জাতীয়
হিন্দু সম্প্রদায় কী চাইছে, তারা এখন কেন রাস্তায়

দেশের হিন্দু সম্প্রদায় তাদের আট দফা দাবি আদায়ের জন্য চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে শুক্রবার যে সমাবেশে করেছে তা নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা হচ্ছে বিভিন্ন মহলে। ওই সমাবেশ থেকে দাবি আদায়ের জন্য ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের যে ঘোষণা দিয়েছে সেটিও অনেকের দৃষ্টিতে এসেছে। সমাবেশের আয়োজকরা বলছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের পরিচিত সংগঠনগুলোর বাইরে সাধু সন্তদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হওয়ায় এবারের সমাবেশের লোক সমাগম গণমাধ্যমের দৃষ্টি কেড়েছে এবং একই কারণে তাদের দেয়া বক্তব্যগুলোও আলোচনায় এসেছে বলে মনে করেন তারা। শুক্রবার লালদীঘির ওই সমাবেশের প্রধান বক্তা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রক্ষ্মচারী বলেছেন, তাদের বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছেন তারা।
আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই এটা সাধুসন্তদের আন্দোলন। এটি সরকার বা কোন দলের পক্ষে বা বিপক্ষে নয়। সংবিধান, আইনকানুনসহ সব কিছুতে সাম্য ও অসাম্প্রদায়িকতা চাই আমরা যাতে সবাই সমান মর্যাদা পেতে পারি, বলছিলেন তিনি। সনাতন জাগরণ মঞ্চের একজন সমন্বয়ক কাঞ্চন আচার্য বলছেন, নাগরিক অধিকার আদায়ের জন্যই তারা তাদের দাবিগুলো তুলেছেন। তিনি বলছেন, গত ৫৩ বছরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হওয়া হামলা নিপীড়নের একটি ঘটনারও বিচার হয়নি। তবে এখন ‘সরকারকে চাপে ফেলতে কিংবা আওয়ামী লীগকে সুযোগ করে দিতে মাঠে নেমেছেন’ বলে সরকার সমর্থকরা সামাজিক মাধ্যমে যে প্রচারণা চালাচ্ছে তা প্রত্যাখ্যান করেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রক্ষ্মচারী। তিনি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায় কথা বললে তাতে রাজনৈতিক ট্যাগ দেয়া কিংবা অন্য দেশকে টেনে আনা সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনাগুলো উপেক্ষার পুরনো কৌশল। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে সবাইকে সাথে নিয়ে এগুতে হবে-এটাই আমরা বলতে চাইছি। শুক্রবারের সমাবেশ থেকে যে আট দফা দাবি জানানো হয়েছে তার মধ্যে আছে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে সংখ্যালঘু নির্যাতনে জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন এবং অবিলম্বে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা।
প্রসঙ্গত, এক দশকের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার বেশ কিছু ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও দৃষ্টি কেড়েছিলো। ২০২১ সালে দুর্গা পূজার সময় কুমিল্লার একটা পূজামণ্ডপে কোরআন পাওয়ার অভিযোগ ঘিরে দেশজুড়ে মন্দির মণ্ডপে হামলার ঘটনা ঘটেছিলো। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাম্প্রতিক এক রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৩ সাল থেকে পরবর্তী নয় বছরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর সাড়ে তিন হাজারের বেশি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলার মধ্যে হিন্দুদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং পূজামণ্ডপ, মন্দিরে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ অন্যতম। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রক্ষ্মচারী বলছেন, একটি ঘটনাতেও কোন ব্যক্তিকে বিচার শেষ করে শাস্তি দেয়া হয়নি। বরং আমাদের ধর্মের অনুভূতিতে আঘাত করলে জামিন পায়। আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতির কথা বলে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়। আমরা কিছু বললে আমাদের একটি দলের ট্যাগ দেয়া হয়। অন্য দেশের ট্যাগ দেয়া হয়, তিনি অভিযোগ করেন।
