রাজনীতি
শুধু ছাত্রলীগ নয়, আ.লীগকেও নিষিদ্ধ করতে হবে: মামুনুল হক

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক বলেছেন, অন্তবর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানাই, সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে তারা প্রমাণ করেছে, আওয়ামী লীগ এবং তার রাজনীতি ছিল সন্ত্রাসনির্ভর রাজনীতি। আমরা বলতে চাই- শুধু ছাত্রলীগ নয়, শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগকেও বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর শহরের উত্তর তেমুহনীর লিল্লাহ জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে খেলাফত মজলিস জেলা শাখা আয়োজিত এক গণসমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, যারা আমার মায়ের বুক খালি করেছে, যারা দেশের প্রতিটি শিক্ষাঙ্গনকে মৃত্যুপুরী করেছে, সারা বাংলার ৫৫ হাজার বর্গ মাইলকে এ দেশের সন্তানদের রক্ত দ্বারা লাল করেছে, সে আওয়ামী লীগের বাংলাদেশ রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই।
মামুনুল হক বলেন, ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে হেফাজত ইসলামের নবীপ্রেমী তৌহিদী জনতার ওপর পরিচালিত গণহত্যায় এখন পর্যন্ত মামলা দায়ের হয়নি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যেই এই গণহত্যার জন্য ২০২১ সালের মোদীবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের জন্য শেখ হাসিনা এবং খুনির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হতে হবে। সে মামলায় বিচার করতে হবে। বাংলার মানুষ ইতিহাসের জঘন্যতম খুনির বিচার দেখতে চায়।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব বলেন, যে দেশে ফ্যাসিবাদ উৎখাতের জন্য স্বৈরাচার পতনের জন্য হাজার হাজার মানুষ জীবন দিয়েছে, শুধু ১ জুলাই থেকে আগস্টের সর্বশেষ রিপোর্ট পর্যন্ত এক হাজার ৬৩২ জন মানুষকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে। আরও কত অসংখ্য মানুষ গুমের শিকার হয়েছে, তাদের লাশের হদিস পরিবারের কাছে নেই। এভাবে বিগত ১৫ বছরে কত হাজার মানুষকে হত্যা করে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মসনদকে আঁকড়ে ধরে রাখতে চেয়েছিল।
শেখ হাসিনা বিগত ৫০ বছর ধরে প্রতিশোধের রাজনীতি করেছেন বলে সমালোচনা করেন মামুনুল হক বলেন, শেখ হাসিনা প্রতিশোধের রাজনীতি করেছিল। সে প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিল বাংলাদেশের কাছ থেকে, বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে। এমনকি নিজের দল আওয়ামী লীগের কাছ থেকে। তার ধারণা ছিল ১৯৭৫ সালে তার বাবাকে খুন করেছে এদেশের মানুষ আর আওয়ামী লীগ। এজন্য সে ঘোষণা দিয়েছিল- যারা তার বাবার হত্যাকাণ্ডে উল্লাস প্রকাশ করেছে, সে এ জাতির কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করবে। এরপর বিগত ৫০ বছর ধরে শেখ হাসিনা প্রতিশোধের রাজনীতি করে গেছে। এভাবে সে প্রতিশোধ ও বিভাজনের রাজনীতি করে দেশকে ধ্বংস করার যত আয়োজন সবগুলো সে করেছে। সে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে চায়নি, চেয়েছে মুখ্যমন্ত্রী হতে।
মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি হয়েছে জানিয়ে খেলাফত মজলিসের এ নেতা বলেন, বাংলাদেশ যাতে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সে জন্য লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার করে দেশকে তলাবিহীন ঝুঁড়িতে পরিণত করেছে তারা। মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি করেছে। বাংলাদেশের অস্তিত্বকে বিপন্ন করাই ছিল শেখ হাসিনার রাজনীতি। অন্য আরেকটি দেশের সেবাদাসী হিসেবে বাংলাদেশের ক্ষমতার মসনদকে কুক্ষিগত করে এদেশের মানুষের ইচ্ছা এবং অভিপ্রায়ের বিরুদ্ধে সে রাজনীতি করে গেছে।
মামুনুল হক আরও বলেন, ১৫ বছর পর্যন্ত ভারত শুধু শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্পর্ক করেছে। আর এ সম্পর্ক রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে এবং বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতাকে তার দুপায়ের নিচে ফেলেছে। বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে সারা পৃথিবী, আন্তর্জাতিক বিশ্ব থেকে বাংলাদেশকে বিচ্ছিন্ন করেছে। মানুষকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অধিকারহারা করেছে। আর তারা (ভারত) তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখেছিল।
কাফি

রাজনীতি
বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য, এখানে গণতন্ত্রের চর্চা খুব একটা হয়নি: ফখরুল

বাংলাদেশে খুব বেশিদিন গণতন্ত্রের চর্চা হয়নি। এটি বাংলাদেশের জন্য দুর্ভাগ্য বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে ‘সিভিল ডিসকোর্স ন্যাশনাল ২০২৫; ভয়েস অব ডেমোক্রেসি: রিথিংকিং বাংলাদেশ’ শিরোনামে এক বিতর্ক প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
