পুঁজিবাজার
মেধাভিত্তিক পুঁজিবাজার গড়তে কাজ করছে বিএসইসি: চেয়ারম্যান
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) মেধাভিত্তিক পুঁজিবাজার গড়তে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) পুঁজিবাজারের সার্বিক উন্নয়ন ও সংস্কারের বিষয়ে বিএসইসির সঙ্গে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) শীর্ষ প্রতিনিধিদের একটি মত বিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিএসইসি ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার মো. আলী আকবর, কমিশনার ফারজানা লালারুখ, বিএসইসির কর্মকার্তাবৃন্দ এবং আইসিএবির সভাপতি মোহাম্মদ ফোরকান উদ্দীন, সাবেক সভাপতি দেওয়ান নুরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি এমবিএম লুৎফুল হাদী এবং সিইও শুভাশীষ বোস।
সভার সূচনা বক্তব্যে বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ সভায় অংশগ্রহণকারী সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, বিএসইসি মেধাভিত্তিক পুঁজিবাজার গড়তে কাজ করছে। তিনি পুঁজিবাজারে নীরিক্ষকদের কাজ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বলেন, নীরিক্ষকদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা বৃদ্ধি করে পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ও শৃঙ্খলা আনয়নে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও সংস্কারে তিনি নিরীক্ষা সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানসমূহকে নিজ অবস্থান থেকে যথাযথ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
তিনি পুঁজিবাজারকে অর্কেস্ট্রার সাথে তুলনা করে বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা, এক্সচেঞ্জ, তালিকাভুক্ত কোম্পানি, বিনিয়োগকারী, বাজার মধ্যস্ততাকারী প্রতিষ্ঠানসমূহসহ সকল অংশীজনদের নিয়ে পুঁজিবাজার কাঠামোর সকলকে নিয়েই ও সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমেই বাজার পরিচালিত হয়। দেশের পুঁজিবাজারকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে তাই সকলকে দায়িত্বশীল ও কর্তব্য পরায়ন হতে হবে এবং উন্নয়ন ও সংস্কারে প্রয়োজনীয় ও যথাযথ ভূমিকা রাখতে হবে। সভার আলোচনায় তিনি পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও তাদের সুরক্ষার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
আইসিএবির শীর্ষ প্রতিনিধিবৃন্দ দেশের পুঁজিবাজারের সার্বিক উন্নয়ন ও সংস্কার সংক্রান্ত বিষয়ে তাদের মতামত ও প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। এসময় দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও বিকাশের ক্ষেত্রে নিরীক্ষা সংস্থা ও নিরীক্ষকদের ভূমিকা ও দায়িত্ব, নিরীক্ষা কার্যক্রমে বিদ্যমান সংকট, প্রতিবন্ধকতা ও করনীয়সহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়। মত বিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোতে সুশাসন নিশ্চিতকরণ, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টরদের আরো দায়িত্বশীল করা ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টর নিয়োগের প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় সংস্কার আনয়ন, কোম্পানির আর্থিক বিবরণী প্রস্তুতকরণকে আরো ভালো করতে কোম্পানির সিএফও-দের আরো দায়িত্বশীল করা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধির সাথে সাথে যথাযথ ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং নিশ্চিতকরণ, বাংলাদেশে উচ্চমানের আর্থিক প্রতিবেদন এবং নিরীক্ষার প্রসার ও বিকাশ সাধন, নিরীক্ষা কার্যক্রমে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব, সততা ও নৈতিক মান নিশ্চিতকরণ, সুস্পষ্ট ও স্বচ্ছভাবে নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা নিশ্চিতকরণ, বাজার সংশ্লিষ্টদের জন্য হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা সংক্রান্ত বিশেষায়িত ও পেশাদার প্রশিক্ষন নিশ্চিতকরণ, নিরীক্ষকদের দক্ষতা ও সক্ষমতার উন্নয়ন, পুঁজিবাজারে নীতিসহায়তার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও সরকারি সংস্থার