তাদের আট দফার অন্য দাবি গুলো হলো, সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে উন্নীতকরণ, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকেও ফাউন্ডেশনে উন্নীতকরণ, দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন এবং অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপাসনালয় নির্মাণ ও হোস্টেলে প্রার্থনা রুম , সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ড আধুনিকায়ন এবং দুর্গাপূজায় পাঁচ দিন ছুটি দেয়া। কাঞ্চন আচার্য বলছেন, তারা ইতোমধ্যেই তাদের দাবিগুলো নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা করেছেন। এবারের দুর্গাপূজার সময় সরকারের প্রতিনিধিদের সাথে কথা হয়েছে কিন্তু এখনো তাতে কোন অগ্রগতি আসেনি, বলছিলেন তিনি। শুক্রবার লালদীঘিতে সনাতন সম্প্রদায়ের সমাবেশের পর সামাজিক মাধ্যমে অনেক নিয়ে এ নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন তুলেছেন। কেউ কেউ বলছেন আওয়ামী লীগ আমলে সনাতন সম্প্রদায়ের মানুষেরে এভাবে সোচ্চার হয়নি। আবার কেউ কেউ সনাতন সম্প্রদায় ‘আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে’ এমন মন্তব্য করছেন।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রক্ষ্মচারী বলছেন, সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়নকে বৈধতা দিয়ে এগুলো পুরনো কৌশল বলেই তারা মনে করেন। আমরা যে সরকারের আমলেই হোক যত অন্যায়ের শিকার হয়েছি তার বিচার চাই এবং সুরক্ষা নিশ্চিতের দাবি করছি। সরকার মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য পাঁচশ মসজিদ করেছে। আমরা একে স্বাগত জানিয়েছি কিন্তু অন্য ধর্মের জন্য কি করেছে?, বলছিলেন তিনি। আমরা এখন রাস্তায় নেমেছি কারণ এখন পরিবর্তনের কথা বলা হচ্ছে। তবে কিছু ঘটনা আমাদের বিচলিত করেছে। আগের বাড়িঘর মন্দির বা ব্যক্তির ওপর হামলা হয়েছে নিয়মিত। এখন জীবিকায় হাত দেয়া হচ্ছে। শুধু হিন্দু বলেই চাকরিচ্যুত ও পদাবনতির ঘটনা ঘটছে। বিভিন্ন জায়গায় আমাদের অনুষ্ঠানে বাধা দেয়া হচ্ছে। এসব কারণে আমাদের প্রতিবাদ করতে হচ্ছে, বলছিলেন তিনি। তিনি জানান, তারা ইতোমধ্যেই বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামীসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতাদের সাথে তাদের দাবির বিষয়ে মতবিনিময় করেছেন। সরকার ছয়টি কমিশন করেছে কিন্তু সেই কমিশনে তো সংখ্যালঘু বা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নেই। আমরা চাই আমরা যেন আমাদের কথা তুলতে পারি।
হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের দাবি, ২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার জন্য কমিশন হলেও আওয়ামী লীগ সরকার পনের বছরে তার ভিত্তিতে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি সে সময় চট্টগ্রামে অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে আলোচনা তৈরি করলেও এখন পর্যন্ত সেই ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার হয়নি। ২০০৬ সালে রাউজানে জ্ঞানজ্যোতি হত্যাকাণ্ড ও ২০১২ সালে রামুর বৌদ্ধ মন্দিরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ব্যাপক আলোড়ন তুললেও সেগুলোতেও বিচার হয়নি কারও। ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর ছবি পোস্টের অভিযোগ তুলে ২০১৬ সালের ৩০শে অক্টোবর ব্রাক্ষণবাড়িয়ার নাসিরনগরে পনেরটি মন্দির ও তিন শতাধিক বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় হলেও এর আট মামলার সাতটিরই বিচার কাজ শেষ হয়নি। ২০১২ সালের ২৯শে সেপ্টেম্বর রাতে রামুর ১২টি বৌদ্ধ বিহার, উপাসনালয়ে অগ্নিসংযোগ ও হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। একইসঙ্গে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ৩০টি বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সোচ্চার হয়েছিলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও।
