ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
জাবিতে বিলুপ্ত গণরুম, সিট পেল নবীন শিক্ষার্থীরা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) এতদিন কাগজে-কলমে দেশের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। বিগত দুই দশকে অছাত্রদের সিট দখল, রাজনৈতিক প্রভাব, পোষ্যদের আধিপত্য ও অপরিকল্পিতভাবে নতুন বিভাগ খোলার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টি তার প্রতিষ্ঠাকালীন আবাসিক গৌরব হারিয়েছিল।
নবীন শিক্ষার্থীদের জায়গা হতো হলের কমন রুম, ডাইনিং রুম, রিডিং রুম, সংসদ রুম, নামাজের কক্ষ কিংবা সাইবার রুমের মেঝেতে। সেখানে গাদাগাদি করে একজনের জায়গায় তিন থেকে চারজন শিক্ষার্থীকে থাকতে হতো। প্রথম বর্ষের পুরো সময় গণরুমে পার করে দ্বিতীয় বর্ষে তারা পেতেন ‘মিনি গণরুম’। মিনি গণরুমে দু’জনের জায়গায় ছয় থেকে আটজন এবং চারজনের রুমে ১৪ থেকে ১৬ জন থাকত।
দ্বিতীয় বর্ষ পার করে তৃতীয় বর্ষে এসে সিট পেলেও ‘পলিটিক্যাল’ বা ‘নন-পলিটিক্যাল’ পরিচয়ের ভিত্তিতে চারজনের রুমে ৬-৭ জন থাকতে হতো। চতুর্থ বর্ষ বা মাস্টার্সে এসে শিক্ষার্থীরা চারজনের রুমে থাকার সুযোগ পেতেন। এ চিত্র ছাত্রদের হলগুলোর নিয়মিত দৃশ্য ছিল। মেয়েদের হলে অপেক্ষাকৃত আগে সিট পাওয়া গেলেও, তাদেরও প্রথম এবং দ্বিতীয় বর্ষে গণরুমে থাকতে হতো।
তবে এ বছর এক ভিন্ন চেহারায় ফিরেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। প্রথম দিন থেকেই প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য হলের নির্ধারিত সিট বরাদ্দ করা হয়েছে। সবাই বরাদ্দকৃত সিটে উঠেছেন।
গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে ছাত্রত্ব শেষ হওয়া বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী হল থেকে চলে গেছেন। রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে অবৈধভাবে সিট দখল করে থাকা নেতাকর্মীরাও হল ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। ফলে প্রত্যেক বৈধ শিক্ষার্থী তার সিট পেয়েছেন।
আজ শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকাল থেকে নবীন শিক্ষার্থীরা নিয়ম অনুযায়ী বরাদ্দকৃত সিট বুঝে পেয়েছেন। প্রতিটি হলে তারা একটি বিছানা, টেবিল এবং চেয়ার বরাদ্দ পেয়েছেন। কক্ষ অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ সিটে উঠেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন হলে নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করতে নানা আয়োজন করেছে হল প্রশাসন ও হলের শিক্ষার্থীরা। নবীনদের ফুল, কলম এবং মিষ্টি দিয়ে বরণ করা হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা তালিকা অনুযায়ী স্বাক্ষর করে তাদের নির্ধারিত কক্ষে প্রবেশ করেন। প্রথম দিনেই হলে উঠতে পেরে শিক্ষার্থীরা আনন্দ প্রকাশ করেন।
উপাচার্য মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ‘নবীন শিক্ষার্থীরা তাদের হলে প্রথম দিনেই সিট পাবে- এটা তাদের অধিকার। এ অধিকার নিশ্চিত করতে পেরে আমরা আনন্দিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আবাসিক হল এবং অ্যাকাডেমিক ভবনে শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতে আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করব।’
এমআই

ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত ইবি ছাত্রশিবিরের

ডাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের বিজয় উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কণ্ঠস্বর শহীদ আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রশিবির।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শহীদ আবরার ফাহাদের পিতা বরকত উল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে কবর জিয়ারত করেন তারা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন শাখা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য মু. মাহমুদুল হাসান, ইবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি ইউসুফ আলী, কুষ্টিয়া শহর সভাপতি আবু ইউসুফ, কুষ্টিয়া জেলা সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