মাধ্যমে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ, পুঁজিবাজারে মনিটরিং জোরদারকরণ, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের সংস্কার ও উন্নয়ন, পুঁজিবাজারকে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের মূল উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠিতকরণ ইত্যাদি বিভিন্ন প্রস্তাবনা উঠে এসেছে। সভার আলোচনায় পুঁজিবাজারের প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নিশ্চিত ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে রক্ষায় করণীয় বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সভায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি এবং সুশাসন নিশ্চিতের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে ভালো বিনিয়োগ পরিবেশ সৃষ্টির বিষয়ে আলোচনা হয়।
সভায় আইসিএবির প্রতিনিধিবৃন্দ দেশের পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়ন ও সংস্কারে নিয়ন্ত্রক সংস্থার সাথে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
পুজিবাজারের সার্বিক সংস্কার সংক্রান্ত বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংগঠন ও অংশীজনদের সাথে মত বিনিময় করছে। সর্বোপরি, দেশের পুঁজিবাজারের বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা ও সংকটসমূহ থেকে উত্তরণে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে সমন্বয় একটি শক্তিশালি ও সমৃদ্ধ পুঁজিবাজার গড়ে তুলতে বিএসইসি নিরলসভাবে কাজ করছে জানিয়েছে বিএসইসি।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
সিলকো ফার্মার আয় বেড়েছে ৫৪ শতাংশ
গত ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সিলকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়।
কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১৭ পয়সা। গত বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি ১১ পয়সা আয় হয়েছিল। অর্থাৎ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ৫৪ শতাংশ।
সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিক শেষে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ২২ টাকা ৮৪ পয়সা।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
লোকসানে এনার্জিপ্যাক, দেবে না লভ্যাংশ
গত ৩০ জুন, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য লভ্যাংশ সংক্রান্ত তথ্য ঘোষণা করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন পিএলসি। আলোচ্য বছরের জন্য কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোন লভ্যাংশ দেবে না।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশ সংক্রান্ত এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৫ টাকা ১৮ পয়সা। আগের বছর শেয়ার প্রতি ৭৫ পয়সা আয় হয়েছিল।
গত ৩০ জুন, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছর শেষে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য ছিল ৩৭ টাকা ৪৫ পয়সা।
লভ্যাংশ সংক্রান্ত তথ্য অনুমোদনের জন্য আগামী ২২ ডিসেম্বর কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ১৫ ডিসেম্বর।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
এসকে ট্রিমসের লভ্যাংশ ঘোষণা
গত ৩০ জুন, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। আলোচ্য বছরের জন্য কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার প্রতি পৌনে ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেবে।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশ সংক্রান্ত এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫৪ পয়সা। আগের বছর শেয়ার প্রতি ৯৪ পয়সা আয় হয়েছিল।
গত ৩০ জুন, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছর শেষে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য ছিল ১৬ টাকা ৬৫ পয়সা।
ঘোষিত লভ্যাংশ অনুমোদনের জন্য আগামী ২৯ ডিসেম্বর কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ১২ ডিসেম্বর।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালের ক্যাটাগরি পরিবর্তন নিয়ে ডিএসইর নয়-ছয়!
