পুঁজিবাজার
বিএসইসির গড়পড়তা চিঠিতে শেয়ারবাজারে নতুন আতঙ্ক

শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সংস্কারের নামে নতুন সিদ্ধান্তে বাজারে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিনিয়োগকারীরা। তবে টানা দরপতনের কারণ খুঁজতে বিএসইসির সম্প্রতি গঠিত কমিটির গড়পড়তা চিঠিতে অভিযোগের এ ধারা যেন আরও দীর্ঘায়িত হলো। শেয়ারবাজারের ভরাডুবির কারণ খুঁজতে নতুন এই কমিটি বাজার মধ্যস্থতাকারী সব ব্রোকারেজ হাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংককে নেগেটিভ ইক্যুইটি ও ফোর্সড সেলের তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। অস্থিতিশীল বাজার পরিস্থিতির মাঝে নেগেটিভ ইক্যুইটি না থাকা প্রতিষ্ঠানের কাছে এমন তথ্য চাওয়ায় নতুন আতঙ্ক জন্ম নিয়েছে। একইসঙ্গে বিএসইসির বর্তমান কমিশনের অদূরদর্শী পদক্ষেপ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে বাজার সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, বিএসইসির নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে গেল আড়াই মাসে তালিকাভুক্ত প্রায় ৯৫ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। একই সময়ে সূচক পতনের হার প্রায় সাড়ে ১৮ শতাংশ। শেয়ারবাজারের সাম্প্রতিক দরপতনের কারণ অনুসন্ধানে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ানোর পরামর্শ নিতে গত রোববার চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বিএসইসি। কমিটির প্রধান করা হয়েছে সংস্থাটির অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ শামসুর রহমানকে। অপর সদস্যরা হলেন বিএসইসির উপপরিচালক ওয়ারিসুল হাসান রিফাত, ডিএসইর সহকারী মহাব্যবস্থাপক মাহফুজুর রহমান ও সিডিবিএলের সহকারী মহাব্যবস্থাপক কাজী মিনহাজ উদ্দিন।
দরপতনের কারণ খুঁজতে তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে। বাজার মধ্যস্থতাকারী সব ব্রোকারেজ হাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংককে নেগেটিভ ইক্যুইটি ব্যালেন্স ও ফোর্সড সেলের তথ্য জানতে চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে নতুন এ কমিটি। বিএসইসির উপপরিচালক ও তদন্ত কমিটির সদস্য ওয়ারিসুল হাসান রিফাত স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানতে চাওয়া হয়। চিঠির একটি কপি অর্থসংবাদের হাতে এসেছে।
এতে বলা হয়, গত ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত যেসব গ্রাহকের নেগেটিভ ইক্যুয়িটি ব্যালেন্স ১০ লাখ বা তার বেশি তাদের বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) আইডি, বিও নাম, কোড, লেজার ব্যালেন্স, পোর্টফোলিও ভ্যালু এবং নেগেটিভ ইক্যুয়িটির পরিমাণ উল্লেখ করে বিএসইসির তদন্ত কমিটির কাছে পাঠাতে হবে। একইসঙ্গে বিও আইডি, বিও নাম, কোড, ইন্সট্রুমেন্টস, পরিমাণ, দাম এবং তারিখ উল্লেখ করে গত এক মাসের (২৬ সেপ্টম্বর-২৭ অক্টোবর) ফোর্সড সেলের তথ্য মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকাল ১০টার মধ্যে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
তবে অভিযোগ উঠেছে, গড়পড়তা চিঠি পাঠিয়ে বরাবরের মতো এখানেও ভুল করেছে বিএসইসির নতুন তদন্ত কমিটি। একইসঙ্গে নতুন আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে।