আওয়ামী লীগ আমলে এসব নিয়ে তারা মাঠে নামেননি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রক্ষ্মচারী বলেন, তারা সবসময়ই এর বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। ২০২১ সালের ঘটনাতেও দেশজুড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছি আমরা। ১৫৪ টি দেশে ওই ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়ে তখন, বলছিলেন তিনি। যদিও সামাজিক মাধ্যমে সরকার সমর্থকরা অনেকে প্রচার করছেন যে সনাতন ধর্মের মানুষ আওয়ামী লীগকে সুবিধা দেয়ার জন্য এখন রাস্তায় নেমেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রক্ষ্মচারী বলেন, এটি আক্রমণকারী ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর পুরনো খেলা। এ কারণেই আমরা সরকাররে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছি। কারণ দেশকে সঠিক পথে নিতে হলে সবার সাথেই সমান আচরণ করতে হবে এবং সবাইকে সমান সম্মান ও নিরাপত্তাবোধ নিশ্চিত করতে হবে। রাজনৈতিক রং দিয়ে উপেক্ষা করার প্রবণতার কৌশল পুরনো। আমরা কিছু বললে ভারতের প্রসঙ্গ টানা হয়। আমরাও বলতে চাই যে পাকিস্তানেও তো সংখ্যালঘু কমিশন ও মন্ত্রণালয় আছে। তাহলে বাংলাদেশে কেন থাকবে না? মনে রাখতে হবে যে বিশ্বের কোথাও একজন মুসলিম ক্ষতিগ্রস্ত হলে যেমন সারাবিশ্বের মুসলিমদের মন কাঁদে, তেমনি একজন হিন্দুর ক্ষতি হলে সারা বিশ্বের হিন্দুদের মন কাঁদবে, তিনি বলেন। শুক্রবার লালদীঘি ময়দানের ওই সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী।
তিনি বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ। সেখানে দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, কেউ যদি আমাদের উৎখাত করে শান্তিতে থাকার চেষ্টা করেন, তাহলে এ ভূমি আফগানিস্তান হবে, সিরিয়া হবে। শুধু সংখ্যালঘু পরিচয়ে ৯৩ জনকে পুলিশের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ভেটেরিনারি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হিন্দুদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। মাঝখানে কিছুদিন এমন অপকর্ম থেমে গিয়েছিল। এখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আমরা আর নীরব থাকব না, বলেছেন তিনি। তিনি আরো বলেছেন, বাংলাদেশে সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আমাদের আপত্তি নাই। কিন্তু দ্বিতীয়/তৃতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে সংবিধান সংশোধনকে মানব না। পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি হিন্দু হয়েছেন। আর এ দেশে একজন করে ঝেঁটিয়ে বিদায় করেছেন।
এমআই

জাতীয়
রমজানের মতো স্বস্তির না হলেও খুব খারাপ ঈদযাত্রা হয়নি: ফাওজুল কবির

রমজানের মতো স্বস্তির না হলেও ঈদুল আজহার ঈদযাত্রা খুব খারাপ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
রোববার (১৫ জুন) টানা ১০ দিনের ঈদের ছুটি শেষে প্রথম কর্মদিবসে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা এ কথা জানান। ফাওজুল কবির একই সঙ্গে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়েরও উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা বলেন, ঈদের আগে দুদিন ছুটি ছিল। সময় কম ছিল। তাই ঈদের আগে সড়কে চাপ ছিল। যাওয়ার সময় যানজটটা বেশি হয়েছে। রমজানের মতো স্বস্তির না হলেও খুব খারাপ যাত্রা হয়নি। তবে ফিটনেসবিহীন গাড়ি বিকল হওয়াতে রাস্তায় কিছু সমস্যা হয়েছে। তবে খুব বেশি নয়।
ফাওজুল কবির খান বলেন, যারা বেশি ভাড়া আদায় করেছে, তাদের কাছ থেকে ভাড়া আদায় করে যাত্রীদের দেওয়া হয়েছে। কমলাপুর রেল স্টেশনেও সবাই খুব খুশি ছিল। এত দূর পথের যাত্রা ম্যানেজ করা একটা চ্যালেঞ্জ।
আমরা ফিটনেসবিহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি চলতে দেবো না, বলেন সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা।
গ্রামে অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, এখন গ্রামে ঘরে ঘরে এসএসসি ফ্রিজ। গ্রামে বিদুতের চাহিদা বাড়ছে। ফলে প্যাটার্ন বদলেছে। এটার ফলে কিছু কিছু জায়গায় সমস্যা হয়েছে।
ছুটিতে ১২-১৩ হাজার মেগাওয়াট চহিদা ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রামে বিদুৎ পায়নি, এটা ভুল কথা।
উপদেষ্টা আরও বলেন, গরমে বিদ্যুতের প্রস্তুতি আমাদের আছে। চাহিদা মেটাতে প্রয়োজনে তেলের বিদ্যুৎকেন্দ্র চালাবো।
কাফি
জাতীয়
পুলিশের অতিরিক্ত ৪ ডিআইজিকে বদলি

পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) ও অতিরিক্ত ডিআইজি পদমর্যাদার ৪ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। আজ রোববার (১৫ জুন) এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
ঢাকার রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সের (আরআরএফ) কমান্ড্যান্ট (অতিরিক্ত ডিআইজি) আলি আকবর খানকে সিআইডিতে বদলি করা হয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা আরআরএফের কমান্ড্যান্ট নিয়োগ পেয়েছেন সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি রুমানা আক্তার।
চট্টগ্রাম ৯ এপিবিএনের অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মোহাম্মদ শামসুল হক এবং ঢাকার এপিবিএনের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. নজরুল ইসলামকে সিআইডিতে বদলি করা হয়েছে।
জাতীয়
রেফারির মতো কাজ করব, যারা খেলবে খেলুক: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেছেন, আমরা রেফারির মতো কাজ করব। যারা খেলবে খেলুক, যারা জিতবে জিতুক।
আজ রবিবার (১৫ জুন) নির্বাচন ভবনে ঈদ পরবর্তী মতমিনিময় সভায় কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচন সংক্রান্ত কাজ এগিয়ে নিতে ইসির ভূমিকা নিয়ে সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘অনেকগুলো আমরা এগিয়ে নিয়ে গেছি, যত কাজ বাকি আছে তা সবাইকে মিলে করতে হবে। আজকে মতবিনিময় সভায় আপনাদের হাজির করলাম- আমাদের শপথ হবে সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জাতিকে উপহার দেওয়া। ’
এ সময়ে একটা ঐতিহাসিক নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে চান বলেও জানান সিইসি।
তিনি বলেন, লন্ডন, জাপানসহ বিশ্বনেতাদের বলে যাচ্ছেন, আমরা একটা ঐতিহাসিক নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে চাই। বিশ্বব্যাপী ওয়াদা দিচ্ছেন আমাদের ওপর আস্থা আছে বলে এমন ঘোষণা দিচ্ছেন।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, ‘রমজানের সময়ও ওয়াদা করেছেন সুন্দরভাবে কাজ করবেন। আজকেও পুনর্ব্যক্ত করব দয়া করে, আজকের শপথ হবে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার, কোনো দলের জন্য লেজুড়বৃত্তি না করার, আইন অনুযায়ী কাজ করার ও ন্যয় সঙ্গভাবে কাজ করার। ’
সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন আরও বলেন, আমরা রেফারির ভূমিকায়, আমরা রেফারির মতো কাজ করব। যারা খেলবে খেলুক; যারা জিতবে জিতুক। কিন্তু আমাদের দায়িত্ব হবে একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে দেওয়া। সেটা করার জন্য আমরা বদ্ধপরিকর।
মতমিনিময় সভায় চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয়
দেশে ফিরেছেন ২০ হাজার ৫০০ হাজি

সৌদি আরব থেকে পবিত্র হজ পালন শেষে ফিরতি ফ্লাইটে শুক্রবার রাত পর্যন্ত ২০ হাজার ৫০০ জন হাজি দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ২ হাজার ৯২৪ এবং ১৭ হাজার ৫৭৬ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দেশে ফিরেছেন।
