খেলাধুলা
ভারতকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সেমিতে বাংলাদেশ
সাফের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ এবারের আসরেও ফেভারিটদের একটি। তবে প্রথম ম্যাচে প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। পাকিস্তানের বিপক্ষে কোনোমতে ড্র করেছে সাবিনা খাতুনের দল। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে নিজেদের ভালোভাবে প্রমাণ করেছে তারা। শক্তিশালী ভারতকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিতে পা রেখেছে বাংলাদেশ নারী দল।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
এই জয়ে চার পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ সেরা হয়ে সেমিতে উঠেছে বাংলাদেশ। ভারত তিন পয়েন্ট নিয়ে রানার্স-আপ। বাংলাদেশের বিপক্ষে এক পয়েন্ট পাওয়া পাকিস্তান টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে।
শুরু থেকেই আক্রমণে দাপট ছিল বাংলাদেশের। ১৫ মিনিটে দলকে এগিয়ে দেন আফিদা খন্দকার। সাবিনা খাতুনের নেয়া কর্ণার কিক থেকে আসা বল ঠিকমতো গ্রিপ করতে পারেননি ভারতের গোলরক্ষক। বল চলে যায় আফিদার কাছে। সুযোগ পেয়ে দ্রুত শট নেন আফিদা। গোলরক্ষকের পাশ দিয়ে বল গোললাইন অতিক্রম করে।
এগিয়ে যাওয়ার পরেও আক্রমণের ধার কমায়নি বাংলাদেশ। ফলে দ্বিতীয় গোল পেতে বেশি দেরি হয়নি সাবিনাদের। ২৮ মিনিটে বাম প্রান্ত থেকে আসা বল ভারতীয় ডিফেন্ডার ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন। বল তহুরা খাতুনের গায়ে লেগে জড়ায় জালে। সৌভাগ্যের ছোঁয়ায় এই গোল পেয়েছে বাংংলাদেশ।
৪২ মিনিটে ব্যবধান ৩-০ করে বাংলাদেশ। এই গোলটিও এসেছে তহুরার পা থেকে। শামসুন্নাহার সিনিয়র ও জুনিয়র বল দেওয়া-নেওয়া করে বক্সের মধ্যে তহুরাকে পাঠান। জোরালো শটে জালে বল জড়ান এই ফরোয়ার্ড।
তহুরার গোলের পরের মিনিটেই একটি গোল পরিশোধ করে ভারত। ডি বক্সের মধ্যে রূপনা চাকমা বল গ্রিপ করতে ব্যর্থ হওয়ায় হেডে জালে জড়ান ভারতীয় অধিনায়ক বালা দেবী।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
ভুটানকে উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ
ফুটবল বিশ্বকাপের সবচেয়ে আলোচিত স্কোরলাইনটা বলা চলে ৭-১। ব্রাজিলের ঘরের মাঠ বেলো হরিজেন্তে স্টেডিয়ামে জার্মানি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে স্বাগতিকদের জালে পুরেছিল সাত গোল। আলোচিত সেই স্কোরলাইনকে আবার সামনে আনল বাংলাদেশের মেয়েরা। নেপালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম সেমিফাইনালে ভুটানের জালে ৭ গোল দিয়েছেন সাবিনা খাতুন-তহুরা আক্তাররা। বিপরীতে হজম করেছে মাত্র এক গোল।
৭-১ গোলের এই জয়ের পর আরও একবার নারী সাফের ফাইনালে পা রাখল বাংলাদেশ। পুরো ম্যাচে বলতে গেলে ভুটানের মেয়েদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। তহুরা পেয়েছেন হ্যাটট্রিক। অধিনায়ক সাবিনার পা থেকে এসেছে দুই গোল। একটি করে গোল ঋতুপর্ণা এবং মাসুরা পারভিনের।