ব্রোকারেজ হাউজ কর্মকর্তাদের অভিযোগ, ফোর্সড সেল বা জোরপূর্বক বিক্রির কাজ মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো করে থাকে কারণ মার্জিন লোন দেয় মার্সেন্ট ব্যাংক। একইসঙ্গে এ সংক্রান্ত সকল তথ্য মার্চেন্ট ব্যাংক, বিএসইসি ও ডিএসইর সার্ভেল্যান্স বিভাগের কর্মকর্তাদের হাতে থাকে। এখানে ব্রোকারেজ হাউজের কোন ভূমিকা নেই। বরং বিএসইসির হয়রানিমূলক এমন চিঠি পাঠানো আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
অভিযোগের সুর তুলেছেন মার্চেন্ট ব্যাংকের কর্মকর্তারাও। তাদের অভিযোগ, তদন্ত কমিটির এসব চিঠি গড়পড়তা না পাঠিয়ে তথ্য গ্রহণ সাপেক্ষে নির্দিষ্ট মার্চেন্ট ব্যাংকেই পাঠানো উচিত। যেসব প্রতিষ্ঠানে নেগেটিভ ইক্যুইটি এবং ফোর্সড সেলের কোন তথ্য নেই, তাদের জন্য এসব চিঠি বিব্রতকর।
সূত্র বলছে, শেয়ারবাজারের যে কোনো বিনিয়োগকারী তার বিও হিসাবে থাকা অর্থের বিপরীতে মার্চেন্ট ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে শেয়ার কিনতে পারে। তবে শেয়ারের দাম নির্ধারিত সীমার নিচে নেমে আসলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান ঋণ সমন্বয়ের তাগাদা দিয়ে ঋণগ্রহীতা বিনিয়োগকারীদের চিঠি দেয়। শেয়ারবাজারের ভাষায় এটিকে ‘মার্জিন কল’ বলে। কিন্তু বিনিয়োগকারীরা ঋণ সমন্বয়ে অর্থাৎ নতুন করে অর্থ বিনিয়োগে ব্যর্থ হলে প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ আদায়ে গ্রাহকের শেয়ার বিক্রি করে দেয়। শেয়ারবাজারের ভাষায় এটিকে ফোর্সড সেল বা জোরপূর্বক বিক্রি বলা হয়।
জানা যায়, মার্চেন্ট ব্যাংকের এমন ফোর্সড সেলের তথ্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ছাড়াও বিএসইসি ও ডিএসইর সার্ভেল্যান্স বিভাগের কাছে থাকে। অর্থাৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ একচেঞ্জের কর্মকর্তারা জানতে পারে- কোন গ্রাহকের কত পরিমান শেয়ার, কবে, কত টাকায় বিক্রি হয়েছে। বিএসইসির সার্ভেল্যান্স বিভাগে সব তথ্য থাকার পরেও তদন্ত কমিটির নতুন করে তথ্য চাওয়ার ব্যাপারটি বাজার সংশ্লিষ্টদের মনে তুলেছে। কেউ কেউ এ বিভাগের কার্যক্রমের গতিশীলতা, সমন্বয়হীনতা এবং সার্বিক কার্যক্রম নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম অর্থসংবাদকে বলেন, ফোর্সড সেল ইন্টারনাল সফটওয়্যারের ব্যাপার। ফোর্সড সেলের জন্য আলাদা কোন কোড থাকে না। সুতরাং সার্ভেল্যান্স বিভাগে সাধারণ লেনদেনের তথ্য থাকলেও কোনটা ফোর্সড সেল তা বুঝার সুযোগ নেই।
তদন্ত কমিটি নিয়ে তিনি বলেন, তদন্ত কমিটিকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। তথ্য সংগ্রহে তাদের যা প্রয়োজন, তা-ই করতে পারবেন। এ ব্যাপারে বিসইসি কোন হস্তক্ষেপ করবে না।
বিএসইসির নতুন কমিশনের এমন ভুল ‘নতুন’ কিছু নয়। দায়িত্বের শুরু থেকেই নানান ইস্যুতে ভুল করে তারা সমালোচনায় জড়িয়ে পড়েছেন। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পর্ষদ গঠন নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। আইনের লঙ্ঘন হওয়ায় এ বিষয়ে তিনবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে কমিশন। কিন্তু তারপরও নিয়েছে ভুল সিদ্ধান্ত। সেখানেও বিদ্যমান আইনের লঙ্ঘন হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে চারদিকে ব্যাপক সমালোচনা চলছে।
সূত্র বলছে, দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গত ১ সেপ্টেম্বর ডিএসইর পর্ষদে ৭ জন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয় বিএসইসি। এর মধ্যে ৩ জনের ক্ষেত্রেই আইন লঙ্ঘন হয়েছে। এরা হলেন-ডিএসইর সাবেক এমডি মাজেদুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হেলাল উদ্দিন আহমেদ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবং শেয়ারবাজার ডেস্কের প্রধান ড. নাহিদ হোসেন। তবে বিতর্ক শুরু হলে ড. নাহিদ ছাড়া বাকি দুজন নিজ থেকেই সরে দাঁড়ান।
