম্বরেও প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা করে রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে।
আর সর্বশেষ অক্টোবর মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা। যার বিপরীতে আদায় হয়েছে ২৭ হাজার ৭২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। ঘাটতি ৮ হাজার ৫৪১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধি মাত্র দশমিক ৮৪ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি মাসেই রাজস্ব আদায় থেকে পিছিয়ে পড়ছে এনবিআর।
খাত ভিত্তিত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জানা যায়, প্রথম চার মাসে আয়কর খাতেই ঘাটতি হয়েছে ১৩ হাজার ৩৬২ কোটি টাকা। এই খাতে আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৪৫ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা। এ সময়ে আদায় হয়েছে ৩১ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১.৭৮ শতাংশ।
অন্যদিকে আমদানি-রপ্তানি খাতে চার মাসে ৩৯ হাজার ৬৩২ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৩২ হাজার ৬৭১ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এই খাতে ঘাটতি হয়েছে ৬ হাজার ৯৬০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধি ০.৮৩ শতাংশ।
গত জুলাই-অক্টোবরে ভ্যাট বা মূসক আদায়ে ঘাটতি হয়েছে ১০ হাজার ৫০৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা। ওই সময়ে ভ্যাট আদায় হয়েছে ৩৬ হাজার ৭২৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এ সময়ে এই খাতের লক্ষ্য ছিল ৪৭ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। এই খাতে প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক ৪.৮৮ শতাংশ।
চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের বাজেটে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় প্রাক্কলন করা হয়েছে। যা জিডিপির ৯.৭ শতাংশ। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। আর অন্যান্য উৎস হতে ৬১ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে আয়কর, মুনাফা ও মূলধনের ওপর কর থেকে আসবে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৬২০ কোটি টাকা, ভ্যাট থেকে ১ লাখ ৮২ হাজার ৭৮৩ কোটি, সম্পূরক শুল্ক ৬৪ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা, ৪৯ হাজার ৪৬৪ কোটি, রপ্তানি শুল্ক ৭০ কোটি, ৫ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা ও অন্যান্য কর থেকে আসবে ১ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
মুডিস রেটিংয়ে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার চিত্র উঠে আসেনি: গভর্নর
ঋণমান নির্ণয়কারী মার্কিন এজেন্সি মুডিস রেটিংয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থার হালনাগাদ চিত্র উঠে আসেনি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) আয়োজিত এক ওয়েবিনারে তিনি এ কথা বলেন। বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ‘স্টেট ইনভেস্টমেন্ট ক্লাইমেট’ শীর্ষক এই ওয়েবিনার সঞ্চালনা করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন বিনিময় হার স্থিতিশীল। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও স্থিতিশীল। মুডির রেটিংসে বলা হচ্ছে ডাউনগ্রেড। যেখানে অর্থনৈতিক সূচকগুলোয় আমরা এগোচ্ছি। এ কারণে মুডিসের মূল্যায়নে আমাদের আপত্তি আছে। সবকিছুর পরিবর্তন হচ্ছে।
মুডিস’র রেটিংস যেসব তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলোকে সেকেলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের তথ্য হালনাগাদ নয়। এজন্য তাদের বলেছি, আমাদের এখানে আসুন। এখানে এসে মূল্যায়ন করুন। সিঙ্গাপুরে বসে, অন্য কারও কথা শুনে নয় বাংলাদেশে এসে মূল্যায়ন করুন।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, মুদ্রানীতি উল্লেখযোগ্যভাবে কঠোর করা হয়েছে। সুদহার বাড়ানো হয়েছে। টাকা এখন আকর্ষণীয় সম্পদ। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ধীরে ধীরে কমছে। আগামী মূল্যস্ফীতি কমবে বলে আমরা আশাবাদী।
আগামী বছরের মাঝামাঝি উল্লেখযোগ্য হারে মূল্যস্ফীতি কমতে পারে আভাস দিয়ে গভর্নর বলেন, আগামী ১-২ মাসের মধ্যে আমরা একটা বড় পরিবর্তন দেখতে পাবো। তিন মাস ধরে নন ফুড মূল্যস্ফীতি কমছে। আমাদের নেওয়া পলিসি কাজ করছে। খাদ্য মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, কারণ স্বল্প সময়ের মধ্যে আমরা দুটো বন্যা দেখেছি। বর্ষাকাল দীর্ঘায়িত হওয়ায় শীতের সবজির ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে শীতের সবজির দাম বাড়ায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকরা লাভবান হয়েছে।
শ্রমিক অসন্তোষসহ শিল্পে নানা ধরনের সংকটের কথা শোনা গেলেও গত ৪ মাসে রপ্তানি ১০ শতাংশ বেড়েছে। গত ৫ মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছে ২৮.৫ শতাংশ। ব্যবসায়ীরা এখন এলসি খুলতে পারছে।
আশিক চৌধুরী বলেন, বিনিয়োগের বাধা ও সমস্যা চিহ্নিত করতে আমরা অংশীজনের সঙ্গে বসেছি। দুর্নীতি, নিম্ন সরকারি সেবার নিম্নমান, সম্পদের অপ্রতুলতা চিহ্নিত করা হয়েছে। সমস্যা সমাধানে আমরা কাজ করছি।
সম্প্রতি বাংলাদেশের ঋণমান ‘বি-ওয়ান’ থেকে কমিয়ে ‘বি-টু’তে এনেছে মুডিস। নতুন রেটিংস প্রকাশ করে মুডিস বলছে, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার পর সরকার পরিবর্তনের ফলে উচ্চ রাজনৈতিক ঝুঁকি, নিম্ন প্রবৃদ্ধি সরকারের তারল্যের ঝুঁকি, বৈশ্বিক ভঙ্গুরতা এবং ব্যাংকিং খাতের ঝুঁকি বাড়িয়েছে। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং দুর্বল প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশকে ঘাটতি পূরণের জন্য স্বল্পমেয়াদি অভ্যন্তরীণ ঋণের ওপর ক্রমশ নির্ভরশীল করছে এবং এর ফলে তারল্য ঝুঁকি বাড়ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
পেঁয়াজ-ডিম-আলুর দামে কারসাজি, ১২ লাখ টাকা জরিমানা
আলু, ডিম, পেঁয়াজ, ব্রয়লার মুরগি, সবজি ও ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সারাদেশে অভিযান পরিচালনা করেছে বিশেষ টাস্কফোর্স ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এসময় মূল্য তালিকা না টানানো, বেশি দামে পণ্য বিক্রিসহ বিভিন্ন অনিয়মের অপরাধে ১২২ প্রতিষ্ঠানকে ১২ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) ভোক্তা অধিদপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংস্থাটি জানায়, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সব বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে বিশেষ টাস্কফোর্সসহ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বাজার তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় অধিদপ্তরের ৫ জন কর্মকর্তার নেতৃত্বে ৫টি টিম তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এসময় দেশের ৩৬টি জেলায় অধিদপ্তরের ৫০টি টিম অভিযান করে ১২২ প্রতিষ্ঠানকে ১২ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযানে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ টাস্কফোর্সের আওতায় সরকারি-বেসরকারি দপ্তর ও সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।