জাতীয়
রাষ্ট্র সংস্কারে আরও চার কমিশন

রাষ্ট্র সংস্কারে আরও চারটি কমিশন গঠনের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে সরকার। এসব কমিশন হলো- স্বাস্থ্য কমিশন, গণমাধ্যম কমিশন, নারী বিষয়ক কমিশন ও শ্রমিক অধিকার কমিশন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা রিজওয়ান হাসান। তিনি বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
চার কমিশনের দায়িত্ব পেলেন যারা- স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে কাজ করবেন ড. একে আজাদ খান। গণমাধ্যম সংষ্কার কমিশনের প্রধান করা হয়েছে কামাল আহমেদকে। নারী বিষয়ক কমিশনের প্রধান হিসেবে কাজ করবেন শিরিন হক। আর শ্রমিক অধিকার সংস্কার কমিশনের দায়িত্ব পেয়েছেন সৈয়দ সুলতানউদ্দিন আহমেদ।
পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, আগামী ৭-১০ দিনের মধ্যে কমিশন চারটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে। এ ছাড়া শিক্ষা কমিশন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে সাংবিধানিক সংস্কারে ৬ কমিশেন গঠনের কথা জানিয়েছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছিলেন, দেশে সাংবিধানিক সংস্কার করবে অন্তর্বর্তী সরকার। সমাজের সকল স্তরের মানুষের প্রতিনিধিত্ব ও স্বার্থ নিশ্চিত এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বার্তাকে প্রতিফলিত করা এ সংস্কারের লক্ষ্য। এসব বিষয়ে সংস্কার করার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে আমরা প্রাথমিকভাবে ৬টি কমিশন গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এসব কমিশনের কাজ পরিচালনার জন্য বিষয়ভিত্তিক অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে ছয়জন বিশিষ্ট নাগরিককে এই কমিশনগুলো পরিচালনা করার দায়িত্ব দিয়েছি। এরপর আরও বিভিন্ন বিষয়ে কমিশন গঠন প্রক্রিয়া আমরা অব্যাহত রাখব।
ওই ভাষণে নির্বাচন, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন, জনপ্রশাসন ও সংবিধান- এই ৬ বিষয়ে সংস্কার কমিশন গঠনের কথা জানিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ড. বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে কাজ করবেন সফর রাজ হোসেন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ড. ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী এবং সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে ড. শাহদীন মালিক দায়িত্ব পালন করবেন। পরবর্তীতে ড. শাহদীন মালিকের পরিবর্তে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান করা হয়েছে অধ্যাপক আলী রীয়াজকে। ৩ ও ৭ অক্টোবর তাদের নিয়োগ দিয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রকাশিত গেজেটে বলা হয়েছে- রাষ্ট্র সংস্কারে গঠিত ছয় কমিশনের প্রধানরা আপিল বিভাগের বিচারপতিদের সমান মর্যাদা, বেতন-ভাতা ও সুবিধা পাবেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন স্বাক্ষরিত গেজেটে বলা হয়, ৩ অক্টোবর গঠিত নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, পুলিশ সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন এবং ৬ অক্টোবর গঠিত সংবিধান সংস্কার কমিশনের কমিশন প্রধানরা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতির মর্যাদা, বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন।
এতে আরও বলা হয়, এসব কমিশনের সদস্যদের যারা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত না, তারা কমিশনের প্রত্যেক সভায় অংশগ্রহণের জন্য ১০ হাজার টাকা সম্মানী এবং যারা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত তারা কমিশনের প্রত্যেক সভায় অংশগ্রহণের জন্য পাঁচ হাজার টাকা সম্মানী পাবেন।

জাতীয়
কমিশন এক মাস সময় নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখতে উৎসাহী নয়: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, কমিশনের মেয়াদ এক মাস বাড়ানো হয়েছে। কমিশন কোনো অবস্থাতেই এক মাস সময় নিয়ে এই আলোচনা অব্যাহত রাখতে উৎসাহী নয়। আমরা মনে করি না যে আগামী এক মাস ধরে এ বিষয়ে আমাদের আলোচনা করতে হবে। আমরা খুব দ্রুত একটা ঐকমত্যের জায়গায় উপনীত হতে পারবো।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ফরেন সার্ভিস একাডেমির মিলনায়তনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, নতুন করে কমিশনের মেয়াদ এক মাস বাড়ানোর আরেকটি কারণ হচ্ছে যে, যেকোনো কার্যালয় যদি প্রায় এক বছর ধরে অব্যাহত থাকে, সেটা গুটিয়ে তুলতেও খানিকটা সময় লাগে। আমরা যেন মেয়াদের মধ্যেই সেটি গুটিয়ে তুলতে পারি, সেটাও সরকারের পক্ষ থেকে বিবেচনা করা হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতেই আমরা এখানে আজকে উপস্থিত হয়েছি।