‘দ্য বাংলাদেশ ডায়লগ’ নামে একটি প্লাটফর্ম এবং ঢাকা কলেজের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম ইলিয়াস, অ্যাডকম হোল্ডিং লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) নাজিম ফারহান চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্টের ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম, বিএনপির পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাফি খসরু প্রমুখ।
মির্জা ফখরুল বলেন, অনেকেই মনে করেন, বাংলাদেশকে দিয়ে কিছুই হবে না। এটি সঠিক নয়।
‘আজ সকালে একটি জরিপ দেখে আমার মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তারা লিখেছে, বাংলাদেশের তরুণদের মাত্র ১ দশমিক ৮৭ শতাংশ রাজনীতিতে আগ্রহী। এটা খুব ভালো সংবাদ নয়। ’
তিনি বলেন, আমরা লিবারেল ডেমোক্রেসিতে বিশ্বাস করি। আমার কথা বলার স্বাধীনতা থাকতে হবে, তোমার কথা বলার স্বাধীনতা থাকতে হবে। বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য, এখানে গণতন্ত্রের চর্চা হয়নি।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মাননীয় উচ্চারণ থেকেই স্বৈরশাসনের জন্ম হয় উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি কিছুদিনের জন্য অর্থ প্রতিমন্ত্রী ছিলাম। ঢাকার বাইরে গেলে ওখানকার পুলিশের কন্টিনজেন্টের সবাই দাঁড়িয়ে স্যালুট করতো। নিজেকে তখন বিরাট কিছু মনে হতো।
‘আমাদের এখানে যেই মন্ত্রী হয়ে গেল, সেই ভিন্ন জগতে চলে গেল। স্যালুট, বাঁশি, সামনে-পেছনে গাড়ি; এই যে মানসিকতা, তা ধীরে ধীরে ডিক্টেটরের দিকে নিয়ে যায়। ’
তিনি বলেন, অনেকেই মনে করছেন, সময় ভালো যাচ্ছে না। তবে আমি সবসময় আশাবাদী মানুষ। এরপর ভালো সময় আসবে। আমাদের ছেলেরা, যারা চমৎকার অনুষ্ঠান করছে, দেশ নিয়ে ভাবছে। আমি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখি।
ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম ইলিয়াস বলেন, সাম্প্রতিক মব জাস্টিসের যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তাকে ডিবেট জাস্টিসে রূপান্তর করতে পারলে সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে পারব।
রাজনীতি
গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে সম্মান জানিয়ে ‘জাতীয় সমাবেশ’ সফল করার আহ্বান জামায়াত আমিরের

জাতীয় সমাবেশ সর্বাত্মকভাবে সফল করার জন্য সংগঠনের সর্বস্তরের জনশক্তি ও দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকাল ১০টায় দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে ঐতিহাসিক ‘জাতীয় সমাবেশ’ বাস্তবায়ন কমিটির এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ছাত্র-জনতার বহু ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে অর্জিত ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থান জাতীয় জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জুলাই-আগস্টের জনআকাক্সক্ষা বাস্তবায়ন এবং জীবন উৎসর্গকারী ছাত্র-জনতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে দেশে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এই সমাবেশের আয়োজন করেছে।
জাতীয় সমাবেশ সর্বাত্মকভাবে সফল করার জন্য তিনি সংগঠনের সর্বস্তরের জনশক্তি ও দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। জামায়াতে ইসলামী ঘোষিত ৭ দফা আদায়ের মাধ্যমেই ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের সফলতা অর্জন করা সম্ভব বলে তিনি বৈঠকে অভিমত ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে ৭ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামী ১৯ জুলাই শনিবার বেলা ২টায় রাজধানী ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিতব্য ঐতিহাসিক ‘জাতীয় সমাবেশ’ সফল করে তোলার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করা হয়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- নায়েবে আমির সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম ও এড. এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, অধ্যক্ষ মো. ইজ্জত উল্লাহ ও মোবারক হোসাইন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মো. সেলিম উদ্দিন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম, ইসলামিক দাওয়াহ সার্কেল মালয়েশিয়ার সভাপতি অধ্যাপক সাইফুল্লাহ মানসুর, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দিন মানিক ও মো. ইয়াসিন আরাফাত, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি কামাল হোসাইন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি এড. আতিকুর রহমান, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম এবং ড. জুবায়ের আহমাদ প্রমুখ।