কবর জিয়ারত শেষে নেতৃবৃন্দ জানান, ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে প্রথম বীর শহীদ আবরার ফাহাদ। ২০১৯ সালে ৭ অক্টোবর আবরার ফাহাদকে শিবির ট্যাগ দিয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা শহীদ করে। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে। এর মাধ্যমে ভারতীয় আধিপত্যবাদের মসনদ ভেঙেচুরে তছনছ হয়ে যায়। তাই আজকে আমরা গভীরভাবে শহীদ আবরার ফাহাদকে স্মরণ করে আজকে তার কবর জিয়ারত করতে আসি। আল্লাহর কাছে দোয়া করছি আবরার ফাহাদের রক্তের বিনিময়ে এদেশ ভারতীয় আধিপত্যবাদ থেকে মুক্ত হবে এবং আল্লাহ তায়ালা শহীদ আবরার ফাহাদের শাহাদাতকে কবুল করুন।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন আগামীকাল, লড়ছে ৮ প্যানেল

দীর্ঘ ৩৩ বছর পর আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। এবারের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ১৭৭ জন প্রার্থী। নির্বাচনে বাম, শিবির, ছাত্রদল ও স্বতন্ত্রদের সমর্থিত মিলিয়ে সর্বমোট আটটি প্যানেল অংশগ্রহণ করবে।
গত ২৮ আগস্ট থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রার্থীদের প্রচারণার সময় নির্ধারণ করে দিয়েছিল জাকসু নির্বাচন কমিশন। এতে স্বতন্ত্র ও দলবদ্ধভাবে প্যানেলের মাধ্যমে প্রচারণা করতে দেখা যায় প্রার্থীদের। এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা প্যানেল আটটি হলো গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’, ছাত্রশিবিরের ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’, ছাত্রদলের নিজস্ব প্যানেল, বামপন্থিদের তিনটি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দুটি প্যানেল।
শিবির সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’
এবারের জাকসু নির্বাচনে সর্বপ্রথম পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছিল ইসলামী ছাত্রশিবির। নির্বাচনে শিবিরের সমর্থিত প্যানেলের নাম ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’। তাদের প্যানেলে ভিপি পদে রয়েছেন জাবি শাখা শিবিরের সদস্য আরিফুল্লাহ আদিব ও জিএস পদে মনোনয়ন পেয়েছে জাবি শাখা শিবিরের অফিস ও প্রচার সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ফেরদৌস আল হাসান ও নারী এজিএস পদে আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা। এই প্যানেলে স্থান পেয়েছেন ছয়জন নারী শিক্ষার্থী। রয়েছেন জাবিতে অধ্যয়নরত এক দম্পতি ও জুলাই আন্দোলনে আহত কয়েকজন শিক্ষার্থীও।
বাগছাস সমর্থিত ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’
নির্বাচনে অংশ নিতে ২৩ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) জাবি শাখা। ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’ নামে গঠিত প্যানেলে ভিপি পদে রয়েছেন বাগছাসের জাবি শাখার আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল। জিএস পদে লড়বেন সংগঠনটির জাবি শাখার সদস্যসচিব আবু তৌহিদ মো. সিয়াম। এছাড়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে মালিহা নামলাহ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে জিয়া উদ্দিন আয়ান।
ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল
জাকসু নির্বাচনে জিএস পদে একজন নারী রেখে ২৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল দিয়েছে জাবি শাখা ছাত্রদল। এই প্যানেলে ভিপি পদে রয়েছেন ছাত্রদলের মীর মশাররফ হোসেন হলের সভাপতি মো. শেখ সাদী হাসান। জিএস পদে এবারের নির্বাচনের একমাত্র নারী প্রার্থী ও ১৩ নং ছাত্রী হল শাখা ছাত্রদলের সভাপতি তানজিলা হোসাইন বৈশাখী। এছাড়া এজিএস (পুরুষ) পদে মো. সাজ্জাদুল ইসলাম এবং এজিএস (নারী) পদে আঞ্জুমান আরা ইকরাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
‘সম্প্রীতির ঐক্য’
নির্বাচনে বামপন্থীদের হয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ ও দুটি আংশিক প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট ও সাংস্কৃতিক জোটের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে থাকা বিভাজন এর পেছনে মূখ্য কারণ বলে জানা গেছে।
ভিপি প্রার্থিহীন হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে ছাত্র ইউনিয়নের (অদ্রি-অর্ক) একাংশের সমর্থনে গঠিত আংশিক পূর্ণাঙ্গ প্যানেল। ২৫ সদস্যের হয়ে গঠিত হলেও পর্বরতীতে ছাত্রত্ব না থাকায় বাতিল করা হয়েছে প্যানেলের ভিপি প্রার্থী অমর্ত্য রায়কে। ভিপিহীন এই প্যানেলের নাম ‘সম্প্রীতির ঐক্য’। যেখানে রয়েছে সর্বোচ্চ ১১ জন নারী প্রার্থী, সাতজন আদিবাসী, ছয়জন সনাতন ধর্মাবলম্বী, তিনজন বৌদ্ধ ও দুজন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী প্রার্থী। এই প্যানেলে জিএস পদে রয়েছেন নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শরন এহসান। যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে নুর এ তামীম স্রোত ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে ফারিয়া জামান নিকি।