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালস লিমিটেডের ক্যাটাগরি পরিবর্তন নিয়ে ঢাকা স্টক একচেঞ্জের (ডিএসই) বিরুদ্ধে দেরি করার অভিযোগ উঠেছে। লেনদেনের শুরুতে কোন কোম্পানির ক্যাটাগরি পরিবর্তনের তথ্য জানানোর নিয়ম থাকলেও এ ক্ষেত্রে লেনদেনের সময় শেষে জানানো হয়। এতে লেনদেনের শুরুতে আগের ক্যাটাগরি বহাল থাকায় কারসাজিতে ডিএসইর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের যোগসাজসের অভিযোগ তুলেছেন বিনিয়োগকারীরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, ওষুধ ও রসায়ন খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালস লিমিটেডের গতকাল (২০ নভেম্বর) পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কোম্পানিটি।
এদিকে আজ লেনদেনের শুরুতে ডিএসই ওয়েবসাইটে কোম্পানিটির লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রকাশ করে ডিএসই। তবে লভ্যাংশ না দেওয়ায় কোম্পানিটিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরের সংবাদটি ট্রেডিং আওয়ার বা লেনদেনের সময় শেষে প্রকাশ করা হয়। তাতে কোন লভ্যাংশ না ঘোষণা করেও গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালসের শেয়ার পুরো কার্যদিবস ‘বি’ ক্যাটাগরি থেকে লেনদেন করেছে। ডিএসইর এমন হঠকারী কর্মকাণ্ডে যোগসাজস ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলেছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। তবে এ ঘটনাই প্রথম নয়, সম্প্রতি আরেকটি কোম্পানির শেয়ারের ক্যাটাগরি পরিবর্তন নিয়েও বিতর্ক তৈরি করেছে ডিএসই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর জনসংযোগ কর্মকর্তা শফিকুর রহমান মুঠোফোনে অর্থসংবাদকে বলেন, গতকালকে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলেও এটা আমাদের আইটি সফটওয়্যারে একদিন আগে ইনপুট দিয়ে ট্রেড চালাতে হয়। অথবা এ সংবাদটা অফিস আওয়ারের পরে আসছে বিধায় এ তথ্যটা পরে প্রকাশ করা হয়েছে।
তবে ডিএসই একদিন পরে আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য ট্রেডিং আওয়ারের শুরুতে জানাতে পারলেও ক্যাটাগরি পরিবর্তন নিয়ে কেন গড়িমসি করেন এবং কেন লেনদেন শেষ হওয়ার পরে কেন ক্যাটাগরি পরিবর্তনের খবর প্রকাশ করে থাকেন- তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিনিয়োগকারীরা। কারণ, লেনদেনের শুরুতে কোম্পানিটির শেয়ার ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরিত না হলে সেখানে কারসাজির আশঙ্কা থাকে।
বিএসইসির সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯ এর ১৭ ধারা অনুযায়ী, কোন কোম্পানি পরপর দুই বছর লভ্যাংশ না দিলে সেসব কোম্পানিকে দ্রুতই ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করতে হবে। কিন্তু গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালস লিমিটেড টানা দুই বছর লভ্যাংশ না দেওয়ার পরেও তাদের ক্যাটাগরি পরিবর্তনের সংবাদ ট্রেডিং আওয়ারের পরে প্রকাশ করা হয়। এতে ডিএসইর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখার দাবি তুলেছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসির এক ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা বলেন, সাধারণত কোন কোম্পানি আগের দিন ডিএসই কর্মঘণ্টার মধ্যে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করলে ওদিন ক্যাটাগরি পরিবর্তনের তথ্য জানানো যায়। কিন্তু ট্রেডিং আওয়ারের পরে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলে তা পরেরদিন লেনদেনের শেষে ক্যাটাগরি পরিবর্তনের সংবাদ প্রকাশ করা হয়। প্রযুক্তিগত কারণে সকালে কোম্পানিটির ক্যাটাগরি পরিবর্তন করা যায় না। তবে এখানেও আইনের ফাঁকফোকর রয়েছে।