প্রথমার্ধেই অবশ্য ম্যাচের এপিটাফ লিখে ফেলেছিল বাংলাদেশ। শক্তিমত্তায় এগিয়ে থাকা সাবিনা খাতুনের দল শুরুর ৪৫ মিনিটেই রীতিমতো গোল উৎসব করেছে। প্রথম লিড নিতে তাদের তেমন অপেক্ষা করতে হয়নি। সপ্তম মিনিটে তহুরা খাতুনের পাস পেয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শট নেন ঋতুপর্ণা চাকমা। সেখান থেকেই বাংলাদেশের গোল বন্যার শুরু।
১৫ মিনিটে লিড দ্বিগুণ করেন তহুরা। তাতে অবশ্য দায় ছিল ভুটানের। ডিফেন্ডাররা বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন তহুরা। ডি বক্সের ঠিক সামনে থেকে বাঁ-পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।
১৮ মিনিটের দিকে ব্যবধান কমানোর সুযোগ পেয়েছিল ভুটান। গোলবার কিছুক্ষণ ফাঁকা থাকলেও ভুটানের ডেকি লাজন বেশ দূর দিয়ে বল বাইরে মারেন।
২৪তম মিনিটে সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। তার শট গোলবারে লেগে ফেরার পর প্রতিপক্ষের কাছ থেকে বল কেড়ে নেন মনিকা চাকমা। তার পাস পেয়ে সাবিনা শট নেন দূর থেকে। হতাশ হওয়ার এক মিনিটের মাথায় পেয়ে যান কাঙ্ক্ষিত গোল। বাংলাদেশ লিড নেয় ৩-০ গোলে।
তহুরা নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ৩৫ মিনিটে। ভুটানের একজনকে কাটিয়ে তিনি শট নেন ডি বক্সের বাইরে থেকে। তহুরার দৃষ্টিনন্দন সেই শট বাংলাদেশকে ৪ গোলে এগিয়ে দেয়। ৩৭ মিনিটে ফের সাবিনার আঘাত। এবার গোলরক্ষক রুপনার বাড়ানো বল মধ্যমাঠ থেকে নিয়ে এগিয়ে যান বাংলাদেশ অধিনায়ক। বক্সে ঢুকে গোলরক্ষককে কাটিয়ে ডানপ্রান্ত দিয়ে তিনি বল জালে জড়ান।
৪২ মিনিটে এক গোল শোধ করে ভুটানের মেয়েরা। ডেকি লাজনের নেওয়া শট পা বাড়িয়েও ঠেকাতে ব্যর্থ হন রুপনা। ৫-১ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
বিরতির পর বাংলাদেশের খেলায় কিছুটা ধীরগতি দেখা যায়। ফাইনালের জন্য নিজেদের ফিটনেস ধরে রাখা আর নেপালের তপ্ত রোদের নিচে খেলা হওয়ায় খুব বেশি প্রেসিং কিংবা আগ্রাসী আক্রমণ দেখা যায়নি। এর মাঝেও ৫৭ মিনিটে মনিকা চাকমার চিপ শটে বল পেয়ে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন তহুরা।
পরে বাংলাদেশের হয়ে সপ্তম গোল করেন ডিফেন্ডার মাসুরা পারভিন। চলতি আসরে দারুণ ছন্দে থাকা এই ডিফেন্ডার কর্ণার থেকে মাথা ছুঁইয়ে করেছেন গোল। ৭-১ গোলের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
বাফুফের সদস্য পদে নির্বাচিত হলেন যারা
বাফুফে নির্বাচনে শেষ দিকে রোমাঞ্চ ছিল সদস্য পদের লড়াই ঘিরে। ১৫ পদের বিপরীতে লড়াই করেছেন ৩৭ জন। ভোট গণনা শেষে নির্বাচিত হয়েছেন ১৪ জন। বাকি একটি পদে সমানসংখ্যক ভোট পেয়েছেন দুজন। তাই এ পদে পুনঃভোট অনুষ্ঠিত হবে।
সর্বোচ্চ ৯৮ ভোট পেয়েছেন ইকবাল হোসেন। বাফুফের আগের কমিটিতেও ছিলেন তিনি। এছাড়া আমীরুল ইসলাম বাবু ৯৬, গোলাম গাউছ ৯২, মাহি উদ্দিন আহমদ ৮৮, টিপু সুলতান ৮৭, মঞ্জুরুল করিম ৮৬, জাকির হোসেন চৌধুরী ৮২, মাহফুজা আক্তার কিরণ ৮১, কামরুল হাসান হিল্টন ৮০, সত্যজিৎ দাশ রূপু ৭৬, ইমতিয়াজ হামিদ ৭২, ছাইদ হাসান কানন ৬৭, সাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া ৬৬, বিজন বড়ুয়া ৬২ করে ভোট পেয়েছেন।