‘সংশপ্তক পর্ষদ’
ছাত্র ইউনিয়ন (ইমন-তানজিম) ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (একাংশ) নিয়ে গঠিত বামপন্থীদের আরেক অংশ শুধুমাত্র পাঁচ সদস্যের প্যানেল ঘোষণা করেছে। ‘সংশপ্তক পর্ষদ’ নামে গঠিত এই প্যানেল ভিপি প্রার্থী ছাড়াই ঘোষণা করা হয়। এতে জিএস পদে রয়েছেন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি (একাংশ) জাহিদুল ইসলাম ইমন। এই প্যানেলের বাকি সদস্যরা হলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সংগঠক সোহাগী সামিয়া জন্নাতুল ফেরদৌস, তথ্য-প্রযুক্তি ও গ্রন্থাগার সম্পাদক পদে সৈয়দ তানজিম আহমেদ, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদে তানজিল আহমেদ এবং সহ-সমাজসেবা ও মানব উন্নয়ন সম্পাদক (নারী) পদে সাদিয়া ইমরোজ ইলা।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (একাংশ) আংশিক প্যানেল
জাকসু নির্বাচনে জাবি শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (একাংশ) কৃর্তক ৩ সদস্যের আরও একটি আংশিক প্যানেল ঘোষণা করা হয়।যেখানে সহ-সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) প্রার্থী হিসেবে আছেন ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার একাংশের সংগঠক মো. সজিব আহম্মদ জেনিচ। এছাড়াও কার্যকরী সদস্য (নারী) পদে রোকেয়া আমিন অনুসূয়া এবং কার্যকরী সদস্য (পুরুষ) পদে মো. সুমন হোসেন রয়েছেন।
‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন’
ক্রিয়াশীল সংগঠন ছাড়া এবারের জাকসু নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে আরও দুইটি প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন’ নামে গঠিত স্বতন্ত্রদের নিয়ে এই প্যানেলের ভিপি পদে লড়ছেন গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ জিতু, জিএস পদে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. শাকিল আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তৌহিদুল ইসলাম নিবিড় ভূঁঞা। এই প্যানেলে নারী যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রাখা হয়নি কোনো প্রার্থীকে।
‘স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ’
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সমন্বয়ে ‘স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ’ নামে স্বতন্ত্রদের আরও একটি আংশিক প্যানেল গঠন করা হয়েছে। এই প্যানেলে ভিপি পদে রয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের মুখপাত্র মো. মাহফুজুল ইসলাম মেঘ, সহ-সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বাগছাস থেকে বিদ্রোহ করা মো. নাজমুল ইসলাম। এছাড়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পুরুষ ও নারী পদে কোনো প্রার্থী দেওয়া হয়নি এই প্যানেলে।
প্রসঙ্গত, এবারের জাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ হাজার ৮৯৭ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ৫, ৭২৮ জন ও ছাত্র ৬, ১১৫জন। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে নিজ নিজ হলেই হবে ভোটগ্রহণ। ছাত্রদের ১১টি ও ছাত্রীদের ১০ হল মিলে মোট ২১ ভোটকেন্দ্র ঠিক করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে স্থাপন করা হয়েছে ২২৪ টি বুথ।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে ৪১ হাজার শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বড় সুখবর

এমপিওভুক্ত ১৮ হাজার ৮৯৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৪১ হাজার ৬২৭ জন প্রার্থীকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন এনটিআরসিএর সহকারী পরিচালক ফয়জার আহমেদ।
তিনি বলেন, আগামী ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রার্থীর অনুকূলে নিয়োগপত্র প্রদান নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা টেলিটকের ওয়েবসাইট http://ngi.teletalk.com.bd ব্যবহার করে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে নিয়োগপত্র ডাউনলোড করতে পারবেন।
নিয়োগপত্র প্রদানের আগে প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করতে হবে। কমিটি প্রার্থীর প্রাসঙ্গিক সনদ ও এনটিআরসিএর সুপারিশপত্র পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।