এরপর গত ১৮ সেপ্টেম্বর এ দুজনের স্থানে নতুন দুজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরা হলেন-হুদা ভাসী চৌধুরী অ্যান্ড কোম্পানির সিনিয়র পার্টনার এএফ নেসারউদ্দিন ও জেডএন কনসালট্যান্টের সিইও সৈয়দা জাকেরিন বখত নাসির। কিন্তু এখানেও আইনের ব্যত্যয় হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠায় তারাও যোগ দেননি।
পরে নিয়োগ দেওয়া ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইপিডিসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোমিনুল ইসলাম এবং ওয়েলস ফার্গো ব্যাংকের সাবেক কান্ট্রি ম্যানেজার শাহনাজ সুলতানকে। এই সিদ্ধান্তেও আইন লঙ্ঘন করেছে বিএসইসি। কারণ স্টক ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইন ২০১৩-এর ৫ ধারার ‘কে’ উপধারায় বলা আছে-কেউ তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিচালক এবং কর্মকর্তা হিসাবে কাজ করে থাকলে তিনি স্বতন্ত্র পরিচালক হতে পারবেন না। কিন্তু মোমিনুল ইসলাম এক বছর আগেও তালিকাভুক্ত কোম্পানি আইপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন।
এছাড়াও ওই আইনের ৫’র ধারার ‘সি’ উপধারায় বলা আছে, গত তিন বছরের মধ্যে স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ পার্টনার হিসাবে ব্যবসায়িক সম্পর্ক থাকলে তিনি স্বতন্ত্র পরিচালকের যোগ্য হবেন না। এছাড়া স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনো প্রতিষ্ঠানের পরিচালক বা যথেষ্ট শেয়ারধারীও স্বতন্ত্র পরিচালক হতে পারবেন না। আইনের ‘(ডি)’ উপধারায় বলা হয়েছে, বিগত ৩ বছরের মধ্যে কেউ স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে কোনো সম্মানি নিয়ে থাকলে তিনিও স্বতন্ত্র পরিচালক হওয়ার যোগ্য হবেন না। আগে যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, এই ধারা বিবেচনায় তারা কাজে যোগদান করেননি। তবে এখনও বহাল আছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. নাহিদ হোসেন। দীর্ঘদিন থেকে তিনি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে শেয়ারবাজার ডেস্কের প্রধান হিসাবে কাজ করেছেন।
এদিকে স্বল্প সময়ের মধ্যে বড় অঙ্কের একাধিক জরিমানা, বিনিয়োগকারীদের আস্থা না ফিরিয়েই হুটহাট তদন্ত, সংশ্লিষ্টদের মতামত না নিয়েই স্বেচ্ছাধীন নানান পদক্ষেপ বাজারকে অস্থির করে তুলেছে বলে অভিযোগ করছেন বিনিয়োগকারীরা। একইসঙ্গে লভ্যাংশ ঘোষণা না করা এবং লভ্যাংশ ঘোষণার পরও শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিতরণ না করার দায়ে ২৮টি কোম্পানির শেয়ারকে ‘জেড’ ক্যাটেগরিভুক্ত করা নিয়ে বেশ সমালোচনার মুখে পড়েছে বর্তমান কমিশন। বিএসইসির এমন সিদ্ধান্ত বিতর্কের পাশাপাশি কমিশনের দুর্বলতা ও অদক্ষতা ফুটিয়ে তুলছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম মুঠোফোনে অর্থসংবাদকে বলেন, পুঁজিবাজারের আস্থার সংকট। বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে যাওয়ার কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। টানা পতনে আতঙ্কিত হয়ে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে। কিন্তু শেয়ার কেনার ক্রেতা একদমই কম।
বাজার পতনের জন্য বিএসইসি চেয়ারম্যান দায়ী- সাধারণ বিনিয়োগকারীদের এমন দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, যেহেতু তারা বিনিয়োগ করতে ভরসা পাচ্ছে না। নিয়মিত পুঁজি হারাচ্ছে- তাই আস্থা সংকটে এমন দাবি স্বাভাবিক। বিনিয়োগকারীরা এমন কাউকে চায় যে সিকিউরিটি নিয়ে পুঁজি হারাবে না এমন আশ্বস্ত করবে। বিনিয়োগ করে রিটার্ন আসবে এবং লাভবান হবে। এ দায়িত্বটা বিএসইসি অথবা সরকারের উচ্চপদস্থ কাউকে নিতে হবে।