শেষ পদে এখলাছ উদ্দিন ও সাইফুর রহমান মনি দুজনেরই কপালে জুটেছে সমানসংখ্যক ৬১ ভোট। তাই তাদের জন্য পুনঃনির্বাচনের পথ খোলা রয়েছে। যদিও সমঝোতার ভিত্তিতে কেউ চাইলে সরেও দাঁড়াতে পারেন।
বাফুফের কমিটিতে নতুন যুক্ত হয়েছেন গাউছ, মঞ্জুরুল, হিল্টন ও জাতীয় দলের সাবেক গোলকিপার কানন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথ আউয়াল
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নতুন সভাপতি নির্বাচিত হলেন তাবিথ আউয়াল। ১৩৩ ভোটের মধ্যে কাস্ট হয়েছে ১২৮টি ভোট। তার মধ্যে ১২৩ ভোট পেয়েছেন তাবিথ আউয়াল। তার নিটকতম প্রতিদ্বন্দ্বী মিজানুর রহমান চৌধুরী পেয়েছেন ৫ ভোট। সভাপতির ভোটের সংখ্যা জানিয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার মেজবাহউদ্দিন।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) দিনভর রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কংগ্রেস ও নির্বাচন। টানা ১৬ বছর ধরে বাফুফের সভাপতির দায়িত্ব পালন করা কাজী মো. সালাউদ্দিন এবার অংশ নেননি ভোটে।
প্রার্থীতা ঘোষণার পর থেকেই ব্যাপক আলোচনায় ছিলেন তাবিথ আউয়াল। শেষ পর্যন্ত বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে বাফুফের সভাপতি নির্বাচিত হলেন তিনি।
বাফুফে নির্বাচনে যে এমটনাই হবে, তা আগে থেকেই অনকেটা অনুমেয় ছিল। তাবিথ আউয়ালই হতে যাচ্ছেন বাফুফের পরবর্তী সভাপতি, এটাও একরকম নিশ্চিত ছিল।
প্রার্থীতা চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকেই কোনো হেভিওয়েট প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না তাবিথ আউয়ালের। যে কারণে খুব একটা প্রচারণাও তাকে করতে দেখা যায়নি। তিনি নিজেও বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। জানতেন অঘটন না ঘটলে তিনিই ভোটে জয়ী হবেন। বাফুফের সভাপতি হয়ে দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নিতে চান বলে জানিয়েছেন তাবিথ।
তাবিথ বলেন, ২০০৮ সালের ২৮ এপ্রিল বাফুফে সভাপতির দায়িত্ব নেন কাজী সালাউদ্দিন। সেই থেকে এখন পর্যন্ত টানা ১৬টি বছর বাফুফেতে রাজত্ব করেছেন তিনি। আজ তার অবসান হলো। বাফুফে নতুন সভাপতি পেলো। নতুন নেতৃত্বে দেশের ফুটবল কোন পথে হাটে এটা সময়ই বলে দেবে
১৯৯৮ সাল থেকে ক্রীড়াঙ্গনে শুরু হয় নির্বাচনী ব্যবস্থা। এসএ সুলতান বাফুফের প্রথম নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন। কাজী সালাউদ্দিন ছিলেন দ্বিতীয় সভাপতি। চার মেয়াদে সভাপতি ছিলেন তিনি। এবার তিনি নির্বাচনে অংশ নেননি। তাবিথ আউয়াল বাফুফের তৃতীয় সভাপতি। তবে ভোটের হিসেবে তিনিই সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন।
এর আগে ২০১২ ও ২০১৬ সালে ফেডারেশনের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন তাবিথ আউয়াল। ২০২০ সালে সহ-সভাপতি পদে ঠাই হয়েছিল। পুনরায় নির্বাচনে তাবিথ হারেন ৪ ভোটে। এবার তিনি সভাপতি নির্বাচিত হলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন শান্ত