রোববার (১৫ জুন) হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এ পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে ৬ হাজার ২২৭, সৌদি পতাকাবাহী সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে ৭ হাজার ৮৭৩ এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে ৬ হাজার ৪২০ জন দেশে ফিরেছেন। মোট ৫২টি ফিরতি ফ্লাইট পরিচালিত হয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি ছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের, ২০টি সাউদিয়ার এবং ১৬টি ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্সের।
এদিকে, সৌদি আরব বাংলাদেশি হাজিদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা ও তথ্যপ্রযুক্তি সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। দেশটির মেডিকেল সেন্টারগুলো এখন পর্যন্ত ৫৪ হাজার ২২৭টি অটোমেটেড প্রেসক্রিপশন ইস্যু করেছে এবং আইটি হেল্পডেস্কগুলো ২১ হাজার ৯১০টি সেবা প্রদান করেছে।
এখন পর্যন্ত ২৯ জন বাংলাদেশি সৌদি আরবে মারা গেছেন । তাদের মধ্যে ২৫ জন পুরুষ এবং ৪ জন নারী। এদের মধ্যে ১৯ জন মক্কায়, ৯ জন মদিনায় এবং ১ জন আরাফায় মারা গেছেন।
সৌদি আরবের সরকারি হাসপাতালগুলো এ পর্যন্ত ২৪০ জন বাংলাদেশিকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছে। এদের মধ্যে এখনো ১৯ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গত ২৯ এপ্রিল প্রথম ফ্লাইটের মাধ্যমে এ বছরের হজ কার্যক্রম শুরু হয় এবং ৩১ মে শেষ হয়। সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরার কার্যক্রম ১০ জুন শুরু হয়েছে এবং তা ১০ জুলাই পর্যন্ত চলবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় ২০২৫ সালের হজের জন্য ৭০টি হজ এজেন্সিকে অনুমোদন দিয়েছে। এ বছর হজ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৫ হাজার ৩০২ জন ধর্মপ্রাণ মুসল্লি সৌদি আরবে গেছেন।
হজ ব্যবস্থাপনা অফিস জানায়, কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশিদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে চলমান এ কার্যক্রম ও স্বাস্থ্যসেবার ওপর নিবিড়ভাবে নজর রাখছে।
কাফি
জাতীয়
বিশ্ব বাবা দিবস আজ

প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রোববার বিশ্বব্যাপী উদযাপন করা হয় এই বিশেষ দিনটি, যা এ বছর পড়েছে ১৫ জুন। সন্তানের জীবনে পিতার অবদান ও ত্যাগকে সম্মান জানাতেই পালিত হয় বাবা দিবস-ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধার এক অনন্য উপলক্ষ।
পশ্চিমা বিশ্বে শুরু হলেও এখন এটি ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে, বাংলাদেশেও। আমাদের দেশেও দিনটিকে ঘিরে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন আয়োজন করেছে বিশেষ অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা ও স্মৃতিচারণামূলক নানা আয়োজন।
বাবা দিবসের ইতিহাসের পেছনে রয়েছে সনোরা স্মার্ট ডড নামের এক মার্কিন নারীর অনন্য ভূমিকা। ১৯০৯ সালে ওয়াশিংটনের একটি গির্জায় মা দিবস পালনের কথা শুনে তার মনে প্রশ্ন জাগে—মা দিবস থাকলে বাবা দিবস কেন থাকবে না? সনোরা ছিলেন এক সিঙ্গেল বাবার মেয়ে। মায়ের মৃত্যুর পর তার বাবা অসাধারণ দায়িত্বশীলতা ও ত্যাগে সাত সন্তানকে মানুষ করেন। সেই স্মৃতিই ডডকে বাবার প্রতি সম্মান জানানোর একদিনের দাবি তুলতে উদ্বুদ্ধ করে।
এক বছর ধরে অক্লান্ত প্রচেষ্টার পর ১৯১০ সালের ১৯ জুন স্থানীয় কমিউনিটিতে প্রথমবারের মতো পালন করা হয় বাবা দিবস। পরে ধীরে ধীরে দিনটি ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে এবং পায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
আজকের এই দিনে সারা পৃথিবীর সন্তানরা তাদের বাবাকে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার বিশেষভাবে স্মরণ করছে। পিতৃত্বের মহান রূপটি নতুন করে উপলব্ধি করার এ এক অনন্য দিন।
কাফি