সূত্র বলছে, দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর শেয়ারবাজারে সুদিনের আশায় বিনিয়োগকারীরা বড় মূলধন নিয়ে নেমেছিলেন। তবে সেই আশা আর আলোর মুখ দেখেনি। উল্টো প্রতিনিয়ত পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। বিএসইসির নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে গেল আড়াই মাসে তালিকাভুক্ত ৯৫ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারই হারিয়েছে দর। এ সময়ের মধ্যে সূচক পতনের হার সাড়ে ১৮ শতাংশ। তবে শেয়ারবাজারের এমন সংকটময় সময়ে স্টক এক্সচেঞ্জ, নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের একটিও কাজে আসছে না। এমন পরিস্থিতে দিশেহারা বিনিয়োগকারীদের বড় একটি অংশ খোদ নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবিতে একমাসেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছেন।
এদিকে সাম্প্রতিক দরপতনের কারণকে অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক মনে করছে বিএসইসি। এমন পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা গত রোববার তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তবে নতুন তদন্ত কমিটিও নিজেদের কাজের শুরুতে বির্তকের জন্ম দিয়ে বসেছে।
পুঁজিবাজারের চলমান সংস্কার নিয়ে কথা বলেছেন ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম। গতকাল মার্চেন্ট ব্যাংক ও এ্যাসেট ম্যানেজম্যান্টের প্রতিনিধিগণের সঙ্গে আয়োজিত সভায় স্বল্পমেয়াদী সংস্কারে জোর দিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান বাজারে কাঠামোগত সংস্কার ও অনিয়ম দূরীকরণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা, স্টক এক্সচেঞ্জসহ সকল বাজার মধ্যস্থতাকারীরা একযোগে কাজ করছে। কিন্তু মধ্যবর্তী সময়ে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখতে না পারলে কোনো সংস্কারই ফলপ্রসূ হবে না। স্বল্পমেয়াদে বাজারের আস্থা বৃদ্ধির জন্য আমাদের করণীয় কি রয়েছে, সে বিষয়েও একইসাথে কাজ করতে হবে। স্বল্পমেয়াদে মার্কেটের আস্থা বৃদ্ধি করার জন্য আমাদের এই মুহুর্তে কি করণীয় আছে সেগুলো খুঁজে বের করে সেগুলো অতি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পুঁজিবাজার
দ্বিতীয় প্রান্তিকে লোকসান বেড়েছে হামিদ ফেব্রিক্সের

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হামিদ ফেব্রিকস পিএলসি গত ৩১ ডিসেম্বর,২০২৪ তারিখে সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর’২৪-ডিসেম্বর’২৪) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গত বছরের একেই সময়ের তুলনায় আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান বেড়েছে।
সোমবার (২১ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৮০ পয়সা লোকসান হয়েছে। গত বছর একই সময়ে ৩২ পয়সা লোকসান হয়েছিলো।
অন্যদিকে, চলতি হিসাববছরের দুই প্রান্তিকে (জুলাই’২৪–ডিসেম্বর’২৪) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ২ টাকা ৮৬ পয়সা। গত বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি ২১ পয়সা লোকসান হয়েছিল।
গত ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৩০ টাকা ৮১ পয়সা।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
ব্লকে ১৮ কোটি টাকার লেনদেন