চলমান দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের পর অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়াবেন নাজমুল হোসেন শান্ত। মূলত নিজের পারফরম্যান্সে মনোযোগ বাড়াতেই এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। বিসিবির এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে ক্রিকেটভিত্তিক ভারতীয় ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ।
শান্তর প্রতিভা নিয়ে বরাবরই আশাবাদী ছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে কখনোই সেই প্রতিভার ছাপ রেখে ধারবাহিক হতে পারেননি এই টপ অর্ডার ব্যাটার। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে বেশ কিছু ভালো ইনিংস খেললেও ধারবাহিকতার সঙ্গে কখনো বন্ধুত্ব হয়নি বাংলাদেশ অধিনায়কের।
গত কয়েক মাস ধরে ব্যাট হাতে বেশ ভুগছেন শান্ত। তাই নিজের পারফরম্যান্সে উন্নতি করতে নিজের ওপর থেকে নেতৃত্বের চাপ সরাতে চান তিনি। এ কারণেই অধিনায়কত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। যা ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) জানিয়েছেন শান্ত।
ক্রিকবাজ বলছে, বিসিবির বেশ কয়েকজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা শান্তকে অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলেও সেটাতে রাজী হননি তিনি। এমনকি গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরই এই ফরম্যাটের নেতৃত্ব ছাড়তে চেয়েছিলেন তিনি। এবার সরে দাঁড়াচ্ছেন তিন ফরম্যাট থেকেই। তবে এখন পর্যন্ত শান্তর অধিনায়কত্ব ছাড়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি বোর্ড।
ওমরাহ পালন করে সভাপতি ফারুক আহমেদ দেশে আসলে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বিসিবি। শান্তর নেতৃত্ব ছাড়া প্রসঙ্গে বিসিবির এক কর্মকর্ত ক্রিকবাজকে বলেছেন, ‘সে আমাদের জানিয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ শেষে সে আর দলকে নেতৃত্ব দিতে চায় না।’ আর এ নিয়ে শান্ত বলেন, ‘দেখা যাক কী হয়। কারণ আমি এখনও সভাপতির কাছ থেকে শোনার অপেক্ষায় আছি।’
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
সাকিব বিতর্ক রেখে তরুণদের নিয়ে এগিয়ে যেতে চান সিমন্স
বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে ফিল সিমন্সের সম্পর্কটা অন্য রকম। গত এক সপ্তাহের নাটকীয় পালাবদলের মধ্যে পাঁচ মাসের জন্য বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পাওয়া এই সাবেক ক্যারিবীয় ক্রিকেটার এর আগে আরও দুইবার একই পদের জন্য আবেদন করেছিলেন। ২০১৭ সালে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের পদত্যাগের পর রিচার্ড পাইবাস ও সিমন্স বিসিবিতে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। কিন্তু বিসিবি সেবার বেছে নেয় স্টিভ রোডসকে।