কাফি
রাজনীতি
আবরার ফাহাদের দেখানো পথেই রাজনীতি করছে এনসিপি: নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘দিল্লি না ঢাকা’ সেই স্লোগান উঠেছিল আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদ মিছিল থেকে। আজকের এই দিনে আমরা আবরার ফাহাদকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি, তার রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। আবরার ফাহাদ আমাদের যে পথ দেখিয়ে গেছে, এনসিপি সেই পথেই রাজনীতি করছে। সে বাংলাদেশপন্থি পথ, ভারতের আধিপত্যবাদ বিরোধী পথ, আগ্রাসন বিরোধী পথ দেখিয়ে গেছে। সেই পথেই জাতীয় নাগরিক পার্টি রাজনীতি করছে। সেই পথ ধরেই জুলাই গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছিল।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের রায়ডাঙ্গা গ্রামের গোরস্থানে আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আবরার ফাহাদ থেকে আবু সাইদ সকল শহীদদেরকে আমরা স্মরণ করি। ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ের আন্দোলনের সময় গত ১৬ বছরে যারা গুম খুন এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছে আমরা সকল শহীদ ও নির্যাতিতদের ধারণ করি। দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রায় আমরা শহীদদের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করছি। সেই শহীদরা যে স্বপ্নের বাংলাদেশ দেখেছিল। যে স্বাধীন সার্বভৌমত্ব মর্যাদার বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখেছিল। যে বাংলাদেশপন্থি রাজনীতির উত্থান তারা করতে চেয়েছিল। আমরা সেই রাজনীতি করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আবরার ফাহাদ বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। বুয়েটের হলে ছাত্রলীগ দ্বারা নির্যাতিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। আবরার ফাহাদের অপরাধ ছিল তিনি দেশের জন্য, দেশের পক্ষে কথা বলেছিলেন। ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফেসবুকে লিখেছিলেন। বাংলাদেশের সাথে ফেনী নদী চুক্তি করা হয়েছিল, যেখানে বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয়েছিল। বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে কথা বলেছিলেন বলে ভারতীয় তাঁবেদার সংগঠন, ফ্যাসিস্ট সংগঠন ছাত্রলীগ সারারাত নির্মম নির্যাতন করে তাকে হত্যা করে। আমাদের ভাই আবরার ফাহাদ শহীদ হন। ২০১৯ সালেই আবরার ফাহাদের হত্যার প্রতিবাদে বুয়েট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা বাংলাদেশে আমরা দিন দিন আধিপত্যবাদ বিরোধী এবং সন্ত্রাস বিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলেছিলাম। সেই আন্দোলন আমাদের ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ের অন্যতম মাইলফলক।
নাহিদ আরও বলেন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের পরে ২০১৯ সালে আবরার ফাহাদ হত্যা অনেক বড় ঘটনা ছিল আমাদের জাতীয় রাজনীতিতে। আবরার ফাহাদের মৃত্যু এবং মৃত্যুর প্রতিবাদে আন্দোলন বাংলাদেশের রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। ভারতের আধিপত্য বিরোধী আন্দোলন নতুন করে শুরু হয়েছিল।
এ সময় আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ, মা রোকেয়া খাতুন, এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, এনসিপি নেতা সাইফুল্লাহ হায়দার, আসাদুল্লাহ আল গালিব, আবু সাঈদ লিয়ন, ডা. মাহমুদা আলম মিতু, মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, ফিহাদুর রহমান দিবস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও এনসিপির অঙ্গ সংগঠন যুব শক্তি ও শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় নেতারা এবং কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
কাফি
রাজনীতি
শহীদের রক্তভেজা ঢাকা হবে ইনসাফের নগরী: ড. হেলাল

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ নায়েবে আমীর এবং ঢাকা-৮ আসনের এমপি পদপ্রার্থী এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বিলেন, শহীদের রক্তভেজা ঢাকা হবে ইসলাম পন্থীদের। পল্টন মোড়ে জামায়াতের নেতাকর্মীদের লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে লাশের উপর নৃত্য করেছিলো ফ্যাসিস্টরা। পলাতক হাসিনার আমলে রাজধানীতে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলো পতিত স্বৈরাচারেরা। জনগণ ফ্যাসিবাদকে পতন করেছে। আগামীতে নতুন বাংলাদেশ গড়তে জনগণ জামায়াতের পক্ষে বলিষ্ঠ ভুমিকা রাখবেন। ইতিমধ্যে জনগণ বলতে শুরু করেছে চাঁদাবাজ ও দখলবাজদের দিন শেষ আগামী বাংলাদেশ হবে ইসলাম পন্থীদের।