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লকে ২৭টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মোট ৭০ লাখ ৯৪ হাজার ৬৪৮টি শেয়ার ৫৭ বার হাতবদল হয়েছে। এসব শেয়ারের আর্থিক মূল্য ১৮ কোটি ৮৮ লাখ ২৭ হাজার টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সোমবার (২১ এপ্রিল) ব্লকে সবচেয়ে বেশি মিডল্যান্ড ব্যাংকের ৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
লেনদেনের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা রেনেটার ২ কোটি ৪৯ লাখ টাকার ও তৃতীয় স্থানে থাকা এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ডের ২ কোটি ১২ টাকার লেনদেন হয়েছে।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
সিএসইতে ইডিইউ’র ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সফর

ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির (ইডিইউ) ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রায় ৬০ জন শিক্ষার্থীর একটি দল চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসির (সিএসই) কার্যালয়ে তাদের শিক্ষা সফর সম্পন্ন করেছে। পুঁজিবাজার সম্পর্কে বাস্তব ধারণা ও প্রায়োগিক পরিচালনা সম্পর্কে সম্যক ধারণা গ্রহন করতে এবং তাদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা এ শিক্ষা সফর করেন।
সোমবার (২১ এপ্রিল) সিএসইর আগ্রাবাদ চট্রগ্রামস্থ কার্যালয়ে ইডিইউ শিক্ষার্থীরা শিক্ষা সফর করেছেন।
অনুষ্ঠানে সিএসই কর্তৃপক্ষের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাইফুর রহমান মজুমদার, চিফ রেগুলেটরি অফিসার (সিআরও) মোহাম্মদ মাহাদী হাসান, সিএফএ, ম্যানেজার, কমপ্লায়েন্স, ইন্সপেকশন এন্ড এনফোর্সমেন্ট আদনান আব্দুর রাকিব এবং ম্যানেজার, ইস্যু মার্কেটিং, প্রোমোশন এবং প্রি-লিস্টিং ডিপার্টমেন্ট মোহাম্মাদ হাবিব উল্লাহ।
অধিবেশনটি পরিচালনা করেন হেড অফ ট্রেনিং অ্যান্ড এওয়্যারনেস এম সাদেক আহমেদ। অনুষ্ঠানে ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির (ইডিইউ) ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর এ কাইয়ুম চৌধুরী।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, আমাদের পুঁজিবাজার এখনও বেশ অপরিপক্ক। একটি দক্ষ মার্কেটের জন্য প্রয়োজন আরও শিক্ষিত ও দক্ষতাসম্পন্ন জনবল। এখানে অনেক নতুন নতুন প্রোডাক্ট আনার সুযোগ যেমন আছে তেমনি প্রয়োজন রয়েছে নতুনদের সাহসী পদক্ষেপ। আমাদের রেগুলেটরি ও সরকারী কাঠামোর আমূল পরিবর্ধন প্রয়োজন। একই সাথে নতুন কনসেপ্টগুলোর দ্রুত মূল্যায়ন এবং বাস্তবায়নের কার্যকরী পদক্ষেপ এই মার্কেট তথা সমগ্র অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে।
চিফ রেগুলেটরি অফিসার (সিআরও) মোহাম্মদ মাহাদী হাসান স্বাগত বক্তব্যে বলেন, পুঁজিবাজারের ভবিষ্যৎ বিনিয়োগকারী এবং কর্ণধার উভয়ই হবে আজকের শিক্ষার্থীরা। তাই শিক্ষাকালীন সময় থেকেই এই পুঁজিবাজার এবং এর কার্যক্রম সম্পর্কে জানা, গবেষণা করা, সম্যক জ্ঞান লাভ করা এবং সুযোগ থাকলে প্রায়োগিক জ্ঞান গ্রহণ করা প্রয়োজন। শিক্ষার্থীদেরকে এখন থেকেই পুঁজিবাজার এবং এর কার্যক্রম বিষয়ে জ্ঞান অর্জনে সময় দিতে হবে। শিক্ষা শেষে শিখবো, জানবো এই ভাবনা থেকে বের হয়ে আসতে হবে এবং ভবিষ্যৎ ইনভেস্টর বা কর্ণধার হওয়ার জন্য এখন থেকেই নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। পুঁজিবাজার সম্পর্কে জ্ঞান অন্বেষণের জন্য সিএসইতে তাদের দ্বার সব সময় খোলা বলে তিনি উপস্থিতিদেরকে অবহিত করেন।