২০১৯ সালে রোডসের বিদায়ের পরও কোচ হতে আবেদন করেছিলেন তিনি। কিন্তু তখন দায়িত্ব পেয়েছিলেন রাসেল ডমিঙ্গো। এবার হাথুরুসিংহের চাকরি যাওয়ার পর সেই সিমন্সকেই বেছে নিয়েছে বিসিবি। একই সময় সাকিব আল হাসানকে নিয়ে আলোচনা–সমালোচনার ঝড় বইছে বাংলাদেশ ক্রিকেটে। এর মধ্যেই মাত্র দেড় সপ্তাহ আগে বাংলাদেশ দলের কোচ হওয়ার প্রস্তাব পেয়েছিলেন সিমন্স। এখন তাঁর অধীনে সোমবার থেকে শুরু হতে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ দল। এই সিরিজে কোচিং প্যানেলে ফিরেছেন স্পিন কোচ মুশতাক আহমেদও।
কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর আজ প্রথমবারের মতো সংবাদ সম্মেলনে এলেন সিমন্স। বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই অস্থির সময়টাকে তিনি পেছনে ফেলতে চান মাঠের ক্রিকেটে মনোযোগ দিয়ে, ‘ভালো দিক হচ্ছে, আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে।’ মাঠের বাইরের বিতর্ক সরিয়ে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের স্বপ্নও দেখালেন তিনি, ‘আমরা সামনের কয়েকটা টেস্ট জিততে পারলে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে জায়গা করে নেওয়ার সম্ভাবনা জাগবে।’
সে জন্য সব মনোযোগটা ক্রিকেটেই রাখতে চান সিমন্স, ‘আমি ক্রিকেটে মনোযোগ দিতে চাই। সোমবারের জন্য দলটাকে তৈরি করতে চাই। আমার গত দুই দিনের অভিজ্ঞতা দারুণ। আমরা ক্রিকেটের আশপাশে যে সব দোটানা আছে, তা সরিয়ে সোমবারে মনোযোগ দিতে চাই।’
নিজের দীর্ঘ কোচিং ক্যারিয়ারের অভিজ্ঞতা এই অস্থির সময়ে কাজে লাগাতে চান তিনি, ‘সব অভিজ্ঞতাই আমাকে ছেলেদের সোমবারের জন্য তৈরি করতে সাহায্য করবে। আফগানিস্তান আমাকে ভাষা জটিলতার চ্যালেঞ্জ সামলে কাজ করা শিখিয়েছে। আয়ারল্যান্ডে কাজ করে বুঝেছি কীভাবে তরুণদের গড়ে তুলতে হয়। সব কিছুই এখানে কাজে দেবে।’
বাংলাদেশের তারুণ্যনির্ভর টেস্ট দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স সিমন্সের নজর কেড়েছে, ‘আমি আগ্রহী হয়েছি তরুণ খেলোয়াড়ের সামর্থ্য দেখে। ওরা পাকিস্তানে নিজেদের দারুণভাবে প্রমাণ করেছে। ভারতে টি-টোয়েন্টিতে ওরা ভালো খেলেনি। কিন্তু ভারত ওই সংস্করণে সেরা দল। আপনার সেখান থেকে শেখার ছিল অনেক কিছু। প্রথমত, আমি তরুণদের গড়ে তুলতে চাই। পাশাপাশি এখানে টেস্ট ও ওয়ানডে সংস্করণে কাজ করার সুযোগও আছে। সব মিলিয়ে আমার এখানে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন ছিল না।’
তবে বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করা যে সহজ নয়, সেটা তো বাংলাদেশ দলের কোচদের আসা-যাওয়ার রেকর্ড ঘাঁটলেই টের পাওয়া যায়। ২০১৭ সালে হাথুরুসিংহের চলে যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত পাঁচবার প্রধান কোচের পদে বদল এসেছে। অনিশ্চিতায় ঠাসা এ দায়িত্বকে সিমন্স কীভাবে দেখেন? তাঁর উত্তর, ‘সব আন্তর্জাতিক কোচের চাকরিই চাপের। বাংলাদেশে এক রকম, পাকিস্তানে অন্য রকম। আমার জন্য ক্রিকেটারদের উপভোগের মঞ্চ গড়ে দেওয়া, ম্যাচ জেতাটা গুরুত্বপূর্ণ। আসনটা চাপের নয়। গত দুই দিন বেশ উপভোগ্যই ছিল।’
নিজের কোচিং দর্শনটাও জানালেন সিমন্স, ‘কঠোর পরিশ্রম করলে ফল আসবে। গত দুই দিনে ছেলেদের মধ্যে সেটা দেখেছি। এই ছেলেরা কঠোর পরিশ্রম করছে, দক্ষতা ও ফিটনেস নিয়ে।’
এমআই