এদিকে বিএসইসির নিয়ম অনুযায়ী, কোন কোম্পানির বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের দিন লেনদেনের ক্ষেত্রে শেয়ারের দামে সার্কিট ব্রেকারের সীমা আরোপিত হয় না। তাতে কোম্পানিটির শেয়ারদর স্বাভাবিক নিয়মের চেয়ে বেশি বাড়তে বা কমতে পারে। দুর্বল কোম্পানির ক্ষেত্রে এ সুযোগটাই ব্যবহার করে থাকেন কারসাজি চক্র।
ডিএসই সূত্রে জানা যায়, লভ্যাংশ না দেওয়ার ঘোষণায় আজ লেনদেনের শুরুতে গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালের শেয়ারের দাম কমে ২০ টাকা ৪০ পয়সায় দাঁড়ায়। তবে লেনদেন শুরুর দেড় ঘণ্টা পার হতেই এর দাম বাড়তে শুরু করে। তাতে লেনদেন শেষে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ২৪ শতাংশ।
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালের আজকের দরবৃদ্ধিতেও কারসাজি চক্রের হাত থাকতে পারে। কারণ টানা লভ্যাংশ না দেওয়ার পরেও কোনো কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধি অস্বাভাবিক বিষয়। তবে লেনদেনের শুরুতে কোম্পানিটির ক্যাটাগরি পরিবর্তনের সংবাদটি ডিএসই প্রকাশ করলে শেয়ারদর হয়তো এতটা বাড়তো না। একইসঙ্গে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরিত হলে শেয়ার কেনাবেচায় কিছু সুবিধা হারাতো কারসাজি চক্র।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
পুঁজিবাজারে লুটেরাদের অর্থ আত্মসাতের তদন্ত চেয়ে দুদকে চিঠি বিনিয়োগকারীদের
দেশের পুঁজিবাজারে গত ৯০ দশক থেকে এখন পর্যন্ত হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। এসব কাজে বিএসইসি, ডিএসই এবং চিহ্নিত মাফিয়া চক্র জড়িত ছিলো বলে অভিযোগ তুলেছেন ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা। এসব চক্রের সদস্যদের পরিচয় এবং বিএসইসি, ডিএসইর কর্মকর্তাদের পরিচয়ও তুলে ধরেছেন তারা। লুটপাটে অংশ নেওয়া এসব ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে ইতোমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিনিয়োগকারীদের পক্ষে হেলাল উদ্দিন আকন স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দুদকে পাঠানো হয়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে গত নব্বই দশক থেকে চলতি বছর পর্যন্ত যে সকল মাফিয়া পুঁজিবাজারকে কুক্ষিগত করে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গেছে,তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করছি। বিগত ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে ব্যবহার করে হাজার-হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে ফ্যাসিষ্ট সরকারের বিশ্বস্ত কিছু মাফিয়া চক্র এবং সরকারি সংস্থা। যারা বিএসইসি ও ডিএসইকে ব্যবহার করে পুঁজিবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সর্বশান্ত করে, আইনের তকমা লাগিয়ে বিভ্রান্ত করে রেখেছিলো। ফলে বিএসইসি ও ডিএসই বিনিয়োগকারীদের আস্থার স্থান না হয়ে উল্টো অবৈধ কমিশন বাণিজ্য এবং চাঁদাবাজির সাথে জড়িত হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বিএসইসি ও ডিএসইর কর্মকর্তারা সরাসরি বাজারের মাফিয়া এবং জুয়ারিদের সাথে চুক্তিবদ্ধ। বাজারের দুর্বল, বন্ধ কোম্পানিগুলোকে এনে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে উচ্চ মূল্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীকে শেয়ার গছিয়ে দিয়েছে এবং হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যা বর্তমানেও চলমান রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা লুটেরা চক্রের কিছু সদস্যের নামও চিঠিতে তুলে ধরেছেন। এদের মধ্যে বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানকে চক্রের মূল হোতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া বে লিজিং সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন, রেইজ মিচুয়াল ফান্ডের নাফিজ শারাফাত, ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান হাসান রাজা, সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজিজ খান, সোনালী পেপারের চেয়ারম্যান মো. ইউনুস, ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ওবায়েদুল করিম, বিকন ফার্মার চেয়ারম্যান এবাদুল করিম, এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট শেখ কবির, রেইজ মিচুয়াল ফান্ডের হাসান ইমাম, ইউনাইটেড সিকিরিটিজের পরিচালক রাজিব আল মামুন, সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাদেক হোসেন, ইস্টার্ন ব্যাংক সিকিরিটিজের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইদুর রহমান, সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র এক্সকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়ারেস উল মতিন, সাউথইস্ট ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রাশেদুল ইসলাম, সাউথইস্ট ব্যাংকের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট জেসমিন সুলতানা লাকী, সাউথইস্ট ব্যাংক ক্যাপিটালের সিনিয়র অ্যাসিস্টেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজীব আহমেদ, সাউথইস্ট ব্যাংক ক্যাপিটালের এমডি মো. আবু বকর , শাকিল রিজভী স্টকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাকিল রিজভী, এস এস স্টিলের চেয়ারম্যান জাভেদ অপেনহেগেন, ডিএসইর সাবেক পরিচালক আহমেদ রশিদ লালী, লংকা বাংলা ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন চৌধুরী, শেলটেক ব্রোকারেজের চেয়ারম্যান ও একজন পরিচালক এবং সমবায় মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি রেজিস্টার আবুল খায়ের হিরুকে মাফিয়া চক্রের সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ সাউথইস্ট ব্যাংক ক্যাপিটালের কয়েজন কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করা হয়।
লুটেরা চক্রকে খোদ বিএসইসির কর্মকর্তারা সহায়তা করতেন বলেও চিঠিতে জানানো হয়। যাদের মাধ্যমে চক্রটি দুর্বল কোম্পানির শেয়ার কারসাজি করে উচ্চমূল্যে লেনদেন করতো। এতে পুঁজি হারাতো সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। চক্রটিকে সহায়তা করার অভিযোগ বিএসইসির সাবেক দুই চেয়ারম্যানসহ সাবেক কমিশনার ও বর্তমান কমিশনার এবং নির্বাহী পরিচালকদের বিরুদ্ধে।
বিএসইসির পাশাপাশি ডিএসইর ৭ কর্মকর্তাও লুটপাটে অংশ নিয়েছিলেন বলে চিঠিতে বলা হয়। এসব কর্মকর্তারা হলেন- ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন, চিফ রেগুলারিটি অফিসার খায়রুল বাশার আবু তাহের, মনিটরিং বিভাগের ম্যানেজার ইকরাম হোসেন, অ্যাসিস্টেন্ট জেনারেল ম্যানেজার বজলুর রহমান, সিনিয়র এক্সকিউটিভ জাকির হোসেন, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক এবং ম্যানেজার ফাহমিদা খাতুন।
বিনিয়োাগকারীরা চিঠিতে জানায়, বিগত সরকারের প্রভাব খাটিয়ে এবং বিএসইসি-ডিএসই কর্মকর্তাদের সহায়তায় এ লুটেরা চক্র শেয়ারবাজারে ১৩০টি দুর্বল কোম্পানি তালিকাভুক্ত করেছে। আবার এসব কোম্পানির শেয়ার অভিনব কারসাজির মাধ্যমে প্রলোভন দেখিয়ে তারা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়া ব্রোকারেজ হাউস থেকে এ চক্র সাপ্তাহিক চাঁদা উত্তোলন করতো বলে জানানো হয়। কোন প্রতিষ্ঠান চাঁদা দিতে ব্যর্থ হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করে হেনস্তা করা হতো। পাশাপাশি কারসাজিতে শেয়ারদর বৃদ্ধিতে এ চক্র ছিলো বেশ সক্রিয়। নিজেদের চাওয়া চাহিদামতো তারা নির্দিষ্ট কোম্পানির দাম বাড়ানোর ইন্ধন দিতো। শেয়ারবাজারকে অস্থিতিশীল করে তোলা এ চক্র ও বিএসইসি-ডিএসই কর্মকর্তাদের নাম উল্লেখ করে চিঠিতে তাদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের তদন্ত অনুসন্ধানের আবেদন জানানো হয়।
এমআই