আলী রীয়াজ বলেন, ১১ সেপ্টেম্বরের পরে আপনাদের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছিল, আপনারা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে আরো সুনির্দিষ্ট করে কিছু প্রস্তাব দিতে পারেন কি না। যেগুলো আরো বিকল্পগুলোকে কমিয়ে আনতে সক্ষম হয় এবং সম্ভব হলে একমত জায়গায় যেন আমরা আসতে পারি। আপনাদের পক্ষ থেকে আমরা সর্বশেষ যখন মিলিত হয়েছিলাম তখন আপনারা আপনাদের দলীয় অবস্থান এবং দলীয় অবস্থানের বাইরেও আপনাদের অবস্থানগুলো ব্যাখ্যা করেছেন। বিস্তারিতভাবে তার আগে আপনারা লিখিতভাবে দিয়েছেন। তার সারাংশ আমরা উপস্থাপন করেছি। তার পাশাপাশি আমরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেছি এমনকি যেদিন সর্বশেষ আমরা এখানে সবাই মিলিত হই এবং প্রধান উপদেষ্টা এখানে উপস্থিত ছিলেন।
‘আমাদের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের পক্ষ থেকে একটি সুস্পষ্ট মতামত সুপারিশ হিসেবে আমাদেরকে দেওয়া হয়েছে। আপনাদের পক্ষ থেকে যেসব বক্তব্য ছিল সেগুলোকে আমরা ছয় ভাগে ভাগ করেছিলাম। আপনারা বলেছিলেন বেশ কিছু বিষয় অধ্যাদেশ এবং নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা যায়।’
তিনি বলেন, আমরাও কমিশনের পক্ষ থেকে সরকারকে অনুরোধ করেছি, অত্যন্ত দ্রুততার সম্ভব সঙ্গে বাস্তবায়িত পদক্ষেপ গ্রহণ করে। যেসব বিষয় অধ্যাদেশ এবং নির্বাহী আদেশে করা যায় সেগুলো যেন তারা দ্রুত করেন।
তিনি আরও বলেন, সংবিধান সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে আমাদের যেই বিশেষজ্ঞ প্যানেল আছে তারা দুটো কথা বলেছিলেন, একটি হচ্ছে গণভোট, আরেকটি বিশেষ সাংবিধানিক আদেশের কথা। সব কিছু বিবেচনা করে প্যানেলের পক্ষ থেকে আমাদেরকে একটি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যেটি আপনাদের সামনে আমরা উপস্থাপন করেছি। আমরা সরকারকে একাধিক পরামর্শ দিতে পারি বাস্তবায়নের, যেটা তুলনামূলকভাবে সরকারের জন্য সহজতর হবে, বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে এবং প্রয়োজনীয় আইনি সাংবিধানিক বিষয়গুলো ক্ষতিয়ে দেখে তারা পদক্ষেপ নিতে পারবেন।
প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে অংশগ্রহণের জন্য ২১ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের বাইরে থাকবেন, নিউইয়র্কে থাকবেন, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বক্তব্য রাখার জন্য। তিনি ২ অক্টোবর ফিরবেন। আমরা এই প্রক্রিয়াটির পরিণতির জায়গা অর্থাৎ আমাদের দিক থেকে যে সুপারিশ সেটা আসলে প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে তার সঙ্গে আলোচনা করে দিতে চাই। ২১ তারিখের আগে যদি আমরা একমত হতে পারি বা বিকল্পগুলো নিশ্চিত হতে পারি, তাহলে আমাদের জন্য কমিশনের পক্ষ থেকে সেটা তাকে উপস্থাপন করা সম্ভব হবে। অন্যথায় আমাদেরকে কিছুটা সময় নিতে হবে।
আলী রীয়াজ বলেন, এরইমধ্যে আপনাদের কাছে সনদের চূড়ান্ত ভাষ্য দেওয়া হয়েছে। আমরা বলেছি যদি তথ্যগত ত্রুটি থাকে তাহলে আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করুন। কারণ তথ্যগত ত্রুটি থাকতেই পারে দু-একটা ক্ষেত্রে এবং আমরা সেগুলো অবশ্যই সংশোধন করব।
জাতীয়
কঠিন ও অস্বস্তিকর প্রশ্ন করা সাংবাদিকদের অধিকার নয়, দায়িত্ব: প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, অর্থনীতি ও ব্যবসা সংক্রান্ত খবর কভার করা সাংবাদিকদের জন্য কঠিন ও অস্বস্তিকর প্রশ্ন করা শুধু অধিকার নয়, দায়িত্বও। নামি পশ্চিমা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নেওয়া অর্থনীতিবিদদের আভায় সাংবাদিকদের ভীত না হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফাইড অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে প্রেস সচিব এসব কথা বলেন।
পোস্টে শফিকুল আলম লেখেন, কিছু পরিসংখ্যান বেছে নিয়ে বড়সড় সিদ্ধান্তে পৌঁছানো খুবই সহজ। আমাদের অনেক অর্থনীতিবিদ এই কৌশলে দক্ষ বা সিদ্ধহস্ত। তারা প্রায়ই অর্থনীতি, কর্মসংস্থান বা দারিদ্র্য পরিস্থিতি নিয়ে নাটকীয় সব দাবি তোলেন—শুধুমাত্র বাছাই করা কিছু সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে। আর খুব কম সময়ই কেউ তাদের প্রশ্নবিদ্ধ করে। তাদের ডিগ্রি, আত্মবিশ্বাস আর চমকপ্রদ ভাষা আপনাকে ভীত করে তোলে। তাদের সামনে আপনি নিজেকে ছোট মনে করেন—হয়তো “বোকা” মনে হতে পারে ভেবে হাত তুলতেও সংকোচ বোধ করেন।