সোমবার (৭ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি অডিটোরিয়ামে দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সভাপতির বক্তব্য শাহীন আহমদ খান বলেন, জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করে নতুন বাংলাদেশ বির্নিমানে দায়িত্বশীলদের ভুমিকা রাখতে হবে। শহীদ ও আহতদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত ফ্যাসিস্টমুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি আমরা। বিপ্লব যেন ব্যাহত না হয় সেদিকে আমাদের তীক্ষ্ণ নজর রাখতে হবে। ১৯ জুলাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ বাস্তবায়নে পল্টন থানার দায়িত্বশীলদের অগ্রণী ভুমিকা রাখতে হবে।
জামায়াতের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ মজলিসে শূরা সদস্য ও পল্টন থানার সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান শাহীনের সঞ্চালনায় দায়িত্বশীল সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামী পল্টন থানার সহকারী সেক্রেটারি এনামুল হক।
সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামী পল্টন থানার কর্মপরিষদ সদস্য যথাক্রমে ওমর ফারুক,আমিনুল ইসলাম, আবুল ফারাহ মো. ইউসুফ, হাবিবুর রহমান, মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম মজুমদার, শামীম হাসনাইন ও মোহাম্মাদ আল-আমীন রাসেল।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন পল্টন থানার মজলিসে শূরা সদস্য যথাক্রমে আক্তার হোসেন, মাওলানা রুহুল আমীন, শরিয়ত উল্লাহ্, মোকছেদুল রুপম প্রমূখ।
রাজনীতি
মুজিববাদী ও আওয়ামী সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে: নাহিদ ইসলাম

গণঅভ্যুত্থানের পরে এই দেশে মুজিববাদী ও আওয়ামী সংবিধান পরিবর্তন করে একটি নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রয়োজন। যে সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধ, গণঅভ্যুত্থান ও ব্রিটিশবিরোধী লড়াইয়ের কথা থাকবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এসসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, মুজিববাদী ও আওয়ামী লীগের সংবিধান গত ৫০ বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার রক্ষা করেনি, সমাজ ও রাষ্ট্রকে বিভাজিত করেছে। এই সংবিধান দেশকে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারেনি।
সোমবার (৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় সিরাজগঞ্জ শহরের বাজার স্টেশন এলাকায় পথসভা ও পদযাত্রায় তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের যত গুম-খুন হয়েছে, সেগুলোর প্রত্যেকটির বিচার করতে হবে। বিচার না করা পর্যন্ত আমরা নির্বাচনে যাব না। অবশ্যই সব কিছুর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আমরা পুরনো সিস্টেমে আর ফিরত যেতে চাই না। আমাদের দেশের সংস্কার প্রয়োজন। এমন সংস্কার করতে হবে, যেন কেউ আর স্বৈরাচারী হতে না পারে।
বসুন্ধরা মিডিয়াকে নিয়ে তিনি বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ একটি মাফিয়া গ্রুপ। বাংলাদেশের মিডিয়া এ দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেছে। জনগণকে জিম্মি করেছে। দেশের টাকা লুট করেছে। ব্যাংকগুলোকে লুট করা হয়েছে। সেই বসুন্ধরা গ্রুপের আমরা বিচার চাই। এই বসুন্ধরার এস আলম দুর্নীতিবাজ। লুটেরাজদের অবশ্যই বিচার করতে হবে। এখনো গণঅভ্যুত্থানের পরেও ব্যবসায়ীদের রাজনৈতিক আশ্রয় দিচ্ছে, তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, তারা রাজনৈতিক সমর্থন ছাড়া টিকে থাকার সুযোগ পেতো না। অন্তর্বর্তী সরকারকেও এদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কীভাবে এসব মিডিয়া অভ্যুত্থান ও জনগণের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারে? যে প্রজন্ম গণঅভ্যুত্থান করেছে, যারা পুলিশের বুলেটের সামনে থেকে এসেছে, সেই প্রজন্ম কাউকে ভয় পায় না। ভয়ের সংস্কৃতি যারা ফিরিয়ে আনতে চাচ্ছে, তারা ভুল করছে।
এনসিপির পদযাত্রায় বাধাদানকারীদের সম্পর্কে নাহিদ ইসলাম বলেন, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যারা এনসিপির পদযাত্রায় বাধার সৃষ্টি করতে চাচ্ছেন, আজ সিরাজগঞ্জ ও নাটোরে বিভিন্নভাবে পদযাত্রায় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কোনো বাধা বা আঘাত দিলে এনসিপির নেতাকর্মীরা মেনে নেবেন না।
পদযাত্রায় মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দিন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম-সদস্য সচিব তাসনিম জারা, যুগ্ম-সদস্যসচিব মাহিন সরকার, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহসহ অন্য নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।