যদি প্রার্থী নিয়োগ গ্রহণ করেন, তবে যোগদানের সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানপ্রধানকে ওয়েবসাইটের ‘Joining Status’ অপশনে ‘Yes’ ক্লিক করে তথ্য নিশ্চিত করতে হবে। প্রার্থী যোগদান না করলে, ‘No’ ক্লিক করে তার কারণ উল্লেখ করতে হবে।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
৪৯তম বিসিএস পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ

৪৯তম বিশেষ বিসিএস মৌখিক পরীক্ষার তারিখ, সময় ও নির্দেশনা প্রকাশ করা হয়েছে। সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৪৯তম বিশেষ বিসিএস এমসিকিউ টাইপ লিখিত পরীক্ষা আগামী ১০ অক্টোবর ঢাকা কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা সকাল দশটায় শুরু হয়ে শেষে হবে দুপুর বারোটায়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, উক্ত পরীক্ষার হলভিত্তিক আসনবিন্যাস ও গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা পরবর্তী সময়ে সরকারি কর্ম কমিশনের ওয়েবসাইট ও দৈনিক জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হবে।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন আগামীকাল

৩৩ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদের জন্য ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫ পদে লড়ছেন ১৭৭ জন প্রার্থী, আর হল সংসদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৪৫ জন। ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৯ জন এবং জিএস পদে লড়ছেন ৮ জন প্রার্থী। তবে শেষ মুহূর্তে জিএস পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দা অনন্যা ফারিয়া। অন্যদিকে হাইকোর্টের রায় স্থগিত হওয়ায় সম্প্রীতির ঐক্য প্যানেলের ভিপি প্রার্থী অমর্ত্য রায় নির্বাচন থেকে ছিটকে গেছেন।
এই নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ১১ হাজার ৯১৯ জন। এর মধ্যে নারী ভোটারের হার ৪৮ দশমিক ৮ শতাংশ। মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত চলেছে প্রার্থীদের প্রচার। দিনভর বিভিন্ন প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ক্যাম্পাসজুড়ে প্রচারণা চালান।
স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন প্যানেলের জিএস প্রার্থী শাকিল আলী বলেন, সব হলের শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানো কঠিন। তবে যারা শিক্ষার্থীদের পক্ষে থেকে কাজ করেছেন, শিক্ষার্থীরা নিশ্চয়ই তাদেরই বেছে নেবেন।
ছাত্রশিবির সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের জিএস প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীরা যোগ্য, নৈতিকভাবে সৎ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কাজ করবেন— এমন প্রার্থীদের নির্বাচিত করবেন বলে আশা করি।
২২৪ বুথে ভোট, নিরাপত্তায় পুলিশ-আনসার
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন হলে মোট ২২৪টি বুথে ভোটগ্রহণ হবে। ব্যালট পেপারে টিক চিহ্নের মাধ্যমে ভোট দিতে হবে। প্রতি ২০০ ব্যালট পেপারের জন্য একটি ব্যালট বাক্স থাকবে। কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদের ভোটের জন্য আলাদা ব্যালট বাক্স ব্যবহার করা হবে।
ভোট সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় দায়িত্ব পালন করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৭ জন শিক্ষক পোলিং অফিসার ও ৬৭ জন সহকারী অফিসার। নিরাপত্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২টি গেটে মোতায়েন থাকবেন এক হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য। এছাড়া ভোটকেন্দ্রে আনসার সদস্যরা দায়িত্বে থাকবেন।
দুই হলে হবে না হল সংসদের ভোট
বেগম সুফিয়া কামাল হল ও নওয়াব ফয়জুন্নেছা হলে সব প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়ায় সেখানে শুধু কেন্দ্রীয় সংসদের ভোটগ্রহণ হবে। বেগম সুফিয়া কামাল হলে ১৫ পদের ১০টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থী জয়ী হয়েছেন, বাকি পাঁচটি পদ শূন্য রয়েছে। নওয়াব ফয়জুন্নেছা হলে ১৫ পদের মধ্যে ছয়টিতে প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন, বাকি ৯টি পদ শূন্য আছে।
প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক
গতকাল সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে কেন্দ্রীয় ও হল সংসদের প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট করা হয়। কেন্দ্রীয় সংসদের ১৬৩ জন এবং হল সংসদের ৪০৩ জন প্রার্থী পরীক্ষার নমুনা দিয়েছেন। তবে বাধ্যতামূলক হওয়া সত্ত্বেও ৫৬ জন প্রার্থী নমুনা দেননি।