ফেসবুকে প্রেস সচিব শফিকুল আরও বলেন, কিন্তু অর্থনীতি ও ব্যবসা কভার করা সাংবাদিকদের জন্য, কঠিন ও অস্বস্তিকর প্রশ্ন করা শুধু অধিকার নয়—এটি দায়িত্বও। নামি পশ্চিমা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নেওয়া অর্থনীতিবিদদের আভায় ভীত হয়ে যাবেন না। যখন কেউ বেছে নেওয়া সামান্য তথ্য দিয়ে বড় দাবি করেন—এটাই আপনার সুযোগ। তখনই মুখোশ খুলে যায়। আর তা কার্যকরভাবে করতে হলে সব ধরনের পরিসংখ্যান জানা প্রয়োজন। আপনার কি অর্থনীতির সামগ্রিক চিত্র তৈরি করার মতো একটি স্প্রেডশিট আছে যেখানে ডজনখানেক সূচক রয়েছে? শুধু রপ্তানি, আমদানি, মুদ্রাস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা চলতি হিসাব ঘাটতিতেই থেমে থাকবেন না। অপরাধের পরিসংখ্যান? সাম্প্রতিক শ্রম অস্থিরতা? আন্তঃখাত প্রভাব? অর্থনীতির বিভিন্ন খাত কেমনভাবে পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কিত—এসবও দেখুন।
প্রেস সচিব বলেন, শুধু যখন আপনার হাতের কাছে এই সামগ্রিক চিত্র থাকবে তখনই আপনি বুঝতে পারবেন অনেক বড়সড় দাবির ভেতর কতটা ফাঁপা। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—তখনই আপনি নিজের রিপোর্টের দিকে ফিরে তাকিয়ে দেখবেন না যে, অজান্তেই আপনিও জনগণকে বিভ্রান্ত করতে সাহায্য করেছেন।
জাতীয়
ছয় দফা দাবিতে কারিগরি শিক্ষার্থীদের সাতরাস্তা অবরোধ

কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের ও প্রকৌশল কর্মক্ষেত্র কুক্ষিগত করার অভিযোগ তুলে ছয় দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন কারিগরি শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও সাতরাস্তা মোড়ে তারা এ কর্মসূচি শুরু করেন। অবরোধের ফলে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং আশপাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
এর আগে কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সারা দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে একযোগে ‘বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি’ পালন করা হবে।
উপস্থিত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কারিগরি শিক্ষাকে অবহেলা করা হচ্ছে ও প্রকৌশল কর্মক্ষেত্রে কারিগরি শিক্ষার্থীদের প্রাপ্য অধিকার হরণ করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদেই তারা রাস্তায় নেমেছেন।
শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল হওয়া ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতি ও নিয়োগ সম্পূর্ণ বাতিল করা; ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে বয়সসীমাহীন ভর্তির সুযোগ বন্ধ করে উন্নতমানের চার বছর মেয়াদি কারিকুলাম চালু করা এবং ধাপে ধাপে ইংরেজি মাধ্যমে একাডেমিক কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ নেওয়া।
এ ছাড়া ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বাদ দিয়ে নিম্নপদে নিয়োগ বন্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ, কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবলকে কারিগরি সেক্টরের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ নিষিদ্ধ করা এবং শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবি জানানো হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা আরও দাবি তুলেছেন- স্বতন্ত্র ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়’ প্রতিষ্ঠা ও ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে। একইসঙ্গে উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁওয়ে নির্মাণাধীন প্রকৌশল কলেজগুলোতে অস্থায়ী ক্যাম্পাস চালুর মাধ্যমে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে সাতরাস্তা মোড় ও আশপাশে যানবাহন চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণে অনেক যাত্রীকে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।
জাতীয়
১৭ বিয়ে করা সেই বন কর্মকর্তা বরখাস্ত