প্রফেসর এ কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের ফিনান্সিয়াল মার্কেটে, ক্যাপিটাল মার্কেট হচ্ছে অর্থনীতির একটি শক্তিশালী ভিত্তি। আমাদের বাংলাদেশের পুঁজি বাজার এখনও বেশ ছোট তবে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ এবং অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারী এবং তাদের উদ্যোগ/অংশগ্রহণ এই মার্কেটকে আরও প্রানবন্ত করবে। বাংলাদেশের বর্তমান পুঁজিবাজারের অবস্থানের পেছনে সিএসই সব সময়ই অগ্রনী ভূমিকা পালন করে আসছে। যার সাম্প্রতিক একটি উদাহরন হল কমোডিটি এক্সচেঞ্জ-এর প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ। তিনি উপস্থিতিদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা সামনে এই পুঁজিবাজারে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক আজকের এই শিক্ষা সফরই হতে পারে তাদের প্রথম পদক্ষেপ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের বর্তমানে প্রচলিত এবং অদূর ভবিষ্যতে নতুন চালুকৃত প্রোডাক্ট বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অবহিত করেন। এছাড়াও আর্থিক পরিকল্পনা, ঝুঁকি এবং পুঁজিবাজারের সাথে সম্পর্কিত রিটার্ন সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে এবং তাদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে সুরক্ষার জন্য তাদের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে পুঁজিবাজার সম্পর্কে সামগ্রিক ধারণা প্রদান করতে ও প্রায়োগিক পরিচালনা বিষয়ে অবহিত করতে এম সাদেক আহমেদ উপস্থাপনা প্রদান করেন। এরপর সিআরও এবং অন্যান্য উপস্থিত বিভাগীয় প্রধানগণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেন। অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষার্থীরা সম্যক ধারণার জন্য এক্সচেঞ্জের বিভিন্ন বিভাগ গুলো পরিদর্শন করেন।
বাংলাদেশ পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনা অনুযায়ী এবং বিনিয়োগ শিক্ষার অংশ হিসেবে সিএসই প্রতিনিয়তই এ ধরনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমন্ত্রণ ও স্বাগত জানিয়ে আসছে বলে জানান সিএসই।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
রানার অটোমোবাইলসের পর্ষদ সভার তারিখ ঘোষণা

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি রানার অটোমোবাইলস পিএলসি পর্ষদ সভার তারিখ ঘোষণা করেছে। আগামী ২৪ এপ্রিল দুপুর ২টা ৩৫মিনিটে কোম্পানিটির পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, আলোচিত সভায় ৩১ মার্চ,২০২৫ তারিখে সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের (জানুয়ারি’২৫-মার্চ’২৫) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ এ প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
নর্দার্ন ইসলামি ইন্স্যুরেন্সের পর্ষদ সভার তারিখ নির্ধারণ

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নর্দার্ন ইসলামি ইন্স্যুরেন্স পিএলসি পর্ষদ সভার তারিখ ঘোষণা করেছে। আগামী ২৯ এপ্রিল দুপুর ২টা ৩০মিনিটে কোম্পানিটির পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, আলোচিত সভায় ৩১ ডিসেম্বর,২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ এ প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি।
এছাড়াও, একই সভায় ৩১ মার্চ,২০২৫ তারিখে সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি’২৫-মার্চ’২৫) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ এ প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি।
এসএম