নানা প্রলোভনে ১৭টি বিয়ে করে দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসা বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কবির হোসেন পাটোয়ারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্তে তার ১৭ বিয়ের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে নিজেই গণমাধ্যমকে বরখাস্ত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন কবির হোসেন। তবে কবে বরখাস্তের চিঠি পেয়েছেন সে বিষয়ে তিনি কোনো তথ্য দিতে রাজি হননি।
এর আগে চলতি বছরের ৯ এপ্রিল খুলনার সোনাডাঙা এলাকার বাসিন্দা খাদিজা আক্তার বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, বিয়ের নামে প্রতারণা, যৌতুক দাবি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তিনি। এর আগেও ২০১৯ সালে বাগেরহাটের মোংলার নাসরিন আক্তার দোলন একই অভিযোগে আদালতে মামলা করেছিলেন, যা এখনো বিচারাধীন।
সবশেষ গত ৯ এপ্রিল নতুন অভিযোগের পর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। ১১ সেপ্টেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সাইদুর রহমান বরিশালে সরেজমিন তদন্ত করে অভিযোগকারীদের বক্তব্য গ্রহণ করেন। ওইদিন কাশিপুরে বন বিভাগের কোস্টাল সার্কেল অফিসে বসে দুই স্ত্রীসহ স্বজনদের লিখিত জবানবন্দি নেওয়া হয়। পরে ভুক্তভোগীরা মানববন্ধন করে অভিযুক্ত কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
তদন্তে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় কবির হোসেনকে বিভাগীয় শাস্তির অংশ হিসেবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
উল্লেখ্য, চাঁদপুরের তুষপুর গ্রামের মোশাররফ হোসেন পাটোয়ারীর ছেলে কবির হোসেন এর আগে ঢাকা, খুলনা, সিরাজগঞ্জ ও বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় দায়িত্ব পালন করেছেন। বন বিভাগের পদ ব্যবহার করে নারীদের ফাঁদে ফেলার অভিযোগে তিনি এর আগেও দুবার সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন। তবে সাবেক মন্ত্রী দীপু মনির সুপারিশে তিনি চাকরিতে পুনর্বহাল হন।
এ দিকে বরখাস্ত হওয়ার পাশাপাশি মঙ্গলবার বরিশাল মহানগর আদালতে কবির হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হাফিজ আহমেদ বাবলু। আদালত মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)।
জাতীয়
কারাবন্দিদের মধ্যে ডোপ টেস্ট কার্যক্রম শুরু

মাদকবিরোধী জাতীয় সচেতনতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে কারা অধিদপ্তর চলতি ‘সেপ্টেম্বর ২০২৫’ মাসকে মাদকবিরোধী কার্যক্রমের মাস হিসেবে ঘোষণা করেছে। এ লক্ষ্যে মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করে ব্যাপক মাদকবিরোধী অভিযান শুরু করেছে।
মঙ্গলবার সহকারী কারা মহাপরিদর্শক (প্রশাসন) আবুল বাশার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী মাদক সমস্যার ভয়াবহতা ক্রমে প্রকট রূপ ধারণ করছে।
বাংলাদেশেও মাদক প্রবণতা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের কারাগারসমূহও এই ক্ষতিকর প্রভাবের বাইরে নয়। এহেন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ কারা অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন এবং মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে মাদক নির্মূলে বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।
তাতে আরো বলা হয়, কারাগারে আগত দর্শনার্থী, বন্দি এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিশেষ তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
একই সঙ্গে মাদকবিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিয়মিত কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। কারা অধিদপ্তর নিজস্ব ডোপ টেস্টের মাধ্যমে সন্দেহভাজন কারাবন্দি বা কর্মচারীদের ডোপ টেস্টের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সম্ভাব্য মাদকসেবীদের চিহ্নিত করে তাদের অধিকতর নজরদারি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার আওতায় আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘রাখিব নিরাপদ দেখাব আলোর পথ’ মূলমন্ত্রকে সামনে রেখে কারাগারসমূহে আগত সমাজের বিপথগামী লোকদের নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে সংশোধন করা এবং বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে সঠিক প্রশিক্ষণ প্রদান করে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে সমাজে পুনর্বাসন করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ জেল নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।